তুই হবি আমার😎পর্ব-২

0
4438

#তুই_হবি_আমার😎😎
#DîYã_MôÑî
#পর্ব__০২

অডিটোরিয়ামের বাইরে দরজার পাশে দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে রোজ। হাতে একটা ফাইল কানে হেডফোন।তবে সেটা সো ,, আরাভ তখন তার গ্যাং নিয়ে ভেতরে ঢুকছিলো,, রোজকে দেখেই ও দাড়িয়ে যায়।

আরাভ : কাজটা ভালো করলে না রোজ। এর জন্য তোমাকে সাফার করতে হবে। অনেক বড় ভুল করেছো। বি রেডি ফর দ্যাট
আরাভের কথায় মুচকি হাসলো রোজ। আর সোজা বেরিয়ে আসলো মাঠে।



কিছুক্ষন আগে,,
প্রিন্সিপালের রুমে স্যারের সামনে দাড়িয়ে আছে আরাভ আর শিপু। ওদের পেছনে মেঘ আর কুহু।

প্রিন্সিপাল : এসব কি শুনছি আরাভ তোমরা র্যাগের নামে মেয়েদের শাড়ি খুলে নাচতে বলেছো.? তোমরা জানো এর মানে কি.? তোমরা কি ভাবো সিসিটিভি ক্যামের শুধু কলেজে আর তার সাইডে আছে ক্যাম্পাসে বা মাঠে নেই.? সব জায়গায় আছে। আর শিপু তোমাকে তো খুব ভালো ছেলে বলে জানতাম কিন্তু তুমি এমন..? আগেও কমপ্লেইন এসেছে তোমরা কলেজের বাইরে মেয়েদের এসব করতে বলেছো। তখনও কিছু বলিনি তবে আর না। এটাই লাস্ট টাইম যখন আমি তোমাকে সাবধান করছি। নেক্সট টাইম এমন হলে তোমাকে ইভেন তোমাদের রাস্ট্রিকেট করতে বাধ্য হবো। কুহু তুমি আমার মেয়ে তবে অন্যায় করলে শাস্তি তোমাকেও পেতে হবে।

কুহু : অকে পাপা।

প্রিন্সিপাল : আর একটা কথা এরপর থেকে যেন কলেজে কোনো র্যাগিং না দেখি। তোমরাও করবে না আর কাউকে করতেও দিবে না। আর যদি আমার কথার নড়চড় হয় তাহলে তোমাদের প্যারেন্টস দের ইনফর্ম করতে বাধ্য হবো আমি।

মেঘ : আর এমন হবে না স্যার। ওদের হয়ে আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি।

প্রিন্সিপাল : আর আলিজার কাছে ক্ষমা চাইবে আরাভ। নাউ গো। & রোজের থেকে দূরে থাকবে তাহলেই তোমাদের ভালো।



বর্তমানে,, রোজ কলেজটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলো ঠিক তখন ওর সামনে আসে মেঘ। চোখেমুখে একটা অস্বস্তি ভাব কাজ করছে।

মেঘ : কেমন আছো.?
রোজ : ভালো। আপনি?
মেঘ : হুম।
রোজ : তো এখানে আমার সামনে কি মনে করে এলেন.? আপনার ফ্রেন্ডারা রাগ করবে না.?
মেঘ : ভুল বুঝছো আমায়।

রোজ : ঠিক বোঝার মতো কিছু করেছেন কি.? আপনি কুশান চৌধুরির বিসনেস পার্টনারের ছেলে না হলে আপনার কি হাল করতাম আপনি নিজেও জানেন না। আপিলাকে তো নিজের বোনের মতো দেখতেন তাইনা.? তাহলে কিভাবে সহ্য করলেন এগুলো.?

মেঘ : আমি জানতাম না আরাভরা আলিজার সাথে এসব করেছে। তাছাড়া আমি তো এসবের মধ্যে থাকিও না।

রোজ : ওহ হ্যা আপনি তো গুড বয়,, মাম্মাস বয়। তবে পুরুষ মানুষ হয়ে প্রতিবাদী হতে পারেন নি। আপনার জন্য আজ আমার করুনা হচ্ছে খুব।

মেঘ : রোজজজ। আমি তো তোমাদের চিনতেও পারিনি। তখন কুশান আংকেলের নাম শুনে চিনেছি। আর আমি যখন তোমাদের সাথে দেখা করেছি তখন খুব ছোট ছিলাম।

রোজ : হাহ। যাই হোক। আপনাদের কলেজে পোগ্রাম যান গিয়ে এন্জয় করুন।

মেঘ : তুমি যাবে না? চলো ভালো লাগবে।
রোজ : রোজ কখনো কোনো শুভ অনুষ্ঠানে যায় না। কারন সে অপয়া, অলক্ষি। বাই।

রোজ মুখ ঘুরিয়ে উল্টো দিকে হাটা ধরলো। আর মেঘ রোজের হেটে যাওয়ার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে।



বিকালে আলিজা আর কলি গেটের কাছে দাড়িয়ে রোজের জন্য অপেক্ষা করছে ঠিক সেসময় আরাভ বাইক নিয়ে বের হয়। আলিজার দিকে তাকাতেই আরাভের রাগে শরীর রিরি করে উঠলো। ও বাইকের স্পিড বাড়িয়ে আলিজার সামনে দিয়ে রাইড করলো আর আলিজার হাতে থাকা বইটা টেনে ডাস্টবিনে ফেলে দিলো।

কলি : ওই অসভ্য,,, চোখে দেখেন না..? কানা নাকি,, আলিজা ঠিক আছিস তুই.??

আলিজা : আই এম অল রাইট। এটা সকালের সেই ছেলেটা। কিছু বলিস না তাহলে এবার তোর ওপর শোধ তুলবে। বাপি যে কেন কলেজ চেন্জ করে এখানে পাঠালো আল্লাহই জানে।

কলি : হুম। কিন্তু রোজ কোথায়..? আবার কোথাও কিছু করছে নাতো.? এই মেয়েটাও না যেচে ঝামেলায় জরায়।

মিনিট দশেক পর রোজ আসলো,,
রোজ : আপিলা তোমাদের তো গাড়ি আছে চলে যাওনি কেন.? এতোক্ষন দাড়িয়ে থাকার মানে কি.? যদি আবার কেউ ডিস্টার্ব করতো.?

কলি : মিস সিস্টার তেরেসা। তোকে একা রেখে যাবো নাকি.? চল এবার যেতে হবে আমাদের।

রোজ : আমার কোনো বাড়ি নেই সো আমি কোথাও যাবো না। তোমরা যাও। আমি হোস্টেলে থাকবো।

আলিজা : প্লিজ বোন আর রেগে থাকিস না। মানছি মাম্মা বাপি তোর সাথে সবসময় ঝামেলা করে তাই বলে তুই নিজেকে এভাবে রাখবি। তুই তো আমাকে ভালোবাসিস.? প্লিজ আমার জন্য চল।

রোজ : রোজ ঠিক করে নিয়েছে ও কি করবে। সো বোথ অফ ইউ ক্যান গো।

আলিজাদের গাড়িতে উঠিয়ে হোস্টেলের দিকে হাটা শুরু করলো রোজ। জীবনের অনেকটা সময় একা থেকেছে, বাকি পথটাও অন্যের সাহায্য, সিমপ্যাথি ছাড়া চলতে চায় ও। ও নিজেকে প্রমাণ করতে চায় যে ও কখনো ভুল করেনি। ও কখনো নিজেকে মেয়ে বলে ছোট করে দেখতে শেখেনি। ও স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। তাই ওর স্বাধীনতা ওর নিজের কাছে। মেয়েদের ইচ্ছাশক্তি থাকলে তারাও অনেককিছু করতে পারে যার প্রমাণস্বরূপ সে নিজেকে প্রেজেন্ট করতে চায়।


এদিকে মেঘের মনে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। মেঘ কেন রোজ কে দেখলে দূর্বল হয়ে যায়..? কেন বারবার অতিতের কথা মনে পড়ে ওর.? কেন সব মেয়েকেই ও একজনের সাথে মেলায় আর তাদের সাথে রোজকে কেন মেলাতে পারেনা.? রোজের মাঝে কি আছে যা মেঘের হৃদয়ে বজজ্রোপাতের সৃষ্টি করছে.?


আরাভ রকিং চেয়ার বসে একের পর এক সিগারেট টানছে। ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে সকালের অপমানের সময়গুলো। বুকের কাছটা পুড়ে কালো হয়ে গেছে,,,
আরাভ : এর বদলা আমি নিবোই রোজ। আমাকে অপমান করার ফল কি হয় জানো না তুমি। তোমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিবো। অন্যকে বাঁচানোর অনেক শখ তাইনা.? এবার নিজেকে বাঁচিয়ে দেখাও। গেট রেডি টু বি পানিশ্ড।



হোস্টেলের করিডোরে বই নিয়ে হেটে হেটে পড়ছে রোজ। ওর সাথে আছে নিভি,, রোজের নতুন বন্ধু। সেই সাথে ওরা হোস্টেলে পাশাপাশি রুমেই থাকে।

নিভি : রোজ তোমার বাড়ি তো কাছেই তাহলে তুমি এখানে থাকছো কেন.? তুমি তো বাড়ি গিয়েও থাকতে পারো। বাড়িতে কি কোনো সমস্যা আছে.?

রোজ বইটা জানালার ওপর রেখে নিভির দিকে ফিরে তাকালো। তারপর হেসে বললো,,

রোজ : কেন শুধু সমস্যা থাকলেই বুঝি মানুষ হোস্টেলে থাকে.? আমি হোস্টেলে আছি নিজের লেখাপড়ার জন্য। বাড়ি থাকলে সবার সাথে আড্ডা,, হইহই,, পড়াশোনার ডিস্টার্ব হয় খুব।

নিভি : ওহহ।
রোজ : তুমি এখানে আছো কেন.? তোমার বাড়িও তো দূরে না। তাহলে কি ধরে নিবো কোনো সমস্যার জন্য আছো.?

নিভি : বাদ দাও। চলো খেয়ে নেই। খিদা লাগছে অনেক।
নিভির এভাবে কথা এড়িয়ে যাওয়াটা রোজের মনে খটকার সৃষ্টি করলো। নিভি এড়িয়ে গেলো কেন.? কারন কি.?



সকালে রোজ রেডি হয়ে নিভির রুমে গেলো ওকে ডাকতে,, যদিও দুজন আলাদা ডিপার্টমেন্টের তবে ওদের মধ্যে যেহেতু ফ্রেন্ডসিপ হয়েছে সুতরাং রোজ সেটা কমপ্লিটলি মেইন্টেইন করতে চায়। রোজ নিভির রুমে ঢুকতেই দেখলো নিভি আয়নার সামনে দাড়িয়ে কাঁদছে। রোজ পেছন থেকে নিভিকে ডাক দিতেই নিভি তাড়াহুড়ো করে গুছিয়ে নিলো,, আর রোজকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে টেনে কলেজে নিয়ে আসলো।

আজ রোজের ফার্স্ট ক্লাস। ও গিয়ে ক্লাসের ফার্স্ট বেঞ্চে বসলো,, কিন্তু কিছুক্ষন পরই শুরু হলো ঝামেলা,,, একটা মেয়ে এসে রোজকে উল্টা পাল্টা বলা শুরু করলো,,

মেয়েটি : এই মেয়ে তুমি এখানে বসেছো কেন.? তুমি জানো না এটা আমার টেবিল.? এখানে শুধু টিনা বসে আর কারোর পার্মিশন নেই এখানে বসার।

রোজ উঠে “সরি আপু, বুঝতে পারিনি” বললো। রোজের কথায় হেসে উঠলো পুরো ক্লাস।

টিনা : তোরা দেখেছিস.? কোথা থেকে উঠে আসছে মেয়েটা.? এক ক্লাসে পড়ে আপু বলছে.? কই আমরা তো কখনো বলিনা। এসব গাইয়্যা মেয়ে যে কিভাবে এই কলেজে চান্স পেলো.? এ নাকি আমাদের সাথে বসে ক্লাস করবে। ডিসগাস্টিং। যাই হোক নেক্সট টাইম এমন ভুল করবে না।

রোজ মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো তারপর ওখান থেকে পেছনে চলে গেলো। এতক্ষন বাইরে দাড়িয়ে শিপু সবটা দেখলো,,

শিপু : কাল যাকে দেখলাম, আর এখন যাকে দেখছি তারা কি আলাদা.? কালকের টা মা চন্ডি ছিলো আজ গৌরি হলো কিভাবে.? যাই হোক খবরটা আরাভকে দিতে হবে।

ফার্স্টে শিপন স্যারের ইংলিশ ক্লাস। উনি এসেই রোজের দিকে তাকায় তারপর রোজকে দাড় করিয়ে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে,,

শিপন : তুমি মনে হয় নতুন। তোমার নাম কি.?
রোজ : সাদিয়া চৌধুরি।

শিপন : পরিচয়টা ডিটেইলসে দাও।
রোজ : আমি সাদিয়া চৌধুরি রেড রোজ NgO এর ওনার। আর বর্তমানে #MR কলেজের ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট।( ভ্রু কুচকে তাকালো স্যার। রোজ বুঝলো যে স্যার ফ্যামিলি সম্পর্কে জানতে চান।) একটা মেয়ের জন্য কি শুধু ফ্যামিলি ডিসক্রিপশন প্রয়োজন.? সে কি নিজের পরিচয় নিজের মতো করে দিতে পারে না.? আমি কখনো পরিবারের দোহাই দিয়ে বা পরিরিচয় দিয়ে চলতে শিখি নি। যদি এটা ফর্মালিটি হয় তবে অন্য ব্যাপার কিন্তু সেটা তো নয় এটা যাস্ট ইন্ট্রোডাক্শন পার্ট।

শিপন : বাহ। গুড থিংকিং। কিন্তু তোমার মতো করে কেন যে অন্য মেয়েরা ভাবতে পারেনা। যদি পারতো তাহলে দেশ এবং জীবনের অনেক উন্নতি করতে পারতো।

রোজ : ভাবতে সবাই পারে কিন্তু বাস্তবে রূপ দিতে পারে না। আর আমি সেসব মেয়েদের গ্রুপে পড়ি না যারা শুধু স্বপ্ন দেখতে জানে কিন্তু পূরন করতে জানে না।

শিপন : বসো। আর ক্লাস এটেন্ড করো। ( মেয়েটা অন্য মেয়েদের মতো না। তবে একটু ছেলে টাইপের কিন্তু দেখে তো এতো কঠিন মনে হয়না। নিশ্চই কোনো ধাক্কা খেয়েছে। এখন তো অহরহ এমন হয়।)

টিফিন টাইম। ক্যান্টিনে
নিভি : পরপর চারটা ক্লাসের পর ২টায় টিফিন ব্রেক,,, স্যাররা একটুও বোঝে না যে স্টুডেন্টদের পেটে ইদুরকে বিড়াল তাড়া করে। এমনিই চিকুন তারওপর না খাইয়ে রেখে আরো চিকুন বানাচ্ছে।

নিভি বার্গার চিবোচ্ছে আর এটা সেটা বলে রোজের কানের বারোটা বাজাচ্ছে। রোজ একটা পিৎজা মুখে নিয়ে ঘাড় ঘোরাতেই দেখলো কিছু টেবিল পেছনে আরাভদের গ্যাং কিছু মেয়েদের সাথে ফ্লাটিং করছে। আর তার পরের টেবিলে মেঘ, কুহু। মেঘের দিকে তাকাতেই দেখলো মেঘ ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। রোজ উঠে মেঘের টেবিলের সামনে গেলো। মেঘ চোখ সরিয়ে সুপ খেতে লাগলো

রোজ : একটা হেল্পের জন্য এসেছি… করতে পারবেন.?
মেঘ কুহু চোখ তুলে তাকালো।
মেঘ : কি হেল্প.?

রোজ : আমাকে নোটস বানিয়ে দিতে পারবেন.? আপনি তো এই কলেজের টপার.. প্লিজ হেল্পটুকু করে দিন।

কুহু : মেঘ? হ্যা করে দিবে। কোনো সমস্যা নেই। তুমি বসো আমাদের সাথে আমরা গল্প করি কিছুক্ষন।

রোজ : না আপু নিভি আছে। পরে কথা হবে বাই।
রোজ আবার নিজেদের টেবিলে আসলো। তখনই নিভি ফোস করে উঠলো,,
নিভি : ওখানে কেন গেলি.? জানিস না ওরা ফ্লট। মেঘ ভাইয়াকে ভালা জানতাম কিন্তু সেদিন জানলাম উনিও নাকি মেয়েদের সাথে রাত কাটান। ছি! ওনার কাছ থেকে এটা আশা করিনি।

রোজ : কলেজের টপ ক্রাশ & চকলেট বয় উনি। এমন দু এক টা কেস তো থাকবেই। আমরা নাহয় আমাদের কাজ নিয়েই থাকি.? অন্যের ব্যাপারে মাথা না ঘামানোই শ্রেয়।

রোজ পিৎজা মুখে দিতে গেলেই কেউ এসে ওর পিৎজায় চিলি সস ঢেলে দেয়। মাথা উচু করে দেখে আরাভ।

আরাভ : খাও মামনি,, তোমার মতো ঝাঝওয়ালি মেয়ের জন্য ঝালের ঝাঝে ভরা পিৎজাটাই বেস্ট। মজা করে খাও। দাড়াও আরেকটু দেই।

আরাভ বেশি করে সস ঢেলে দিলো। রোজ আরাভের দিকে তাকিয়ে ঠোট চেপে হাসলো তারপর পিৎজা খাওয়া শুরু করলো,, ঝালে ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে তবুও কিছু বললো না রোজ। সবাই অবাক হয়ে ওর খাওয়া দেখছে। রোজ পানির বোতলটা নিতে গেলেই আরাভ সেটা ধরে ফেলে।

আরাভ : আহা রে বাবুটার ঝাল লেগেছে নাও পানি খাও আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
আরাভ বোতল উচু করে রোজের মুখের ওপর পানি ঢেলে দিলো। ক্যান্টিনের সবাই বেশ মজা নিয়ে দেখছে নাটকটা। কেউ যদি এখন একটু মেঘের দিকে তাকাতো তাহলে দেখতে পারতো মেঘের সেই ভয়ংকর চেহারা যা মেঘ সবার থেকে লুকিয়ে রাখে। মেঘ উঠে রোজের টেবিলের সামনে যায়,, তারপর সসের পুরো বোতলটা মুখে পুরে দিয়ে সস খেতে লাগলো,, আরাভ মেঘের কান্ডে ভয় পেয়ে যায়। ওর কাছে সবাই এক দিকে আর মেঘ একদিকে। ওর জীবনের সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট মানুষ হলো মেঘ যার কষ্ট আর রাগ দুইটার কেনোটাই ও সহ্য করতে পারে না।

আরাভ : মেঘ এমন করিস না। তোর ঝালে এলার্জি। প্লিজ ভাই রেখে দে। মেঘ!!

মেঘের হাত থেকে সসের বোতল কেড়ে নিলো আরাভ। তারপর পাশের টেবিল থেকে পানি খেতে দিলো। মেঘ পানি না খেয়ে চেয়ারে বসে পড়লো,,

আরাভ : মেঘ পানি খা। এমন করছিস কেন.? আমার ওপর রেগে আছিস.?কিন্তু কেন.? কারন যাই হোক মাফ করে দে।

রোজ আরাভের হাত থেকে পানির বোতল নিয়ে একঢোক খেয়ে মেঘের দিকে এগিয়ে দিলো।

রোজ : মানুষের সেটাই করা উচিত যেটা সে সহ্য করতে পারবে। আর কখনো রাগের বশে নিজের জ্ঞানশক্তি হারানো ঠিকনা। তাহলে সঠিক কোনটা সেটা বুঝতে পারবেন না।

মেঘ বোতল নিয়ে পানি খেতে লাগলো। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রোজ আরাভের সামনে গিয়ে বললো,,

রোজ : গতকাল যেটা হয়েছে সেটটার শোধ তুলছেন তুলুন কিন্তু যখন আমি বুঝবো যে অপমানের পাল্লা সমান হয়ে গেছে তখন কিন্তু চুপ থাকবো না। আর গতকাল আমার আপিলাকে কষ্ট দিয়ে যে ভুল করেছেন তার জন্য আপিলা হয়তো আপনাকে ক্ষমা করেছে কারন ও সহজ-সরল নরম মনের মেয়ে,, তাই যতদিনা আপনি ওর কাছে নিজ থেকে সবার সামনে দাড়িয়ে ক্ষমা চাইবেন ততদিন আমার কাছ থেকে শুধু ফিডব্যাক পাবেন।

আরাভ : তোমার আপিলার কাছ থেকে এই আরাভ খাঁন কখনো ক্ষমা চাইবে না। আর না তোমাকে ক্ষমা করবে। আমাকে অপমান করার শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।

রোজ : বেস্ট অফ লাক। দোয়া করি আপনি আপনার কাজ সফল হোন আর আমি আমার কাজে,, নিভি চলো। ক্লাসের সময় হয়ে গেছে।

নিভিকে নিয়ে বেড়িয়ে আসলো রোজ। কুহু অবাক হয়ে রোজের কথা শুনছে,, ঠান্ডা মাথায় অপমান করার সাথে সাথে দারুন হুমকিও দিতে পারে রোজ।

চলবে,,

[ স্টার্টিংটা একটু অন্যভাবে লিখেছি বলে অনেকের মানে গিল্টিফ্রেস মাইন্ডের মানুষদের অনেক সমস্যা হচ্ছে,, সমালোচনার তালিকায় যখন তখন গল্পসহ আমার নাম উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।কারন শুরুতেই শাড়ি নিয়ে লেখা,, তাই আবারও বলছি যাদের আমার গল্প নিয়ে সমস্যা তারা পড়বেন না। বাকি রইলো র্যাগিং, আপু (ভাইয়া) সব কলেজ সমান না এমন অনেক কলেজ আছে যেখানে সিকাউরিটির ব্যসস্থা কম আর প্রভাবশালীদের ক্ষমতার জোর বেশি। ফার্স্টে শাড়ি খোলার কথা বললেই সে লো মেন্টালিটির আর তাদের সমালোচনা করলে আপনি ফেমাস.? একটা কথা কি ভেবে দেখেছন যে আমাদের চেয়ে আপনারাই আমাদের কথা বেশি ভাবেন। আমাদের নিয়ে বেশি চিন্তা করেন। তার জন্য ধন্যবাদ।

কথাগুলো বলতাম না কিন্তু বলছি এ কারনে যে এই প্রথম আমি শাড়ি নিয়ে একটা গল্পের স্টার্টিং দিয়েছি। এবং এই দুইদিনেই দেখলাম কিছু মানুষের শাড়ি নিয়ে জ্বলে যাওয়া পোস্ট। তবে একটা কথা আমি কলেজে না উঠলেও কলেজে পড়াকালিন আমার বড় আপুকে র্যাগের শিকার হতে দেখেছি। তাকে অবশ্য শাড়ি নয় ওরনা খুলে নাইক্কাদের মতো গলায় ঝুলিয়ে কান ধরতে হয়েছিলো পাঁচ মিনিটের জন্য। আর যারা জীবনেও দুই চোখে র্যাগ দেখেনাই তারা তো সৌভাগ্যবান /সৌভাগ্যবতী। আপনাদের জীবন এভাবেই ঝামেলাবিহিন কাটুক এটাই দোয়া করি।

আর একটা কথা রোজ শাড়ি খুলেছে ঠিক আছে তবে ভেতরে জিন্স টপ ছিলো 😅😅😅 এটা স্কিপ করোনা।


শুধুমাত্র নিজের মতামত দিলাম অন্য লেখক-লেখিকা দের খবর জানি না। আর এসবে মাথাও ঘামাই না কারন লেখালেখি শখের বশে করি নিজের ইচ্ছায় তাই অন্যের কথা শুনে নিজের বিরুদ্ধে যাবো অতোটাও প্যারি গার্ল আমি না। যদিও আগে ছিলাম তবে নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলেছি,, সময় এবং সমাজের এবং বিভিন্ন শ্রেনির মানুষের সাথে তাল মেলাতে গেলে একটু বেতাল হতেই হয়। কেউ আবার ভাইবো না যে কথাটা তোমাদের ( সমালোচক+ব্লা ব্লা) বলছি। যাস্ট পোস্ট পড়ার পর ফিলিংস শেয়ার করলাম ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here