ভিলেন পর্বঃ৩৭

0
5185

#ভিলেন
#পার্টঃ৩৭
#লেখনীঃ Gazi Snigdha Hossain Mona

আকাশঃ সরি সিয়াম,
তোমাকে অপমান করার ইচ্ছা আমার ছিল না কিন্তু ব্যাপার টা এমন হয়ে গেল আসলে মেঘলার পড়াশুনা ত এখনো শেষ হয় নি তাই এখনী ওর বিয়ে সম্ভব না। আমার ব্যবহারের জন্য আমি দুঃখিত প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড।

বাসার সবাই আকাশের কর্মে বেশ অবাক হল তবে তাতে তার কিছু যায় আসে না সে ডেং ডেং করে নিজের ঘরে চলে গেল

আকাশ ঘরে যাওয়ার সাথে সাথেই মেঘলাও তার ঘরে গেল ।

মেঘলাঃ এটা কি হল..??

আকাশঃ তুই আমার ঘরে কি করছিস..??

মেঘলাঃ চুপ একদম চুপ একটাও অপমানজনক কথা বলবি না আমি তোর সাথে প্রেম করার জন্য আসি নি জবাবদিহি করতে এসেছি..

আকাশ ভ্রু কুঁচকে মেঘলার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাস করল,
জবাবদিহি তাও আমার কাছে..??

মেঘলাঃ হ্যা জবাবদিহি তুই বিয়েটা ভাংগলি কেন?

আকাশঃ ইচ্ছা হয়েছে তাই আর আকাশ চৌধুরী নিজের কাজের জবাদিহি করে না জানিস না?

মেঘলাঃকরতে হবে তুই সবসময় আমার বিয়ে ভেংগে দিস এটা কেমন কথা?যদি আমাকে ভালবেসে থাকিস সেটা অন্য ব্যাপার… বলিস না কেন?

আকাশঃ ভালবাসা.? আমি তোকে ভালবাসতে যাব কোন দুঃখে তোর বিয়ের দরকার নেই তাই ভেংগে দিয়েছি।

মেঘলাঃতুই কিন্তু বাড়াবাড়ি করছিস…

আকাশঃ বাইরে যাওয়ার রাস্তা টা ওদিকে, ১ মিনিটের মধ্যে বের না হলে তোর খবর আছে…

মেঘলাঃ…

আকাশঃ দাঁড়িয়ে আছিস যে..?? আচ্ছা দাঁড়া ব্যবস্থা করছি।

আকাশ উঠে দাঁড়াতেই মেঘলা দৌড়ে বাইরে চলে গেল।

মেঘলাঃ হনুমান কোথাকার সবসময় ভয় দেখায় যত্তসব।

আকাশ যদিও সবসময় রাগ দেখায় না বা বেয়াদবি করে না কিন্তু সে খুব বদমেজাজি নিজে যেটা করবে ভাবে সেটা করেই ছাড়ে তাই মেঘলার বিয়ের ব্যাপার নিয়ে কেউ আর কিছু বলল না।




রাতে সবাই খেতে বসেছে তখনী বাসার লেন লাইনে ফোন আসল।

মিলি গিয়ে ফোন তুলল।

মিলি; হ্যালো কে বলছেন..??
ও শারমিন ফুফি এতদিন পর আমাদের কথা মনে পড়ল বুঝি

অপর পাশ থেকে আরে মনে পড়ে না মানে তোদের ত মিস করি খুশির খবর ভাইজান কে ফোন টা দে মিলি..

মিলি ফোন নিয়ে আকাশের বাবার কাছে দিল।

আকাশের বাবাঃ হে শারমিন বল কতদিন পর ফোন দিলি..বাসার সবাই ভাল তো..??

শারমিন বেগমঃ হে ভাইজান সবাই ভাল ইনফেক্ট একটু বেশিই ভাল একটা খুশির খবর ও আছে..

আজাদ সাহেবঃ হুম বল বল কি খবর।

শারমিন বেগমঃ তোমার ভাতিজি নিঝুমের বিয়ে ঠিক হয়েছে সে জন্যই কল করলাম সবাই মিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে এসো..
ছোট ভাইজানকে বলবে ভাবীদের সহ বাচ্চাদের সবাইকে নিয়ে চলে আদতে কেউ যেন বাদ না থাকে আগে কতবার বলেছি আসলে না এবার আর কোন কথা শুনব না সবাইকে আসতেই হবে। নিঝুমের বিয়ে উপলক্ষে সবার সুইজারল্যান্ড ঘোরাও হয়ে যাবে।

আজাদ সাহেবঃ তোর একমাত্র মেয়ের বিয়ে আর আমরা আসব না তা কি করে হয় আমরা অবশ্যই আসব।

শারমিন বেগমঃ আচ্ছা ভাইজান রাখছি তাহলে।

আজাদ সাহেব ফোন রেখে বললেন,
আকাশে মা শোন আমার চাচাত বোন শারমিন আছে না ওই যে সুইজারল্যান্ড বিয়ে হয়েছে ওর মেয়ের বিয়ে আমাদের সবাইকে দাওয়াত করেছে। এই বিয়েতে আমাদের সবাইকে যেতে হবে কোনভাবেই মিস করা যাবে না। সবাই গোছগাছ করে নাও আমরা খুব শীঘ্রই যাচ্ছি।

মেঘলাঃ কি মজা আমরা সবাই সুইজারল্যান্ড যাব তাও আবার নিঝুম আপুর বিয়ে।

আকাশের মাঃ সবাইকে যেতে হবে..??

আজাদ সাহেব হ্যা অবশ্যই এবার না গেলে শারমিন খুব রাগ করবে শারমিন চাচাত বোন হলেও আমরা আপন ভাইবোনের মত একসাথে বড় হয়েছি নেহাৎ বিদেশে থাকে তাই কথা কম হয়।

আকাশের মাঃ তা নাহয় বুঝলাম কিন্তু নিলিমাদের কোথায় রেখে যাব?

আজাদ সাহেবঃ রেখে যাব কেন ওরাও যাবে..

নেহাঃ ওয়াও সবাই মিলে যাব খুব মজা হবে..

আকাশঃ সবাই না,
আমি যাচ্ছি না এসব গ্যাদারিং আমার পছন্দ না…

আজাদ সাহেবঃ চুপ করো তোমাকে এবার অবশ্যই যেতে হবে সবসময় attitude দেখানো একদম ঠিক না..তুমি কোন পার্টিতে যেতে চাও না আত্মীয়দের কাছ থেকে আমাদের কথা শুনতে হয় তুমি বুঝো না? এবার আর এটা হবে না।

আকাশের মাঃ চল না বাবা এমন করিস না।

নাবিলঃ আরে যাবে যাবে আমি আছি না ও যাবে ওর ঘাড় যাবে..
অবশেষে আকাশ রাজি হল,

সবাই খুব খুশি বেড়াতে যেতে পারবে…মেঘলার খুশি যেন আর ধরে না কারন তার নিঝুমের সাথে আগে থেকেই ভাল সম্পর্ক।





আকাশ যেহেতু অনেকদিন বিদেশে ছিল তাছাড়া এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট এর ব্যবসা হওয়ায় সে অনেক দেশে ঘুরেছে তাই তার উপড় দায়িত্ব পড়ল সবার পাসপোর্ট ভিসা চেক করে প্লেনের টিকিট কাটার।
আকাশ খুব দায়িত্বশীল তাই সময়মত সবার টিকিট কেটে নিয়ে আসল।
আকাশ এসে সবাইকে টিকিট দিয়ে উপড়ে চলে যেতে চাইল।

নাবিলঃ আরে আকাশ মেঘলার টিকিট টা দিবি না..?? দিতে ভুলে গেছিস ত।

আকাশঃ মেঘলার টিকিট মানে..?? ও ত কোথাও যাচ্ছে না তাই আমি সবার জন্য টিকিট এনেছি মেঘলা বাদে..

মেঘলাঃ আমি যাচ্ছি না মানে কি?

আকাশঃ বাংলাতেই ত বল্লাম শুনতে পাস নি? তুই যাবি না মানে তুই যাবি না এবার বুঝেছিস?

মেঘলাঃ সবকিছু তোর কথায় হবে নাকি..?? আমি কেন যাব না?

আকাশঃ আমি নিষেধ করেছি তাই আর কেন যেতে দিব না তার কইফত দিতে আমি বাধ্য নই।

মেঘলাঃ আমাকে কি তর পুতুল মনে হয় নাকি?তোর যখন যা মন চায় তুই করবি আর আমি মেনে নিব? এবার আর সেটা হচ্ছে ফুফি তোর একার না আনারো আমি যাব মানে যাবই।

আকাশঃ তুই গেলে আমি যাব না…

নাবিলের মাঃ আহ আকাশ কি শুরু করেছিস বল ত মেঘলা না গেলে বাসায় একা একা থাকবে কি করে আমরা সবাই ত চলে যাচ্ছি…কোন অঘটন ঘটলে..???

নাবিলঃ দেখ আকাশ এটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে ও যাবে না কেন আমরা সবাই মজা করব আর ও বাসায় বসে বসে বোরিং হবে এটা ঠিক না…

আকাশ মেঘলার পাসপোর্ট টা ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলল তোমাদের যা মন চায় করতে থাকো যতসব আমার আর প্যারা ভাল লাগে না আমি মরার আগে মেঘলার অত্যাচার মনে হয় না শেষ হবে।

মেঘলাঃ আচ্ছা বেশ আমি তোর সাথে একটা কথাও বলব না তাহলে তো হবে কথা না বললে প্যারা কি করে দিব..??

আকাশঃ তোর টিকিট কে কেটে দিবে? সেইম ফ্লাইটের টিকিট আর পাওয়া যাবে কিনা কে জানে?

মেঘলাঃ আমাকে কি তোর আবাল মনে হয় আমার টিকিট অন্য কেউ কাটতে হবে কেন আমার টিকিট আমিই কাটতে পারি ভুলে যাস না আমি ছোট থেকেই ট্রাভেলিং করি।মেঘলা পাসপোর্ট টা তুলে নিল।

আকাশঃ কোথায় যাচ্ছিস..??

মেঘলাঃ টিকিট আনতে..??

আকাশঃ তাই নাকি? তো টাকা আছে তোর কাছে..??

মেঘলাঃ হুম ওয়ালেট ভর্তি টাকা আছে বলেই মেঘলা একটানে আকাশের ওয়ালেট টা নিয়ে নিল ..

আকাশঃ আরে আরে কি করছিস..??

মেঘলাঃ টাকা নিচ্ছি আমার টাকা লাগবে ড্রেস কিনব টিকিট কাটব পার্লার যাব আরো অনেক কাজ..

আকাশঃ মানে কি যেখানে আমি তোকে নিতেই রাজি না তুই সেখানে আমার টাকা খরচ করে যাবি..??

মেঘলাঃ তোর কাছ থেকে নেওয়ার ইচ্ছে ছিল না কিন্তু তুই এত ত্যাড়ামি করছিস তাই নিব যাক গে আমার সময় নেই যেতে হবে কালকেই ত ফ্লাইট এখনো অনেক কাজ বাকি।

আকাশঃ মেঘলা ভাল হচ্ছে না আমার ওয়ালেট ফিরত দে বলছি তোকে আমি কোন টাকা দিব না বুঝিছিস বলে আকাশ মেঘলার হাত থেকে ওয়ালেট টা নিয়ে নিল।

আকাশঃ এবার দেখি তুই কি করে টিকিট কাটিস?

মেঘলাঃ টাকা দিবি না?রাগি লুক নিয়ে

আকাশঃ প্রশ্নই উঠে না…

মেঘলাঃ লাস্টবার জিজ্ঞাস করছি দিবি কি না?এটাই কিন্তু শেষ চান্স এর পর কপাল চাপড়াতে হবে কিন্তু।

আকাশঃ না একটা পয়সাও দিব না।

মেঘলা আকাশের দিকে ভেংচি কেটে চলে যাচ্ছিল
তখন আকাশ নাবিল কে ইশারা করল,

নাবিলঃ আরে টাকা ছাড়া কোথায় যাচ্ছিস আমার ওয়ালেট নিয়ে যা।

মেঘলাঃ লাগবে না বলে মেঘলা বাইরে চলে গেল

আকাশঃ দেখেছিস তেজ কত আরে যা যা টাকা এত সহজ না কেউ দিবে না।

নাবিলঃ তুই ও না আকাশ বেশি বেশি করিস।



অনেক্ষন হয়েছে মেঘলা বের হয়েছে এখনো ফিরছে না দেখে আকাশের চিন্তা হতে লাগল…

আকাশঃ সাথে কোন টাকা নেই তাহলে এতক্ষন ও বাইরে কি করছে?আমাকে টেনশন নআ দিয়ে মেঘলার শান্তি হয় না?আকাশ মেঘলার কথা ভাবছে তখন আকাশের ফোনে একটা ম্যাসেজ আসল।

আকাশ ফোন টা হাতে নিয়ে চমকে উঠল।

ম্যাসেজঃ you have withdraw your all credit so please reload your card…

আকাশঃ আমি কার্ড থেকে টাকা তুলেছি মানে কি? তাও সব টাকা? আকাশ অবাক হয়ে ওয়ালেট টা হাতে নিল আর দেখল তাতে কার্ড নেই।
আকাশের বুঝতে বাকি রইল না মেঘলা কার্ড টা নিয়ে গেছে।

আকাশঃ এই জন্যেই বলেছিল এটাই লাস্ট চান্স…
ও গড মেঘলাকে সোজা করা জাস্ট ইম্পসিবল. এতগুলি টাকা দিয়ে কি করেছে কে জানে।কিন্তু কার্ডের পিন জানল কি করে?
আকাশ নিচে মেঘলার কন্ঠ শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি নিজের ঘর থেকে বের হয়ে নিচে আসল।আর দেখল
মেঘলা বাসার সবার জন্য গিফট এনেছে ছোট মা বড়
মা,নাবিল,মিলি,নেহা,ঈষান এমনকি নিলিমার জন্যেও।
সবাই ত মেঘলার উপড় খুব খুশি খুব দামী দামী গিফট এনেছে সে।

আকাশ কে দেখে মেঘলা হাসতে হাসতে বলল,
ভাইয়া দেখত কেমন মার্কেটিং করলাম?
মেঘমার কান্ড দেখে রাগে আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে

মেঘলাঃ হি হি হি আমার পিছনে লাগিস এবার দেখ কেমন লাগে। না পারবি কিছু বলতে না পারবি সইতে। এখন যদি বলিস আমি তোর টাকায় শপিং করেছি বড় মা আমাকে বকা দিবে তুই ত সেটা মানতে পারবি না তাই চুপচাপ সহ্য করা ছাড়া তোর আর কিছুই করার নেই(মনে মনে)

মেঘলাঃ ভাইয়া তোর জন্য একটা গেঞ্জি এনেছি দেখ কত সুন্দর।

আকাশ দাঁত কটমট করতে করতে বলল যাক এতগুলি টাকার মধ্যে তবুও কিছু অন্তত কাজে লাগল

মেঘলাঃ হুম হুম একদম,
রাস্তার মাথায় যে ভ্যানগাড়িটা বসে সেখান থেকে তোর ফেবারিট কালার লাল রং এর এই গেঞ্জিটা এনেছি….

আকাশঃ কি….🤨🤨

মেঘলাঃ নে নে ট্রায়াল দিয়ে দেখ।

আকাশঃ তবে রে…

মেঘলা উঠে দিল দৌড়।
সবাই নিজেদের গিফট নিয়ে ব্যাস্ত আকাশ মেঘলাকে ধরার চেস্টায় মেঘলার পিছনে ছুটছে।

মেঘলা দৌড়াতে দৌড়াতে আকাশের রুমে চলে গেল আকাশ ঘরে ঢুকে দরজা লক করে দিল।

আকাশঃ এবার কোথায় যাবি হুম..

মেঘলাঃ আ আ আমি মানে…
কি যে বলব ধুর বাবা এই ঘরে কেন ঢুকেছিলাম🥵

_শুন না ভাইয়া আমার কাছে না টাকা ছিল না নাহলে তোর জন্য ভাল কিছু আনতাম।

আকাশঃ তাই বুঝি বলতে বলতে আকাশ মেঘলার দিকে এগিয়ে আসছে।

মেঘলাঃ আমি কিন্তু কেঁদে দিব..

আকাশঃ আজ আর এসব ট্রেড দিয়ে লাভ নেই ডায়নীবুড়ি আমার সবগুলি টাকা জলে ফেলে দিলি…??

মেঘলাঃ আমি ত ভালমত চেয়েছিলাম তখন দিলেই ত এসব করতাম না

আকাশঃ নিজের জন্য কিছু কিনতি তাও না হয় মেনে নিতাম।অন্যদের জন্য আমার সব টাকা নস্ট করে দিলি?

মেঘলাঃ এত টাকা কিভাবে খরচ করব ভেবে না পেয়ে নিঝুম আপুর জন্য একটা ডায়মন্ড সেট নিলাম আর বাকি টাকায় সবার জন্য গিফট।

আকাশঃ ইচ্ছা করছে তোকে…

মেঘলাঃ আদর করতে তাই না…??নে কর কর

আকাশঃ তুই আমার কে হোস তোকে আদর করব কেন আজব?

মেঘলাঃতা অবশ্য ঠিকি বলেছিস আমি কেউ হই না শুধু নিজের সব ইম্পর্টেন্ট পিন গুলি আমার নামে দিস এই আর কি.. ব্যাপারটা কিন্তু ভাল লক্ষন তানাহলে আজ টাকা তুলতাম কি করে? না আমি কিন্তু বলছি না তুই আমাকে ভালবাসিস জন্যে এই পিন দিয়েছিস আসলে তুই মাথা মোটা ত তাই পিন ভুলে যাস তাই আমার নামে দিয়েছিস তাই না?

আকাশঃ উফফ…

মেঘলাঃ নে কার্ডটা নে রিলোড করে নিস। দেশ বিদেশে গাড়ি সেল করিস তোর কাছে কয়েক লাখ টাকা কোন বিষয় না তবে এরপর থেকে আমার পিছনে লাগার আগে আজকের কথা মনে রাখিস কেমন? আর একটা কথা ভুলে যাস না আকাশ কে সাইজ করতে মেঘলার ২ মিনিট ও সময় ও লাগবে না নেহাৎ ভালবাসি তাই কষ্ট দিতে চাই না।




চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here