ভিলেন পার্টঃ৩৯

0
5022

#ভিলেন
#পার্টঃ৩৯
#লেখনীঃ Gazi Snigdha Hossain Mona

আমি এবার কি করব? কিভাবে সামলাব? কেন এসব বলতে গিয়েছিলাম?

আকাশঃ কিরে তুই শুরু করবি নাকি আমি….???

মেঘলাঃ ভাইয়া ইয়ে মানে…

আকাশঃ কিসের মানে? আমাকে ফ্লার্ট করা শিখা আমি শিখতে চাই।

মেঘলাঃ তোকে না খুব সুন্দর লাগছে…

আকাশঃ কি..??

মেঘলাঃ তুই অনেক ভাল একদম কিউটের ডিব্বা

আকাশঃ কিসব আবল তাবল বলছিস?

মেঘলাঃ এগুলা ফ্লার্ট না..??

আকাশঃ আচ্ছা করা শেষ ফ্লার্ট?

মেঘলাঃ হুম…তাহলে এবার আমি করি তোর সাথে..??

মেঘলাঃ তুই করবি কেন?

আলাশঃ ওমা আমার বদলে এখানে অন্য কেউ থাকলে তুই এগুলা বলার পরে রিপ্লে দিত না…??

মেঘলাঃ…..

আকাশ আর কিছু না বলে মেঘলার গালে হাত বুলাতে বুলাতে বলল উফস কি তুলতুলে গাল ইচ্ছে করছে….

মেঘলাঃ… এ্যা এ্যা…….এ্যা

আমি কান্নার অভিনয় করতে চেয়েছিলাম কিন্তু শুরু করার আগেই ভাইয়া আমার মুখ চেপে ধরল

আকাশঃ আরে কি করছিস? সবাই জেগে যাবে তো..??

মেঘলাঃ আর কখনো উল্টা পাল্টা কিছু বলব না এবারের মত ছেড়ে দে প্লিজ…

আকাশঃ আচ্ছা আচ্ছা থাক কিছু করব না কাঁদতে হবে না যা এবারের মত ছেড়ে দিলাম।

মেঘলাঃ যার বাবা কান্নার অভিনয় করে বেঁচে গেলাম… (মনে মনে)

সেই থেকে ভাইয়ার সাথে আর কোন কথা বলিনি।ভাইয়া সারা রাস্তা ঘুমিয়েছে আমি ভাইয়ার ফোনে গেম খেলতে খেলতে।





আমরা যখন পৌঁছালাম প্রায় ভোর রাত।
শারমিন খালা আমাদের নিতে গাড়ি পাঠিয়েছে প্রথন গাড়িতে বাড়ির সব বড়রা চলে গিয়েছে দ্বীতিয় গাড়িতে ভাইয়া আমি সহ বাকিরা যাব

কিন্তু এয়ারপোর্টে থেকে বেরিয়েই খেয়াল করলাম এখানে প্রচুর ঠান্ডা অন্যদের ঠান্ডা লাগলেও সবাই মোটামুটি সামলে নিয়েছে কিন্তু আমার ঠান্ডার সমস্যা আছে তাই সহ্য হচ্ছেনা আমি রীতিমতো কাঁপছি…

আকাশঃ এই যে মহিলা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে হবে? চলুন।

মেঘলাঃ ভাইয়া আমার না খুব ঠান্ডা লাগছে..

আকাশঃ লাগাটাই স্বাভাবিক এসময় সুইজারল্যান্ড ঠান্ডা থাকবে এটা তো সবাই জানে সে যাইহোক এখন শীতের কাপড় কোথায় পাবি ল্যাগেজে অবশ্য দিয়েছিলাম কিন্তু লাগেজ ত ছোট মাদের গাড়িতে নিয়ে গিয়েছে।

মেঘলাঃ ওহ….

আকাশঃ কি আর করা যাবে চলে আসুন বলে আকাশ ভাইয়া আমার দিকে ২ হাত বাড়িয়ে দিল আমি সুযোগ টা মিস করলাম৷ না দৌড়ে গিয়ে ঘাপটি মেরে ভাইয়ার জ্যাকেটের ভিতর ঢুকে গেলাম।

একে তো জ্যাকেট আবার ভাইয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে তাই র ঠান্ডা লাগছে না বরং ব্যাপার টা খুব ভাল লাগছে কেন জানি না ভাইয়া আশে পাশে থাকলে আমার খুব ভাল লাগে।




বেশকিছুক্ষন পর গাড়ি এসে একটা হোটেলের সামনে থামল। সব গেস্টদের এখানে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে…

ভাইয়া এবার নিজের জ্যাকেট টা আমাকে দিয়ে দিল।
সবাই মিলে হোটেলে গেলাম সবার জন্য আলাদা আলাদা রুম।

যে যার রুমে যাচ্ছে কিন্তু ভাইউয়া রিসিপশনে আটকে গেল।দেখে অবাক হলাম তারপর বুঝলাম ওর হয়ত এখানে কাজ আছে। নাবিল ভাইয়া আকাশ ভাইয়াকে ডাকল।

নাবিলঃ কি রে আয়..??

আকাশঃ তোরা যা আমি একটু পরে আসছি।

সবাই চলে গেল।আমিও নি নিজের ঘরে চলে আসলাম। রাতে গায়ে হলুদ সারাদিন সবাই বিশ্রাম নিয়েছে কিন্তু আমি এখানে বিশ্রাম নিতে আসি নি সারাদিন ধরে গেস্টদের সাথে মজা করেছি মেঘলা নিঝুম আপুর সাথেঈ আমার ভাল সম্পর্ক আছে তাই সারাদিনটা খুব ভাল কাটল। অনেকদিন পর নিজেকে অনেকটা হালকা মনে হল।

সন্ধ্যায় সবাই হলুদের অনুষ্ঠানে যাবে আমিও যাব তার জন্য সে শাড়ি পড়েছি, খুব সুন্দর করে সেজিছিও কিন্তু নিজের রুম থেকে বেরিয়ে নিচে যাওয়ার আগে হঠাৎতেই আমার হাতে টান পড়ল বরাবরের অজানা কোন গন্তব্যে গিয়ে পড়লাম.যেখানে আমাকে নেওয়া হয়েছে সেখানে আবছা আলো আবছা অন্ধকার থাকায় দেখে বুঝার উপায় নেই পাশের ব্যাক্তিটি কে..

আমি কিছু বলতে যাবে তার আগেই সামনে থাকা ব্যাক্তিটি আমাতর ঠোঁট ২ টি তার নিজের দখলে করে নিল।আমি বেশকিছুক্ষন জোরাজোরি করি ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিলাম হাল ছাড়ার একটা কারন ও আছে কারন আমি জানি এটা ভাইয়া ছাড়া আর কেউ না আর আমি ওর সাথে জোর করে পারব না জানি তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি।

কিছুক্ষব পর নিজ থেকে ছাড়ল,

মেঘলাঃ কি হল এটা..?? তোর কি লজ্জা বলতে কিছু নেই? নাকি নিজেকে গন্ডার মনে করিস তোর সাথে জোর করে পারি না বলে সবসময় জোর করতে থাকিস সমস্যা কি তোর.?

আকাশঃ সমস্যা আমার না তোর,
১ম সমস্যা; এত লিপষ্টিক দিয়ে কাকে দেখাতে যাচ্ছিস? সে যাইহোক যাকে খুশি দেখা সমস্যা সেটা না সমস্যা হল তোকে খারাপ দেখাচ্ছিল এউ কালার টা তোকে সুট করে নাই তাই মুছে দিলাম।
২য় সমস্যা; তখন ঠান্ডায় মরে যাচ্ছিলি এখন ঠান্ডা লাগে না? শীতের কাপড় ছাড়া কোথায় যাচ্ছিস?

মেঘলাঃ তোর না মাথা খারাপ হতে গিয়েছে হলুদে আমি শীতের কাপড় পড়ে যাব?

আকাশঃ না একদমি না তা যাবি কেন গেলে ত ছেলেদের কোমরের ভাঁজ দেখানো যাবে না তাই না?

মেঘলাঃ ওই….

আকাশঃ সারাদিন অনেক তিড়িংবিড়িং করেছিস কিছু বলি নি এখন একটু বাড়াবাড়ি করবি তো কপালে দুঃখ আছে বলে দিলাম বলেই একটা জ্যাকেট পরিয়ে দিল।

মেঘলাঃ নিকুচি করেছে তোর জ্যাকেটের আমি এটা পরব না।

আকাশঃ একবার খুলে দেখা…

আমিও খুলে ফেল্লাম কিন্তু তারপর যা ঘটল আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি ন। আমি জ্যাকেট খুলার সাথে সাথেই ভাইয়া হাঁটু ঘেরে বসে আমার পেটে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে দিল।

ভাইয়ার এমন আচমকা কর্মের জন্য আমি একদমি প্রস্তুত ছিলাম না। ভাইয়া এটা করতে পারবে আমি ভাবতেও পারি নি যে ছেলে মেয়েদের টাচ করে না সে আমাকে কিস করে সেটা নাহয় মেনে নিয়েছিলাম কিন্তু তাই বলে পেটে…

আকাশঃ আলতু ফালতু চিন্তা করা বাদ দে আমি চাইলে সব পারি নিজের ঠোঁটে হাত বুলাতে বুলাতে উঠে দাঁড়াল।
আমি হতবাক দৃষ্টিতে ভাইয়ার দিকে দিকে তাকিয়ে বললাম কি করলি এটা..??

আকাশঃ তোর ইচ্ছা পূরন করে দিলাম যে কারনে পেট বের করে কাপড় পরতে চাস সেটাই করে দিলাম যদি শখ না মিটে থাকে আবার খুলে ফেলিস বলে আমাত হাতে জ্যাকেট টা দিয়ে চলে গেল।

মেঘলাঃ আমিই মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বোকা মেয়ে তা নাহলে ত ভাইয়া কি কি করতে পারে বুঝতে পাররাম বুঝতে পারি না বলেই আজ আমার এই দশা।আমি একরাধ বিরক্তি নিয়ে জ্যাকেট পরেই নিচে গেলাম

আবছা আলোয় আমি ভাইয়াকে ভালভাবে দেখতে পারে নি কিন্তু নিচে এসে দেখলাম ভাইয়া হলুদ পাঞ্জাবি পড়েছে সাথে ম্যাচিং কুর্তি। খুব সুন্দর বানিয়েছে তাজে তবে যেটা মানায় নি সেটা হল আকাশ ভাইয়া অনেকগুলি মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল…

মেঘলাঃ নিজে হাজার টা মেয়ের সাথে মিশতে পারবে আর আমি সাজলেই দোষ না এসব হবে না আমি জ্যাকেট খুলে ফেলেলাম।




চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here