#ভিলেন
#পার্টঃ৪৭
#লেখনীঃ Gazi Snigdha Hossain মনা
মেঘলা ওখানে বসে আছে,আকাশ সহ অন্যরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
আকাশঃ এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কি লাভ? সবাই নিজের ঘরে গেলে হয় না? রাত হয়েছে তো নাকি..??
নাবিলের মাঃ মেয়েটা কি সারারাত এভাবেই থাকবে..??
আকাশঃ না এভাবে থাকবে কেন সময়মত আমি খুলে দিব তোমরা যাও এখন।
নাবিল আকাশ কে রাগাতে চায় না তাই সবাইকে অনুরোধ করে বিদায় করে দিল।
আকাশঃ তুই ও যা…
নাবিলঃ না আমি যাব না এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবি না বলে দিলাম
আকাশঃ বেশ থাক তাহলে…
নাবিলঃ মেঘলার না হয় শাস্তি পাওয়ার কথা কিন্তু তোর ত না তাই না? তাহলে হাত টা বাঁধছিস না কেন?রক্ত পড়ছে তো।
আকাশঃ তোকে থাকতে দিয়েছি তাই বলে ভাবিস না বকবক করার পারমিশন দিয়েছি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক।
আকাশ আর নাবিল কথা বলছিল তখনী মেঘলা ঘরের ভিতর থেকে বলে উঠল
মেঘলাঃ দেখিস পা ঠিক হলেই আমি এখান থেকে চলে যাব।থাকব না এই দজ্জালের কাছে…
আকাশঃ কি হয়েছে..?? মুখে খই ফুটেছে মনে হচ্ছে।পায়ে নাকি ব্যাথা তাহলে এত কথা বলছিস কি করে?আর এত যে কথা বলছিস ব্যাথা কি আমি দিয়েছি নাকি?তুই ত নিজে পেয়েছিস।
আকাশ মেঘলাকে ধমকাচ্ছে তখন দরজার কলিং বেল বেজে উঠল।
আকাশঃ কে আসল আগে দেখি তারপর তোর ব্যাবস্থা করব।
মেঘলাঃ ভিলেনের বাচ্চা খালি ভিলেনিই করতে পারবি তুই একটা বজ্জাত আমি তোর নামে মামলা করব।
আকাশ কথা কানে না নিয়ে চলে গেল
নাবিলঃ হয়েছে চুপ থাকেন মার খাওয়ার কোন মানে হয় না।
আকাশ গিয়ে দরজা খুলে একজন কে নিয়ে আসল।
নাবিল অবাক হল…
নাবিলঃ ডাক্তার আংকেল আপনি..??
ডাক্তার সাহেবঃ আকাশ বলল তোমাদের বোন নাকি অসুস্থ তাই তো আসলাম।
নাবিলঃ এইটুকুর জন্য ডাক্তারের কি প্রয়োজন ছিল? ফাঁদ খুলে বেন্ডেজ করে দিলেই ত হত।
আকাশঃ আমাকে কি তোর গাঁধা মনে হয় যে ফাঁদ খুলার জন্য ডাক্তার আনব।আংকেল কে আসতে বলেছি মেঘলাকে ইনজেকশন দেয়ার জন্য।
মেঘলাঃ ইনজেকশন..?? ইনজেকশন মানে কি..??
আকাশঃ এটা থেকে তোর সেপ্টিক হতে পারে তার জন্য টিকা দিতে হবে।
মেঘলাঃ অসম্ভব আমি কোন টিকা ফিকা দিব না তাতে মরে গেলেও আমার কোন আপত্তি নেই।
আকাশঃ আমার আপত্তি আছে। বলে আকাশ মেঘলার দিকে এগিয়ে গেল।
মেঘলাঃ কাছে আসবি না বলে দিচ্ছি আমি ইনজেকশান দিব না আ আ আ…
আকাশঃ আমি তোর অনুমতি চেয়েছি? বলে গিয়ে মেঘলাকে কোলে নিয়ে নিল।
মেঘলাঃ ছাড় বলছি আমি যাব না
আকাশ মেঘলাকে নিয়ে ঘরে চলে গেল।
মেঘলাঃ একটা ভাল কথা বলছি আমার কিছু হবে না ভাইয়া ইনজেকশন দিস না প্লিজ।ডাক্তার আংকেলকে বল ইনজেকশনের বদলে ওষুধ দিতে প্লিজ ভাইয়া।
ডাক্তার সাহেবঃ মেঘলার ইনজেকশনের ভয় টা আর গেল না সেই ছোট বেলা থেকে এই অবস্থা ফাঁদের এত ব্যাথা সহ্য করে ফেলছো আর এইটুকুর জন্য ভয় পাচ্ছে।
আকাশঃ পারবে না মানে আপনি দিন আংকেল।
এই নাবিল ওকে ধর তো।
নাবিলঃ আমি কেন তুই ধর
আকাশ; আমি এখানেই আছি..তুই ধর।
নাবিল এগিয়ে যেতেই
মেঘলাঃ আমার কথা কি তোদের কানে যাচ্ছে না…?? কেউ আসবি না আমার কাছে আমি এসব টিকা দিব না কে কোথায় আছো আমাকে বাঁচাও আকাশ দজ্জাল আমাকে মেরে ফেলল গো।
আকাশ;চিৎকার করে লাভ নেই কেউ আসবে না তাই চুপচাপ যা হচ্ছে হতে দে।
মেঘলাঃ আর কত কষ্ট দিবি..??
আকাশঃ সিনক্রিয়েট না করলে হয় না তাই না? যতসব আংকেল আপনি দেরি করছে কেন?
মেঘলাঃ আকাসের বাচ্চা তোর জীবনেও ভাল হবে না। আমাকে নীরিহ পেয়ে যা মন চায় করছিস।
আকাশ নাবিলকে ইশারা করল,নাবিল গিয়ে মেঘলাকে ধরল।ডাক্তার ইনকেজশন দেয়ায় মেঘলা চেঁচিয়ে উঠল
মেঘলা চিৎকার করার সাথে সাথে আকাশ নিজের কান চেপে ধরল।তারপর জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগ ল্ল
আকাশের কান্ড নাবিল অবাক হয়ে গেল।
আকাশঃ আরে এভাবে থাকানোর কি আছে…?? এত জোরে চিৎকার করল তাই কান ধরেছি।
মেঘলাঃ আমার এমন লাগছে কেন?
নাবিলঃ কেমন লাগছে..??
মেঘলাঃ সব কেমন যেন ঘ ঘ ঘুরছে….. বলতে বলতে মেঘলা বিছানায় ঢলে পড়ল।
ইনজেকশনের পর আকাশ ডাক্তার কে বিদায় করে দিল
নাবিলঃ কিছুই ত বুঝলাম না মেঘলার কি হল..??
আকাশঃ কিছুই হয় নি ঘুমাচ্ছে।
নাবিলঃ তারমানে ডাক্তার মেঘলাকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছে?
আকাশঃ হুম
নাবিলঃ কিন্তু কেন..??
আকাশ এসে মেঘলাকে সোজা করে শুয়িয়ে দিল নাবিল তাকিয়ে তাকিয়ে সব দেখছে আর বুঝার চেষ্টা করছে কি হচ্ছে ব্যাপারটা।
আকাশ এবার গিয়ে মেঘলার পায়ের কাছে বসে ফাঁদ টা খুলতে শুরু করল।
নাবিলঃ কত ভালবাসা প্রেমিকা ব্যাথা পাবে জন্যে আগে ঘুম পারিয়ে নিল কর আহ্লাদ বাবা।
আকাশঃ এই ধরনের ফাঁদ তুই কখনো খুলেছিস..?? এটা খুলতে কমপক্ষে ১৫ থেকে মিনিট সময় লাগবে আর খুলার সময় পায়ে আরও শক্ত হয়ে আটকাবে মেঘলার চেতন থাকা অবস্থায় এটা খোলা অসম্ভব ছিল না আর খুলতে পারলেও ওর খুব কষ্ট হত।ওকে এত কষ্ট দিতে চাই নি তাই ঘুম পাড়িয়ে নিলাম।
নাবিলঃ তানাহয় বুঝলাম কিন্তু সেটা ওকে বললেই ত হত।
আকাশঃ ইনজেকশনের কথা শুনলে ও সিনক্রিয়েট করত।কান্নাকাটি করত ওর কান্না আমার ভাল লাগে না মেঘলা ইনজেকশান কে বরাবরেই খুব ভয় পায়।
নাবিলঃ আচ্ছা ওকে নাইবা বললি আমাকে তো বলতে পারতি জেদ দেখিয়ে নিজের হাতে ব্যাথা দিলি কেন?
আকাশঃ জেদ দেখাই নি,একটা অযুহাতে মেঘলার কষ্ট এর ভাগ নিলাম ভালবাসা শুধু মুখে বললেই হয় নাকি? যদি ওর কষ্টের ভাগেই নিতে না পারলাম তাহলে সেটা কেমন ভালবাসা হল?
নাবিলঃ তুই পারিস ও…
আকাশঃ জানিস মেঘলা যেদিন কান ফুঁড়া করল মনি মেঘলার সাথে আমাকেও পার্লারে নিয়ে গিয়েছিল। কান ফুঁড়া করে মেঘলার সেকি খুশি কিন্তু ফুঁড়া করার সময় মেঘলা ভাইয়া বলে যে চিৎকার করেছিল সেদিনের পর থেকে কেন জানি এই চিৎকারের আওয়াজ টা আমি সহ্য করতে পারি না। আওয়াজ টা শুনলেই মনে হয় কেউ যেন মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করছে।এই যন্ত্রনায় মেঘলাকে আমি নাক ফুঁড়তে দেই নি আজ ও যখন চিৎকার করেছিল আমার মাথা ঝিমঝিম করছিল।তাই সেখান থেকে চলে গিয়েছিলাম আমি যদি তখন সিনক্রিয়েট না করতাম তুই এটা খুলার চেষ্টা করতি আর মেঘলা এভাবেই চেঁচাত।
তাতে মেঘলার আগে আমি নিজেই জ্ঞান হারাতাম।
নাবিলঃ অদ্ভুত ভালবাসা…কিন্তু ও তো তোকে ভুল বুঝল একবার ভাল ভাবে বল্লেও ত পারতি।
আকাশঃ ও ভাল ব্যাবহারের উপযুক্ত না ওকে বলেছিলাম রুমে যেতে ও রুমে না গিয়ে স্টোর রুমে কেন গেল তাই রেগে গিয়েছিলাম।
নাবিলঃ তোর ভালবাসা একটু না সবার চেয়ে একদম আলাদা।
।
।
।
অনেক্ষনপর আকাশ মেঘলার পায়ের ফাঁদটা খুলতে পারল আর তারপর বেন্ডেজ ও করে দিল।
তারপর এসে মেঘলার কপালে চুমু খেল।
আকাশঃ পাগলিটাকে ইনজেকশন না দিলে সারাটা রাত কষ্ট পেত ঘুমাতে পাত না।ও যে কবে নিজের খেয়াল রাখতে শিখবে..??
নাবিলঃ এত ভালবাসিস..?
আকাশঃ কোন সন্দেহ আছে নাকি…
নাবিলঃ না নেই আচ্ছা যাই হোক ফাঁদ খুলা হয়েছে এবার আমি যেতে পারি
আকাশঃ হুম যা আমি আজ ওর সাথেই থাকব।
নাবিল এসে আকাশের হাতে বেন্ডেজ করে দিয়ে চলে গেল।
আকাশ কিছুক্ষন মেঘলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মেঘলার সাথেই শুয়ে পড়ল।
।
।
।
।
চলবে