ভিলেন পার্টঃ৬৮

0
4546

#ভিলেন
#পার্টঃ৬৮
#লেখনীঃ Mona Hossain

ফ্ল্যাশব্যাক
মেঘলাঃ একজন মা হয়ে নিজের ছেলেকে কষ্ট দিতে চাও কেমন মা তুমি?মেয়ে হয়ে অন্য একটা মেয়ের দুর্বলতা নিয়ে ব্লেকমেইল করো কেমন মেয়ে তুমি
ছিঃ ছিঃ তোমার লজ্জা হওয়া উচিত।তোমাকে বড় মা বলতে ঘৃনা হচ্ছে…

আকাশের মাঃ চুপ একদম চুপ শোন আমার ছেলের ভাল আমার যে বেশি কেউ বুঝে না।তোর কি যোগ্যতা আছে আকাশের বউ হওয়ার? আজ পর্যন্ত কোন সুখ দিতে পেরেছিস আকাশ কে সারাক্ষন জ্বালিয়ে মারিস। সারাজীবন তোর সাথে থাকলে আকাশ পাগল হয়ে যাবে। মা হয়ে আমি সেটা চেয়ে চেয়ে দেখব?

মেঘলাঃ তুমি যা বলছো হয়ত ঠিকি বলছো কিন্তু ও যে আমায় পাগলের মত ভালবাসে ভালবাসে বলেই এত কিছুর পরেও আমাকে ছাড়তে পারে নি। আমার কোন যোগ্যতা না থাকলেও ও আমাকে নিয়েই খুশি। তুমি যত চেষ্টায় করো আমাকে ওর কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে না বড় মা। এমন কি আমি নিজে চাইলেও পারব না ও যদি সহজে আমার ভালবাসা না পায় তাহলে জোর করে কেড়ে নিবে তবুও আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না।

আকাশের মাঃ ভালবাসা….? হা হা হা ভালবাসা বলতে কিছু হয় নাকি সবি মোহ তুই যদি ওকে সেদিনের সত্যিটা না বলিস কিছুদিন পরেই আকাশ আর তোকে সহ্য করতে পারবে না আসলে আকাশ এখনো তোর যৌবনের নেশায় ডুবে আছে। তোকে ব্যবহার করা হয়ে গেলে ছুড়ে ফেলে দিবে মিলিয়ে নিস।

মেঘলাঃ সব ছেলেরা একরকম হয় না বড়মা। ভাইয়ার
আমাকে ব্যবহার করার হলে অনেক আগেই করতে পারত।ছোট থেকে তো ওর কাছেই বড় হয়েছি সুযোগের অভাব ছিল না কিন্তু কোন দিন চোখ তুলেও তাকায় নি আকাশের মত ছেলে হাতে গুনা কয়েকটা হয় বড়মা আফসোস তুমি মা হয়েও নিজের ছেলেকে চিনতে পারলে না।

আকাশের মাঃ আমি আমার ছেলেকে ভালই চিনি ওর মনে কি চলছে আমি ঠিকি জানি ও তোকে ভালবাসার জন্য নিয়ে আসে নি শাস্তি দেয়ার জন্য নিয়ে এসেছে।তোর ভয় করছে না?

মেঘলাঃ করছে খুব ভয় করছে তবে নিজের জন্য না তোমার জন্য যেদিন ও সত্যিটা জানতে পারবে সেদিন তোমার কি হবে।

আকাশের মাঃ তুই সত্যিটা বললে তোর সাথে কি হবে সেটা তুই ভাল করেই জানিস।

মেঘলাঃ তুমি বড্ড বোকা গো বড় মা তোমার কি মনে হয় আমার সাথে কি ঘটবে সেই ভয়ে আমি ওকে কিছু বলি নি? ভুল ভাবছো প্রথম দিকে ভয় পেলেও এখন আকাশেত ভালবাসা দেখে ভয় চলে গিয়েছে। আমি বুঝে গিয়েছি আমার সাথে যাই ঘটুক আকাশ সবসময়ের জন্য আমার পাশেই থাকবে।

আকাশের মাঃ তারমানে এখন তুই ওকে সব বলে দিবি?

মেঘলাঃ না বলব না। আমিও ওকে ততটাই ভালবাসি যতটা ও আমায় বাসে তাই এত বড় কস্ট টা ওকে দিতে পারি নি। ও যে তোমায় বড্ড ভালবাসে সেই তুমি ওর ভালবাসা কেড়ে নেয়ার জন্য এত নোংরা একটা গেম খেলেছো সেটা জানলে ও কতটা কষ্ট পাবে সেটা ভেবেই বলি নি আমি চাই না আমার জন্য ভাইয়া এতিম হোক আমি চাই নি আমার জন্য কোন মা বাবা সন্তান থাকা সত্ত্বেও নিঃসন্তান হোক। কিন্তু তুমি আমাকে যতই ভয় দেখাও আমি আর ওকে ছেড়ে যাব না।

আকাশের মাঃ তোর ছাড়তে হবে না আকাশ নিজেই ছাড়বে।

মেঘলাঃ আচ্ছা দেখে নিও। আমি ওকে কিছুই বলব না তারপরেও ও আমায় একেইভাবে ভালবেসে যাবে।

আকাশের মাঃ আমিও দেখব তোদের ভালবাসার কত জোর এত কিছুর পরেও তুই কি করে আকাশের মন যোগিয়ে চলতে পারিস আমিও দেখব।

কথাগুলি বলে আকাশের মা চলে গেলেন।

মেঘলাঃ যাক অবশেষে এখানে থাকার অনুমতি পেলাম এবার আর আমায় আটকায় কে মন প্রান উজার করে ভালবাসব আমার পাগলটাকে আমি জানি ও কখনো আমায় ছেড়ে যাবে না।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ আকাশকে সারপ্রাইজ দিতে পুতুল সাজতে বেশি সময় লাগল না মেঘলার।

কিন্তু তাতে আকাশের কি? সেতো ধরেই নিয়েছে মেঘলা তাকে বোকা বানানোর জন্য এমন কান্ড ঘটিয়েছে।

আকাশঃ ঝটপট বলে ফেল এত আদিখ্যেতা করতে হবে না কি মতলব এঁটেছিস? মেরে টেরে ফেলবি না তো আমাকে?

আকাশের কথা শুনে নিজের চুল নিজে ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে এতক্ষন ধরে কার জন্য কি করলাম।

মেঘলাঃ যার মন মানুষিকতা যেনন সে তো তেমনেই ভাব্বে তাই না..??

আকাশ মুচকি হেসে বলল, না মানে পালানোর সুযোগ পেয়েও না পালিয়ে পুতুল সেজেছিস তাই ভাবছি এর পিছনের রহস্য টা কি কোন বড়সর কারন ছাড়া তো এমন করার কথা না।

মেঘলাঃ তোর মাথায় কি কুবুদ্ধি ছাড়া আর কিছু আসে না মানুষের ব্যাপারে সবসময় উল্টা পাল্টা ভাবতে থাকিস একটু ভাল কিছু ভাবতে পারিস না?

আকাশঃ তুই যে কত ভাল সেটা সবাই জানে তার জন্য ইতিহাসে তোর নাম লিখা থাকবে।

মেঘলাঃ এমা এখন তুই আমাকে মেরে ফেলতে চাইছিস?

আকাশঃ আজব ব্যাপার আমি কখন তোকে আমি মেরে ফেলতে চাইলাম?

মেঘলাঃ এই তো এখনী বললি ইতিহাসে নাম লিখা থাকবে না মরলে ইতিহাস হবে কি করে?

আকাশ ড্রেস চেঞ্জ করে সাইড টেবিল থেকে পানির বোতক হাতে নিয়ে খেতে খেতে বলল,
আকাশঃ গাঁধা পিটিয়ে কোনদিন মানুষ বানানো সম্ভব না আপাতত আমি সেই চেষ্টাও করছি না ভনিতা না করে বলে ফেল কি চাস?

মেঘলাঃ কিছুই না আমি এখন থেকে তোকে অনেক ভালবাসা আর কাল থেকে তোর কথামত চলব।

কথাটা শুনে আকাশ বিষম খেল মুখের পানি ফেলে দিয়ে চোখ বড় বড় করে মেঘলার দিকে তাকাল।

মেঘলাঃ ভাল একটা কথা বল্লাম আর তুই এমন রিয়েকশন দিচ্ছিস যেন আমি তোকে মেরে ফেলব বলেছি।

আকাশঃ এর চেয়ে যদি বলতি কাল থেকে সুর্য্য পশ্চিম দিকে উঠবে তাও বিশ্বাস করা যেত। আকাশ ভ্রু কুচকে মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল তোর কাহিনী কিরে কোন বড়সড় অন্যায় করেছিস তাই না?

একঝাঁক অভিমানের পশরা সাজিয়ে মেঘলা বলে উঠল
– আচ্ছা আমাদের নিয়তিটাই কি এমন? যখন আমি চাইব তখন তুই চাইবি না আর তুই যখন চাইব আম চাইব না।

আকাশ এবার সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে হতাশার দীর্ঘশ্বাস ফেলে জবাব দিল,
জানিস মেঘলা চাওয়ার ব্যস্ততাটা না সময়ের সাথে বিলীন হয়ে গিয়েছে। যা চেয়েছিলাম তা তো আর পাওয়া হয়ে উঠেনি তাই এখন আর কিছু চাইতে ইচ্ছে করে না।এখন মনে হয় এবার নাহয় চাওয়ার পরিসমাপ্তি হোক চাওয়াগুলি বন্ধন আলগা করে চলে যাক দূর থেকে দূর অজানায় তবেই বোধ হয় শান্তি পাব। চাওয়ার বোঝাটা না খুব ভারী হয়ে গিয়েছিল তাই হয়ত কিছুই পাওয়া হয় নি।

মেঘলাঃ ঠিক বুঝলাম না

আকাশ এক গাল হাসি নিয়ে বলে উঠল
“তুমি চাইলেই আমি তোমার আর না চাইলেও তুমি আমার” বাক্য টা হয়ত তোর প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।

মেঘলাঃ এবারেও বুঝলাম না।

আকাশঃ বুঝবার কথাও না তুই কখনই কিছু বুঝিস নি আজও বুঝবি না এটাই স্বাভাবিক।
শোন মেঘলা আমার চাওয়া পূরন করার সামর্থ্য তোর নেই তাই আমি নিজেই নিজের চাওয়াকে পাওয়ায় পরিনত করে নিয়েছি। এখন তুই আমার জন্য কি করলি কি না করলি সেসব দেখার সময় নেই। এক তরফা ভালবাসা চিনিস…??
ওহ না ভালবাসা বললে ভুল হবে ছিনিয়ে নেওয়া বুঝিস আমার আর অপেক্ষা করার ধর্য্য নেই তাই যখন যা পেতে ইচ্ছে হবে নিজেই আদায় করে নিব এই পাওয়াতে হয়ত মনের সুখ মিলবে না কিন্তু এক প্রকার পৈশাচিক সুখ মিলবে।

মেঘলাঃ খুব রাগ করেছিস তাই না?

আকাশঃ রাগ আমার কোন কালেই ছিল না যদি থাকত আজ তুই আমার পাশে থাকতি না। যাই হোক এসব বাদ দে বউ এর সাজে তোকে দেখতে ইচ্ছে করছে না এই অবস্থায় তোকে দেখতে যাস্ট অসহ্যকর লাগছে।এসব খুলে আয়।

মেঘলাঃ আমি তোর জন্য সাজলাম আর তোর অসহ্য লাগছে…?

আকাশঃ এর আগেও বহুবার বউ সেজেছিস তবে আমার জন্য না দেখতে দেখতে বোর হয়ে গিয়েছি

মেঘলাঃ তুই কেমন যেনো, কখনো মনে হয় তোকে আমি খুব চিনি আবার কখনো মনে হয় তুই যেন অপরিচিত কেউ।

আকাশঃ হয়ত তাই…

মেঘলাঃ তুই নিজেই তো এক সময় আমাকে বউ সাজাতে চাইতি..

আকাশঃ হুম লাল টুকটুকে শাড়ি,রক্ত আলাতা পা,মেহেদী রাঙ্গা হাত সাথে আবীর রাঙ্গা একটা গোলাপ… না না খোপায় নয় তোর খোলা চুলে আলতো করে গুঁজে দেয়ার ইচ্ছে ছিল খুব কিন্তু ভাগ্য যে সায় দিল না।
সময়ের সাথে ইচ্ছেগুলি ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে দিন কে দিন।

মেঘলাঃ আমি আর কোনদিন বউ সাজব না দেখে নিস।

আকাশঃ আমিও আর কখনো বায়না করে বলব না বউ সাজ।

আকাশের আনমনে বলা কথা আর চোখের কোণে জমে থাকা জল মুহুর্তেই মেঘলার মনে আলোড়ন তুলল।
চোখ ফেটে কান্না পাচ্ছে তার আকাশ কে শান্তনা দেয়ার ভাষা জানা নেই মেঘলার।
চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে আমি তোকে ঠকাই নি তোর স্বপ্ন আমি ভেঙে দিতে চাই নি কিন্তু বলতে পারছে কই এক অজানা শক্তি তার গলা চেপে ধরেছে।
হাজার না বলা কথা বুকে পাথর হয়ে বিঁধছে মেঘলার।
চোখের জলের সাথে প্রানপন যুদ্ধ করে চলেছে সে।
মেঘলাও আকাশের মত হাসির আড়ালে কস্টগুলিকে চাপা দেওয়ার চেস্টায় ব্যাস্ত হয়ে উঠেছে।কিন্তু মেঘলার অনুশোচনায় ভরা কস্ট মাখা হাসি আকাশের চোখ এড়াতে পারল না।

আকাশ কি যেন ভেবে সম্পূর্ন ভিন্ন রুপ নিয়ে নিল,
বসা থেকে উঠে গিয়ে হাতে আংগুল মুড়িয়ে মুড়িয়ে গুনতে শুরু করল।

আকাশের হটাৎ এমন কান্ড দেখে মেঘলা অবাক না হয়ে পারল না।

মেঘলাঃ কি গুনছিস (অবাক হয়ে)

আকাশঃ আহ ডিস্টার্ব করিস না তো ২৮,২৯

মেঘলাঃ আরে হটাৎ কি এত গুনছিস বল না

আকাশঃ ৩২,৩৩ হ্যাঁ ৩৩ টাই হয়েছে নে এবার এদিকে আয় গুনে গুনে ৩৩ টা থাপ্পড় জমা হয়েছে তোর।

মেঘলাঃ থাপ্পড় তাও ৩৩ টা গালে হাত দিয়ে।

আকাশঃ হ্যা অবশ্যই কেন আগেই তো বলেছিলাম আমাকে তুই করে বলা যাবে না বল্লেই থাপ্পড় খেতে হবে।

মেঘলাঃ এই তো প্রায় কেঁদে দিয়েছিল এখনী থাপ্পড় মারতে চাইছে এটা মানুষ নাকি সাইকেল..?? (বিড়বিড় করে)

আকাশঃ ওটা সাইকেল না রোবট হবে..

মেঘলাঃ এমা তুই শুনে ফেলেছিস? আড়িপাতে কথা শুনতে লজ্জা করে না?

আকাশঃ শুনলাম কোথায় একটা যুবতী মেয়ে যদি ঠোঁট লাল করে সামনে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে না তাকিয়ে উপায় আছে?

মেঘলা ঠোঁট চেপে ধরে বলল, মানে ই…

আকাশঃ মানে হল তোর ঠোঁটের নাচানাচি দেখে বুঝলাম তুই এমন কিছুই বলতে চাচ্ছিলি। আর এটা মানে ই না কি হবে বেচারা ঠোঁটের কি দোষ বল তো তুই যেভাবে সাজিয়েছিস সেভাবেই সেজেছে যেভাবে নাচিয়েছিস সেভাবেই নেচেছে এখন এভাবে চেপে ধরেছিস কেন?

মেঘলাঃ আমার ঠোঁট আমি চেপে ধরব যা ইচ্ছা করব তাতে তোর কি।

আকাশঃ আমার কিছু না তবে সত্যি বলব তোর ঠোঁটে একটা লাভ বাইট দিতে খুব ইচ্ছে করছে।

মেঘলাঃ তোর মত অসভ্য ছেলে জীবনে ২ টা দেখি নি।

আকাশঃ দেখবি কি করে আকাশ তো একটাই ২ টা হয় না।তবে আকাশ অসভ্য না সে বউ ছাড়া কারো দিকে তাকায় না।

মেঘলাঃ তাকাচ্ছিস তুই তো কোথায় কামড়ে দিতে চাইছিস…

আকাশ তাই বুঝি বলে এক পা এক পা করে মেঘলার দিকে এগিয়ে এসে মেঘলাকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে দিল।
মুহুর্তেই মেঘলার হার্টবিট বেড়ে গেল না আজ তার ভয় করছে না সে আকাশ কে বাঁধা দিতেও চাইছে না বরং এক অজানা আনন্দে চোখ বন্ধ করে নিল মেঘলা।
আকাশ তার একদম কাছে এসে মুখ নিচু করে মেঘলার মুখের কাছে নিজের মুখ নামিয়ে আনল।
মেঘলার ঘন ঘন নিশ্বাস নেয়া প্রমান করছে সে আকাশের কাছে নিজেকে সঁপে দেয়ার জন্য একেবারে প্রস্তুত। আকাশ আর মেঘলার ২ জনের ঠোঁট যখন ছুঁই ছুঁই ঠিক সেই মুহুর্তে আকাশ মেঘলার গাল টেনে তার ধ্যান ভাংগিয়ে দিয়ে বলল কাল পর্যন্ত পালানোর জন্য পাগল ছিলি আজ হটাৎ কি হল?বলেই হেসে উঠল আকাশ।মেঘলা অবাক হয়ে চোখ খুলে তাকাল।

আকাশ এবার আরও জোরে হেসে উঠল।

আকাশের হাসি দেখে মেঘলার গা জ্বলে যাচ্ছে ইচ্ছে করছে আকাশকে ধাক্কা দিয়ে ড্রেনে ফেলে দিতে কিন্তু পারছে না যদিও আকাশ এখনো তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।

আকাশ হাসতে হাসতে বলল ইস কি রোমেন্স মেয়ের ভাবা যায় নাক টিপলে দুধ বের হবে সে নাকি রোমান্স করতে চায়?

মেঘলাঃ তোকে বলেছে রোমান্স করতে চায়… অসভ্য ছেলে সর সামনে থেকে।
বলে মেঘলা আকাশ কে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইল

আকাশ মেঘলার হাত টেনে ধরল।

মেঘলাঃ ছাড় এখন আর আদিখ্যাতা করতে হবে না..

আকাশঃ আদিখ্যাতা কিসের?এত পিচ্চি মেয়ের সাথে রোমান্স করার কোন রকম প্রয়াস নেই আমার বুঝেছিস?
আমি আটক্কাচ্ছি কারন থাপ্পড় গুলো কে খাবে শুনি?

আকাশের কথা শুনে লজ্জায় মেঘলার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে বলল।
মেঘলাঃ তুই ও তো আমাকে তুই করে বলছিস তাহলে তুই ও থাপ্পড় খা।

আকাশঃ আমি তোর সাথে তাল মিলানোর জন্য বলছিলাম।

মেঘলাঃতোর মত হনুমানের সাথে আপনি ডাক টা যায় না তাই বলি নি।

আকাশঃ কি….?? আমি হনুমান.?

মেঘলঃ না

আকাশঃ গুড এই তো বুঝেছিস সব সময় সম্মান দিয়ে কথা বলবি বুঝেছিস?

মেঘলাঃ আসলে তুই মাঝে মাঝে হনুমান আর মাঝে মাঝে রামছাগল হয়ে যাস।

আকাশঃ কি বললি আমি রামছাগল।

মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে পিটপিট করে বলল
না…

আকাশঃ ভয়ে পেয়েছিস?

মেঘলাঃ আসলে রাম ছাগলও তোর চেয়ে ভাল তুই রাম ছাগলের ডিম।

আকাশঃ এ্যা রামছাগলের ডিম হয়…??

মেঘলাঃ না হয় না রামছাগলের ডিম যেমন অদ্ভুত বস্তু তেমনি তুই ও অদ্ভুত বস্তু।

আকাশঃ তবে রে…

একদমে কথাগুলি বলে মেঘলা দৌড় লাগাল।

আকাশঃ থাম বলছি এক্ষুনি ফিরে আয় না।তানাহলে ধরে এনে পা ভেঙে দিব।

মেঘলাঃ ধরতে পারলে ল ল ল….. আ আ আ

আকাশঃ বেশ হয়েছে কাপড় পরে দৌড়াদৌড়ি এবার দেখ কেমন লাগে।

মেঘলাঃ এ্যা এ্যা আমার কোমর…

আকাশঃ উচিত শিক্ষা হয়েছে।

মেঘলাঃ আমি তোর নামে মামলা করব নারী নির্যাতনের মামলা বলব তুই আমার কোমর ভেঙে দিয়েছিস।

আকাশঃ আজব পড়েগেছিস তুই তাতে আমার দোষ কোথায়।

মেঘলাঃ তুই তাড়া না করলে তো আমি পড়ে যেতাম না।আর কোমর ও ভাঙত না।

আকাশঃ কোমড় ভাংগলে এত কথা বের হত না মুখ দিয়ে।কিছুই হয় নি তাই ন্যাকামি ছেড়ে উঠ।

মেঘলাঃ কোলে নে

আকাশঃ আমাকে তো পাগলা কুকুরে কামড়েছে এত বড় বুড়ি মেয়েকে কোলে নিব।

মেঘলাঃ তুই ত দেখছি ২ মুখো সাপ একটু আগে বললি আমি নাকি পিচ্চি এখন বলছিস বুড়ি।

আকাশঃ তুই দুটোই আধা কাঁচা আধা পাঁকা। নে নে উঠ অনেক ঢং হয়েছে।

মেঘলাঃ কোলে তো আমি উঠেই ছাড়ব (মনে মনে)
ও মাগো মরে গেলাম গো কে কোথায় আছো বাঁচাও আমাকে।

মেঘলার চিৎকার শুনে গার্ডস গুলো ছুটে আসল।

একজন গার্ডঃ ম্যাডাম ম্যাডাম আপনার কি হয়েছে।

মেঘলাঃ এই বজ্জাত রামছাগলের ডিম আমার কোমর ভেঙে দিয়েছে।

গার্ড একবার আকাশের দিকে আর একবার মেঘলার দিকে দেখছে।

মেঘলাঃ হা করে তাকিয়ে দেখছো কি ধরো আমাকে কোলে করে রুমে দিয়ে এসো।

কথাটা শুনে আকাশ চোখ বড় বড় করে তাকাল।

গার্ড এগিয়ে যেতেই আকাশ তাকে থামিয়ে দিল।

আকাশঃ অর্কমার দল এতক্ষন কোথায় ছিলে?

গার্ডঃ স্যার আমরা তো এখানেই ছিলাম ম্যাডাম আমাদের লুকিয়ে থাকতে বলেছিল।

আকাশঃ হয়েছে হয়েছে বুঝেছি যাও ডিউটি তে যাও।

গার্ডঃ কিন্তু ম্যাডাম…

আকাশঃ বউ আমার আমিই বুঝে নিচ্ছি যাও এখান থেকে বলেই মেঘলাকে কোলে তুলে নিল।

মেঘলাও আদুরে বিড়ালের মত আকাশ কে জড়িয়ে ধরল।



চলবে…!!!
( যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করে দিব অধৈর্য হবেন না প্লিজ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here