আকাশে তারার মেলা সিজন 2 পর্ব-৪০

0
2375

#আকাশে_তারার_মেলা_২
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব__৪০

থমথমে নিরবতা এক মুহুর্তে গ্রাস করে নিয়েছে পুরো রুমটাকে। পায়েলের বাবা চোখ থেকে চশমা টা খুলে টেবিলে রাখলেন। খানিকটা মৌন হয়ে রইলেন তিনি। বিছানায় বসে পাশের টি টেবিল থেকে পানির গ্লাস টা উঠিয়ে নিলেন হাতে। থেমে থেমে তিন ঢোকে সম্পন্ন করল গ্লাসের সবটুকু জল। উনার মুখ দেখে তুলির মনে হচ্ছে উনি যেন আগে থেকেই জানত সবটা। চমকিত হওয়ার বিন্দু মাত্র আভাস নেই পুরো চেহারায়। ভঙ্গিমা একদম সহজ, সরল। সূক্ষ্ম নিঃশ্বাস ছাড়লেন তিনি। ধীর কন্ঠে বললেন,

” আমি অভিক কে ডেকে পাঠিয়েছি। মেয়ের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে দিতে পারব না আমি। পায়েল মুখ ফুটে বলে নি কিন্তু আমি জানি ও অন্তু কে ভালোবাসে।”

অতিশয় বিস্ময় নিয়ে হতবাক দৃষ্টিতে তাকালো তুলি। পাশে থাকা আদ্রর হাত টা চেপে ধরল শক্ত করে। আদ্র যে অবাক হয় নি তা না, অবাক সে ও হয়েছে। পায়েলের বাবা ফের বলতে শুরু করলেন,

” একটু আগে ছাদে গিয়েছিলাম আমি। যেতেই চোখে পড়ল আমার মেয়ে বড় তৃপ্তি করে অন্তুর কাঁধে ঘুমোচ্ছে। তখন আর এক পা ও আগানোর সাহস হয় নি আমার। দরজায় দাঁড়িয়ে ঠিক সেই মুহুর্তে উপলব্ধি করতে পেরেছি এই বিয়ে হলে কখনও খুশি হবে না আমার মেয়ে। বাবা হিসেবে আমি মেয়ের প্রতি খুবই গর্বিত। আমি জানি ও আমার মান রাখতে রাজি হয়েছে এই বিয়েতে। যার জন্য এতো বছর করে গেলাম, বিনিময়ে কেবল এক টুকরো হাসি দেখলেই পরাণ টা জুড়িয়ে যায় আমার জেনে বুঝে কি করে কষ্টের দিকে ঠেলে দিব তাকে? আমি জানি ব্যাপার টা খুবই জঘন্য হবে,হয়তো অভিকের পরিবার আমাদের হেয় করবে তবুও মেয়ের খুশি কোনো ক্রমেই ছিনিয়ে নিব না আমি। অন্তুর পরিবার কে বুঝাতে পারবে আদ্র?আমি এখনই যেতাম তোমার কাছে। ”

ম্লান হাসল আদ্র। নম্র কন্ঠে বললো,

” হয়ে যাবে। কিন্তু অভিকের পরিবার মানবে তো এসব?”

” ভয় তো এটাই। ভুল করে ফেলেছি আমি আদ্র। বুঝতে ভুল করে ফেলেছি মেয়ের মনের কথা। অভিকের বাবার সাথে আমার পার্টনারশিপ দীর্ঘ দিনের। তাছাড়া তুমি জানো ব্যবসায় বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি আমি।এখনও সেটা থেকে উঠতে সক্ষম হয় নি। ”

পায়েলের বাবার হতাশাজনক বার্তায় তুলির ভীষণ খারাপ লাগল। ভয় হচ্ছে খুব। এতো বছর ধরে বিয়েটা ঠিক এমনি এমনি কেন বিয়ে ভাঙতে রাজি হবে কেউ? তাছাড়া অভিকের পরিবারের জন্য এটা খুবই অপমানজনক। যেকোনো মানুষ মেনে নিবে না এমনটা।

তুলির মনে ঝেঁকে ধরা ভয়টাই বাস্তবে পরিণত হলো। নিস্তব্ধতা ছেয়ে গেছে পুরো বিয়ে বাড়িতে। গতরাতেও তুমুল আওয়াজে মুখরিত হয়ে ছিল এই বাড়ির চারপাশ। অথচ সকাল সকাল নির্জীব, নিস্তব্ধ। সামনের সোফায় একটা ছেলে বসে আছে। গায়ের রং টা শ্যামলা,দেখতে খারাপ নয়। তুলির এমনটাই মনে হলো, কারণ তার অক্ষিতে শুধু তার ডাক্তার সাহেবই সবচাইতে সুন্দর পুরুষ। নত মস্তকে দাঁড়িয়ে আছে পায়েল তুলির পাশে। এতো বড় হয়েও নার্ভাসের তাড়নায় তুলির মতো ছোট্ট দুর্বল দেহের অধিকারী একটা মেয়ের হাত আঁকড়ে ধরে আছে। অভিক রাগী গলায় বলে উঠল,

” আপনাদের কোনো অধিকার নেই আমাদের কে এভাবে অপমান করার। এতো বছর ধরে বিয়ে ঠিক অথচ বিয়ের খানিক সময় আগে বলছেন বিয়ে হবে না?আর ইউ ম্যাড?এতো ফালতু আপনারা।”

নিমিষেই ক্রুদ্ধ রূপ ধারণ করল আদ্রর চক্ষু জোড়া। রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে এল তার। পায়েল রাগের চেয়ে আহত হলো বেশি। তার জন্য তার বাবাকে এমনটা বলার সাহস পেল কেউ। শুধু মাত্র একটা ভুলের জন্য। আজ বুঝল পায়েল কখনও বাবা মায়ের কাছে কিছু গোপন রাখতে নেই। কারণ তারা সবসময় সন্তানের খুশিটাই চায়। আরও আগে যদি মনের কথা বাবার নিকট প্রকাশ করত তবে হয়তো পরিস্থিতি আজকের চেয়েও কিছুটা ভালো হতো,এতোটা কষ্ট পেতে হতো না। তুলি গভীরভাবে তাকালো সবার দিকে। দেখতে পেল পায়েলের বাবার চোখের কোণায় জল চিকচিক করছে। গড়িয়ে পড়ার আপ্রাণ চেষ্টাও চালাচ্ছে হয়ত। অন্তু,নিবিড়, সাগর হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজেদের সামলানোর প্রয়াসে অব্যাহত। কিন্তু আদ্র পারে নি নিজের ভিতরে দাউদাউ করে জ্বলে উঠা অগ্নি শিখা নিভাতে। কিছুটা গম্ভীর কন্ঠে অভিক কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,

” আমার জানামতে আপনি একজন ইউনিভার্সিটির লেকচারার। কিন্তু আপনার কথা বার্তা দ্বারা আমার মনে হচ্ছে আপনি একজন অশিক্ষিত লোকের চেয়েও অধম।”

আদ্রর সোজাসাপ্টা অভিব্যক্তিতে রোষপূর্ণ চাহনি নিক্ষেপ করল অভিক কিন্তু তা খুবই নগন্য আদ্রর ওই নীলাভ চোখের তেজী রূপের কাছে। আদ্রর ঠোঁটের কার্ণিশে লেগে আছে তুচ্ছ হাসি অথচ নেত্রে কেবলই ক্রুদ্ধতা। বেশিক্ষণ চেয়ে থাকতে পারল না অভিক। কিছুটা তেঁতে উঠে বললো,

” আপনার সাহস কি করে হলো ডা.আদ্র আহনাফ? আপনি আমার ক্যারেক্টার নিয়ে বিবেচনা কেন করবেন?আমি আপনাকে সেই রাইট দেই নি।”

” তাই নাকি?কিন্তু আমি তো আপনার ক্যারেক্টার নিয়ে কিছুই বলি নি। যদি বলতে শুরু করি কিছুই বাদ পড়বে না। আপনার বাল্যকাল হতে এতটুকু পর্যন্ত গড়গড় করে বলে দিতে পারবো অনায়াসে। একটুও ভুল হবে না। দেখবেন এতে না আপনার সব তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। শুরু করবো কি?”

আদ্রর কথার প্রেক্ষিতে সূক্ষ্ম একটা ঢোক গিলল অভিক। সেকেন্ডের ব্যবধানেই পাংশুটে রূপ ধারণ করল সারা মুখশ্রী। অভিকের মুখভঙ্গি চোখে পড়তেই বাঁকা হাসি ফুটে উঠল আদ্রর অধর যুগলে। কন্ঠস্বর যথেষ্ট সংযত রেখে বললো অভিক,

” তাহলে বিয়ের ব্যাপারে নাকচ করছেন আপনারা?আমি কিন্তু চাইলে জোর করে বিয়ে করতে পারি পায়েলকে। তাছাড়া এই বিয়ের সাথে আপনার ছোট খাটো প্রজেক্ট টাও জরুরি আংকেল। বিয়ে নাহলে আপনার সাথে আমার বাবা কোনো সম্পর্ক রাখবেন না। তখন শর্ত মোতাবেক আপনার প্রজেক্টে ইনভেস্ট করা চার লাখ টাকা আপনি আমাদের ফেরত দিতে হবে।”

আকস্মিক এমন কথায় থমকে গেল পায়েলের বাবাসহ সকলে। একটা মানুষ এত নিকৃষ্ট কি করে হতে পারে,কিভাবে পারল বিয়ের সাথে বিজনেস টানতে। তিনি আজ বুঝতে পারলেন মুখে পাশে আছি বলে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় অনেকে কিন্তু অন্তরে ধারণ করে রাখে অন্য কিছু। আল্লাহর প্রতি লাখ লাখ শুকরিয়া আদায় করছেন তিনি যে সময় থাকতে এভাবে এই মানুষ গুলোর খোলস উন্মুক্ত হয়েছে। নয়তো নিজের মেয়েকে এমন মানুষদের হাতে তুলে দিতে ভাবছিলেন ভাবতেই বুকটা হাহাকার করে উঠল। গম্ভীর স্বরে বললেন,

” আমাকে কয়েক টা দিন সময় দাও অভিক। দিয়ে দিব আমি। ”

” কোনো সময় দেওয়া হবে না। আজ রাতের মধ্যে দিয়ে দিবেন।”

ঝাঁঝালো দৃষ্টিতে তাকাল আদ্র। কপাল কুঁচকে কন্ঠে রাগ নিয়ে বলে উঠল,

” নামে টিচার, বিবেকে মূর্খ। টাকা আজ দু’ঘন্টার মধ্যেই পাবেন। ইচ্ছে হলে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য দু’ঘন্টা অপেক্ষা করতে পারেন। ”

কথাটা শেষ করেই রাদিফ সাহেব কে কল দিল আদ্র। কল রিসিভ হতেই নম্র স্বরে বললো,

” আমার চার লাখ টাকা প্রয়োজন বাবা। জানি হুট করে বললেই এতো বড় এমাউন্ট রেডি করা পসিবল নয়। তাই দু’ ঘন্টা সময় দিলাম। ছেলে হিসেবে নয়, ব্যাংক থেকে যেভাবে লোন নেওয়া হয় তেমনভাবেই নিচ্ছি। একটা সময় দিয়ে দিব। কিন্তু এই মুহুর্তে আমার সামনে একজন নিকৃষ্ট মানুষ উপস্থিত আছেন,যিনি টাকার জন্য ছটফট করছেন। রাখি আল্লাহ হাফেজ। ”

আদ্রর তাচ্ছিল্য কথা শুনে অভিকের পরিবার বাদে উপস্থিত সকলের মুখে হাসি ফুটে উঠল। যাকে এক কথায় তৃপ্তির হাসি বলা যায়। বেশ জব্দ হয়েছে অভিক ও তার পরিবার। পায়েলের বাবা আদ্র কে বুকে জড়িয়ে নিলেন। অন্তুর ফ্যামিলিকেও রাজি করিয়ে নিল আদ্র। অন্তু খুশিতে গদগদ হয়ে বললো,

” তোর মতো বন্ধু কারো কপালে না জুটুক। কারণ আমরাই ইউনিক থাকতে চাই।”

কোমরে কারো স্পর্শে তুলির দেহের সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠল তীব্রভাবে। মুহুর্তেই ছিন্ন ভিন্ন হলো কল্পনার জগৎ। স্পর্শ আরো গভীর হতেই তুলি রাতের আকাশে ঝলমল করা তারার দিকে দৃষ্টি তাক করল। তুলি একটা জিনিস বেশ খেয়াল করেছে যখনই আদ্র ও সে কাছাকাছি আসে তখন সুদূর ওই গগণে আকাশে তারার মেলা বসে। ছোট থেকেই শত শত বার তুলি চেষ্টা করেছে তারা গুণার কিন্তু কখনও সম্ভব হয় নি। তবে তুলির কাছে মনে হয় আদ্র ও তার ভালোবাসার স্বাক্ষী হতে তারা রা দলে দলে আকাশের বুকে ভিড় জমায়। তুলি উল্টো ঘুরে আদ্রর বুকে মিশে গেল। কোমল স্বরে আওড়ালো,

” একটা প্রশ্ন করি ডাক্তার সাহেব?”

” হাজার টা করো।”

তুলি আলতো হাসল। প্রতুত্তরে বললো,

” হাজার টা নেই আপাতত মনে একটা প্রশ্নই আছে। ”

তুলির চুলের ভাঁজে ছোট্ট একটা চুমু খেল আদ্র। চুলগুলো ঠিক করে দিতে দিতে বললো,

” তাহলে মনের কথা মুখে এনে তাদের ধন্য করুন মিসেস তুলা। ”

” আপনি অভিক ভাইয়ার ব্যাপারে সব জানেন?মানে উনার সিক্রেটসহ?আমি তখন খেয়াল করেছি আপনার কথা শুনে খানিকটা চুপসে গিয়েছিলেন উনি। উনার চরিত্র নিয়ে কি বলতেন?উনার কি চরিত্র দোষ আছে?”

“হুম।”

” কেমন দোষ?”

” এটা তো মুখে বলা যাবে না। প্র্যাক্টিক্যালি দেখাতে হবে বউ।”

“মানে?”

আমতা আমতা করে প্রশ্ন করল তুলি। দেখল আদ্র ঝুঁকে পড়ছে তার দিকেই। চোখে মুখে দুষ্টমির ছাপ। তুলি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে কিছু বলবে তার পূর্বেই গলায় আদ্রর ভালোবাসাময় স্পর্শ অনুভব করল। অভ্যাসবশত একটা হাত মুঠোয় পুরে নিল আদ্রর বুকের কাছের কালো টি-শার্ট টার কিছু অংশ। নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে তুলির। ফ্লোরে ঠেকিয়ে রাখা পা দুটো থরথর করে কাঁপছে। আদ্রর বুকে নেতিয়ে পড়বে পড়বে ভাব। কোমরে হাত পেঁচিয়ে আরো প্রগাঢ়ভাবে মিশিয়ে নিল আদ্র। তুলি শুকনো কন্ঠে কোনো রকমে বললো,

” পা,,পানি খাব আদ্র।”

গলা থেকে মুখ উঠিয়ে তুলির শ্যাম বরণ মুখটায় নজর ঠেকাল আদ্র। নির্মল বাতাস ছুৃঁয়ে চলেছে দু’জনের দেহের সর্বাঙ্গে। তুলির বুঁজে রাখা ঘন ঘন আঁখিপল্লবে দৃঢ়ভাবে ঠোঁট ছুঁয়ালো আদ্র। তৎপরে তুলিকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে এনে বিছানায় বসালো। পানির গ্লাস টা হাতে নিয়ে নিজে অর্ধেক পান করে বাকি টা তুলির দিকে বাড়িয়ে দিল। কাঁপা কাঁপা হস্তে গ্লাস টা নিয়ে পানিটুকু খেল তুলি। গ্লাস টা রেখে আদ্র তুলির খুব নিকটে বসলো। ভ্রুঁ উঁচিয়ে বললো,

” এবার মানে টা বুঝলে অভিকের চরিত্র দোষের?আবার আমার চরিত্রে দোষ আছে ভেবো না তুলা। আমি তো আমার বউ কে একটুখানি ছুঁয়েছি।”

তুলির চক্ষুদ্বয় বড় বড় হয়ে গেল তৎক্ষনাৎ। এবার বেশ বুঝতে পারল সে। তড়িঘড়ি করে বলে উঠল,

” এমন একটা জঘন্য লোকের সাথে পায়েল আপুর বিয়ে হতে যাচ্ছিল। পায়েল আপু জানত?”

ভিতরে চেপে থাকা দীর্ঘনিঃশ্বাস টা বাহিরে মুক্ত করে দিল আদ্র। মাথা নাড়িয়ে বললো,

” না জানত না। এটা প্রায় দু’বছর আগের কথা। আমার একজন হার্টের পেশেন্ট ছিলেন মিস তামান্না। উনি গত হয়েছেন প্রায় এক বছর হবে। মেয়েটা খুব স্টেস নিত,ডিপ্রেশনে ভুগত। আমি বার কয়েক উনাকে সাইকিয়াট্রিস্ট দেখানোর পরামর্শও দিয়েছি। তাছাড়া মেয়েটা প্রেগন্যান্ট ছিল। কথায় কথায় উনি আমাকে উনার জীবনের কিছু কথা শেয়ার করেন। শোনার স্পৃহা না থাকলেও উনার ভালো মন্দ ভেবে শুনলাম। বাবা মা নেই মেয়েটার। যতদিন বেঁচে ছিল স্ট্রাগল করেছে অনেক। তবে ভুল করে ফেলেছিল। রিলেশনশিপে জড়িয়ে বয়ফ্রেন্ডের কুপ্রস্তাবে রাজি হয়ে ইন্টিমেট হয়েছে। কথাটা শুনা মাত্রই মস্তিষ্কে রাগ চেপে বসেছিল আমার। জীবন কি এতোটাই তুচ্ছ কেউ বললেই দিয়ে দিবে?একটা মেয়ে নিজের সম্মান অন্যের হাতে তুলে দিলে আমার মতে সেটা জীবন দিয়ে দেওয়ার চেয়ে কম না। ফলস্বরূপ ছেলেটা নিজের স্বার্থ হাসিল করতে পেরে মেয়েটা কে ছেড়ে দিয়েছে। ছেলেটা আর কেউ নয়,সে ছিল অভিক। মিস তামান্না সেই ইউনিভার্সিটিতে পড়তেন যেখানে অভিক লেকচারার হিসেবে নিয়োজিত। আমি মেয়েটার কথায় একদম বিশ্বাস করি নি। কিন্তু কথাগুলো ফেলে দেওয়ার মতো ছিল না। আমার কথায় একদিন জোর করে মেয়েটা অভিক কে ডেকে রেষ্টুরেন্টে দেখা করে। দু’জনের কথাগুলো স্পষ্ট আমার কর্ণে প্রবেশ করেছিল। আমি আড়ালে থেকে সবটা দেখেছি। কতোটা অমানবিক, নিষ্ঠুর হলে নিজের সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে পারে তুলা?জানোয়ার একটা। আমি এসব কিছুই পায়েল কে, আংকেল কে বলি নি। কারণ আমি শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম পায়েলের বিয়ে আমি এই জানোয়ারের সাথে হতে দিব না। একে শাস্তিও আমি দিব। আর এখনও বলি নি কাউকে, এতে আংকেলের কষ্ট বেড়ে যেত,দ্বিগুণ হয়ে যেত অনুশোচনার পরিমাণ। ”

তুলির চোখ জলে ভর্তি হলো। ভেবেই কুল পাচ্ছে না মানুষ এতো জঘন্য হতে পারে! থেমে থেমে প্রশ্ন করল,

” বা,বাচ্চা টা?”

“প্রেগন্যান্সি যখন পাঁচ মাস রানিং মিসক্যারেজ হয়েছে মিস তামান্নার।”

কষ্টে ভারী হয়ে গেল তুলির বুকটা। আদ্রর বুকে মাথা রেখে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল। পিঠে হাত রেখে কানের পিঠে শুষ্ক অধর জোড়া ছুৃয়ে দিল আদ্র। স্মিত হেসে বলে উঠল,

” তুমি এতো নাজুক কেন তুলা?অন্যের কষ্টে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছো। এতো নরম কেউ হয়?জীবনে অনেক স্ট্রং হতে হবে তোমাকে। কিছু কিছু মুহুর্ত এমনও আসতে পারে তোমার একাই মোকাবিলা করতে হবে তখন এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে না। তুমি কাঁদলে আমার ভয় হয়। হৃদপিণ্ডের ব্যাথাটা বেড়ে যায় ক্রমশ।”

#চলবে,,,,

(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কার্টেসি ব্যাতিত কেউ গল্পটা কপি করবেন না। অন্য কোথাও দিলে অবশ্যই কার্টেসি দিবেন। এই গল্পের সিজন ১ একজন চোর নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন,বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করছেন নিজের নামে। মন টা খারাপ হয়ে আছে এসব দেখে।)

p.c: Farija farah🖤🖤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here