#উত্তরণ
পর্ব_৩৮
উজান আবার ফিরে আসে ওর অফিসে যেখানে সবাই এখনো ক্লু খুঁজে যাচ্ছে۔۔
উজান: Any update?
সবাই মাথা নেড়ে “না” বলে۔۔
অফিসার 1: স্যার এক কাজ করি۔۔ এয়ারপোর্টে টিম মেম্বার্সদের বলি ওরা খোঁজ করুক.
উজান: হুম, তবে সাবধানে۔۔۔ ওদের লোকজনও কিন্তু নজর রাখছে. তবে আমার ধারণা এটা কোনো ক্যাপ্টেনের ভয়েস নয়. কারন এনাউন্সমেন্টে ক্যাপ্টেন-ইন-কমান্ডের নাম মেনশন করা প্রোটোকলের মধ্যে পরে, কিন্তু এখানে সেটা মেনসেনড নেই۔۔
অফিসার 2: কিন্তু ক্যাপ্টেনের এনাউন্সমেন্ট অন্য কেউ কিভাবে করতে পারে?
উজান: নর্মালি পারেনা۔۔۔ যদি না ক্যাপ্টেন অ্যালাও করে۔۔
অফিসার 1: ক্যাপ্টেন তো সেটা করতে পারেন না۔۔ উনি চাইলেই অ্যালাও করতে পারেন নাকি?
উজান: পারেন যদি পরিস্থিতি সেরকম হয় (মনে মনে: হিয়াকে একবার জিজ্ঞাসা করতে হবে, আমার মন বলছে উনি আরো অনেক কিছু জানেন.)
অফিসার 1: পরিস্থিতি? মানে?
উজান উত্তর দিতে যাবে এমন সময় একজন সিকিউরিটি এসে জানায় ম্যাডাম ভিতরে আসার অনুমতি চাইছেন۔۔ এই “ম্যাডাম” শব্দটা সবাইকে অবাক করে۔۔۔
উজান: ম্যাডাম?
সিকিউরিটি: হ্যাঁ স্যার۔۔উনি বাইরে অপেক্ষা করছেন۔
উজান একবার সেখানে উপস্থিত সকলের মুখের উপর চোখ বুলিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করে۔۔
উজান : কোন ম্যাডামের কথা বলছো?
সিকিউরিটি: আপনার ম্যাড۔۔۔
কথাটা শেষ করতে পারেনা, চোখ নামিয়ে নেয়, বোঝে ও বেশি বলে ফেলেছে. এতক্ষনে সকলের চোখ তার উপর থেকে উজানের দিকে ঘুরে চকিতে অন্যত্র নিবদ্ধ হয়. উজানও অপ্রস্তুত. উজানকে চুপ দেখে একজন অফিসার সিকিউরিটি কে বলে۔۔
অফিসার 2: ওনাকে নিয়ে এসো۔۔
সিকিউরিটি হাঁফ ছেড়ে বাঁচে, তাড়াতাড়ি চলে যায়. কিছুক্ষন পর হিয়া ওখানে আসে সাথে আরেকজন. হিয়া আর সেই লোকটির হাতের ট্রে তে কিছু স্যান্ডউইচ আর কফি. আরোহী তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে হিয়ার হাত থেকে ট্রে টা নিয়ে টেবিলে রেখে দেয় তারপর হিয়ার সাথে আসা লোকটিকে সবাইকে কফি সার্ভ করে দিতে বললে সে কফি দিয়ে বেরিয়ে যায়۔۔
বিস্মিত আরোহী হিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলে: আপনি এইসব নিয়ে এলেন কেন?
হিয়া: শুনলাম আপনারা একনাগাড়ে কাজ করেই যাচ্ছেন, এখনো কিছু খান নি, তাই۔۔
অফিসার 3: হ্যাঁ ম্যাডাম۔۔۔ ভীষণ ফেঁসে আছি۔۔
মুরুগেশ: আমাদের এসবের অভ্যেস আছে ম্যাডাম. তাও আপনি আমাদের জন্য এতটা ভেবেছেন সেটাই অনেক. Thank you madam..
হিয়া: ওটা বলবেন না প্লিজ. আমি আর কি করলাম? করছেন তো আপনারা যারা দেশের জন্য সব কিছু ছেড়ে এই ভাবে লড়ে যাচ্ছেন. আপনাদের জন্য আমরা সুরক্ষিত আছি, অথচ তার বিনিময়ে সত্যি আপনাদের জন্য কি করি বলুনতো? Thank you তো আপনাদেরকেই বলা উচিৎ. তাছাড়া আমি যে আজ বেঁচে আছি সেটাও তো আপনাদেরই জন্য.
হিয়া কথা বলতে বলতে উজানকে একবার আড় চোখে দেখে নেয়. সেটা লক্ষ্য করে সবার ঠোঁটের ফাঁকেই একটা হালকা হাসির রেখা দেখা দিয়েই মিলিয়ে যায়.
উজান এতক্ষন একটাও কথা বলেনি. একদিকে দুহাত পকেটস্থ করে চুপ করে দাঁড়িয়ে হিয়া ও অন্যদের কথোপকথন শুনছিলো. ওর ভীষণ ভালো লাগে হিয়ার সবার জন্য স্যান্ডউইচ, কফি নিয়ে আসা টা. কোথাও যেন একটু গর্ববোধও হয় নিজের পছন্দের উপর. উজান হিয়ার কাছে এখনো কোনো স্বীকারোক্তি করেনি ঠিকই কিন্তু ওদের এই অঘোষিত সম্পর্ক এখানের সবার চোখেই ধরা পড়েছে, তাই বোধহয় “মিস মিত্র” হঠাৎ করেই “ম্যাডাম” হয়ে গেছে সবার কাছে. উজান আবারো নিজেকে গাম্ভীর্যের মুখোশে ঢেকে ফেলে۔۔
সবাই অপেক্ষা করে উজানের অনুমতির. সেটা দেখে উজান বলে۔۔
উজান: Take a break..
সারাদিন পর সবাই এতক্ষনে একটু ব্রেক পায়. অফিসের পরিবেশ একটু হালকা হয়. উজান আর হিয়া একে ওপরের সাথে কোনো কথাই বলেনি এযাবৎ. হিয়া চলে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু বাকিরা যেতে দেয়নি۔۔
হঠাৎ হিয়া আরোহীকে উদ্দেশ্য করে বলে۔۔
হিয়া: চিপটা ডিকোড হয়েছে?
আরোহী: হ্যাঁ সেটা হয়েছে কিন্তু অন্য জায়গায় আটকে গেছি আমরা۔۔
হিয়া: কি জানতে পারি۔۔۔۔ মানে আপনাদের আপত্তি না থাকলে۔۔۔ তাছাড়া আমার একটু অধিকার তো আছেই জানার তাইনা? এর জন্য মরতে বসেছিলাম একেবারে, আবার কিডন্যাপড ও হয়েছি (বলেই ওর স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে হেসে ওঠে).
হিয়ার কথা বলার ভঙ্গিতে উপস্থিত সবাই হেসে ফেলে. আরোহী একবার উজানের দিকে তাকায়. এবার উজান এগিয়ে এসে হিয়া কে সেই ভয়েস নোট কোড টা দিয়ে বলে পুরো ব্যাপারটা۔۔۔
দেখা যাক ভয়েস নোট টা শোনার পর হিয়ার রিয়্যাকশন কি হয়–!!
(কপিবাজ মহান ব্যাক্তিগণ আজ আপনাদের শান্তি নেই পরপর কপি করতে হচ্ছে–হাপিয়ে গেলে একটু চা-কফি খেয়ে এসে আবার কপি করতে বসে পড়ুন🥴🥴)