প্রিয় দিও বিরহ ” পর্ব-৩৪

0
1914

“প্রিয় দিও বিরহ”

৩৪.

মধ্যেভোজের পর সটান হয়ে মরাঘুম দিয়ে উঠেছে মেহতিশা। এতক্ষণ ঘুমানোতে কেমন ঝিমঝিম লাগছে। হাত পা ঝেড়ে নিয়ে হাত মুখ ধুয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো সোফায় শামীউল্লাহ জামান বসে আছেন। তাঁকে দেখে বোঝা যাচ্ছে কেমন অস্থির হয়ে আছেন তিনি কোনো কারণে। মেহতিশা অনেক দিন হয়েছে তাঁর সঙ্গে কোনো প্রকার কথা বলেনি। হাত মুখ তোয়ালে দিয়ে মুছতে মুছতে বলল,

‘আপনি এখানে কী করছেন?’

তিনি মলিন মুখ বললেন,

‘আমি কী পর যে আপনি করে বলছিস মা?’

‘কেউ কেউ অনেক দূরের হয়েও আপন হয়, আর কিছু মানুষ আপন হয়েও পর। ‘

তিনি নিরুত্তর হয়ে বসে রইলেন। কিছু মুহুর্তের পর চোখ মুছলেন পাঞ্জাবির হাতায়। এখন তাঁকে খুব বিষন্ন ভাঙাচোরা মানুষ মনে হয়৷ মেহতিশার খারাপ লাগলো তা দেখে। সে তাঁর পাশে এসে বসে শান্ত কন্ঠে বলল,

‘বাবা, কিছু কথা জিজ্ঞেস করলে সত্যি বলবে?’

অনেক গুলো দিন পর এমন করে বাবা ডাকায় তিনি আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না। উৎফুল্ল কন্ঠে বললেন,

‘কী জানতে চাস বল?’

‘দর্পণ তো মেঝো চাচাকে খুন করেনি, আর না কোম্পানির কোনো ক্ষতি করেছে। তাহলে তুমি কেনো দর্পণের ক্ষতি করতে চাইলে? তার সাথে বিয়েই বা কেনো দিলে?আর অনন্যের বাবার সাথেই বা কেনো অন্যায় করলে?’

তিনি নতমুখী হয়ে বললেন,

‘তোর মেঝো চাচা মৃদুল আমাদের সবচেয়ে আদরের ভাই ছিলো। আমরা এমন কোনো জিনিস ছিলো না যা ভাগ করে খাইনি। ও যত বড় হচ্ছিল উশৃংখল হয়ে যাচ্ছিলো। আমরা কোনো ভাবেই ওকে আঁটকাতে পারছিলাম না। আমি আর ছোটো ভাই বিয়ে করলাম। ওকেও সবাই জোর করলো বিয়ে করতে। কিন্তু মৃদুল কিছুতেই বিয়ে করতে চাইলো না। রোজ রোজ নতুন মেয়েদের নিয়ে ফূর্তি করতো। কিন্তু, কিছুতেই একজনকে নিয়ে থাকতে চাইতোনা। আমরা হতাশ ছিলাম ওর কাজকর্মে। শুধু একটা কারণেই কিছু বলতে পারতাম না, ব্যবসায় তুখোড় মেধা ছিলো ওর। যে কোনো বড় ডিলই হোক ও একবার সেটা নিয়ে কাজ করলে আমাদের হাতেই আসতো। আমরাও কিছু বলতে পারতাম না। ধীরে ধীরে বুঝলাম, কিন্তু ততদিনে খুব বেশি দেরি হয়ে গেছে। হঠাৎ চার বছর আগে একদিন এসে বলল, ওর নাকি একটা মেয়েকে খুব ভালো লেগেছে। আমরা খুশি হয়ে বললাম মেয়েটাকে নিয়ে আসতে। মৃদুল আমার থেকে বছর সাতেক ছোটো। বয়সও তো ওর কম নয়। আটত্রিশ তখন ওর। আমরা ভাবলাম হয়তো ওর সমবয়সী বা দুই তিনেকের ছোট হবে। কিন্তু ও আমাদের আশ্চর্য করে দিয়ে মেয়ের ছবি দেখালো। মেয়েটার বয়স নিতান্তই বাচ্চা। হবে, বিশ কিংবা একুশ। এরও কম হতে পারে। ও আমাদের মানা শুনলো না। বললো,যদি বিয়ে করতে হয় ওই মেয়েটাকেই করবে। শ্যামবর্ণীয় মেয়েটার জন্য পাগলামি শুরু করলো। আমরা তাও মেনে নিলাম। যদি ও ভালো থাকে আমাদের সমস্যা কী!
তারপর একদিন বাসায় এসে তুমুল ভাংচুর করলো। পারলে সবাইকে খুন করে। জানতে পারলাম, মেয়েটার আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। তাই ওকে মেয়েটা মানা করে দিয়েছে। ঐ মেয়েটার প্রেমিকও বেশ পাওয়ারফুল লোক৷ সে হুমকি দিলো মেয়েটার কাছে থেকে দূরে থাকতে। সুযোগ পেলেই দু’জনের যুদ্ধ লেগে যেতো। মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেলো হঠাৎ। হয়তো ওর প্রেমিকই প্ল্যান করে মৃদুলের নজর থেকে বাঁচানোর জন্য কাজটা করেছিলো। এতে আরও উন্মাদ হলো মৃদুল। পায়তারা করছিলো ক্ষতি করার জন্য। সুযোগ পেলো অনেকটা সময় পর। যখন মেয়েটা গর্ভবতী। রাগে জ্ঞানশূণ্য হয়ে সেদিন গাড়ি চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা করে। মেয়েটার মিসক্যারেজ হয়। আর ওর স্বামীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আর মেয়েটা হচ্ছে তোর জা নিশিতা। ওর স্বামী মানে তোর ভাসুর অর্পণ। ‘

মেহতিশা স্তব্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। মাঝেই যদিও টের পেয়েছিলো কিছুটা। এখনও হজম করতে কষ্ট হচ্ছে। শামীউল্লাহ জামান আবারও বলতে শুরু করলেন,

‘কিন্তু সবকিছুর মধ্যে একটা গোলমেলে আছে। মৃদুলের নজর এড়াতে পারেনি তা। ও আন্দাজ করলো এখনো অর্পণ বেঁচে আছে। তাঁকে লুকিয়ে রেখেছে দর্পণ। দর্পণ সবকিছু এতো ঠান্ডা মাথায় করেছে, যে কেউ টের পায়নি। মৃদুল বারবার চেষ্টা করছিলো ওকে একেবারে শেষ করতে। কিন্তু ভাগ্যের কী খেলা! এর আগেই আগুনে পুড়ে বিভৎস এক মৃত্যু হলো ওর। আমরা সবাই যখন ভেঙে পড়ি, তখন একটা তথ্য সামনে আসলো। দর্পণের কাছে কোনো না ভাবে আমাদের ফ্যাকট্রির বিরুদ্ধে একটা দলিল আছে। মৃদুল আমাদের ফ্যাকট্রিতে একবার কিছু অবৈধ মাল এনেছিলো। যদিও তা আমরা বন্ধ করিয়ে দেই। কিন্তু তাঁর প্রমাণ গুলো একজনের হাতে। সে হলো দর্পণ। মৃদুল মরে গেলেও, আমরা তো মরিনি। না চাইলেও দর্পণের সঙ্গে শত্রুতা সৃষ্টি হলো। আমরা অনেক আকুতি করলাম পেপার গুলো দিয়ে দিতে। কিন্তু ও মানলোনা। যেহেতু, দর্পণের বাবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিলো তাই আমি ওকেও বললাম। ওরা বলল, মৃদুল যেহেতু মারা গেছে ওদের কোনো সমস্যা নেই৷ মেহতিশাকে যদি ওদের ছোট ছেলে দর্পণের সঙ্গে আমরা বিয়ে দেই তাহলে আর কোনো ঝামেলার সৃষ্টি হবেনা। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি, এটা না করার। কিন্তু দর্পণ ছেলেটা যে কী চালাক! সে বারবার বলে মেহতিশাকে তাঁর সঙ্গে বিয়ে না দিলে সে অতিসত্বর পেপার গুলো ছড়িয়ে দিবে। এবং আইনত ভাবে কেস হবে। আমরা তখনও জানিনা ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগানোর পিছনে কে আছে। তবে আন্দাজ করছিলাম সেটা দর্পণ। আগুনে পুড়ে সব নষ্ট হওয়ার পর অনেক কষ্ট আমরা নতুন ভাবে সবকিছু দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। যেহেতু তুইও বিয়েতে রাজি না। তাই আমি ভাবলাম, কোনোমতে তোর বিয়ে ওর সাথে দিয়ে ওই পেপার গুলো হাতিয়ে আনার পর তোর ডিভোর্স করিয়ে দেবো। এতে দর্পণের থেকে আমাদের কোম্পানির ক্ষতির প্রতিশোধও নেয়া হবে। কিন্তু, যখন জানলাম দর্পণ নয় বরং অনন্য এসবের পেছনে ছিলো তখন আর..’

তিনি অনুতপ্ত হয়ে আর কিছু বলতে পারলেননা। টলানো পায়ে চোখ মুখ মুছে চলে যেতে লাগলেন। মেহতিশা ঠোঁট চেপে বসে রইলো। অর্পণ যে মারা যায়নি তা অনেক আগেই টের পেয়েছে সে। আর এ কথাটাই দর্পণের মুখ থেকে জানার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দর্পণ কোনোভাবেই রাজি হয়নি। আর এজন্যই ওর মুখ থেকে শুনতে দূরে চলে এসেছে সে। মোবাইলের মেসেজটার দিকে তাকালো। হ্যা এক ঘন্টা আগে মেসেজটা এসেছে। যার অপেক্ষায় দীর্ঘ দিন ধরে ছিলো। সেখানে ছোট্ট ছোট্ট অক্ষরে লেখা,

‘বউজান, আমি সত্যিই পারছিনা। অনেক চেষ্টা করলাম। আর নয়, আজই আপনাকে সবটা বলবো। আমি আসছি। ‘

মেহতিশা মুচকি হাসলো। তড়িঘড়ি করে এজন্যই রেডি হচ্ছিল সে। চুলটা বেঁধে বেরিয়ে এলো নিচে। গাড়ি নিয়ে নিচেই দর্পণ দৌড়ে এলো। কোনো কিছু না বলেই আলগোছে কোলে তুলে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই গলায় ওষ্ঠাধর ছুঁইয়ে দিলো। মেহতিশার মাথাটা বুকে জড়িয়ে রাখলো সারা রাস্তা। খানিকক্ষণ পর মেহতিশা বলল,

‘এবার বলবেন, নাকি আরও দেরি? ‘

দর্পণ মুচকি হেঁসে বলল,

‘বলতে তো চাইছি, কিন্তু আমার তোমার থেকে নজর সরছেনা। দিন দিন সুন্দর হয়ে যাচ্ছো। ‘

‘কথা না ঘুরিয়ে বলুন তো। ‘

‘এতদিনে নিশ্চয়ই অনেক কিছু জেনে গেছো। শুধু একটা ব্যাপার ছাড়াই তাইনা? ‘

‘হুম।’

‘আগে বাড়ি চলো। গেলেই বুঝবে। ‘


শেখ মহলে দ্বিতীয়বার বিরাট ভাবে ঘরে তুললো মেহতিশাকে।
এবারও লালিমা পরম আনন্দে ভরে ছিলেন। কিন্তু এবার তার মুখে চমকই আলাদা। তিনি হাসিমুখে ওদের বললেন,

‘যাও যাও ঘরে গিয়ে রেস্ট করো তোমরা, আমার আবার সিরিয়াল দেখার সময় হয়েছে এখন। হেহে।’

সবাই হেঁসে ফেললো। মালা পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো। সেও এখন সিরিয়ালের সঙ্গী হয়েছে। মালা দাঁত কেলিয়ে বলল,

‘ছুডু ভাবী, আপনেরা হাতমুখ ধুয়া লন। ততক্ষণে আমি একটু যাই। ‘

মেহতিশা হেঁসে দর্পণের সঙ্গে ঘরে আসলো। দর্পণ হয়তো আগে থেকেই সব রেডি করে রেখেছিলো। ঘরের একটা কোণাও অন্যরকম করা হয়নি৷ মেহতিশার মনেই হলোনা সে কতদিন এখানে ছিলোনা। একটু খারাপও লাগলো তার। দর্পণ ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে শার্টের বোতাম খুলছিলো। মেহতিশা আচমকা দর্পণের গালে হাত রেখে ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলল,

‘সরিইই।’

দর্পণ দুষ্ট হেঁসে কোমর টেনে কাছে নিয়ে আসলো।

‘সরি কেনো?’

‘এইযে এতদিন আপনাকে কষ্ট দিয়ে দূরে সরে ছিলাম। ‘

দর্পণ মেহতিশার কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে বলল,

‘প্রয়োজন ছিলো বউজান, এই যে আপনাকে আরও বেশি বেশি ভালোবেসে ফেললাম আমি!’

‘ওহ, আগে বাসতেন না তাহলে? ‘

‘না! ‘

বলেই ফিক করে হাসলো দর্পণ। মেহতিশা ঝাপিয়ে কিল ঘুষি দিলো বুকে। দর্পণ অনেকক্ষণ হেঁসে গড়াগড়ি খেয়ে বলল,

‘হয়েছে হয়েছে, এবার চলুন একটা জিনিস দেখাই। ‘

‘কী?’

‘আহা, আসুন না! ‘

মেহতিশাকে নিয়ে নিশিতার ঘরে আসলো দর্পণ। মেহতিশা হতভম্ব হয়ে গেছে। অস্থির ভাবে বলল,

‘আরে! নিশিপু কোথায়?ঘর খালি কেনো?’

দর্পণ হেঁসে বলল,

‘নিউইয়র্ক। ‘

‘মানে! ‘

‘মানে, তার গন্তব্য ওখানেই ভাইয়ার কাছে। ‘

মেহতিশা চমকে উঠলো।

‘ভাইয়া মানে? ‘

‘হুম, ভাইয়া বেঁচে আছে বউজান। ‘

‘তা তো জানি, কিন্তু কোথায় সে? ‘

‘সেদিন কার এক্সিডেন্টে ভাইয়া মারা যায়নি৷ কিন্তু গুরুতর আহত হয়ে কোমায় চলে গিয়েছে। বাংলাদেশে থাকাকালীন তোমার মেঝো চাচা বেশ কয়েক বার তাঁকে খুঁজে বের করে মারার চেষ্টা করেছে, তাই আমি তাঁকে কলাকৌশলে গোপনে নিউইয়র্কে পাঠিয়ে দিয়েছি। মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছিলো ভাবি। প্রচুর ভালোবাসে ভাইয়াকে। এতদিন না পারলেও,তুমি যাওয়ার কদিন পর ভাবিকে পাঠিয়ে দিয়েছি। ওখানে দু’জনেরই চিকিৎসা হবে। হয়ত দু’জনই পারবে একে অপরের পরিপূরক হতে। ‘

মেহতিশা খুশিই হলো। শান্তির শ্বাস ফেললো। দর্পণ বলল,

‘দেখবে দুজন সুস্থ হয়ে একেবারে আমাদের ছেলের বউ নিয়ে ফিরবে! ‘

মেহতিশা হেঁসে বলল,

‘আপনি কীভাবে জানেন আমাদের ছেলেই হবে?’

‘জানি জানি, আমাদের জলই আসবে। ‘

‘না না, আমি আমার ছেলের নাম জল রাখবোনা। ‘

‘তো কী রাখবে?’

মেহতিশা দর্পণের কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলল,

‘প্রিয়’

সাদা শাড়ি পরিহিতা রমনীটি কাজল চোখে দিয়ে হাতে চুড়ি পড়ে বসে আছে ঠিক বিছানার মধ্যেখানে। পাশে ঘুমন্ত মানবটি নিশ্চল হয়ে শুয়ে আছে। এ নিদ্রার কী কোনো শেষ নেই? সেই কবে থেকে কৃষ্ণবরণ লোকটি ঘুমিয়েই আছে। উঠবেনা নাকি! নিশিতা অভিমানী চোখে চেয়ে রইলো। গত চারটে মাস যাবৎ সুস্থ হয়েছে সে। অথচ তাঁর প্রেমিক স্বামী একই ভাবে নিদ্রায় বিভোর। নিশিতা প্রায়ই শাড়ি পড়ে, চোখে কাজল দিয়ে আঁচল মাটিতে ফেলে ঘুরাঘুরি করে। কখনো নির্মল স্নিগ্ধ ছেলেটার চোখে মুখে হাত ছুঁইয়ে দেয়। কিন্তু ছেলেটা কী একটুও টের পায়না! পায় হয়তোবা। নিশিতার মনে হয়, নিশিতা পাশে বসে যখন অনবরত কথা বলে অর্পণের সাথে তখন মৃদু হাসে অর্পণ। বলে দেয় ইশারায়, আমায় ভুলো না প্রিয় আমি আসবো।

নিশিতা অর্পণে কপালে ওষ্ঠো ছুঁইয়ে দেয়। হাতে হাত রেখে বলে,

‘আমার স্লিপিং ম্যান, আপনি কী উঠবেন না? ‘

‘আচ্ছা থাক,উঠতে হবেনা। কবিতা শুনবেন? ‘

নিশিতা ঝুঁকে যায়। ছন্দে ছন্দে বলল,

এসো না প্রিয়!
বেসো গো তুমি আবার আমায় ভালো,
রইবো আমি আঁধার কুলে,
তোমার দিবস অবশ করে।
এসো না প্রিয়!
দেখো না আমায়,
তুমিহীনা আর কত?

তবুও এসো,
প্রিয় তুমি দিও বিরহ।

(সমাপ্ত)
‘প্রিয় দিও বিরহ’
লেখনীতেঃ নাঈমা হোসেন রোদসী।

১১/০৩/২০২২।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here