The Hunted Lover💖part-20

#The_Hunted_Lover (A vampire love story)
#Tafsia_Meghla
#Part:20

বলেই ঘারে দাত বসিয়ে আবার রক্ত পান করতে থাকে, মায়া আবার নিজের সকল ভর রয়ের উপর ছেড়ে দেয় রয় কিছুটা তৃষ্ণা মিটিয়ে সরে এসে মায়ার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলে,
— “তোমায় মারবোনা ঠিক মত বাঁচতেও দিবো না৷ তোমাকে মারলে নিজেই শেষ হয়ে যাবো তাই নিজের কাছে আবদ্ধ করে রেখে নিজের তৃষ্ণাও মেটাবো আমার ভালোবাসার উষ্ণতায় ডুবিয়েও রাখবো৷ ”
মায়াকে নিয়ে আবার বিছানার উপর শুইয়ে দিয়ে নিজে ওর পাশে বসে দেখতে থাকে৷

মায়া ঘুম থেকে উঠেই নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করে কিন্তু স্পষ্ট মনে আছে ও তো বারান্দায় ছিলো, কী হলো? তাহলে কি স্বপ্ন ছিলো সব? নাকি স্বপ্ন নামক ভয়ংকর এক রাত ঘারে হাত দিয়ে দেখে ঘারে কোন দাগ নেই কিন্তু শরীরটা নিশক্তি লাগছে৷ এমনটা হচ্ছে কেন?
আর স্বপ্নই যদি হয়ে থাকে এর আগের দিন রাতেও এমন হচ্ছিলো কেনো?
ফোনের আওয়াজ পেয়ে ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে আসে ফোনে তাকিয়ে দেখে জেনিফা ফোন করেছে৷
ফোনটা ধরে জোর পূর্বক হাসি টেনে বলে,
— “কি রে জেনি আজ এতো সকাল সকাল আমায় স্বরন করলি যে?”

জেনিফা ও কিছুটা হেসে বলে,
— “আজ কলেজে যেতে ইচ্ছে করছে নারে৷ ”

— “কেন তোর আবার কি হলো? আর কলেজে যাবিনা মানে কি আজ ক্লাস টেস্ট আছে ভুলে গেলি?”

জেনিফার তখনি মনে পরে আজ যে ক্লাস টেস্ট আছে, জেনিফার কলেজে না যাওয়ার কারন সে রিওর মুখো মুখি হতে চায় না৷ যদি দুর্বল হয়ে পরে?
তাও যেতে তো হবেই জেনিফা “যাবো ” বলেই ফোনটা রেখে দেয়৷

অদৃশ্য অবস্থায় রিও বাকা হাসছে আর বলে,
— “পাখি আমার থেকে আড়ালে থাকতে চাইছো তা কি করে হয় বলো তো? তোমাকে যে আমার হয়েই থাকতে হবে৷ ”

জেনিফা রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট না করেই বেরিয়ে পরে, আজ একটা ক্যাব ও নেই তাই পায়ে হেটেই রওনা হলো মাঝ পথে একটা কালো গাড়ি জেনিফার সামনে ব্রেক মারতেই জেনিফা রেগে কিছু বলবে এর আগেই রিও বের হয়ে মুখে বাকা হাসির রেখা টেনে বলে,
— “কোথায় পালাচ্ছো৷ ”

জেনিফা ব্রু কুচকে বলে,
— “আপনি এখানে কেন?”

— “তোমাকে নিতে এলাম উঠো গাড়িতে উঠো৷ ”

জেনিফা একবার রিওর দিকে তাকিয়ে ওর সাইড ক্রস করে আবার হাটা দেয়৷ রিও ঝরের গতিতে জেনিফার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় জেনিফা আবার সরে যেতে নিলে হাত দিয়ে বাধা দেয়৷
জেনিফার এবার খুব রাগ হচ্ছে,
— “এভাবে পথ আটকাচ্ছেন কেন? কি চান বলুন তো?”

রিও জেনিফাকে কাছে টেনে বাকা হেসে বলে,
— “তোমার আশিক হতে চাই৷ ”

বলেই জেনিফাকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ের কাছে নাক নিতেই মাথা চারা দিয়ে উঠে কিছু একটা ভেবে বাকা হেসে জেনিফা কে সামনে এনে ওর চোখের দিকে নীলাভো চাওনি দিয়ে তাকায় আর জেনিফা ওমনি নিজের সব ভর রিওর ওপর ছেড়ে দেয়৷ রিও জেনিফাকে গাড়িতে বসিয়ে ঘাড় থেকে চুলটা সরিয়ে কিছুটা রক্ত নিজের ভেতর শুষে নিয়ে সামনে ঘুরে জেনিফার বন্ধ করা ঘন পাপড়ির দিকে তাকিয়ে এক হাত দিয়ে জেনিফার ঠোট স্লাইড করতে করতে বলে,
— “আমি তোমার কাছে আছি তাও এতোটা দূরে দূরে থাকছো এঞ্জেল? ভ্যাম্পায়ার প্রিন্স সায়মন রিও কে কষ্ট দেওয়ার শাস্তি যে তোমাকে একটু একটু করে পেতে হবে৷ ”
বলে পৈচাশিক হাসি দিয়ে উঠে৷ তারপর আবার বাকা হেসে সেই নীলাভো চাওনি দিয়ে ওর বন্ধ করা চোখ গুলোর দিকে তাকাতেই চোখ খুলে জেনিফা৷

কি হলো? গাড়িতে এলো কি করে? রিওর দৃষ্টি সামনের দিকে রিও ড্রাইভ করছে আর জেনিফা অবাক হয়ে ভাবছে৷
জেনিফা বলে,
— “এখানে এলাম কি করে?”

রিও সাইডে থেকে চশমা টা পরে গাড়ির আয়নার দিকে তাকিয়ে এক হাতে চুল ঠিক করতে করতে আরেক হাতে ড্রাইভ করতে করতে বলে,
— “তুমি তো এলে৷ ”

— “কিইইই আমি এলাম মানে?

— ” কি না জ্বী তুমি এসেছো ক্যাব পাচ্ছিলে না তাই৷ ”

জেনিফার যেমন সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে, মনে পরছেও না৷ কলেজের সামনে আসতে তারাতারি করে গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে হাটা দেয়৷ জেনিফার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে রিও৷
গাড়ি পার্কিং করে কলেজে ঢুকার পথেই মায়ার সাথে ধাক্কা খায় রিও৷ কিছুটা বিরক্ত নিয়ে তাকায় মায়ার দিকে এমনি এতো মানুষের ভিড়ে রক্তের গন্ধে মাথা ভন ভন করে, আবার ইউসলেস মানুষ গুলো নে দেখেই হাটে বিরবির করতে করতে হাটা দিবে রিও তখনই মায়ার ঘাড়ে চোখ যায় রিওর সাধারণ মানুষ তা খেয়াল না করতে পারলেও রিওর চোখ এরায় নি ভ্যাম্পায়ার এর দাতের চিহ্ন৷
কিন্তু কে করেছে এটা রিও বুঝতে পারছে না৷ মায়ার শরীর ও ক্লান্ত দেখতে লাগছে৷

রিও কিছু একটা ভেবে বলে,
— “ঠিক আছো তুমি?”

মায়া রিও কে দেখে ক্লান্তির ছাপ থাকা শর্তেও জোর পূর্বক হাসি টেনে বলে,
— “হ্যা ভাইয়া ঠিক আছি৷ ”

রিও ভাবছে, মানুষ গুলো সত্যি বোকা নয়তো এমন শরীর নিয়েও কেউ ঠিক আছি কি করে বলে?
আর মায়ার শরীর থেকে যে কোন ভ্যাম্পায়ার রক্ত পান করছে তাও কেমন তার কাছে অজানা৷
রিও পিছে তাকিয়ে দেখে রয় দাঁড়িয়ে বাকা হাসছে এ হাসির কারন কিছুটা হলেও বুঝতে পারছে৷ রিও হলদেটে চাওনি দিয়ে রয়ের মস্তিস্কে দিকে তাকিয়ে কান পেতে শুনতে পারছে এ কাজ যে রয়ের৷
মায়া যাওয়ার পরই রিও রয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
— “কেন করছো মেয়েটার সাথে এমন?”

রয় বুঝতে পেরেছে রিও কিসের কথা বলছে রয় বাকা হেসে বলে রিওর দিকে সেই দৃষ্টিতে তাকিয়ে বাকা হেসে বলে,
— “আপনি যদি এঞ্জেলিনাকে এতো ভালোবেসেও তার রক্ত পান করে পিপাসা মোচন করতে পারেন আমি পারি না কেন? আমি সামান্য ভ্যাম্পায়ার পুত্র হলেও আপনার সাথেই কিন্তু বড় হয়েছি বন্ধু আর ভাইয়ের মতো, একটুতো আপনার মত হবোই তাই না প্রিন্স৷ ”

রয়ের উত্তরে রিও বাকা হেসে বলে,
— “তা তো হবেই কিন্তু তোমার এই মাইন্ড পরার অভ্যাস টা গেলো না? একটা কথা যাই করো মেয়েটাকে মেরো না৷ ”

রয় মুচকি হেসে বলে,
— “ভালোবাসি ওকে আমি প্রিন্স, আমার হিংস্র যেমন আপনার মতো ভালোবাসাটাও আপনার মতো শত বছর অপেক্ষা করে থাকতে পারবো৷ ”

জেনিফা মাত্রই ক্লাশ টেস্ট দিয়ে বের হলো কোনো মতো পরিক্ষা দিয়েছে কারন রিওর সামনে পরা যাবে না রিও কে ক্লাসে দেখে এসেছে, তাই এখানে আর দাড়াতে চায় না সামনে হাটা দেবে তখনই ঝড়ের গতীতে এসে রিও বলে,
— “আবার পালাচ্ছো?”

জেনিফা কিছু না বলে হাত ভাঝ করে দাঁড়িয়ে থাকে এ ছেলে যে মহা ঘাড় বাকা এতো দিনে তা বুঝতে পেরেছে৷
রিও বাকা হেসে গাড়ি নিয়ে এসে জেনিফার সামনে এসে বলে,
— “গাড়িতে এসো৷ ”

জেনিফার এবার রাগ হচ্ছে এতো ইগনোর করছে তাও কোনো হেলাধোলাই নেই এই ছেলের৷
হঠাৎ মায়াকে দেখতে পেয়ে মায়ার দিকে ছুটে গিয়ে বালে,
— “মায়ু চল আজ এক সাথে যাবো৷ ”

বলেই হাত দিয়ে নাক ঘষে হেসে রিওর দিকে তাকায়৷ রাগে রিওর শরীর ফেটে যাচ্ছে কিভাবে ওকে এতোতা ইগনোর করতে পারে? এর শাস্তি তো ওকে পেতেই হবে৷
জেনিফা চলে যাওয়ার পর রিও ফুল স্প্রিডে গাড়ি চালাতে থাকে রাগে শরীর যেমন ফেটে যাচ্ছে৷
।
।
রাত গভীর জেনিফার ঘুম আসছে না কেন তা জানে না, এতোদিন কাউকে তার আশে পাশে অনুভব করতো কিন্তু আজ এমনটা হচ্ছে না তার জন্য কি ঘুম আসছে না? আর কাকেই বা অনুভব করে?
আর রিও এখনো আসেনি জেনিফার উপর অনেকটা রেগে আছে৷ জেনিফা অদৃশ্য যাকে অনুভব করে সে রিওই আজ আসেনি তাই এমন হচ্ছে৷

মায়া আজও ঘুমায়নি গুটিশুটি মেরে বসে আছে অদৃশ্য রয় আজ শান্ত হয়ে মায়ার ভীতু চেহারা দেখছে আর মুখ টিপে হাসছে মেয়েটা কতটা ভীতু তা ভাবছে৷ রয় গিয়ে মায়ার একেবারে পাশ ঘেষে বসে হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে৷ মায়া ভীতু হয়ে বলে,
— “কে আপনি? আপনি কি আমার স্বপ্ন? আমি কি স্বপ্ন দেখছি? রাতে সব উলট পালট থাকে সকালে সব গোছালো আগের মতো হয় কি করে?”

এবার রয় জোরে জোরে ঘর কাপিয়ে হেসে দেয় কি বলছে এই মেয়ে? রাতে এতো কিছু ঘটে যায় সব ওর কাছে স্বপ্ন মনে হয়?
অদৃশ্য কারো হাসির শব্দ পেয়ে কেপে উঠে মায়া রয় মায়াকে নিজের কাছে এনে চুল সরিয়ে ঠোটের ছোয়া দিতে থাকে৷
আজ রয়ের পিপাসা নেই ভালোবাসা দিতে ইচ্ছে করছে৷ রয়ের প্রতিটা ছোয়াতে মায়া কেপে উঠছে কিন্তু শরীরে অদ্ভুত শিহরন হচ্ছে৷

রয় ফিসফিস করে মায়াকে বলে,
— “আমাকে তোমার স্বপ্ন মনে হচ্ছে? আমি স্বপ্ন নই আমি তোমার ভয়ংকর বাস্তব, ভালোবাসি হ্যাঁ ভালোবাসি তোমায়৷ আমি এক রক্ত খেকো যে এতোদিন তোমারই রক্ত খেয়ে পিপাসা মোচন করেছে৷ ”

রয়ের কথা মায়া স্তব্ধ হয়ে যায় তার মানে এতো দিন যা হয়েছে স্বপ্ন নয়, রক্ত খেকো মানে ভ্যাম্পায়ার এবার মায়ার আরো বেশি ভয় করছে ভয়ে শরীর থর থর করে কাপছে৷
রয় এমন দেখে বলে,
— “ভয় নেই আমি তোমায় কিছু করবো না মাঝে মাঝে কিছুটা পিপাসা মোচন করবো আর গভীর ভালোবাসবো আমি তোমায় চাই গভীর ভাবে চাই৷ হয়তো ভাবছো মানুষ আর ভ্যাম্পায়ারের ভালোবাসা কি করে? সেটা আমি জানি না কিন্তু তোমাকে আমার চাই পিপাসা মোচন এর জন্য ও ভালোবাসার জন্য ও৷ ”

মায়া কাপা কাপা গলায় বলে,
— “আমি আপনাকে দেখতে চাই৷ ”

রয় কিছু না বলে বাকা হেসে দৃশ্যমান হয়৷ রয় কে দেখে মায়া অবাক হয়ে বলে,
— “আপনি? আপনি ভ্যাম্পায়ার? ”

মায়ার শরীর থরথর করে কাপছে, রয় বাকা হেসে লাল চক্ষু দিয়ে তাকায় মায়া অন্যদিকে ঘুরে চোখ বন্ধ করে বলে,
— “প্লিজ যান এখান থেকে আপনি আমার সামনে আসবেন না, ভয় করে বড্ড ভয় করে প্লিজ ছেড়ে দিন না আমায়৷ ”
রয় রেগে কিছু বলতে গিয়েও শান্ত হয়ে বাকা হেসে অদৃশ্য হয়ে চলে যায়৷ মায়া এদিক ওদিক খুজতে লাগে৷

সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট করে কলেজের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হয় জেনিফা মনটা কেন জানে না খারাপ হয়ে আছে৷
রাস্তা দিয়ে হাটছে হঠাৎ মনে হলো পিছনে কেউ আছে, পিছে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেলনা হঠাৎ সামনে কেউ এসে হিংস্র দৃষ্টিতে জেনিফার দিতে তাকাতেই জেনিফা নিচে লুটিয়ে পরে আর সে উঠিয়ে কোথাও একটা নিয়ে যায়৷

চলবে,,

[কি হলো জেনিফার? কে নিয়ে গেলো? আমি জানি না 😑কেমন হচ্ছে জানায়ো]