হৃদয়ের কোণে পর্ব ৩০

0
819

#হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ৩০)
#নাহার
·
·
·
সন্ধ্যার দিকে শুরু হলো হলুদের মূল অনুষ্ঠান। পার্লারের মেয়েরা এলো বাড়ির মা, চাচি এবং সব বোনদের সাজাতে। সবাই সাজলেও নিরা সাজেনি। তার নাকি একদমই ভালো লাগে না পার্লারের সাজ। নিরা নিজে নিজেই হালকা ভাবে সেজেছে। ছাদে কাজিন ভাই সব আছে। লো ভলিউমে মিউজিকের শব্দ আসছে কানে। নিরা হলুদ লেহেঙ্গা পরেছে। সব কাজিন বোনেরা হলুদ লেহেঙ্গা পরেছে। আর মা এবং চাচিরা পড়েছে হলুদ শাড়ি। ছেলেরা হলুদ পাঞ্জাবি পরেছে।

নিরা সেজেগুজে উপরে গেলো। সবাই আছে এখন। নিরা বারবার শুধু রাফিনকে খুজতে লাগলো। কিন্তু রাফিনকে কোথাও পেলো না। এমন সময় মেহরাব সামনে এলো। নিরাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে বললো,
— ইউ আর লুকিং গর্জিয়াস।

নিরা মৃদু হেসে চলে আসতে চাইলে মেহরাব ওকে আবার থামায়। বললো,
— আমি এখানে এসেছি পর্যন্ত একবারো কথা বলোনি। কি হয়েছে বলো?

— কিছু না।

— তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো।

— হু বলুন।

— আসলে এখান থেকে যাওয়ার পর আমার বিয়ের তোরজোর শুরু হবে। পাত্রী দেখবে। তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে। তাই ভাবছি..

নিরা আর দাড়ালো না। নিচে চলে এলো। ড্রয়িং রুম জুরে মেহমান আর মেহমান। নিরা একপাশে দাঁড়িয়ে আছে৷ মনে মনে মেহরাবকে অনেক বকলো। সবাই যে যেভাবে পেরেছে মোড়া, চেয়ার ইত্যাদি নিয়ে বসে মেহেদি লাগাচ্ছে। কৌশিককে কাশফি মেহেদী লাগয়ে দিচ্ছে আর বিভিন্ন দু্ষ্টামি করছে। নিরার ওদের দেখে মনটা ভালো হয়ে গেছে। অন্তত আজকের দিনে কাশফি প্রাণ খুলে হাসছে এটাই বেশি।

নিরা একপাশে দাঁড়িয়ে আজকের দুপুরের কথা ভাবছিলো আর মনে মনে লজ্জা পাচ্ছে। কিভাবে সে রাফিনের সামনে যাবে এই ভেবে লজ্জায় লাল হচ্ছে। তবে এখনো মনে মনে রাফিনকে খুজচ্ছে। সিড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাফিন নামছে। মোবাইলে কি যেনো দেখছে আর নামছে। হলুদ পাঞ্জাবিতে সোনালি রঙের সূতার ফুলের কাজ। অসম্ভব মানিয়েছে। নিরা মুগ্ধ হয়ে দেখছে। আবার মনে মনে খুব হিংসেও হচ্ছে। ছেলে হয়ে এতো সুন্দর হওয়ার কি দরকার ছিলো তার।

রাফিন এসে কৌশিক আর কাশফির সাথে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বললো হাসাহাসি করলো। হাসিতে যেনো আরো বেশি সুন্দর লাগছে রাফিনকে। নিরা শুধুই দেখে যাচ্ছে। রাফিন কথার ফাকে ফাকে বারবার এদিক সেদিক তাকাচ্ছে। নিরা মুচকি হাসলো কারণ সে বুঝে গেছে রাফিন তাকেই খুজচ্ছে।

নিরা আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো মেয়েরা রাফিনকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। এবার রাগ উঠলো। নিরার ইচ্ছে করছে মেয়েগুলোর চোখ কানা করে দিতে। কিন্তু সেটাতো সম্ভব নয়। আবার ইচ্ছে করছে রাফিনকে কালি মেখে দিতে যাতে তারা কেউ আর না তাকায়। এইসব সাত পাঁচ ভাবনায় ফোড়ন পড়লো একটা মিষ্টি সুবাসে। নিরার মনে হলো এই সুবাস তার খুব চেনা। আশেপাশে তাকিয়ে খুজতে শুরু করে কিন্তু নেই। পেছন ফিরেই একটু চমকালো কারণ রাফিন নিরার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলো। রাফিন হাসছে। নিরা বললো,
— একটু আগেই তো আপনাকে ওখানে দেখেছি। এখানে কখন এলেন?

— যখন তুমি আমার ভাবনায় ডুবে ছিলে।

কথাটা বলে চোখ টিপ দিলো। নিরা বিচলিত হয়ে বললো,
— মোটেও না। আমি আপনার ভাবনায় ডুব দেইনি।

— আচ্ছা তাই? তাহলে আর এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কি লাভ। এরচেয়ে ভালো আমি এই মজলিস থেকে কাউকে পটিয়ে ফেলি। কি বলো? আইডিয়া কিন্তু খারাপ না।

কথাটা বলেই রাফিন চলে গেলো। নিরাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলো না। রাফিন কয়েকটা মেয়ের সাথে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলছে। যেটা নিরার গায়ে কাটা দেয়ার মতো ছিলো। মেয়েগুলোও হেসে হেসেই কথা বলছে। এবার নিরা খুব রেগে গেলো। বাড়ির সবাই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। নিরা আর কিছু না ভেবে রাফিনের হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে গেলো। রুমের ভেতরে নিয়ে দরজা আটকে দিলো। দরজার সাথে হেলান দিয়ে দুইহাত পিঠের পেছনে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নিরা। রাফিন খাটে বসে আছে। কিছুক্ষণ এভাবেই নিরব ছিলো দুজন। রাফিন বললো,
— শুরু করো।

নিরা অবাক হয়ে উত্তর দিলো,
— কি শুরু করবো?

— এখানে যেটার জন্য এনেছো।

— ম মানে?

— আরে তুমি তো আমাকে এখানে এমনি এমনি আনো নি তাই না।

— না।

— তাহলে শুরু করো। যেই কাজের জন্য এনেছো সেটা শুরু করো।

— আপনার কাজ হলো এখানে বসে থাকবেন।

— ওমা এটা কেমন কাজ।

— জানি না।

— উহ! আমি এখানে বসে থাকবো না। নিচে কত সুন্দর মেয়ে আছে। ওদের পটিয়ে প্রেম শুরু করবো। এখানে বসে থাকার কোনো মানে হয় না।

নিরা রেগে গেলো। দরজার সাথে আরো ঠেসে দাঁড়ালো। রেগে বললো,
— কে বলেছে আপনাকে এতো সেজেগুজে নিচে আসার জন্য। সবগুলো মেয়ে একদম গিলে খাচ্ছে। যাওয়া লাগবে না আপনার সেখানে।

রাফিন নিরার দিকে তাকিয়ে আছে আর মুচকি হাসছে। বললো,
— ঠিক আছে। আমি এখানেই বসে আছি।

—————————————-
হাসপাতের কেবিনের বারান্দার চেয়ার বসে আছে তূর্য। একটু পর তুহিনের মা মিসেস তনিমা এলেন। চেহারায় তার প্রচুর রাগ। তূর্যকে একনজর দেখে ভেতরে গেলেন। তূর্য এখনো বসে আছে চুপচাপ। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার সহ বেরিয়ে এলেন। তূর্য দাঁড়িয়ে গেলো। ডাক্তার বললো,
— তুহিনের অবস্থা অনেক খারাপ। আই সিউ তে রাখতে হবে। খুব বেশি ইনজুরি হয়েছে। মাথা অনেকটা ফেটে গেছে। অনেক ব্লেডিং হয়েছে। রক্ত লেগেছে চার ব্যাগ। আগামী চব্বিশ ঘন্টায় জ্ঞান না ফিরলে কোমায় চলে যাবে।

ডাক্তার কথা গুলো বলে চলে গেলেন। তূর্য মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। মিসেস তনিমা তূর্যের দিকে তাকিয়ে বললেন,
— এসব তোমার জন্য হয়েছে। তোমার মতো একটা আপদ বাড়িতে থাকলে বিপদ তো হবেই। আমার ছেলের অবস্থা তোমার জন্য এমন হয়েছে। কত হাসি খুশি ছিলো আমার ছেলে। ঢং করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কি দরকার ছিলো হ্যাঁ? না তুমি বেরিয়ে যেতে না আমার ছেলে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে তোমাকে খুজতো আর না এক্সিডেন্ট করতো। বিদায় যখন হয়েছো একেবারে হয়ে যাও। কোনো দরকার নেই তোমার।

— আমিতো যেতে চাইনি। আপনিই আমাকে বের করে দিয়েছেন।

— হ্যাঁ দিয়েছি। বেশ করেছি। মনতো চায় তোমাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দি।

কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলেন মিসেস তনিমা। তূর্য ধপ করে বসে পরে সিটে। দেয়ালের সাথে মাথা হেলান দিয়ে বসে। চোখ বন্ধ করে নেয়।

গতকাল রাতে খুব ঝামেলা হয়েছে বাসায়। তুহিনের গালে মারের দাগ দেখে মিসেস তনিমা চেচিয়ে ডাকলেন তূর্যকে। তুহিনকে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছে সে নাকি কিছুই বলছে না। তাই তূর্যকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে। তূর্য একবার তুহিনের দিকে তাকিয়ে গড়গড় করে সব বলে দিলো। মিসেস তনিমা রেগে থাপ্পড় দিলেন তূর্যকে। তুহিন নির্বাক ছিলো। দেখেও না দেখার মতো করে ছিলো। মিসেস তনিমা রেগে বললেন,
— বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে। তোমার এই চেহারা দেখতে আমার রুচিতে বাজে। তুহিন আগেই বলেছে আমাকে সব। নিজের এতোবড় পাপ আমার ছেলের ঘাড়ে চাপাচ্ছো। ওই নষ্টা মেয়ের সাথে খাতির তো তোমার। আমার ছেলের দোষ দিচ্ছো কেনো। বিয়ের আগেই অন্য ছেলের সাথে শুয়ে পরে, ছি! ছি! বের হও তাড়াতাড়ি।

তূর্য দাঁড়ালো না। নিজের কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বের হয়ে গেলো। কতবড় একটা কথা বললো তাকে ছিহ! নিরার তো দোষ নেই। তাঁর ছেলেই মেয়েটাকে চরিত্রহীনা বানিয়েছে। এই ঘরে না থাকায় ভালো।

তুহিন আসলে তূর্যকে খুজতে বের হয়নি। নিরার উপরে এখনো তার ক্ষোভ আছে। সে মনে করে নিরার জন্য এতোকিছু হয়েছে। কেনো নিরা তার কথা মতো উঠে বসে না? তাই এতো সব কান্ড হয়েছে। রাগের বসে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে এক্সিডেন্ট করেছে। গাড়ি ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। আর তুহিনের অবস্থা খুবই খারাপ। তাও সব দোষ এসে চেপেছে তূর্যের ঘাড়ে।

চোখ বন্ধ অবস্থায়ই কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো তূর্যের গাল বেয়ে। মনে মনে বললো,
— প্লিজ মা তোমার কাছে নিয়ে যাও। প্লিজ। আর সহ্য হয়না এসব।

—————————————-

প্রায় দুই ঘন্টা হলো ঘরের ভিতরে বসে আছে রাফিন আর নিরা দরজা ধরে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। এবার বোরিং লাগছে রাফিনের। নিরার দিকে একটু ভালো করে তাকালো। মেয়েটাকে হলুদ লেহেঙ্গায় অসম্ভব সুন্দর লাগছে। যতই দেখুক না কেনো মন ভরবে না। নিরা অন্যদিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে নেতিয়ে যাচ্ছে। রাফিন আরেকটু ভাবলো। মাথায় কিছু দুষ্টামি বুদ্ধি চাপলো। ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে উঠে দাঁড়ায়। নিরা খেয়াল করেনি রাফিনকে।

রাফিন এসেই নিরাকে দরজার সাথে চেপে ধরে। নিরা চমকে যায়। ভয়ার্ত চোখে রাফিনের দিকে তাকিয়ে আরো ভয় পায়। রাফিনের চোখে নেশা, মাদকতা আর দুষ্টামি। এখন যে ছাড়া পেতে কষ্ট হবে খুব বুঝতে পারছে নিরা। ভয়ে ভয়ে বললো,
— ক কি কি হয় হয়েছে?

নিরার হাত ছেড়ে দিয়ে দুইহাতের মাঝে নিরাকে আটকায়। রাফিনের নিঃশ্বাস নিরার মুখে, গায়ে আছড়ে পোড়ায় এক শিহরণ বয়ে যাচ্ছে নিরার শরীরে। রগে রগে এক উত্তেজনা কাজ করছে। নিরার ইচ্ছে করছে রাফিনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে কিন্তু কোথাও যেনো বাধা পাচ্ছে। কাঁপা কাঁপা স্বরে বললো,
— প্লিজ ডাক্তার সরে দাঁড়ান।

রাফিন নেশা ভরা কন্ঠে বললো,
— না। আমাকে এখানে আনার আগে ভাবা উচিত ছিলো তোমার। এখন আর ছাড় পাবে না নিরুপাখি।

কথাটা বলেই রাফিন নিরার গলায় ঠোঁট ছোয়ায়। রাফিনের স্পর্শে নিরা কেঁপে উঠে। রাফিনের পাঞ্জাবির একপাশে খামচে ধরে। চোখ বন্ধ করে ফেলে। রাফিন নিরার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
— আমি যদি এখন খুব একটা অসভ্যতা করি তুমি কি খুব রাগ করবে?

নিরা ঝট করে চোখ খুলে তাকায়। হৃদস্পন্দন বেড়ে গেছে। এবার বেশ লজ্জা পাচ্ছে। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় রাফিনকে। দরজা খুলে দৌড়ে পালায় ঘর থেকে। রাফিন শব্দ করেই হেসে দেয়। বললো,
— খুব একটা জব্দ করেছি নিরুপাখি তোমাকে। এরপর থেকে এভাবে আমাকে নিয়ে একা রুমে আসতে ভয় পাবে। হিহি। কিন্তু বিয়ের পর কি যে হবে আল্লাহই জানে। একটু রোমেঞ্চ করতে গেলেই এই মেয়ে মনে হয় ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালাবে। হাহ কপাল আমার।

নিজে নিজে বকবক করে রুম থেকে বের হয়ে ছাদে গেলো রাফিন। এখন সবাই ছাদে আছে। হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। আরো মেহমান আসছে। খেয়ে যাচ্ছে, বাবা মায়ের সাথে কথা বলছে। নিরা একপাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। রাফিন ছাদে এসে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। নিরাকে একপাশে একা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একটু হাসে। সবার সাথে আড্ডায় মেতে উঠে রাফিন। নিরা এসব দেখে মনে মনে অনেক বকলো। বিড়বিড় করে বললো,
— আমার আরাম হারাম করে নিজে এখন বেশ আড্ডায় মেতেছে। আরে আমি কি কুমতলবে সেখানে নিয়ে গেছি নাকি। আজব। মেয়েরা সবাই তাকিয়ে ছিলো তাইতো নিয়ে গেছি। কই আমাকে থ্যাংকস দিবে সেটা না করে আমাকে আরো..উফ! থাক নিরা এসব ভাবিস না। আমিও দেখে নেবো আপনাকে। হুহ।

আবার একফাকে রাফিন নিরার দিকে তাকায়। নিরারও রাফিনের চোখে চোখাচোখি হয়। রাফিন ভ্রু নাচিয়ে ঠোঁট দুটো হালকা গোল করে চুমু খাওয়ার ভঙি করে। আবার অন্যদিকে ফিরে যায়। নিরা এবার বেশ বড় রকমের শক খেলো। হাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে। মুখটা অটোমেটিক হা হয়ে গেছে। মনে মনে একটা কথাই বললো,
— অসভ্য।

কিছুক্ষণ পর রাফিন উঠে এসে নিরার পাশে দাঁড়ালো। নিরা একটু হচকচিয়ে যায়। একটু দূরত্ব রেখে দাঁড়ায়। রাফিন মৃদু স্বরে বললো,
— এখানে ছেলেরা সবাই তোমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে এটা তোমার চোখে পড়ছে না?

কথাটা বলে নিরার দিকে তাকায়। নিরা একপলক রাফিনের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। রাফিন এবার একটু রসিকতা করে বললো,
— এবার আমি তোমাকে রুমে নিয়ে যাবো। আমারও হিংসে হচ্ছে জানু।

কথাটা বলে নিরার কানের কাছে চুমুর শব্দ করে। নিরা কয়েকটা বড়বড় নিঃশ্বাস ফেলে। রাফিন আবার বললো,
— রুমে নিয়ে গেলে কিন্তু আমার অসভ্যতা তুমি সামলাতে পারবে না।

নিরা আস্তে করে বললো,
— অসভ্য।

রাফিন বেশ ফুরফুরা মেজাজে সবার সাথে আবার আড্ডায় মেতে আছে। নিরা নিচে নেমে আসে। বিড়বিড় করে বললো,
— ওইখানে দাঁড়িয়ে থাকার কোনো মানে হয়না। হুট করে এতটা অসভ্যতা করছে কেনো উনি? উফ! যত্তসব।

নিরা এসব বিড়বিড় করতে করতে দোতালায় নেমে আসে। ফায়াজের রুমে হালকা আলো জ্বলছে। নিরা অবাক হলো। সবাইতো উপরে তাহলে এখানে রুমে কে? রেলিং এর সামনে দাঁড়িয়ে নিচে তার মাকে ডাক দেয়ার আগেই কেউ নিরার হাত ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে গিয়ে দরজা অফ করে দেয়।
·
·
·
চলবে………………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here