হৃদয়ের ওপারে তুমি ❤ পর্ব-১

0
5297

চুরি করতে যেয়ে ধরা খেয়ে অভিযোগকারীর ও নিজের বাড়ির লোকদের সামনে নিজের বাড়িতে বিচারের মজলিশে কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকার অনুভুতি টা কেমন?লজ্জার?রাগের?অভিমানের?কষ্টের?

এক বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের একটি স্বনামধন্য পরিবারের বাড়ি ” রোজ প্যাটেল ” এর অভ্যন্তরে সামনের ফুলের বাগানে একটি বিচারসভা বসেছে। বিচারের আসামী এই বাড়ির একমাত্র কন্যা ১৬ বছরের এক কিশোরী। কিশোরীটি দুকান ধরে ছলছল চোখে দাঁড়িয়ে আছে। নাম তার ফুল, পুরো নাম জান্নাতুল ফেরদৌস ফুল। তার সামনে এ্যালুমিনিয়ামের বেঞ্চে বসে আছে তার বাবা নাজমুল শিকদার, বড় চাচা আলতাফ শিকদার, মামা – আসলাম ভুঁইঞা ও ফুপা – এনামুল হক। বিচারকরা সবাই গাম্ভীর্য বজায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

ফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ সে এক দম্পতির বাড়ির গাছের পেয়ারা চুরি করেছে এক দল ছেলেমেয়ে সহ। অভিযোগ এনেছে সালমা বানু আর জসিম মিয়াঁ নামের দম্পতি।

ফুলের বাবা গাম্ভীর্য ভাবে বললো,
চিন্তা করবেননা জসিম ভাই আমরা ফুলকে বুঝিয়ে বলবো। ও আর এমন কাজ করবেনা।
তৎক্ষণাৎ সালমা বানু কর্কশকন্ঠে উত্তর দিলো,
– এইকথাতো আগেও কয়েকবার বলেছেন। কি লাভ হয়েছে?আপনাদের মেয়ে কি সহজ কথা বুঝার বান্দা?সোজা যেতে বললে যাবে বাঁকিয়ে।
বড় চাচা নিচুস্বরে ফুলের উদ্দ্যেশে বললো,
– পরীমা (ফুলকে) আর এমন করোনা বাবা। আমাদের বাগানে যথেষ্ট পেয়ারা রয়েছে।প্রয়োজনে দেশ বিদেশ থেকে তোমার জন্য বিভিন্ন জাতের পেয়ারার গাছ রোপণ করে দেবো।
চাচার সাথে মামাও তাল মিলিয়ে একই কথা বললো,
– মামা তোমার জন্য বাজার থেকে নিজে গিয়ে বেছে বেছে ভালো পেয়ারা নিয়ে আসবো। প্রয়োজনে খেয়েও দেখবো কতোটা ভাল ।

এইদিকে ফুল ভাবনায় ডুবে আছে পেয়ারা চুরি করতে গিয়ে কি হয়েছে-
ফুল, ফুলের বান্ধবী বর্ষা ও তার ক্লাস ফাইভে পড়া ভাই বাদল আর ফুলের কাজে সবসময় সাহায্যকারী মিনা ও বকুল। ভাত খেয়ে এলাকায় টইটই করতে বেরিয়েছিল। মিনার বয়স ১৪ বছর আর বকুলের বয়স ১১। দুজনেই তাদের বাসায় কাজ করে রিনা খালার ছেলেমেয়ে।

ফুলরা ঘুরতে ঘুরতে সালমা বানুর বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে কিন্তু সবার চোখ বাড়ির পেছনে ওয়াল ঘেঁষে পেয়ারা গাছের টসটসে পাকা পেয়ারার দিকে। সবাই বাড়ির পেছনের ওয়ালের পাশে দাঁড়ালো, সালমা বানুর ছেলেমেয়ে বিয়ে দিয়ে স্বামী স্ত্রী টাঙ্গাইল থাকে আর ছেলেমেয়েরা ঢাকা শহরে। সালমা বানু ঝগড়াটে মহিলা, সবসময় কর্কশ কন্ঠে চেঁচামিচি করে।বিশেষ করে এলাকার বাচ্চাদের সহ্য করতে পারেনা। দান দক্ষিণার বেলায় চার আনাও না, আবার পরের থালা ভোগ করা থেকে নজর লাগানো স্বভাব ষোলো আনা আছে।

তাই ফুলও সালমা বানুর পিছনে পড়ে থাকে সবসময় ।
-হ্যাঁ রে আমি যা দেখছি তোরাও কি তাই দেখছিস?

মিনা বকুলের চোখ দুটো চকচক করতে লাগলো গাছের পেয়ারা গুলো দেখে।
-ফুলদি খেতে যা লাগবে না পেয়ারা গুলো!শুনেছি এই দজ্জাল বেটির গাছের পেয়ারা খেতে যা মিষ্টি!

ফুল পেয়ারা গাছের দিকে তাকিয়েই বললো।
-আমার প্রিয় ভাঙাচোরা সেনাদল, পেয়ারা গাছে করো আক্রমণ!
বাদল একটু চিন্তিতো ভাবে বললো।
-কিন্তু দিদি আমরা তো সবাই এই দেয়ালটার থেকে ছোটো,দেয়ালের উপর দাঁড়াতে পারলে গাছের ডালে পা রেখে পেয়ারা গুলো হাতানো যাবে।
-তা ঠিক বলেছিস, দাঁড়া আমাকে একটু ভাবতে দে।

কোমরে হাত দিয়ে গাছের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞদের মতো করে ভাবছে ফুল, কিভাবে কি করা যায়।
-হুম বুদ্ধি পেয়েছি!
বর্ষা ফুলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-কি আইডিয়া?
-বাদল আর বকুল তোরা দুজন ঘোড়া হবি,আমি তোদের পিঠে পা রেখে দেয়ালে উঠবো আর দেয়াল থেকে সোজা গাছে। আর বর্ষা মিনা তোরাও উঠবি কিন্তু গাছে না দেয়ালে দাঁড়িয়ে বসে থাকবি। মিনা তুই পাহারা দিবি ওদিক থেকে কেউ আসছে কিনা আর বর্ষা তোর কাজ হলো আমি পেয়ারা ছিঁড়ে তোর হাতে দেবো আর তুই বাদল বকুলের হাতে দিবি পেয়ারা।
বর্ষা চোখে মুখে স্বাধীনতার হাসি এনে বললো,
-আরে বাহ! এইটা তো মাস্টার প্ল্যান।এভাবে আমরা রোজ পেয়ারা চুরি করতে পারবো!

ফুলের প্ল্যান মতো সবটা হলো, বাদল আর বকুল প্রথমে ঘোড়ার মতো হলো ওদের পিঠে ভর করে ফুল ওয়ালের উপর উঠে সোজা পেয়ারা গাছের ডালে চলে গেলো এরপর মিনা আর বর্ষা উঠলো। ফুল পেয়ারা ছিঁড়ে প্রথমে একটাতে কামড় বসালো।
-আহা কি স্বাদ যেনো অমৃত!চুরির জিনিসের স্বাদ যেনো দ্বিগুণ থাকে! এমনি এমনিই কি চুরি করতে আসি!

নিচে থেকে বাদল বললো,
-ও ফুল দি তাড়াতাড়ি করো না, কেউ এসে যাবে তো
-দাঁড়া দিচ্ছি তো। আগে টেস্ট করে নিলাম পেয়ারা টা আসলেই মজা হবে কিনা। পরে যদি দেখি পেয়ারা মিষ্টি না।

ফুল একে একে পেয়ারা ছিঁড়ে বর্ষার হাতে দিচ্ছে আর বর্ষা পেয়ারা গুলো বাদল বকুলের দিকে দিচ্ছে ওরা ক্যাচ ধরছে।কারণ কোনো ভাবে পেয়ারা মাটিতে পড়লে ওদের সব কটাকে ফুল মাটিতে গড়াবে,গাছ থেকে নেমেই পেয়ারা খাবে।

এমন কুক্ষণে আগমণ ঘটলো সালমা বানুর, চোখ তো নয় যেনো অলরাউন্ডার সিসি ক্যামেরা, এদিক ওদিক তাকাতাকি করতে করতে যেয়ে দেখে তার বাড়ির পেয়ারা গাছটাতে হামলা হয়েছে! সাথে সাথে চেঁচিয়ে উঠলো,
-হায় হায় হায়!কে কোথায় আছো গো আমার পেয়ারা গাছ ভেঙে ফেললো, শিকদার বাড়ির বাঁদরের দল আক্রমণ করেছে! বজ্জাৎ বান্দরের দল দাঁড়া দেখাচ্ছি তোদের মজা!

সালমা বানুর চেঁচামেচির আওয়াজ পেয়ে মিনা বর্ষা লাফ দিয়ে ওয়াল থেকে নেমে যায় আর ওদিকে বাদল বকুল সালমা বানুর আওয়াজ পাওয়ার সাথে সাথে হাওয়া হয়ে গেছে।আর এদিকে ফুল একা একা গাছে ঝুলছে, তাড়াহুড়ো করে গাছ থেকে নামতে যেয়ে ওয়ালের ওপাশ ধপাস করে পড়ে গেলো, আর সালমা বানুর হাতে বন্দী হলো।

এখন রোজ প্যাটেলের বাগানে মানে ফুলদের বাড়ির সামনে বিচার সভা বসেছে । যেখানে বিচারক ফুলের বাবা, বড় চাচা,মামা, ফুপা।

মামার ডাকে ফুলের ঘোর কাটলো,
-পরী মা কি ভাবছো তুমি?কিছু বলছো না যে মা?
ফুল চোখ গরম করে মামার দিকে এক নজর তাকায় শুধু।

এমন সময় সালমা বানু মুখ ভেটকিয়ে নাক ফুলিয়ে ফুলিয়ে বলতে লাগলো,
-ইম্মম্ম আজাইরা পেখনা দেখে বাঁচি না! মেয়ে করেছে চুরি তার সাথে নাকি মুখে মধু লাগিয়ে কথা বলতে যাবো!আমার মেয়ে হলে চুলের মুঠি ধরে আছড়ে ফেলতাম।আপনাদের প্রশ্রয় পেয়েই এই মেয়ে এমন বাঁদর হয়েছে।অলক্ষ্মী মেয়ে একটা, পাতে নেয়ার অযোগ্য!তাকে নিয়ে নাকি এতো পেখনা করতে যাবো!

সালমা বানু অনেক সময় ধরেই উল্টা পাল্টা কথা বলছে। এবার উনি লিমিট ক্রস করে ফেলেছেন ফুলের বড়চাচা আলতাফ শিকদার রক্ত চক্ষু নিয়ে সালমা বানুর দিকে তাকিয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠলো,
-আপনার সমস্যা টা কি বলবেন একটু?আপনাকে তো বলা হয়েছেই আপনার ক্ষতিপূরণ দ্বিগুণ হারে দিয়ে দেয়া হবে! তারপরেও এতো কথা কিসের?আপনার কথা মতো আমাদের মেয়ের বিরুদ্ধে বিচার সভা বসিয়েছি, তাকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছি এটাই কি যথেষ্ট নয়?আর কাকে অলক্ষ্মী বলছেন? এই রোজ প্যাটেলের মণিকে!কি ক্ষতি করেছে ও আপনার যার জন্য এই কথা বলছেন? বার বার বলছি ছোটো বাচ্চা মেয়ে আমাদের।শখের বসে না হয়, না বলে দুটো পেয়ারা ছিঁড়েছে আপনার গাছে থেকে, তাই বলে আপনি আমাদের ই সামনে আমাদের ই মেয়েকে যা ইচ্ছে নয় তাই বলে যাবেন?

সালমা বানু আবার মুখ বাঁকিয়ে বললো,
-একেই বলে চোরের মায়ের বড় গলা! মেয়ে চুরি করেছে আর বলছে কিনা শখের বশে না বলে দুটো পেয়ারা ছিঁড়েছে করেছে!হুমহ!
সালমা বানুর স্বামী তার দিকে তাকিয়ে বললো,
-আহা চুপ করো না। উনারা তো বলছেই ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে তাহলে খামোখা এতো চেঁচাচ্ছো কেনো?
-এই তুমি চুপ করো,একটা কথাও বলবা না। ওসব ভং টং আমি ধরতে পারি না। যা সত্যি তাই ই বলি আমি।

ফুলের মামা ফুপাও আলতাফ শিকদারের সাথে তাল মেলাতে লাগলো,
-বিচার তো দেখছি আমাদের পরী মার বিরুদ্ধে নয় আপনার বিরুদ্ধে বসানো উচিৎ! আমাদের সামনে আমাদের মেয়েকে অসম্মানজনক কথা বলছেন!আপনার সাহসটার ওজন দেখছি শুধু।

ফুলের ফুপা বললো,
-ঠিকি বলেছেন ভাই, আমাদের মেয়ে ঠিকই আছে, সংশোধন তো এই মহিলার হওয়া উচিৎ!আমাদের সামনে আমাদের মেয়েকে বলছে অলক্ষ্মী! ওর পায়ের নখের যোগ্যতাও তো নেই এই মহিলার,আর ওকে বলছে পাতে নেয়ার অযোগ্য!

ফুলের মামা উঠে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে কয়েকটা পাঁচশো টাকার নোট বের করে সালমা বানুর স্বামী জসীম মিয়াঁর হাতে দিয়ে বললো,
-এখানে শুধু পেয়ারার ক্ষতিপূরণ না, বাড়তি টাকাও আছে সেটা দিয়ে আপনার স্ত্রীর একটা ভালো মানসিক রোগের ডাক্তার দেখিয়ে নিয়েন।মাথায় সমস্যা আছে উনার।

সালমা বানু দাঁত কিড়িমিড়ি করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই সবাই চেয়ার ছেড়ে উঠে চলে গেলো ফুলকে নিয়ে।
ফুল কারো সাথে একটা কথাও বলছে না, রাগে চোখ দুটো টগবগ করছে! তার উপর ফুলের মাত্রাতিরিক্ত রাগ উঠলে কান্না পায়। এই মুহুর্তে রাগের দৌলতে ফুলের কান্না পাচ্ছে খুব!যেকোনো সময় চোখের বাঁধ ভেঙে জল গাড়িয়ে পরবে।তার বর্তমানে বাবা,চাচা,মামা ফুপার উপর প্রচন্ড রাগ লাগছে, কারণ তাকে সালমা বানুর সামনে কান ধরিয়ে দশ মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখেছে।

ফুল কারো দিকে না তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে যায়।

ফুল বাড়িতে ঢুকতেই দেখে নিচে বিশাল ড্রয়িংরুমে বসে আছে মা(আয়েশা বেগম), ফুফু(আসমা বেগম), বড় চাচী /খালা(আমেনা বেগম), মামী(রোকেয়া বেগম) আর ভাবীরা ।সবাই এতোক্ষণ ফুলের জন্যই অপেক্ষা করছিলো । সবারই দুঃখী দুঃখী চেহারা শুধু মায়ের চেহারায় রাগী রাগী ছাপ দেখা যাচ্ছে উনি উঠে গিয়ে দাঁড়িয়ে, ফুলের দিকে যেতে যেতে বললো,
-এই তো আমাদের বাড়ির একমাত্র গর্ব ফুল রানী এসেছেন বিশ্বযুদ্ধ জয় করে! ওরে কে কোথায় আছিস আমার মেয়েকে এক গ্লাস লেবুর শরবত দে।

ফুলকে দেখে সবাই উঠে দাঁড়িয়ে ফুলের দিকে যায় । ফুফু গিয়ে ফুলকে জড়িয়ে ধরে, বড় চাচী ফুলের মাথায় হাত রেখে আয়েশা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে,
-কি শুরু করলি আয়েশা! আমার পরীমার মন খারাপ হয়ে আছে দেখতে পাচ্ছিস না?পরীমা আসো মা বসো মা, আমার কোলে বসবে!
-………………………
ফুলের হাত ধরে টান দিলে ফুল হাত ঝাঁকি দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

মামী ফুলের কাছে গিয়ে মাথা হাতিয়ে বলে,
-মন খারাপ করে না পরীমা !কিচ্ছু হয় নি সোনা।বাবা, চাচা,মামা,ফুফা সব কটাকে বকে দিবো, কত্ত বড় সাহস আমাদের মেয়ের বিচার বসিয়েছে! আর অই খাটাশ মহিলা কেও উচিৎ শিক্ষা দিবো।

এরই মধ্যে রিনা খালা(কাজের বুয়া) হাতে শরবতের গ্লাস নিয়ে আসে, ভাবী কবিতা শরবতের গ্লাস টা হাতে নিয়ে ফুলকে খাইয়ে দিতে যাবে এমন সময় ফুল কাঁদতে কাঁদতে সবার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে উপরে চলে যায়,দরজা আটকে বিছানায় বালিশে মুখ ঠেকিয়ে কাঁদতে থাকে প্রচুর । ভাবী পেছন পেছন গিয়ে দরজায় অনেক্ষণ নক করে, কিন্তু ফুল কোনো সাড়া শব্দ দেয় না।

ব্যর্থ হয়ে কবিতা ভাবী নিচে এসে পড়ে,এতোক্ষণে ফুলের বাবা, বড় চাচা, মামা, ফুপা বাড়িতে ঢুকে গেছে।
ফুলের বড় চাচী বড় চাচার উদ্দ্যেশে বললো,
-কেনো ওভাবে একটা বাইরের মহিলার কথায় বাড়ির মেয়ের বিচার বসাতে গেলে?না হয় মেয়ে আমাদের না বলে অই মহিলার গাছের দুটো পেয়ারা ছিঁড়েছে, বিচার দিয়েছে সেখানেই ব্যাপার টা মিটমাট করা যেতো। মেয়েকে ওভাবে কেনো কানে ধরাতে গেলে?ইশসস! আমার পরীর মতো মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে চোখ দুটো লাল করে ফেলেছে!

ফুলের মা বলে উঠলো,
-একদম ই না আপা।ও বড় হচ্ছে এভাবে অন্যায় সহ্য করা যায় না,অপরাধ করলে শাস্তি পেতেই হবে তাতে ফুল কাঁদে কাঁদুক। বেশি প্রশ্রয় দিলে ভবিষ্যতে আরো বড় কোনো অঘটন ঘটানোর সম্ভাবনা আছে।এভাবেই ওকে শাসন করে রাখতে হবে। মেয়ে অতি আদরে বাঁদর হয়ে যাচ্ছে।
-তুই চুপ কর আয়েশা!

বড় চাচা কোনো উত্তর দিতে যাবে তার আগেই ফুলের বাবা শান্ত স্বরে বললো,
-যা হয়েছে হয়েছেই, এটা নিয়ে কথা না বাড়ানোটাই শ্রেয়!এখন সবাই ভাবো পরী মার রাগ কিভাবে ভাঙানো যায়।আমাদের চারজনের উপর ভীষণ রেগে আছে
আমরা কাছে গেলেই পরীমা আরো রেগে যাবে। তোমরা দেখো কোনো ভাবে ওকে শান্ত করতে পারো কিনা।

সবাই হতাশা নিয়ে বসে রইলো, কারণ এখানে কারোরই সাধ্য নেই ফুলের রাগ অভিমান ভাঙানোর।একমাত্র ভাইয়েরা ছাড়া আর কেউ ফুলের রাগ ভাঙাতে পারবে না।এখন ভাইয়েরা বাড়ি ফিরলেই ফুলের মান ভাঙা যাবে।

মঙ্গল বার কুরবানি ঈদ তাই সব ভাইয়েরা মিলে হাটে গরু কিনতে গিয়েছে।কারণ ঈদের আর একদিন বাকি আছে।
ফুলের ভাবীরা ভাইদের কল দিয়ে খবর নিচ্ছে গরু কেনা কত দূর হলো, আর বাড়িতে যেনো জলদি ফেরার চেষ্টা করে।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাড়িতে হাঁকডাক শুনা গেলো সব ভাইদের।

চলবে…………
#হৃদয়ের_ওপারে_তুমি
#গল্প_ভাবনায়_ফারজানা_ইয়াসমিন_রিমি (আপু)
#লেখিকা_রিয়া_খান
#সূচনা_পর্ব
{আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় ভাই বোনেরা,অনেকদিন পর সবার জন্য নতুন আরেকটা গল্প নিয়ে এলাম।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ভুল গুলো ধরিয়ে দেবেন শুধরে নেবো।গল্পকে গল্প হিসেবেই দেখবেন,বাস্তবজীবনের সাথে মেলাতে যাবেন না। ভালো না লাগলে ইগনোর করুন।ধন্যবাদ!}
বিঃদ্রঃ-শুধু গল্পের ভাবনায় না, গল্পের কাভার পিক টাও আপুর আঁকানো।

যারা এখনো আমার গ্রুপে জয়েন করেননি তাদের গ্রুপে জয়েন করার আহ্বান করা হলো,আপনারা চাইলে আমার গল্প নিয়ে পোস্ট করতে পারেন,
“রিয়ার গল্পপুঞ্জ “আমার গ্রুপ।
নিচে গ্রুপের লিংক দেয়া হলো,
https://www.facebook.com/groups/399234587718623/?ref=share

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here