লুকোচুরি ভালোবাসা💖পর্ব:৪

0
4796

#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকা:তানজিনা-আক্তার-মিষ্টি( Tanjina Akter Misti)
#র্পব-৪

অবাক হয়ে রাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। কী থেকে কি হলো আমার মাথায় ঢুকলো না কিন্তু রাজ এমন করলো কেন? জানতে হবে আর ডাকই বা কেন দিয়েছে অদ্ভুত হঠাৎ এমন করার মানে বুঝবো কেমনে? তিথি বলেছিল শুনে যা আমি কেন যে ওমন করে চলে এলাম তখন তো একটু ও শুনতে মন চাই নি। এখন শুনবো কি করে হাত জ্বলছে উঠে নিচে নেমে এলাম। আর কতোক্ষণ বসে থাকবো বসে থাকলে ও তো কিছু জানতে পারবো না রাজের কাছে শুনতে হবে কি জন্য ডেকছিল? হাত লুকিয়ে রুমে এলাম মামুনি দেখলেই চেচামেচি শুরু করে দিবে কি ভাবে হলো? এতো প্রশ্নের উওর দেবো না তাই রুমে এসে নিজেই হাতে মলম লাগালাম।
নয়টার সময় খেতে আসলাম টেবিলে মামুনি খাবার বাড়ছে আন্কেল বসে আছে মুখ ভার আমি গিয়ে টেবিলে বসলাম।
— কি হয়েছে মামুনি তোমরা মুখ এমন করে রেখেছো কেন?
— শান্তি নেই একটু শান্তি নেই কি হলো আমার ছেলেটার বল তো সব সময় এমন রেগে থাকে। চিৎকার করে আমার এতো শান্ত ছেলেটার কি হয়ে গেল।
–কি হয়েছে বলো?
–আজকে ও ভার্সিটি থেকে এসে থেকেই রেগে গেল আমি কিছু বললাম। ডাকতে গিয়ে ও দেখি দরজা বন্ধ এখন পযর্ন্ত বন্ধ করেই আছে ধাক্কা দিলে রেগে উঠে ডাকতে না করেছে।
— ওহ
— তুই তো দেখেছিস মিষ্টি তুই বল আগের রাজের সাথে এই রাজের কোন মিল আছে। যে চিৎকার করতো না এখন সে চিৎকার করেই সব সময় কেমন করে থাকে।
— হুম
–খেতে ও আসলো না তুই একটু দেখবি ডেকে।
— আচ্ছা যাচ্ছি।

এটাই সুযোগ শুনার যেই উঠে যেতে যাব মামুনি আটকে দিল বলল খেয়ে নে আগে তুই তারপর ওর খাবার নিয়ে যাচ্ছ।

আমি ওক বলে। খেতে বসলাম কিন্তু খেতে ভালোলাগছে না পেটে খিদে তাই কোন রকম খেয়ে রাজের খাবার নিয়ে সিড়ির কাছে এলাম। দ্রুত হাটছি আবার আস্তে কিভাবে জিগ্গেস করবো আমি বললে কি আমাকে বলবে চেষ্টা করে দেখতে হবে।

দরজায় সামনে দাড়িয়ে আছি ঢুকার সাহস হচ্ছে না না জানি কি বলে? মামুনি বলেছিল দরজা বন্ধ কিন্তু দরজা তো খুলা দেখছি মনে হয় ভেবেছে আর কেউ ডাকতে আসবে না। আমি মনে অসীম সাহস নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গেলাম রাজ খাটের মাঝে শুয়ে আছে যে ভাবে ভার্সিটিতে ছিলৌ সেভাবে ছাদে ও গিয়েছিল এখন ও সেই পোশাক এই আছে চেন্জ করে নি। চোখ বন্ধ করে কপালে হাত রেখে আছে আমি ধীর পায়ে এগিয়ে পাশের টেবিলে খাবারের পিলেট রাখলাম একটু শব্দ করে যাতে বুঝতে পারে কেউ রুমে এসেছে। শব্দ শুনে রাজ কপালে থেকে হাত সরিয়ে চোখ মেলে তাকালো খুব শান্ত ভাবেই তাকালো।

হাতের ইশারায় আমাকে কাছে ডাকলো আমি কিছু না ভেবেই খাট ঘেষে দাড়িয়ে পরলাম। রাজের দিকে তাকিয়ে আছি চোখ দুটো অসম্ভব লাল হয়ে আছে কেদে এমন লাগছে। হঠাৎ হাতে টান অনুভব করলাম দেখি রাজ আমার হাত ধরে টেনে পাশে বসিয়ে দিলো। আমি অবাক হয়ে আছি এ খাটে কখনো কাউকে বসেতে দূরে থাক রুমে আসলেই বকাবকি শুরু করে দেয়। আমি জোর করে যে কয়বার বসেছি বকা খেয়েছি। রাজের এমন শান্ত দৃষ্টি দেখে কিছু বুঝতে পারছি না আমি সেই সুযোগ পেলাম। জিগ্গেস করতে মুখ খুলবো কিন্তু খুলতে পারলাম না রাজ আমার হাত নিজের বুকে চেপে ধরলো। সঙ্গে সঙ্গে কারেন্টে শক খেলাম হাত সরিয়ে আনতে গেলে রাজ আমার হাত শক্ত করে ধরে।

— প্লিজ সরিয়ে নিয়ো না হাত মিষ্টি। বাস্তবে তো তোমার হাত আমি বুকে চেপে ধরবো না কল্পনায় না হয় একটু রাখো। ( চোখ বন্ধ করে ) আমার বুকের মধ্যে অনেক জ্বলছে কেন আমার কথা শুনো না কেন? আজ কেন এতো কষ্ট দিলে কেন এতো অবহেলা করো আমাকে একটু ও বুঝতে চাও না কেন?

চোখ বন্ধ করে একাধারে কথা বলে চলেছে রাজ আর আমি অবাক হয়ে কথা শুনছি। ঈই ষব আবুল তাবুল বলে যাচ্ছে। পাগল হয়েগেল নাকি আমি টান মেরে হাত সরিয়ে নিলাম আর উঠে দাড়ালাম এখনো শরীর কাপছে। আমি হাত সরিয়ে নিতে রাজ চোখ খুলে ভ্রু কুচকালো আমাকে দেখে কেমন যেন করে উঠে বসলো। এতোক্ষণ যে আমি ছিলাম সেটা মনে হয় দেখেই নি এখন ই দেখেছে।

–তুই এখানে কি করছিস?

— আমি তো খাবার দিতে এলাম কিন্তু আপনি তো।

–আমি তো কি তোর সাহস কি করে হলো আমার ঘরে আসার তোকে বলেছি না। এঘরে আসবি না কখনো?

— না মানে মামুনি বলল আর আপনি ওইসব কি বলছিলেন?

–ক ই ক কি বলছিলাম? তোতলিয়ে

— ওই যে আমার হাত বুকে

— একদম বাজে কথা বলবি না। রা বের হ আমার ঘর থেকে বের হ বলছি!

বলেই রাজ উঠে দাড়ালো।

— নাহ আমি যাবো না কি বলছিলেন আগে বলেন? আর ছাদে ওমন করলেন কেন আমি আপনাকে কি কষ্ট দিয়েছি?

–তুই যাবি আমি তোর ফালতু কথার উওর দিবো তুই ভাবলি কি করে? তুই আমার কাছে কেইফত চাবি আর আমি দেবো।

— বলেন না কি কষ্ট আপনার আজকে আমাকে কেন ডেকেছিলেন?

— তোকে আমি বের হতে বলেছি।

— না আমি নাশুনে যাব না

— যাবি না?

— না

আমি না বলেতে দেরি হলে ও আমি গালে চর পরতে দেরি হলো না গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছি সব সময় আস্তে দিলেও আজকের চর টা অনেক জোরে দিয়েছে। রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে শক্ত করে হাতে ধরলো।

— আমার ভুখে উপর কথা বলা। খুব বেরেছিস তাই না চর খেতে ভাল লাগে তোর ওকে এখন থেকে আর ও খাবি আর কখনো যদি আমার ঘরে আসিস না তোকে আমি মেরে ফেলবো।

— খাবার টা তো খান।

— তুই খা আমাকে এতো দরদ দেখাতে হবে না।

আমি তাও হাত ছুটিয়ে খাবার সামনে আনলাম খাবার দেখলে হয়ত শান্ত হবে কিন্তু শান্ত হবার বদলে আর ও রেখে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এমন কাজ দেখে আমি অবাকের চরম সীমায় পৌছে যায়। এতো রাগতে কখনো দেখি নি খাবার ফেলে দিলো। আমার বাহু চেপে ধরে ধাক্কা দিয়ে রুমের বাইরে বের করে দিলো তারপর ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো। মামুনিকে দেখলাম চিৎকার শুনে দৌড়ে আসলো আমি মামুনিকে দেখে উঠে দাড়ালাম। কিছু জিগ্গেস করবে আমি দৌড়ে নিজের রুমে চলে এলাম। এতোটা হিংস্র কি করে হতে পারছে রাজ কি হয়েছে ওর।

খাটে শুয়ে আছি আর কান্না করছি খুব কষ্ট লাগছে খুব মনে পরছে আগের কথা কতো ভালো ছিশলো সময় গুলো কোন কষ্ট ছিলো না।

আগে………………

💚

.

চলবে ❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here