#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকা: তানজিনা আক্তার মিষ্টি ( Tanjina Akter Misti)
#র্পব- ৬
তার উওরের আশায় না থেকে টান মেরে ফোনটা নিজের হাতে নিয়ে এলাম। সে হয়তো আমার এমন কাজে অবাক হয়েছে আমার তাতে কিছু আশে যায় না আমি এখন আন্টিকে ফোন দিবো এনি সে না হলেও আন্টি কে ফোন দিলে আন্টি বলতে পারবে তার ছেলে আসছে কি না? আন্টির নাম্বার আমার ফোন থেকে বের করে উঠালাম উঠিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি একি নাম্বার তো আগে থেকেই সেভ করা ” Ammo ” দিয়ে আমি ফোন করতে গিয়ে ও করলাম না। তার মানে এই সেই যে আমাকে নিতে এসেছে। না জেনে ঠিক জনকেই চিনেছে ছেলেটার বুদ্ধি আছে বলতে হয় ইস কতো ক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম পা ব্যাথা হয়ে গেছে দাড়িয়ে না থেকে আগেই যদি আসতাম তাহলে এতোক্ষণ বাসায় পৌঁছে যেতাম। আমি ফোন হাতে নিয়ে কথা গুলো ভেবে চলেছি হঠাৎ হাতে টান পরায় তাকিয়ে দেখি ছেলেটা আমার হাতে থেকে ফোন নিয়ে রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিছু বলবো ছেলেটা বলে উঠলো…..
— ইউ তোমার সাহস তো কম না আমার ফোন এভাবে টেনে নিলে?
— ফোন নিতে আবার সাহস লাগে নাকি। আমি তো চেয়েই নিয়েছি আগে তো আপনার কাছে ফোন চেয়েছি তারপর নিয়েছি আপনি দেরি করেছন তাই…..
— আবার মুখে মুখে কথা বলছো আমার ফোন তুমি টেনে নিয়ে এখন উচুঁ গলায় কথা বলছো? বেয়াদব মেয়ে একটা?
— আপনি আমায় বেয়াদব বলছেন?
— হ্যা বলেছি ?
— আপনি কিন্তু আমার সাথে খারাপ বিহেভ করছেন আমি আপনার নামে আন্টির কাছে বিচার দেব? আমাকে বেয়াদব বললেন আমি কি বেয়াদবি করেছি জাস্ট ফোন নেওয়া জন্য এতো বড় কথা বললেন?
— হুম বললাম কোন ভদ্র মেয়ে এভাবে কারো ফোন ছিনিয়ে নেয় না? এভাবে রেগে তাকানোর কিছু নাই আমি যে ভুল বলিনি সেটা তুমি জানো তাই তারাতারি গাড়িতে উঠে বসো। আমার এমনিতে অনেক লেট হয়ে গেছে যদি তুমি না উঠো আমি চলে যাচ্ছি তুমি যেভাবে খুশি চলে এসো?
বলই ছেলেটি আমার পাশে থেকে গাড়ি তে উঠে বসলো আমি রেগে তাকিয়ে আছি। এতো অপমান করলো আমাকে ভেবেই মাথা গরম হয়ে আছে এদিকে পা হাত ও ব্যাথা হয়ে আছে। ছেলেটা গাড়িতে উঠে একবার আমার দিকে তাকিয়ে উঠতে বলল আমি কিছু করছি না রেগে তাকিয়ে আছি যাতে ছেলেটা বাই দেখিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতে লাগলো। এবার আমার টনক নরলো এনি তো আমাকে নিয়ে যেতে এসেছে এখন চলে গেলে আমি যাবো কিভাবে না এখন রাগ দেখালে চলবে না আমাকে এর সাথেই যেতে হবে।
নিজের মনে নিজেকে বুঝিয়ে গাড়ির দরজা খুলতে গেলাম আমাকে উঠে আসতে দেখে নিজে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দরজা ভেতরে থেকে খুলে দিলো আমি ভেতরে উঠে বসলাম। রেগে একবার তাকিয়ে আবার অন্য দিকে তাকালাম দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ব্যবহার খারাপ। চেহারা দেখে কেউ বলবে না এমন বাজে লোকটা কি ভাবে আমাকে অপমান করে গেল আর আমি কিনা কিছু বলতে পারলাম না। রাগে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি।
হঠাৎ ছেলেটার একটা কথা শুনে আমার রাগ সাত আসমাছে উঠে গেল… আগুন চোখে তাকালাম যাতে সে আর ও বিদ্রপ করলো মনে হচ্ছে
— এই যে মিস রেগে আছেন ভালো কথা? কিন্তু আমাকে বিরক্ত করছেন কেন? আপনার এই চুল গুলো আমাকে খুব ডিসটার্ব করছে এক্মিডেন্ট হলে আমার কিন্তু দোষ না?
চুল বেনি করে এসেছি তবুও ও নাকি ডিসটার্ব হচ্ছে আমাকে কি বোকা পেয়েছি।
— আপনি কিন্তু রীতিমতো আমার সাথে বাজে ব্যবহার করছেন।
— সত্যি বললেই গায়ে লাগে এটা মেয়েদের স্বভাব আমি কেন তোমাকে মিথ্যে বলবো। আমার ড্রাইভ করতে প্রবলেম হচ্ছে আপনার এই চুলের জন্য।
রেগে তাকালাম কিন্তু আর কিছু না বলে চুল বেনি সহ খোপা করে নিলাম। কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎ গাড়িতে অনেক জোরে ব্রেক হলো আর আমি সিট বেল বেধেছিলাম না তাই ছেলেটির হাতে কাছে গিয়ে আমার হাত পরলো। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম তার নিজেকে ঠিক করে সোজা হলাম।
— আমার জন্য আপনার প্রবলেম তাইনা তাহলে এখন এমন করে ব্রেক করলেন কেন? এখন তো আমার চুল খোপা করা ছিলো আপনাকে ডিসটার্ব ও করেনি?
— আমরা চলে এসেছি নামুন।
— আমার প্রশ্নের উওর দিন আমি নামবো না এভাবে কেউ ব্রেক করে গাড়ি আমি যদি ব্যাথা পেতাম!
— সেটা তোমার জন্য আমার কি দোষ? সিট বেল্ট বাধনি কেন? বাধরে তো আর এসব হতো না অযথা কথা না বলে বের হও আমি এখন বাড়ি যাবো না তুমি চলে যাও এইটাই আমার বাসা আম্মু আছে ভেতরে?
— আপনাকে আমি দেখে নেব।
— ওকে ম্যাডাম?বাই
আমি গাড়ি থেকে নেমে কিছু বলবো তার আগেই গাড়ি হাওয়া চলে গেছে। আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি গাড়ি চলে যাওয়ার দিকে। কি অসভ্য আমাকে এতো অপমান আগে কেউ করেনি আজ এই ছেলে আমাকে এমন অপমান করে গেল।ব্যাগ একটা কাধে নিয়ে আরেকটা হাতে নিলাম তারপর ঘুরে তাকালাম বাসার দিকে গেইট বন্ধ করা পাশে একজন লোক বসে আছে সে হয়তো বাসার দাড়োয়ান বাসা পাহারা দিচ্ছে। আমি একবার তার দিকে তাকালাম তারপর দরজা খুলতে বললাম বাইরে থেকে তাকে দেখা যাচ্ছে। সে আমার ডাকে দরজা ফাক করে জিগ্গেস করলো কাকে চাই? আমি বললাম ভেতরে যাব কিন্তু সে বলছে কার কাছে কি মশকিলে পরলাম।
— চাচা আমাকে ভেতরে যেতে দিন আমার এদের আত্মীয়।
–কাদের কাছে নাম না বললে আমি ভেতরে আসতে দেব না? অচেনা কারো বাসার ঢুকার পারমির্শন নাই।
— আরে চাচা আমি অচেনা না আমাকে আন্টি চেনে প্লিজ ভেতরে যেতে দিন।
কিন্তু চাচা আমার কথা শুনলো না দরজা বন্ধ করে ফেলল আমি বাইরে থেকে ডাকছি শুনছে না দূর কোন বিপদে পরলাম এ তো আমার কথা শুনছে না এখন আন্টিকে বলবো কি করে আমি আসছি। ফোনে তো টাকা ও নেই যে কল করবো একে তে ব্যাথা এখন কতোক্ষণ ভাবে দাড়িয়ে থাকবো রোদ্র ও প্রচুর। এখন রোদ্র চলে যাবে তাই এতো পরেছে গেমে একাকার আরেকবার ঘুরে ডাকতে গেলে ওনি দরজা খুলে বেরিয়ে এলো।
— তুমি এখন ও দাড়িয়ে আছো?
— হুম আমি তো এখানেঈ এসেছি কোথায় যাবো প্লিজ যেতে দিন আমি গ্রামে থেকে এসেছি কোন কিছু চিনি না।
— তোমাকে আমার বিশ্বাস হচ্ছে কিন্তু যেতে দিতে পারছি না এভাবে কাউকে ডুকতে দিলে আমার চাকরি থাকবে না মা তুমি একবার ফোন করে বলো।
— আমার ফোনে তো ব্যালেন্স নাই কি করে দেবো ফোন?
— ওহ আমার ফোন দিয়ে দাও ধরো।
আমি ফোন নিয়ে আন্টির সাথে কথা বললাম ওনি দাড়োয়ান চাচার কাছে দিতে বলল কি জানি বলল দাড়োয়ান চাচা আমার দিকে তাকিয়ে সরী বলল ক্ষমা চাইলো আন্টি কিছু বলেছে বুঝলাম।
আমি মুচকী হেসে ভেতরে চলে এলাম কোন দিক না তাকিয়ে যেতে লাগলাম মেইন দরজার কাছে আসতেই দেখলাম একজন মহিলা দাড়িয়ে আছে দেখতে অনেক সুন্দর বয়স হলেও কেউ বলবে না তার ছেলে আছে এতো বড় কতো ইয়াং আমি এগিয়ে পাোএ হাত দিয়ে সালাম করতে চাইলে করতে দিলো না। আমার মুখে হাত দিয়ে সরি বলল এতোক্ষণ বাইরে ছিলাম কষ্ট করে। ভিতরে গিয়ে সোফায় বসে পরলাম ক্লান্ত লাগছে আন্টি একটা মহিলাকে আমার জন্য যে রুমে রেখেছে সেখানে ব্যাগ পএ রাখতে বলল।
— কতো কষ্ট হলো তোর কিন্তু আমার ছেলেটা কই তুই বাইরে ছিলি কেন ও আসে নি?
— তোমার ছেলে এসেছিল আন্টি কতো খারাপ ব্যবহার করেছে জানো আবার রেখেই চলে গেছে।
— কোথায় গেছে?
— সেটা আমি জানবো কি ভাবে আন্টি?
— কিসের আন্টি বলছিস পর পর লাগে মামুনি বলবি।
— আচ্ছা তোমার ছেলেকে বকবে কিন্তু?
— তা তো বকবোই এভাবে রেখে যাওয়া না।
আন্টিকে সব বললাম আমার সাথে যা যা করেছে। আন্টি আমাকে মামুনি বলতে বলল আমি রাজি হয়ে গেলাম ক্লান্ত লাগছে তাই উঠে পরলাম উপরে গিয়ে বামের প্রথম টা নাকি দ্বিতীয় বলল মনে নেই উপর এসে প্রথম টায় ঢুকে গেলাম কোন দিক না দেখে ঠাস করে খাটে শুয়ে পরলাম। কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না।
তীব্র কোন আওয়াজ কানে আসতেই ঘুম ভেঙে গেল আমার এমন চিৎকার করছে কে তারাতারি শুয়া থেকে উঠে বসলাম।
চলবে❤