# লুকোচুড়ি ভালোবাসা 💖
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্বঃ- ২৯
মনে হচ্ছে ধম বন্ধ হয়ে মারা যাবো এতো জোরে কেউ চেপে ধরে। রাজ শক্ত করে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। আমি কিছু বলতে ও পারছি না কিছু বললেই বলে উঠে,, মিষ্টি একদম নরাচরা করবে না নরাচরা করলে কিন্তু আজকেই সব করে ফেলবো। আর আমার কথা মতো শান্ত হয়ে শুয়ে থাকলে কিছু করবো না।
কথাটা বলেই রাজ মিষ্টি কে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরে। মিষ্টি ভয়ে আর কিছু বলে নাই। যদি সত্যি কিছু করে বসে মিষ্টি তো বাধা ও দিতে পারবে না কারণ রাজ ওর স্বামী এখন। রাজের সম্পূর্ণ অধিকার আছে কিছু করার। কিন্তু আমি এখন কিছু চাইনা সবাইকে মেনে যেদিন বিয়ে হবে সেদিন রাজকে সম্পূর্ণ ভাবে মেনে নেব। এখন রাজের কথা মতো চলায় ভালো জাস্ট তো জরিয়ে ধরেছে। কিন্তু আমি তো ঘুমাতে পারছি না এভাবে ধরে থাকলে কি ঘুমানো যার। বুকের ভেতরে ধুকপুক করছে একটু শান্তি পাচ্ছি না কেমন জানি লাগছে। রাজের শরীরের সাথে লেগে আছি একটা ঘ্রাণ নাকে আসছে ভালো লাগছে কিনা বুঝে উঠছি না। শান্ত থাকতে গিয়ে ও নরে উঠলাম। আর সঙ্গে সঙ্গে রাজে কন্ঠ কানে এলো।
রাজ বিরক্ত হয়ে কি জানি বলল, রাজ গভীর ঘুমে আছে তাই কথা টা অস্পষ্ট আমি বুঝতে পারলাম না।
নানা কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানিনা। ফোনের শব্দে ঘুম থেকে জাগানা পেলাম তাকিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখি আম্মু কল করেছে। ফোন রিসিভ করে কথা বললাম আম্মু গ্রামে যাওয়ার কথা বলল, আমি বললাম মামুনি বাড়ি নাই মামুনি আসলে তখন যাবো। আম্মুর সাথে কথা বলে ফোন পাশে রেখে চোখ বন্ধ করলাম ঘুমানোয জন্য।
কিন্তু ঘুম আসতে পারলাম না সঙ্গে সঙ্গে চোখ খুলে আসে পাশে রাজকে খুজতে লাগলাম। কাল তো এখানে শুয়েছিল সকাল সকাল কোথায় গেল ফোন হাতে নিয়ে কয়টা বাজে দেখলাম ছয়টা বাজে কেবল? তারাতারি উঠে বসলাম নাই রাজ রুমে নাই খাট থেকে নামতে যাবো ওমনি রাজ রুমে প্রবেশ করলো হাতে কফির মগ নিয়ে রুমে ঢুকে এলো।
আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি রাজের দিকে। রাজ আমার দিকে কফির মগ এগিয়ে দিলো খাওয়ার জন্য না চাইতে ও হাতে নিলাম।
–এসব কেন? আমি তো কফি খাইনা আমার জন্য কফি করলেন যে।
–জানি খাও না কিন্তু আজকে খাও প্লিজ।
–আজকে কেন খাব।
–এমনি খাবে আমি কষ্ট করে তোমার জন্য বানিয়ে আনলাম খাবে না।
–[ মিষ্টি হা করে তাকিয়ে আছে ] কেন বানিয়ে আনলেন?
–আমার বউ কে নিজের হাতে কিন্তু বানিয়ে খাওয়াবো বলে।
মিষ্টি কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু বলথে পারলো না ওর শরীর কেপেঁ উঠলো বুক ধুকধুক করছে। রাজের মুখে বউ ডাক শুনতে আমার একটা ভালো লাগলা ছেয়ে গেল মন জুরে। ডাকটা শুনে এতো ভালো লাগছে যে বলে বুঝাতে পারবো না সাথে লজ্জা এসে আকরে ধরলো আমাকে লজ্জা নিচের দিকে চেয়ে আছি। বউ শব্দ টা খুব ছোট তবুও এইটা রাজের মুখে শুনে খুব ভালো লাগছে।
বারান্দায় বসে আছি। রাজই নিয়ে এসেছে রাজ দোলনায় বসেই আমাকে পাশে বসায় জোর করে। এক হাতে জরিয়ে ধরে একেরপর এক কথা বলে যাচ্ছে। আমাদের এখন কিভাবে থাকবো বাসায় কিভাবে বলবো এটা কানে আসতেই আবার আকাশ সোমান চিন্তা মাথায় এসে ভর করলো। কীভাবে কি হবে সবাই কী মেনে নেবে নাকি মানবে না।
–মিষ্টি শুনছো আমার কথা। কি এতো ভাবছো বলো তো আমাদের বিয়ের কথা আববু আম্মুকে খুব তারাতারি জানিয়ে দেবো ওকে।
মিষ্টি সাথে সাথে রাজের দিকে তাকায়, বিয়ের কথা জানিয়ে দেবেন মানে কি? আপনাকে কিন্তু আগেই বলেছি বিয়ের ব্যাপারটা একেবারে গোপন থাকবে আপনি কী কথা রাখবেননা।
অসহায় মুখ করে মিষ্টি তাকিয়ে আছে রাজের দিকে। রাগ হচ্ছে প্রচুর রাজের উপর এতো বার বলার পর ও এখন বলছে জানিয়ে দেবে।
–কি হলো কিছু বলছি আমি আপনি কিছু বলছেন না কেন এতোক্ষণ তো এতো কথা বললেন এখন চুপ কেন?
–কি বলবো সেটাই তো বুঝে উঠতে পারছি না।
–মানে বুঝে উঠতে পারছেন না কেন? আর না বুঝযে পারলেও সমস্যা নাই আপনি ভুলে ও বিয়ের কথা বাসার জানানোর কথা ভাববেন না বলে দিলাম।
–আর ইউ ম্যাড। মিষ্টি তুমি কি পাগল হলে আমি কখন বললাম বিয়ের কথা সবাইকে জানাবো।
–একচু আগেই তো বললেন।
–নো তোমার বুঝার ভুল হয়েছে আমি সেটা বলিনি।
–সেটা বলেন নি কোনটা বলেছেন।
–একটু বুঝেই এতো কিছু ভেবে ও বলে ফেললে ওফ ।
রাজ মাথায় হাত দিয়ে আবার নামিয়ে আমার কাছে এগিয়ে এলো আমি হা করে তাকিয়ে আছি কি জিগ্গেস করলাম আর কি করছে? রাজ একদম আমার মুখের কাছে চলে এলো। কি করছে কিছু মাথায় আসছে না ব য়ে আমার আত্মা শুকিয়ে আসছে সঙ্গে সঙ্গে চোখ বন্ধ করে ফেলি অনেক চোখ বন্ধ করে আছি কিছু হচ্ছে না তাই চোখ খুলতেই রাজের উচ্চ সরে হাসি দেখতে পেলাম।
ইচ্ছে করে আমাকে ভয় দেখাতে যে এমন করলো তা বুঝে বাকি নেয় আমার। রাগে উঠে চলে যেতে চাইলে রাজ আটকে দিলো।
–কি হলো উঠছো কেন?
–আপনার সাথে আমার থাকছি না আমি। আমার আশেপাশে ও আসবেন না কোন কথা নেই আপনার সাথে। ছারুন হাত।
–বাপরে বাপ কি রাগ রে। মিষ্টি তুমি কি আমাকে একটু বিলিভ করো না বলতো। কি বললে আমি সবাইকে বলে দেব এটা তুমি কি করে ভাবলে। আমি তো বলেছি আমার বিয়ের কথা বলবো মানে আমাদের বিয়ে নিয়ে যাতে তারা কিছু ভাবে টা নি বললে কি তারা আমাদের বিয়ের কথা ভাববে। আমরা যে বিয়ে করে নিয়েছি এটা কেন বলবো।
মিষ্টি রাজের কথা শুনে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আসলেই তো এটা তো মাথায় আসে নি আর আমি কি না কি ভাবছিলাম।
–সরি আমি
রাজ উঠে আমার মুখ চেপে ধরলো, আমি বড় বড় চোখ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। কি হলো আবার,
রাজ বকতে লাগলো আমি মাথা নিচু করে সরি বলেছি তাই। ও চায় না আমি কখনো মাথা নিচু করি কারো সামনে। এতো ভালোবাসে কেন রাজ আমাকে ছল ছল চোখে ওর দিক তাকিয়ে আছি। কি হলো জানিনা আচমকা রাজকে খুব জরিয়ে ধরে কাদতে ইচ্ছে হচ্ছে। আর কিছু না ভেবে রাজের বুকে মাথা রেখে জরিয়ে ধরলাম। রাজ ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে আমাকে ধরে ও নি। চরম রকমের শখ খেয়েছে যে আমি কাছে গেসি না সেই আমি এভাবে জরিয়ে ধরেছি ভাবতেই পারছে না।
চলবে❤