লুকোচুরি ভালোবাসা💖পর্ব:৩৪

0
2048

#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা 💖
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্বঃ- ৩৪

মারিয়ার খুশি যেন আর ধরেছে না। আনন্দে আত্ম হারা হয়ে আছে এই বুঝি বলে উঠবে ওর আর রাজের কথা। কান খাড়া করে তাকিয়ে আছে কিন্তু বলতে এতো লেট করছে যে ও অধৈর্য হয়ে পরছে। রাজের আববু তো ছেলের ছোট থেকে সব কথা বলে চলেছে। মারিয়ার তর সইছে না কখন বলবে। অস্থির হয়ে আছে। অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ঘটিয়ে বলে লাগলো।

–আজ আমার একমাএ ছেলে রাজের এনগেজমেন্ট সেটা একটু আগেই বলেছি। কিন্তু কার সাথে তা আপনারা এখন ও জানেন না। এখনই জেনে যাবেন সেই কে আমার ছেলের ভালোবাসা সে। আমরা ও ছোট্ট বেলায় ই তাদের বিবাহ ঠিক করে রেখেছিলাম। তা না জেনে ও তারা একে অন্যের ভালোবাসে। মাই সান রাজ মিষ্টি কে নিয়ে এখানে আসো সবাই তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

রাজ মিষ্টি কে নিয়ে যেতে বলাতেই মারিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে উঠে সাথে অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে যায় কি বলছে কি উনি। রাজকে মিষ্টিকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলল কেন কি হচ্ছে এসব। মারিয়া দৌড়ে স্টেজে যেতে যাবে না এসব হতে দেওয়া যাবে না আমাকে ঠকানো হচ্ছে এনাউজমেন্ট তো আমার আর রাজের হওয়ার কথা ছিলো তাই তো তাহলে এখানে মিষ্টির নাম আসলো কিভাবে। রাগে ওর শরীর কাপছে এর কৈফত তো দিতেই হবে আমি থাকতে রাজের সাথে ওই মেয়েটার হতে দেবো না কিছু তেই না আমাকে ঠকানোর শাস্তি তো পাবেই। এক কদম এগিয়ে যাবে তার আগেই পুরো ডয়িং রুমের লাইট অফ হয়ে যায় আচমকা লাইট অফ হওয়ায় মারিয়া এগুতে পারে না। তার পর হঠাৎ করেই লাইট জ্বলে উঠৈ কিন্তু পুরো জায়গায় না লাইট যেখানে জ্বলে সেদিকে তাকাতেই মারিয়া আগুন হয়ে যায় রাজ আর মিষ্টি উপর লাইট জ্বলেছে। মারিয়া সেদিকে যেতে যাবে হঠাৎ ওর হাত কেউ শক্ত করে ধরে নেয়।
কিছু বুঝে উঠার আগেই সেই মারিয়াকে টেনে কোথায় যেন নিয়ে যেতে লাগে।

.

মিষ্টি নরতে পারছে না কথা শুনা মাএ ওর শরীর অবশ হয়ে গেছে। রাজের উপর নিজের ভার ছেড়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। রাজ অবশ্য আগে থেকে সব বলেছিল কিন্তু মিষ্টি বিশ্বাস করে নি। এখন তো আর অবিশ্বাসের কিছু নেই।

–মিষ্টি আর ইউ ওকে তুমি ঠিক আছো তো।

মিষ্টি নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে চোখ মেলে তাকায়। রাজের মুখ দেখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে চিন্তিত হ য়ে মিষ্টি সোজা হয়ে দাড়িয়ে মাথা নেড়ে সায় দেয়।
কথা বলতে পারছে না মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না মিষ্টি ও অতি আনন্দে নিরব হয়ে গেছে যা এতো সহজে পেয়ে যাবে ওর কল্পনার বাইরে ছিলো। কিন্তু ওর মনে হচ্ছে রাজ কিছু তো করেছে না হলে কিছু হতো না ও না বললে ও আমি জানি। এখন জিগ্গেস করার সময় না
পরে জিগ্গেস করতে হবে। কথার মাঝে লাইট অফ হয়ে যায় আর সাথে সাথে আবার জ্বলে উঠে শুধু আমাদের উপর।

–এটা কি হলো শুধু আমাদের উপর কেন?

–সেটা তুমি বুঝবে না চলো।

–আমার খুব লজ্জা লাগছে সবাই আমাদের দেখছে আর চিৎকার করছে লাইটা অফ করুন।

— কি বলছো অফ কেন করবে এটা আমাদের জন্য সবাই আমাদের দেখার জন্য ওয়েট করছে। আর স্পেশালি তোমাকে সো একটু আয়োজন তো হবে লজ্জা লাগবে ওইদিকে তাকালে। আমার দিকে তাকিয়ে চলো তাহলে আমার লজ্জা করবে না।

বলেই রাজ নিজের হাতে মিষ্টির হাত নেয়। স্টেজে দিকে যেতে থাকে আশেপাশের সবাই তো চিৎকার করে অনেক কিছু বলছে।

মিনা আর মিনার মা ও একসাথে মিষ্টিকে দেখছে দুজনের মুখে হাসি। মিষ্টির মা তো আনন্দে কেদে দেওয়ার মতো অবস্থা সে চাইতো এই বিয়েটা হোক কিন্তু ভয়ে ও ছিলো যদি না হয় ছোট্ট বেলায় কথা যদি তার বান্ধবী না রাখে এখন তার বান্ধবীর প্রতি আর ও ভালোবাসা তৈরি হচ্ছে। এমন একটা ফ্যামিলিতে মেয়েকে দিয়ে সে চিন্তা মুক্ত থাকত পারবে।

বোনের খুশি তে মিনা ও প্রচণ্ড খুশি হয়েছে সে তো জানতো আপু ভাইয়াকে কতো ভালোবাসে তারা এক হবে ভাবতেই ভালো লাগছে।

স্টেজে দাড়িয়ে আছে মিষ্টি পাশে আন্কেল ও আরেকপাশে রাজ খুব নার্ভাস লাগছে এভাবে সবাই তাদের দিকে দৃষ্টি দিয়ে রেখেছে লজ্জা মাথা উচু করতে পারছে না মিষ্টি।
রাজ আর আমাকে একে অপরেরে দিকে তাকিয়ে আছি পাশে মিনা রিং এনে দুজনের হাত দুইটা দিলো। রিং হাতে নিয়ে আছি মিনার দিকে তাকাতেই, ইশারায় পরিয়ে দিতে বললো লজ্জা নিয়ে পরিয়েয়ে দিতে রিং সামনে এগিয়ে নিলাম। রাজ কিছু বলবে মনে হয় ফিসফিস করছে কিন্তু আমি মাথা উচু করে ওর দিকে তাকাতে পারিনি খুব লজ্জা করছে। উপায় না পেরে বেচারা হাত এগিয়ে দিলো রাজের হাত ধরতে ও আমার কেমন জানি ফিলিংস হচ্ছে।কাপছি আমি খুব ওইভাবেই রাজের আঙুল এ আংটি পরিয়ে দিলাম সাথেসাথে চারপাশ থেকে হাত তালি কানে এলো।

–ভালোবাসি আর সারাজীবন ভালোবাসবো। জীবনের শেষ নিশ্বাস পযর্ন্ত তোমার সাথে কাটাতে চাই। সুখে দুঃখে তোমাকে আমার পাশে চাই। কখনো ভুল বুঝ না এই রাজ শুধু তার এই মায়া পরীকেই ভলোবাসে। কোন পরিস্থিতিতে ছেড়ে যেও না হাতে হাত রেখে বহু দূর যেতে চাই। বেষ্ট কাপেল হতে চাই। কী হবে তো থাকবে তো পাশে।

মিষ্টি মাথা নেড়ে সম্মতি দেয় রাজ রিংটা হাতে পরিয়ে একটা কিস করে উঠে দাড়ায়।

.

–আপনি আমাকে এখানে কেন নিয়ে এলেন। আর এসব কি হচ্ছে রাজের সাথে আমার নাম এনাউজমেন্ট করার কথা ছিলো কিন্তু এখন সেখানে মিষ্টি নাম কি করে এলো। কী হলো আপনি এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন রাজকে আমি ভালোবাসি সেটা আপনাকে আগেই বলেছি । এভাবে আমাকে মিথ্যা বলে এখানে এনে অন্য জনের সাথে আপনারা আভাকে ঠকাচ্ছেন কিন্তু।

— কি বললে ঠকাচ্ছি?[ রাজের আম্মু মারিয়াকে ওখানে থেকে টেনে বাগানে নিয়ে এসেছে। ]

— ইয়েস ধোকা দিলেন আমাকে সরুন আমার সামনে থেকে এই এনগেজমেন্ট আমি কিছু তেই হতে দেব না। রাজ কে আমি ভালোবাসি ষসো লাজ শুধু আমার আপনাদের সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করেছি কিন্তু বিনিময়ে কি পেলাম। এভাবে ঠকালেন।

বলেই মারিয়া রেহেনা বেগমকে সরিয়ে এগিয়ে যেতে চাইলো কিন্তু পারলো না ওর হাতে টান পরলো।

–হাত ছারুন।

–একদম এখানে থেকে এক পা নরার চেষ্টা করবে না তাহলে ফল ভালো হবে না।

–কি করবেন আপনি?

–অনেক কিছু করতে পারি কিন্তু কিছু করতে চাইছি না। সোজা একটা কথা বলতে চাই তুমি যে মিথ্যে বলে রাজের জীবনে ঢুকতে চেয়েছিলে তা আমরা জেনে গেছি।

–হুয়াট কি বলছেন কি মিথ্যে বলেছি আমি।

–নাটক করো না রাজ তোমাকে ন য় মিষ্টি কে ভালোবাসে। আর তুমি আমাদের কি বলেছিরে রাজ তোমাকে ভালোবাসে এতো ব ড় মিথ্যাচার কেন করেছো।

–এটি ঠিক মিথ্যে বলেছি কিন্তু রাজকে ভালোবাসি এতে কোনো মিথ্যা ছিলো না। আমি রাজকে খুব ভালোবাসি ওকি ছাড়া বাচতে পারবো না আমি কিন্তু ও আমাকে ফ্রেন্ড ছাড়া কিছু ভাবে না তাই আমি আপনাদের মিথ্যে বলেছি শুধুমাত্র ওকে পাওয়ার জন্য। এটা কি আমার অপরাধ যাকে ভালোবাসি সে আমাকে না অন্য কাউকে ভালোবাসে জেনে কি করতাম তাই তো আপনাদের কাজে একটু মিথ্যা বলে রাজকে নিজের করে পেতে চেয়েছি। এটা যদি আমার অপরাধ হয় আমি এই অপরাধ করেছি করবো কিন্তু রাজ শুধু আমার ওই মিষ্টি কে রাজকে পেতে দেব না।

–তুমি বাবুন কে ভালোবাস বুঝলাম কিন্তু জোর করে ভালোবাসা পাওয়া যায় না তা কি জানো। এক তরফা ভালোবাসা কখনো সফল হয় না। তুমি মিথ্যাচার করে খুব বড় অপরাধ করেছো কিন্তু আমি তোমার ভালোবাসা বাবুনের প্রতিদেখে কিছু বলতে চাইনা। অতিরিক্ত ভালোবাসা বলে তুমি ঠিক ভুল বুঝতে পারছো না কিন্তু তোমাকে বুঝতে হবে বাবুন তোমার জন্য ন য় সে মিষ্টি কে ভালোবাসে ওক নিয়ে সুখি হবে এর মাঝে তুমি এসো না। নিজেকে সামলিয়ে নাও তোমাকে ভালোবাসে এমন কেউ হয়তো তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।

–অন্য কাউকে আমার চাইনা আমার শুধু রাজকেই চাই।

–এটা সম্ভব না। রাজ তোমার এই সব জেনে কতো টা রিয়াক্ট করেছিল জানো তোমাকে সামনে পেলে না জানি কি করে বসে। তোমার ভালো র জন্য বলছি চলে যাও।

–রাজ কে বলতে মানা করেছিলাম আপনি রাজি ও হয়েছিলেন তাহলে রাজ জানল কি ভাবে।

–তুমি হয়তো জানো না রাজ আমার একমাএ ছেলে আমাদের আর বেবি নেই বলতে হয়নি। অনেক কষ্টের ফলে এক ছেলের মা হয়েছি তাকে আমরা জান দিয়ে ভালোবাসি। তার জীবনের এত বড় সিদ্ধান্ত তাকে না জানিয়ে করতে পারতাম না তবুও চুপ করেই ছিলাম কিন্তু হঠাৎ করেই পরশো রাত ও সব জেনে যায় রাজ আমরা বলতে চেয়ে ও বলিনি ও আমাদের কথায় মাঝেঢুকে পরে। আর আমি যখন জানলাম তুমি মিথ্যে বলেছো কি যে রাগ হয়েছিল বলে বুঝাতে পারবো না কিন্তু নিজেকে শান্ত রাজকে শান্ত করি। আর তোমার জায়গার মিষ্টির কথা বলে দেয়।

–যাই হোক আমি এই এনগেজমেন্ট কিছু তেই হতে দেব না ছারুন। আপনি আমার সাথে প্রতারনা করেছেন। কিছু জানতে চাইনা জানতে ও চাইনা।

মারিয়া রেহেনা বেগম কে ধাক্কা দিয়ে ছাড়িয়ে দৌড়ে ভেতরে যেতে থাকে কিন্তু এগুতে পারে না সামনে রাজ এসে দাড়ায় রাজকে দেখে একটু পিছিয়ে দাঁড়ায়। রাজ রক্ত লাল চোখ দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। রাজে রেগে কিছু বলতে যাবে কিন্তু বলতে পারে না কেঅ পেছনে থেকে চিৎকার করে উঠে বাবুন বলে। মারিয়াকে সামনে থেকে সরিয়ে পেছনৈ তাকিয়ে আতকে উঠে নিচে বসে কাতরাচ্ছে ওর আম্মু।

–আম্মু…

মারিয়ার ওই ধাক্কায় নিজেকে সামলাতে না পেরে নিচে পরে মাঝায় ব্যাথা পেয়েছে। সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে উঠে। মিষ্টি রাজের পিছু নিয়েছিল একটু আসতেই রাজের চিৎকার শোনে দৌড়ে আসে আর মামুনিকে এভাবে পরে থাকতে দেখে নিজেও তারাতারি তার পাশে বসে জিগ্গেস করতে লাগে কি ভাবে কি হয়েছে?

চলবে❤

[ সবার বকা শুনে ভয় পেয়ে গেছিলাম আলাদা করলে আমায় তো সবাই কাচাঁয় খেয়ে ফেলতেন। ওফ আল্লাহ কি বকা টাই না শুনলাম তাই আর রিক্ম না নিয়ে এক করে দিলাম। এবার সবাই আমাকে বকা দেওয়া অফ করে বিয়ে খাওয়া জন্য গিফট এর ব্যবস্থা করে ফেলুন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here