লুকোচুরি ভালোবাসা💖পর্ব:৪১ শেষ পর্ব

0
5339

#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকা-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
Last part

নেক্মট এক্মাম টা মিষ্টি এলোমেলোভাবে দিলো। ভয়ে ভয়ে রাজ কেন কারো সাথেই কথা বলে না। মিষ্টি মা মিনা সবাই ফোন করে বেশি কথা বলে না ওর মধ্যে এটা আলাদা ভয় কাজ করেছে তার উপর সেটা আর ও প্ররোক্ষ হয়েছে পাচঁ নাম্বার পরিক্ষার দিন। সেদিন একটা বোরকা আলা মহিলা মিষ্টির হাতে চাকু দিয়ে কেটে দিয়েছে। ফাস্ট মহিলাটি মিষ্টির কাছে সাহায্য চায় অন্ধ বলে রাস্তায় পার করতে হবে। মিষ্টি উদাসিন হলেও কেউ সাহায্য চাইছে না করে না নিজের যাই হোক কাউকে ফিরিয়ে দেয় না। অন্ধ জেনে আর ও খারাপ লাগে তাই তাকে ধরে এক্মাম শেষে পার করতে যায়। আর তখন ই মহিলাটি ওর হাত দাগ দিয়ে দৌড়ে একটা গাড়ি তে উঠে চলে যায়।
মিষ্টি চিৎকার না করে হতদম্ভ হয়ে তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে। ওর ব্যাথা ও করে না তা না কিন্তু এতোটাই শক খেয়েছে যে কিছু বুঝছে না। রাজ গাড়ি আনতে গেছিলো এনেই মিষ্টি কে অন্য পাশে দেখেই একটু ঝটকা খায় একা কি করে?
রাজ মিষ্টি কাছে যেতে মিষ্টি ঢুলে পরে রাজ ভয় পেয়ে যায় হঠাৎ এভাবে পরে য়াওয়ায় হঠাৎ হাতে চোখ যেতেই আর ও ভয় পায় বিল্ডিং হচ্ছে কি করে? মিষ্টি মিষ্টি করে চিৎকার করে হসপিটালে নিয়ে আসে। পাগলের মতো কলতে থাকে একবার ফোন করে বাসার জানায় সবাই ছোটে আসে রাজ বাইরে দাড়িয়ে মেয়েদের মতো কেদেই যাচ্ছে এগুলো কি হচ্ছে কিছু ভাবতে পারছে না। রাজের ভা রেহেনা বেগম ও রাজের বাবা আসতেই রাজ ওর মাকে ধরে কান্না করে।ছেলে এমন কান্না দেখে তিনি ও কাদতে থাকে মিষ্টি কে নিজের মেয়ের চোখে দেখে তার এই অবস্থায় তো তার চোখের পানি আর আটকাতে পারছে না। আবার ছেলের চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না কতোটা ভালোবাসলে এভাবে কাদতে পারে।
দীর্ঘ পাচঁ ঘন্টা পর মিষ্টি চোখ মেলে তাকায় সামনে তাকাতেই চোখ পরে রাজের উপর। সাথে সাথে বুকটা ধুক করে উঠে কি অবস্থা হয়েছে রাজের। ফর্সা মুখ একদম লাল হয়ে আছে চোখের কোনা বেয়ে পানি আসছে চোখ দুটো ফুলে লাল টুককুকে হয়ে আছে। দেখেই মিষ্টির ভ য় পেয়ে যায় এই কি অবস্থা হয়েছে তার চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে। এক হাত মিষ্টির সেলাইন লাগানো হাতের আঙল ধরে আছে। আমাকে চোখ মেলতেই দেখেই রাজ বুকে হাত দিয়ে জোরে একটা নিশ্বাস নেয় আর সাথে সাথে আম্মু বলে চেচিয়ে উঠে। রেহেনা বেগম বাইরে বসে ছিলো এই সময় কাউকে মিষ্টির রুমে যেতে দিবে না কিন্তু ছেলে আমার মানছেই না ও নাকি মিষ্টি পাশে বসে থাকবে। সবাই বলে ও শুনাতে ব্যর্থ হয়ে রাজি হয়।
বসে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছিলো মিষ্টির জন্য মেয়েটার হঠাৎ এমন কেন হলো সেদিন ও কি ভয় নি বাসায় আসে। এক্মাম চলছে তার উপর এসব পরিক্ষা ও নাকি বেশি ভালো করে দিতে পারেনি। একটু ঠিক হচ্ছি মলো আবার এসব। মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে হঠাৎ ই রাজের চিৎকার কানে আসতেই ভয় পেয়ে যায় এভাবে ডাকছে কেন মিষ্টির কিছু হলো না তো না না কি ভাবছি কিছু হবে না মিষ্টির ওর কিছু হলে। রাজ বাচবে না। ভেবেই দৌড়ে ডাক্তার ডেকে নিয়ে মিষ্টির কেবিনে যায়। আর গিয়ে যা দেখে তাতে স্তব্দ হয়ে আছে। রাজ মিষ্টি কে জরিয়ে ধরে আছে আর কি যেন বলছে কান্না করছে।
মিষ্টির চোখ অফ তাই ডাক্তার ভেবেছে জ্ঞান ফিরে নি তাই রাজের উপর রেগে উঠে এভাবে জরাজরি করলে পেশেন্টের ক্ষতি হবে।

–এই যে মিস্টার আপনাকে এই জন্য এলাউ করতে চাইনি। এভাবে অজ্ঞান পেশেন্টের সাথে কি করছের উনার ক্ষতি হবে ছারুন বলছি ছারুন।

রেহেনা বেগম ও রেগে যায় এমন বাচ্চামো করার মানে কি?
–বাবুন মিষ্টিকে ছারু ওর প্রবলেম হবে ছারু ওকে বেডে রাখো।

রাজ কারো কথা শুনছে না দুজনের কাছে চলে আসে। মিষ্টি এবার চোখ মেলে রাজের বুকে থেকে মাথা উঠিয়ে শান্ত ভঙ্গিতে তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে চোখেপানি যা দেখে মিষ্টি ডান হাত দিয়ে মুছে দেয়। কারণ বাম হাতেই আঘাত টা লেগেছে।
দুজনে মিষ্টি কে নরতে দেখেই বুঝে যায় মিষ্টি জ্ঞান ফিরেছে। রাজ এতোক্ষণ তাদের কথা শুনেই নি মিষ্টি কে নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পরেছিল। এবার মিষ্টি রাজের থেকে চোখ সরিয়ে মামুনি আর তার পাশে একজন বয়ষ্ক ভদ্রলোক দাড়িয়ে থাকতে দেখে লোকটা ডাক্তার বুঝতে পারে ড্রেস দেখে। লজ্জা পেয়ে ছেড়ে দেয় রাজকে রাজ পেছনে ফিরে ডাক্তার কে দেখেই মিষ্টি কে দেখতে বলে ও ঠিক আছে কিনা।

ডাক্তার মিষ্টি কে দেখে বলে এক বিপদ মুক্ত কিন্তু দূর্বল শরীর আজকে থাকতে হবে। এটা শুনতেই মিষ্টি চেচিয়ে উঠে,,

— অসম্ভব আজকে হসপিটালে থাকতে হবে। নো ডাক্তার আন্কেল আমি থাকতে পারবো না আমার কালকেও এক্মাম আছে এখন ই বাসার যেতে হবে।

–সরি আজকে ছারতে পারবো না আপনার শরীর থেকে অনেক রক্ত ক্ষরণ হয়েছে আজকে থাকতেই হবে।

–আমি ঠিক আছি দেখুন একভ ফীট আছি এখানে থাকলে তো পড়া হবে না। রাজ আপনি কিছু বলেন।

রাজ কি বলবে বুঝতে পারছে না মিষ্টির সুস্থ তা ওর কাছে বেশি ইমর্পটেন্ট কিন্তু মিষ্টির লেখাপড়া এটা ও মিষ্টির সপ্ন। কি বলবে ও ডাক্তার এর কথা ও ফেলা যাচ্ছে না আবার মিষ্টি।

–আপনি একদম ঠিক নেই এখন মনে হচ্ছে ঠিক কিন্তু আবার মাথা ঘুরে যাওয়ার সম্ভবনা আছে।

–কিছু হবে না আমার প্লিজ আপনি বুঝার চেষ্টা করেন আমার ক্ষতি হবে এখানে থাকলে রেজাল্ট খারাপ হলে আম্মু খুব কষ্ট পাবেএটা আমি কিছু তেই হতে দিতে পারি না।

রাজর আম্মু বলতে লাগল—” মিষ্টি তোর বই এখানে এনে দেবে রাজ এখানেই পরিস। ডাক্তার তো তোর খারাপ চায়না বল। কি অবস্থা হয়েছিলো জানিস পাচঁ ঘন্টা অজ্ঞান ছিলি রাজের কি অবস্থা হয়েছিলো ছেলেটা পাগলির মতো করেছে। তোর কিছু হলে আমার ছেলেটা বাচবে না তাই নিজের ক্ষতি হয় এমন কিছু করিস না। ”

মিষ্টি রাজর দিকে তাকিয়ে ই বুঝতে পেরেছিলো কিন্তু মামুনির কাছে শুনে আর ও খারাপ লাগছে। এতো ভালো কেন বাসে ওকে এই ছেলেটা। রাজ কিছু বলছে না এক দৃষ্টি তে মিষ্টি কাটা হাতের দিকে তাকিয়ে আছে।
মিষ্টি কি বলবে বুঝতে পারছে না মামুনির উপর কথার বলতে পারবে না তাই চুপ করে আছে ডাক্তার এখানে থাকার কথা কন্ফার্ম করে চলে যাচ্ছি লো হঠাৎ রাজ পেছনে থেকে ডেকে উঠে,,,

— ডাক্তার আপনি রিলিজ করার ব্যবস্থা করেন।

–কি বলছেন?

–হুম ঠিকই বলছি। মিষ্টি কে আমি নিজ দায়িত্ব তে নিয়ে যাবো আপনি শুধু বলে দেন কি করতে হবে ওর কিছু হবে না। কারণে আমি থাকতে ওর কিছু হতেই দেব না বুকে আগলে রাখবো আপনি আমার উপর বিলিভ করতে পারেন।

–এটা করা অন্যায় আপনার নেওয়া উপর উনার কিছু হলে দুষ তো আমাদের হবে না আমি এটা করতে পারবো না।

–যাকে ছাড়া আমার এক মুহূর্তে ও চলে না তার কিছু হতে দেবো আমি আপনি ভাবছেন কি করে? মিষ্টি দায়িত্ব আমি নিচ্ছি ওর কিছু হবে না ওকে রিলিজ করেন প্লিজ।

–এটা শর্ত ছারতে পারি।

–কি?

–আপনাকে একটা কাগজে সাইন করতে হবে আপনারা নিয়ে যাওয়া পয কিছু হলে ডাক্তার ফা হসপিটালে কোন দায় থাকবে না। সম্পূর্ণ আপনার।

রাজ শক্ত হয়ে রাজি হো ও থাকতে মিষ্টি কিছু হবে না হতে দিবে না আগে দুবার যা হবার হয়েছে। এবার আর না তাকে ত আমি খুজে বের করবোই।
সাতটার দিকে মিষ্টি কে বাসায় নিয়ে আসা হয়। রাজ সব দায়িত্ব নিজে নিয়েছে সো নিজেই। গোসলের সময় শুধু মামুনি এসেছে এ ছাড়া সব সময় রাজ ছায়া হয়ে পাশে থেকেছে এক সেকেন্ডের জন্য ও যায় নি রাতে মিষ্টি যত সময় পরেছে রাজ বই বের করে সামনে ধরে রেখেছে। মিষ্টি যখন বসে থেকে ক্লান্ত হয়েছে রাজের বুকে এলান দিয়ে পরেছে ঘুমিয়ে ও পরেছে টের।ই পায়নি। রাজ জেগে সে ভাবেই এক ধ্যানে তাকিয়ে ছিলো। মিষ্টি ঘুমাতেই ওকে খাটে শুইয়ে ফোন নিয়ে মারিয়ার নাম্বার এ কল করে না ফোন সুইচ অফ। মিষ্টির জ্ঞান ফেরার পর থেকে কতো বার যে ফোন দিয়ে ছে তার ঠিকানা নেয় কিন্তু মারিয়া ফোনে ঢুকে না। রাজ এখন ও ফ্রেন্ড দের কল করে ছানতে চায় এদের সাথে মারিয়ার কথা হয়েছে নাকি আজ কে ওরা সবাই এক কথা এই সপ্তাহে ও নাকি মারিয়ার না কল না দেখা মিলেনি ওদের এটা শুনে রাজ হতবাক গেল কোথায় মেয়েটা সবার আড়ারে কি ইচ্ছে করে আছে যাতে কেউ ওকে সন্দেহ না করে। মিষ্টির এসবের জন্য ওই দায়ি আমি সিউর কাল মিষ্টির থেকে জানতে হবে মিষ্টি এক্মাম কালেই শেষ।
মিষ্টি পরিক্ষা বেশি ভালো দিতে পারিনি মন খারাপ ওর কারণ,, হাত বিশ একদিনে তো আর বিষ কমে না। তিথি অনেক সাহায্য করেছে লোজ নিতে কিন্তু তবুও লিখতে তো ওকেই হয়েছে। সব কমন পরেছিলো মিষ্টি র কিন্তু লিখতে কষ্ট হয়েছে কেউ যদি ওকে লিখে দিতো তাহলে ও ভালো করতো এইবার শেষের পরিক্ষা গুলো এমন হলো কে ওই মহিলা কেন এমন করলো।

গাড়িতে বসে আছে মিষ্টি আর পাশে রাজ ড্রাইভ করছে মিষ্টির মনটা খারাপ সব দিতে পারেনি হাত ব্যাথায় লেখা শেষ হওয়া আগেই সময় শেষ। রাজ মিষ্টির ভন ভালো করার কথা ভাবছে হঠাৎ রাস্তায় পাশে ফোসকা দেখেই গাড়ি থামায়। আচমকা গাড়ি থামাতে মিষ্টি রাজের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকায়,,

–কি হলো এভাবে মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামালেন কেন?

রাজ খুশি হাসি বলল,,
— দেখ ওইদিকে কি?

–কি
বলে মিষ্টি তাকিয়ে দেখে ফোসকা ফোসকা ওর খুব পছন্দের কিন্তু এখন খেতে ইচ্ছে করছে না।

–চলো খাই।
বলেই রাজ বের হতে যায়।

–আমি খাব না ভালো লাগছে না।
রাজ ব্যর্থ চোখে তাকায় তারপর কি মনে করে যেন বলে। ওকে তাহলে আমি আমার জন্য নিয়ে আসি তুমি বরং বসে থাকো একটু।

–আপনার জন্য মানে আপনি কে ফুসকা খান নাকি।

–না খেতাম না কিন্তু আজ খেতে ইচ্ছে করছে।

মিষ্টি কে আর কিছু বলতে না দিয়ে রাজ ফুসকা আনতে চলে গেল। মিষ্টি যাওয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে হঠাৎ কি হলো আজ রাজ নিজে ফুসকা খাবে বলছে আবার আমাকে ও বলল,

–উমুমম কি মজা মিষ্টি আগে তো খাই নি এক দিন তুমি জোর করে দিচ্ছি লে ওই দিন ও এতোভালো লাগে নি আজ এত ভালো লাগছে কেন বলো তো।
একটা ফুসকা মুখে দিয়ে এমন করছে রাজ মিষ্টি হা করে রাজের খাওয়া দেখছে খাবি খা আমাকে বলে শুনানোর কি আছে।

মিষ্টি না চাইতে ও বারবার চাইছে রাজের দিকে ওর এখন খেতে মন চাইছে। ফুসকা ওর ফেবারেট খাবার রেগে না করেছিল কিন্তু এখন খেতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু রাজ অসভ্য আর বলছেনা মিষ্টি দুঃখী মুখ করে আছে আর একবার বললেই খেত। রাজ তিনটা খেয়ে নিয়েচে চতুর্থ টা মুখে দিতেই এমন করলো যেন অমরিত খাচ্ছে মিষ্টি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না টান মেরে ফুসকার পিলেট নিয়ে খেতে লাগলো।রাজ জানতো এমন হবে ওই ইচ্ছে করেই খেয়েছে যাতে মিষ্টি খায়। এই জন্য এতো গুন গাইছিল।

— একি মিষ্টি তুমি তো খাবে না বলছিলে। এখন আমার টা খাচ্ছো কেন দাও আমি খাব।

–নো একদম এদিকে আসবেন না আমি না বললাম আর আপনি আমাকে রেখে নিজের জন্য একা নিয়ে চরে এলেন এটা ঠিক না। ফুসকা আমার ফেবারিট সো এটা শুধু আমার রেগে না বলেছি মন খারাপ তাই আপনি সেটা ধরে বসে থাকবেন। আর একবার ও বলবেন না এটা কেমন।

–কেন বলতে যাবো তুমি তো নাই করছো তাহলে আর কেন বলবো?

–না করলে ও বলবেন হাজার বার বলবেন যেটা আমার পছন্দ এভাবে একা খাবেননা। আমার লাগ হয় তখন।

–এতো রাগ তো আমার মিষ্টি জানের ছিলোনা এখন কি করে হলো?

মিষ্টি রেগে তাকিয়ে খাওয়ায় মন দিলো , রাজ হেসে তাকিয়ে রইল ওর খাওয়ার দিকে,

বাসার এসে মিষ্টি দেখলো মিনা মা এসেছে তারা মিষ্টি হাত দেখেই তো অবাক হয়ে রইলো কি হয়েছে জানতে ব্যস্ত হয়ে পরলো সবাই এতো কিছু বললো না। মিষ্টির বলল যে নিজের অসাবধানতার ব্যাথা পেয়েছে ওইসব বললে খুব টেনশন করবে তাই।

মিষ্টি ওর মাকে পেয়ে তো সেই খুশি কতো দিন পর এখছে মাকে। কিন্তু বেশি দিন হয়নি এনগেজন্টেই তো এসেছিল কিন্তু মার কাছে মেয়ে একদিন অনেক আর মেয়ের কাছে ও তাই আর সেখানে তো ভালোই বারো দিন চলে গেছে। মিষ্টি পরে যা শুনল তাতে লজ্জায় রুমে চলে গেল ওর আর রাজের বিয়ের জন্য এসেছে যেটা এক্মামের আগে ছিলো সেটা এক্মামের পর ঠিক হয়েছিলো। কিন্তু সেই বিয়ে যে পরিক্ষার পরদিনই সেটা জানতো না মিষ্টি। মিষ্টি রুমে এসে বসে খাটে একটা মানুষকৈ দুবার বিয়ে করতে হবে। এমনটা কখনো হয়নাকি আমাদের ক্ষেএে হবে হুম হবে। হঠাৎ রাজে রুভে মিষ্টি ভাবে হয়তো রাজ এসব নিয়ে আমার সাথে দুষ্টু ভি করতে এসেছে লজ্জা পাচ্ছি বলে কথা শুনাবে যে আগে তো একবার বিয়ে করেছোই এখন আবার লজ্জা কি আছে? এসব বলবে কিন্তু রাজ এসে গম্ভীর হয়ে আমার সাভনে দাড়ালো আর সেদিনের কথা জিগ্গেস করলো।

–মিষ্টি চোপ করে থেকো না বলো কে তোমার সাথে এসব করেছে কে বলো? কে ছিলো তুমি কি তাকে চেনো কেন তোমার ক্ষতি করতে এসেছিল সে আর কোথায় ই বা গেল সে? তুমি থাকে যেতে দিলে কেন আর ঔই পাশেই কেন খেছিলে।

মিষ্টি চুপ করে আছে এটা মনে পরতেই ভ য় কাজ করছে ওর মাথায় ও ঢুকছে না কে সেই মহিলা আমি তো তার হেল্প করছিলাম কিন্তু সে কেন আমার ক্ষতি করতে চাইলো কেন? নিজেঈ ভাবনায় ঢুকে গেছে হঠাৎ রাজের কাধ ঝাকানিতে রাজের দিকে তাকায় রাজ রাগে লাল হয়ে আছে।

–কি হলো কি ভাবছো বলো?

–আমি তাকে চিনি না রাজ সে কেন আমার ক্ষতি করতে চাইলো জানি না। আমি তো তার হেল্প করছিলাম কিন্তু সে যে এমন কিছু করবে ভাবিনি।

মিষ্টি রাজকে ফাস্ট থেকে লাস্ট সব বলে। রাজ শুনে নিজেও ভাবতে থাকে অপরিচিত কেউ এমন কেন করলো সে কি সিনতাই কারি তাহলে মিষ্টি কাছে একে কিছু না নিয়ে মেরে দিয়ে পালালো কেন?

–তোমার কি গাড়ির নাম্বার মনে আছে?

মিষ্টি গাড়ির নাম্বার শুনেই মনে করার টাই করে হালকা দেখেছিল কিন্তু আপসা আপসা,,

–আপসা আপসা মনে আছে ক্লিয়ার না।

–একটু মনে করার টাই করো মিষ্টি কে কেন এমন করলো আমাকে জানতেই হবে।

মিষ্টি রাজকে এই ভাবে রাগতে দেখে বলে বলতে চায় না। কিন্তু রাজের জরাজরিয়ে ভাবতে থাকে ও। অনেকক্ষণ পর মনে আসে এবং বলে। রাজ ততক্ষণাক বেরিয়ে যায় রুমে থেকে।

মিষ্টি ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে আছে যাওয়ার দিকে রাগ প্রচণ্ড রেগে আছে। রাজ ওর এক ফ্রেন্ড কে ফোন করে খুজতে থাকে সেই গাড়ির মালিককে।

সাতটার দিকে মিষ্টি রুমে বসে আছে রাজ সেই যে বেরিয়েছে আর আসে নি বাসা কোথায় আছে কী করছে কে জানে। ফোন দিলে ও ধরে না কেটে দেয় এখন অফ বলছে একটু আগে আম্মু এসে আমাকে খাইয়ে দিয়ে গেছে।

–আপু আপু নিচে চলো তারাতারি।

–কেন কি হয়েছে?[ মিষ্টি ভয় পেয়ে জিগ্যেস করে]

–কি হবে কিছু না। চলো শাড়ি গহনা আসছে নিচে আন্কেল বাড়িতে আসতে বলেছে তোমার এই অবস্থায় আর বাইরে যেতে হবে না। কাল তো তোর গায়ে হলুদ আমি সুন্দর একটা ড্রেস নিয়েছি সবাই নিয়েছে তোমার জন্য সবাই মিলে কিছু পছন্দ করেছে। কিন্তু তোমাকে না দেখিয়ে ত রাখতে পারে না তাই চল দেখবি পছন্দ হয় কি না।

–রাজ বাসা এসেছে।

–না তো ভাইয়াকে বাসায় দেখিনি তো।

–আমার ভালো লাগছে না তুই যা।

–তোমার দেখতে হবে তো চলো একটু দেখেই চলে আসবে।

–মামুনি আর মা যা পছন্দ করেছে আমার তাই পছন্দ আলাদা করে আর দেখার দরকার নেই।

–তবুও তোমার বিয়ে তুমি দেখবে না পরে আবার বলবে আমার পছন্দ হয়নি কেন নিছে দেখলাম না। আপসস করবে তখন কিন্তু…..

–ওফফফ মিনা যাবি আমার মাথা ব্যাথা করছে।

মিনা আর কিছু বলে না মিষ্টি হাসির বা জোকসের মুডে নেই কিছু হয়েছে নিশ্চয়ই।
মিষ্টি কিছু খেলো ও না রাতে রাজ কোথায় গেছে ক জানে সবাই চিন্তিত এগারো টা বাজে এখন ওবাসায় আসে নি রাজ। দুষ্চিন্তা করতে করতে মিষ্টি ঘুভিয়ে পরেছে। শরীর টা এমনি দূর্বল হঠাৎ কারো উষ্ণ ছোঁয়া পেয়ে চোখ মেলে তাকায় আর দেখে রাজ আমার সামনে বসে আছে আর একটু পর পর হাতে চুমু দিচ্ছে আমাকে তাকাতে দেখেই ধরে উঠে বসায়। আমি সাথে সাথে প্রশ্ন ছুরি,

–কোথায় ছিলেন আপনি কতো বার কল করেছি দেখেছেন ধরেনি কেন চিন্তায় ফেলতে খুব ভালো লাগে তাইনা।

রাজ কিছু বলছে না শান্ত দৃষ্টি তে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ খাবার ধরে মুখের সামনে আমি কি জিগ্গেস করি আর উনি কি করছেন?

–হা করো;

–আমি আপনাকে কিছু জিগ্গেস করেছি তার উওর না দিয়ে এসব কি? খাবার এনেছেন কেন?

–খাবে তাই। আর আমি চাইনা আর বউ কালকে অসুস্থ থাকুক একটু সময় বাইরে ছিলাম এতেই তোমার আমার জানটাকে কষ্ট দিচ্ছো।

–ঠিক করেছি। সরান এগুলো আমি খাবো না।

–ওকে আমি ও খাবো না আমার কিন্তু অনেক খিদে পেয়েছে অনেক ক্ষণ ধরে খাইনা সেই যে সকালে খেয়েছি আর খাইনি তোমার যদি আমাকে না খাইয়ি রাখতে ভালো লাগে তাহলে তাই হোক।

বলেই রাজ হাতের ভাত রেখে চলে যেতে নেয় পিলেট নিয়ে। মিষ্টি রাজ খায়নি শুনে আর জেদ ধরে রাখতে পারে না ও না খেলে ও রাগ দেখাতে পারবে কিন্তু রাজ নিজের কষ্ট দেখালে মিষ্টি আর রাগ রাখতে পারে না তাইই হলো মিষ্টি বলে উঠলো,

–আমি খাবো।

রাজ জানতো এমন কিছু হবে? শত বললে ও মিষ্টি কে রাজি করানো যাবে না তাই এই পদ্ধতি।

রাজ মিষ্টি কে খাইয়ে দিলো সাথে নিজেও খেল। প্রচণ্ড টায়ার্ড রাজ তাই আর কিছু না বলে লাইট অফ করে মিষ্টির পাশেই শুয়ে পরে। মিষ্টি এখন ও জেগে আছে কি হলো সব মাথায় উপর দিয়ে গেল ওর রাজ ওকে পাওআ না দিয়ে ঘুমিয়ে গেল। বারান্দায় দিয়ে হালকা আলো আসছে থাতে রাজের মুখ স্পশ্ট দেখা যাচ্ছে রাজ ঘুমিয়ে গেছে মিষ্টি কে জরিয়ে ও ধরে নি আজ। মিষ্টির ঘুম আসছে না রাজ কি করছে কে জানে কোথায় গিয়েছিল কে জানে কিছু ই তো বলল না ওকে। মিষ্টি ঘুম আসছে না রাজের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ঘুমের মাঝেও লোকটা কে কি অসাধারন লাগে তাকিয়ে থাকলে শুধু তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে হয়। রাজে চুল এলো মেলো হয়ে কপালে আসছে। সামনের চুল গুলো বড় বড় করে রাখা তাই কপালে পরে মিষ্টির খুব ইচ্ছে হলো চুল গুলো সরিয়ে দিতে। ইচ্ছে নিয়ে বসে থাকতে পারলো না হাত বারিয়ে চুল সরিয়ে দিলো সাথে সাথে রাজ ভ্র কুচকালো ঘুমের মধ্যে মিষ্টি ধরা খাওয়ার ভয়ে রাজের বুকে নিজে থেকেই মাথা রেখে এক হাতে জরিয়ে ধরে।
দশটার দিকে জাগানা পায় মিষ্টি চোখ খুলে নিজেকে একা পায় বেডে। পাশে রাজ নেয় কখন উঠে গেছে ও তো টেরই পায় নি। এমন কেন কি চলছে রাজের মনে কখন উঠে গেছে আমাকে ডাকে ও নি কাল রাতে ও কথা বলে নি। ঘড়ির দিকে চোখ পরতেই মিষ্টি চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম হয় দশটা বাজে। এতো বেলা হয়ে গেছে অথচ ওকে কেউ ডাকে কেন? আর এতো চিৎকার চেচামেচি হচ্ছে বাইরে এতো মানুষ কোথায় থেকে এলো। মানুষের গমগম শুনে মিষ্টি তারাতারি উঠে বসে দরজায় কাছে এসেই আরেক দফা শক খায় পুরো বাসা ফুল ক্রান্ডেলা দিয়ে সাজানো। কিছু লোক এখন ও সাজাচ্ছে সাজানো শেষই কিছু জায়গা দেখে ঠিক আছে কিনা দেখছে। রাজকেও দেখলাম নীল শার্ট, কালো ফেন্ট পরে আছে আর কানে ফোন কারো সাথে কথা বলছে কিছু নিয়ে খুব সিরিয়াস ভাবে আর একটা লোককে হলুদের স্টেজে কিছু দেখিয়ে দিচ্ছে। দুটো কাজ সাথে করছে বারান্দায় থেকে বাগান দেখে আমি শিহরিত এত সুন্দর হয়েছে যে চোখ ফিরানো যাচ্ছে না। ফোন টা রেখে পকেটে রেখেই হঠাৎ আমার দিকে চোখ পরেমতে রাজের সাথে সাথে আমাকে ভেতরে যেতে বলে আমি বুঝতে পারছি না এসব বলছে কে আমাকে কি আজ বন্ধি করে রাখবে নাকি। রেগে তাই কি জন্য বলছি এবার রাজ রেগে বলে উঠে যাও আমি তারাতারি ভেতরে চলে আসি রাজের রাগী ফেস আমি এখন ও ভয় পায়।
আয়নার সামনে দাড়িয়ে রাজকে বকে যাচ্ছি অসভ্য লোক একটা আমাকে সকাল সকাল বকলো কথায় বলবো না আজ হূহ। বলেই মিষ্টি ফ্রেশ হয়ে চুল ঠিক করে বেধে সব ঠিক করে নিচে নেমে এলো নিচে আসতে মামুনি আমাকে খেতে বসালো। নিজে হাতে খেতে আনছে আমার আম্মুকে দেখছি না মিনা কে ও না মামুনি কে জিগ্গেস করলাম মামুনি বলল আম্মু নাকি রান্না ঘরে রান্না করছে। আর মিনা বাগানে কই আমি তো বারান্দায় থেকে মিনা কে দেখলাম না।মামুনির হাতে থেকে এক লোকমা মুখে দিতেই আন্কেল এসে সোফায় বসলো কাজ করে হাপিয়ে উঠে। উনি কিন্তু কাজ করে নি কাজের লোকই তো আছে সে শুধু পেছনে পেছনে ঘুরেছে খুব সচেতন মানুষ উনি নিজের জিনিসে একটু ও ভুল পছন্দ করে না। তাই এমন হাল উনার উনি মনে করে নিজে না থাকলে কিছু না কিছু ভুল হবে যা তার জন্য উচিত না। আমি মামুনির হাতে খাচ্ছি হঠাৎ রাজ খেয়েছে কিনা মনে পরে মামুনি কে জিগ্যেস করতে ও পারছি না। যতই হোক শাশুড়ি বলে কথা আবার শশুর ও এসেছে চুপ করে খাচ্ছি জিগ্গেস আর করতে পারলাম না।

হঠাৎ কারো চিৎকার কানে এলো আমি খাওয়া অফ করে সেদিকে তাকিয়ে আছি।
–ভাই তুমি এটা কি করলে আমার মেয়ের সাথে রাজের বিয়ের কথা ছিলো তুমি সেটা ভুলে এই এতিম মাইয়াটারে রাজের গারে তুলে দিচ্ছো।

— হেনা তুই কিন্তু বাড়াবাড়ি করছিস। বাসা ভরা মানুষের মধ্যে কি শুরু করলি আর কি বললি কথা ছিলো মানে। আমি কবে বলেছি তোর মেয়ের সাথে রাজের বিয়ে দেব।

–বলো নি কিন্তু আমি এটা ভেবেছিলাম আর তোমাকে অনেক বার বলেও ছি। তুমি সে সব ভুলে নিজের বোনের মেয়ে না এনে এই ছোট লোক ঘরের মেয়েকে আনলে। তোমার রুচি এতো বাজে এই বিয়ে ভেঙে দাও এখন ও বিয়েটা হয়ে যায় নি ভালো চাও এই ছোটঘরের মেয়েকে আমার রাজের গাড়ে দিয় না। আমার মেয়ে রাজের জন্য পারফেক্ট ওর সাথে বিয়ে দেব রাজের।

–হেনা আমি কিন্তু তোকে চুপ থাকতি বলছি তুই যদি এসব করিস আমি কিন্তু তোকে বাসা থেকে বের করে দেব। আমার বাসার এসে আমার ছেলের ব উ এর নামে আর একটা খারাপ কথা বললে তুই যে আমার বোন সেটা আমি ভুলে যাবো।

–এই মেয়ের জন্য তুমি আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলল,,[ ন্যাকা কান্না করে] আচ্ছা তোমাকে বের করতে হবে না। যেখানে আমার কোনো দাম নেই সেখানে আমি নিজেই থাকবো না। চল হাফসা আর এক মুহূর্তে ও না এই বাসার।

বলেই মেয়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগে কিন্তু যেতি পারেনা মেয়েটা মাকে ছাড়িয়ে বলে উঠে।
–ছারো আমার হাত আমি যাবো না।

হঠাৎ মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে উনি থমকে দাড়ায়।
–যাবি না মানে।

–যাবো না মানে যাবো না। বিয়ে না খেয়ে যাবো না রাজ ভাইয়ার বিয়ের জন্য এসেছি তা শেষ না করে যাবো কেন?

–ওরা আমাদের অপমান করলো দেখলি না তাও তুই এই বিয়েতে থাকতে চাইছিস।

–তোমার ব্যবহারে এমন কথা ঠিকই ছিলো অপমান না। তোমার মেয়ের কি আর বিয়ে দিতে পারবে না আম্মু যে এভাবে তারিয়ে দিতে উঠে পরে লেগেছো।

–কী বলছিস মা তুই?

–ঠিকই তো বলছি আমি কি তোমার কাছে বুজা হয়ে গেছি মা যে এভাবে অপমান করলে। আর একবার নিজের মেয়ের কথা ভাবলে না তোমার কি আছে বলো তো তোমার মেয়ে আর ওই মেয়ের দিকে তাকাও। তোমার মেয়েকে যদি কেউ এভাবে বলতো তোমার কেমন লাগতো বলতো। নিজের মেয়ের কথা ভাবলে না। আরেক মেয়েকে ছোট লোক ইত্যাদি খারাপ কথা বলছো কেন মা।

এবার তার টনক নরলো মেয়েটা সত্যি খুব সুন্দর এমন মেয়েকি যে কেউ ঘরের বউ করতে চাইবে। আর তার ও কিছু ছিলো না ভাই না সাহায্যে করলে আজ সে এদের মতো ই অবস্থা থাকতো। মেয়ের কথা শুনে হেনা বুকে কষ্টের পাহাড় জমা হলো মেয়েকে সে কষ্ট দিয়েছে খুব কষ্ট দিয়েছে। তার একটাই মেয়ে মেয়েটাকে সে খুব ভালোবাসে মেয়েটা একেবারে সহজ সরল যখন যা বলে তাই করে। এক কথায় বাধ্য মেয়ে যাকে বলে মায়ের উপরে কখনো কথা বলে নি সেই মেয়ে তার মুখের উপর কথা বলছে এটা শুনেই তার বুক ফেটে যাচ্ছে। এভাবে বিয়ে নিয়ে ঝগড়া করাটা তার অপরাধ হয়েছে গোর অপরাধ মেয়েকে সস্তা বানিয়ে ছে। ভেবে অপরাধী চোখে মেয়ে ও ভাইয়ের দিকে তাকায় ভাইয়ের সাথে সে খারাপ আচরন করেছে বুঝেছে ছোট রা বড় দের সাথে এভাবে কথা বলা উচিত না ব ড় ভাই আঘাত করা উচিত না। উনি ভাইয়ের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইলো।

মিষ্টি সব কিছু দেখছিল মহিলটির কথা শুনে খারাপ লাগলে ও মেয়েটির কাথা ভালো লেগেছে অনেক খারাপ লাগাটা চলে গেছে।
মামুনির থেকে জানতে পারলাম এটা রাজে ফুফি। খাওয়া শেষ করে উপর যাচ্ছে হঠাৎ মেয়েকে আমার পাশে এসে হাটতে লাগলো পা মিলিয়ে আর কথা ও বলছে। নাম হাফসা মাস্টাস করছে। একাই আর ভাই বোন নাই। তার মার হয়ে আমার থেকে ক্ষমা চাইলো। অনেক গল্প করলো আমার সাথে রুমে বসে মেয়েটা সত্যি ভালো খুব মিসুক। হাসফা যেতেই রাজের আগমন এসেই আমাকে অর্ডার করতে লাগলো,

— যাও তো বউ বর এর জন্য খাবার নিয়ে আসো।

মিষ্টি কিছু বলল না আগের মতোই বসে রইলো।

–কি হলো আমি কিছু বলছি কিছু বরের কথা শুনতে হয়। আর ওই দিকে ঘুরে আছো কেন এদিকে ফিরো।

মিষ্টি ফিরলো না কাল থেকে তার সাথে খারাপ বিহেভ করছে এখন অর্ডার করছে। তোর অর্ডার শুনবো না হূহ।

রাজ মিষ্টি দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টি পিঠ দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে আছে কিছু বলছে না। রাজ বুজলো মেডাম রাগ করেছে তাই নিজেই মিষ্টির কাছে গিয়ে কাধ ধরে নিজের দিকে ফেরায়।
–কি হয়েছে কথা বলছো না কেন? মুখটা এমন পেচার মতো করে রেখেছো কেন? বলো;

মিষ্টি তাকারো না রাজের দিকে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

–সকালের জন্য না রাতর জন্য রাগ হয়েছে বলো।তাও কথা অফ রেখো না জান আমি পাগল হয়ে যাবো তাহলে।

মিষ্টি তবুও কিছু বলল না,,
–কি হলো বলো আমার কিন্তু…

এবার মিষ্টি বলল,,
–দুই কারণেই সকালে ওমন করলেন কেন? আর রাতে কিছু বললেন না কেন?

–এই জন্য এতো রাগ বাপরে। আজ না আমাদের গায়ে হলুদ এখন রাতের কথা বলে টেনশনে ফেলতে ও পরতে চাইনা গায়ে হলুদ এর পর আমি নিজেই তোমাকে সব বলবো। আর সকালে সেটা তো মারাত্মক ব্যাপার জান কতোটা রেগে ছিলাম জানো আচমকা তোমার ই লুক দেখে ত আমি শিহরিত এলোমেলো চুল ঘুমঘুম ভাব ওই ভাবে কেউ বাইরর মানুষের সামনে যাই বলো। আমি বাদে যদি অন্য কেউ দেখে নিতো তখন কি হতো সবাই তো এই সুন্দর জিনিসটা দেখে ফেলতো কিন্তু আমার জিনিস অন্যরা কেন দেখবে বলো।তাই ত সরে যেতে বলেছি।

মিষ্টি হা হয়ে তাকিয়ে আছে। রাজ ওর হা মুখ বন্ধ করে খাবার আনতে বলে।

বিকেলে পার্লার থেকে লোক আসে মিষ্টি কে সাজাতে। মিষ্টি বিরক্ত নিয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে এতো মেকাপ বের করছে তা দেখেই মিষ্টি আগ বলে নেয় সে এতো মেকাপ দিবে না একাই সাজবে। মেয়েগুলো বলেতাদের সাজাতে দিতে না হলে তারা টাকা পাবে না এটা তাদের কাজ তাদের যেন করতে দেয় মিষ্টি বুজতে পারে আসলেই এরা তো টাকা জন্য ই কাজ করছে ও করলে ওদের তো অপকার হবে। মিষ্টি রাজি হয় কিছু বলে হালকা কলে সাজাতে হবে বেশি গরজিয়াস যেন না সাজায় তারা তাতেই রাজি হয়।

মিষ্টি কি অপূর্ব লাগছে গায়ে জরিয়ে আছে হলুদের মাঝে সবুজ পের আলা কাতান শাড়ি। সবুজ ব্লিউজ 3 কুয়াটার, হাত ভর্তি সবুজ আর হলুদ মিক্ম করা চুড়ি। মুখে হালকা সাজ, ঠোটে গোলাপি লিপস্টিক, চোখে মোটা কাজল। চুল গুলো পাম করে ফুলিয়ে মাথায় টিকলি, মাজায় বিছা ফুলের গলায় ফুল দিয়ে মালা।
মিষ্টি কে সাজিয়ে দিয়ে গেছে একটু আগে এখন মিষ্টি আয়নার নিজেকে দেখছে হঠাৎ দরজায় দিকে চোখ পরতেই চোখ আটকে যায় রাজ ওর সাথে ম্যাচিং করা পান্জাবি পলেছে ফর্সা গায়ে হলুদ রং টা দারুণ মানিয়েছে। মিষ্টি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে রাজের ও সেম অবস্থা। চোখে চোখে কথা হচ্ছে তাদের কিন্তু বেশিক্ষণ কথা গুলো চললো না করো শব্দে তাকিয়ে দেখে মিনা দাড়িয়ে আছে ওদের মাঝে।
–ভাইয়া আপনি এখানে কি করছেন? যান নিচে যান সবাই আপনাকে খুজছে আর আমি আপুকে নিয়ে আসছি যান। কি হলো যাচ্ছে না কেন? এখন বউ এর সাথে প্রেম করতে এসেছেন তাই না যান যান প্রেম করা হচ্ছে না।

— আমার বউকে আমি ই নিয়ে যাবো মিনা তুমি নিচে যাও আমরা আসছি।

–কি আপনি নিয়ে আসবেন?

–হুম।

–কি প্রেম? আপু তোর কি কপাল রে এক জনকে দুই বার বিয়ে করছিস আর আমি?

–বাহহ আমার শালিকা দেখা যায় বিয়ের জন্য পাগল প্রায়। তোমার ও কেউ আছে নাকি আবার একা একাই বিয়ে কলে নাও নাই তো।

–ভাইয়া আপনি আমার কাটা গায়ে নুনের সিটা দিচ্ছে ঠিক হচ্ছে না কিন্তু। আজ একটা বয়ফ্রেন্ড নাই বলে কিছু করলাম না থাকলে আমি ও বিয়ে করে নিতাম পড়ালেখা তো একদম করতে মন চায় না আমার সেটা তো আপুর জিনিস আমার জন্য বিরক্তি কর। একটা হান্ডসাম ছেলে পায় তাকে নিয়ে প্রথম দিন আগে কাজি অফিসে যাবো।

–রাজ হা হয়ে আছে মেয়ে না হিটলার।

মিনা নিচে চলে যায়।
রাজ মিষ্টির দিকে এক পা একপা করে এগিয়ে যায়। একদম কাছ ঘেষে কোমর জরিয়ে কাছে টেনে নেয়। একদৃষ্টি তে মিষ্টি দিকে তাকিয়ে আছে ঘর লেগে যাচ্ছে রাজের রাজ নিজের চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করে। মিষ্টি দিকে তাকিয়ে বলে,
— আজ আমাকে মারার পিলাণ করছো নাকি।

মিষ্টি ভ্রু কুচকে তাকায় রাজের দিকে,
–আবার এভাবে তাকাও কেন? ঠিকই তো বলেছি এভাবে তাকিয়ু না আমার এইখানে লাগে।

বলেই বুকে হাত রাখে।
–চলো নিচে যাই সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।

বলেই মিষ্টির হাত ধরে নিচে নামে বাসার কেউ নেই সবাই বাগানে আছে। রাজ আর মিষ্টি একসাথে বাগানে আসতেই সবাই হা তাকিয়ে আছে। দুজন কে এতো সুন্দর মানিয়ে ছে যে সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে। সবাই প্রশংসা ও করছে।
দুজনের পাশাপাশি বসার ব্যবস্থা হয়েছে। রাজ মিষ্টি কে নিয়ে বসে পরে। সবাই একে একে দুজনের গায়ে হলুদ ছুয়ে দেয়। মাঝে মাঝে মিষ্টি রাজের দিকে আড়ালে দৃষ্টি দেয়। মিষ্টি সবার আড়ালে একটু পর পর রাজের দিকে তাকায়। হঠাৎ একবার তাকাতেই দুজনের চোখাচোখি হয়ে যায় মিষ্টি লজ্জায় চোখ সরিয়ে নেয়। রাজ তা দেখে বাকাঁ হাসে রাজ আগে বুঝেছিলো মিষ্টি তাকাচ্ছে নিজেও তাকিয়ে ছে মিষ্টি কে অন্য রকম লাগছে না তাকিয়ে থাকতে পারলে সে।
রাত দশটায় মিষ্টি রুমে আসতে পারে। তিথি সে তো মিষ্টি পাশেই আছে আর ওদের কাণ্ড দেহয়ে খছে আর একটু পর পর এখকবার রাজের কানে কিছু বলে লজ্জা দিচ্ছে কিন্তু রাজতো লজ্জা পাচ্ছেই না উল্টো ওকে লজ্জা দিচ্ছে তাই আর সেই দিকে গেল না মিষ্টি কে লজ্জা দিতে লাগলো। তিথি আর মাসুদ এসেছিলো মাসুদের জন্য তিথি থাকতে পারলো না বলল কাল সকালে চলে আসবো কিন্তু আজ থাকা যাবে না।

ক্লান্ত সে প্রচুর সবার মাঝে থেকে নানা কিছু করতে হয়েছে সারা শরীর হলুদ মাখা মাখি ওয়াশ রুমে যাবে হঠাৎ কেউ হাত টেনে ধরে পেছনে তাকিয়ে দেখে রাজ দাড়িয়ে আছে। –কি চাই?

–তোমাকে;

–মানে,, [ভ্রু কুচকে ]

রাজ কিছু না বলেই মিষ্টি কে কোমর জরিয়ে কাছে টেনে গালের দিকে তাকিয়ে থাকে। মিষ্টি ছুটাছুটি করছে এখন ফ্রেশ হবে ও এসব পরে থাকতে খারাপ লাগছে তাই ফ্রেশ তে যাচ্ছিলো রাজ আবার এমন করছে কেন?

— এভাবে ধরে রেখেছেন কেন ছারুন তো আমার গরম লাগছে। এসব পরে ধুম বন্ধ হয়ে আসছে।

–একদিন ই তো একটু সহ্য করো না জান। প্রতিদিন তো আর বিয়ে করবো না তাই না।

–প্রতিদিন না করলেও বিয়ে কিন্তু দ্বিতীয় বার এটা।

–বিয়ে দুইবার ঠিক আছে কিন্তু হলুদ তো আগের বার হয় নি সো এটা একবারই। আমার বউকে সবাই হলুদ দিলো আমি দিবো না তা কি হয় বলো এটা কেমন দেখা যাবে বলো তো।

–মানে কি সব বলছেন? আপনি কেন হলুদ দিবেন জীবন শুনেছেন কোন বর তার বউকে হলোদ দিয়ে ছে।

–সবাই না দিক আমি দিব সবাই আর রাজ মিষ্টি কি এক নাকি। সবাই কি দুইবার বিয়ে করেছে করে নি আমরা তো করছি। সো সবার টা বাদ দাও।

— আচ্ছা দেন। কিন্তু আপনার হলুদ কই।

–এইযে।
–কই হাতে তো দেখছি না।

রাজ মিষ্টি গালে নিজের গাল ঘষে দিলো মিষ্টি তো বরফ হয়ে গেছে ভেবেছে হাত দিয়ে দিবে কিন্তু এই ছেলে করছে কি। ব্যাথা ও পেল সাথেই চিৎকার দিলো।
–কিহ হয়েছে?

–ব্যাথা পাচ্ছি দাড়িতে ওফ গাল ছুলে গেল সরুন তো আর দিতে হবে না। বলেই হালকা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চলে যেতে নেয়। রাজ আবার হাত ধরে নেই।

–আবার কি হলো?

— কিছু না যাও।

মিষ্টি চলে যায় রাজকে চিন্তিত তো লাগছে খুব। কিছু কি ভাবছে হুট করে পাল্টে যাচ্ছে কেন মাথায় আসছে না।
মিষ্টি গোসল করে এসে শুয়ে পরে খাটে। রাজের জন্য দরজা চাপিয়ে রাখে যাতে রাজে আসতেপারে। চোখ মেলে এপাশ ওপাশ করছে মিষ্টি রাজ আসা।
এভাবে কখন ঘুমিয়ে পরেছে কা জানে?

এদিকে মারিয়া প্লান মাফিক মিষ্টি রুমে ঢুকে আসে বারান্দায় সেই লোকটি দাড়িয়ে আছে। যাকে দিয়ে মারতে চেয়েছিলো এভাবে মারিয়া নিজের হাতে করতে চায়। রাগে ফুসতে ফুসতে মারিয়া মিষ্টি রুমে ঢুকে। দেখে মিষ্টি মিষ্টি ঘুমিয়ে আছে হাতে তার ফোন মারিয়া হেসে সেদিকে এগিয়ে যায়। আর মনে মনে বলতে থাকে আজ তোকে কেউ বাচতে পারবে না কেউ না। কই মাছের জান তোর এতো বার মারার টাই করলাম কিন্তু তোর কিছু হলো না। তাই এভাবে আমি নিজেই চলে এসেছি নিজে হাতে তোকে মারবো। বিয়ে করার শখ না তোর আমার রাজকে। সেটা তো কখনো হবে না আমি মারিয়া বেচেঁ থাকতে তুই কখনো রাজের কিছু হতে পারবি না। আহারে বেচারি কতো সপ্ন নিয়ে ঘুমিয়েছ কাল রাজকে বিয়ে করবে কিন্তু ও তো নিজের ও জানে না এখন ওর সাথে আমি কি কি করবো কাল তো ওর এই ঘুম আর ভাঙবেই না। ভাবতে ভাবতেই মারিয়া মিষ্টি পাশে গিয়ে বসলো মিষ্টির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে কি আছে এই মেয়ের মধ্যে যে রাজ আমাকে রেখে এই মেয়েকে ভালোবাসলো কি আছে? এই মেয়ে মারিয়ার নখের যোগ্য এ না একে ভালোবাসা রাজ তোমাকে পস্তাতে হবে একে ভালোবেসে।
শুধুমাত্র তোমার জন্য এই মেয়েকে যে মরতেই হবে। এই মেয়েকে মরতেই হবে আর তা শুধু আমার হাতে বলেই মিষ্টি দাড়িয়ে পরে রিভলবার বের করে হাতে নেয় ওর হাত কাপছে এমন কিছু নিজের হিতে কখনো করতে চায় নি কিন্তু ভালোবাসার জন্য করতেই হবে। রাজকে পেতে হলে একে মরতেই হবে না হলে রাজ কখনো আমার হবে না। আর সেটা আমি মেনে নিতে পারি না আমাকে অবজ্ঞা করে এই মেয়েকে নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে আমি কিছু তেই দেবো না।

রিভলবার যেই মিষ্টি কপালে ঠেকাতে যাবে কেউ ঝরের গতীতে এসে টান মেরে ওটা নিয়ে নেয় সাথে মারিয়া হাত মুচরে ধরে মারিয়া হঠাৎ এমন ঘটনায় ভয় পেয়ে পিছিয়ে যেতে চায় কিন্তু পারে না ওকে টেনে ধরে হাত এতো শক্ত করে ধরেছে যে ও ব্যাথায় চিৎকার করে উঠে। আর সামনের লোকটাকে দেখেই ওর আত্মা কেপেঁ উঠে। রাজ এখানে এই সময় কি করছে আর রফিকটা কই ওকে তো দরজায় কাছে খেয়াল রাখতে বলেছিলাম যাতে কেউ না আসতে পারে। রাজের পেছনে বন্দুক হাতে দাড়িয়ে আছে রফিক। কিন্তু বন্দুক তাক করা না নিচে নামানো হাত মারিয়া কিছু বুঝতে পারছে না। লোকটাক কেমন সন্দেহ লাগছে ওর কাছে এখন। হঠাৎ গালে চর পরায় মারিয়া রাজের দিকে তাকায় কিন্তু তাকিয়ে থাকতে পারে না মারিয়া চরটা খেয়ে একটা ধাক্কা খায় যায় জন্য ফ্লোরে পরে চিৎকার করে উঠে। সাথে সাথে মিষ্টি জাগানা পেয়ে যায় চোখ মেলে তাকাতেই মারিয়া, রাজ ও একজন অপরিচিত লোক দেখে। মারিয়া নিচে বসে কাতরাচ্ছে কপাল কেটে গেছে কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না ও ধরফরিয়ে উঠে বসে।
রাজ মারিয়াকে টেনে উঠে দাড় করায়। তারপর গলা চেপে ধরে দেয়ালে ঠেষে ধরে।

–রাজ ছার আমি ব্যাথা পাচ্ছি।

–তাই নাকি তুই ব্যাথা পাচ্ছিস বুঝি। আর আমি তো তোকি ব্যাথা দেওয়ার জন্যই এইসব করছি ছাররে না। তোর থেকে হাজার গুন বেশি ব্যাথা আমার জান পেয়েছে তার জন্য শুধু আমি দায়ি সেদিন তোকে ছেড়ে দিয়ে আমি সেই ভুল করেছি।

–রাজ আমার দুম বন্ধ হয়ে আসছে ছার হাতটা সরা।

রাজের সেদিকে হেল দুল নেই।
–তোর জন্য আমার বুক ধুক করে উঠেছে। ঘুমাতে পারিনি আমার জানে হাত দিয়েছিস তুই তোকে আমি সেদিন বলেছিলাম মিষ্টি আশেপাশে যেন তোকে না দেখি কিন্তু তুই তো ভালো খেলোয়াড় হয়ে গেছিস। বাপরে তোক ধরতে আমার এতো কষ্ট করতে হয়েছে ভাব যায়। তোর জন্য আমি রাতের ঘুম হারাম করে বিয়ের আনন্দ বির্সজন দিয়ে তোকে খুজতে হয়েছে। আর তোর বুদ্ধির তারিফ করতেই হয়। কি বুদ্ধি তোকে যখন আমার সন্দেহ হলো। কিন্তু কি সন্দেহ টা নিমিষেই বাদ ও হয়ে গেছিলো কেন বলতো। ওয়েট বলছি, তোর বাসায় গেলাম তোর বাবা কি বলল জানিস তুই দেশে নেই এক সপ্তাহ আগে বিদেশে চলে গেছিস এটা শোনা মাএ আমি হতবাক। তুই বিদেশ চলে গেলি তাহলে তো তুই এষব করিস নি করলো কে? কতো বুদ্ধি তোর বিশেদ যাওয়ার মিথ্যে কথা বলে আমার চোখের আড়ালে থাকতে চেয়েছিলি আমার জানকে মারতে। কিন্তু রাজ বেচে থাকতে তা তো তুই পারবি না। ফ্রেন্ড ভাবতাম খুব ভালো ফ্রেন্ড। কিন্তু তুই এই ফ্রেন্ড শীপ ভেঙে শএু বানিয়ে দিলি।

গলা চেপে ধরেই কথা বলছে রাজ। এদিকে মারিয়া ধম বন্ধ হয়ে আসছে রাজের হাত সরাতে পারছে না মিষ্টি সব শুনছিল এখন মারিয়ার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে ওর অবস্থা,

–রাজ হাত সরান।

— মিষ্টি সরে যাও আমি হাত কিছু তেই সরাবো না ওকে তো আগ আমি নিজে হাতে খুন করবো। ওর সাহস কি করে হলো তোমার গায়ে হাত দেওয়ার। তোমার হাত ওই কেটেছিল ওর জন্য তোমার কতো কষ্ট হয়েছে ওকে তো।
বলেই রাজ গলার চাপটা জোরে দেয় মিষ্টি নিজে টেনে সরাতে পারে না রাজকে কে এতো বডি আলা লোকে কে কি আমি সরাথে পারবো নাকি হঠাৎ লোকটার দিকে নজর যায় আর বলে তাকে সাহায্য করতে লোকটা টেনে রাজকে সরিয়ে আনে।
মারিয়া একটুর জন্য জান যাওয়া থেকে বেচে ছে গলায় হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। রাজ আবার আসার জন্য হাসফাস করছে মিষ্টি রাজের সামনে গিয়ে ওকে শান্ত করযে চাইছে।

–প্লিজ নিজেকে শান্ত করেনে এভাবে নিজে নিজের ক্ষতি করবেন না প্লিজ। ও আমাদের ক্ষতি করতে চেষ্টা করেছে জানি ওকে নিজে মেরে পুলিশের চোখে অপরাধী হাতে চান। ওকে পুলিশের হাতে তুলে দিন।

রাজ এবার হালকা রাগ কম এলো হয়তো মিষ্টির কথা ভালো লেগেছে। কিন্তু মারিয়া সাথে সাথে চিৎকার করে উঠে,

–আমাকে পুলিশের হাতে দিবি রাজ তুই আমার বাবার নাম ভুলে জাসনি হয়তো। আমাকে জেলে নেবার সাহস কারো নেই। আমি তো এই মেয়েকে মেরেই ছারবো।
বলেই মারিয়া মিষ্টির গলায় চেপে ধরে। রাজ মারিয়াকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে মিষ্টি কে বুকে চেপে ধরে মিষ্টি ও ভ য় পেয়ে গেছে। মারিয়া ছিটকে কারো উপর পরে তাকিয়ে দেখে ওর পাপ্পা দেখেই ওর মুখে হাসি ফুটে উঠে এবার আর কেউ ওর কিছু করতে পারবে না। ওর বাবা ওর বিরুদ্ধে কিছু করে না শত খারাপ কাজেও পাশে থাকে।

–পাপ্পা তুমি চলে এসেছো দেখে ওরা আমার সাথে কি করছে? ওই রাজ আমাকে ঠকিয়েছে ওকে তুমি আমার কাছে এনে দাও ।

বলেই মারিয়া জরিয়ে ধরতে যায় কিন্তু ধরতে পারেনা। ঠাসস করে ওর গালে একটা চর পরে পরপর আর ও দুই তিনটে।

–তুমি আমাকে মারলে।

সোহেল চৌধুরী কিছু বলল না মেয়ের মুখ দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে না। এতো টা খারাপ হয়েছে যে একজন মানুষকে মারতে পযর্ন্ত চলে এসেছে । এর সমান ভাবে দোষী ওনি ও উনি যদি এভাবে স্বাধীন ভাবে চলতে না দিতো ছোট্ট অপরাধ গুলো মেনে না নিতো আজ এ দিন দেখতে হতোনা।

–পাপ্পা

–আমাকে পাপ্পা বলে আর ডাকবে। আমি কারো পাপ্পা না আজ থেকে আমার কোন মেয়ে নেই যে ছিলো সে মরে গেছে। তোমাকে নিজের মতো চলতে দিয়েছি। নিজে সময় দিতে পারিনি বলে তোমাকে কিছু করতে বাধা দেয়নি। ভেবেছি নিজের মতো ভালো থাকো তার মানে এই নয় তুমি এভাবে কারো জীবন নিয়ে খেলা করবে। আমি ভাবতে পারছি না আমার মেয়ে একজনের জীবন নিতে অঠে পরে লেগেছে তাও একটা ছেলের জন্য যে কিনা তাকে ভালোইবাসে না। এক তরফা কোন কিছু ই ঠিক না এক তরফা ভালোবাসা ও তোমার জন্য না এটা তোমাকে আমি এনগেজমেন্টের দিন ই বলেছি তুমি আমার কথায় রাজি ও হয়েছিলে। লন্ডনে যাবে বলে টিকেট ও কেটে দিলাম আর এখন দেখছি সব ভুল তুমি আমি মিথ্যে বলে ধোকা দিয়েছো।

–আমি তোমাকে ধোকা দেয়নি।

–দাওনি তাহলে এখানে কি করছো তোমার তো বিদেশে থাকার কথা তুমি এখানে কেন হুয়াই?

–আমি রাজকে ভালোবাসি খুব বেশি ওকে ছেড়ে যেতে পারিনি।

–এটাকে ভালোবাসা বলে না মারু এটাকে জেদ বলে। ভালোবাসা মানে এই নয় যে তার সাথে থাকতে হবে দূরে থেকে ভালোবাসা যায়। ভালোবাসার মানুষ যার সাথে খুশি তার সাথে থাকতে দিতে হয় জোর করে তাকে পাওয়া মানে ভালোবাসা না।

বাসার সবাই চিৎকার চেচামেচি শুনে ছুটে এসেছে। আর কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না হা হয়ে দেখছে সব।

রাজ কিছু আর বলবে না কারণ রাজ নিজেই কাল ওনার বাসায় গিয়েছিল আর মারিয়ার সব বলে এসেছে যা শুনে সে নিজে তার মেয়ের ব্যবস্থা করবে বলেছে। মিষ্টি রাজকে জরিয়েই ছিলো সবাইকে আসতে দেখে নিজের মায়ের কাছে গিয়ে দাড়িয়ে পরে। এদিকে মারিয়া আর ওয বাবা একের পর এক কথা বলেই চলেছে হঠাৎ মারিয়ার গায়ে আবার হাত তুলতে গিয়ে ও থেমে গেলে কাউকে ফোন করে উপরে আসতে বললেন আমরা সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছি কি করবেন উনি হঠাৎ দুজন ছেলে ও একজন মেয়ে পুলিশ আসে সবার বুজতে বাকি নেই কি হবে? মারিয়া তো সেই চেচামেচি কিছু তেই যাবে না কিন্তু তা কি না নিয়ে যাবে। মারিয়ার বাবা একজন বড় বিজনেস ম্যান তাই কারো সাহস হতো না তার মেয়ের সাথে এই সব সে বলেই সবাই সাহস পেল। মারিয়া কে নিয়ে যাওয়া পর উনি ওসি কে ডেকে একটা কথায় বললেন।
” আমার মেয়েটা দেখিস রুমান। যাই করুক একটা মাএ মেয়েতো খুব আদরে মানুষ করেছি ওকে বেশি কষ্ট দিস না।”

লোকটা মাথা নেড়ে চলে যায়। মানুষ টা খুব ভালো তার মেয়ে হয়ে মারিয়া আপু এমন কি করে হলেন। রাজের সামনে গিয়ে হাত ধরে ক্ষমা চাইলেন মেয়ের হয়ে। রাজ কিছু বলল না লোকটা ভালো কিন্তু মারিয়া একদম তার মতো না ওকে কিছু তেই ক্ষমা করবো না। উনি বুঝতে পেরেছে রাজ রেগে আছে। তাই চলে যেতে নেয় মিষ্টি তাকে আটকে দেয় লোকটা কতো ভালো নিজের মেয়ের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাদের জন্য এতো কিছু করলো মারিয়াকে জেলে পাঠালো তাকে ক্ষমা করা উচিত। রাজকে বুঝাতে লাগলো।

–সরি আন্কেল আমাকে ক্ষমা করবেন আপনি না থাকলে মারিয়াকে আমি কখনো ক্ষমা করতাম না। শুধুমাত্র আপনার জন্য ওকে আমি ক্ষমা করলাম।

মিষ্টি এগিয়ে এসে বলল,

–আপনি থেকে যান আজকে।

–না মা আমার ছেলে চিন্তা করবে ও তো জানেই না আমি এখানে আছি। আর তোমার সাথেই এইসব হয়েছে মা ক্ষমা করো সব কিছু র জন্য তোমাদের ক্ষতি করতে আমার মারু আসতে পারবে না ওকে বিদেশে পাঠিয়ে দেব।

–আপনি কেন ক্ষমা চাইছেন এতে আপনার দোষ নেই।

–আমামর দোষ আছে মা। আমি এর জন্য সমান ভাবে দোষী মেয়েকে সঠিক পথ দেখাতে পারিনি টাকার পেছনে লরে ওদের সময় না দিয়ে আজ তাদের এই পরিণতি। আজ আসি মা তোমরা সুখে থেকে ভারো থেকো সেই কামনা করি।

বলেই আর এক পা দাড়ালো না চলে গেল তার পেছনে দুজন বর্ডি গার্ড ও বেরিয়ে গেলেন বাসা থেকে।

রফিক নামের ছেলেটিও চলে গেলেন।
সবাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে জানতে রাজ বিছানায় বসে একে একে সব বলতে লাগলো। সেদিন কুকুর টা মারা গেছিলো তাও মারিয়ার হাত আছে কিন্তু মারিয়া করেনি কাজটা করেছে এই রফিক। মিষ্টির কাছে থেকে গাড়ির নাম্বার নিয়ে রাজ সেই গাড়ির মালিকের ঠিকানায় গিয়ে জানতে পারে গাড়ি টা ভাড়া দেওয়া রফিক নামের এক ছেলের কাছে যারা অথনৈতিক ভাবে খুব দরিদ্র। সেখানে গিয়ে রফিকে ধরে জানতে পারে মারিয়ার জন্য এসব করেছে। তখন রাজ বুজতে পারে সবাইকে মারিয়া বলেছে ও বিদেশে গেছে আসলে যা মিথ্যা। কিন্তু মারিয়াকে ধরার পরিস্থিতি ছিল না কারণ রফিকের সাথে ও নাকি একবার দেখা হয়েছে এ ছাড়া কখনো সামনে আসে না কোথায় আছে তাও জানে। তাই ব্যর্থ হয় রাজ কিভাবে ধরবে ও হঠাৎ মারিয়া ফোন করে বলে আজ মিষ্টি কে মারে আসবে তাও ও নিজে। এই সুযোগ পেয়ে রাজ মারিয়ার বাবা কে ঘটনা বলে আর বাকি টা তো এখন ই
ঘটলো।
সবাই তো হা হয়ে আছে বাপরে কি ভয়ংকর মেয়ে। কিন্তু এখন আর কারো মাঝে ভয় নেয় কারণ যাকে নিয়ে ভয় পাবে সে তো তা শাস্তি পাবার জায়গার ই আছে আর তাদের জীবনে আসতে পারবে না ভাবতেই রাজ সস্তীর নিশ্বাস ফেলে।

পরদিন রাজ আর মিষ্টি বিবাহ সুষ্ঠ ভাবেই শেষ হয়।
মিষ্টি ছাদের দাড়িয়ে আছে আর পেছনে রাজ মিষ্টি কে জরিয়ে রে আছে কাধে থুতনি রেখে। মিষ্টি দৃষ্টি সামনে বিশাল আকাশের দিকে আনন্দ ওর চোখ জল পরছে। আর রাজ এক দৃষ্টি তে মিষ্টি দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের জীবনের কালো ছায়া শেষ হয়ে গেছে। মারিয়া আর কখনো আসতে পারবে না তাদের জীবনে । তারা একটা সুখি দামপ্রতি হবে। আজকে দুটি হৃদয় এক হবে পূর্ণতা পাবে তাদের ভালোবাসা। রাজ মিষ্টি কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দুগালে হাত রেখে কপালে ঠোট ছুয়ে দেয়। তারপর কোলে উঠিয়ে নেচ নামতে থাকে। সমস্ত বাধা পেরিয়ে আজ তারা এক হবে। ভালোবাসার এক নতুন অধ্যায় তৈরি হবে।

[সবাই রাজ আর মিষ্টির জন্য দোয়া করবেন। যারা প্রথম থেকে শেষ পযর্ন্ত পাশে ছিলেন তাদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা। এতো ভালোবাসা দেবার জন্য পাশে থাকার জন্য।]

( সমাপ্ত )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here