ফিঙের_ডানা পর্ব-২৮

#ফিঙের_ডানা
পর্ব-২৮

সকালবেলা সোহান খেয়েদেয়ে কোথায় যেন বের হয়েছে৷ আমি ঘর গোছাচ্ছি, এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল। অচেনা নম্বর৷ আমার ভয় হতে লাগল। এই নম্বরটা তো বাইরের কেউ জানে না। তাহলে? কেউ কি ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে? আমি ধরলাম না। মিনিট দুই পর আবার সেই নম্বর থেকে কল। এবারও ধরলাম না। তৃতীয়বারের বার রিং বাজলে দেখলাম এবার তান্নি আপুর ফোন। আপু বলল, “তোমার কাছে একটু আগে ফোন এসেছে কোনো?”

“হ্যাঁ। কে ওটা? চেনো?”

“শৌভিক আহসান। ওইযে যে সোহানের কেসটা তদন্ত করছে। ওর সাথে নাকি কথা বলবে।”

“আপু আমি অনেক কষ্টে সোহানকে স্বাভাবিক করেছি। ওকে এসব আর মনে করিয়ে দিও না। আর ও কাউকেই কিছু বলবে না। কথা বলে লাভ নেই।”

“তুমি ওনার সাথে কথা বলো। সোহান আছে আশেপাশে?”

“না।”

“আচ্ছা। উনি আবার ফোন করলে ধরবে, কথা বলবে।” বলে ফোনটা কেটে দিল আপু।

একটু পরেই শৌভিক আহসানের ফোন এলো। ধরলে বললেন, “মিসেস শিফা?”

“জি বলুন।”

“সোহানের সাথ কথা বলা যাবে?”

“স্যরি। ও এখানে নেই। আর ও আপনাকে কিছু বলবে না। শুধু শুধু কথা বলে লাভ নেই।”

“আপনি দিয়েই দেখুন।”

“আমি দেব না। সে অনেক ডিপ্রেডস ছিল৷ এখন একটু স্থির হয়েছে। ঘটনাটা মনে করিয়ে দিলে আবার ভেঙে পড়বে। আপনি কি বুঝতে পারছেন ব্যাপারটা? আর তাছাড়া…”

“কী?”

“আপনার তদন্ত করতে হবে না। বোধহয় লাভ নেই কোনো।”

“কে বলল লাভ নেই? আপনার কি ধারণা সোহানই খুনটা করেছে?”

“আমি কিছু জানি না।”

উনি সান্ত্বনার সুরে বললেন, “আচ্ছা আপনি ভেঙে পড়বেন না। ওনার সাথে কথা নাহয় না বললাম। আপনি কিছু বলুন। আমি কেসের শেষ দেখে ছাড়ব। সেক্ষেত্রে আপনারা কো-অপারেট করলে ভালো হয়। এইটি পারসেন্ট চান্স আছে সোহানের খুনী না হওয়ার।”

“কীহ!” আমি উঠে দাঁড়িয়ে পড়লাম। “আপনি শিওর?”

“মোটামুটি।”

“কিন্তু…”

“কী বলুন? আমাকে সাহায্য করলে আমার খুব সুবিধা হয়।”

“সোহান কিছুদিন আগে কয়েকটা ছবি এঁকেছে। সেখান থেকে আমার ধারণা হয়েছিল খুনটা ও ই করেছে।”

“কিসের ছবি?”

“দুটো হাতের কয়েকটা ছবি। দেখলে বুঝতেন।”

“আমাকে দেখাতে পারেন? ছবিগুলোর স্ন্যাপশট নিয়ে ইমেইল করতে পারবেন?”

“পারব। কিন্তু কথা দিতে হবে সোহানকে নির্দোষ প্রমান করবেন।”

“দেখুন এমন কিছু কথা দেয়া সম্ভব নয়। ও যদি নির্দোষ হয় আমি কথা দিচ্ছি ওর কিছু হবে না। কিন্তু দোষী হলে আমার কিছু করার নেই।”

“ওহ!”

“ছবিগুলো দেবেন?”

“দিচ্ছি।”

আমার মধ্যে নতুন করে আশার আলো জ্বলে উঠল। সোহান খুনী নাও হতে পারে। উনি বললেন এইটি পারসেন্ট সম্ভাবনা সোহানের নির্দোষ হওয়ার। তার মানে কি….

ছবিগুলোর ছবি তুলে পাঠাতে নিয়ে দেখলাম যাচ্ছে না৷ এখানকার ইন্টারনেট খুবই স্লো। পাঁচটা ছবি ইমেইলে যেতে সারাদিন লাগবে। তাও যাবে কি না সন্দেহ। নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে বাজারে গেলে। যাব একবার?

কিছুক্ষণ ভেবে মনে হলো যাই। হয়তো ছবিতে এমন কিছু আছে যা আমার চোখ এড়িয়ে গেছে। মূল ছবি পাঠাতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়।

বের হয়ে দেখি সোহান নেই আশেপাশে। কোথায় যে গেল! ওকে অবশ্য সত্যিটা বলা যেত না। অন্যকিছু বলতে হতো। আমি মামীকে বলে বাজারের দিকে রওনা হলাম। বাজারে পৌঁছে ছবিগুলো পাঠিয়ে দিলাম দ্রুত। তারপর শৌভিক আহসানকে ফোন করে নিশ্চিত হলাম সেগুলো ঠিকঠাক পৌঁছেছে।

ফেরার সময় সজলের সাথে দেখা। সজল মামীদের বাড়ির পাশের বাড়িতেই থাকে। কয়েকবার টুকটাক কথা হয়েছে। আমাকে দেখে বলল, “ভাবী বাড়িতে যাবেন?”

“হ্যাঁ।”

“চলেন আমিও যামু। একলগে যাই।”

চলতে চলতে নানা কথা বলতে লাগল সজল। আমার মাথায় যদিও কিছু ঢুকছে না, তবে হ্যাঁ হু করে যাচ্ছি৷ রাস্তায় কুলফি মালাইয়ের দোকান থেকে দুটো কুলফি কিনে এনে একটা আমাকে দিল। নিয়েও নিলাম৷ গরমের মধ্যে খেতে ভালোই লাগল।

কিছুদূর যেতেই সোহানের দেখা পেলাম। টং দোকানে বসে চা খাচ্ছে। সেদিন গান গাওয়ার পর তার বেশকিছু ভক্ত জুটে গেছে। তাদের সময় দিচ্ছে। একজনের হাতে ছোট বেহালাও দেখা গেল। আমাকে দেখে সোহানের মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল। প্রথমটায় ঘটনা বুঝলাম না। পরে সজলের দিকে সোহানের কড়া দৃষ্টি দেখে বুঝলাম জনাবের হিংসে হচ্ছে। আমার খুব হাসি পেল। কোনোরকমে হাসি চেপে বাড়ি ফিরলাম৷
____________

শৌভিক রিয়েল ক্লাবের সামনে এসে চারপাশটা ঘুরে দেখল। তার মুখে তখন রহস্যময় হাসি৷ এজন্যই এই ক্লাব এত জনপ্রিয়! খেলাধুলা আর সভ্য পার্টির নাম করে এখানে অনেক কিছুই হয়। রাত যত বাড়ে পরিবেশ তত মাতাল হতে থাকে। এসবই জেনে এসেছিল সে। কিন্তু ক্লাবের পাশেই যে আবাসিক হোটেল আছে তা তো কেউ বলেনি! ক্লাবের নেশার পর বোধহয় আবাসিক হোটেলটাতেই বিশ্রাম নেয়া হয় ছেলেমেয়েদের! দারুণ ব্যবস্থা!

ভেতরে ঢুকল শৌভিক। এখন রাত দশটা পনেরো বাজে। ক্লাবে ভিড়। একপাশে অ্যালকোহলের পসরা সাজানো। ছেলেমেয়েরা নাচছে, গাইছে, একে অপরের ওপর ঢলে পড়ছে। শৌভিক ঢুকতে গিয়ে বাঁধা পেল- নাম এন্ট্রি করে ঢুকতে হবে। সে তার নাম লিখল জাহিদ হাসান৷ মনে মনে খুশি হলো সিস্টেমটা দেখে। এখান থেকে তথ্য পাওয়া যেতে পারে। সে ম্যানেজারকে বলল, “খাতাটা একটু দেখা যাবে?”

“নাহ। নিয়ম নেই।”

“একটু দেখব৷ জরুরি দরকার।”

“কী দরকার শুনি?”

শৌভিক গলা নামিয়ে বলল, “আমার বন্ধু কিছুদিন আগে এসেছিল আমার বৌ কে নিয়ে। বাড়িতে মিথ্যে বলে এসেছিল ও। আমি পেছন থেকে দেখেছি৷ এখন এটা দেখলে শিওর হতে পারতাম।”

লোকটা বিরক্ত হয়ে খাতাটা সামনে থেকে সরিয়ে ফেলে বলল, “হবে না। স্যরি!”

শৌভিক চলে গেল ভেতরে। নৃত্যরত ছেলেমেয়ে এড়িয়ে কোণার একটা টেবিলে গিয়ে বসল। একটু পরেই এক কর্মচারী ছোকরা এসে বলল, “স্যার, খাতাটা আপনারে আমি দেখাইতে পারি।” বলে তেলতেলে হাসি দিল। শৌভিক ইঙ্গিত বুঝে ছেলেটার হাতে পাঁচশত টাকা গুঁজে দিল। একটু পরেই ছেলেটা ফিরল। হাতে খাতা৷ বলল, “জলদি দেখেন।”

শৌভিক দ্রুত হাতে গত তিন মাসের পৃষ্ঠাগুলোর ছবি তুলে নিল৷ এত লোক আসে এখানে! এই ডাটা থেকে কী পাওয়া যাবে কে জানে! আবার কিছু পাওয়া যেতেও পারে৷ তারচেয়ে বড় কথা সবাই কি নিজের নাম লেখে এখানে?

সে ছেলেটাকে রাকিবের ছবি দেখিয়ে বলল, “একে চেনো?”

ছেলেটা ঠোঁট উল্টে বলল, “কত মানুষ আসে, সবাইরে কি আর চিনা যায়। তয় সে আসছে এইটা কইতে পারি। মুখ চিনা।”

“ওর সাথে আর কে আসত জানো?”

“নাহ।”

ছোকরাটা চলে যেতেই চিন্তায় ডুব দিল শৌভিক৷ চারপাশে ঘুরেফিরে দেখতে লাগল তার চোখদুটো। হঠাৎ তার সামনে একটা কমবয়সী মেয়ে এসে বসল। বোধহয় কলেজে পড়ে। উগ্র সাজগোজ, সংক্ষিপ্ত পোশাক। মেয়েটা ওর দিকে চেয়ে ভুরু তুলে বলল, “তুমি নতুন এসেছ?”

শৌভিক যথাসম্ভব মার্জিত ভঙ্গিতে বলল, “হ্যাঁ।”

“তাই তো বলি! আমি সব্বাইকে চিনি। তোমাকে নতুুন মনে হলো তাই আলাপ করতে চলে এলাম। আমি খুব মিশুক বুঝলে! আমার মতো কেউ আলাপ করতে আসবে না।” মেয়েটার কথাবার্তার ভঙ্গি অতিরিক্ত মাত্রায় ন্যাকামিতে পরিপূর্ণ।

“তাই বুঝি! তুমি কোন ক্লাসে পড়ো?”

“এ্যাই! তুমি কি টিচার? তোমাকে দেখে টিচার টিচার মনে হচ্ছে। দ্যাখো পড়াশুনার কথা বলবে না। ওসব আনরোমান্টিক বোরিং কথাবার্তা!”

শৌভিক একটু চমকাল। মেয়েটা বুঝল কী করে সে টিচার? বোধহয় শিক্ষকদের চেহারায় তেমন ছাপ থেকে যায়। মেয়েটা তার ছাত্রীর মতোই। অথচ কেমন করে কথা বলছে! তাও আবার তুমি করে! সে বলল, “আচ্ছা বলব না যাও। তুমি কি প্রতিদিন আসো?”

“নাহ! তবে সপ্তাহে একদিন না আসলে আমার চলেই না। আম্মু পাপা ঝামেলা না করলে প্রত্যেকদিন আসতাম জানো! ওরা দুজন কিচ্ছু বুঝতে চায় না। এই বয়সে একটু মাস্তি না করলে চলে বলো?”

“তারা সপ্তাহে একদিন আসতে দেয়?”

মেয়েটা খিলখিল করে হেসে বলল, “ধুর! আমি তো মিথ্যা কথা বলে আসি। আজকে বলেছি সারার জন্মদিন। একেক দিন একেক বাহানা বানাতে হয়। আমি আবার বাহানা এক্সপার্ট! যদিও ওরা বোঝে, কিন্তু আমাকে আটকাতে পারলে তো!”

শৌভিকের ভারি আফসোস হলো ওর বাবা মায়ের জন্য। ঠিকভাবে ছেলেমেয়ে মানুষ না করতে পারলে এমন তো হবেই। সে বলল, “আচ্ছা আমার এক বন্ধুকে খুঁজতে এসেছি, কিন্তু পাচ্ছি না৷ তুমি যে বললে সবাইকে চেনো, ওকে দেখো তো চিনতে পারো কি না?” শৌভিক মেয়েটাকে রাকিবের ছবি দেখাল।

মেয়েটা দেখেই বলল, “চিনি। আমার পেছনেও ঘুরেছে কয়েকদিন। আমার টাইপ না।”

“ওহ! ওর সাথে কার বেশি খাতির ছিল?”

মেয়েটা হাত উল্টে বলল, “কে জানে! ও হ্যাঁ ওরই তো ফ্রেন্ড! উফফ কী হ্যান্ডসাম ছেলেটা!”

মেয়েটা কয়েক মুহূর্ত স্বপ্নের ঘোরে রইল। শৌভিকের ডাকে ঘোর ভাঙলে বলল, “তোমার বন্ধুর আরেকটা বন্ধু আছে। খুব হ্যান্ডসাম। আমাকে পাত্তা দেয় না৷ একটা মেয়ে নিয়েই পড়ে থাকে। হোটেলেও যায় ওর সাথে জানো?”

“সেই ছেলেটা আজ এসেছে?”

“না গো…গত সপ্তাহেও দেখিনি। কোথায় যে গেল!”

“আর ও যে মেয়েটার সাথে থাকত সে?”

“না তাকেও দেখছি না। ভালো হয়েছে। ওই মেয়েকে দেখলে আমার গা জ্বলে!”

“ওহ!”

“এ্যাই তুমি কি আমার সাথে নাচবে? অনেক বকবক করেছ। আমার মাথাটা একদম খেয়ে ফেলেছ। এসো নাচবে। আমাকে একটা ড্রিঙ্কও কিনে দেবে।”

শৌভিক ছাড়ানোর চেষ্টা করছে, এদিকে মেয়েটা নাছোড়বান্দা। হাত ধরে টানাটানি শুরু করেছে। শৌভিক অগত্যা উঠল। মেয়েটাকে একটা ড্রিঙ্ক কিনে দিয়ে বলল, “অন্য কারো সাথে নাচো প্লিজ।”

মেয়েটা আর জোরাজুরি করল না। ওর কানের কাছে মুখ এনে বলল, “বুঝেছি। তোমার গার্লফ্রেন্ড আসবে তাই না? ওকে! এনজয়!”

শৌভিক নিজের জায়গায় ফিরে এলো। গার্লফ্রেন্ড শব্দটা শুনেই অরণির কথা মনে পড়েছে। অরণিও তো কলেজে পড়ে। এরকম কিছুর সাথে আবার জড়িয়ে না যায়! অবশ্য মেয়েটা এই ধরণের নয়। তবু একবার সাবধান করে দেয়া দরকার। শৌভিক চলে গেল তুলনামূলক কম শব্দের জায়গায়। ফোন করল অরণিকে।

শৌভিকের সারাটা জীবন কেটেছে একা একা। এবার এই মাঝবয়সে এসে প্রেমে পড়ার মতো আদিখ্যেতা তাকে মানায় না। তাও কেমন করে যেন অরণি নামক বাচ্চা মেয়েটার সাথে জুড়ে গেল! আগ্রহ অরণিরই ছিল৷ বয়সে ছোট হলেও অনেক ম্যাচিউরড। শৌভিককে পাগলের মতো ভালোবাসে। সেও মেয়েটাকে এড়াতে পারে না। দেখা সাক্ষাৎ কম হলেও ফোনে কথা হয় নিয়মিত। তারা অবশ্য অঘোষিত প্রেমিক প্রেমিকা। শৌভিক কখনো অরণিকে তার ভালো লাগার কথা জানায়নি।

অরণি ফোন ধরে বলল, “হঠাৎ মেঘ না চাইতেই জল?”

“হুম। কী করো?”

“পড়ছি। কালকে বায়োলজি ফার্স্ট পেপার পরীক্ষা। হিউজ সিলেবাস!”

“একটা কথা জিজ্ঞেস করতে ফোন করলাম।”

“বলুন জনাব। আমি তো জানতামই শুধু আমার খবর নিতে আপনি ফোন করবেন না।”

“কথাটা আপনার খবর সম্পর্কিতই ম্যাডাম! তুমি কি কোনো নাইট ক্লাবে বা এরকম কোথায় গেছ কখনো?”

অরণি হেসে বলল, “কেন বলোতো? আমাকে দেখে সেরকম মনে হয়?”

“না। তাও নিশ্চিত হতে চাইছি।”

“না যাই না। আমি কি পাগল নাকি? আমার বন্ধুরা কেউই যায় না। ক্লাসের একটা মেয়ে যেত। তাও যা কেলেঙ্কারী!”

“কী হয়েছিল?”

“আরে ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে যেত। মাঝে মাঝে রাত কাটাত। কে যেন সেসব ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। ও তো আর অত টাকা দিতে পারেনি। তারপর সেই ভিডিওগুলো ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিয়েছিল। মেয়েটা না পেরে সুইসাইড করতে গিয়েছিল। অবশ্য করতে পারেনি। অনেক সাপোর্ট পেয়েছে সবার৷ এখন সারভাইভ করে গেছে।”

শৌভিকের মাথায় হঠাৎই খেলে গেল শব্দটা- ব্ল্যাকমেইল! ক্লাবে আসা আর টাকা কামানোর সাথে এই শব্দটাই সবচেয়ে বেশি এপ্রোপ্রিয়েট!

অরণি আরও কী কী যেন বলছিল। শৌভিকের কানে গেল না কিছু। ফোন রাখার আগে বলল, “থ্যাংক ইউ অরণি! আই লাভ ইউ!”

ওপাশে অরণি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে রইল। সে এখনো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না শৌভিক সত্যি তাকে ওই কথাটা বলেছে!

সকালে উঠেই সবার আগে মোবাইল চেক করল শৌভিক। এসেছে জিকোর মেসেজ!

শৌভিক গতকালকের ক্লাবের রেজিস্ট্রি খাতার ছবিগুলো ভালোমতো দেখেছে। রাকিবের নাম আছে যেখান থেকে তার আশেপাশের নামগুলো জিকোকে পাঠিয়েছে। যদি সেখানে তাদের ইউনিভার্সিটির কেউ থাকে তাহলে যেন সে জানায়। জিকো বলেছে রাতেই দেখবে। সকালে তাই মেসেজটা দেখে খুশি হলো শৌভিক। কিছু যেন পায় এই দোয়া করতে করতে মেসেজটা ওপেন করল।

ইউনিভার্সিটির দুজনের নাম পেয়েছি স্যার৷ ওরা একই সাবজেক্টে পড়ে- শাহেদ আরেফিন আর প্রীতি সাহা।

শৌভিক মুচকি হাসল। গতকালকের মেয়েটার বক্তব্য অনুসারে রাকিবের হ্যান্ডসাম বন্ধু তার গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ক্লাবে যায়৷ এটাই কি সে? খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে। সে জিকোকো ফোন করে বলল শাহেদ আর প্রীতির সব খবর তাকে দিতে।

এবার শিফার পাঠানো ছবিগুলো নিয়ে বসতে হবে। গতকাল সময়ই পাওয়া যায়নি।

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here