বিধবা পর্ব -৫

0
1748

♥ বিধবা ♠
Writer : Nabila Ishq
Part : 5
সকালে….
কখন থেকে ফোনটা বেজেই চলেছে কিন্তু ইম্রেত মুখের উপর বালিশ গুজে উপুর হয়ে শুয়ে পড়লো।
এক রুম থেকে অন্য রুমে ইম্রেতের ফোনের আওয়াজ চলে যাচ্ছে। ফোনটা কেউ রিছিভ করছে না। তাও নাগাতার বেজেই চলেছে।
ইম্রেতের বড় আপু শিলা রাগে গজগজ করতে করতে ইম্রেত এর রুম এ আসলো।
শিলা : বাহ নিজের প্রব্লেম হচ্ছে ফোনের আওয়াজ এ তাই কানে বালিশ গুজেছে।আর আমাদের কি প্রব্লেম হচ্ছে না।
একে তো আমি [ ইম্রেতের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো তখনই আবার ফোনটা বেজে উঠলো ]
শিলা ফোনের স্ক্রিনে না দেখেই রিছিভ করলো। রিছিভ করতেই কেউ বলে উঠলো…
[ ইংরেজি তে বলেছে আমি বংলায় ট্রান্সফার করেছি ]
:_– বেবি কি হয়েছে তোমার। ৩ দিন ধরে কল করছি তুমি কলটা কেনো উঠাচ্ছো না।
আমি তোমাকে অনেক মিস করছি।
শিলা স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলো… Noona [ 1sT পেরা ] নামের কেউ কল করেছে।
কলটা কেটে দিলো।
কল হিস্ট্রি চেক করে শিলা হতোবাক😱
আরো অনেক গুলি নাম বেবি, [ 2nd পেরা ] এমন আরো।
আবারো কল করছে বাট এখন লিখা লিলি [ most পেরা ] শিলা রিছিভ করতেই মেয়েটা বলে উঠলো…
;— This is too much ইম্রেত। ৩ দিন ধরে কল নাই মেসেজ নাই।আবার তোমার বাসায় গিয়ে জানলাম তুমি BD তে। আমি অনেক আপ্সেট আছি বেবি।
শিলার মাথা ঘুরার মতো অবস্থা। ফোনটা কেটে পাশের টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি সজা ইম্রেত এর গায়ে ঢেলে দিলো।
ইম্রেত : কে, কে, কে [ লাফিয়ে উঠে ]
উফফ আপু তুই?
শিলা ইম্রেত এর কান ধরে ফোন দেখিয়ে বলে উঠালো “”এগুলি কে??
ইম্রেত : যাস্ট ফান আপি।সো চিল
আর বেশি বকবক না করে কফি পাঠা ঘুমের বাস তো দিলি।
শিলা : তোকে তো আমি পরে দেখছি। [ শিলা হনহন করে চলে গেলো ]
ইম্রেত ফ্রেস হয়ে কফি নিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিচে তাকাতেই দেখে ইছমি দাঁড়িয়ে। 😘
একটু মুচকি হেসে ইছমির দিক তকিয়ে আছে….
“তোমার ওই অদ্ভুত চাহনি পাগল করে আমায়….
নেশা লাগিয়ে গায়ে শিহরণ দিয়ে যায়।”
ইছমি আনমোনে দাঁড়িয়ে দূর আকশের সকালের পাখির আনাগোনা দেখছে ।
আর ইম্রেত তার ভাবনায়…
“”সব সপ্ন গেথেছি আমি তোমার জন্য , আমার এই মনের তাজমহলে। ”
ইছমির মা ডাকাতে ইছমি রুম এ চলে যায়।
আর ইম্রেত আকাশে তাকিয়ে নিজের মায়াপরীর ভাবনায় বিভর হয়ে যায়।
তোমাকে আমি পেতে চাই আমার মতো করে, যেমন সাগরের নিল ঢেউ খুজে নিয়েছে তার মতো করে।
ইম্রেত কফি খেতে খেতে ড্রইং রুম এ গিয়ে দেখে তার বাবা নিউছপেপার পড়ছে।
ইম্রেত : গূড মর্নিং ডেড।
বাবা : গুড মর্নিং। রেডি হয়ে নে একটা ইম্পরট্যান্ট মিটিং আছে।
ইম্রেত : ইয়াহ
আজা সারাটা দিন ইছমির খুবি বাজে গেছে। কলেজের ছেলে গুলি টাচ করতে চেয়েছিলো তার উপর নংরা language।
ইছমি বাসায় ফিরে অনেকটা সময় কাদে।
জিবনে কিছুই পেলো না মেয়েটা।যেই বয়সে মা_বাবার সাথে খেলে পার করার কথা সেই বয়সটা সে #বিধবা শুনে কাটাচ্ছে।
আর পারছেনা এই কঠর প্রথিবীতে বেচে থাকতে। কেনো অন্যদের মতো একটা সুন্দর জীবন পেলো না সে। ইছমির সবসময় ই নিজেকে একা একা লাগে। তার মা_বাবার কথা অনেক মনে পরছে আজ।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিক তাকিয়ে ভাবছে ইছমি….
[ চোখের পানি বেয়ে পড়ছে ]
ইছমি : মা _বাবা তোমারা আমাকে ছেড়ে ভালো আছো তাই না। কিন্তু আমি যে ভালো নেই। জীবনে বেচে থাকার কোনো মানে তো আমি দেখছিনা।আর যে পারছি না, তোমাদের কাছে নিয়ে নাও না মা।
জানো সবাই বলে আমি এতিম,বাজে, বিধবা, আমার জন্যই নাকি তোমরা চলে গেছো। আমার কারনেই নাকি আমি বিধবা। সত্যি কি তাই মা। সবাই আমাকে খারাপ বাজে বলে।আমি তো খারাপ না কারো খারাপ ও চাই না তাও।
কেনো তোমাদের রাজকন্যা হয়ে জীবনটা কাটাতে পারলাম না।কেনো বাবার প্রিন্সেস হতে পারলাম না।
আমি খারাপ তাই কেউ নেই আমার।এগুলি বলতে বলতে আর কাদতে কাদতে সেখানেই দেওয়ালে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
ইছমি সেই যে ঘুমিয়েছে এখনো উঠার নাম নেই রাত ১ টা বাজতে চলল।
কখন থেকে তুমুল ব্রিস্টি হচ্ছে। ইছমির ধিরে ধিরে ঘুম ভাংলো। ব্রিস্টি দেখে নিজেই হেসে দিলো।ব্রিস্টি কম বেশি সবার ই পছন্দ। আর ইছমির তো মনটাও খারাপ।
ইছমি : ব্রিস্টিতে ভিজলে মন অনেকটা হালকা লাগতো।
হুম এখন ১ টার বেশি বাজছে সবাই ঘুমিয়ে বিভর কেউ জেগে নেই। ব্রিস্টিতে ভিজলে প্রব্লেম কি? কেউ দেখতেও পাবে না।
ইছমি সময় নস্ট না করে ধিরে ধিরে দরজা খুলে আবার লক করে ছাদে চলে যায়।
নিজেই ৩ _৪ টা লাফ মেরে ভিজতে লাগলো ইছমির হাসি জেনো মুখ থেকে যাচ্ছেই না। আকাশের উপর মুখ করে চোখ দুটি বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে।
এতো দুক্ষ সব মনে হচ্ছে ব্রিস্টির পানির সাথে মিলিয়ে যাচ্ছে।
ইম্রেত কখন থেকে লেপ্টপ এ কাজ করছে।
হঠাত আশেপাশে হাত দিয়ে ফোন খুজছে বাট পাচ্ছে না।কই রাখলাম এখনেই তো ছিলো।
কিছুক্ষন খুজে মনে পড়লো সাফিয়ার সাথে ছাদে খেলেছিলো evening এর সময়।হয়তো ছাদেই। এখন না সকালে গিয়েই আনবো। বাট ব্রিস্টি পরছে আমি তো সাইডে রেখেছিলাম যদি ভিজে যায়।
ইম্রেত কিছু না ভেবে উঠে দরজা খুলে উপড়ে গেলো। গিয়ে ছাদের দরজা খুলতে ঠান্ডা বাতাস আর ছিটে ছিটে পানি ইম্রেত এর গায়ে শিহরণ দিয়ে গেলো।
ইম্রেত নিজেকে গুটিয়ে বলে উঠলো “” শীত চলে আসছে ” সাইড দিয়ে গিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো ৩৪ টা কল। আর ফোনটা এখনো বেচে আছে।
ইম্রেত ফোনটা নিয়ে হাটা ধরলো তখনি নুপুরের আওয়াজ আসলো অন্যপাশ থেকে।এতো রাত্রে ছাদে কে থাকবে??
ইম্রেত একটু উকি দিতেই আশেপাশের আবছা আলোতে দেখতে পেলো….
ইছমিকে সম্পুর্ন ভেজা শরিরে কালো জামা পড়ে পেচানো। আকাশের দিক মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। ইছমির গায়ের থেকে পানি গুলি টপটপ করে নিচে পড়ছে আর এক অদ্ভুত আওয়াজ করছে।
ইম্রেতের মনে ঝড় বইছে তুমুল ঝড়। না পাড়ছে চলে যেতে না পাড়ছে কাছে যেতে।
ইম্রেত সাথে সাথে নিজের হাত দুটি মুঠ করে মুখ খিচে চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শাস নিলো।
ইম্রেত নিজে নিজেই বলে উঠলো….
কানট্রল ইম্রেত.. কানট্রল।
তুই কিছুই দেখিস নি। গুড পা বেক কর।
কিন্তু ইম্রেত সেখান থেকে এক পা ও বেক করতে পারছে না বরং মুগ্ধকর চাহনিতে দেখছে ইছমিকে।সে যে পারছে না নিজেকে কানট্রল রাখতে। ইম্রেত না চাওয়া সত্তেও একপা দু পা করে এগিয়ে যাচ্ছে ইছমির দিক। ইছমির পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে ইছমিকে।
ইছমি কারো ভারি নিশাস টের পেয়ে পিছনে তাকিয়ে একধরনের ভয় পেয়ে যায়।
চোখ গুলি বড় বড় করে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে।
ইম্রেত নিজের হাতের মুঠি শক্ত করে ধরে নিজেকে শান্তনা দিচ্ছে।
ইছমি নিজেকে একবার দেখে শরম পেয়ে যায়। তাই কিছু না বলেই ইম্রেত এর সামনে থেকে সরে যায়। প্রচন্ড জড়ে ব্রিস্টি বইছে সাথে ঠান্ডা বাতাস। আর তার সাথে ইম্রেতের মনে ঝড়। সেই ঝড় ইছমিকে কাছে পেতে চাইছে। এই ঝড় শুধু ইছমি থামাতে পাড়বে।
ইছমি পা বাড়িয়ে সরে যায় দরজা টপকিয়ে যাবে তখনি হাতে টান অনুভব করে।
ইছমির মনে একধরণের ধুপ করে উঠে।
কোনো পুরুষ প্রথম তাকে স্পর্শ করেছে। তার হাত ধরেছে। যেটাতে ইছমির সম্পুর্ন শরিরে এক ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেলো।
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here