বিধবা পর্ব -১০

0
1198

♥ বিধবা ♠
Writer : Nabila Ishq
Part : 10
কিছুক্ষন পর গাড়িটা একটা বড় পানির বিচ এর সামনে থামলো।
ইছমি অবাক হয়ে বলল…
” এখানে তো আসার কথা ছিলো না।
ইম্রেত মুচকি হেসে ইছমির হাত ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে কাউকে ইশারায় ডাকলো।
একটা ছেলে এসে ইম্রেতের হাতে একটা পট্টি দিলো। ইম্রেত সেই পট্টি দিয়ে ইছমির চোখ বেধে দিলো। ইছমি ঘাবরিয়ে বলল…..
” ক…কি করছেন?
ইম্রেত বলে উঠলো….
” হুসসস আমার হাত ধরে চলো।
“………..
” ইউ কেন ট্রাস্ট মি সুইটি?
ইছমি মুচকি হেসে ইম্রেতের হাত ধরে সামনে এগুতে লাগলো। ইম্রেত বিচের মাঝ বরাবর ইছমিকে এনে ধিরে ধিরে চোখের পট্টি খুলে দিলো। ইছমি চোখ খুলে সামনে না তাকিয়ে ইম্রেতের দিক তাকালো। ইম্রেত মুচকি হেসে ভ্রু কুচকে সামনে তাকাতে বলল। ইছমি ও ধিরে ধিরে সামনে তাকিয়ে থম😨
ইছমি অবাক হয়ে ইম্রেতের দিক তাকালো। ইম্রেত ইছমির হাত ধরে আরেকটু সামনে নিয়ে গেলো। ইছমি অবাক চোখে দেখছে সামনের দিক।
এতো সুন্দর বিচ ইছমি আগে দেখে নি। বিচটার সবচেয়ে আকর্ষনের পার্ট হচ্ছে রাত্রের মাঝে বিচে লাইটের মতো কিছু জলছে দেখে। পানির মাঝ বরাবর একটা বিশাল বাড়ির মতো যেটা ডেকোরেট করা। জার লাইটের আলোয় বিচের পানি গুলি মিটি মিটি জলছে।
ইছমি মুখ ভর্তি হাসি নিয়ে ইম্রেতের দিক তাকালো তারপর আবার বিচের দিক তাকিয়ে লাফালাফি করছে আর বলছে…
” মাশাল্লাহ ইম্রেত দেখেন কি সুন্দর মাছ। 😊কি সুন্দর বিচের পানি। আর ওই যে বাড়িটা কি সুন্দর ডেকোরেট করা।
ইছমি ইম্রেতের হাত ধরে লাফাচ্ছে আর হাসছে। আর সেই আকর্ষন উপভগ করছে।
ইম্রেত বেচারা হেবলার মতো ইছমির রিয়াকশান দেখছে। এতো ছোটো একটা কারনে ইছমি খুশিতে আত্তহারা।
ইম্রেতের কানে বারবার কথাটা বারি খাচ্ছে ইছমির মুখে শুনা তার নাম “ইম্রেত ”
ইছমি ইম্রেতের হাত ধরে আরো টেনে সামনে নিয়ে গেলো পানির কাছা কাছি। ইম্রেতের হাত ছেরে পানি গুলি নারছে আর হাসছে খিল খিল করে। অনেক্ষন নিজেই পানি হাতাচ্ছিলো আর হাসছিলো দেন বলে উঠলো….
” আরেহ আপনিও এসে পানি ধরুন দেখুন কতো ভালো লাগছে।
ইম্রেত তো এখনো ইছমির হাসি মাখা মুখ দেখছে যেই হাসি দেখে সে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু সে কি পারবে ইছমিকে নিয়ে তার মনমত করে বাচতে। পারবে… না পারলে ও পারাবে কারন সে ইছমিকে ছাড়া নিজের অস্তিত্ব ভুলে গেছে।
ইছমি অনেক্ষণ যাবত নিজেই পানি হাতাচ্ছিলো হঠাত নিজের হাসির শব্দতেই তার ঘোর কাটলো। তারমানে সে এতোক্ষন হাসছিলো তাও মন খুলে। ইছমি ভেবেই মুচকি হেসে দিলো। কিছু পানি হাতে নিয়ে ইম্রেতের দিক ফিরে ইম্রেতের মুখে ছুরে মারলো।
ইম্রেতের ভাবনায় ছেদ পরে ইছমির হাতের ছুরা পানির আবেশে। ইম্রেতের দু পকেটে হাত দেওয়া ছিলো। সে ও ভাবেই দাঁড়িয়ে ভ্রু কুচকে ইছমির দিক তাকালো। ইছমি খিল খিল করে হেসে দিলো। ইছমির বাচ্চাদের মতো হাসি দেখে সে ও হেসে দিলো।
ইম্রেত ইছমির দিক এগুতে নিলে ইছমি দৌর দেওয়ার জন্য রেডি থাকে। দৌর দেওয়ার আগেই ইম্রেত বলল…
” স্টোপ স্টে দেয়ার। ডোন্ট মুভ ওকে।
ইছমি এক ঢোক গিলে ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে ইম্রেত ধিরু পায়ে ইছমির দিক আগাতে থাকে আর ইছমি তো ভয়ে কাপছে। ইম্রেত ইছমির সামনে আসতেই ইছমি চোখ বন্ধ করে ফেলে। ইম্রেত ইছমির ঘারের নিচে ধরে ইছমির মুখ ইম্রেতের দিক টেনে আনতেই ইছমি চোখ খিচে হাত মুঠি করে যথারীতি কাপাকাপি শুরু করে দেয়।
ইম্রেত ইছমির কাহিনী দেখে মুচকি হেসে দিয়। ইছমির মুখ নিজের মুখের সামনে এসে ধিরে ধিরে নিজের গালের সাথে ইছমির গাল লাগিয়ে দেয়। তাতে ইছমির গাল ও পানিতে ভিজে যায়। ইম্রেতের সেকেন্ড গাল দিয়ো ইছমির গালে ঘষে দিতে সেখানো ও পানি ছুয়ে যায়। ইছমি শুধু চোখ বুঝে হাত শক্ত করে ধরে জড়ে জড়ে সাশ নিচ্ছে।
ইম্রেত নিজের চোখ ও বন্ধ করে ইছমির নাকের সাথে নিজের নাক ঘষে দেয়।
এবার ইছমি ধিরে ধিরে চোখ খুলে ইম্রেতের চোখের দিক তাকায়। ইম্রেত নিজের কপাল ইছমির কপালে লাগিয়ে বলল…
” আজকে আমি গিফট দেবো। তেমনি তোমাকেও আমি যা বলবো তা দিতে হবে।
ইছমি মুচকি হেসে বলল..
” সত্যি আপনার সারপ্রাইজ গিফট অসম্ভব সুন্দর।
ইম্রেত ভ্রু কুচকে বলল…
” সারপ্রাইজ গিফট তো এখনো তোমায় দেই নি তো তুমি দেখলে কিভাবে?
” ও আমি ভেবেছিলাম এখানে এনে এতো সুন্দর প্লেস দেখানোর কথা বললেন।
ইম্রেত মুচকি হেসে ইছমিকে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকে। ইছমি ও পরম আবেশে মুখ লুকায়।
তখনি একটা ছেলে এসে বলল…
” ভাইয়া ১২ টা বাজতে মাত্র ২৫ মিনিট বাকি।
ইম্রেত ইশারা করে বলল চলে যেতে। ইছমি হতবাক হয়ে বলল…
” আস্তাগফিরুল্লাহ রাত ১২ টা বাজতে চলল। আল্লাহ মা_বাবা না জানি কতো টেনশান করছে। চলুন বাসায় যাই।
ইম্রেত ইছমির মুখ উচু করে ধরে কপালে একটা চুমু খেয়ে বলল…
” আমকে ট্রাস্ট করো না??
ইছমি মাথা নাড়িয়ে হ্যা জানালো।
ইম্রেত একটু হেসে বলল…
” তোমার কি মনে হয় আমি এতো কেয়ারলেস। রাত ১২ টা বাজতে চলল। আমি তোমায় এখানে অকারনে এনে দাড়া করিয়ে রাখবো।
ইছমি মুচকি হেসে ফেলল। কারন সে ইম্রেত কে অনেকটা ট্রাস্ট করে।
ইম্রেত ইছমির হাত ধরে বাম সাইডে এগিয়ে গেলো। সেখানে বোট দেখে ইছমি অবাক হলো। ইম্রেত ইছমির ফেস দেখে বলল…
” নো কুয়েশান যাস্ট চুপচাপ ফলো মি।
ইছমিও ইম্রেতের সাথে সাথে বোট এ উঠলো। বোট টা সেই মাঝ বরাবর পানির মদ্ধে বাড়িটার দিক আগোচ্ছে। বোট সামনে যাচ্ছে আর ইছমি অবাক হচ্ছে এতো সুন্দর করে সাজানো যে। যে কেই অবাক চোখে তাকিয়ে থাকবে। ইছমি প্রশ্নসুচক ভাবে ইম্রেতের দিক তাকালে ইম্রেত মুচকি হাসে।
ইছমির কৌতুহল, ভয়, নার্ভাসনেস সব একসাথে ভর করছে মনে। বোট টা বাড়ির সামনে আসতেই ইছমি দাঁড়িয়ে যায় কৌতুহল নিয়ে মাশাল্লাহ খুবি সুন্দর বাড়িটা। আর সাজানোতে আরো আকর্ষনি লাগছে।
ইম্রেত দাঁড়িয়ে ইছমির চোখে পট্টি লাগাতে গেলে ইছমি ইম্রেতের দিক তাকায়। ইম্রেত বলল…
” জাস্ট ট্রাস্ট মি সুইটি। ওকে
ইছমি চোখ বুঝে ফেলল আর ইম্রেত চোখ বেধে ইছমির হাত ধরে বোট থেকে নেমে বাড়ির সিড়ি দিয়ে উঠছে। ১২_১৪ টার মতো সিড়ি পেড়িয়ে দরজার সামনে দাড়ালো। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো ১২ টা বাজতে ৩ মিনিট বাকি।
৩ মিনিট পার করার জন্য ইম্রেত ইছমিকে নিজের দিক ঘুড়িয়ে আংগুল দেখিয়ে বলল…
” আচ্ছা বলো তোমার সামনে কয়টা আংগুল দেখালাম।
ইছমি খিলখিলিয়ে হেসে বলল….
” আমার চোখে পট্টি তো আমি কিভাবে বলবো কয়টা আংগুল?
” সুইটি সেটা আমি জানি। তুমি গেস করো।
” কিভাবে?
” তুমি করো নাহলে কিন্তু??
ইম্রেত ঘড়িতে দেখলো আর একমিনিট তাই ইছমিকে ঘুড়িয়ে দরজা খুললো। দরজা খুলে এক পা ভিতরে ঢুকালে সাথে সাথে ১২ টার আওয়াজ আসে জড়ে। আর সাথে সাথে বাড়ির লাইট জলে উঠলো বড় কোনো বেলুন ফাটানোড় আওয়াজ আসলো।
আর জড়ে অনেক মানুষের আওয়াজ আসলো…..
Happy Birthday ইছমি😊
ইম্রেত ছমির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল…
” হেপি বার্থডে সুইটি 😘
এখন কিন্তু তুমি ১৮। সো নো নিড টু কান্ট্রল মাইসেল্ফ 😘
ইছমির চোখ খুলে দিলে ইছমি সামনে তাকিলেই চোখ দিয়ে গড়্গড় করে পানি বেরিয়ে পরে। আর নিজেকে সামলাতে পারে না। পিছনে ঘুড়েই ইম্রেত কে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেদে দেয়। কারন সামনে ইছমি আর ইম্রেতের ফুল ফেমিলি সাথে আরো রিলেটিভছ রয়েছে। অনেক সুন্দর করে সাজানো আর সামনে বড় একটা কেক ছিলো সেখানে লেখা “” হেপি বার্থডে সুইটি “”
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here