♥ বিধবা ♠
{ The insane love }
Writer : Nabila Ishq
Part : 12
ইম্রেত ইছমির দিক কিছুক্ষন তাকিয়ে ইছমির কোলে মুখ গুজে বলল..
” গুড মর্নিং সুইটি?
” [ লজ্জা পেয়ে ] গুড মর্নিং
” ঘুম কেমন হলো আমায় ছাড়া?
“…….?
” আচ্ছা ব্রেকফাস্ট করেছো?
” উহুম।
” কলেজ আছে?
” হুম
” আচ্ছা তুমি বসো আমি ফ্রেস হয়ে আসি।
” ওকে।
ইম্রেত ফ্রেস হতে চলে গেলো। ইছমি বেড এ বসে পা নাচাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর ইম্রেত ওয়াস্রুমের দরজা হালকা ওপেন করে ইছমিকে আওয়াজ দিলো…
” সুইটি?
বেড এ তাওয়ালটা রাখা দিয়ে যাও তো?
ইছমি বেড থেকে নেমে তাওয়াল নিয়ে দরজার কাছে গিয়ে ইম্রেতের হাতে দিলো। ইম্রেত ইছমির হাত ধরে টান দেবে তখনি ইম্রেতের ফোনটা বেজে উঠে। ইছমি সেই সুজগে হাত ছাড়িয়ে নেয়। ইম্রেত মুচকি হেসে দেয়।
ইছমি ইম্রেতের ফোন হাতে নিয়ে দেখলো…
Calling from London
Noona
ইছমি ফোনটা আবার বেড এ রেখে দিলো। কিছুক্ষনপর আবার বেজে উঠলো। এবারো ইছমি ধরে নি। আবারো ফোন বেজে উঠলো। ইছমি কিছুক্ষন ফোনের দিক তাকিয়ে কাপা হাতে রিছিভ করলো। রিছিভ করতেই একটি মেয়েলি কন্ঠ ভেসে এলো…
” Hello… Ims
what’s wrong with you baby.
Why didn’t you pick up my phone.
You dont know how much i worried about you.
hello ims are you hearing me.
ইছমির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরলো। না চাওয়া স্ততেও বুক ফেটে কাদতে ইচ্ছে করছে ইছমির। ফোনটা কেটে দিলো। আবারো কল আসছে দেখে ইছমি সাইলেন্ট করে পাশে রেখে দিলো। ২ মিনিট পর টুং টুং আওয়াজ আসলো মেসেজ এর। ইছমি চোখ পুছে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো। নুনা নামের মেয়েটা মেসেজ করেছে। ইছমির বুকটা ফেটে যাচ্ছে । কেমন এক অজানা ভয় কাজ করছে। সে ইম্রেতকে অনেক ট্রাস্ট করে কিন্তু এভাবে ইম্রেতের সাথে কেউ কথা বললে যে ইছমির কষ্ট হয়। ইছমি মেসেজ গুলি দেখে তার চোখের পানি অনর্গল বেড়িয়ে আসছে। মেসেজ গুলি ছিলো…
{ বাংলায় লিখলাম সুবিধার ক্ষেত্রে }
” ইমছ বেবি…
তুমি তোমার প্রমিস রাখো নি। আমি অনেক রেগে আছি । বলেছিলে কয়েকদিনের মদ্ধে ফিরে এসে পুরো একদিন আমায় দেবে। কিন্তু আজ কতোদিন হয়ে যাচ্ছে তুমি লান্ডান বেক করছো না কেন।আবার ফোন ও পিক করছো না। আমি তোমাকে অনেক মিস করছি বেবি। প্লিজ ফোনটা রিছিভ করো কথা বলবো তোমার সাথে।
ইছমি আর পড়তে পারলো না। ফোনটা বেডে রেখে মুখ চেপে কেদে দিলো। ইম্রেত এর রুম থেকে বেড়িয়ে পাশে নিজের রুমে গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে হাউমাউ করে কেদে উঠে। এখন বড্ড কষ্ট লাগছে ইছমির। ইছমি নিজের জামা আক্রে ধরে মুখ চেপে কাদছে। আর সজ্জ হচ্ছে না এই যন্ত্রণা।
ইম্রেত দরজায় নক করছে সুইটি সুইটি বলে। ইছমি এবার আরো মুখ চেপে চিৎকার করে কাদতে লাগলো। জামাটা আকড়ে ধরে নিজেকে কান্ট্রল করে ওয়াস্রুম থেকে মুখে পানি দিলো। আয়নায় নিজেকে ঠিক করে নিলো। আস্তে গেট খুলে নিচে তাকিয়েই হাটা শুরু করলো। ইম্রেত অনেকটা অবাক হলো। বোট দিয়ে দুজনে বিচের এই পাশে চলে এলো। বাকিরা আরো দেড়িতে আসবে। ইম্রেত ইছমির দিক তাকিয়ে দেখে পুরো মুখ ফুলে আছে। আর লাল ও হয়ে আছে।
ইম্রেত ইছমির হাত ধরতে নিলে ইছমি আগেই হাটা শুরু করলো। ইম্রেত একটা সাশ ফেলে নিজেও ইছমির পিছু হাটতে লাগলো। গাড়ির কাছে এসে ইছমি আগেই বসে পরে। ইম্রেত ও বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়। ইছমি বাহিরে তাকিয়ে রয়েছে আকাশ প্রানে।
ইম্রেত রেগে আগুন হয়ে আছে। এতো পরিমান রাগ উঠেছে যে সে খুবি কষ্টে ধরে রেখেছে।
রেগে গাড়িটা জড়ে ড্রাইভ করতে লাগলো। ইছমি এতোটাই নিজের ভাবনায় বিভর যে আশেপাশে কি হচ্ছে তার কোনো হুস নেই। ইম্রেত গাড়ি সেই আগের রেস্টুরেন্টে পার্ক করলো। ইছমি বাহিরে তাকিয়েই বলল…
” আমার খিদে নেই। বাসায় যাবো আমি।
ইম্রেত কিছুই বলল না। ধপাশ করে গাড়ি থেকে নেমে ইছমকে টেনে নামায়। টানতে টানতে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে। দু’তলা আগে থেকেই খালি আজ। ইম্রেত মেনেজার কে বলল…
” প্রাইভেছি দরকার আমার। ছো আমি কল করলে খাবার পাঠিয়ে দিয়ো তার আগে নয়।
” ওকে স্যার।
ইম্রেত ইছমির হাত টেনে উপড়ে নিয়ে যাচ্ছে। ইছমিকে অভিমান আর ভয় সব ঝেকে ধরেছে। তার সাথে এমন আচরণ ইম্রেত আগে কখনি করে নি। তাই সে অবাক এর সাথে প্রচন্ড ভয় ও পাচ্ছে।
ইম্রেত দরজা ওপেন করে ইছমিকে ঢুকিয়ে দরজা লক করে দিলো। নিজের সার্ট এর দুটো বোতাম খুলে ফেলল। তারপর ইছমির দিক তাকিয়ে ইছমিকে টেনে দেওয়ালে ঘেষে দাড়া করালো। ইছমি ইম্রেতের চোখ দেখে রীতিমতো ভয়ে নিচে তাকিয়ে কাপছে।
ইম্রেত ইছমির কমড় জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলো। ইছমির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে আর ইম্রেতের হঠাত এমন বিহেভ এ আরো ভয় পেয়ে গেছে ইছমি।
নিজের জামা আকড়ে ধরে চোখ বন্ধ করে রয়েছে।
ইম্রেত ইছমিকে কিস করেই যাচ্ছে। নিজের রাগ কান্ট্রল করছে ইছমির ঠোঁটের মিষ্টি খেয়ে। ইছমি একটু দূরে যেতে চাইলে ইম্রেত ইছমির কমড় চেপে আরো নিজের সাথে চেপে ধরে। ইছমির সম্পুর্ণ শরীর ইম্রেতের সাথে মিশে আছে। আর ইম্রেত ইছমির কমড় জড়িয়ে নিজের মতো কিস করছে।
অনেকটা সময় কিস করে চোখ খুলে ধিরে ইছমির ঠোঁট ত্যাগ করলো ইম্রেত। ইছমি এখনো চোখ বুঝে নিজের জামা আকড়ে ধরে আছে।
নিজের ঠোঁট ইছমির হাত দিয়ে পুছলো। ইছমি কেপে উঠলো ইম্রেতের ঠোঁটে টাচ করে। ইম্রেতের ঠোট গরম হয়ে আছে সাথে লাল।
ইম্রেত দেওয়ালে হাত রেখে ইছমির মুখের দিক ঝুকে বলা শুরু করলো…
” দেখো সুইটি তুমি আমায় আমার খারাপ রুপটা দেখাতে বাদ্ধ করো না প্লিজ। কারন আমি চাই না তুমি সেই খারাপ রুপের সাথে পরিচিত হও। [ ঝাজালো কন্ঠে ]
ইছমি কেপে উঠে কেদেই দেয়। ইম্রেত ধমক দিয়ে বলল…
” একদম চুপ কাদবা না।
আমি তোমায় বলি নি যে আমি লান্ডান থেকে বড় হয়েছি। আর এটাও বলেছি আমি খারাপ ছিলাম তোমার কারনে ভালো হতে চাচ্ছি।
দেখো ইছমি আমার একদম পছন্দ না এই বেপারগুলি। অন্য মেয়েদের দু একটা মেসেজ আর কল দেখে তুমি কেদে তোমার মুখটা ফুলিয়ে ফেলেছো। আবার আমার সাথে কথা না বলার মতো সাহস দেখিয়েছো।
তুমি এতোটাও অবুঝ নও যে একজন লান্ডান বড় হওয়া ছেলের বিহেভ কেমন হতে পারে। আমি আগে কেমন ছিলাম তা তোমার দেখার বিষয় না। এখন আমি কেমন চলছি বা কেমন বিহেভ করছি সেটা তোমার বিষয়।
টিভিতে নায়ক নায়িকাদের কাহিনীর মতো
কিছু ভুলের জন্য আমাকে ভুল বুঝে আমার সাথে কথা না বলে একটা চিঠি দিয়ে আমার থেকে অনেক দূরে চলে যাবা। ২ বছর পর ফিরে আসবা।
বা আমার সাথে আর কথা বলবা না বা পালিয়ে বেরাবা। তাহলে এগুলি মাথা থেকে ঝেরে ফেলো।
আমাকে যদি কোনো মেয়ের সাথে বেডেও দেখো। তাহলে আগে আমার কাছে এক্সপ্লেন চাইবা। দেন ডিছাইড করবা। আর ঠিক এই বেপারগুলি তোমার খেত্রেও।
আমি লান্ডান এ অনেক মেয়েদের সাথে লিভ টুগেদার, ওয়ান নাইট স্টেন্ড এগুলি করেছি। আই নো দেট আমি খারাপ। বাট আমি ভালো হতে চাচ্ছি তো তোমার জন্য।
আজকের পর থেকে আমাকে ভুল বুঝার বা আমার সাথে কথা না বলার সাহস কখনি করবা না।আর করলে আমার খারাপ রুপটা দেখার সাহস ও রেখো। [ দেওয়ালে বারি মেরে ]
ইছমি কেপে উঠে। আর নিচে তাকিয়ে কাদতেই থাকে। ইম্রেত একটু শান্ত হয়।
ইছমির দু গাল ধরে উচু করে নিজের দিক তাকাতে বলে। নিজের হাত দিয়ে ইছমির চোখের পানি পুছে দিয়ে দু চোখে চুমু খায়। ইছমি নিজের জামা আকড়ে ধরে। ইম্রেত শান্ত গলায় বলল…
” সুইটি
আমি মরতে রাজি আছি কিন্তু তোমায় ছাড়তে রাজি নই।
ভালোবাসি তোমায় তোমার নিজের থেকে বেশি।
এবার ইছমি আরো জড়ে কেদে দেয়। ইম্রেত ইছমির কপালে চুমু খেয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। ইছমিও আলতো করে জড়িয়ে ধরে।
ইম্রেত ইছমির হাত ধরে চেয়ার টেনে বসিয়ে দেয়। মেনেজারকে কল করে বলল। খাবার পাঠিয়ে দিতে। ইছমি শরমে এখনো নিচে তাকিয়ে ওরানা পেচাচ্ছে হাতে আর খুলছে। চুল গুলি মুখের সামনে দুলছে। আর ইম্রেত তাকিয়ে আছে ইছমির দিক। ইম্রেত ভেবেই মুচকি হেসে দেয় রাগ কান্ট্রল করার ভালো ঔষধ আছে ইছমির কাছে তার জন্য। এতো রাগলে ইম্রেতের মাথা ঠিক থাকে না। অনেক খারাপ আর বাজে ভাষা ইউছ করে। বাট আজ তেমন কিছুই সে করেনি।
ওয়েটার খাবার এনে রেখে গেলো। ইম্রেত বলে উঠলো…
” খাবার বারো?
ইছমি খাবার বেরে ইম্রেতের সামনে দিলো। আরেক প্লেট বারতে যাবে তখনি ইম্রেত বারন করলো। ইছমি চুপ হয়ে তাকিয়ে আছে ইম্রেতের দিক। ইম্রেত খাবার নিজের প্লেটে মেখে হাত দিয়ে ইছমির মুখের সামনে ধরে বলল…
” হা করো?
ইছমি একবার ইম্রেতের দিক তাকাচ্ছে আরেকবার খাবারের দিক। ইছমির চোখ দিয়ে মনে হয় পানি পড়বে। ইম্রেত বলল
” সুইটি হা করো?
ইছমি হা করে খেয়ে নিলো। ইম্রেত হেসে বলে উঠলো…
” সরি আসোলে এক্সপেরিয়েন্স নেই তো কাউকে খাওয়ানোর তাই এমন হচ্ছে।
বাট তোমাকে খাওয়াতে খাওয়াতে অভ্যাস হয়ে যাবে।
ইছমি মুচকি হেসে ফেলল। ইম্রেত পরম আদরে খাইয়ে দিলো ইছমিকে। খাওয়া দাওয়া সেশ করে বিল মিটিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। বাসার সামনে পৌছিয়ে বলল…
” যাও বাসায় গিয়ে ফ্রেস হও। আমি একটু কাজে যাচ্ছি এসে কল করবো।
” কোথায় যাবেন এখন?
” একটু কাজ আছে তুমি যাও।
ইছমি নেমে ইম্রেতের দিক তাকিয়ে হাটা শুরু করলো। কিছুদুর গিয়ে আবার তাকালো ইম্রেতের দিক ইম্রেত ইশারা কিরলো লিফট এ উঠতে। ইছমি লিফট এ উঠলে ইম্রেত গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চালাচ্ছে। ব্লুটুথ কানে গুজে মেনেজার কল করলো…
” ইয়াহ মেনেজার?
” ইয়েস স্যার।
” আমার জন্য নিউ সিম রেডি করো। আর তোমার প্লাস অফিসের নাম্বার ও চেঞ্জ করে দিবা। যাতে লান্ডান থেকে কোনো কল না আসতে পারে।
” ওকে স্যার।
” এন্ড ওই ছেলেটার কি অবস্থা?
” স্যার ২ মাস আগে আর উঠতে পারবে না বেড থেকে।
” ওয়েল। ডু ইট ফাস্ট।
” ওকে স্যার।
ইম্রেত কল কেটে অফিস পৌছালো কিছু কাজ করতে হবে তাকে।
ইছমি নিজের ফ্লাটে পৌছিয়ে কলিংবেল বাজালে মহিনি গেট খুলে দিলো। মহিনি চোখটিপ মেরে ইছমিকে টিচ করছে আর ইছমি শরম পাচ্ছে। নিজের রুমে গিয়ে ইছমি ভাবনায় মগ্ন ভাবতেই খারাপ লাগছে ইছমির যে ইম্রেত লিভ টুগেদার করতো ছিঃ তারপর আমার জন্য ভালো তো হচ্ছে।
রেস্টুরেন্টে ঘটে যাওয়া ছিন মনে করতেই ইছমির গাল দুটো লাল হয়ে যাচ্ছে। এমন ভাবে কিস মানে অনেকটা জড় করেই করেছে ইম্রেত বাট তারপর ও অনেক ভালো আর শরম অনুভব হচ্ছে ইছমির।
চলবে……