নীড়
রেশমী রফিক
২৬।
লুৎফুন্নেসা কেবলই মাগরিবের নামাজ শেষ করেছেন। তখনও জায়নামাজ ছেড়ে উঠেননি। তার মোনাজাত শেষ হয়নি। প্রায় পনেরো-বিশ মিনিট হয়ে গেছে, সেই যে হাত তুলেছেন আল্লাহর দরবারে। এখনো সেভাবেই বসে আছেন। সাধারণত লম্বা মোনাজাত ধরেন না তিনি। স্বামী-সন্তান আর পরিবারকে ঘিরে তার যে চাওয়া-পাওয়া, তার সাথে ইহকাল আর পরকালের আযাব থেকে মুক্তি আর্জি জানিয়ে কিছু ধরাবাঁধা দোয়া আছে। সেগুলোই পড়েন। প্রতি ওয়াক্তে একবার করে দোয়া পড়লে আল্লাহ নিশ্চিত শুনবেন। কিন্তু আজ অনেকক্ষণ হয় মোনাজাত ছেড়ে উঠার নাম নেই। কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। শারার এখনো বাসায় ফেরেনি। ছেলে অফিস ছেড়ে সরাসরি বাসায় ফেরে। সন্ধ্যার পর কোথাও যাবার উদ্দেশ্য থাকলে বাসা থেকেই আবার বের হয়। কখনো যদি এমন হয়, সময়স্বল্পতা বা বিশেষ কোনো কারণে অফিস থেকেই কোথাও যাচ্ছে, তাহলে ফোন করে কথা বলে। কোথায় যাচ্ছে, ফিরতে কতক্ষণ লাগবে, আগেভাগেই জানিয়ে দেয় মাকে। এমনিতেও দিনে কয়েকবার মায়ের সাথে কথা হয় তার। কিন্তু আজ একবারও কথা হয়নি। দুপুর থেকেই ছেলে লাপাত্তা। লাঞ্চের সময় কল করেছিলেন। শারার রিসিভ করল না। কল কেটে মেসেজ পাঠাল। কী এক জরুরী মিটিং আছে। কল রিসিভ করা যাবে না। কোনো দরকার থাকলে যেন ভয়েজ মেসেজ দেন। লুৎফুন্নেসা মেসেজ দেননি। তেমন কোনো দরকার ছিল না আসলে। ছেলে দুপুরে খেয়েছে কি না সেই খোঁজ নিতে কল করেছিলেন। প্রতিদিন এটাই করেন। ছেলের সাথে কথা বলে এরপর নিজে খেতে বসেন। আজ কথা না বলেই খেতে হয়েছে। এমনটা আগে কখনো হয়নি, তা নয়। এজন্য অত গায়ে মাখাননি। এরপর দ্বিতীয় কল করলেন দুপুর আড়াইটার দিকে। তখনও শারার কল রিসিভ করেনি। এমনকি ফিরতি কলব্যাক করেনি। মেসেজও পাঠায়নি। তখনই মনের মধ্যে কী একটা কামড়ে ধরেছে। কখনো কাজের চাপে বা কোনো কারণে মায়ের সাথে কথা বলা সম্ভব না হলে পরবর্তীতে যখনই একটু ফুসরত মিলে, কল করে শারার। অল্পক্ষণের জন্য হলেও কথা বলে। জানে, তার মায়ের কেবলই কণ্ঠ শোনার পাঁয়তারা। জরুরী কল কিছু না। তাই ‘হ্যালো মা কেমন আছ? আমি আজকে ব্যস্ত আছি একটু। কথা বলতে পারছি না।’ এতটুকু বললেই হয়ে যায়। কিন্তু আজ সে একবারও কল ব্যাক করল না। মনের ভেতরটা কামড়ে উঠলেও অনেক কষ্টে তিনি নিজেকে সামলে রেখেছেন। মনকে প্রবোধ দিয়েছেন, এই তো একটু বাদেই কল আসবে। সেই কল আর আসেনি। বিকেল পাঁচটা নাগাদ অফিস থেকে বের হবার কথা শারারের। যতই কাজ থাকুক, পাঁচটায় অফিস থেকে বের হয়। গাড়িতে বসেই তখন মাকে কল করে সে। তিনিও জেনে যান, আধঘন্টার মধ্যে ছেলে ফিরছে।
আজ বিকেলে কল করল না শারার। বাসায়ও ফেরেনি। তখন থেকেই মনের ভেতর কু-ডাক দিচ্ছে। স্বামীকে কল করেছিলেন একবার। তিনি রিসিভ করেই বিরক্ত সুরে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে শুরু করলেন। ধমক দিয়ে বললেন, অত ছেলে ছেলে করে কী করবা? ফোন রাখ! এরপর তিনি জায়নামাজে বসে পড়েছেন। ধর্মকর্মে মনোযোগ দেবার পর থেকেই নিজের ভেতর এক ধরনের আলৌকিক ক্ষমতা অনুভব করেন। কোনো বিপদ ঘটলে আগেভাগেই টের পেয়ে যান। যেদিন শারারকে কোলে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন শফিকুল চৌধুরী, সেদিন ঠিক এরকম অনুভূত হয়েছিল। আরও কয়েকদিন অনুভব করেছিলেন কিছু একটা ঠিক নেই। আজও কীরকম মিশ্র একটা অনুভূতি হচ্ছে। মন বলছে, কিছু একটা ঠিক নেই। এদিকে ছেলে আর স্বামী কারওই কোনো খবর পাচ্ছেন না। শারার কল রিসিভ করছে না। ওর বাবা একবার শুধু বললেন, ছেলে তার সাথেই আছে। কী একটা কাজে আটকা পড়েছে। তবু মনকে শান্ত করতে পারছেন না। শরীর ঘেমেনেয়ে একাকার হচ্ছে। টেনশনে মাথা কাজ করছে না। এমতাবস্থায় আল্লাহর দরবারে হাত তোলা ছাড়া আর উপায় খুঁজে পাননি।
হঠাৎ দরজার কাছে একটা মেয়েলি কণ্ঠ শুনলেন। বাড়ির নতুন গৃহকর্মী, শিমু। এই বাড়ির সব গৃহকর্মীদের বলা হয়েছে, ভুমিকম্প হোক আর আগুন লাগুক যেটাই হোক না কেন, তিনি নামাজে দাঁড়ালে যেন কোনোরকম ডাকাডাকি বা বিরক্ত না করে। দরকার পড়লে অপেক্ষা করবে। তবু নামাজে ব্যাঘাত ঘটানো চলবে না। এই মেয়েটা অল্প কিছুদিন হয় এসেছে। এখনো বাড়ির নিয়মকানুন রপ্ত করে উঠতে পারেনি ঠিকঠাক। প্রায়ই কাজেকর্মে ভুল হচ্ছে। লুৎফুন্নেসা শুধরে দিচ্ছেন। কখনোবা অভিজ্ঞ গৃহকর্মীকে নির্দেশ দিচ্ছেন যেন ওকে সবকিছু শিখিয়ে-পড়িয়ে নেয়। আর নামাজে বিঘ্ন না ঘটানোর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে তিনি নিজেই। তবু এই মেয়ে দরজার কাছে এসে ডাকাডাকি করছে। প্রচণ্ড রাগ হলো তার। কোনোরকমে মোনাজাত শেষ করলেন। তবে জায়নামাজ ছেড়ে উঠলেন না। চড়া সুরে মেয়েটাকে কঠিন ধমক দিতে গিয়েও কী ভেবে নিজেকে সামলে নিলেন। মেজাজ খারাপ হবারই কথা। তবু সংসারের কোনোকিছুতেই মন বসানো সম্ভব না। শান্ত সুরে বললেন,
– কী হয়েছে? কিছু বলবি?
ওপাশ থেকে মেয়েটা মিনমিন করে বলল,
– খালাম্মা, ভাইজান আইছে বাসায়।
লুৎফুন্নেসার মন খুশিতে নেচে উঠল। দুই রাকআত শোকরানা নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়ালেন তিনি। তবে এই খুশি প্রকাশ করলেন না। গম্ভীর সুরে বললেন,
– ভাইজান আসছে তো আমাকে ডাকতেছিস কেন? দেখতেছিস না নামাজ পড়তেছি! দুয়ারিকে বল টেবিলে খাবার রেডি করতে। তার আগে যেন গিজারটা ছেড়ে দেয়। তোর ভাইজান গোসল করবে।
শিমু সরে গেল না। বলল,
– আপনারে বুলায়। ভাইজান বউ নিয়া আইছে। আপনারে দেহাইতে ডাকবার লাগছে।
লুৎফুন্নেসার মাথায় চট করে কথাটা ঢুকল না। তিনি বললেন,
– গিয়ে বল আমি নামাজ শেষ করে আসতেছি। তোর খালু ফিরে নাই?
– হ ফিরছে। ডরাইং রুমে ভাইজান, নতুন ভাবি, খালু হগলতে আছে। আপনারে বুলাইছে ওহানে।
– নতুন ভাবি আবার কে?
– ভাইজানের লগে একডা মাইয়া আইছে। বউয়ের লাহান শাড়ি পরা।
শোকরানা নামাজের নিয়ত মাত্রই মুখে চলে এসেছিল লুৎফুন্নেসার। শিমুর কথা শুনে মনোযোগ ছুটে গেল। তিনি হতভম্ব সুরে বললেন,
– কী বললি?
– ভাইজান বিয়া কইরা আনছে গো, খালাম্মা। খালু আপনারে বউ দেখতে বুলাইছে।
লুৎফুন্নেসা হতবুদ্ধি ভঙ্গিতে কিছুক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন। তখনও জায়নামাজে বসে আছেন। শিমু খানিক ইতস্তত ভঙ্গিতে আবার বলল,
– খালাম্মা, আপনেরে ত বুলাইছে খালু। জলদি যাইবার কইছে।
যতই জলদি হোক, তাড়া থাকুক, লুৎফুন্নেসার মধ্যে সেরকম প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না। তিনি ধীরেসুস্থে নামাজে মন দিলেন। নিয়ত করে দুই রাকআত শোকরানা নামাজ আদায় করলেন। ছেলে ফিরেছে, ছেলের বাবাও সহিসালামতে চলে এসেছেন বাসায়। এতটুকুই যথেষ্ট। বাকিটা এখন না ভাবলেও চলবে। মূলত শিমুর কথাকে তিনি খুব একটা গুরুত্ব দেননি। এই মেয়ে খুব বেশিদিন হয়নি এসেছে। এখনো ঢাকা শহরের হালচাল বুঝে উঠতে পারেনি। ফটর-ফটর কথা বলতেই থাকে আপনমনে। এই বাড়ির হালহকিতও এখনো ধরতে পারেনি।
ওকে আনা হয়েছে লুৎফুন্নেসার বাপের বাড়ি থেকে। তার বাপের বাড়ির গ্রামে এই মেয়ের বাড়ি। গরীব এক কৃষকের সন্তান। ঐ পরিবারে অনেকগুলো মুখ। সেই তুলনায় রুজি-রোজগার নেই বললেই চলে। শিমুর মা লুৎফুন্নেসার বাপের বাড়িতে কাজকর্ম করে। কাজ বলতে মূলত বৃদ্ধা মাকে দেখেশুনে রাখা। বার্ধক্যের কারণে তিনি খুব একটা হাঁটাচলা করতে পারেন না। আবার গ্রাম ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে থাকবেনও না। অনেক বছর ঢাকায় ছিলেন, ছেলের বাসায়। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে তার মন শহুরে বন্দিখানায় হাঁপিয়ে উঠছে, এই বাহানায় গত তিন বছর ধরে গ্রামে থাকছেন। রান্নাবান্না আর ঘরের কাজকর্ম করার জন্য লোক আছে। শিমুর মা দিনের বেলায় তার সাথেই থাকে সর্বক্ষণ। তাকে নিয়ে হাঁটতে বের হয়। ফাই-ফরমায়েশ খাটে। রাতে নিজ বাড়িতে ফিরলেও তার ছোট মেয়ে শিখাকে পাঠিয়ে দেন, বৃদ্ধার কাছে। মেঝেয় পাটি বিছিয়ে ঘুমোয় সে। তবে ধানের সময়ে শিমুর মাকে খুব কাজে লাগে। হেমন্তে ধান কাঁটার মৌসুম চলে। বিশাল পরিমাণ ধান ভানার কাজ অনেকাংশে সে করে। বিশ্বস্ত মানুষ, দায়িত্ব নিয়ে ধানের সমস্ত ঝুটঝামেলা সামাল দেয়। শিমুকে লুৎফুন্নেসার মা পাঠিয়েছেন। গরীব ঘরের সন্তান খেয়েপরে যদি কোনো বাসায় থাকতে পারে, মুশকিল অনেকটাই আসান হয়ে যাবে। অভাবটা অন্তত একটু হলেও ঘুচবে।
লুৎফুন্নেসা শুরুতে শিমুকে রাখতে চাননি বাসায়। প্রথমত, কাজের লোক এই মুহূর্তে তার দরকার নেই। এত বড় বাড়িতে মাত্র তিনজন মানুষ থাকেন তারা। স্বামী-স্ত্রী আর ছেলে। সমস্ত কাজকর্ম করার জন্য তিনজন ছুটা বুয়া আছে। তারা ঘড়ি ধরে নির্দিষ্ট সময়মতো সব কাজ সেরে ফেলে। আর একটা কিশোর ছেলে রাখা হয়েছে, শফিকুল সাহেবের ফুট-ফরমাশ খাটতে। কাজের মানুষ তো আর দরকার নেই। দ্বিতীয়ত, শিমুর বয়স প্রায় ষোল-সতের হবে। গ্রামের ডাঙ্গর মেয়ের শরীর এমনিতেই বাড়ন্ত থাকে। এই বয়সে মেয়েদের মনও ঘরে বসে না। এদিক-ওদিক উঁকিঝুঁকি দেবার অভ্যেস থাকে। আশপাশে জোয়ান মর্দ ছেলে দেখলে তার সাথে প্রেম করার পাঁয়তারা করে। তাছাড়া, বাসার ভেতর শারার আছে, ওর বাবা আছে। কখন কোনদিক থেকে অঘটন ঘটে যাবে, কে জানে।
তবু মায়ের অনুরোধ ফেলতে পারেননি। উপরোক্ত দুটি কারণ বাদে শিমুকে নিয়ে তার আপত্তি নেই। আল্লাহর রহমতে স্বামীর সংসারে বিলাসিতার অভাব হয়নি কোনোদিন। শফিকুল চৌধুরীর বংশ খানদানি। এদের পুর্বপুরুষ জমিদার ছিল এককালে। সেই প্রথা আজকের দিকে বিলুপ্ত হলেও সয়সম্পত্তির কমতি নেই। বাবা-দাদার সম্পত্তি ভাইবোনরা মিলে ভাগাভাগি করে নেবার পরও একেকজনের ভাগে যা পড়েছে, তার পরিমাপ করলে আজকালকার দিনে ঢাকা শহরে উচ্চবিত্তদের ধাপে সবার অবস্থান। তার মধ্যে শফিকুল সাহেবের স্থান সবথেকে উপরে। অন্য ভাইবোনদের মতো তিনি কেবল বাপের সম্পত্তি নিয়েই চুপচাপ বসে থাকেননি। বিচক্ষণতা আর দুরদর্শিতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছেন। পায়ের নিচের মাটি আরও শক্ত করেছেন। বাপ-দাদার সম্পত্তি যতটুকু পেয়েছিলেন, তা এখন ফুলে-ফেঁপে দ্বিগুণ হয়েছে। যে বাড়িতে লুৎফুন্নেসা স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন, সেখানের এক কোণে ‘শিমু’ নামের এই মেয়েটা বছরের পর বছর খেয়েপরে দিন কাটালেও গায়ে লাগবে না। এজন্য প্রায় প্রতি মাসেই দেখা যায়, গ্রামের বাড়ি থেকে কোনো না কোনো অভাবী লোকের আগমন ঘটে। হাতে মায়ের চিঠি। সেই চিঠিতে দুর্দশাগ্রস্ত বাহককে যথাসাধ্য সহায়তা করার নির্দেশ থাকে। এইসব সাহায্য বেশিরভাগই আর্থিক। লুৎফুন্নেসা এদেরকে সাহায্য করতে কোনোরকম কার্পন্য করেন না। আল্লাহর প্রতি আনুগত্য বাড়ার সাথে তাল মিলিয়ে দান-খয়রাতের হিসাবও অনেক বড় হয়েছে তার। শফিকুল চৌধুরীরও এই নিয়ে সেরকম মাথাব্যাথা থাকে না। দান-খয়রাতের বেলায় তারও হাত খোলা।
তাই বলে আস্ত একটা জলজ্যান্ত মেয়েকে কীভাবে তার মা পাঠালেন, লুৎফুন্নেসার বোধগম্য হয়নি। আপাতত মাকে কিছু বলেননি। কদিন থাকুক মেয়েটা। তারপর পরিচিত কারও বাসায় দিয়ে দেবেন। নয়তো বড়সড় একটা অঙ্কের টাকাসমেত শিমুকে গ্রামের বাড়িতে রেখে আসবেন। এত-এত মানুষের সাহায্য করেন তিনি। শিমুর বাবাকেও নাহয় পাকাপোক্ত কোনো রুজির ব্যাবস্থা করে দেয়া যাবে।
শোকরানা নামাজ শেষ করতে যতক্ষণ লাগল, শিমু ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। যেন তাকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই লুৎফুন্নেসাকে একা ফেলে এক পাও না নড়ে। নামাজ পড়তে যতক্ষণ লাগে, লাগুক। শুধু আজ না, প্রায়দিনই এই কাজটা সে করে। কোনো না কোনো অজুহাতে দরজার চৌকাঠে দাঁড়িয়ে থাকে। এই সময়টায় লুৎফুন্নেসা বিরক্ত হন। নামাজ পড়তে বসে মন সরে যায় অন্যদিকে। ঘাড়ের কাছটা শিরশির করে যে অদৃশ্য কেউ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কুরআন তিলাওয়াতের সময়ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। শিমুকে বারকয়েক মানাও করেছেন। কিন্তু এই মেয়ে সহজে কথা কানে ঢোকানোর পাত্র নয়। নিষেধ করার পরও বারবার এই কাজ করবে সে।
মোনাজাত ফেরানোর পর লুৎফুন্নেসার কপালে ভাঁজ পড়ল। তিনি বিরক্তির সুরে বললেন,
– এখানে হ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? কতবার না বলছি আমি যখন নামাজের ঘরে থাকব, তুই এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবি না। সমস্যা কী তোর?
শিমু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে মিনমিন সুরে বলল,
– আপনারে খালু ডাকে, হেল্লাই আইছি বুলাইতে।
– এই কথা তো শুনেছি! তোর খালুকে গিয়ে বল, আমি আসছি।
– আপনারে অহনই যাইবার কইছে। আরজেন।
(চলবে)