হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে পর্ব:২৬

0
811

উপন্যাস :হিয়ার মাঝে-লুকিয়ে।

কলমে: চন্দ্রা।

পর্ব:২৬

আমাদের মতো হতদরিদ্রদের বিলাসবহুল জীবন কল্পনা করা, গভীর নিদ্রায় মাঝপথে ভেঙে যাওয়া সুখ স্বপ্নের মতো।
সুখের স্বপ্ন দেখা নিষিদ্ধ আমাদের জন্য।

তাই? স্বপ্ন দেখতেন কি পয়সা লাগে অখিল দা?

তা লাগে না। তবে সুখের স্বপ্ন দেখতে সুস্থ একটা মন লাগে।আর দারিদ্র্যতার যাতাকলে পিষ্ট হয়ে মনটাই সুস্থ থাকে না। ধুঁকতে থাকে অবিরাম রাস্তার রোগা কুকুরদের মতো।
রেজিষ্ট্রার খাতাটা বন্ধ করে রেখে রিতি তাকায় অখিলেশের দিকে। মুখের উপর সবসময়ের জন্য মুমূর্ষু রোগীর মতো ভাব টা ধরে রাখে অখিলেশ।রিতির খুবই মায়া হয় লোকটার প্রতি।আজ সকল কর্মচারীদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছে।অখিলেশকে দিতেই ঘটলো বিপত্তি। টাকাগুলো এখনো দুজনের মাঝামাঝি টেবিলে পরে আছে। অখিল নিতে পারবে না টাকাটা।বোনের কাজ করে বেতন নিতে দ্বিধা তার।তার উপর এখনো মাস পেরোয়নি।

তাহলে টাকাটা নেবেন না আপনি? কঠিন কন্ঠে বলল রিতি।

এত কড়া সুরে ভয় পাই আমি বোনটি। হাসি ফোটে অখিলেশের মুখে।রিতি নিজের কাঠিন্য ধরে রাখতে অক্ষম হয়ে পড়ে।

ঠিক আছে তাহলে নিতে হবে না টাকা।এই অপরাধে আপনাকে আমি শাস্তি দেবো কঠিন শাস্তি।মুখে ছদ্ম গাম্ভীর্য বজায় রেখে বলে রিতি।অখিলেশ এবার সত্যিই একটু ভীত হয়।
শাস্তি পরিমানটা কি বলা যাবে?

অবশ্যই।দু মাসের মধ্যে আমি বুটিক হাউস, তাঁত কলের কোথাও উঁকিও দিতে পারবো না।সব দায়িত্ব আপনার। আমার বিজনেস পার্টনার এর বকেয়া সাক্ষর গুলো ও সব আপনাকে এনে দিতে হবে।
আঁতকে উঠে অখিলেশ।সে এই সবের কিছুই ভালো জানে না।

কিন্তু লঘু দোষে গুরুদন্ড হয়ে যাবে না বোনটি?

কোথায়?আমি তো গুরু দোষে লঘু দন্ড দিলাম অখিলদা।অবাক হওয়ার ভান করে রিতি। অখিলেশ আর কথা বাড়ায় না।এই মেয়ের কোনো মতি গতি ঠিক নেই আবার কি বলে বসে।বাড়িতে গিয়ে একটা ব্যাবস্থা করতে হবে। বিরূপাক্ষ বা দাদাভাইয়ের হাতে পায়ে ধরে যদি কিছু করা যায়।

ভালো কথা অখিলদা,, আপনার গ্রামের বাড়ির ঠিকানাটা তো জানলাম না এখনো।বলতে পারেন,,,গিয়ে উঠবো না।

অখিলেশ হাসে মনে মনে।মহাশয়ার অভিমান হয়েছে একটু একটু।
একটা কাগজে নিজের ঠিকানাটা লিখে দিয়ে অফিসরুম থেকে বেরিয়ে আসে অখিলেশ।

রিতি কাগজটা চোখের সামনে মেলে ধরে রহস্যময় হাসি হেসে নিজের ব্যাগে ভরে রাখে।
******
তাঁতকলে অফিস রুম বলে বিশেষ কোনো জায়গা নেই তবে।কাজের জায়গার পাশে একটা সাদামাঠা কাঠের টেবিলের একপাশে একটা চেয়ার ও অন্যপাশে বড়ো একটা বেঞ্চ
পেতে রাখা।রিতি বসেছে চেয়ার পেতে।এখানে বেশি সময় থাকে না সে কারন অধিকাংশ পুরুষ ছেলেরা কাজ করে এখানে।যতই মালকিন হোক আর যাই হোক সব পুরুষই তো ধোঁয়া তুলসীপাতা নয়।তাদের তাকানোর ধরনও একরকম না।রিতির অস্বস্তি লাগে খুব বেশিক্ষণ থাকতে।

হন্ত দন্ত হয়ে ছুটে এলো ইকবাল। কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম শার্টের হাতায় মুছে রিতির দিকে তাকিয়ে সালাম দিলো অনুগত হয়ে।রিতি সৌজন্য হেসে উত্তর দেয় সালামে।বসতে ইশারা করে।

ইকবাল ভাই আপনাকে আমার একটা অনুরোধ রাখতে হবে।

আপা এটা কি বলেন? আপনি হুকুম দেন শুধু।

ছিঃ ছিঃ ইকবাল ভাই হুকুম করবো ক্যানো?এটা কোনো অফিসিয়াল কাজ নয়।

আপনি বলেন কি করতে হবে?

পূর্ণ বয়স্ক চারজন মানুষের দুই মাসের জন্যে চারজন মানুষের কতটুকু চাল,ডাল,তেল ইত্যাদি খরচ হতে পারে বলে মনে হয় আপনার?
ধাঁধায় পড়ে ইকবাল।রিতি মৃদু হেসে জটিলতা থেকে মুক্তি দেয় ইকবালকে। অবশেষে হিসাব নিকাশ করে বেশ অনেক গুলো টাকা ইকবালের হাতে দিয়ে নিজের ব্যাগ থেকে একটা ঠিকানা লিখিত কাগজ দিয়ে বলে,,তাহলে ইকবাল ভাই,,,ভোরে ভোরে বেরিয়ে যাবেন আল্লাহর নাম নিয়ে।ওবাড়ির কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবেন অখিলেশ বাবু পাঠিয়েছেন।আর নগদ টাকা গুলো উনার মায়ের হাতে দিয়ে আসবেন।

ইকবাল সাদরে গ্রহণ করে রিতির দেওয়া দ্বায়িত্ব।কর্মে সে প্রভুভক্তই বটে।

*****
এই এদিকে শুনে যা তো একটু।

একপিস কেকে সবে একটুকরো কামড় বসিয়েছে রিতি।বাহাতের ছোট্ট পিরিচে ডান হাতের কেক টুকু রেখে হেঁটে আসে বিরূপাক্ষের কাছে।
বাঁধ সাধে জয়া,,,
কি এত জরুরি দরকার ভাই?মেয়টা দুপুরে খায়নি কিছু।আগে খেয়ে নে তো রিতি।

একবেলা না খেলে কেউ মরে না বৌদিদি।কিচেনের দরজা থেকে বলে বিরূপাক্ষ।

বালাই সাঁট,,মরা,ছাড়া বলতে নেই কাল সন্ধ্যেয়।ভীত হয় জয়া।

বৌদিদি আমি আসছি তো। পেছন ঘুরে বলে রিতি।
বিরূপাক্ষের পিছু পিছু হেঁটে উপরে উঠে যায় রিতি। নিজের ঘড়ে গিয়েই মোবাইলে কিছু একটা দেখায় রিতিকে।ভ্রুকুঁচকে ফোনটা নিজের হাতে নিয়ে দেখতে থাকে রিতি।

এসব কি ?আর আমাকে ক্যানো দ্যাখাচ্ছ?

তোকেই তো দেখাবো।তোরই তো বেশি দরকার।প্রমাণ চাইছিলি না?দ্যাখ ভালো করে, বনলতার কাছে আমার যে আংটি টা আছে তার পিক। ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে বিরূপাক্ষ।
রিতির ললাট মসৃন হয়।ফোনটা বাড়িয়ে ধরে বিরূপাক্ষের দিকে।

তুই এতটা হিংসুটে রিতি ?আমি ভাবতেও পারিনি।কি ভেবেছিস এইসব ভুল ভাল স্টেপ নিয়ে,ভুলভাল কথা বলে ওকে আমার থেকে দূরে রাখবি?তা আমি হতে দেবো না।তোর চোখের সামনে দিয়ে ওকে সামাজিক মর্যাদায় ঘড়ে তুলবো।দেখি তুই কি করিস।কুটনী মেয়ে কোথাকার?তোর কুটনামী বের করছি আমি,,

এহেনো কটু বাক্যে রিতির হয়তো দুঃখ কষ্টের সীমা অতিক্রম করার কথা কিন্তু সঠিক ভাবটা বোঝা গেলো না।ভেতরে ভেতরে যাই হোক উপরে সে ফিক করে হেসে উঠলো।বিরূপাক্ষের ক্রোধের আগুনে ঘি ঢাললো সেই হাসি টুকু।

কথার কি ছিরি তোমার রূপদা,,,বিদেশ থেকে আসলে, কোথায় কথায় কথায় ইংরেজি শব্দের ঝড় বৃষ্টি তুলবে তা না করে এই সব ভাষা ব্যবহার করছো? এঁদো গাঁয়ের অশিক্ষিত বৌদের মতো?
বিরূপাক্ষ ক্ষেপে ওঠে রিতির প্রগলভতায়।রিতির কানের পাশ দিয়ে নিজের বাহাতটা গলিয়ে দিয়ে গলার পেছন দিকটা চেপে ধরে। অত্যধিক জোরে এবং হুট করে ধরাতে রিতির সারা মাথাটা ব্যাথায় দপ দপ করে ওঠে।এতটা কাছে দুজনের অবস্থান যে, একেকজনের নিঃশ্বাস পরছে একেকজনের মুখে।

তোর মিথ্যা সন্দেহের জন্য আমার বনলতা কেঁদেছে।আমাকে ভূল বুঝছে আর তুই বত্রিশ দাঁত বের করে হাসছিস?
এতক্ষণে রিতির চোখের কার্নিশে জল থৈ থৈ করে উঠলো।বিরূপাক্ষ ভড়কে গেলো তা দেখে।

যাকে চেনো না,জানো না তার চোখের জল না দেখেও তুমি এতো উতলা?এত উদ্বেগ তোমার মধ্যে।আর যে লাঞ্ছিত,ব্যাথিত হয়ে সারাক্ষণ, সারাদিন হৃদয়ে রক্ত ঝড়িয়ে চলেছে তার বাঁধ ভাঙা কষ্টে তোমার কিছুই যায় আসে না? তুমি তো পাষাণ নও।ব্যাথা,বেদনা, অনুভূতি তো সবই আছে।তবে বঞ্চিতের খাতায় শুধু আমার নামটাই লিখে রেখেছো ক্যানো?কই আমি তো তোমাকে অবাঞ্চিত ভেবে বঞ্চিত করিনি রূপ দা। ভালোবেসেছি নিঃস্বার্থ ভাবে। তুমি আমাকে না ছুঁয়েও ছুঁড়ে ফেলেছো আস্তাকুঁড়ের ঝঞ্জাল ভেবে। কিন্তু আমিতো আবার উঠে দাঁড়িয়ে নিজেকে রূপে গুণে সাজিয়ে তুলেছি শুধু তোমার জন্য। ঠাকুরের পায়ের প্রসাদী ফুলটার মতো মাথায় তুলে নিয়েছি।
বিরূপাক্ষ হতবাকের শেষ সীমানায়। চোখের রাগত দৃষ্টি স্বাভাবিক হয়ে আসে। হাতের শক্ত বাঁধন আলগা হয়।রিতি নিজের ডান হাতটা দিয়ে বিরূপাক্ষের সদ্য উঁকি মারা ছোট ছোট দাঁড়ি গজানো বাম গালে রাখে,,,

বিশ্বাস হয়না না? একবার চেয়ে দেখো না কি চাই তোমার?একমুহুর্ত ও ভাববো না। তোমার পায়ে অর্পণ করবো আমার তিলে তিলে অতি যত্নে গড়ে তোলা সবকিছু।
রিতির হাতের শীতল পরশ,সাথে ফ্যাসফেসে ভাঙা গলার অমন আকুল আবেদন বিরূপাক্ষকে দিশেহারা,বাকহারা করে ফেলে।সাবধানী হয়ে ওঠে ভীষণ।দ্রুত রিতির কাঁধে রাখা হাতটা টেনে সরিয়ে নিয়ে দু পা পিছিয়ে যায়।

রিতি অশ্রুসিক্ত নয়নে সেদিকে তাকিয়ে থাকে মিনিট খানেক।তার রূপদা অপরাধীর মতো মাথা নত করে রেখেছে।বিরূপাক্ষে অবাক করে দিয়ে ঘড় কাঁপিয়ে পাগলের মত হেসে ওঠে রিতি।হাসতে হাসতে লুটোপুটি খায় বিছানায়,,,
বিরূপাক্ষ বুঝে উঠতে পারলো না হচ্ছেটা কি?

হাসি থামিয়ে উঠে দাঁড়ায় রিতি বিরূপাক্ষের বিভ্রান্তি ভরা মুখের পানে চেয়ে বললো,,ক্যামন দিলাম বলো?আমার অভিনয়কে আবার সত্যি ভেবে প্রেমের সাগরে হাবুডুবু ডুবু হাবু খেও না যেনো।আর একটা কথা কি জানো,,,আমার এই মাখন নরম পেলব দেহে যে প্রথম প্রেমের আঁচড় কাটবে সে তুমি নও।এত বছর ধরে যে নিজের অঙ্গনে যে সৌন্দর্যের প্রাসাদ গড়েছি একনিষ্ঠতা দিয়ে ।সে প্রাসাদ আদরে আবদারে তছনছ করার মানুষ টা তুমি নও রূপদা।

কি বলতে চাস তুই ?পুনরায় কঠিন কন্ঠে বলে বিরূপাক্ষ।হঠাৎ করেই রাহুলের মুখটা ভেসে ওঠে চোখে।

আমি যে জায়গাটা চাই সেটা শুধু আমার নামটাই জপবে।অন্য নারীর বসবাস সেখানে থাকবে না।

তুই থামবি রিতি?

আরে এত রাগ করো ক্যানো? বর হও আর ভাই হও যাই হও না ক্যানো সবার আগে তুমি আমার বড়োমার ছেলে।যাকে নিয়ে জীবন কাটাবে তাকে একটু বাজিয়ে দেখবো না?বড়োমার কত আদরের ধন তুমি, তোমাকে যার হাতে দেওয়া হবে তার বৈশিষ্ট্য জানবো না?

তাই বলে তুই ওকে হার্ট করে কথা বলবি?রাগ কমে আসে বিরূপাক্ষের।

অত হার্ট ফার্ট হয় ক্যানো তোমার লতা পাতা।আর হ্যা আমাকে সমঝে চলো একটু!তাকেও বলো আমাকে যেনো একটু পাত্তা দিয়ে চলে।
কারন আমি গদি না ছাড়লে কারো সাধ্য নেই বড়োমা, জেঠুকে মানিয়ে এখানে বসবে।সে তোমার সুন্দর বনের হিংস্র বাঘিনী হোক আর চঞ্চলা চপলা , শান্ত শিষ্ট হরিণী হোক।

ঠোঁটের কোনে ভুবন মোহিনী হাসির ছটা কমে না রিতির। বিরূপাক্ষ আর কিছু বলতে সাহস পায়না।কারণ সবটা বিচার বিশ্লেষণ করলে এটাই দাঁড়ায়,রিতি স সন্মানে বিরূপাক্ষকে ডিভোর্স না দিলে মা,বাবা কিছুতেই মেনে নেবে না বনলতাকে।
এতদিনে যে খামখেয়ালি পনা ছিলো এখন তা কিছুতেই সম্ভব নয়।মা বাবাকে কষ্ট দেওয়া আর সম্ভব নয় তার পক্ষে।তাতে যদি দু,দুটো বিয়ে করেও যদি চিরকুমার থাকতে হয় তো থাকবে।
ফাজিল মেয়ে কোথাকার,,কোনো ভদ্র পরিবারের মেয়েদের ভাষা যে এত অশ্লীল হয় জানা ছিলো না। দাঁতে দাঁত পিষে বলে বিরূপাক্ষ
রিতি রং চড়িয়ে হাসে,,দেখোনি তো এখন দেখে নাও মন প্রান ভরে, চোখ ভরে।হাসতে হাসতে বেরিয়ে যায় রিতি। কিন্তু দরজার ওপাশে গিয়ে সেই হাসিটা কি আদৌ ধরে রাখতে পারে?হয়তো না।
বিরূপাক্ষ বিমূর্তের মতো কিছু ক্ষন তাকিয়ে রয় সেদিক পানে। হাতের ফোনটাতে ডায়াল করে বিশেষ নম্বরে।ওপাশে হ্যালো বলতেই বুকের ভেতর মুচড়ে ওঠে বিরূপাক্ষের ,,,

তুমি কেঁদেছো বনলতা,,,

*****
ছাদের রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অখিলেশ। দৃষ্টি নিবদ্ধ আকাশপানে। ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে বেরোনো ধোঁয়ার কুণ্ডলী বাতাসে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে।আজ বিকেলে যখন বুটিক হাউস থেকে বাড়িতে ফিরছিলো তখন স্কুলের কাছা কাছি আসতেই মাঠ থেকে ডাক দেয় প্রদীপ।ব্যডমিন্টন খেলছিলো সমবয়সী ছেলেরা। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চোখ যায় মাঠের পেছন দিকের বড়ো পুকুর টার ঐ পাড়ে।বসত বাড়ি দেখা যায় কয়েক ঘড়।এদিকটা আগে দেখেনি অখিলেশ।সাজানো গোছানো ছিমছাম পরিবেশ। প্রদীপের কাছে জিজ্ঞেস করতেই ও বললো ওখানে নাকি দূর থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত যেসব স্কুল শিক্ষক আসেন তাঁরা ভাড়া করে থাকেন।জল,কল, বিদ্যুতের পাকা ব্যবস্থা রয়েছে। অখিলেশ দেখলো ছাদ থেকে কেউ একজন শুকনো কাপড় তুলছে। বাচ্চাদের পোশাকও আছে।ওর বুকের মধ্যিখানে দ্রিম দ্রিম আওয়াজ হলো। কিন্তু না স্পষ্ট ভাবে দেখার আগেই সেই স্যালোয়ার কামিজ পরিহিত মেয়েটা নেমে গেলো ছাদ থেকে। কিন্তু সন্দিহান করে রেখে গেলো অখিলেশ কে।তবে কি নিরুপমা তার এত কাছে এসে রয়েছে?
প্যান্টের পকেটে ফোনটা বাজতেই ঘোড় কাটে অখিলেশের।হাতের প্রায় পুড়ে যাওয়া সিগারেটের ফিল্টার টা নিচে ফেলে পা দিয়ে পিষে ফেলতে ফেলতে ফোনটা রিসিভ করলো।মা হয়তো টাকার জন্য ফোন করেছে কিন্তু ও কি বলবে?
কিছুক্ষণ চললো মা ছেলের কথোপকথন।বেশ কয়েক বছর পরে মায়ের কন্ঠে হাসির আভাস পেলো অখিলেশ। বুকটা ভরে উঠলো শান্তি সুখে‌।আপন, স্বজনদের আনন্দ বুঝি এভাবেই বুক জুড়ে খুশির প্রতিফলন ঘটায়?কি যে এই পোড় খাওয়া জীবনে আগুনের রং টুকুকে উদিত সূর্যের লালিমায় রূপান্তর করলো তার হাসির আড়ালের লুকানো মুখশ্রী মনে পরতেই বিষাদিত হয়ে উঠলো মনটা।অখিলেশের ভুরুর মধ্য ভাজ পরলো কয়েকটা।রাগকে ডেকে আনার চেষ্টা করেও বার বার ব্যর্থ হলো সে।মন ছেয়ে গেলো এক অপার মমতা আর কৃতজ্ঞতা বোধে।মেয়েটা আসলেই অনেক ভালো। শিশুর মতো নিস্কলুষ মন তার। কিন্তু এত ভালোর যে আজকাল কেউ মূল্য দিতে জানে না বোনটি।নাহলে বিরূপাক্ষের মতো বুদ্ধিমান ছেলে তোমায় কষ্ট দেয়? নিজের মনে আওড়ায় অখিলেশ।

চলবে,,,,

ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
ভালো থাকবেন সবাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here