সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব-৮

0
1287

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ৮
,
,
,
,
,
সকাল হতেই আদ্রিয়ান আদ্রির রুমে যায় এটা ওর পুরোনো অভ্যাস আজকেই ব্যাতিক্রম হয়নি কিন্তু রুমের সামনে আসে আদ্রিয়ান অবাক হয়ে যায় কারন রুমে তালা মারা। আদ্রিয়ান অবাক হয় কারন আর যায় হোক আদ্রি তার রুমে তালা কোন সময় মারে না।

আদ্রিয়ান নিচে নেমে আসে আর মিসেস খান কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে

আদ্রিয়ানঃবোনুর রুমে তালা কেনো বনু রাতে আসেনি
মিসেস খান কিছু বলতে যাবে তার আগেই নাহিদ খান বলে উঠে
ঃওই অসভ্য মেয়েকে আমি আমার বাড়িতে মটেও থাকতে দিবোনা তাই বের করে দিয়েছি বাসা থেকে
(খবরের কাগজ পড়তে পড়তে)
আদ্রিয়ানঃহোয়াট আর ইউ মেড কি সব আজে বাজে বকছো তোমার মাথা ঠিক আছে কোথায় আমার বোন(চিৎকার করে)
নাহিদঃখবরদার আমার সাথে উঁচু গলায় কথা বলবেনা ভুলে যেওনা আমি তোমার বাবা। আর যে মেয়ে নিজের বাবার সম্মান করেনা তার কোন জায়গা নাই আমার বাসায়।আজকে ওর জন্য আমার কতোবড় লোকসান হয়েছে।
আদ্রিয়ানঃআসলেই কি সে তোমার মেয়ে সত্যি করে বলত বাবা।
নাহিদঃকি বলছিস এইসব (রাগী স্বরে)
আদ্রিয়ানঃঅবশ্য একদিক দিয়ে ঠিকি করেছো ওকে বের করে দিয়ে আর যায় হোক যেখানেই থাকুক তোমাদের মতো করে তো আর অপমান অপদস্ত করবে না তাকে কেউ।

মিসেস খানঃআদি বেশি বলে ফেলছিস বাবা হয় তোর কথাটা ভুলে যাস না ওই অসভ্য মেয়েটার মতো তুই ও দিন দিন অসভ্য হচ্ছিস এসে খেয়ে নে
(মিস্টার খান কে চা এগিয়ে দিয়ে আদ্রিয়ান এর উদ্দেশ্য বলে উঠলো)
আদ্রিয়ানঃতোমাদের খাবার তোমরাই খাও

কথাটা বলেই হন হন করে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে না জানি তার বোন কোথায় আছে। কালকে সারাদিন নওমির সাথে কাটায়ে হস্পিটালে গেছিলো সেখান থেকে ফিরতে ফিরতে অনেক দেরি হয়ে গেছিলো আর এতো কাজ করায় ক্লান্ত ও ছিলো প্রচুর তাইতো কালকে আর দেখা হয়নি আদ্রি বাসায় আছে কি না আর এই জন্যই এতোসব

মিসেস খানঃহ্যা গো ওতো রাতে যে মেয়েটাকে বের করে দিলা যদি খারাপ কিছু হয়ে যায় যতোই হোক একটা মেয়ে তো। আমার না হোক কারো তো মেয়ে যতই কথা শুনাই না কেন
(খাবার সার্ভ করতে করতে)

মিস্টার খানঃওতো আলগা পিড়িত দেখাতে হবে না নিজের মেয়ের দিকে খেয়াল রাখো আজ ৩ দিন হয়ে গেলো সে বাসায় আসেনা কোথায় আছে কি করছে কিছু জানা নাই।সে যে হস্পিটাল থেকে রিলিজ হয়ে ফ্রেন্ড দের সাথে ঘুরতে যাবো মুড ফ্রেশ করার জন্য বলে বের হলো এখনো কোন খোজ নাই তার
(না খেয়ে উঠে যায়)

মিসেস খানঃসে তো এমনই কোথাও গেলে তার আর দিন দুনিয়ার কোন খোজ থাকে না ওর চিন্তা আমি করি ওই ম্যানেজ করে নিবে(মিস্টার খান কে কোট পড়ায় দিলেন)

মিস্টার খানঃতোমার মেয়ে যেমন ম্যানেজ করে নিবে আমার মেয়েও তেমনই ম্যানেজ করে নিবে
(বের হতে হতে কথাটা বলে উঠলো)

মিসেস খানঃমানে

মিসেস খান এর কথা টা নাহিদ খান এর কান অব্দিই পৌছালো না

নাহিদ খান গাড়িতে উঠে কাউকে ফোন দিলেন
ঃহ্যালো
নাহিদ খানঃওই দিক কার কি খবর
ঃস্যার আপনার মেয়ে বর্তমানে রয়েল কিংডোম সোসাইটিতে আছে নির চৌধুরী বিল্ডিং এ
নাহিদ খানঃওর কোন অসুবিধা হয়নি তো
ঃনাহ স্যার নির চৌধুরী ম্যাম এর সাথেই ছিলো
নাহিদ খানঃঠিক আছে কিন্তু ভুলেও আদ্রি কে চোখের আড়ালে করবে না মনে থাকে যেনো
ঃজ্বি স্যার।

ফোন পকেটে ঢুকিয়ে সিটে শরীর এলিয়ে দেয় মিস্টার খান।
চোখ যেনো কিছুতেই তার খোলা থাকতে চাচ্ছেনা। সারা শরীর কেমন অবশ হয়ে এসেছে।
,
,
,
,
আদ্রিতা আর মেহের রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে।
আদ্রিঃতুমি কতোদিন হলো ওইখানে জব করো
মেহেরঃএইতো ২ মাস হলো(স্কুটি বের করতে করতে)
আর তুমি?
আদ্রিঃএইতো ১ দিন হলো
মেহেরঃকোন পোস্টে
আদ্রিঃনির স্যার এর পিএ হিসেবে
মেহেরঃহোয়াট(চিল্লিয়ে)
আদ্রিঃকি হলো এইভাবে রিয়েক্ট করছো কেনো
মেহেরঃতুমি জানো নির ভাইয়া কোন দিন কোন মেয়েকে তার সেক্রেটারি হিসেবে এলাউ করেনা আজ পর্যন্ত যতোজন মেয়ে আসেছে সবাইকে রিজেক্ট করা হয়েছে (অবাক হয়ে)
আদ্রিঃতাহলে আমাকে নিলো যে (ভ্যাবাচেকা খেয়ে)
মেহেরঃসেটাই তো ভাবার বিষয় বাই এনি চান্স নির ভাইয়া প্রেমে ট্রেমে পড়েনি তো আবার(ঠাট্টার সুরে)
আদ্রিঃকুছভি
এবার চলো লেট হয়ে যাচ্ছে
আচ্ছা স্যার তোমার ভাইয়া হয়
মেহেরঃআরে নাহ আসলে আমার আব্বু নির ভাই আর আব্বুর এর ম্যানেজার ছিলো কিন্তু একটা রোড এক্সিডেন্ট ভাইয়ার পুরো ফ্যামিলির সাথে আমার আব্বু আম্মু ও মারা যায় আসলে নির ভাইয়ার আব্বু আর আব্বু ফ্রেন্ডস ছিলো এই জন্য দুই ফ্যামিলি এক সাথেই গেছিলো আমি তখন হোস্টেল এ ছিলাম।

আদ্রিঃনির স্যার এর আব্বু আম্মু নাই হয়তো এই জন্যই স্যার এরকুম এঘুয়ে আর রাগী হয়ে গেছেন (মনে মনে কথা গুলো আওরাতেই ওর ও মন টা খারাপ হয়ে যায়)

মেহেরঃএন্ড দেন আমার সব দায়িত্ব আমার চাচ্চু নেয় কিন্তু ১ বছর আগে উনিও মারা যান দেন নির ভাইয়া আমার পড়াশুনার খরচ দেন আর ২ মাস হলো জব টাও দিয়েছে ভাইয়া অনেক ভালো রাগী আছে বাট মন থেকে অনেক সোফট(ড্রাইভ করতে করতে)

আদ্রির কেন জেনো সহ্য হলোনা মেহের এর মুখে নির এর তারিফ। কিন্তু কেনো সেটা সে ঠাওর করতে পারলোনা।একজন মানুষের কাজ পছন্দ হলে যে কেউ স্বাভাবিক তার প্রশংসা করবে এখানে রাগ উঠার কি আছে কিছু তেই মাথায় আসলো না আদ্রির।মেহের স্কুটি চালাচ্ছে আর বকবক করছে কিন্তু আদ্রির কানে কোন কথাই ঢুকছেনা।

হঠাৎ করে ব্রেক কষায় আদ্রি অপ্রস্তুত ভাবে সামনে ঝুকে পড়
আদ্রিঃমেহের এই সব কি
এই ভাবে হঠাৎ করে ব্রেক কষে কে
মেহেরঃআরে বইনা সামনে তাকায়ে দেখ কতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে অফিসের বাহিরে দাড়িয়ে আছে
আদ্রি বিরক্তি নিয়ে সামনে তাকায়ে দেখে আদ্রিয়ান অফিসের গেট এ দাঁড়িয়ে গার্ড এর সাথে কি নিয়ে ঝামেলা করচ্ছে

আদ্রিতা তাড়াতাড়ি বাইক থেকে নেমে আদ্রিয়ান এর কাছে গেলো আদ্রিকে দেখে জেনো আদ্রিয়ান এর জানে পানি এলো। কতো কষ্টে আদ্রির অফিসের ঠিকানা জোগাড় করে এখানে এসেছে কিন্তু গার্ড বিনা এপোয়মেন্টে ওকে ভিতরেই যেতে দিছিলোনা

আদ্রিয়ান দ্রুত বোনকে বুকে জরায় ধরে। যেনো ওর বোনকে কেউ তার কাছ থেকে কেড়ে বহু দূরে নিয়ে যাবে।
আদ্রিয়ানঃবনু তুই ঠিক আছিস তো আমাকে একটা বার ফোন দিতে পারলি না কেন রাতের বেলা বেরিয়ে গেলি বলতো।যদি তোর কিছু হয়ে যেতো কি করতাম আমি বল।

আদ্রিঃকুল ডাউন মিস্টার খান আমি ঠিক আছি আই এম ওলরাইট অযথা প্যানিক করছেন আপনি
আর যার কেউ থাকেনা তার আল্লাহ থাকে ভুলে যেয়েন না কথাটা। আর বড় কথা ভালোই হয়েছে সিনিয়র খান আমাকে বের করে দিয়েছেন আজায়রা রোজ রোজ কার ঝামেলার থেকে মুক্তি পেয়েছি
(আদ্রিয়ানকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে)

আদ্রিয়ান কিছু বলতে যাবে তার আগেই নির সেখানে এসে দাঁড়ায়।নির এর চোখ মুখে স্পষ্ট রাগ এর আভাস পাচ্ছে আদ্রিয়ান। কিন্তু ঠোঁটের কোণে লেগে আছে হাসি আদ্রিয়ান কাছে ব্যপারটি হজম হলো না।

নিরঃমিস.আদর আপনি হয়তো অফিস টাইম ভুলে গেছেন। ফার্স্ট আমার কেবিনে আসেন(অফিসের ভিতরের দিকে হাটা ধরলো)
আদ্রিঃজি স্যার।(বলে আদ্রিও দেয় দৌড়)

আদ্রিয়ান ও চলে যায় বোন সেফ আছে ভালো আছে আর কি লাগে তার।

নির এর রাগে মাথা ফেটে যাছে। মনে হচ্ছে আদ্রিয়ান কে জীবন্ত মাটিতে পুতে ফেলতে। টেবিলের উপরে থাকা সব কিছু ফ্লোরে ফেলে দেয়

আদ্রি বাহিরে তাকায়ে অবাক হয়ে যায় হঠাৎ এরকুম আক্রমণের জন্য মটেও প্রস্তুত ছিলোনা সে

আদ্রিঃস্যার আর ইউ ওকে
(কাপা কাপা গলায়)

ব্যাস আর কি লাগে আগুনে ঘী ঢালে দিয়েছে।নির হাওয়ার গতিতে আদ্রির কাছে যায়ে আদ্রির গলা চেপে তাকে দরজার সাথে আটকে ধরে।আদ্রীর চোখ লাল হয়ে গেছে কিন্তু নির এর ছাড়াছাড়ির নাম নাই।

চলবে!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here