#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২৬
,
,
,
,
,
,
আদ্রি নির পাশাপাশি বসে আছে গাড়ি চলছে তার নিজ গতিতে এসি বন্ধ করে জানালা খুলা রয়েছে। জানালা থেকে আসা বাতাসে আদ্রির খোলা চুল গুলো খেলা করছে। নির এর বুকের ভিতরে আলাদা এক ব্যাথা করছে। ভালোবাসার মানুষ টাকে নিজের করে পাওয়াতে যতোটা না সে প্রশান্তি পেয়েছে তার চেয়ে দ্বিগুন তার বুকের ভিতরে ঝড় বেয়ে যাচ্ছে আদ্রির এই অবস্থা দেখে।
নির এর হাত চলছে না সে গাড়ি সেখানে বন্ধ করে সিটে হেলান দিয়ে বসলো। আদ্রি এখনো জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে। আদ্রির মটেও ইচ্ছা করছেনা নির কে জিজ্ঞেস করার কেনো সে মাঝ রাস্তাই গাড়ি টা থামালো ইচ্ছা করছে না চরিত্র হীন খুনিটার দিকে তাকাতে।যাকে ভালোবেসে না পেয়ে এতোক্ষন কষ্টের সাগরে ডুবেছিলো। তাকে নিজের বাবার হত্যাকারী আর হাজারো মেয়ের জীবন বরবাদ করেছে নিজের চাহিদা পূরনের জন্য তাকে ভালোবাসে সে ভাবতেই তার সারা শরীর গুলিয়ে যাচ্ছে।
কিছুক্ষন আগে নির বাহিরে গেছিলো ড্রাইভার কে ফোন দিতে এমন সময় মুরব্বি করে সে লোকটা এসে আদ্রির হাতে একটা ডিভিডি আর কিছু ছবি এনে আদ্রিকে দেয়। আর বলে তার নামে পার্সেল এসেছে। আদ্রির মাথায় আর কাজ করেনা যে এই ঠিকানা কেউ কেনো তাকে পার্সেল দিবে। সে ডিভিডি ওন করে দেখে নির তার বাবাকে সুট করছে। আদ্রি আৎকে উঠে।যতই খারাপ আচরণ করুক বাবা ছিলো তিনি আদ্রির আর একটা মেয়ের জন্য তার বাবার জায়গায় ঠিক কোথায় হয় সেটা কেউ ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেনা একটা মেয়ে যতোটা না তার মায়ের ক্লোজ হয় তার চেয়ে হাজার গুনে বেশি ক্লোজ হয় তার বাবার কাছে তার বাবা তার কাছে সুওয়ার হিরো হয়। সে বাবাকে চোখের সামনে মরতে কোন মেয়েই সহ্য করতে পারেনা।
তাও কাপা কাপা হাতে ছবি গুলো হাতে নেয়। আর সেটা দেখে তার শরীর গুলিয়ে যায়। ঘৃণায় চোখ জোড়ায় পানি চলে আসে। নির অর্ধনগ্ন অবস্থায়
মেয়েদের সাথে রয়েছে।
সব কিছু দেখে আদ্রি নির এর কাছে যেতে নিলেই আদ্রির ফোনে কল আসে।
আদ্রি রিসিভ করতেই একটা মেয়ে কান্না করতে লাগে আর বলতে শুরু করে
মেয়েটাঃপ্লিজ আপু আপনি এইসব দেখে এখুনি নিরকে বলেন না সে যে ভাবে হোক আমাকে খুজে বের করে আমাকে খুন করে ফেলবে প্লিজ আপু আপনি আমার সাথে কালকে বিকালে ********* এই ঠিকানাই পৌঁছে যাবেন প্লিজ।
কথা গুলো বলেই মেয়েটা ফোন কেটে দেয়।আদ্রি হতদম্ভ হয়ে বসে ছিলো।
,
বর্তমানে,,
নির এক টানে আদ্রিকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে।
নিরঃবুঝিস না এই বুকের তুফান কে হ্যা সব কথা কি মুখে বলতে হয়।ভালোবাসি তোকে বুঝিস না কেন। দেখিস না আমার চোখে তোর জন্য ভালোবাসা। তোর এই শুকনো মুখটা যে সহ্য হচ্ছেনা আমার। বুকে যে ব্যাথা করছে খুব রে। এমন করিস না।
(চোখ বেড়িয়ে দুই ফোটা পানি বেরিয়ে আসে)
,
,
,
আদ্রি কিছু না বলে লেপ্টে আছে নির এর বুকে। নির যদি শুধু অন্য মেয়েদের সাথে সম্পর্ক থাকতো তাহলে সে হয়তো মাফ করে দিতো কিছু বলতোনা। কিন্তু সে তার বাবা কে মেরেছে নির্মম ভাবে না জানি কতোটা কষ্ট হয়েছে তার বাবার। না জানি কতোটা রক্ত ঝরেছে কতোটা না আর্তনাদ করেছে।
(বিদ্রঃভিডিও মিউট করে রাখা ছিলো তাই শুনতে পায়নি)
,
,
আদ্রিঃআমিও আপনাকে ভালোবাসি খুব বেশি(মুখ থেকে নিজের অজান্তেই বের হয়ে গেলো আদ্রির।কেন যেনো মনে হচ্ছে তার বাবার মৃত্যুর পিছনে কোন একটা কিন্তু আছে।)
আদ্রিঃজানিনা নির আপনার চোখ দেখে মেয়েটা আর ওই ডিভিডির উপর বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছেনা মনে হচ্ছে আমি যেটা দেখেছি সেটা সম্পূর্ণ সঠিক না। আমি বের করেই ছাড়বো নির(মনে মনে)
এদিকে নির নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছেনা।নির যেনো হতদম্ভ হয়ে গেছে সে কোন দিন ভাবেনি আদ্রিও তাকে ভালোবাসে
নিরঃতুমি কি বললা। ওই বলোনা কি বললা(আদ্রিকে বুকের উপর থেকে তুলে)
আদ্রিঃআই লাভ ইউ আই রেয়লি লাভ ইউ ভালোবাসি খুব চাইনি আপনাকে জানাতে এই অপবিত্র জীবনে চায়নি জুরাতে কিন্তু পারবোনা আপনাকে ছাড়া থাকতে।
নিরঃএক থাপ্পড় দিবো কিসের অপবিত্র হ্যা। তুমি হলে সে পবিত্র ফুল। নিশ্বাপ।
আদ্রিঃআমিও সেটা চাই ওই জানোয়ার এর ছোয়া থেকে রেহায় চায় নিজের ছোয়া দিয়ে সে ছোয়াকে আমার থেকে দূর করে দিন নিজের ভালোবাসায় রাঙায়ে পবিত্র করে ফেলুন।
নিরঃকিন্তু আদর পাখি এখন আমাদের এক হওয়া সম্ভব না আমার অনেক কাজ বাকী আছে আমি জানিনা সেগুলো করে আদৌ আমি বেচে ফিরবো কি না।
আদ্রিঃআপনি ফিরবেন অবশ্যই জানিনা কিসের এমন কাজ যেটাতে আপনার জীবনের ঝুকি কিন্তু আমি জানি আমার নির ফিরবে তার আদর পাখির জন্য কারন আদর পাখি যে অসহায় তার #সীমাহীন _ভালোবাসার_নীড় কে ছাড়া।
নিরঃকিন্তু
আদ্রি নির কে থামিয়ে দিয়ে নির এর গলা জড়িয়ে নির এর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
আদ্রিঃজানিনা আপনাকে কোন দিন আর পাবো কি না আপনার কাছে।জানিনা ভাগ্য কোন দিকে ঘুরবে জানিনা আপনার বুকে আর কোন রাত ঠায় পাবো কি না আজকেই নাহয় আপনাকে আপন করে নি (মনে মনে)
কথা গুলো ভাবতেই চোখ থেকে বেরিয়ে আসে দুই ফোটা অশ্রু।
নির আদ্রিকে নিজের কাছ থেকে ছাড়য়ে নিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করে।আদ্রির অভিমান হয় এই ভাবে ছেড়ে দেওয়ায়।
গাড়ি থামায় একটা হোটেল এর সামনে।
নিরঃচায়নি এই ভাবে তোমাকে আপন করতে ভাবেছিলাম যেদিন আমরা এক হবো সেদিন সময় টা খুব স্পেশাল করতে কিন্তু জানিনা আসলেই ভাগ্য কি আছে চায়না অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মৃত্যু।
আদ্রির চোখে পানি চলে আসে। সেটা দেখে নির বলে উঠে।
নিরঃচলেন ম্যডাম ভিতরে যাওয়া যাক আজকে আপনাকে ভালোবাসা কতো প্রকার দেখাবো
আদ্রির এবার লজ্জা লাগে এতোক্ষন নির্লজ্জ হয়ে সব কিছু বললেও এবার লজ্জায় গাল দুইটা লাল হয়ে যায়।
নির আদ্রিকে কোলে তুলে নেয়।হোটেল টা নির এর হওয়াই নির এর কোন ফর্মালিটি পূরন করতে হয়না হোটেল এর সবচেয়ে লাক্সারি হানিমুন সুইট নির দের দেওয়া হয়।
আদ্রি ভিতরে ঢুকে অবাক হয়ে যায়। পুরো রুম মোমবাতির আলোয় ঝোলমোল করছে। ফুলের গন্ধে চারিদিকে মৌ মৌ করছে।
আদ্রি যখন রুম দেখতে ব্যস্ত ছিলো নির তখন মোমবাতর আলোর মাঝে আগুন সুন্দরীকে দেখতে ব্যস্ত ছিলো।
নির আদ্রিকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে আদ্রির কাধে মুখ ডুবিয়ে দেয় এক হাত আদ্রির শাড়ির নিচে উমুক্ত পেটে বিচরণ করছে।
আদ্রির সারা শরীর জুড়ে আলাদা এক কাপনি উঠে যায়। আলাদা শিহরণে পাগল প্রায় অবস্থা তার।
নির আদ্রিকে কোলে তুলে বিছানায় শুয়ায় দেয়।
দুইজনে মেতে উঠে আদিম এক খেলায়। নির তার প্রতি স্পর্শে আদ্রিকে নিজের ভালোবাসা বুঝিয়ে দিচ্ছে। আদ্রিও নির এর পাগল করা স্পর্শ পেয়ে যেনো আলাদা এক জগতে পারি দিয়েছে।
——–
নির আদ্রি ব্যল্কনিতে দাঁড়িয়ে ডুবন্ত সূর্যের দৃশ্য উপভোগ করছে।দুইজনার মুখেই আলাদা প্রশান্তি।।
নির আদ্রির গলায় মুখ ডুবায়ে রেখেছে কিন্তু আদ্রির চোখ সামনের দিকে
আদ্রিঃনির একটা কথা জিজ্ঞেস করবো
নিরঃহুম
আদ্রিঃবাবাই কোথায়।(সোজা সাপটা প্রশ্ন)
নিরঃতোমার বাবাকে মারা গেছে।আমি জানি তুমি কথাটা জানো।
আদ্রিঃআমি তোমার মুখে সব শুনতে চাই। তুমি যেটা বলবা আমি সেটাই বিশ্বাস করবো।
নির মুচকি হেসে সব কিছু খুলে বললো সব শুনে আদ্রি ফুপায়ে উঠলো।নির দুই হাতে আগলে নিলো।
চলবে”!!!