একদিন তুমিও ভালোবাসবে❤️পর্ব-৬১

0
7725

‘ একদিন তুমিও ভালোবাসবে ‘ 🌸❤️
||পর্ব~৬১||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

৯২.
কোয়েল আমাদের বাংলোতে থেকেই পরীক্ষা দেওয়া শেষ করলো। আমাদের পরীক্ষা শেষ হয়েছে দুদিন হলো। আজকে থেকে আবার ভার্সিটি যাওয়া শুরু করবো আমরা। যেদিন কোয়েল এ বাড়িতে এসেছিলো সেদিন রাতে আদি রাজদার সাথে কথা বলে নিয়েছিলো কিন্তু সবটা ঠিক হয়েছিল কি? সবটা ঠিক হলে রাজদা এড়িয়ে চলতেন না আদিকে। আমি যেমন এটা লক্ষ্য করেছি, আদি এটা খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে। কিন্তু স্বীকার করেছে না আমার কাছে। যতবার জিজ্ঞেস করছি, “সত্যি কি সব ঠিক আছে?” উত্তরে বলছে, “হ্যাঁ ঠিক আছে।”

কোয়েল: এতো কি আকাশ-পাতাল ভাবছিস বল তো? চল দাভাই ওয়েট করছে তো।

মৌমিতা: আব, তোর রাজদার সাথে কথা হয়েছে?

কোয়েল: হ্যাঁ কথা হয়েছে। বললো তো আসবে আজকে ভার্সিটিতে। হঠাৎ ওর কথা জিজ্ঞেস করছিস? কিছু কি হয়েছে?

মৌমিতা: তোর মনে হয় রাজদা আদির সাথে স্বাভাবিক হয়ে গেছেন?

কোয়েল: এতটা তাড়াতাড়ি কি স্বাভাবিক হওয়াটা সম্ভব বলে মনে হয় তোর? আমার তো মনে হয় না আর সেটা হয়ওনি। রাজ চেষ্টা সবটা ভুলে মানিয়ে নেওয়ার। ও দাভাইয়ের কথাগুলো মনে করতে চায় না জানিস তো? কারণ ওই কথাগুলো ওকে ভীষণ কষ্ট দেয়। ওর দুর্বল জায়গাটায় আঘাত করে ফেলেছে দাভাই, তাও আবার আমার জন্যে। আমি যদি রাজকে বোঝার চেষ্টা করতাম তাহলে হয়তো এসব কিছুই হতো না।

মৌমিতা: নিজেকে অপরাধী মনে করিস না কোয়েল। সময় সবটা ঠিক করে দেবে দেখিস। কথায় আছে জানিস তো? “টাইম হিলস!” আদি পুরো বিষয়টা আমার থেকে এড়িয়ে যেতে চাইছে। তাই জন্যেই তোকে জিজ্ঞেস করে সিওর হলাম।

কোয়েল: আগের দিন এই নিয়ে কথা হচ্ছিলো আমার সাথে। মন খারাপ ছিলো বলে আমাকে ডেকে ছিলো, আমি যাওয়ার পর ও নিজে থেকেই কথাটা তুলেছিলো। আশা করছি ও খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হয়ে যাবে কারণ আমার সাথে শেয়ার করে অনেকটা হালকা হয়েছে।

আমি কিছু বলতে যাবো তাঁর আগেই আদির হাঁক শুনতে পেলাম বাইরে থেকে। আমি আর কোয়েল একে অপরেরদিকে তাকিয়ে হেসে বাইরে বেরিয়ে গেলাম। বাইরে বেরোতেই আমি আর কোয়েল রাজদাকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। রাজদা হেসে কিছুক্ষণ কথা বলার পর আদিকে নিজে থেকে জড়িয়ে ধরলো। আমি ঠিক দেখছি কি না প্রমাণ নিতে কোয়েলের দিকে তাকালাম পরিবর্তে কোয়েলও হতবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো। বাপ রে! এত তাড়াতাড়ি কথা মিলে যাবে কে জানতো? সেদিন আদি নিজে থেকে রাজদাকে জড়িয়ে ধরে ছিল, রাজদা নিজে থেকে ধরেননি। আজ এই দৃশ্য দেখে ভীষণ ভালো লাগছে।

আদিত্য: ভিতরে আধ ঘন্টা দাঁড়িয়েছিলে এখন বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছো। যাওয়ার ইচ্ছা না থাকলে বলো, আমি আর রাজ চলে যাচ্ছি।

রাজ: আমাদের আজকে ক্লাস এগিয়ে দিয়েছে সো তাড়াতাড়ি যেতে হবে।

কোয়েল: আহা! এতই যখন তাড়া তো এসেছো কেন নিতে? আসতে বলেছি নাকি? এই মৌ চল তো, আমরা একাই চলে যাবো।

আদিত্য: বইন থাম! ঝগড়া না করে চল এখন।

আদি কোয়েলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় কোয়েল রাজদাকে মুখ ভেংচি দিয়ে চলে গেলো। আমি আর রাজদা দুজনেই হেসে গাড়ির দিকে এগোলাম। ভার্সিটিতে পৌঁছে রাজদা আর আদি দুজনে নিজেদের ক্লাসের দিকে ছুট লাগালো। আমরাও পাস সাবজেক্টের ক্লাস করতে চলে গেলাম। ক্লাস শেষ করে আমি আর কোয়েল ক্যান্টিনে দেখা করতেই দেখলাম ভার্সিটির অনেকে বসে আড্ডা দিচ্ছে আর তার মধ্যে জিয়া ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরাও উপস্থিত। সেই দেখে কোয়েল আমাকে বললো,

কোয়েল: মৌ, চল এখান থেকে। যেভাবে গোল মিটিং বসিয়েছে মনে হয় নিশ্চই কোনো গন্ডগোল পাকাবে।

মৌমিতা: রণিতও আছে ওদের সাথে, দেখেছিস?

কোয়েল: দেখেছি বলেই যেতে বলছি। চল।

কোয়েল আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যেতে শুরু করলো রণিত পিছন থেকে দৌঁড়ে এসে আমাদের সামনে দাঁড়ায়।

মৌমিতা: কি চাই?

রণিত: তোমাকে চাই মৌ ডার্লিং! (মৌমিতার দিকে এগিয়ে এসে)

মৌমিতা: (পিছিয়ে গিয়ে) ডোন্ট ক্রস ইউর লিমিট রণিত।

রণিত: বাহ রে! আমি চাইলে “ডোন্ট ক্রস ইউর লিমিট” আর আদিত্যদা চাইলে “অলওয়েজ ওয়েলকাম”? এমনটা তো ঠিক না মৌ ডার্লিং! (বাঁকা হেসে)

কোয়েল: জাস্ট শাট ইউর মাউথ রণিত। অসভ্যতামির ও একটা লিমিট থাকে?

জিয়া: তুই অন্তত সভ্যতা অসভ্যতা নিয়ে জ্ঞান দিস না কোয়েল। তোকে এসব মানায় না। নিজে কি অসভ্যতামি করে বেড়াচ্ছিস সেটা আগে বল।

কোয়েল: আচ্ছা? আমি অসভ্যতামি করেছি? তা কি করেছি শুনি একটু? আমার তো মনে পড়ছে না আমি একেকদিন একেক ছেলের সাথে ঘুরে বেরিয়েছি বলে, যেটা তোর কাজ।

জিয়া: (হেসে) তুই তো আমার থেকেও জঘণ্য কাজ করেছিস। যাকে এতদিন নিজের দাদা হিসাবে চালাতিস, আজকাল তাঁর সাথে রাত কাটাচ্ছিস এক বাড়িতে। এটা কি তোর বান্ধবীকে আদির হাতে তুলে দেওয়ার পুরস্কার?

কোয়েল: মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ জিয়া! (চিৎকার করে)

জিয়া: আরো জোরে! আরো জোরে চিৎকার কর। আমি তো চাই ভার্সিটির সবাই জানুক তোদের দুই বান্ধবীর চরিত্র সম্পর্কে। (পিছন ফিরে সবার উদ্দেশ্যে) সো গাইজ! এতদিন যারা ভাবছিলিস/ভাবছিলে আমাদের মৌমিতা খুব শান্ত-শিষ্ট ভদ্র মিডিল ক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে তাঁদের জন্য আমার করুণা হচ্ছে। কারণ আমাদের সকলের প্রিয় মৌমিতা মিডিল ক্লাস ফ্যামিলির লোভী একটা মেয়ে যার নজর ছিলো আমাদের ইউনিয়ন হেড আদিত্যের উপর, ওর টাকার উপর। তাই তো রাতও কাটিয়ে ফেললো পরীক্ষার আগে। আমার কথা বিশ্বাস না হলে ওকেই জিজ্ঞেস করে নিন, ও পরীক্ষাটা কার বাড়িতে থেকে দিয়েছে। আর কোয়েল? ওর কথা তো আগেই জানালাম আপনাদের। ওই হেল্প করেছে মৌমিতাকে আদিত্যের কাছে পৌঁছাতে তাই তো আদিত্য ওকে পুরস্কার দিয়েছে। আদিত্যেরই তো লাভের লাভ হয়েছে, একসাথে দুটো মেয়েকে পেয়ে গেছে। আমি তো আগেই বলেছিলাম এই গরীব ঘরের মেয়ে গুলো টাকার লোভী হয়। কিন্তু মৌমিতাকে দেখে জানতে পারলাম ওরা টাকার জন্য নিজেকেও বিক্রি করতে পারে ছে….

জিয়ার কথা শেষ হওয়ার আগেই কেউ জিয়ার গালে সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। হঠাৎ হওয়ার ফলে জিয়া ভারসাম্য হারিয়ে হুমড়ি খেয়ে ক্যান্টিনের চেয়ারের উপর পরলো। সোজা হয়ে দাঁড়াতেই দেখলো আদিত্য রাগে রীতিমতো ফুঁসছে। আদিত্যদের ক্লাস শেষ হওয়ার পর রাজ একটু নিজের দরকারে বেরিয়ে যায় আর আদিত্য ক্যান্টিনের দিকে এসে কারণ ও জানতো কোয়েল আর মৌমিতা ক্যান্টিনে থাকবে। রাজকেও কাজ শেষ করে ক্যান্টিনেই আসতে বলেছিলো কিন্তু আদিত্য ভাবেনি ওকে এসবের সম্মুখীন হতে হবে।

আমি জিয়ার কথাগুলো শুনে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নিজের কান্না আটকানোর চেষ্টা করছিলাম সেসময় একটা আওয়াজ শুনে চোখ খুলে তাকালাম। আদিকে আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমি আর নিজেকে আটকাতে পারলাম না, শব্দ করেই কেঁদে দিলাম। আদি আমার দিকে ফিরে দু-হাত আমার গালে রেখে, চোখের জল মুছিয়ে বললো,

আদিত্য: এই চড়টা তোমার আর কোয়েলের ওকে মারা উচিত ছিলো। ও এতগুলো আজে বাজে কথা বলছিলো আর তোমরা শুনছিলে? বলতে পারলে না তোমার আর আমার সম্পর্কটা কি? ছুটি তুই? তুই কেন চুপ করেছিলি? ফাইন! আমিই বলবো সবাইকে।

আদিত্য আমাকে ছেড়ে জিয়ার কাছে গিয়ে জিয়ার বাহু টা শক্ত করে ধরলো। চোয়াল শক্ত করে, দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

আদিত্য: খুব শখ না তোর সবাইকে জানানোর। চল, তোর মনের ইচ্ছা আমি পুরণ করছি। “সব” জানাবো আজকে আমি। তোরাও আয়।

৯৩.
আদিত্য জিয়াকে নিয়ে টানতে টানতে ভার্সিটির মাঠে এনে উপস্থিত হলো। জিয়াকে ধাক্কা মেরে ছেড়ে দিয়ে আদিত্য পিছন ফিরে দেখলো সবাই আসছে। সেটা দেখে জিয়ার দিকে বাঁকা হাসলেই জিয়া একটা শুকনো ঢোঁক গেলে।

আদিত্য: কি হলো জিয়া? এভাবে ঘামছিস কেন তুই? ভয় পেয়ে গেলি নাকি?

জিয়া: ভ..ভয় পাবো কেন? আমি য..যা বলেছি সত্যি বলেছি। ভয় প..পাবো কেন?

আদিত্য: ওহ রিয়েলি? কনফিডেন্স ভালো, ওভার কনফিডেন্স ভালো না জানিস তো?

আদিত্য যেই দেখলো সবার সাথে মৌমিতা আর কোয়েলও এসে ওর পাশে দাঁড়িয়েছে তখনই সবার উদ্দেশ্যে বলতে শুরু করলো,

আদিত্য: জিয়া জানো তোদের কি বলেছে? আমি সবটাই শুনেছি, শুধু দেখছিলাম জিয়া কতটা নীচে নামতে পারে। তুই কোয়েলের নামে কি বললি জিয়া? কোয়েল অসভ্যতামি করেছে তাঁর সাথে যাকে কিনা এতদিন ও নিজের দাদা বলতো রাইট? সব সত্যি জানার পরও তুই কীভাবে এই এত বড়ো নোংরা কথাটা বলতে পারলি বলবি প্লিজ? তুই খুব ভালো ভাবেই জানিস কোয়েল আমার আপন খুড়তুতোবোন হয়। (জোর দিয়ে) তোর বাবা না আমার কাকাই, আশীষ ব্যানার্জীকে জমের মতো ভয় পায়। সেটা জানিস নিশ্চই? তার মেয়েকে আজকে সকলের সামনে অপমান করেছিস তুই, আশীষ ব্যানার্জীর মেয়েকে।

আদিত্যের কথা শুনে জিয়া সবার দিকে তাকাচ্ছে আর নিজের আঙুল কচলাচ্ছে ভয়ে ভয়ে। আদিত্য এবার মৌমিতার পাশে দাঁড়িয়ে বললো,

আদিত্য: মৌকে তুই বদনাম করছিলি ও আমার বাংলোতে রাত কাটিয়েছে তাঁর জন্য। খোঁজ যখন নিয়েছিলি তখন একটু ভালো ভাবে খোঁজ নেওয়া উচিত ছিলো তোর আর তোর রণিতের।

আদিত্য রণিতের কলার ধরে নিজের সামনে এনে দাঁড় করালো যাতে রণিত আরো বেশি ঘাবড়ে গেলো। আদিত্য একহাতে রণিতের কলার আর আরেক হাতে মৌমিতার হাত শক্ত করে ধরে, জোর দিয়ে বললো,

আদিত্য: মৌ নিজের অধিকারে আমার বাংলোতে ছিলো। স্ত্রীয়ের অধিকারে আমার সাথে রাত কাটিয়েছে। ওর নাম মৌমিতা ব্যানার্জী! ওয়াইফ অফ আদিত্য ব্যানার্জী! ডটার ইন ল্য অফ আকাশ ব্যানার্জী! হু ইজ দ্য মেম্বার অফ আওয়ার ইউনিভার্সিটি ডিরেক্টর বোর্ড। তাই ওর দিকে আঙুল তোলার আগে এই ভার্সিটির সবাই জানো এই কথাগুলো মনে রাখে।

কথা শেষ করেই আদিত্য মৌমিতার হাত ছেড়ে রণিতের মুখে ঘুষি মেরে দিলো আর রণিত উপুড় হয়ে নীচে পড়লো।

আদিত্য: বউ হয় ও আমার! তাই নিজের যোগ্যতা বুঝে কথা বলা উচিত ছিলো তোদের। আগের বার ওর দিকে খারাপ ভাবে হাত বাড়িয়েছিলি তাই তোর হাত ভেঙে ছিলাম এই বার তোর জিভটা টেনে ছিড়ে নেবো আমি।

এই বলে আদিত্য এগোতে গেলেই মৌমিতা এসে আদিত্যের হাত ধরে নেয়। আদিত্য রাগী চোখে মৌমিতার দিকে তাকালে মৌমিতা না বোধক মাথা নেড়ে সকলে উপস্থিত আছে এখানে সেটার ইশারা করে। চিল্লাচিল্লির কারণে যাদের ক্লাস হচ্ছিলো তাঁরা সমেত ম্যাম, স্যাররাও বেরিয়ে এসেছেন। এটা দেখে আদিত্য থেমে গিয়ে জিয়ার দিকে তাকায় দেখে, জিয়া আহত দৃষ্টি নিয়ে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। মৌমিতাকে নিয়ে জিয়ার দিকে এগিয়ে গিয়ে আদিত্য বলে,

আদিত্য: তোদের মনে হতেই পারে আমি মৌকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যে বলছি তাই দুটো প্রমাণ এখন দিচ্ছি।

এই বলে আদিত্য মৌমিতার বাঁ হাত থেকে হোয়াইট কালারের ব্যান্ডটা টান মেরে খুলে ফেললো যেটা ও নিজের কব্জিতে পড়েছিলো। এরপর ওর তুলে দেখিয়ে বললো,

আদিত্য: এটাকে নোয়া বলে জানিস নিশ্চই? এটা বিবাহিত মেয়েরাই পরে। বিবাহিত মেয়েদের সবথেকে বড় উদাহরণ এটা, যা তোরা কোনোদিন টের পাসনি।

এবার যত্ন সহকারে আদিত্য মৌমিতার চুলের রবার ব্যান্ডটা খুলে দিয়ে, কয়েকটা চুল উল্টে দিয়ে মৌমিতার সামনে থেকে সরে দাঁড়িয়ে বললো,

আদিত্য: এই যে ওর মাথায় আমার নামের সিঁদুর। হঠকারিতায় আমাদের বিয়েটা হওয়ায় আমি বারণ করেছিলাম ওকে আমার স্ত্রী হিসাবে পরিচয় না দিতে আর শুধুমাত্র সেই জন্যেই ও আজকে এতো কটূ কথা শুনেও প্রতিবাদ করেনি। আমি ভুল করেছিলাম ওকে বারণ করে তাই আমি সেটা শুধরে নিলাম প্রতিবাদ করে। চিন্তা করিস না, সামনেই আমাদের গ্র্যান্ড রিসেপশন। ইউনিভার্সিটির সবার ইনভিটেশন রইলো। সাথে আমার কথাগুলো জানো মনে থাকে, আমার স্ত্রী আর আমার বোনের উপর জানো একটা আঁচড়ও না আসে। আসলে, রণিতের থেকেও খারাপ অবস্থা করবো আমি তাঁর। তাছাড়া কোয়েল কার আমানত সেটা নিশ্চই মনে করিয়ে দিতে হবে না?

আদিত্য কথাটা বলতেই কয়েকজন ছেলে ভয়ে শুকনো ঢোঁক গিললো। যা দেখে আদিত্যসহ মৌমিতা আর কোয়েলও মৃদু হাসলো। আদিত্য ওদের উদ্দেশ্যে বললো,

আদিত্য: ঠিক এই ভয়টাই দেখতে চাই আমি সবসময়। আর জিয়া! রাজ এখানে নেই তোর ভাগ্য ভালো, নাহলে এতক্ষণে চড়ের চোটে অজ্ঞান হয়ে যেতিস। তোর ফ্রেন্ড সৌভিকের অবস্থা জানিস তো?

জিয়া কথাটা শুনেই চমকে উঠে তাকালো আদিত্যের দিকে। আদিত্য সেটা দেখে বাঁকা হেসে বললো,

আদিত্য: তুই ওদের দুজনকে বদনাম করতে চেয়েছিলি তাই না? তাঁর পরিবর্তে আমি চাইলেই এখন তোর আর রণিতের ব্যক্তিগত কিছু সুন্দর সুন্দর ছবি যেগুলো রণিত তোকে ব্ল্যাকমেইল করবে বলে তুলেছিল টাকার জন্য, সেগুলো ফাঁস করে দিতে পারি সবার সামনে। তাছাড়া তোর আদরের সৌভিকদা! ওর সাথে তোর ঠিক কি রকম দাদার সম্পর্ক, সেটার প্রমাণ ও আমি সবাইকে দিতে পারি। তা দেবো নাকি?

আদিত্য বেশ জোরেই কথাগুলো বলেছে যাতে সবাই শুনতে পায়। জিয়া এসব শুনে আদিত্যের পা ধরতে গেলেই আদিত্য সরে আসে।

আদিত্য: আমার পা ধরার অধিকারও তোর মতো একটা নোংরা মানসিকতার মেয়ের নেই। তোকে নিজের বান্ধবী হিসাবে ক্ষমা করেছি বারবার কিন্তু তুই যে এটার যোগ্য নস সেটা বুঝিয়ে দিলি আজকে।

আদিত্য মৌমিতা আর কোয়েলের হাত ধরে ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলো। ইউনিভার্সিটি থেকে বেরোতেই দেখলো রাজ গাড়ি নিয়ে আসছে। রাজ এসে আদিত্যের গাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে নেমে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে”। এর উত্তরে সবাই একে অপরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি শুরু করলো, কি বলবে ভেবে।

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]

আইডি- কোয়েল ব্যানার্জী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here