#বিষাক্তময়_আসক্তি(The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৫৪………🌼
“”পৃথিবীতে সবাই হলো একটা চাঁদের মতো। এখানে সবারই একটা আলোকিত দিক রয়েছে এবং একটা অন্ধকার দিক যা সে কখনো কাউকে দেখায় না।””
___মার্ক টোয়েন।
‘টিমটিম আলোয় আলোকিত হয়ে আছে সারা রুম জুড়ে। বারান্দার মৃদু বাতাসে দুল খাচ্ছে কালো ফিনফিনে পাতলা পর্দা গুলো। বাহিরে প্রচন্ড তুষার বর্ষন হচ্ছে, ইরফান ধীরে বারান্দার দরজাটা আটকে দিয়ে বিছানার দিকে এগুলো।। নিরবতা বিরাজ করছে সম্পূর্ণ রুম জুড়ে শুধুমাত্র ঘড়ির টিকটিক আওয়াজ হচ্ছে। ঘড়িতে রাত বারোটা বাজে।বিছানায় কালো ব্ল্যানকেট জড়িয়ে বাচ্চাদের মতো গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে আয়ানা। ইরফান বিছানা শুয়ে থাকা আয়ানার দিকে ঝুঁকে কপালে চুমু খেলো।সেই দুপুরে ঘুমিয়েছে এখনো ঘুমাচ্ছে। খুব কড়া ডোজের ঔষুধ দেওয়ার ফলে আর প্রচন্ড ভয় পাওয়া খুব দূর্বল হয়ে পরেছে তাই একবারও উঠেনি ঘুম থেকে। ইরফান বিকেলের দিকে ঘুমের মাঝে হালকা খাবার খাইয়ে দিয়েছে।সন্ধ্যায় ভয়ের কারণে হালকা জ্বর আসলে ইরফান তারাতাড়ি ডাক্তার ডাকে।ডাক্তার এসে চেকাপ করে কিছু মেডিসিন দিয়ে যায়।।
“একহাত বালিশের কিনারার উপর ভর দিয়ে ঝুঁকে আছে ইরফান,অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাঁর ঘুমন্ত পিচ্চি পরীজানের দিকে।কতো ময়া কতো মুগ্ধতা বিরাজ করে এই মুখ জুড়ে এই আঁকাবাঁকা ভাবে পড়ে থাকা চুল গুলো কতোটা নেশাক্ত লাগে।একটা জলজ্যান্ত নেশা প্রতিটা মূহুর্তে তাঁর আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় তাইতো নিজকে কখনো কন্ট্রোল করতে পারে না আয়ু নামের বিষাক্ত নেশা থেকে আর সে কন্ট্রোল করতে চায়ও না।।। ইরফান মৃদু হেসে কপালের চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে ঠোঁটে নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে স্লাইট করে আলতো কিস করে সারা মুখ জুড়ে আঙ্গুল বুলিয়ে দেয়।এই মুখ দেখা হবে নাকো কখনো শেষ, জীবনের প্রতিটা মূহুর্ত পারি দিবো প্রেয়সীর চাঁদ মাখা মায়াবী মুখ দেখে। কথাটা বিরবির করে হেসে দিল সে টেবিলের উপর থেকে মোবাইল নিয়ে র্সাভেন্টকে কল করে গরম দুধ আর ভেজিটেবল স্যুপ নিয়ে আসতে বলে।কথা শেষ করে পুনরায় তাকিয়ে রইল আয়ানার দিকে।।
র্সাভেন্ট খাবার নিয়ে আসলে ইরফান আয়ানাকে সোজা করে বসিয়ে পিঠের পিছনে বালিশ দিয়ে আধসোয়া অবস্থায় স্যুপ খাইয়ে দিতে লাগলো।চামচ দিয়ে স্যুপ নিয়ে হালকা ফু দিয়ে আয়ানাকে খাওয়াতে লাগলো।স্যুপ মুখে যেতে ঘুমের মাঝে নাক চোখ কুঁচকে নিলো আয়ানা তা দেখে ইরফান মুচকি হেসে পুনরায় খাইয়ে দিতে লাগলো।।আয়ানার এই ঘুমের মাঝে খাওয়াটা খুব পছন্দের ইরফানের কাছে কোনো ঝামেলা ছাড়াই বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টিয়ে খেয়ে ফেলছে।। জায়েদ আহাম্মেদ যখন কাজের জন্য বেশি রাত হয়ে যেতো আর আয়ানা যখন আব্বির হাতে খাবে বলে রাত জেগে বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে যেতো তখন প্রায়ই জায়েদ আহাম্মেদ এইভাবে ঘুমের মাঝে মেয়েকে খাইয়ে দিতো আর আয়ানাও লক্ষি মেয়ের মতো খেয়ে নিতো আর ঘুমিয়ে খাওয়ার অভ্যাস আয়ানার ছোট বেলায় থেকে তাই অনায়াসে সে ঘুমের মাঝে বিরক্ত না করে খেয়ে নিতে পারে।।। একটা মেয়ের প্রত্যেকটা স্বপ্ন তাঁর বাবা পূরন করার চেষ্টা করে , প্রত্যেকটা মেয়ে তাঁর বাবার কাছে প্রিন্সসে।বাবারা তাদের মেয়েদের সব স্বপ্ন পূরণ করে আর যেগুলো পারেন না সেগুলো ভবিষ্যতে মেয়ের জামাই করে দিবে সেই প্রত্যাশা থাকেন এবং এমন জামাতা খুঁজেন যে তাঁর প্রিন্সসেকে রানি করে রাখবে আর এটা একজন বাবার মেয়ে জন্য চাওয়া বিরাট সুন্দর একটা স্বপ্ন।।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।। ইরফান আয়ানাকে খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিলো তারপর আয়ানাকে জড়িয়ে ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়। আজকে অনেক ক্লান্ত সে তাই তারাতাড়ি ঘুম নেমে আসে চোখের পাতায়।
সকাল বেলা🦋,,,,,,
পিটপিট চোখে সামনে তাকাতে আয়ানা ভয়ে কিছুটা হকচকিয়ে যায়। ইরফান আয়ানার কাঁধের দুই পাশে নিজের হাত রেখে আয়ানার উপর আধসোয়া হয়ে একমনে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ইরফানকে এতোটা কাছে দেখে আয়ানা ভয় পেয়ে যায়। ইরফান আয়ানাকে ভয় পেতে দেখে বাঁকা হেসে হাত সরিয়ে নিজের সম্পূর্ণ ভার আয়ানার উপর ছেড়ে দিয়ে আয়ানার গলায় মুখ গুজে।আয়ানা হঠাৎ এমন হওয়া শিহরে উঠে চোখ বুজে নিলো। ইরফান আয়ানার গলায় নিজের গাল ঘসছে যার ফলে ইরফানের খোঁচা খোঁচা দাড়ি গুলো আয়ানার গলায় আঁচড় কাটছে আয়ানা ইরফানকে সরাতে চাইলে ইরফান আরো গভীর ভাবে গাল দিয়ে গলা স্লাইট করতে লাগলো। বেচারি আয়ানা ঠোঁট উল্টিয়ে হিসপিস করছে ছোটার জন্য তা দেখে ইরফান বিরক্তি হয়ে মাথা উঁচু করে বলে উঠলো,,,
—–উফফ্ আয়ু সকাল সকাল কী শুরু করেছো দেখছো না বউকে আদর করছি। পুনরায় গলায় মুখ গুজে।
আয়ানা ঠোঁট ফুলিয়ে বলে উঠলো,,,
—-আমার গলায় সুরসুরি ব্যথা দুটো হচ্ছে। আপনি সকাল সকাল এমন ভুতের মতো হামলা কেনো করছেন।গাল ফুলিয়ে।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান হেসে দিলো পরক্ষনেই আসতে করে গলায় কামড় বসিয়ে দিল। সাথে সাথে আয়ানা ইরফানের পিটে কিল মেরে চোখ মুখ কুঁচকে গলায় হাত বুলাতে লাগলো আর বলতে লাগলো,,,
—-আপনি সত্যি ভুত হয়ে গিয়েছেন সকাল সকাল কেমন কামড়িয়ে দিচ্ছেন আমার ব্যথা লাগলো।।
ইরফান আয়ানার গলা থেকে হাত সরিয়ে কামড়ের জায়গায় ডিপলি কয়েকটি কিস করে বললো,,,
—-আদর করে পুষিয়ে দিয়েছি আরো আদর লাগলে বলতে পারো। বাঁকা হেসে।
ইরফানের কথায় আয়ানা লজ্জায় কুঁকড়ে যায় তা দেখে ইরফান গাল স্লাইট করতে করতে বললো,,,,
—এতো লজ্জা পেয়েও না মেরি জান তাহলে কামড়েকুমড়ে খেয়ে নিবো তোমাকে।
ইরফানের প্রত্যেকটা কথা আয়ানাকে লজ্জায় ফেলছে তাই আয়ানা গাল ফুলিয়ে বললো,,,
—আমি ব্যথা পেয়েছি তাই আপনার আদর লাগবে না আমার অন্য শাস্তি পেতে হবে আপনাকে।রাগি সুরে।।
ইরফান আয়ানার কথা শুনে হেসে দিয়ে ভয় পাওয়ার ভঙ্গিমা করে বললো,,,
— কী শাস্তি দিতে চাইছো মেরি জান?কান ধরে উঠ বস করবো! বউয়ের কথা শুনা স্বামীর কর্তব্য। দুষ্টু হেসে।
—-না!অন্য শাস্তি দিবো তাও আবার দ্যা আয়ানা খানের স্টাইলে।ভাব নিয়ে।
—আমি তো খুব ভয় পেয়ে গেছি ।তো দ্যা আয়ানা খান কী শাস্তি দিতে চায় আমি তা মাথা পেতে নিবো।গাল টেনে দিয়ে।।
আয়ানা কিছুক্ষণ ভেবে মুখ গম্ভীর করে বলে উঠলো,,,
—-চোখ বন্ধ করুন। তারপর শাস্তি।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান মৃদু হেসে আয়ানার চুল ঠিক করে দিয়ে বললো, ওকে। বলে চোখ বুজে নিলো আর মিটমিট করে হাসতে লাগলো তাঁর মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে আয়ানা কী শাস্তি দিতে পারে তা তাঁর জানা আছে।।আয়ানা ইরফানকে চোখ বন্ধ করে হাসতে দেখে গাল ফুলিয়ে বললো,,,
—হাসি বন্ধ করুন একদম হাসা যাবে না তাহলে আমি শাস্তি দিতে পারবো না।।
ইরফান আয়ানার কথা শুনে হাসি বন্ধ করে ফেলে।আয়ানা মৃদু হেসে ইরফানের গলায় নিজের দুই হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে এগিয়ে নিয়ে আসে আয়ানার মুখ বরাবর।যতো কাছে যাচ্ছে ততো ইরফানের হার্টবিট ফার্স্ট চলতে লাগলো নিঃশ্বাস ঘন ঘন ফেলতে শুরু করেছে, কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গিয়েছে তাঁর। বেশ কাছাকাছি আসতে আয়ানার শ্বাস প্রশ্বাস তাঁর মুখে আঁচড়ে পরছে আয়ানার শরীরের মনোমুগ্ধকর সুগন্ধি নাকে ভারি খাচ্ছে যা বারবারই তাকে দিশেহারা উন্মাদ করে তুলে।গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে বারবার ঢোক গিলে গলা ভেজানোর অধম চেষ্টা।প্রেয়সীর কাছে আসাতে নিজেকে অশান্ত মনে হচ্ছে একদম শান্ত করতে পারছে না কতো বছরের তপসা। ইরফানের চেহারা দেখে আয়ানার ভীষণ হাঁসি পাচ্ছে।। মনে মনে বললো,বাহ মি.এরোগেন্ট ম্যানের এই রকম চেহারাটা একদম বাঁধিয়ে রাখার মতো।চট করে ইরফানকে কিছু বুঝতে দেওয়ার আগে ইরফানের নাকের ডগায় তিলটায় জোরে কামড়ে বসিয়ে দিলো। অনেক দিনের ইচ্ছে, লোভ আর সামলাতে পারেনি তাই সঠিক সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।সেই প্রথম থেকে ইরফানের এই নাকের ডগায় তিলটায় আয়ানার নজর পরতো সবসময় কেমন জানি ইচ্ছে করতো ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতে পরোক্ষনে নিজের এহেম কান্ডে নিজে হতোবাক হয়ে যেতো কিন্তু এখন তো সে তাঁর ভালোবাসা তাই ইরফানের সব কিছুর উপর তাঁর অধিকার সবচেয়ে বেশি।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।
ইরফানের হলদে নাকটা কামড়ের ফলে লাল হয়ে গিয়েছে তিলটাও সামন্য কালচে রং ধারণ করেছে প্রচন্ড ব্যথা লাগলেও ইরফানের কাছে তা শুধু প্রেয়সীর ভালোবাসা চোখ বন্ধ করে দাঁত খিচে তা সহ্য করে নিলো।। ইরফানের নাক লাল হতে দেখে আয়ানার হাসি মুখটা মলিন হয়ে যায় সে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,,,
—-স্যরি আমি বুঝতে পারিনি এতোটা লেগে যাবে আমি সত্যি স্যরি। ইরফানের নাকে আলতো হাত ছুঁইয়ে। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে নিজের হাসি সংযোগ করে গম্ভীর গলায় বললো,,,
—-স্যরিতে কাজ হবে না এর জন্য পানিশমেন্ট পেতে হবে।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা ভয় পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে তা দেখে ইরফান মুচকি হেসে আবার গম্ভীর গলায় বললো,,,
—-আর শাস্তি হচ্ছে টানা কোনো দিকে না তাকিয়ে আমাকে কামড় দেওয়ার স্থানে একশো বিশ বার চুমু খাবে কোনো থামাথামি নেই । ঠিক আছে।
—-এতোগুলো অন্য শাস্তি দি,,,,,
—-যা বলেছি যদি আর একটা কথা বলেছো তো কিসের পরিমাণ বাড়বে।।
আয়ানা আর কোনো কথা না বাড়িয়ে গাল ফুলিয়ে আগের মতো গলা জড়িয়ে এক এক করে চুমু খেতে লাগলো আর ইরফান তা গনছে আর মিটমিট করে হাসছে সাথে চোখ বন্ধ করে প্রেয়সীর নরম ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করছে।।আয়ানার ইচ্ছে করছে নিজের চুলগুলো নিজে ছিরে ফেলতে, কেনো যে এমন করতে গেলো।টানা সাতমিনিট চুমু খেয়ে আয়ানা একশো বিশটা চুমু শেষ করে হাঁপিয়ে গেলো। ইরফান তৃপ্তির হাসি হেসে আয়েসি ভঙ্গিতে নিজের দুই হাত উপরে টানা দিয়ে আয়ানার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বললো,, এবার আমার পালা।
আয়ানা আবাক হয়ে বললো
—মানে।
ইরফান বাঁকা হেসে আয়ানার গলায় পুনরায় মুখ গুজে বললো,,,
—-মানে তোমার বাসায় সুদবুদ।বলে সারা গলায় মুখে চুমু খেতে লাগল।আর বেচারি আয়ানা খালি পেট ভর্তি করছে চুমু খেয়ে আজকে আর কিছু খেতে হবে না তাঁর।।।
(গল্পটা কেমন হয়েছে সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবেন আর আজকে মাথা ব্যথা তাই গল্প ছোট হয়েছে আগামীকাল আরেক পর্ব দেওয়ার চেষ্টা করবো কিন্তু কতোটুকু দিতো পারবো বলতে পারছি না। ধন্যবাদ সবাইকে 💞)
#to_be_continued
#Happy_reading🌸
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম✵