#বিষাক্তময়_আসক্তি(The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৫৫………..🌼
(গল্পের নিচে সবসময় প্রয়োজনীয় কিছু লিখা থাকে কিন্তু সবাই তা পড়েন না।।।
আমি কেনো গল্প দেই নি, কেনো ছোট হলো সব আমি নিচে লিখে দেই তবুও অনেকে কমেন্ট করে বলে আপু আজকে এত ছোট কেন হলো আপু আজকে গল্প দিতে দেরি কেন হলো?দেরি হয়েছে তো তাও আবার এতো ছোট কেন?তাদেরকে বলব তারা যেন গল্পের নিচের অংশটুকু পড়ে কারণ আমি গল্পের নিচের অংশে লিখে দেই কেন আজকে গল্প ছোট কিংবা দেরি হয়েছে! তাও যদি কেউ এমন কমেন্ট করে যে আজকে গল্প ছোট কিংবা এত দেরি কেন হলো তাহলে আমি তাদের কমেন্টের রিপ্লাই দিতে বাধ্য নই যেহেতু আমি গল্প লিখে দেই তাহলে আবার কেন বলতে হবে যে আজকে গল্প কেন ছোট দিয়েছি কেন দেরি হয়েছে।। গল্পের উপর নিচ না পড়ে মন্তব্য করবেন না তাহলে আপনার কমেন্টের উত্তর দেওয়া হবে না।
তাই বরাবরের মতো অনুরোধ রইল উপরে নিচে লেখাগুলো পড়ার জন্য। অহেতুক না পড়ে কেউ দেরি কেনো হলো ছোট কেনো হলো এসব মন্তব্য করবেন না।।যতক্ষনে আপনারা এসব মন্তব্য করেন ততক্ষনে লেখাটা পড়ে নিতে পাড়েন।।)
“সাদা রঙের কিচেন এপ্রোন, হাতে গ্লাভস লাগিয়ে পেঁয়াজ কাটছে ইরফান। ইউটিউব দেখে এক এক করে খুব দ্রুত কাজ করছে মনে হচ্ছে কতোটা দক্ষ সে রান্না করায় কিন্তু সে কখনো রান্না করেনি। আজকে বউয়ের আবদার রাখতে গিয়ে রান্না করছে। জীবনে কখনো একটা জুস তৈরি করে খায়নি ,যার প্রত্যেক কাজের জন্য আলাদা লোক নিয়োজিত সে আজকে রান্না করছে।বিষয়টা অনেকে অবাক হচ্ছে আবার অনেকে না কারন এটা ধারনার বাহিরে নয়, ইরফান আয়ানার জন্য সব করতে পারে।।।
সারা দিন স্যুপ আর পুষ্টিকর খাবার খেতে খেতে আয়ানা বিরক্তি হয়ে পরেছে তাই এখন যা জোর করে খাওয়াছে হালকা জ্বর থাকায় সব বমি করে বের করে দিচ্ছে।আয়ানার একটাই কথা আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না তবুও যদি খেতে হয় তাহলে আমি চিকেন বিরিয়ানি খাবো আর অন্য কিছু না তাও আবার ইরফানের হাতের।।তাই বাধ্য হয়ে ইরফান আয়ানাকে কোলে করে কিচেন রুমে চলে আসে আর আয়ানাকে পাশে বসিয়ে দেয়। কিচেন থেকে সব র্সাভেন্টকে বের করে দিলো আর বলে দিয়েছে কেউ জেনো না আসে।।তাই ভয়ে কেউ কিচেনে প্রবেশ না করে বাহিরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে ইরফানের কিছু প্রয়োজন হয় কিনা।।বাড়ির সবাই প্রথমে অবাক হলে পরে হেসে যে যার কাজে চলে যায়।।। ইরফান কিচেন এপ্রোন পরে এক এক সব উপকরণ ইউটিউব দেখে রেডি করে নিচ্ছে,খুব ফাস্ট ফাস্ট করছে দেখে মনে হচ্ছে একজন দক্ষ রাঁধুনি। খুব মনোযোগ সহকারে সুন্দর ভাবে সব ফটাফট করে ফেলেছে।।আয়ানা হা করে ইরফানের সব কাজ পর্যবেক্ষণ করছে কী সুন্দর করে করছে ইরফান সবকিছু।। ইরফান কয়েকটা সেলাট আর আপেল কেটে আয়ানাকে খেতে দিলো আয়ানাও কোনো কিছু না বলে পা দোলাতে দোলাতে সেলাট খাচ্ছে আর ইরফানের রান্না দেখছে। ইরফান সব কিছু রেডি করা শেষ করলে এক এক করে সব উপকরণ দিয়ে রান্না শুরু করে দিয়েছে।আয়ানা গর্বিত বোধ করে বললো,,,
—-বাহ! আপনি তো বেশ ভালো রান্না করতে জানেন।এর সম্পূর্ণ ক্রেডিট কিন্তু আমার উপরে যায়।।ভাব নিয়ে।।
ইরফান চুলার আঁচ কমিয়ে দিয়ে আয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে কিছুটা ঝুঁকে গিয়ে দুহাত আয়ানার দুই দিকে রেখে মুখটা আয়ানার মুখ বরাবর এগিয়ে নিয়ে বললো,,,
—-কেনো?ভ্রু নাচিয়ে।
আয়ানা মাথাটা কিছুটা পিছিয়ে নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আপেলের টুকরো মুখে নিয়ে অস্পষ্ট সুরে বলে উঠলো,,,
—-আ-অবশ্যই ! আপনি আমার জন্য আজ প্রথম রান্না করছেন হোক সেটা ইউটিউব দেখে কিন্তু কারনটা তো আমি তাই না।তো ক্রেডিট তো আমার উপরে যায়। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।
ইরফান বাঁকা হেসে আয়ানার চুল সহ ঘার শক্ত করে ধরে নিজের দিকে মুখ ফিরিয়ে একদম নিজের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে ঘার বাঁকিয়ে ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলল,,,
—-সকালের চুমু গুলো কম হয়েছে আবার খেতে ইচ্ছে করছে। সমস্যা নেই আমি এখন আবার দিচ্ছি। শুধু তুমি ক্রেডিট নিলে চলবে আমাকেও তো নিতে হবে গুড কিসারের ক্রেডিট।কী বলো?ভ্রু নাচিয়ে।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানার গলায় খাবার আটকে গিয়েছে সে জোরে জোরে হিচকি দিতে লাগলো তা দেখে ইরফান রেগে ধমক দিয়ে বলল,,,
—আয়ুয়ু!দেখে খাবে তো। এতোটা কেয়ার ল্যাস কী করে হতে পারো যদি কিছু হয়ে যায় তো।।মাথায় হাত বুলিয়ে পানি খাইয়ে।।।
পানি খাওয়ার ফলে হিচকি থেমে যায়। ইরফান তাকে আরো কিছু বলতে নিবে সে বাঁচার জন্য উল্টো রাগ দেখিয়ে বলে,,,,,
—-জলদি জলদি রান্না করুন তো আমার ক্ষুধা পেয়েছে আর আ-আপনি তো কথা বলেছেন তাই হিচকি উঠেছে। জানেন না খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই। এখন সব দোষ আমার।যতো দোষ নন্দ ঘোষ।মুখ ফুলিয়ে।।
আয়ানা বাঁচার জন্য এমন করছে তা দেখে ইরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলে শান্ত দৃষ্টিতে আয়ানার দিকে তাকিয়ে রইল।আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে রান্না করতে লাগলো।
রান্না শেষ হলে আয়ানাকে টেস্ট করালো।আয়ানা খেয়ে হা হয়ে গিয়েছে। অনেক মজাদার হয়েছে একদম দারুন।আয়ানা মুচকি হেসে ইরফানের গলা জড়িয়ে বাচ্চাদের মতো করে বললো, একদম বেস্ট একশো তে একশো। আমার তো এখনি সবটা খেয়ে নিতে ইচ্ছে করছে।আয়ানার কথা শুনে ইরফান হেসে দিয়ে আয়ানাকে কোলে তুলে নিলো আর বলে উঠলো,,,
—-ফ্রেশ হয়ে খাবে কেমন ।।
—-ওকে! মাথা নাড়িয়ে।।
যাওয়ার আগে র্সাভেন্টকে খাবার রেডি করতে বলে আয়ানাকে নিয়ে নিজেদের রুমে চলে যায়।।
“টেবিলে খাবার সাজিয়ে রাখার পর এক এক করে সকলে টেবিলে উপস্থিত হয়।সকলে ইরফানের তৈরি বিরিয়ানি খেয়ে বেশ খুশি হলো।আয়ানা খাচ্ছে আর মনে মনে সাজাচ্ছে ইরফান কী করে রান্না করলো।সে ভেবে রেখেছে সেও রান্না করবে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই সবার রুমে চলে যায়।আয়ানা রুমে এসে ঝটপট ইরফানের বুকে মাথা রেখে ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়। খুব ক্লান্ত সে সারাদিন ঘুমিয়েও জেনো ঘুম শেষ হচ্ছে না। ইরফান মৃদু হেসে আয়ানার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো টেবিলের উপর থেকে ঔষুধ আর পানি নিয়ে আস্তে করে ঘুমের মাঝে ঔষুধ খাইয়ে দিলো।।। আগামীকাল তাকে নিজেদের স্পেশাল ডেন্জারেস ওয়াল্ডে যেতে হবে নিশান উদ্দিনের সকল লোকদের আটক করে রেখেছে সেখানে।সব কটাকে খুব যত্ন সহকারে মারবে। ইরফান খানের জানের দিকে কুনজরকারীদের একটু একটু করে কষ্ট দিয়ে মারবে।। ভেবে বাঁকা হাসলো ইরফান।।নিশান উদ্দিন কোথাও ছদ্মবেশে লুকিয়ে আছে তাঁকেও খুব শীঘ্রই উপরে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।।।।।আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলতে লাগলো,,,
—-খুব শীঘ্রই তোমার ক্ষতি করার চেষ্টা যারা করেছে তাদের আমি চিরনিদ্রায় শায়িত করবো। তোমার ক্ষতি করার চিন্তা যারা করে তাদের আমি জীবিত রাখি কি করে বলো।।। কেউ তোমাকে নিয়ে ভাবলেও আমি সহ্য করতে পারি না সেখানে তোমার ক্ষতি কখনো নয়! দাঁত কিরমির করে।।
আয়ানার ঠোঁটে হালকা ঠোঁট ছুঁইয়ে বেশ অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে যায় ইরফান।।।
🦋🦋পরের দিন”””
বিছানায় আধশোয়া হয়ে কোলে হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় বই হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম।এই হতে কয়েকশো বার যে এই বইটি পড়েছে আয়ানার মনে নেই যতো পড়ে ততো পড়তে ইচ্ছে করে।।
হিমুর হাতে নীলপদ্ম গল্পের শুরুটা হয় একটা সুন্দর দিনের শুরু দিয়ে। সেখানে স্বভাবসুলভ পাগলামিতে মেতে আছে হিমু। হঠাৎ দেখা মারিয়া নামের এক মেয়ের সাথে।। হুমায়ূন আহমেদের নায়িকাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মারিয়া ছিল দুর্দান্ত সুন্দরী।এই মারিয়া পাঁচ বছর আগে সাংকেতিক ভাষায় এক প্রেমপত্র দিয়েছিল হিমুকে। হিমুর ফুফাতো ভাই বাদল প্রেমপত্রের অর্থ উদ্ধার করেছিল, কিন্তু হিমু সেটা শুনতে চায় নি।
এই জনপ্রিয় উপন্যাসটি পাঠক মহলের সকলের মনে গেঁথে গিয়েছে। উপন্যাসে হুমায়ূন আহমেদ হিমুর মাধ্যমে দেখিয়েছেন কিভাবে সমাজের বাধা-বিপত্তি , সীমাবদ্ধতা,মায়া মমতার উর্ধ্বে উঠে নিজের জীবন কিভাবে গঠন করা যায়, কিভাবে ভিন্ন মানুষ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।আর সবচেয়ে বড় কথা হলো যে তিনি হিমুর মাধ্যমে আমাদেরকে জ্যোৎস্নাকে নতুন ভাবে চিনতে শিখিয়েছেন।
আয়ানা যখন গল্পে নিজের সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে রেখেছিল তখন ইরফান রুমে প্রবেশ করে সোজা আয়ানার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো তখনো আয়ানার সম্পূর্ণ ধ্যান বইয়ে। হঠাৎ খুব কাছ থেকে ইরফানকে অনুভব করলে আয়ানা মৃদু হেসে ইরফানের দিকে তাকালো। ইরফান আলতো ভাবে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো আয়ানা ধরতে যাবে তাঁর আগে ইরফান সরে দাঁড়িয়ে বললো,, ফ্রেশ হয়ে আসছি বিনিময়ে আয়ানা হেসে বইয়ের পাতায় দৃষ্টি দিলো। ইরফান আয়ানার দিকে কিছুক্ষণ শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে ওয়াশ রুমে ফ্রেশ হতে চলে যায় আর বিরবির করে বলতে লাগলো,,,এই খুনি হাতে আমার পবিত্র পরীকে স্পর্শ করা যাবে না। এটাতে পাপীদের রক্ত লেগেছে,এই হাতে ঔ ডাসবিন গুলোকে খুব সুন্দর করে মৃত্যু দিয়েছে।এই হাত পরিষ্কার না করে তাঁর জানকে স্পর্শ করা যাবে না তাহলে তাঁর জানের শরীরে ময়লা লেগে যাবে।।।
“ফ্রেস হয়ে একটা কলো টি শার্ট পড়ে সাথে কালো টাওজার পরে চুল মুছতে মুছতে বের হয় ইরফান।আয়ানা এখনো বই পড়ছে। ইরফান মুচকি হেসে তোয়ালেটা সোফার উপরে রেখে বিছানায় এসে আয়ানার কোল থেকে বইটা সরিয়ে সোজা উবুত হয়ে শুয়ে পরে।দুই হাত শক্ত করে কোমরে জড়িয়ে পেটে মুখ গুজে শুয়ে ধীরে গলায় বলল,,,
—-চুলে হাত বুলিয়ে দাও তো আয়ু জান।ঘুম পাচ্ছে।।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা মৃদু হেসে চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।ইরফান বাচ্চাদের মতো আয়ানার কোলো চোখ বন্ধ করে রেখেছে।। ইরফানের গরম নিঃশ্বাস কাপড় ভেদ করে আয়ানার পেটে আঁচড় খাচ্ছে যার কারণে শিউরে উঠছে আয়ানা । ইরফান মুখ গুজা অবস্থায় হালকা ঠোঁট ছুঁইয়ে দিচ্ছে যাতে বারবার কেঁপে উঠছে সে।।আয়ানা ইরফানকে একটু ধাক্কা মেরে বললো,,,
—–উফফ্ ইরফান আমার সুরসুরি লাগছে ছাড়ুন।।
//লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম//
আয়ানার কথা শুনে ইরফান এক চুল তো নড়েনি উল্টো আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে লাগল।তাই বাধ্য হয়ে আয়ানা চুপ করে গেলো।।আয়ানাকে নাড়াচাড়া করতে না দেখে ইরফান মুচকি হেসে আগের মতো কোমর জড়িয়ে শুয়ে থাকলো।।আয়ানা জানে ইরফানকে যে জিনিসটা না করা হবে সেটা সে বেশি করে করবে আর রোমান্সের সময় বাঁধা দিলে তাঁর পানিসমেন্টও পেতে হবে।সব কিছুতে পানিস্টমেন্ট ভেবে মুখ ফুলিয়ে নিলো আয়ানা ।।।কিছূ সময় অতিবাহিত হলে ইরফান শান্ত গলায় বলে উঠলো,,,
—–আজকে রাতে ডিনার বাহিরে থেকে করবো। তোমার পছন্দের হোটেল থেকে। ঠিক আছে।
আয়ানা চোখ ছোট ছোট করে বলে উঠলো,,,,
—-গত সপ্তাহে তো ডিনার করেছি বাহিরে এখন আবার কী উপলক্ষে ডিনার করতে যাবো।
ইরফান আয়ানার দিকে একটু তাকিয়ে পুনরায় আগের মতো শুয়ে গম্ভীর গলায় বললো,,
—–গত সপ্তাহে গিয়েছো তো কী হয়েছে?আর গত সপ্তাহে কী কোনো উপলক্ষে গিয়েছো।।
আয়ানা বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টিয়ে আস্তে করে না বললো।।।
—তাহলে! রাতে ডিনারে যাচ্ছি। এখন মাথায় হাত বুলিয়ে দাও আমি ঘুমাবো। বলে আয়েস করে কোমর জড়িয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।।।
আয়ানাও বাধ্য মেয়ের মতো হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। কিছুক্ষণের মাঝে ইরফান ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়।আয়ানা মুচকি হেসে ইরফানের মাথায় হাল্কা করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো।।। ইরফানের দিকে একমনে তাকিয়ে রইল।আর মনে মনে ভাবলো,আমি কতো ভাগ্যবতী যে ইরফানের মতো হাসবেন্ড পেয়েছি। সত্যি খুব খুশি সে ইরফানের মতো কাউকে পেয়ে।এমন জীবন সাথী সে চেয়েছিল আল্লাহ তা দিয়েছে বরং চাহিদার চেয়ে হাজার গুণ বেশি দিয়েছে।।।।
কিন্তু এতো এতো ভালোবাসা যে মানুষকে কষ্ট দেয় ।। বেশি ভালোবাসা হারানোর ভয় থাকে।।আয়ানার কেনো জানি হঠাৎ করে খুব ভয় করছে মনে হচ্ছে হারিয়ে যাবে সে ইরফান থেকে অনেক দূরে।।যদি এমন হয় ইরফান ও যে শেষ হয়ে যাবে তাঁর সাথে তখন সবাই তাদের ভালোবাসাকে বলবে পরিপূর্ণ হয়েও হলো যেমনটা শেষ হয়েও হয় না ঠিক সেইরকম।।।কথা গুলো ভেবে ইরফানের দিকে গাঢ় দৃষ্টিতে তাকালো।মনটা কেমন কু ডাকছে ।।। সত্যি কী খুব খারাপ কিছু হতে চলছে তাদের জীবনে।।।।
“রাত আটটা,,,🌸
ইরফান আয়ানা রেডি হয়ে গাড়ির সামনে আসতে একজন গার্ড গাড়ির দরজা খুলে দিতে আয়ানা উঠে বসে অপর পাশের গার্ড দরজা খুলে দিতে ইরফান বসে পড়ে।গাড়ি ছুটে চলে কাশ্মীরের সবচেয়ে জনপ্রিয় হোটেলে, সেখানে আজকে রাতের ডিনার করবে।। তাদের পেছন পেছন আসে ইরফানের গার্ডের দুটো গাড়ি আর সামনে দুটো।।আয়ানা ইরফানের কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রেখেছে।। ইরফান আয়ানার কপালে আলতো হাতে ছোঁয়ে বললো,,,
—কী হয়েছে আয়ু? শরীর খারাপ করছে বাড়ি যাবে।।। উত্তেজিত কন্ঠে।।
আয়ানা চোখ বন্ধ অবস্থায় মৃদু হেসে বলল,,,,
—আপনার কাঁধে এইভাবে মাথা রাখতে আমার প্রচন্ড ভালো লাগে। আমি ঠিক আছি।টেনশন নিবেন না।।।
ইরফান কিছুটা শান্ত হয়ে মুচকি হেসে আয়ানাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো আয়ানাও আয়েস করে বুকের সাথে মিশে রইলো।।।বেশ অনেকক্ষণ পর গাড়ি এসে থামলো কাশ্মীরের সবচেয়ে বড় এবং দামি হোটেলে। এখানে প্রতিবার আসে। এখানকার চিকেন ফ্রাই খুব পছন্দের আয়ানার তাই এখানে আজকে রাতের ডিনারে এসেছে।
“একটা কেবিনে প্রবেশ করতে কয়েকজন র্সাভেন্ট মাথা নিচু করে ওয়েল কাম জানিয়ে বের হয়ে গিয়েছে।আয়ানা পরনের সাদা জ্যাকেটটা খুলে চেয়ারে রেখে বসে পরে তাঁর পাশে ইরফান বসেছে।।।খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে কেবিনটা। পাশে সাউন্ড বক্সে হালকা সফট রোমান্টিক গান প্লে করে রেখেছে। চারিদিকে বিভিন্ন ফুল আর ক্যান্ডেল দিয়ে সাজানো সাথে কাঁচের সাদা লাইট জ্বালানোতে অসাধারণ সুন্দর লাগছে।। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে দেখলো আয়ানা চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব কিছু দেখছে তা দেখে মৃদু হাসলো সে।।আয়ানা কোথাও গেলেই আশেপাশে দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ইরফান বুঝতে পারে না এতো কী দেখে মেয়েটা।।। ইরফান আলতো হাতে কপালের চুল গুলো কানের পেছনে গুজে দিয়ে বললো,,,,
—-পছন্দ হয়েছে।।
আয়ানা মন ভোলানো হাসি দিয়ে বললো,,,,
—-সবসময়ের মতো অনেক অনেক বেশি । ইরফান কে জড়িয়ে ধরে।।ইরফানও মুচকি হেসে জড়িয়ে ধরলো।।। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিতে এক এক করে কয়েকজন র্সাভেন্ট অনেক গুলো খাবারের ডিস দিয়ে টেবিল সাজিয়ে চলে গেলো।।আয়ানা খাবারের দিকে তাকিয়ে চোখ ছোট ছোট করে বললো,,,,
—-এতো খাবার কেনো। এগুলো কে খাবে।।।
ইরফান হাতা ফ্লোড করতে করতে বললো,,,
—-কেনো তুমি!
আয়ানা ইরফানের কথা শুনে ঢোক গিলে বললো,,,
—উহু না।।এক কাজ করুন সব খাবার প্যাকিং করে দিতে বলুন বাসায় গিয়ে সবাই মিলে খাবো।।
ইরফান আয়ানার দিকে শান্ত ভাবে তাকিয়ে খাবার নিজের সামনে নিয়ে আয়ানাকে খাওয়াতে লাগলো,,,
আয়ানা খাচ্ছে আর বকবক করে বলছে,আমি কিন্তু সব খাবার খাবো না।।
ইরফান বিরক্তি হয়ে গম্ভীর গলায় বললো,,,
—-ওকে মেরি জান।তুমি যতোটুকু খেতে চাইছো এর থেকে বেশী খেতে হবে না।হ্যাপি।
আয়ানা দাঁত কেলিয়ে বললো,অনেক।।।
ইরফান আর কিছু বললো না শুধু বিরবির করে বললো,,, পিচ্চি শুঁটকি মাছ।।।
ইরফানের কথা না শুনতে পেরে আয়ানা ঠোঁট উল্টিয়ে বললো,,
—-কী বললেন??
—কিছু না। নুডলস্ মুখে দিয়ে।।
ইরফান আয়ানাকে খাইয়ে দিয়ে নিজে খেতে নিলে আয়ানা বলে উঠলো,,,,
—-সবসময় আপনি আমাকে খাইয়ে দেন আজ আমি আপনাকে খাইয়ে দিবো। শুধু আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন আমিও বাসি হু। বলে খাইয়ে দিতে লাগলো।।।
ইরফান আয়ানার কথা শুনে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো মুখে।সে খুব তৃপ্তি নিয়ে খাবার খেতে লাগলো।আর এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তাঁর পিচ্চি পরীর দিকে।।।
কেমন পিচ্চি পিচ্চি হাত দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে আর অনেক অনেক কথা বলছে যা ইরফান শুনতে পারছে না সে তো তাঁর জানকে দেখতে ব্যস্ত।।। ইরফানের ইচ্ছে করছে খাবারের সাথে আয়ানার সুন্দর তুলতুলে নরম হাত খেয়ে ফেলতে তা নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে না রেখে কামড় বসিয়ে দিলো আয়ানার হাতে ।।আয়ানা নাক মুখ কুঁচকে বলে উঠলো,,,,
—-একদম দুষ্টুমি করলে খাইয়ে দিবো না কিন্তু।
ইরফান আয়ানার কথা শুনে মৃদু হেসে চুপচাপ খেতে লাগলো।।।।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে তাঁরা হোটেল থেকে বের হয়ে গেল।।।গাড়ি নিয়ে চলে গেল সেই ব্রিজে যেখানে আয়ানা ইরফান এসেছিল কিছুদিন আগে।।।আয়ানার খুব পছন্দের জায়গা এটা তাই আয়ানা আসার কথা বলাতে এখানে নিয়ে আসে।।।
“ইরফান আর আয়ানা গাড়ি থেকে নেমে ব্রিজের আগের জায়গায় পৌছায় যেখান থেকে ঝর্নার কলকল ধ্বনি কানে আসে। রেলিং ধরে আয়ানা নিচের নদীর পানি দেখছে আর ইরফান তাকে জড়িয়ে ধরে তাকে দেখছে।।।। তাদের থেকে বেশ কিছুটা দূরে গার্ডরা দাঁড়িয়ে আছে বন্দুক নিয়ে।। তাদের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আয়ানা গাল ফুলিয়ে ইরফানকে বললো,,,,
—আমার না এতো গার্ডের মাঝে থাকতে একদম ভালো লাগে না। হোক আমাদের থেকে দূরত্ব রেখে কিন্তু কেমন বন্দি বন্দি মনে হয়।।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান হেসে দিয়ে আয়ানার গাল টেনে দিয়ে বললো,,,,
—-গার্ড আমাদের সাথে থাকে কারন আমাদের অনেক শত্রু যারা তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে সরাতে চাচ্ছে। আমি তোমাকে নিয়ে কোনো রিস্ক নিতে চাই না তাই তোমাকে এইভাবে থাকতে হবে।স্যরি মেরি জান আমি তোমার এই ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারছি না।দুই হাত গালে রেখে ।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা মৃদু হেসে ইরফানের গালে নিজের হাত রেখে বললো,,,,
—-আপনার মতো থাকতে আমার একদম কষ্ট হয় না।আপনার প্রতিটা নিয়ম মেনে আপনার সাথে থাকতে আমার কোনো সমস্যা নেই।।আপনার মতো করে আমি নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি।। আপনার অসীম ভালোবাসায় আমাকে নতুন ভাবে সব বুঝতে শিখিয়েছে। বুঝতে শিখিয়েছে ভালোবাসার মানে।।আপনার নিয়মে চলে আমি অবস্ত হয়ে গিয়েছি।।। খুব ভালোবাসি ইরফান আপনাকে।।।আয়ানার কথা শুনে ইরফান মাথা নিচু করে মৃদু হাসলো।।।আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরল।।।
হঠাৎ আয়ানার চোখ গেলো একগুচ্ছ সাদা শাপলা হাতে একটা দশ কি এগারো বছরের বাচ্চা ছেলে মাথা নিচু করে তাড়াতাড়ি করে তাদের পেছন দিয়ে যাচ্ছে।। ছেলেটার পরনের কাপড় ভিজে শরীরের সাথে মিশে আছে দেখে বুঝা যাচ্ছে এখানে কোন একটা ঝিল থেকে এই শাপলা সংগ্রহ করেছে নিশ্চয়ই আগামীকাল বিক্রি করার আশায়।।ছেলেটা প্রচন্ড ভয় পেয়েছে ইরফান ও তাঁর লোকদের দেখে।। ইরফান খান যেখানে যান তাঁর আদেশ ছাড়া সেখানে উপস্থিত নিষেধ।।। এখন না জানি গর্দান যায় এটা ভেবে কাঁপা কাঁপা পায়ে সামনে এগোচ্ছে আর মনে মনে ভাবছে এই বুঝি তাঁর ডাক আসলো,এই বুঝি তাঁর শরীর থেকে মাথা আলাদা করে ফেলেছে।। ভীষণ ভয় পায় ইরফানকে সকলে।।সে তো জানতো না ইরফান এখানে আসবে জানলে এখানে উঁকিও দিতো না কখনো।।আয়ানা ছেলেটিকে দেখে ডাক দিলো তাঁর ডাকে ইরফানের হুঁশ ফিরে আসে সে এতোক্ষণ ঘোরে ছিল। পেছনে তাকিয়ে দেখলো একটা ফর্সা মত রোগা ছেলে দাঁড়িয়ে থরথর করে কাঁপছে। ইরফান ভ্রু কুঁচকে কতোখন ছেলেটাকে দেখে আয়ানার দিকে তাকালো।আয়ানা ইরফানের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে দৌড়ে ছেলেটার কাছে গেলো ইরফান ও তাঁর পেছন পেছন এগিয়ে গেলো পেছন থেকে গার্ডরা ছেলেটাকে দেখে এগিয়ে আসতে নিলে ইরফান হাত দিয়ে থামিয়ে না আসতে বলে।।আয়ানা ছেলেটার সামনে দাঁড়াতে দেখতে পেলো ছেলেটা আগের তুলনায় আরো বেশি কাঁপছে মনে হচ্ছে ধাক্কা দিলে জ্ঞান হারাবে।।। মূলতঃ ইরফান কে এগিয়ে আসতে দেখে ছেলেটার ভয়ের পরিমাণ আরো বেরে গিয়েছে।।আয়ানা ছেলেটাকে হাসি হাসি মুখ করে বললো,,,,
—-এই তোমার হাতের ফুল গুলো আমাকে দিবে আমি এর জন্য তোমাকে টাকা দিবো।দেবে আমাকে ফুল গুলো। খুব সুন্দর। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।।
আয়ানার কথা শুনে ছেলেটা মাথা নিচু করে সমানে নাড়তে লাগলো যার অর্থ সব দিয়ে দিবে।।আয়ানা খুশি হয়ে মুচকি হেসে বলল,,,,
—-শুনো ওনাকে ভয় পেতে হবে না।ওনি নয় বাঘ আর নয় ভাল্লুক।দেখেছো আমি কেমন ওনার সাথে থাকি কিন্তু একদম ভয় পাই না।ভাব নিয়ে।।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে আছে আয়ানার দিকে।ছেলেটা এখনো মাথা নিচু করে রেখেছে।আয়ানা তাকে মাথা তুলতে বললে সে মাথা নাড়িয়ে থেমে থেমে বললো,,, মালিকের সামনে মাথা তোলা নিষেধ। তাহলে তাকে অসম্মান করা হবে আর আমি আমার মালিককে খুব সম্মান করি সাথে আপনাকেও মালকিন।।।
ছেলেটার সুন্দর কথা শুনে আয়ানা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইল ছেলেটার দিকে। সত্যি তো আমরা মিথ্যা ছাড়া অনেক কারনে চোখে চোখ রেখে কথা বলি না । মুখলজ্জা আর সম্মান এই দুটোতে কখনো চোখে চোখ রেখে কথা বলা যায় না।।।আমরা যাদের সম্মান করি কখনো তাদের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারি না ।সবসময় অন্যদিকে তাকিয়ে কথা বলি এতে সম্মান বজায় থাকে।।।
ইরফান ছেলেটিকে ভালো মতো পর্যবেক্ষণ করে শান্ত গলায় বললো,,,
—-নাম কী?
ছেলেটি ঢোক গিলে বললো,,,
—-জ্বী হুজুর রাহিম।।মাথা নিচু করে।
—-এতো রাতে এখানে কী করছো? তুমি জানো না বাচ্চা ছেলেদের নয়টার পর বাড়ি থাকার নির্দেশ শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিশেষ করে এই এরিয়াতে।।। থমথমে গলায়।।
ছেলেটি ভয় পেয়ে বললো,,,
—জ্বী জ্বী হুজুর জানি। আসলে আমার এই শাপলা গুলো নেওয়ার ছিল উওরের ঝিল থেকে আগামীকাল বাজারে বিক্রি করবো।। কোচিং এর জন্য আসতে পারিনি তাই কোচিং শেষে এসেছি এগুলো নিতে।।। আপনি বলেছিলেন পড়াশোনার পাশাপাশি বাবা মাকে কাজে সাহায্য করতে। আমার বাবা ফুল বিক্রি করে তাঁর সাথে আমিও পড়াশোনার ফাঁকে একটু আকটু সাহায্য করি। শেষের কথা বলার সময় ছেলেটা মাথা নিচু করে হেসে হেসে বললো।।।কী সুন্দর সেই হাসি।আয়ানা মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলো। কতোটা ভারোবাসে এরা ইরফানকে।।।
ইরফান অনেক সময় ছেলেটাকে দেখে মৃদু হেসে বলল,,,
—–কতো টাকা বিক্রি করবে ফুল গুলো।।
—-না না হুজুর আমার টাকা লাগবে না আমি ম্যামকে সব ফুল দিয়ে দিচ্ছি। বলে আয়ানাকে সব ফুল দিয়ে দিলো। ইরফান হেসে এক হাজার টাকার কতো গুলো নোট হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলো,,,গো।।ছেলেটা মাথা নাড়িয়ে দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো।।।আয়ানা ইরফানের সামনে সামনে দাঁড়িয়ে বললো,,,
—-বাহ মি.ভিলেন তো সবার চোখে খুব নামি হিরো। হেসে দিয়ে।।
ইরফান আয়ানার কোমর জড়িয়ে ধরে বললো,উহু হিরো নয় শুধু ভিলেন। মিসেস আয়ানা খানের #The_Villain বর।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা হেসে দিয়ে ইরফানের কপালে চট করে চুমু খেয়ে দৌড়ে চলে গেল আর ইরফান হা করে তাকিয়ে রইল।।আয়ানা সাদা শাপলা গুলো নিয়ে দুই হাত প্রশারিত করে ঘুর খাচ্ছে আর জোরে জোরে চিৎকার করে বলছে,,,,
—–আই লাভ ইউ মি.এরোগেন্ট ম্যান। খুব খুব খুব ভালোবাসি আপনাকে। আপনাকে ছাড়া বাঁচার কথা কল্পনাও করতে পারি না।আপ,,,,,,,,,,,,,,,
ঠাস করে আওয়াজ হতে ইরফান আয়ানার দিকে তাকালো।।আয়ানার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে ইরফানের দিকে হঠাৎ আরেকটা ঠাস করে গুলির আওয়াজ হতে ইরফান আয়ানা বলে চিৎকার করে ছুটে যায়। কিন্তু এতোক্ষণে আয়ানা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গিয়েছে।।হাত অটোমেটিক বুকের ডান পাশে চলে গিয়েছে। হতের থেকে স্বল্প পরিমাণ দূরত্ব থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে যা দেখে আয়ানা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,র-রক্ততত।।
আরেকটা গুলি ব্রিজের নিচ থেকে আসবে তাঁর পূর্বেই ইরফান নিজের বন্দুক দিয়ে গুলি ছুড়তে লাগলো গুলি মারা ব্যাক্তিদের দিকে।। তাক করে গুলি ছুড়ার সাথে সাথে নিচে পরে যায় লোকগুলো। তাঁর গার্ডরা গুলি ছুড়ছে যার কারনে নিমিষেই ঝাঁজরা হয়ে যায় লোক গুলোর বুক আর সাথে সাথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সবকটা।।নিশান উদ্দিন দৌড়ে গিয়ে পালাতে যাবে ইরফান তাঁর পা বরাবর গুলি ছুড়ে আর চিৎকার করে গার্ডদের বলে এটাকে বাঁচিয়ে রাখ।।কী হিংস্র সেই চিৎকার কী হিংস্র সেই রূপ যেই রূপে ছারখার করে দিচ্ছে সব কিছু।। এমন হিংস্র রূপ দেখে গার্ডরা পর্যন্ত দিশেহারা হয়ে গিয়েছে তারাতাড়ি করে গাড়ি নিয়ে ইরফানের সামনে যায়।।। ইরফান উন্মাদের মতো আয়ানাকে বুকে জড়িয়ে চিৎকার করে কান্না করছে আর পাগলের মত মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে,,,
—-খুব কষ্ট হচ্ছে মেরি জান।একটু সহ্য করো আমি তোমার সব কষ্ট লাগব করে দিবো। তোমার কিছু হবে না জান।আমি ছাড়বো না কাউকে।। জোরে চিৎকার করে।।।
আয়ানা ঘোলা ঘোলা চোখে ইরফানকে দেখছে তাঁর কানে কথা যাচ্ছে না কেমন নিস্তেজ লাগছে সব কিছু।। হাতের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে সাদা রঙের উরনাটার অনেক অংশ।।হাত বললে ভুল হবে হাত আর বুকের মাঝামাঝি অংশে গুলি লেগেছে।।।
আয়ানাকে ঠোঁট নাড়তে দেখে ইরফান বললো,,,,,
—ভয় পেও না মেরি জান আমি আছি তো কিছু হবে না তোমার আই প্রমিস।খুব ভালোবাসি তোমাকে। কেনো আল্লাহ আমার মূল্যবান জিনিসকে আঘাত দিয়েছে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আয়ু।।প্লিজ উঠো আর আমাকে জড়িয়ে ধরে বলো ভালোবাসি এরোগেন্ট ম্যান।। আচ্ছা ভালোবাসি বলতে হবে না শুধু কথা বলো একটু।।।
পাগলের মতো ব্যবহার করছে ইরফান একজন গার্ড ভয়ে ভয়ে বললো,,,
—স্যার চলুন ম্যামকে হাসপাতালে নিতে হবে খুব রক্ত ঝরেছে।।।
গার্ডের কথা শুনে ইরফান হুংকার দিয়ে বললো,,,,
—-কিচ্ছু হবে না আয়ুর।। তোদের একটাকেও আমি বাঁচিয়ে রখবো না।একটাকেও না।।।
ইরফানের কথা শুনে গার্ড ভয়ে জড়সড় হয়ে গিয়েছে।। হঠাৎ আয়ানা নিভু নিভু চোখে ইরফানের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,
—-আ-আমার খুবব ক-কষ্ট হচ্ছে ইরফান।। আমি বাঁচতে চাই। আপনার সাথে আরো অনেক দিন বাঁচতে চাই।। আমি আ-আপনার থেকে দূরে যেতে চাই না।প্লিজজজজজ।
ইরফান আয়ানার কথা শুনে উন্মাদের মতো সারা মুখে চুমু খেতে লগলো আর বলতে লাগলো,,,
—-কিছু হবে না আয়ু জান আমারা এখুনি হাসপাতালে যাবো আর তুমি ঠিক হয়ে যাবে তুমি একটু ধৈর্য ধর। বলে কোলে তুলে গাড়িতে উঠে বসলো। ইরফান আয়ানাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বসে আছে। থরথর করে কাঁপছে তাঁর শরীর।প্রিয় জিনিস হারানোর ভয় ঘিরে ধরেছে তাকে।।এতো দিনের জমানো শত ভয় আজ সত্যি হয়ে গিয়েছে।।।ইরফানের রুমালটা চেপে রেখেছে আয়ানার ক্ষত স্থানে।।আয়ানাকে বারবার চোখ বন্ধ করতে নিষেধ করছে নানা কথা বলে আয়ানার সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে।আর উন্মাদের মতো বলছে জলদি গাড়ি চালাতে।হাই স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে তবুও জেনো রাস্তা শেষ হচ্ছে না।আয়ানা মিনমিনে গলায় বললো,,,
—আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরুন না আমার ভয় করছে খুব।।।।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে এতোটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আয়ানা সুস্থ থাকলে নিশ্চয়ই বলতো, উফ্ এরোগেন্ট ম্যান আস্তে ধরুন আমি তো শ্বাস না ফেলতে পেরে ইন্তেকাল করবো আর তখন রেগে ইরফান তাকে ইচ্ছে মতে বকে দিতো সাথে পানিশমেন্টও।।।। হঠাৎ আয়ানার শ্বাস খুব জোরে জোরে ফেলতে লাগলো যা দেখে ইরফান ভয়ে আয়ানার গালে হাত রেখে ডাকতে লাগলো কিন্তু আয়ানা রেসপন্স করছে না।। ইরফান পাগলের মতো ডাকতে লাগলো।। আয়ানা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে ইরফানের বুকে।। ইরফানের সাদা পরীটার এই অবস্থা দেখে নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে।।
তাহলে এটাই কী #বিশাক্তময়_আসক্তির শেষ পরিণতি।। এখানে কী থেমে যাবে সবকিছু নাকি একটা নতুন সকাল নিয়ে আসবে সুখের খোঁজ।। ইরফানের বলা কিছু আবেগময় কথা,,
“ভালো সবাই ভাসতে পারে কিন্তু রক্ষা কয়জনে করতে পারে? তুমি যদি ভালোবাসা রক্ষা করতে না পারো তাহলে তুমি কি কখনো ভালোবেসেছো।।আমি ভালোবাসা রক্ষার্থে হিংস্র আয়ু জান।।।।
তাহলে কী আয়ানার শূন্যতা ইরফানকে আরো হিংস্র করে দিবে নাকি আয়ানাকে রক্ষর্থে ইরফান আগের মতো হিংস্র থেকে যাবে। দুটো কথা একই রকম মনে হলেও এদের ভিন্নতা অনেক আর দুটো কথা একজনকে জুরে আর সে হলো ইরফানের আয়ু জান।।।
(গল্পটা কেমন হয়েছে সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবেন। আগামীকাল গল্প সম্পূর্ণ লিখা ছিল কিন্তু ফেইসবুকে ডুকতে না পারায় পোস্ট করতে পারিনি। এখন অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে, ফেইসবুকে ডুকতে না পারলে গল্প লেখা কি করে শেষ করেছেন। তাহলে তাদেরকে আমি বলবো আমার মোবাইলে একটা নোট apps আছে আমি কিছুদিন যাবত ঔটায় গল্প লিখি পরে পোস্ট করি।এতে করে ক্যারেন্ট কিংবা নেট না থাকলেও লিখে রাখা যায় ।। ধন্যবাদ সবাইকে 💞)
#Happy_Reading🦋
//লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম✵//