না_চাইলেও_তুমি_আমার পর্বঃ ১৯

0
3635

না_চাইলেও_তুমি_আমার
পর্বঃ ১৯
জাহান আরা

শীতের সন্ধ্যা,চন্দ্র শাল জড়িয়ে বসে আছে বারান্দায়,খোলা বারান্দায় হুহু করে উত্তরের বাতাস বইছে,কেঁপে কেঁপে উঠছে চন্দ্র।
বারান্দায় গাঁদাফুলের সৌরভ ভেসে আসছে,বারান্দা ভর্তি ফুলগাছে।ডালিয়া,সূর্যমুখী,গোলাপ,গাঁদাগাছে ভরপুর বারান্দা।ছাদ থেকে মেঝে পর্যন্ত বারান্দার গ্রীল।গ্রীলে অপরাজিতা আর বাগানবিলাসের ডাল।কেউ না থাকলেও ফ্ল্যাটের নিয়মিত তদারকি হয় দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
ভীষণ ইচ্ছে করছে এককাপ চা খেতে বারান্দায় বসে বসে,কিন্তু তার উপায় নেই।বারান্দার দরজা বারান্দার দিক থেকে আটকে বসে আছে চন্দ্র নিষাদের ভয়ে,রুমে গেলে যে কোনো একটা ঝামেলা হবে তা চন্দ্র বুঝতে পারছে।
ফ্লোর ভর্তি উপহারের প্যাকেট,জীবনে কখনো এরকম করে কেউ তাকে সারপ্রাইজ দেয় নি,আনন্দে চন্দ্র রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় কেঁদে দিয়েছে।তবে কি আল্লাহ এতোদিনের সব আক্ষেপ মিটিয়ে দেওয়ার জন্যই নিষাদ কে পাঠিয়েছে চন্দ্র বুঝতে পারে না।

মারিয়া একেবারেই চুপ হয়ে গেছে একটা কথাও বলে নি রেষ্টুরেন্টে।মারিয়ার জন্য খুব খারাপ লাগছে চন্দ্রর,কিন্তু উপায় নেই কিছু করার।কতো বড় ভুল করেছে এতোদিন চন্দ্র আজ তা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে।মানুষ সব কিছুর ভাগ দেয় স্বামী ছাড়া অথচ সে কি-না সেই স্বামীকেই ছেড়ে এলো!
কতো বড় আহাম্মক সে!

ঠান্ডা আজ জাঁকিয়ে বসেছে,শালে শীত মানছে না চন্দ্রর,ইচ্ছে করছে কম্বলের ভিতর ঢুকে বসে থাকতে।

উঠে জানালা দিয়ে একবার নিষাদকে দেখে চন্দ্র,হাতে একটা চায়ের কাপ নিয়ে মনোযোগ সহকারে কিছু করছে ল্যাপটপে নিষাদ।

আশ্চর্য তো!
আমি একটা মানুষ এই ঠান্ডায় বারান্দায় বসে আছি অথচ তার কোনো মাথাব্যথা নেই যেনো,একবার আমাকে ডাকার প্রয়োজন মনে করলো না!
রাগ লাগে চন্দ্রর,মনে মনে ঠিক করে নিষাদ না ডাকা পর্যন্ত কিছুতেই রুমে যাবে না।

এশার আজানের পর অনেকটা সময় কেটে যায়,নিষাদ একবারের জন্যও বিছানা থেকে উঠে নি,ল্যাপটপ থেকে ও চোখ সরায় নি।
চন্দ্র বুঝতে পারছে না কি করবে,রাগ করে বসে থাকলে সারারাত ঠান্ডায় জমে বরফ হয়ে যাবে।নিষাদ উঠে গেছে নামাজ পড়তে অন্যরুমে।

নিজেই পরাজয় স্বীকার করে আস্তেআস্তে বারান্দার দরজা খোলে,তারপর অযু করে নামাজ পড়ে নেয়।নিষাদ নামাজ শেষ করে আবার ল্যাপটপ নিয়ে বসে।চন্দ্র আস্তে আস্তে বিছানার দিকে আসে,নিষাদ চোখ তুলেও তাকায় না।
পা টিপে টিপে রুমে আসে চন্দ্র,তারপর বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে পড়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে।

কিছুক্ষণ পর কম্বল কিছুটা ফাঁক করে নিষাদের দিকে তাকায়,নিষাদ এখনো ল্যাপটপে মগ্ন।কি আশ্চর্য!
রুমে একটা মানুষ আছে অথচ সে কথা বলার দরকার ও মনে করছে না?
নিজে থেকেই চন্দ্র নিষাদের দিকে এগিয়ে যায়।নিজের একটা পা দিয়ে নিষাদের পায়ে আস্তে করে লাথি বসায়।
গায়ে মাছি বসলে মানুষ যেমন হাত নাড়িয়ে তাড়িয়ে দেয়,তেমনি একটা ভঙ্গি করে নিষাদ।

বিষয় টা চন্দ্রর আত্মসম্মানে লাগে।
আমাকে মাছির মতো ট্রিট করা হচ্ছে!
আমি কি মাছি না-কি?
আবার একটা লাথি দেয় আরেকটু জোরে,নিষাদ আবারও একইরকম করে।

ভীষণ অবাক হয় চন্দ্র।মানুষ মানুষকে এভাবে উপেক্ষা করতে পারে না-কি!

উঠে নিষাদের গা ঘেঁষে শোয়,নিজের উপস্থিতি প্রমাণের চেষ্টা করে।এতোক্ষণ ভয়ে ছিলো নিষাদ কোনো রাগারাগি করে কি-না তার,এখন মনে হচ্ছে রাগারাগি করলেও সে ভালো ছিলো তবুও এরকম চুপ করে থাকতো না অন্তত কথা তো হতো।রাগারাগির পর তো ঠিক করে কথা বলতো।
নিষাদ কোনো রকম প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না তবুও।চন্দ্র এবার নিষাদের কোমর জড়িয়ে ধরে,ভেবেছিলো এবার হয়তো নিষাদ কিছু বলবে,অন্তত বকাঝকা হলেও করবে।

কিন্তু চন্দ্র কে অবাক করে দিয়ে নিষাদ কোমর থেকে হাত ছাড়িয়ে বিছানা থেকে উঠে গিয়ে সোফায় বসে।
অভিমানে চোখে জল চলে আসে চন্দ্রর।এতো কিসের রাগ নিষাদের,এরকম তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে কেনো!

কিছুক্ষণ চুপ করে শুয়ে থাকে,কিন্তু ভিতর থেকে কে যেনো বারবার বলছে নিষাদের কাছে যেতে।নিজের মন কে শাসায় চন্দ্র,ধমকে উঠে বলে,”খুব যে জামাই জামাই করছো,তুমি যে একটা জলজ্যান্ত মানুষ রুমে বসে আছো,কই তোমার জামাইয়ের তো সেদিকে কোনো খেয়াল নেই,কোনো কথা বলবে না আর,ঘুমাও।”

কিন্তু ঘুমাও বললেই কি ঘুমানো যায় না-কি!

ভিতর থেকে কে যেনো ঘুমাতে দিচ্ছে না,অস্থির করে তুলছে বারবার।

শোয়া থেকে উঠে বসে বিড়বিড় করে নিজেকে নিজে বলে,”এই শেষ বার যাচ্ছি কিন্তু তার কাছে সেধে সেধে,এবার ও যদি আমাকে উপেক্ষা করে আমি একেবারে ঘুমিয়ে যাবো তখন যদি একটা কথা বলো আর ঠাটিয়ে একটা চড় বসাবো দেখো”

তারপর উঠে গিয়ে নিষাদের পাশে সোফায় বসে।ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকায়,নিষাদ কিসের কাজ করছে যেনো বুঝতে পারে না চন্দ্র।জড়িয়ে ধরে নিষাদ কে। চন্দ্রর হাত ছাড়িয়ে দিয়ে নিষাদ বিরক্তিতে “চ” শব্দ উচ্চারণ করে।
চন্দ্র অবাকের সপ্তমে পৌঁছে যায়,গটগট করে গিয়ে বিছানায় উঠে বসে।তারপর শুয়ে পড়ে।
বুকের ভিতর অস্থিরতা কোনোমতে কমছে না দেখে আবার উঠে বসে।ভিতর থেকে কে যেনো বলে,”এবার তো আমি কিছু বলি নি,এবার কেনো উঠে বসেছো?ঘুমাচ্ছো না কেনো এখন?”

ভেংচি দিয়ে চন্দ্র নিজেকে নিজে বলে,”এহ,আসছে একেবারে আর ঘুমের খবর নিয়ে,ওখানে আমার জামাই রাগ করে বসে আছে,আর আমি ষাঁড়ের মতো পড়ে পড়ে ঘুমাবো না-কি!এক চড় বসাবো আমাকে ঘুমাতে বললে আবার।”

ভিতর থেকে কেউ যেনো হেসে উঠে।চন্দ্র আবার উঠে বসে,তারপর নেমে গিয়ে সোফার সামনে ফ্লোরে বসে নিষাদের ২পা জড়িয়ে ধরে।নিষাদের কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই।
এবার সত্যি খুব কষ্ট পায় চন্দ্র,অজান্তেই ২ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে চোখ থেকে।
ল্যাপটপ শাট ডাউন করে নিষাদ পাশে রাখে,তারপর চন্দ্রর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,”সমস্যা কি?
এরকম কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছো কেনো?
স্বামী মারা গেছে না-কি তোমার?
তোমার তো স্বামী -ই নেই,মারা যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।তবে এরকম কান্নাকাটি কিসের?”

নিষাদের কথা শুনে চন্দ্রর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে,কি বলছে নিষাদ এসব?
খুব রেগে আছে না-কি?
কিন্তু তাই বলে এসব বলবে কেনো?
বুঝতে পারে না চন্দ্র কি বলবে।

উঠে গিয়ে নিষাদ কিচেনে যায়,খাবার গরম করে টেবিলে রাখে সব,রুমে এসে চন্দ্র কে বলে,”খাবার গরম করে রেখেছি,খেতে আসো,পরে ঠান্ডা হয়ে গেলে খেতে পারবে না,এটা ভেবে বসে থেকো না যে, না খেলে আমি বারবার সাধ্যসাধনা করে তোমাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করবো।নেভার।শীতের রাত অনেক বড়,না খেয়ে শুলে ঘুমাতে পারবে না,আমি খেয়ে নিচ্ছি আমার খাবার।”

চন্দ্রর কেমন অচেনা মনে হয় নিষাদ কে,দিনে দেখা নিষাদ আর এই নিষাদের মধ্যে যেনো আকাশপাতাল পার্থক্য।চুপচাপ উঠে গিয়ে খেতে বসে চন্দ্র,এমনিতেই খুব ক্ষিধে পেয়েছে,তার উপর খাবারের যে সুঘ্রাণ ছড়িয়েছে এমনি লোভ লেগে যায় চন্দ্রর।

খেয়ে এসে ল্যাপটপ আলমারিতে রেখে নিষাদ অন্য রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে।চন্দ্র হা করে তাকিয়ে থাকে।

ঘড়ির কাটা টিকটিক করে এগিয়ে যাচ্ছে,রাত ১১টা বাজে।চন্দ্রর ঘুম আসছে না,বুকের ভিতর কিসের জ্বালাপোড়া অনুভব করছে চন্দ্র।তারপর উঠে গিয়ে নিষাদের রুমের সামনে দাঁড়ায়,দরজা খোলা আছে।নিষাদ ঘুমিয়ে পড়েছে লাইট অফ করে।চন্দ্র গিয়ে লাইট অন করতেই দেখে নিষাদ বিছানায় পা ভাঁজ করে বসে আছে,চন্দ্র আর এরকম কষ্ট সহ্য করতে পারে না।
ফ্লোরে বসে নিষাদের ২পা জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে।

চন্দ্রকে কেমন উদভ্রান্তের মতো লাগছে,একটু সুস্থির হতে নিষাদ পা থেকে চন্দ্রর হাত সরিয়ে দেয়,তারপর বিছানায় তুলে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,”কি হয়েছে?”

“আপনি কেনো এরকম করছেন আমার সাথে?”

“কেমন করছি বলো?”

“কেনো কথা বলেন না আমার সাথে? ”

“কি কথা বলবো তোমার সাথে বলো?তুমি আমাকে টপিক দাও কোনটা নিয়ে কথা বলা যায়।তুমি তো আমার ক্লায়েন্ট না যে প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলবো।তুমি আমার ফ্রেন্ড না যে আড্ডা দিবো।তো কি কথা বলবো তোমার সাথে আমি?”

“আমি আপনার কেউ না?”চন্দ্রর গলায় কান্না আটকে যায় নিষাদের এরকম কঠিম কথা শুনে।

” তুমি বলো তুমি আমার কে,আমি তোমার থেকে শুনতে চাই আজ।”

মাথা নিচু করে চন্দ্র বলে,”আমি আপনার স্ত্রী”

“স্ত্রী?আমার?তাও তুমি?”
এটুকু বলে নিষাদ হাহাহা করে হেসে উঠে।লজ্জায়,অপমানে চন্দ্র লাল হয়ে উঠে।

হাসি থামিয়ে নিষাদ বলে,”স্ত্রী কাকে বলে চন্দ্র?
স্ত্রীর ডেফিনেশন কি জানো তুমি?”

চন্দ্র নিষাদের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছু না বলে।

“তুমি আমার সে-ই স্ত্রী চন্দ্র,যে আমাকে টানা ৩০ দিন সকালে হোস্টেলের সামনে,দুপুরে ভার্সিটিতে,রাতে হোস্টেলের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছো।তুমি সেই স্ত্রী যাকে আমি ডেইলি ১০০ বার করে কল দিয়েছি,২০টা টেক্সট করেছি,কিন্তু কোনো রেসপন্স পাই নি।”

চন্দ্র মাথা নিঁচু করে ফেলে।নিষাদ চন্দ্রর চোয়াল উপরে তুলে জিজ্ঞেস কর,”তাকাও আমার দিকে,দেখো আমাকে ভালো করে,আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখো,আমি ২ মাস ঘুমাতে পারি নি,খেতে পারি নি।১দিন অফিস করেছি,৩ দিন মিস দিয়েছি,১৫ দিন টানা হাসপাতালে পড়ে ছিলাম,একবারের জন্য তুমি আমার খবর নাও নি,আজ আসছো নিজেকে স্ত্রী বলে দাবী করতে?

তুমি আমার স্ত্রী হলে সেদিন এভাবে হুট করে হোস্টেলে চলে আসতে না,একটাবার আমাকে বলে আসতে,আমার চাইতে তোমার কাছে তোমার বান্ধবী এতোই বড় হয়ে গেলো যে তুমি নিজেকে মহান করতে আমাকে ছেড়ে চলে এসেছো?

এবার তুমি ভেবে দেখো তুমি আমার স্ত্রী কি-না!
কোনো স্ত্রী বন্ধুত্বের খাতিরে নিজের স্বামী কে ছেড়ে যায় না চন্দ্র,স্ত্রীরা এই একটা বিষয়ে ভীষণ রকমের স্বার্থপর হয়।

অনেকরাত আমি ঘুমাতে পারি নি চন্দ্র,আমার বুকের ভিতর হাহাকার করে,আমার মনে হতো আমি একজন অযোগ্য স্বামী যে নিজের স্ত্রী কে কাছে রাখতে পারি নি,দায়িত্ব পালন করতে পারি নি।
আজ আমি শান্তিতে একটু ঘুমাবো চন্দ্র,আমি তোমার থেকেকিছু চাইবো না,আমার সাথে তোমার কোনো কথা বলতে হবে না,আমার কোনো কাজ করতে হবে না। এতোদিন যেমন ছিলে এখনও তেমন থাকবে,তোমার মতো করে,আমি কখনো জবাবদিহি করবো না।তবুও আমি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারবো একই ছাদের নিচে তো আছি নিজের স্ত্রীকে নিয়ে।
যাও তুমিও ঘুমাও গিয়ে।”

নিষাদের সবগুলো অভিযোগ সত্যি চন্দ্র জানে,নিজের পক্ষে বলার মতো কিছুই নেই চন্দ্রর আজ।নিষাদ শুয়ে পড়ে অন্যদিকে ফিরে,চন্দ্র নেমে ফ্লোরে বসে থাকে,তারপর ফ্লোরেই ঘুমিয়ে যায়।

ফজরের আজানের সময় চন্দ্রর ঘুম ভাঙে,নিজেকে কারো গভীর আলিঙ্গনে আবদ্ধ দেখে প্রথমে চমকে উঠে চন্দ্র,তারপর খেয়াল হয় নিষাদ তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
চন্দ্র হেসে ফেলে।
রাতে চন্দ্র ফ্লোরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলো,নিষাদ উঠে চন্দ্রকে বিছানায় শুইয়ে দেয়,ফ্লোরের ঠান্ডায় চন্দ্রর শরীর বরফের মতো হয়ে যায়।শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে নিষাদ রাতে।

চন্দ্র কোনো নড়চড় না করে শুয়ে থাকে চুপ করে,কিছুক্ষণ পরে নিষাদ জেগে উঠে।তারপর আলগোছে চন্দ্রর শরীর থেকে হাত সরিয়ে বিছানা থেকে উঠে যায় চন্দ্র যাতে জড়িয়ে ধরার বিষয় টা বুঝতে না পারে।
নিষাদের এই সতর্কতা দেখে হেসে দেয় চন্দ্র,নিষাদ অযু করে এসে জোরে জোরে কুরআন তিলাওয়াত বাজিয়ে দেয় ফোনে যাতে চন্দ্র জেগে যায় ঘুম থেকে।

চন্দ্র উঠে অযু করে আসে,রুমে এসে দেখে নিষাদ নাই।নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ কুরআন শরীফ পড়ে চন্দ্র।

নিষাদ আসে অনেকক্ষণ পরে,হাতে করে নাশতার প্যাকেট নিয়ে।কিছু না বলে টেবিলে খাবার সাজায়,এক প্লেট নিয়ে চন্দ্রর সামনে দিয়ে আসে রুমে।তারপর নিজে নাশতা করে রেডি হয় অফিসে যাওয়ার জন্য।

নিষাদ চলে যেতেই চন্দ্র একা হয়ে যায়।কিছু ভালো লাগে না আর।বিছানার পাশে সাইড টেবিলে একটা মাটির ব্যাংক,অনেক সুন্দর ডিজাইন করা।

চন্দ্র মুগ্ধ হয়ে যায় এতো সুন্দর ব্যাংক দেখে,ব্যাংকের গায়ে কি সুন্দর কারুকার্য করা।
আচমকা চন্দ্রর একটা হাঁচি আসে,হাঁচির সাথেসাথে হাত থেকে ব্যাংকটা পড়ে ভেঙে যায়।
এতো সুন্দর একটা জিনিস ভেঙে ফেললো ভাবতেই কেমন অপরাধী অপরাধী লাগে চন্দ্রর।বিছানা থেকে নেমে ফ্লোরে তাকাতেই চন্দ্র আরো বড় ধাক্কা খায়।

সবার মাটির ব্যাংকে টাকা থাকে,অথচ নিষাদের মাটির ব্যাংকে এসব কি!
কাঁপা-কাঁপা হাতে চন্দ্র একটা কাগজ নিয়ে খুলে চোখের সামনে ধরে,তারপর পড়তেই দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তে থাকে।

চন্দ্র ভাবতে পারে নি নিষাদ এসব রাখবে এই ব্যাংকে।স্তব্ধ হয়ে বসে থাকে চন্দ্র সবগুলো দেখে।

চলবে…???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here