তোমাকে পর্ব – ২৩

0
897

তোমাকে
পর্ব 23.1
মুনির চলে গেছে কিছুক্ষণ হবে কিন্তু অনিমার মনে হচ্ছে অনন্ত কাল I অসম্ভব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে I মনে হচ্ছে কি যেন হারিয়ে গেল জীবন থেকে I কি বিচ্ছিরি অবস্থা I এখান থেকে চলে গেলে তাহলে ও কেমন করে থাকবে ? মুনির যাওয়ার পরপরই হাসিনা চলে এসেছে I এসেই রান্নাঘরের দায়িত্ব নিয়ে ফেলেছে I মুনির ওকে কি বলেছে কে জানে হাসিনা ওকে কিছুই করতে দিচ্ছে না I বাধ্য হয়ে অনিমা ঘরে চলে এলো I
মাত্র সাড়ে দশটা বাজে I অনিমার সময় যেন কিছুতেই কাটছে না I সেঁজুতির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলে কিন্তু সে ভীষণ ব্যস্ত I মাটির চুলায় পিঠা বানানো হবে তার প্রস্তুতি চলছে I এটা ওর কাছে পৃথিবীর আশ্চর্য তম ঘটনা I অগত্যা ও মুনিরের বইয়ের তাকে বই খুজতে লাগলো I বই নিয়ে বিছানায় বসার কিছুক্ষণের মধ্যেই মুনিরের ফোন এল I অনিমার কি যে ভালো লাগলো ফোনটা পেয়ে I
– হ্যালো অনিমা
অন্য পাশে প্রচন্ড শব্দ হচ্ছে I অনিমা ভয় পাওয়া গলায় বলল
– কি হয়েছে ? এত শব্দ হচ্ছে কেন ?
– কিছু না I কিছু বাইরের ছেলে এসে ঝামেলা করছে
– তুমি ঠিক আছো তো ?
– হ্যাঁ হ্যাঁ কোন সমস্যা নেই I চিন্তা করোনা I তুমি খেয়েছ ? ওষুধ খেয়েছো ?
– হ্যাঁ খেয়েছি I তুমি কখন আসবে ?
– সেটা বলার জন্যই ফোন দিলাম I আমার একটু দেরি হবে I তুমি দুপুরে খেয়ে নিয়ো I না খেয়ে থেকো না প্লিজ I
– আচ্ছা থাকবো না I তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো I
মুনির কি একটু হাসল? শব্দের কারণে অনিমা ঠিক বুঝতে পারল না
-আচ্ছা শোনো I আমি তোমাকে একটা নাম্বার টেক্সট করছি I এটা হাসিবের নাম্বার I ও আমার উপর প্রচন্ড রেগে আছে I আমার সঙ্গে কথা বলে ও জাপানে যাওয়ার ফ্লাইট বুক করেছিল I নেক্সট উইকে বিয়ে তাই এই উইক এ গেছে এখন ফিরে এসে শুনেছে বিয়ে হয়ে গেছে I তুমি একটু ফোন করে ওকে বুঝিয়ে বলো I
– আচ্ছা
হঠাৎ করেই গোলাগুলি শব্দ শুরু হলো আর ফোনের লাইনটা ও কেটে গেল I অনিমার মনে হল ও মরে যাবে দম বন্ধ হয়ে I কিন্তু সাথে সাথেই টেক্সট এল I একটা ফোন নাম্বার আর সাথে লিখা ‘ চিন্তা করো না এখানে সব ঠিক আছে.I
মেসেজ পেয়ে অনিমা একটু নিশ্চিন্ত হল তবু মনটা খচখচ করতে লাগলো I বই এ ও মন বসাতে পারলো না I হাসিব কে ফোন দিল কিন্তু ও ধরলো না I কিছুক্ষণ আলমারি গোছালো I মুনিরের জিনিসপত্র সব এত পরিপাটি যে গোছানোর কিছু নেই I তবু ওর বই, কলম খাতা এগুলোই একটু ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখল I যেন এগুলোতে ওর স্পর্শ লেগে আছে I
বইয়ের তাক টা অনেক বড় I একটা তাকে ধর্মীয় বই, একটাতে ওর সব জার্নাল, নিচের দিকে গল্প উপন্যাসের বই I একেবারে নিচের তাকে একটা বড় কাঠের বাক্স রাখা I কি মনে করে অনিমা বাক্স টা বের করে বিছানায় রাখলো I ডালাটা খুলে ও ভেতরটা সবে দেখতে যাবে তখনই হাসিনা চা নিয়ে ঢুকলো I
ঘরে ঢুকে ভয়ে হাসিনার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল I বড় ভাবি ভাইজানের কাঠের বাক্সে হাত দিয়েছে I ভাইজান জানতে পারলে সর্বনাশ হয়ে যাবে I এর আগে একবার তনু খালা এই বাক্স খুলে ছিল বলে অনেক তুলকালাম হয়েছে I বড় ভাইজান কে হাসিনা যম এর মত ভয় পায় I অথচ ভাইজান কোনদিন ওকে একটা ধমক পর্যন্ত দেননিI কোনদিন করা গলায় কোথাও বলেননি I হাসিনা ভয়ে ভয়ে বলল
– ভাবি, এই বাক্স রাইখা দেন I ভাইজান জানতে পারলে সর্বনাশ হইবো
– কেন?
– এই বাক্সে কেউ হাত দিলে ভাইজান অনেক রাগ করে
অনিমা হেসে ফেললো I মুনির রাগ ও করতে পারে I ও বলল
– আচ্ছা ঠিক আছেI আমি রেখে দিচ্ছি I তুমি যাও
অনিমা ঢাকনাটা বন্ধ করতে যাবে তখনই ওর নজরে এলো একটা বড় কাগজের প্যাকেট রাখা তার উপর ওর নাম লেখা I অনিমা একটু অবাক হয়ে প্যাকেট টা খুলল I ভেতর থেকে একটা নীল রঙের শাড়ি আর একটা নীল খাম বের হলো I খামের উপরেও অনিমার নাম লেখা I অনিমা ভীষণ অবাক হয়ে গেল I
অনিমা খামটা খুলতে যাবে তখনই ওর ফোন বাজলো I ও প্রথমে ভাবল বোধহয় হাসিব কল ব্যাক করেছে I কিন্তু না I ফোনটা করেছে নাজমা I
– ভাবি তোমার শরীর কেমন ? জ্বর কমেছে?
– হ্যাঁ আমি ভালো আছি I তোমাদের কি খবর ?
– আমরা আছি মজায় I পিঠা বানানো হচ্ছে I আমি আর সেঁজুতি চিতই পিঠা খাব I শুধু তনু টা জ্বালিয়ে মারলো সকাল থেকে I তোমার সাথে নাকি জরুরী কথা আছে I এই নাও কথা বল I
তনু ফোন ধরে হড়বড় করে বলল
– আম্মু, বাবা আমার ছবিটা আবার নিয়ে গেছে ?
– কোন ছবি মা ?
– আমার টেবিলে I তুমি আমার ঘরে যাও I
অনিমা ঘরে গিয়ে টেবিলের উপর কোন ছবি পেল না I
– টেবিলের উপরে তো নেই
– না ড্রয়ারে I আমি লুকিয়ে রাখি
অনিমা ড্রয়ার খুলল, সেখানেও কিছু পাওয়া গেল না
– কিছু তো নেই মা
তাহলে বাবা আবার নিয়ে গেছে I বলেই তনু খুন খুন করে কান্না শুরু করল
– আচ্ছা আচ্ছা I আমি আবার দেখছিI কেমন দেখতে একটু বল
– পিংক কালারের ফটো ফ্রেম
ড্রয়ারের কোনার দিকে একটা ফটো ফ্রেম উল্টো হয়ে পড়ে আছে I অনিমা বলল
– পেয়েছি
– আচ্ছা তুমি লুকিয়ে রাখো আমি আসলে দিও I
– আচ্ছা আমি তুলে রাখছি
– ওকে বাই
– বাই সোনা
অনিমা ফ্রেম টা সোজা করে হতভম্ব হয়ে গেল I ফ্রেম এর মধ্যে ওর একটা ছবি I অনেক আগের I এই ছবিটা ওর কাছে ও নেই I মুনির এটা কোথায় পেল ? অনিমার মাথা কাজ করছে নাI এসব কি দেখছে ও? অনিমা নাজমাকে আবার ফোন দিল
– কি হয়েছে ভাবি ?
– নাজমা তনুর মা কে ?
– আরে, তুমিতো তনুর মা I বলে নাজমা হাসতে লাগলো
– নাজমা ঠিক করে বল I এই ফ্রেমে আমার ছবি কেন ?
নাজমা হঠাৎ গম্ভীর হয়ে গেল I বলল
– ভাইয়া তোমার কিছু বলেনি ?
– ওতো বলেছিল ওর বউ …… I অনিমা কথা শেষ করতে পারল না I মুনির বলেছিল ওর বউ ওকে ছেড়ে চলে গেছে I তার মানে কি …. I অনিমার হঠাৎ করেই খুব কান্না পেল I আজকের দিন টা এমন অদ্ভুত কেন I অনিমা চোখ মুছে বলল
– মুনির কাকে বিয়ে করেছিল ?
নাজমা কিছুক্ষণ চুপ করে রইল I তারপর বলল
– ভাইয়া কখনো বিয়ে করেনি I তনুকে মা আমাদের গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছিল I ও অনাথ I পরে ভাইয়া ওকে অ্যাডাপ্ট করে I
অনিমাল ইচ্ছে হল চিৎকার করে কাঁদতে I মুনির ওর সঙ্গে এমন কেন করল I কি হত ওকে সত্যি কথাটা বললে ? ও বিয়ের জন্য মানা করে দিত I এটাই তো ? এর বেশি তো আর কিছু না I
পর্ব 23.2
অনিমা সারারাত ছটফট করল , ঘুমাতে পারল না I ও এখন কি করবে কিছু ঠিক করতে পারছে না I তবে এটা নিশ্চিত যে এই জীবনে ও আর কোনদিন নীলা কিংবা মুনিরের মুখোমুখি হবে না I নীলা অসম্ভব বুদ্ধিমতী, ও এক মুহুর্তে সব বুঝে ফেলবে I অনিমা চায়না ওদের দুজনের মাঝখানে আসতে I থার্ড ইয়ারের ক্লাস শুরু হওয়ার আগে বাবা ওকে UK তে এডমিশন নিয়ে চলে যেতে বলেছিল I ভাইয়াও আছে ওখানে I গ্রাজুয়েশন ওখান থেকে কমপ্লিট করা যেত I তখন ও যেতে চায়নি সবাইকে ছেড়ে বিশেষত মুনির কে ছেড়ে I কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে I নেক্সট সেমিস্টার এর জন্য ওয়েট করতে হবে I সেটা আরো চার মাস পরে I এই চার মাস ও কোথায় লুকিয়ে থাকবে ? খুব নিরিবিলি কোন জায়গায় যদি চলে যাওয়া যেত I
দুদিকে সবুজ গাছে ঘেরা একটা রাস্তার বাক I ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে I অনিমা একটা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে I বৃষ্টির পানি অসম্ভব ঠান্ডাI অনিমা অপেক্ষা করছে একটা রিক্সা এলেই ও উঠে পরবেI ভীষণ শীত করছে I গায়ে কাঁটা দিচ্ছে I দূর থেকে একটা রিক্সা আসতে দেখা গেল I অনিমা অবাক হয়ে দেখল রিক্সায় মুনির আর নীলা বসে আছে I হাসছে, গল্প করছেI ভারী মিষ্টি লাগছে দুজনকে একসাথে I অনিমা কিছুতেই ওদের এই ভালবাসার মধ্যে আসবেনা I ওর যতই কষ্ট হোক I
– আপা ও আপা ঘুমের মধ্যে কানদেন কেন ?
মিঠু খেলার ডাকে অনিমার ঘুম ভাঙলো I ভোর হয়ে গেছে I অনিমা উঠে চোখ মুছলো I তারপর হাত মুখ ধুয়ে ছাদে চলে গেল I এই সময় হাসান সাহেব ছাদে হাঁটেন আর এক কাপ ব্ল্যাক কফি খান I হাসান সাহেব বেশ অবাক হলেন এসময় অনিমাকে এখানে দেখে I অনিমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে কিছু বলছে না I
-কিছু বলবে ?
– জি
– বল
– তোমার বন্ধুর ছেলের সঙ্গে দেখা করতে বলেছিলে I আজকে আমি ফ্রি আছি I
– ঠিক আছে I বিকেলে দেখা করে নিও I আমি ফোন করে বলে দেব I
**********
শান্তিনগরের একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে মুনিরের সব বন্ধুরা জড়ো হয়েছে I অনেক হাসি আনন্দ হচ্ছে I নীলা ও এসেছে I কাল থেকে ও অনিমা কে অনেক বার ফোন করেছে I অনিমার ফোন বন্ধ I অনিমা প্রায়ই এমন করে I দুই তিন দিনের জন্য নিখোঁজ হয়ে যায় I তাই কেউ তেমন অবাক হলো না I কিন্তু আজকে অন্তত ও আসবে এটা সবাই ভেবেছিল I যত কিছুই হোক ও মুনিরের এত ভালো বন্ধু I
মুনির কিছুতেই মন বসাতে পারছেনা I কাল অনিমার সাথে কথা বলার পর থেকে ওর প্রচন্ড অস্থির লাগছে I কারো সঙ্গে শেয়ার করতে পারছেনা I হাসিব ও আসতে পারেনি I আজ সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে কিন্তু শেষ মুহূর্তে ফোন করে জানালো আসতে পারছে না I ওর মামা এক্সিডেন্ট করেছে I মুনির ঠিক করল ও অনিমার বাসায় যাবে I সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেলে মুনির রিক্সা নিয়ে নিল I মুনির যখন রিকশা নিয়ে অনিমার বাসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে ঠিক সেই সময় অনিমা একটা রূফটপ রেস্টুরেন্টে বসে আশিকের জন্য অপেক্ষা করছিল I
আশিক বসেছিল উল্টো দিকের টেবিলে I ইচ্ছে করে প্রতিবার ও এ কাজটা করে I যে টেবিল বুক করে তার উল্টো দিকের টেবিলে বসে কিছুক্ষণ , যাতে করে যে আসছে তাকে একটু পর্যবেক্ষণ করা যায় I অনিমা কে দেখে আশিক একটু চমকালো I এর আগে যে কজন এসেছে সবাই অসম্ভব রকম সাজগোজ করে এসেছে I আসার পরেও আশিক সামনে না আসা পর্যন্ত টাচ আপ এ ব্যস্ত ছিল I কিন্তু এই মেয়েটা এসেছে একেবারেই সাধারণ পোশাকে I একটুও সাজেনি I বসার পরে ও একটা বই নিয়ে কিছু লিখছে আপন মনে I আশিক মেয়েটার দিকে ভালো করে তাকালো I উজ্জল শ্যামলা রং , বড় বড় চোখ আর ছিপছিপে গড়ন I চোখেমুখে কেমন বিষন্ন ভাব I আশিক নিশ্চিত হয়ে গেল এই মেয়ের নিশ্চয়ই কোথাও অ্যাফেয়ার আছে I আশিক উঠে এসে অনিমার সামনে দাঁড়ালো I অনিমা অন্যমনস্ক থাকায় কিছু টের পেল না I আশিক বলল
– HI . আমি আশিক I তুমি নিশ্চয়ই অনিমা
অনিমা উঠে দাঁড়ালো I আশিক হাত বাড়িয়ে দিয়েছে I অনিমা হাত মিলালো না I ব্যাগে বই রাখতে ব্যস্ত হয়ে গেল I অগত্যা আশিক হাতটা মুঠো করে সরিয়ে নিলো I অনিমা বলল
– হ্যালো I আমি অনিমা
– বস I অনিমা বসলো
– কি খাবে বলো
– চা খেতে পারি
আশিক আবারো চমকালো I অন্যান্য মেয়েরা প্রথমে কিছুই খাবেনা বলে তারপর অর্ডার করার সময় নানান ন্যাকামি করে I
– এখানে চা পাওয়া যায় না
– পাওয়া যায় না তবে বললে ওরা বানিয়ে দেয়
– ইন্টারেস্টিং , তুমি এখানে প্রায়ই আসো মনে হচ্ছে
– তা আসি
ততক্ষণে ওয়েটার চলে এসেছে I অনিমাকে দেখে বলল
– স্লামালাইকুম ম্যাডাম I আজকেও কি চা আর কলিজা সিঙ্গারা নাকি অন্য কিছু খাবেন ?
জবাবটা আশিক দিল
– আমি কখনো কলিজা সিঙ্গারা খাইনি I আজকে ট্রাই করে দেখা যাক I
ওয়েটার অর্ডার নিয়ে নিয়ে চলে গেল
আশিক মনে মনে একটু গুছিয়ে নিয়ে কথা শুরু করলো
– অনিমা, আমি সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করি I তুমি তো জানো আমরা এখানে কেন এসেছি
– জি
– তোমার আগে আমি আরো অনেকগুলো মেয়ে দেখেছি I সবার মধ্যেই একটা মেকি ব্যাপার ছিল I কিন্তু তোমার মধ্যে সেটা নেই I আমার কেন যেন মনে হচ্ছে তুমি বিয়েটা করতে চাও না I
– সেরকম হলে আমি এখানে আসতাম না
– আমাদের বয়সের পার্থক্য টা কিন্তু ভালই I প্রায় 9 বছর
– ও আচ্ছা
– তোমার এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই ?
– না
– তুমি কি এই মুহূর্তে US যাবার জন্য রেডি ?
– যদি এখনই যেতে পারি তাহলে আমি বিয়ে করবো তা না হলে না
-GREAT . তোমার কোন প্রশ্ন আছে ?
– হ্যাঁ
– আপনি এত তাড়াতাড়ি ভিসার ব্যবস্থা করতে পারবেন ?
– গুড কোশ্চন I এত তাড়াতাড়ি স্পাউস ভিসা পাওয়া যাবে না তবে আরও অনেক উপায় আছে I সেটা নিয়ে চিন্তা করো না I আমি বিয়ে করে বউ রেখে যাব না I তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি ?
– বলুন
– তোমার কি কোন অ্যাফেয়ার আছে ?
অনিমা কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল I তারপর বলল
– না I তবে আমি একজনকে ভালোবাসি
– ও I তাহলে সমস্যা কি I তোমার বাবা ?
– না I ব্যাপারটা একপাক্ষিক I ও আমাকে ভালোবাসা না
– আশ্চর্য তো I তোমার মত মেয়েকে ভালো না বাসার কারণ কি ?
– আমার মত মেয়ে মানে ?
-মানে তোমার মতো সুন্দরী একটা মেয়ে I শুনেছি তুমি ভালো গান ও গাও I আমি জানিনা তোমাদের এখানে সুন্দরী বলতে ঠিক কী বোঝায় I যাই হোক তোমার অ্যাফেয়ার নেই শুনে ভালো লাগলো I তোমার যদি আমাকে বিয়ে করতে আপত্তি না থাকে তাহলে আমি এই উইকেএন্ড এই বিয়ে করতে চাই I আমার হাতে সময় বেশি নেই I বিয়ের পর একবার কক্সবাজার যাওয়ার ইচ্ছা I অনেক শুনেছি তোমাদের সী বিচ এর কথা I
অনিমার কথা আটকে গেল I আজকে বুধবার I উইকেন্ড মানে আরেকদিন পর I হঠাৎ করেই অনিমার মনে হল ও কোন ভুল করছে না তো ?
চলবে……..
লেখনীতে
অনিমা হাসান
( আজকের লেখাটা দিতে অনেক দেরি হয়ে গেল I সবার কাছে ক্ষমা চাইছি I )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here