চুপকথা পর্ব-১৮

0
1064

#চুপকথা-(১৭+১৮)
Zannatul Eva

গরু মেরে জুতো দান! একেই তো আমাকে কাদা দিয়ে মেখে দিয়েছেন এখন আবার ভালো মানুষ সাজতে এসেছেন? এখন বাসায় গিয়ে আমাকে আবারও গোসল করতে হবে। একেই এতো তাড়া ছিল আমার। ইচ্ছে করছে আপনার গাড়িটাকে একদম…..

ছেলেটা বলল, কুল কুল! রিল্যাক্স। আমি তো ইচ্ছে করে আপনার গায়ে কাদা ছুড়ি নি। আমি সরিও বলেছি আপনাকে। তারপরও আপনি রেগে যাচ্ছেন। তাই তো চাইছি আপনাকে ড্রপ করে দিয়ে নিজের ভুলটা সংশোধন করে নিতে। আপনি কোথায় যাবেন আমাকে বলুন। আমি আপনাকে নামিয়ে দিবো সেখানে। এমনিতেও এভাবে হেঁটে গেলে আপনি তো ভিজে যাবেন।

আমি ছেলেটার দিকে ভালো করে তাকিয়ে মনে মনে বললাম, গাড়িতে উঠবো? ওঠা টা কি ঠিক হবে? দেখে তো সন্দেহজনক মনে হচ্ছে না তবে একটু বেশি কথা বলে মনে হচ্ছে। এমনিতেও আমার তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে তাই এখন হাতের কাছে গাড়ি পেয়েও ছেড়ে দেয়া উচিত হবে না।

আমি একটু ভেবেচিন্তে বললাম, উঠতে পারি কিন্তু আমাকে একটু তাড়াতাড়ি পৌঁছে দিতে হবে।

সিউর। নো প্রবলেম।

পিয়াশ বাবা এহন কোনদিকে যামু?

উনি যেখানে বলছেন সেখানে নিয়ে যাও ড্রাইভার চাচা।

আপনি চাচাকে বলে দিন কোনদিকে যেতে হবে।

আমি ওনার ড্রাইভারকে আমার বাসার এড্রেস বললাম। গাড়ি ঠিক ঠিক গন্তব্যে যেতে লাগলো। ছেলেটা আমার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, হাই আই এম পিয়াশ। পিয়াশ আহমেদ।

হুট করেই আমার তিয়াশের কথা মনে পড়লো। ছেলেটার নাম বলার ধরন পুরো তিয়াশের মতন। তিয়াশও এভাবে আলাদা আলাদা নাম বলে। প্রথমে তিয়াশ তারপর তিয়াশ আহমেদ বলে। আবার দুজনের নামটা প্রায় সেম। তিয়াশ আর পিয়াশ। কী অদ্ভুত!! পৃথিবীতে একজনের সাথে আরেক জনের কত রকমের মিল থাকে। হুবহু দেখতেও হয় কত মানুষ অথচ তারা হয়তো কেউ কারো হয় না সম্পর্কে। তবুও কত মিল থাকে। তেমনি হয় তো কাকতালীয় ভাবে ওদের নাম আর নাম বলার ধরনও মিলে গেছে।

হ্যালো মিস কাদাবতী!

কাদাবতী নয় আমার একটা নাম আছে।

সেটাই তো জানতে চাইছি। কী নাম আপনার?

কুহেলিকা।

কুহেলিকা! খুব কঠিন লাগছে নামটা। এর চেয়ে কাদাবতী নামটা বেশ সুইট। খুব সুট করেছে নামটা আপনার সাথে। আমি বরং এটা বলেই ডাকি।

আমি ভারী গলায় বললাম, আপনার আমাকে নাম ধরে না ডাকলেও চলবে।

কেন? আচ্ছা আপনি কী করেন বলুন তো? পড়াশোনা না জব?

জব।

গুড গুড। মেয়েদের অবশ্যই ইন্ডিপেন্ডেন্ট হওয়া উচিত। তার জন্য অবশ্যই তাদের পড়াশোনা করে চাকরি করা উচিত। লন্ডনের মেয়েরা তো খুবই হ…..

আমি চোখ বড় বড় করে তাকাতেই সে বলল, ইয়ে মানে খুব ইন্ডিপেন্ডেন্ট। আমিও পড়াশোনা শেষ করে জব নিয়েছিলাম সেখানে। কিন্তু মন বলল, বাকি জীবনটা বাংলাদেশেই কাটাবো। তাই ফিরে এলাম। সবাই আমাকে দেখে কী অবাকটাই না হবে ভাবুন! কেউ জানে না আমি লন্ডন থেকে ফিরছি। সব থেকে বেশি সারপ্রাইজ হবে…….

পুরো কথা শেষ করার আগেই আমি বললাম, আমার বাড়ি চলে এসেছি।

আমি হুরহুর করে গাড়ি থেকে নেমে চলে যাচ্ছিলাম এমন সময় পিয়াশ আমাকে পেছন থেকে ডেকে বলল, এই যে মিস কাদাবতী! বাড়ি অবধি ছেড়ে দিলাম একটা থ্যাংক্স তো প্রাপ্য।

আমি ঘাড় ঘুরিয়ে পেছন ফিরে বললাম, আপনি ভুল করেছেন আর আপনিই সেটা শুধরে নিয়েছেন। আমার আপনাকে থ্যাংক্স বলতে বয়েই গেছে। কাদা মাখিয়ে দিয়ে আমাকে কী সব নামে ডাকছে আবার থ্যাংক্স চাইছে! আজব!

একথা বলেই আমি গটগট করে বাড়ির ভেতরে চলে গেলাম।
_____________

পিয়াশ.
মেয়েটা কী সুন্দর! রাগি রাগি মুখটা বারবার আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। জীবনে প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে কিছু একটা ফিল হচ্ছে। লন্ডনে তো টিনা, মিনা কত মেয়ের সাথেই ফ্লার্ট করেছি। কিন্তু কাউকে দেখে সেরকম ফিল হয় নি। এই বাঙালি মেয়েদের মধ্যে অন্যরকম একটা ব্যাপার আছে। যখন তখন এরা ছেলেদের মনে ভালোবাসার ঝড় তুলে দিতে পারে। ধুর পিয়াশ! কী সব ভাবছিস। এসব ভালোবাসা টালোবাসা তোর দ্বারা সম্ভব না। এসবের জন্য জীবনে প্রচুর সিরিয়াস হতে হয়। এসব ভাইকে দিয়েই সম্ভব। ভাই ভীষণ সিরিয়াস। আমার মতো নয়। কিন্তু তোর জীবনটা কি এভাবে ফ্লার্ট করে করেই কেটে যাবে পিয়াশ! হাহ!
__________________

তিয়াশ.
আজ যদি মায়াবতী আসে তাহলে বুঝবো ও একটু হলেও আমাকে নিয়ে ভাবে। আর যদি না আসে তাহলে বুঝবো আমার ভাবনা ভুল ছিল। কিন্তু যদি আসে তাহলে আজ আমি মায়াবতীকে বলেই দেবো। কিভাবে বলবো? ওয়েল আয়নার সামনে একটু প্রাক্টিস করে নিই।

কুহু আই এমন ইন লাভ উইথ ইউ। ডু ইউ লাভ মি?

নাহ এটা কেমন যেন একটা শোনাচ্ছে। একটু অন্যভাবে বলি।

ভাবি ও চোখে দিবো না ডুব,
মন বলে চুপ একদম চুপ।
ঐ কাজল চোখে আমার সর্বনাশ,
তবুও মন বলে ভালোবাস।
তুমি মায়াবতী না সর্বনাশি?
তবুও মন বলে ভালোবাসি, ভালোবাসি।

হঠাৎ করেই কলিং বেল বেজে উঠলো। মা রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে বলল, দেখ তো তিয়াশ কে এলো?
মায়াবতী এসেছে মনে হয়। আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজ খুললাম। কিন্তু দরজা খুলতেই প্রচন্ড অবাক হয়ে গেলাম।
______________

১৮.
পিয়াশ তুই! হোয়াট আ সারপ্রাইজ!! কাউকে কিছু না বলে এভাবে হুট করে চলে এলি। মা তাড়াতাড়ি এসো দেখে যাও কে এসেছে।

টানটানা তুমহারা ছোটে মিয়া আগায়া ভাই। আচ্ছা নতুন বিবাহিত দম্পতিরা কোথায়? আমাকে রেখেই বিয়ে সেরে নিলো। ছোট ভাইটাকে একদমই মনে পড়লো না তোমাদের।

ইতোমধ্যেই মা দৌড়ে চলে এলো দরজার সামনে। এসেই বলল, আমার পিয়াশ বাবা এসেছে! আমি স্বপ্ন দেখছি না সত্যিই? হ্যাঁ রে বাবা কাউকে কিছু না বলে এভাবে হুট করে এলি যে! আমাদের জানাবি তো একবার।

ছোট বাবা তো জানতোই। শুধু তোমাদের বলতে বারন করেছিলাম। এই যে হুঠাৎ আমাকে দেখে যে চমকে গেলে, বলে আসলে কি এই চমকটা দিতে পারতাম!!

আয় আয় বাবা ভেতরে আয়। আহারে মুখখানা দেখো একদম শুকিয়ে গেছে। হ্যাঁ রে ওখানে নিশ্চয়ই ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করিস নি!

উফফ ছোট মা তুমি সেই একই রয়ে গেলে। সেই ছোট্ট বেলার মতো এখনও খাওয়া নিয়ে বলে যাচ্ছো। এতো খেলে তো ভুরি বেড়ে যাবে। তারপর মেয়েরা ঘুরে দেখবে? টিনা, মিনারা তো এই স্মার্ট পিয়াশকে দেখেই ফিদা হয়ে যেতো ওখানে। অবশ্য এখানে আসার পর উল্টো আমিই ফিদা হয়ে গেছি একজনকে দেখে।

আমি পিয়াশকে খোঁচা মেরে বললাম, কাকে দেখে ফিদা হয়েছিস ছোটে মিয়া?

কাকে আবার! ছোট মাকে। তুমি ঠিক আগের মতোই রয়ে গেছো। বয়স কী দিনদিন কমছে তোমার? তোমার রূপের রহস্য কী বলো?

ওরে দুষ্টু ছেলে! দাঁড়াও দিচ্ছি তোমাকে কান মলা।

পিয়াশ ভয়ে আমার পেছনে এসে লুকিয়ে পড়লো মজা করতে করতে।

মা হাসতে হাসতে বলল, বোস বাবা এতোটা জার্নি করে এসেছিস। আমি তোর জন্য খাবার বাড়ছি। তুই ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম কর।

ড্রয়িং রুমে কথাবার্তার আওয়াজ শুনে জাহিদ ভাইয়া আর ভাবিও চলে এলো।

কে এসেছে মামি? পিয়াশ! তুই বাংলাদেশে!! ও মাই গুডনেস। ভাই তুই আসবি যখন তখন আমার সাথে কেন এলি না? তখন তো বললি আসবি না। আমার বিয়েতেও এলি না। এখন হুট করে কাউকে কোনো খবর না দিয়েই চলে এলি যে?

সারপ্রাইজ!! যদিও ছোট বাবা জানে সবটা। ইনি নিশ্চয়ই আমার নয়া ভাবি? হেই সুইট হার্ট! ইউ আর লুকিং সো প্রিটি। ভাইয়ার আগে আমি তোমায় দেখলে তোমার বিয়েটা আমার সাথেই হতো। যদিও এখনও সিঙ্গেল আছি সো এখনও চান্স আছে।

ভাবি প্রচন্ড লজ্জা পেলো পিয়াশের কথা শুনে।
আমি বললাম, ওর কথা ধরো না তো। ও এমনই। মুখে লাগাম নেই৷ মনে যা আসে গরগর করে বলে দেয়। পুরো বাড়ি একই মাতিয়ে রাখে। ছোটো বেলায় একবার আমাকে ধাক্কা দিয়ে সিঁড়ি থেকে ফেলে দিয়েছিলো। এই যে কপালের কাঁটা দাগটা দেখছো, এটা পড়ে গিয়ে কেঁটে গিয়েছিলো।

কাম ওন ব্রো এই দাগটার জন্য তোমাকে কতটা ইউনিক লাগে ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া। কিছু কিছু জিনিস মানুষের সৌন্দর্যকে আরও বেশি বাড়িয়ে তোলে। এই যেমন ধরো, ঠোঁটের কোণে তিল, গালের টোল। আর তোমার ঐ কাটা দাগ। তোমার আমাকে থ্যাংক্স দেয়া উচিত। এতো সুন্দর কাটা দাগ একে দিলাম।

ভাবি ওর কথা শুনে সেই থেকে হেসেই যাচ্ছে। জাহিদ ভাইয়া বলল, তুই আর বদলালি না। পাজি ছেলে একটা।

গালের টোলের কথা শুনতেই কুহুর সেই টোল পরানো হাসির কথা মনে পড়ে গেল। ঐ হাসিতে বারবার ঝুলতে রাজি আমি ফাঁসিতে। এখনও আসছে না কেন ওরা! তবে কি কুহু আসবে না?

মায়ের ডাকে আমার ঘোর কাটলো। সবাইকে খাওয়ার জন্য ডাকছে।

আমি বললাম, একটু ওয়েট করো ওরা এলে না হয় একসাথে।

ভাবি বলল, মায়েরা আজ আসতে পারে না তিয়াশ। একটু আগেই আমাকে ফোন করেছিলো৷ তবে কাল সকাল সকালই চলে আসবে। এসো খাবে চলো।

ডাব্বু বলল, মাম্মাম আমি খামনি যাব আমি খামনি যাব।

তোমার খামনি কালকে আসবে সোনা। তুমিও এখন একদম দুষ্টুমি করবে না ঠিক আছে? আমরা বেড়াতে এসেছি না একটা জায়গায়! লক্ষী ছেলে হয়ে থাকবে।

পিয়াশ আমার কানে কানে বলল, বড়ো মিয়ার শালী আছে নাকি?

আবার শুরু হয়ে গেল তোর ফ্লার্টিং! মা আছে না সামনে?

ওপসসস! সরি ভাই।

মা ভাবিকে বলল, সে কী! বেড়াতে এসেছো মানে? তোমরা আমার ঘরের লোক। এটা একদম নিজের বাড়ি মনে করবে। জাহিদ আর পিয়াশ তো আমার কাছেই থেকেছে বেশিরভাগ সময়। আর তোমার ছোটো দেওর পিয়াশ, সে তো তিয়াশের কলিজার টুকরো ছিল ছোটোবেলায়। ওর নামের সাথে মিল রেখে নাম রেখেছিলো পিয়াশের। ওদের দুজনকে যেই দেখতো সেই ভাবতো ওরা বোধহয় আপন ভাই। দুটোতে এতো মোহাব্বত।

জাহিদ ভাইয়া বলল, ওমনি না? আমাকে ঠিক ভিলেন না বানালে চলছিলো না। আমি বোধহয় ওদের ভালোবাসতাম না! নামের মিল নেই বলে আমাকে বাদই দিয়ে দিলে!

দেখেছো সব কটা হিংসুটে হয়েছে। জানো তো বউ মা, আমি কখনও ভাবিনি আমার একটা ছেলে। আমি সব সময় বলি, আমরা তিন তিনটে ছেলে। আর তুমি তো আমার ছেলের বউ। একদম লজ্জা পাবে না। নিজের বাড়ির মতো থাকবে কোনো সংকোচ ছাড়াই কেমন?

ভাবি মৃদু হেসে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালো।

পিয়াশ লাগেজ থেকে চকলেট বের করে ডাব্বুকে দিলো। চকলেট পেয়ে ডাব্বু একদম শান্ত হয়ে গেল। কিন্তু আমার অশান্ত মন কিছুতেই শান্ত হতে পারছে না। মায়াবতীকে দেখার জন্য চোখ দুটো যেন জ্বলে যাচ্ছে। কখন সকাল হবে আর কখন কুহু আসবে আর কখন আমি ওকে আমার মনের সমস্ত কথা জানাবো।

রাতে ঘুমোবার সময় পিয়াশ ল্যাপটপ ঘাটতে ঘাটতে বলল, আসার সময় একটা মেয়ের সাথে দেখা হয়েছে ভাই। দারুন দেখতে মেয়েটা।

আবার শুরু হয়ে গেল! টিনা, মিনা, রিনা……

কাদাবতী।

কিহ!

হ্যাঁ আজকের ওর নাম কাদাবতী।

কাদাবতী মানে কী?

মেয়েটা রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো। আমি গাড়ি নিয়ে আসার সময় মেয়েটার গায়ে কাদা মাখিয়ে দিয়েছি। সেই জন্য ওর নাম দিয়েছি কাদাবতী। কাদা মেখেও যে কাউকে এতোটা সুন্দর লাগতে পারে সেটা আমার জানা ছিল না ভাই। আই এম টেলিং ইউ ব্রো, তুমি দেখলে তুমিও চোখ ফেরাতে পারবে না।

আমি মৃদু হাসলাম। মনে মনে বললাম, পৃথিবীতে এমন আর কোনো মেয়ে নেই, যে এসে আমার মায়াবতীর ঘোর কাটাতে পারে। মায়াবতী মায়ের পরে আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী নারী।

ভাই কী করে খুঁজে পাবো বলো তো মেয়েটাকে?

নাম কী?

ওর নাম…… শীট! নামটাই তো ভুলে গেছি। কী একটা বলেছিলো, উমমমমম….. একটা কঠিন নাম। তখনই বেশ কঠিন লাগছিলো। কাদাবতীটাই প্রারফেক্ট।

কিন্তু কাদাবতী নাম দিয়ে তো কাউকে খোঁজা যায় না ছোটে মিয়া।

দেখা হয়তো হয়ে যাবে। আমরা যাদের বারবার মনে করি তাদের সাথে ঘুরেফিরে আবার ঠিক দেখা হয়েই যায়। পৃথিবীটা খুব ছোটো ভাই। হয়তো একদিন খুঁজে পেয়ে যাবো কাদাবতীকে।

আমি মনে মনে বললাম, ঠিক তাই। মায়াবতীর সাথে আমার প্রথম দেখার পরেও বহুবার দেখা হয়েছে। এরপর একসাথে ট্যুর দেয়া, একসাথে কিডন্যাপ হওয়া তারপর আত্মীয়তা এবং আগামীকাল আবারও আমাদের দেখা হতে চলেছে। না না আমাকে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে হবে। সকাল হলে তবেই মায়াবতীর দেখা পাবো।

পিয়াশকে বললাম, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পর। যতো তাড়াতাড়ি ঘুমোবি ততো তাড়াতাড়ি সকাল হবে।

পিয়াশ কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বলল, সকাল হওয়াটা কি খুব বেশি জরুরি? না মানে আমার তো কোনো তাড়া নেই।

না মানে আমি বলছিলাম, এতোটা পথ জার্নি করেছিস এখন ঘুমের প্রয়োজন। চল আর জেগে থাকিস না ঘুমিয়ে পড়।

জো হুকুম ভাই। গুড নাইট। হ্যাভ এ সুইট ড্রিম।

আমি চোখ দুটো বন্ধ করে বললাম, চোখ বন্ধ করলেই যেন একটা স্বপ্ন দেখি। মায়াবতীর স্বপ্ন। স্বপ্ন, জাগরণ সবটা জুরেই যেন কুহু থাকে।
____________________
কুহু.
ঠিক করে শাড়ীটা পরো মা। কুটুম বাড়ি যাচ্ছো একটু সুন্দর করে পরিপাটি হয়ে যেতে হবে তো নাকি!

হ্যাঁ আমি রেডি। এখন শুধু হিজাবটা পরা বাকি।

ওকে মাই ডিয়ার আম্মাজান। আমি তাহলে গলির মোড় থেকে রিকশা ডেকে নিয়ে আসছি।

আচ্ছা যা।

দরজা খুলে বাইরে বেরোতেই আমার চোখ ছানা বড়া হয়ে গেল। তিয়াশ এখন এখানে! তাও আবার গাড়ি নিয়ে।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here