তোমার প্রেমে পড়েছি পর্ব-১৪

0
2880

#তোমার_প্রেমে_পড়েছি
#পর্ব_১৪
#Rimy_Islam

এ বাতাসে রয়েছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির উপস্থিতির ঘ্রাণ। যা তাকে জানান দিচ্ছে, পেছনে কেউ একজন রয়েছে।

চমকিত নমনী পেছনে ফিরতেই প্রিয়মের হাসি মুখটা দেখে ‘হাহ’ সূচক শব্দ বের করে। প্রিয়ম এবার সজোরে হেসে উঠলো। বললো,
— আমাকে দেখে এত ভয় পাও কেন বলো তো?
নমনী হাঁফ ছেড়ে বললো,
— এভাবে ভূতের মতো দাঁড়িয়ে থাকলে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। কিছু কি বলবেন?
প্রিয়ম জবাব দিলো না। অনেকটা সময় স্তব্ধ কাটিয়ে অবশেষে মুখ খুললো। বললো,
— সালটা ২০১৮ হবে হয়তো। ফেসবুকে নিউজফিড দেখতে দেখতে হঠাৎ সাজেস্টেড ফ্রেন্ড লিস্টে একটা মেয়ের ছবি দেখি। মেয়েটার পুরো মুখ অস্পষ্ট, অাধো মুখটার একপাশের নাক ও চিবুক স্পষ্ট। অবনমিত আঁখি যুগলে সূক্ষ্ম চাঞ্চল্যর রেখা। তার অদেখা পাশটায় লম্বা চুলের সমস্তটা কাঁধে গিয়ে পড়েছে। তাই ফাঁকা গলার তিলটা বেশ পরিষ্কার দৃশ্যমান ছিলো। একপ্রকার মোহে পড়ে পরবর্তীতে তার প্রাফাইল ঘেঁটে আর কোনো ছবি পেলাম না।
নমনী হেসে বললো,
— বাহ, দারুণ ঘটনা! তারপর?
— তারপর সেই মেয়েটাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিলাম। পোড়া কপাল, সে একসেপ্ট করেনি। বুঝলাম বড় দেমাক তার।
— আশ্চর্য! এতে দেমাকের কি আছে? একটা মেয়ে কোনো অপরিচিত ছেলেকে ফ্রেন্ড করতে না চাইলে এতে দোষের কিছু নেই। তারপর বলেন।
প্রিয়ম আবারো বললো,
— খুব ইচ্ছে ছিলো একবার সেই মেয়েটাকে সামনা-সামনি দেখার। কখনো ভাবিনি সেই সুযোগটা আসবে। আধলা একপাশ দেখেই আমি শেষ, সেখানে পুরো মানবীকে দেখে পুরো পাগল হয়ে গেলাম।
নমনী ব্যতিব্যস্ত ভঙ্গিতে বললো,
— সত্য! খুঁজে পেলেন কিভাবে? কে সে?
— তুমি।
নমনী অবাক হয়ে বললো,
— How funny you are! But i am serious.
— আমিও সিরিয়াস। বিশ্বাস না করার কারণ আছে কি?

নমনী বারকয়েক ঢোক গিললো। চোখের পল্লব অনড় রয়ে গেলো। মনে মনে বিস্মিত হয়ে ভাবছে, ‘ ছেলেটা বলছে কি? শুরু থেকেই তার দিকে কেমন নজর ফেলা ওর মোটেও পছন্দ হচ্ছিল না। প্রিয়মের বর্ণনা মতে তার প্রোফাইল পিক এমনই ছিলো। এতেও অবাক হবার কিছু নেই। দেশের হাজারো মেয়ের এমন ছবির প্রোফাইল থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে সেটা সেই হবে, তা প্রিয়ম বুঝলো কিভাবে?
নমনী বললো,
— একটা মেয়ের মুখের একপাশ দেখে তাকে খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।
— তাহলে তোমার গলার তিলটাও কি ভুল?
থতমত নমনী শাড়ির আঁচলে নিজের গলার অংশ যতটা সম্ভব ঢেকে নিয়ে বললো,
— এরকম অনেকেরই থাকে।
প্রিয়ম তাচ্ছিল্য হেসে বললো,
— আর কত নিজেকে আড়াল করবে? আমার চোখ তোমাকে ঠিকই চিনে ফেলেছে। তুমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে যখন ভাবনাচ্ছন্ন থাকো, তোমার ওই একপাশের মুখ দেখে আমি চিনে ফেলি বার বার। একবার নয়, দুইবার নয়, শত বার দেখেছি তোমাকে। এখনো বলবে ভুল?

নমনী বললো,
— যদি এমনই হয়, তবে এতে আমার দোষ আছে কি? আমি তো আপনাকে এর পূর্বে কখনো দেখিনি বা চিনিও না। সর্বপরি, আমি আপনার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী।
প্রিয়ম হতাশায় ডুবে বললো,
— এত বড় সত্যটা মনে না করিয়ে দিলে কি হত না?
— না হত না। বাস্তবতা কখনো পিছু ছাড়ে না। চলি কেমন?

নমনী ত্রস্তপদে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। নেত্র বোধ হয় নিচে গিয়েছে। শূন্য ঘরটা দেখে স্বস্তির শ্বাস নেয় নমনী। নেত্রকে এসব কি বলা চলে? যদি বলে তবে কি ভয়ংকর পরিস্থিতি দাঁড় হবে ভাবতেই কাঁটা হয়ে যায় ওর লোমগুলো। কথায় আছে, ‘ দুষ্টু গরুর চেয়ে শূণ্য গোয়াল শ্রেয়।’ সুতরাং এখন তার উচিত সবকিছু নেত্রকে খুলে বলা। এভাবে প্রিয়মকে সুযোগ দিয়ে হাত গুঁটিয়ে বসে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে তাকে না সব খোয়াতে হয়!

চলবে……………

(দুঃখিত পর্বগুলো ছোট করে দেওয়ার জন্য। কেউ পর্ব ছোট বলে মন খারাপ করবেন না। এখন ব্যস্ত সময় কাটছে। লিখতে অনেক সময় প্রয়োজন। সেই সময় নেই। ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here