তুমি আমার ভালোবাসা পর্ব-২৪ শেষ পর্ব

0
3040

#তুমি_আমার_ভালোবাসা
#পর্ব_২৪ (অন্তিম পর্ব)
#Munni_Akter_Priya
.
.
বিয়ের এক সপ্তাহ্ পাড় হয়ে গিয়েছে। সব মেহমানের আসা যাওয়াও শেষ। তাই ফাহাদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোথাও একটু ঘুরতে যাওয়া উচিৎ। হানিমুনের জন্য জায়গা ঠিক করেছে ব্যাংকক। কিন্তু আপাতত এখন ঘুরতে যাবে কক্সবাজার। সাথে যাবে পৃথা আর ওর হাজবেন্ড আকাশ। সব গোছগাছ করাও শেষ। রাতের বাসে রওনা দিবে।

ফাহাদ রুমে বসে পাব্জি খেলছিল। প্রিয়া শ্বাশুরীর সাথে টুকটাক গল্প করে রুমে আসে। ফাহাদের সেদিকে দৃষ্টি নেই। গেমস খেলায় ব্যস্ত। প্রিয়া গিয়ে ফাহাদের সামনে বসলো তবুও কোনো ভাবান্তর নেই। প্রিয়া বিড়বিড় করে বলে,
“অদ্ভুত! বিরক্তিকর! কি আছে এই গেমের মধ্যে যে বউয়ের দিকেও খেয়াল নেই। ধুর!”
প্রিয়া উঠে দরজা পর্যন্ত আসতেই ফাহাদ প্রিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে প্রিয়া।
“ছাড়ো! ছাড়ো বলছি। তুমি তোমার গেমস নিয়েই থাকো।”
“আরে রাগ করছো কেন? তুমি যখন রুমে প্রবেশ করেছো তখনই আমি পাব্জি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছি।”
“তাহলে ফোন নিয়ে কি করছিলে?”
“দেখবে?”
“হু।”
“দাঁড়াও।”
ফাহাদ ফোন বের করে একটা ভিডিও অন করে। যেখানে প্রিয়া বিড়বিড় করে একাই কথা বলছে। ভিডিও টা দেখে ফাহাদকে খামচি দেয়।
“কি করছো এটা হ্যাঁ?”
“তোমার এক্সপ্রেশন ভিডিও করে রাখলাম হাহাহা।”
দুমদাম কয়েকটা কিল বসাতেই শক্ত করে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ফাহাদ।
.
.
রাত নয়টায় বাস ছাড়ে। জানালার ধারে বসে আছে প্রিয়া। ফাহাদের কাঁধে মাথা রাখে। জানালা দিয়ে হিমেল বাতাস বয়ে আসছে। প্রিয়ার এক হাত মুঠোবন্দি করে ফাহাদ চুমু খেয়ে বলে,
“জানো যখন আমরা অফিস থেকে ট্যুরে গিয়েছিলাম তুমি পৃথার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমুচ্ছিলে। আমার তখন খুব ইচ্ছে হয়েছিল তোমার পাশে বসে তোমার মাথাটা আমার কাঁধে রাখতে। আর তাই পৃথাকে সরিয়ে বসিয়েছিলাম। দেখো ছবিগুলো এখনো আছে।”
“তুমি আমায় এত ভালোবাসলে কেন বলো তো?”
“কারণ জানতে চাইছো?”
“হু।”
“তুমি আমায় কেন ভালোবাসো?”
“কারণ ছাড়াই। কোনো কারণ নেই।”
“আমিও ঠিক কোনো কারণ ছাড়াই ভালোবাসি। কারণ নিয়ে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাতে থাকে স্বার্থ। আমি নিঃশ্বার্থভাবে ভালোবাসি তোমায়।”
“নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে হয় তোমাকে পেয়ে।”
“আর আমি ভাগ্যবান তোমায় পেয়ে।”
ফাহাদের কাঁধে মাথা রেখেই প্রিয়া ঘুমিয়ে পড়ে। আর ফাহাদ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে তার হোয়াইট ফেইরিকে।

ভোরে ওরা কক্সবাজার পৌঁছায়। আগে একটা হোটেলে ওঠে। প্রিয়া আর ফাহাদের পাশের রুমে পৃথা আর আকাশ। প্রিয়া ফ্রেশ হয়েই শুয়ে পড়ে। ফাহাদ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে একটুখানি সময়ে ঘুমিয়েও পড়েছে। ডাকতে গিয়েও ডাকলো না। ভাবলো ঘুমাক একটু!

১০টার দিকে খাওয়া-দাওয়া করে বীচে যায়। পানি দেখেই প্রিয়া লাফাতে থাকে। পৃথা আর প্রিয়া দুজনে দৌঁড়ে পানিতে চলে যায়। হাত ধরে দুজনেই ইচ্ছেমত লাফাচ্ছে। হাসছে। আকাশ আর ফাহাদ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। সবাই মিলে অনেকটা সময় পানিতে কাটায়। প্রিয়া আর পৃথা তো কিছুতেই যেতে চাচ্ছেনা পানি থেকে। অনেক কষ্টে বুঝিয়ে সুজিয়ে হোটেলে নিয়ে এসেছে।
বীচ থেকে আসার পরই ফাহাদ কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। বিকেলের দিকে প্রিয়াকে নিয়ে বীচে যায়। কারণ সূর্যাস্ত একদম মিস করা যাবেনা।
সূর্যাস্তের সময় ফটোশ্যুট করছিলো ওরা। এরমধ্যে ফাহাদ বললো,
“তুমি পৃথা আর আকাশের সাথেই থেকো। আমি আসছি।”
“কোথায় যাচ্ছো?”
ফাহাদ যেতে যেতেই বললো,
“আসছি ৫ মিনিট।”
পৃথা আর আকাশ একসাথে সময় কাটাচ্ছিল বলে আর ওদের ডিস্টার্ব করেনি। ফুলকে ফোন দিলো কথা বলার জন্য। ফুল ফোন রিসিভ করে বলে,
“আমার কিউট ভাবীর তাহলে আমার কথা মনে পড়লো?”
“এত সুইট ননোদকে কি আর ভোলা যায়?”
“হু কত যে মনে রেখেছো! সারাদিন পর এখন কল করলে।”
“বাব্বাহ্! আমার সুইটি রাগ করেছে?”
“অনেক রাগ করেছি।”
“আচ্ছা কি করলে রাগ ভাঙ্গবে?”
“উমমমমমম!!! আসার সময় অনেকগুলো আচার আর বাদাম নিয়ে আসবা ওকে?”
“আচ্ছা। সাথে আরো অনেক কিছুই নিয়ে আসবো।”
“আমার লক্ষী ভাবী।”
“বাবা-মা কেমন আছে?”
“ভালো আছে।”
“মা কোথায়?”
“মা তো, মায়ের ঘরে। ও ভাবী তুমি কি এখন বীচে?”
“হ্যাঁ। কেন?”
“আমি হোয়াটসএপে ভিডিও কল দিচ্ছি তুমি আমাকে সানসেট দেখাও প্লিজ প্লিজ প্লিজ!”
“আচ্ছা পাগলী।”
ভিডিওকলে সানসেটসহ আশেপাশের বিভিন্নদৃশ্য দেখাচ্ছিল। ব্যাক ক্যামেরায় একজনের মুখ দেখে প্রিয়া থমকে যায়। এই আবছা আলোতেও মুখটা স্পষ্ট দেখছে প্রিয়া। শিহাব! এতবছর পর শিহাবকে দেখে চিনতে এতটুকুও কষ্ট হলো না। ভিডিওকলে ফুল অনেক কথাই বলছে কিন্তু প্রিয়ার কানে কোনো কথা যাচ্ছেনা। শিহাব প্রিয়ার দিকেই এগিয়ে আসছে। প্রিয়ার শরীর থরথর করে কাঁপছে। কাঁপা কাঁপা গলায় ফুলকে বললো,
“ফুল আমি হোটেলে গিয়ে তোমায় কল দিচ্ছি।”
“ওকে ভাবী।”
প্রিয়া ফোন কেটে দিয়েই হোটেলের পথে যায়। পেছন পেছন শিহাবও আসে। পেছন থেকে ডাক দেয়,
“প্রিয়া দাঁড়াও প্লিজ। একটাবার দাঁড়াও।”
শিহাব দৌঁড়ে প্রিয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। একটু ঝুঁকে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,
“প্লিজ কিছু কথা বলবো!”
প্রিয়া এবার ভালো করে দেখছে শিহাবকে। আগের মতই আছে। কিন্তু চেহারায় লাবণ্য নেই আগের মত।
“কথা বলবে না প্রিয়া?”
“তোমার সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে নেই আমার।”
“এটাই স্বাভাবিক। তবুও একটু সময় দাও প্লিজ।”
“সন্ধ্যা হয়ে গেছে, আমাকে যেতে হবে।”
“তাহলে কাল সকালে? প্লিজ?”
“ভেবে দেখবো।”
“ভেবে নয়। একটাবার প্লিজ!!!”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
“কাল সকাল ছয়টায় আমি এখানেই অপেক্ষা করবো।”
“আসছি আমি।”
.
রাতে আর ঘুম আসলো না প্রিয়ার। জেগে জেগে ফাহাদকে দেখলো। ফাহাদের গালে হাত বুলিয়ে মনে মনে বললো,
“স্যরি ফাহাদ। তোমাকে না জানিয়েই যাচ্ছি। আমার অনেক কিছু বলার আছে শিহাবকে।”

সকাল সকাল ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়ে প্রিয়া। বীচে গিয়ে দেখে শিহাব দাঁড়িয়ে আছে। প্রিয়াকে আসতে দেখেই শিহাব এগিয়ে আসে। হাসি হাসি মুখে বলে,
“গুড মর্নিং।”
“মর্নিং।”
“কেমন আছো?”
প্রিয়া একবার ফাহাদের দিকে তাকিয়ে চুপ করে রইলো। অনেকক্ষণ পর বললো,
“ভাগ্য আমাদের কোথায় নিয়ে আসে তাই না শিহাব? একটা সময় ছিল যখন আমি তোমার জন্য পাগল ছিলাম। একটা বার দেখা করার জন্য কত অনুনয়বিনয় করতাম। কিন্তু তখন তুমি আমার দিকে ফিরেও তাকাওনি। আর আজ! আজ শত রিকোয়েস্ট করে তুমি আমায় দেখা করাতে রাজি করিয়েছো।”
শিহাব মাথা নিচু করে আছে। প্রিয়া বললো,
“এতগুলো বছর তোমার থেকে, তোমার স্মৃতি থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি। কিন্তু মন কেন জানি চাইতো একটাবার তোমার সাথে দেখা হোক। শুধু একটাবার। তোমাকে আমার অনেক প্রশ্ন করার আছে। যেগুলোর উত্তর তুমি আমায় দাওনি তখন। এখন কি দিবে সেগুলোর উত্তর? কেন করেছিলে আমার সাথে এমন? কেন ঠকিয়েছিলে আমায়?”
“তোমার কোনো প্রশ্নের উত্তর নেই আমার কাছে প্রিয়া। কিন্তু আমি জানি আমি তোমার প্রতি অন্যায় করেছি। কাউকে ঠকিয়ে যে কেউ সুখী হতে পারেনা সেটা আমি ভুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকৃতি কিছুই ভুলেনি। কঠিন শাস্তি দিয়েছে আমায়।”
প্রিয়া একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে বললো,
“তোমার বউ কেমন আছে?”
শিহাবের চোখগুলো ছলছল হয়ে গেলো। গলা ধরে এসেছে।
“অনেক কিছু হয়ে গিয়েছে এরমধ্যে। আমি তোমায় ঠকিয়ে ঠিক করিনি।”
“কি হয়েছে?”
“আমার বিয়ের পর খুব ভালোমতই সময়গুলো কাটছিল। হাসাহাসি, সুখ সবই ছিল। বিয়ের ছয় মাস পর একদিন সংবাদ পেলাম আমার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট। এত আনন্দের মধ্যেও আরেকটা আনন্দের খবর এলো। আরো বেশি ভালোবেসে ফেললাম ওকে।”
“নাম কি তোমার ওয়াইফের?”
“শোভা।”
“বাহ্! নামেরও তো খুব মিল। কোথায় সে? হোটেলে রেখে আসছো?”
“না।”
“তাহলে?”
“শোভা যখন তিন মাসের প্রেগন্যান্ট তখন বাথরুমে পা পিছলে পড়ে যায়। বাচ্চাটাকে বাঁচানো যায়নি। এরপর শোভা অনেক ভেঙ্গে পড়ে। কারো সাথেই কোনো কথা বলেনা। এমনকি আমার সাথেও না। তখন ডক্টর আর বাড়ির সবাই বললো শোভাকে নিয়ে যেন রাজশাহী থেকে ঢাকায় চলে আসি। ব্যস্ত শহরে ঘুরলে ফিরলে মনটা ভালো হয়ে যাবে। আমিও তাই করলাম। ঢাকায় একটা ফ্লাট ভাড়া করলাম। অফিস থেকে এসে যতটা সময় পেতাম ওকে দিতাম। সত্যি বলতে অনেক ভালোবেসে ফেলেছিলাম ওকে। সময় পেলেই ওকে নিয়ে ঘুরতে বের হতাম। একটা সময়ে ও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে। ভাবলাম আবারও আগের মত হ্যাপী হবো আমরা। কিন্তু এমনটা হলো না। পাশের ফ্লাটের এক ছেলের সাথে শোভার সম্পর্ক হয়। দুইমাস পরই ছেলেটার সাথে ও পালিয়ে যায়। যাওয়ার আগে চিঠি লিখে যায়। যেটায় লিখা ছিল, ‘শিহাব আমি আর তোমার সাথে সম্পর্কটা রাখতে পারবো না। আমি দিদারকে ভালোবাসি। আর ওর হাত ধরেই বের হলাম। আমি তোমার সাথে হ্যাপী নই। আমাকে খোঁজার বৃথা চেষ্টা করো না প্লিজ। আর আমায় ডিভোর্স দিয়ে মুক্তি দিয়ো।”
কথাগুলো বলেই শিহাব কাঁদছে। দ্বিতীয়বারের মত শিহাবকে কাঁদতে দেখছে প্রিয়া। আগেরবার কেঁদেছিল প্রিয়ার জন্যই। তবে সেটা ছিল অভিনয় মাত্র। কিন্তু এই কান্নাটা অভিনয় নয়। শিহাবের জন্য একটুও খারাপ লাগছেনা প্রিয়ার। রাস্তার একজন পথচারীও যদি প্রিয়াকে এই কথাগুলো বলতো তাহলে প্রিয়া শিওর যে কষ্টে কেঁদেই ফেলতো। কিন্তু এখন একটুও কষ্ট হচ্ছেনা। প্রিয়া কি বলবে বা বলা উচিত বুঝতে পারছেনা। শিহাব নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে বললো,
“আমাকে ক্ষমা করে দাও প্রিয়া। আমি জানি এইসব হয়েছে শুধু তোমাকে ঠকানোর জন্য।”
প্রিয়া তখনও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। এবার শিহাব প্রিয়ার হাত ধরে বললো,
“আমায় ক্ষমা করে দাও প্লিজ। আরেকটাবার কি আমায় ক্ষমা করে সব আগের মত করা যায় না? একটা সুযোগ আমাকে দাও। পৃথিবীর সব ভালোবাসা তোমায় দিবো। শুধু একটাবার সুযোগ দাও। আমি জানি তুমিও আমায় এখনো ভালোবাসো।”
প্রিয়া শিহাবের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো। ঠোঁটের কোণে তাচ্ছিল্যর হাসি।
“আমাকে টাচ করার কোনো রাইট নেই তোমার শিহাব। আর আমি তোমায় সুযোগ দিবো মানে কি? তুমি কি জানো আমি বিবাহিত? আদারওয়াইজ তুমি ভুল জানো। আমি তোমাকে ভালোবাসিনা। একটা প্রতারক কখনোই আমার ভালোবাসার যোগ্য না।”
“তুমি ম্যারিড?”
“কেন বিশ্বাস হচ্ছেনা? তুমি কি ভেবেছিলে আমি তোমার অপেক্ষায় পাগল বনে যাবো? হ্যাঁ সত্যিই পাগল হতাম যদি তোমার ভালোবাসাটা সত্যি হতো। কিন্তু তুমি তো আমায় ঠকিয়েছো। পরিস্থিতির উপর দোষ চাপিয়ে খুব সুন্দর করে আমায় ঠকিয়েছো। আর আমি যদি বিবাহিত নাও হতাম না তবুও আমি তোমার জীবনে কখনোই ফিরে যেতাম না। কখনো না।”
শিহাবের চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। প্রিয়া কিছুক্ষণ দম নিলো। এরপর ঠান্ডা গলায় বললো,
“তুমি যেদিন বিয়ের আনন্দে শামিল সেদিন আমি বাবার লাশ জড়িয়ে ধরে কাঁদি!”
“লাশ!! তোমার বা…বা….”
“আমার বাবা বেঁচে নেই শিহাব। এরজন্য আমিই দায়ী। কিভাবে জানো? কারণ আমি তোমার মত একটা প্রতারককে ভালোবেসেছিলাম। যার শাস্তি পেলো আমার বাবা। আমাদের একা করে দিয়ে ওপারে চলে গেলো।”
“কি…কিভাবে হলো এ…সব?”
“তোমার গায়ে হলুদের রাতে আমি তখন পাগল প্রায়। আবেগের বসে সুইসাইড করতে যাই। বাবা ছিল হার্টের রোগী। আমাকে ওভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে সহ্য করতে পারেনি। হার্ট এ্যাটাক করে মারা যায়। আমিতো ঠিকই বেঁচে গেলাম কিন্তু মেরে ফেললাম আমার বাবাকে। তুমি যেদিন আনন্দে সেজেগুজে বিয়ে করতে যাও সেদিন আমি বাবার লাশ বুকে জড়িয়ে কেঁদেছি। তুমি যেইরাতে শোভার সাথে ঘনিষ্ঠ মুহুর্ত কাটাও আমি সেই রাতে বাবার ছবি বুকে নিয়ে কেঁদেছি। আস্তে আস্তে সবার থেকে নিজেকে আড়াল করে নেই। বাবার মৃত্যুর জন্য আমি এখনও নিজেকেই দায়ী মনে করি। বিশ্বাস জিনিসটা হারিয়ে ফেলি। সবার ধারণা ছিল হয়তো বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবো আগের মত। বিয়ে করার মত কোনো মানসিকতা আমার ছিলনা। শুধুমাত্র সবার মুখের দিকে তাকিয়ে রাজি হই। কিন্তু বিধিবাম সেও আমায় ঠকায়। নাম তার মৃন্ময়। একটা সময় তোমার মতই ভালোবাসায় দেখায় আমায়। অভিনয়যুক্ত ভালোবাসা। বিশ্বাস করতে শুরু করি আবার। গায়ে হলুদের রাতে সে আমার পায়ে ধরে বলে আমায় বিয়ে করতে পারবেনা তার এক্স গার্লফ্রেন্ডের জন্য। আটকাইনি তাকে। পরে সে উপলব্ধি করলো সে এখনো আমায় ভালোবাসে। যেমনটা এখন তুমি উপলব্ধি করছো। তোমাদের কাছে ভালোবাসা মানেই তো পুতুলখেলা। মৃন্ময়কে আমি এক্সেপ্ট করতে পারিনি। প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিলো। তার খালাতো ভাইয়ের সাথেই আমার বিয়ে হয়। মানুষটা আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে।”
“আর তুমি?”
“আমি তাকে আমার সবটা দিয়ে ভালোবাসি। কেন জানো? কারণ তার ভালোবাসায় বিন্দুমাত্র অভিনয়ের ছোঁয়া নেই। যেখানে তোমার ভালোবাসা ছিল সবটাই নাটক।
তোমার বিয়ের পর আমি সবই জানতে পারি। তুমি আমার আগেও বেশ কয়েকজনের সাথে টাইমপাস করেছো। তারাও ছিল তোমার লেভেলের। তাই হয়তো তোমায় ভুলতে পেরেছিল। আমাকে যখন থেকে তুমি ইগনোর করা শুরু করো তখন আসলে তোমার পরিবার থেকে কোনো চাপ আসেনি। তুমি নতুন রিলেশনে জড়িয়েছিলে। আর সবেচেয়েও মজার বিষয় ছিল আমার জন্য এটা যে, তোমার বিয়ে আরো আগেই ঠিক হয়েছিল শোভার সাথে। আমি ছিলাম তোমার টাইমপাস। কিন্তু আমার ভালোবাসা ছিলে তুমি। আমার পরে যার সাথে রিলেশনে গিয়েছো তার সাথে এক সপ্তাহ্ এর মত রিলেশন ছিল তাই না? এরপর শোভাকে বিয়ে করো। বিয়ের আগেও আমার কাছে কতই না নাটক করেছো। তুমি বলেছিলে তোমার পরিবারের সবাই জানে আমার কথা। কিন্তু সত্যিটা হলো কেউই জানতো না আমার কথা। শুধুমাত্র ঢাকার তোমার সেই বন্ধুগুলো বাদে। তুমি বলেছিলে তোমার পরিবার আমায় মানবেনা। আমি ঢাকা শহরের মেয়ে বলে। সত্যিটা হলো তুমি বাড়িতে বিয়ের বিষয়ে আমার কথা জানাওনি। আমার বন্ধুরা যখন আমায় ছেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলো তোমার কাছে। তুমি বলেছিলে আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না। তাই তোমার পরিবার মানবেনা কখনো। ভাবতে পারছো কতটা নিচু তোমার মন? তোমার কাছে টাকা-পয়সা, বাড়িঘর ছিল ভালোবাসা। আমি নই! বিয়েও করেছো বড়লোকের মেয়েকে। কি পেলে? থাকলো সে তোমার? আসলে কি বলো তো শিহাব, ভালোবাসা কি তুমি জানোইনা। তুমি জাস্ট একটা মোহে আকৃষ্ট হও। আমি ভাবতাম আমি তোমার যোগ্য নই। কিন্তু সত্যটা হলো তুমি আমার যোগ্য নও। আমার ভালোবাসার তো নও’ই। আমি তোমায় অভিশাপ দেইনি। হয়তো আমার মায়ের চোখের পানি নয়তো আমার চোখের পানিই তোমার জন্য অভিশাপরূপ ছিল। যে কারণে সব পেয়েও তুমি হারিয়েছো।
আসলে একটা কথা আমি সবসময়ই মানি। আল্লাহ্ যা করে ভালোর জন্যই করে। যে মানুষ বিয়ের আগে ঠকাতে পারে, সে বিয়ের পরও ঠকাতে পারে। এজন্যই হয়তো আল্লাহ্ তোমার সাথে আমার জোড়া বানায়নি। তুমি চলে গিয়েছো বলেই আমি সত্যিকারের ভালোবাসার দেখা পেয়েছি। আমার ফাহাদকে পেয়েছি। যার চোখে আছে আমাকে হারানোর ভয়। যার মনে আছে আমার জন্য সীমাহীন ভালোবাসা।
অহংকার নয়, একটা কথা বলি। ফাহাদ কিন্তু তোমার চেয়ে অনেক অনেক বড়লোক। তবুও সে এই গরীব মেয়েটার জন্যই পাগল হয়েছে। অপরিসীম ভালোবেসে বিয়ে করেছে। সে টাকা-পয়সা, বাড়িঘর দেখেনি। সে সঠিক মানুষ দেখেছে। ঠিক তেমনই তুমি ছিলে আমার জীবনে ভুল মানুষ। যার খেসারত আমাকে অনেকভাবে, অনেক সময় ধরে দিতে হয়েছে। আর আল্লাহ্ তারপরই পাঠালেন আমার জীবনে ফাহাদকে। প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিবেই। আজ বা কাল! নিয়েছেও। প্রকৃতি তোমায় দিয়েছে শাস্তি আর আমায় দিয়েছে আমার ভালোবাসা।”

সূর্যোদয় হয়েছে চারদিকে সূর্যের রক্তিম আভা। প্রিয়ার দৃষ্টি সেখানেই। শিহাবের দিকে তাকাতেই দেখলো শিহাবের চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।
“তুমি অনুতপ্ত কি’না আমি জানিনা শিহাব। তবে তোমাকে একটা কথাই বলবো, আর কাউকে আমার মত ঠকিয়ো না প্লিজ। আর হ্যাঁ থ্যাঙ্কিউ ফাহাদের মত একজন সঠিক মানুষকে আমার জীবনে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। তুমি চলে না গেলে আমাকে আরো বেশিই পস্তাতে হতো। আমি অনেক অনেক অনেক বেশিই খুশি যে আল্লাহ্ ফাহাদকে আমার জীবনে পাঠিয়েছে।
ভালো থেকো। আর পিছু ডেকো না আমায়।”
প্রিয়া উল্টোপথে হাঁটা শুরু করলো। একবারের জন্য পিছু ফিরে তাকালো না।
হোটেলে গিয়ে দেখলো ফাহাদ বিছানায় নেই। ব্যালকোনিতে গিয়ে পেয়ে গেলো।
“এত তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলে যে?”
কফিতে চুমুক দিয়ে ফাহাদ পিছনে ঘুরে বললো,
“হুম। কফি খাবে?”
“না।”
“দেখো আকাশটা কত্ত সুন্দর পরিষ্কার লাগছে। মনে হচ্ছে সব মেঘ কেটে গিয়ে শান্তিতে ভাসছে।”
“ঘুম থেকে উঠে আমায় দেখোনি। এখন যখন আসলাম জিজ্ঞেস করলে না কেন কোথায় গিয়েছিলাম?”
“তুমি আমার স্বাধীন ভালোবাসা। সবকিছুর জন্যই কি কৈফিয়ত চাইতে হবে? তাছাড়া আমি তো জানি তুমি কোথায় গিয়েছিলে।”
প্রিয়া অবাক হয়ে বললো,
“জানো?”
“হু। শিহাবের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে তাইনা?”
“আসলে….”
প্রিয়াকে থামিয়ে দিয়ে ফাহাদ বললো,
“আমি কোনো কারণ জানতে চাইনা।”
রুমে ঢুকে একটা শার্ট নিয়ে বাহিরে চলে গেলো ফাহাদ। প্রিয়া এতবার পিছু ডাকা সত্ত্বেও শুনলো না। খুব ভয় করছে। ফাহাদ কি ভুল বুঝলো! ছেড়ে দিবে কি ভুল বুঝে। উপায় না দেখে ফোন করে। রুমের মধ্যেই ফোন বেজে ওঠে। ফোনটা রুমেই রেখে গেছে। আকাশকে যে বলবে সেটাও পারছেনা! অযথাই ওদের টেনশনে ফেলবে আর ওদের মুহুর্তগুলোকে নষ্ট করতে ইচ্ছে হলো না প্রিয়ার। তাই অপেক্ষা করতে লাগলো। সকাল পেড়িয়ে দুপুর! দুপুর পেরিয়ে বিকাল! বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা! এখনো ফাহাদের আসার কোনো নাম নেই। টেনশনে মাথা কাজ করছেনা প্রিয়া। কাঁদতে কাঁদতে অবস্থা খারাপ।
রাতঃ ১০টা
ফ্লোরে শুয়ে শুয়ে কাঁদছে প্রিয়া। তখন দরজা খোলার আওয়াজে উঠে বসে। ফাহাদকে দেখে দৌঁড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
“কোথায় গিয়েছিলে তুমি? জানো কত টেনশন হচ্ছিলো? কেন আমাকে একা করে চলে যাচ্ছিলে? আমায় ভুল বুঝোনা প্লিজ!!!”
ফাহাদ চুপচাপ নিজ থেকে প্রিয়াকে ছাড়িয়ে নেয়। ফাহাদের হাতে কিছু প্যাকেট ছিল। সেগুলো বিছানায় রাখতে রাখতে বললো,
“ফ্রেশ হয়ে নাও।”
“তুমি আমার ওপর রেগে আছো। আমার কথাটা শুনো ফাহাদ।”
কিছু না বলে ফাহাদ প্রিয়াকে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়। শাওয়ার ছেড়ে দেয়। প্রিয়া হাজার কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছেনা। গোসল শেষে ফাহাদ বেরিয়ে যায়। প্রিয়া চেঞ্জ করে বের হয়। কাঁদতে কাঁদতে বলে,
“আমার কথা শোনো প্লিজ।”
“চুপ করে থাকো।”
প্যাকেট থেকে একটা সাদা শাড়ি বের করে ফাহাদ। নিজ হাতে প্রিয়াকে শাড়ি পড়িয়ে দেয়। নিজে চুল আঁচড়ে দেয়। মুখে হালকা ফেস পাওডার দিয়ে দেয়। চোখে কাল আর ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে দেয়। কপালে সাদা পাথরের একটা টিপ পড়িয়ে দেয়। দুই হাত ভর্তি খাঁজকাটা কাঁচের চুরি পড়িয়ে দেয়।
প্রিয়ার কোনো কথাই শুনছেনা। ভুল ভাঙ্গানোরও কোনো সুযোগ দিচ্ছেনা।
প্রিয়াকে রেডি করিয়ে ফাহাদ গোসল করতে যায়। অভিমানে, কষ্টে বুক ফেঁটে কান্না আসছে প্রিয়ার। বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে থাকে।
.
ফাহাদ গোসল করে একটা সাদা পাঞ্জাবি পড়ে। হাতা ফোল্ড করে নেয়। দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে খালি গলায় গান ধরে,
“কেনো ভাবো ছেড়ে যাবো তোমায়?
ছেড়ে গেলে তোমায় পাবো কোথায়!
তোমাকে নিয়ে জীবন, আর জীবন তো হয়না দু’বার….
তুমি আমার বসুন্ধরা, তুমি আমার বাঁচামরা,
তুমি আমার রঙিন আশা, তুমি আমার ভালোবাসা!!”
গান শুনেই প্রিয়া বালিশ থেকে মুখ উঠিয়ে শোয়া থেকে বসে। ফাহাদ তখন মুচকি হেসে দুই হাত প্রসারিত করে দেয়। প্রিয়া দৌঁড়ে এসে ফাহাদের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফাহাদও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। দুজনের চোখেই আনন্দের অশ্রু। এতক্ষণে ফাহাদের বুকটা শান্তি হলো প্রিয়াকে বুকে নিয়ে।
“কাঁদছো কেন পাগলী? আমি তোমায় কি করে ভুল বুঝি বলোতো? আমি তো জানি আমার পরীটা আমায় কত্ত ভালোবাসে। আমি কালই তোমায় শিহাবের সাথে কথা বলতে দেখেছি। যদিও আমি জানতাম না ঐটা শিহাব। তবে আমার মন বলছিল ঐটাই শিহাব। আমিও চাইতাম একটাবার তোমার ওরসাথে দেখা হোক। ও দেখুক তুমি কতটা ভালো আছো। আমার বিশ্বাস আছে তোমার প্রতি। তাই তোমায় কোনো প্রশ্ন করিনি।”
“তাহলে এতটা সময় কেন কষ্ট দিয়েছো?”
“এতদিন পর এক্সের সাথে দেখা। ওর অবস্থা জেনে বা ওকে দেখে তোমার খারাপ লাগতে পারে। তাই কিছুটা সময় আমি দূরে ছিলাম। যাতে তোমার মন শুধু আমার দিকেই থাকে। তাছাড়া দুজনই দুজনের প্রতি ভালোবাসার টান উপলব্ধি করতে পারলাম। আমার যে কি কষ্ট হচ্ছিল তোমায় ছাড়া থাকতে। আমি কখনো তোমায় ছাড়তে পারবো না। তোমাকে ছাড়া থাকলে আমি দম আটকেই মরে যাবো।”
“আমিও তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না ফাহাদ। ভালোবাসি ভালোবাসি।”
“ভালোবাসি আমার পাগলীটা।”
দুজনই চুপ করে রইলো কিছুক্ষণ। ফাহাদ বললো,
“প্রিয়া!”
“হু।”
“চাই।”
“কি?”
“আদর।”
“নির্লজ্জ!”
“বুকে লাগে তো! আর নির্লজ্জ যখন বললে তখন নির্লজ্জের কাজটা করেই ফেলি। কি বলো?”
“একদম না।”
“তুমি না বললেও আমি শুনছিনা।”
প্রিয়াকে পাঁজাকোলা করে বিছানায় নিয়ে যায়। টেবিল ল্যাম্প অফ করে দেয়। প্রিয়াকে একটানে নিজের বাহুদ্বরে আবদ্ধ করে। শাড়ির কু্ঁচি খুলে ফেলে। প্রিয়ার ঠোঁট নিজের ঠোঁটের দখলে নিয়ে নেয়। সূচনা হয় আরো একটি ভালোবাসাময় রাত!

আমরা সবাই সবার ভুল বুঝতে পারি। কিন্তু অনেক দেড়িতে। ততদিনে অপর মানুষটা হয়তো ভুলেই যায় কি ঘটেছিল তার জীবনে। ঠকিয়ে কেউই সুখী হতে পারেনা। রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার বলতে একটা কথা আছে। প্রকৃতি কখনো তার প্রতিশোধ নিতে ভোলে না। মৃন্ময়ের একটা ভুলে প্রিয়ার জীবন কিছু সময়ের জন্য থমকে গিয়েছিল। যার ফলস্বরূপ প্রিয়াকে হারাতে হলো। চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষটিকে ভাইয়ের বউ হিসেবে সহ্য করতে না পেরে পাড়ি জমালো বিদেশের মাটিতে। শিহাব তার কর্মের ফল পেলো প্রতিটা পদে পদে। জীবনে সুখের দেখা পেয়েও হারালো। কাউকে কাঁদিয়ে, ঠকিয়ে সুখী হওয়া বড্ড কঠিন।
অপরদিকে প্রিয়া ঠকে গিয়েও জিতে গেলো। উপহারস্বরূপ পেলো ফাহাদের মত একজন সঠিক মানুষকে। দুজনের প্রতি দুজনের আছে অফুরন্ত ভালোবাসা। সময় পেলেই একে অপরকে বলে, “তুমি আমার ভালোবাসা।”
(সমাপ্ত)

[অবশেষে গল্পটা শেষ করতে পারলাম। এবার আসলে কি বলবো বুঝতেছিনা। চারপাশে এত এত মৃত্যু দেখে মাথা ঠিক রাখা কঠিন। আল্লাহ্ সবাইকে ভালো ও সুস্থ রাখুক। করোনা ভাইরাস থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করুক। সবাই নামাজ পড়ে আল্লাহ্ এর কাছে মাফ চাই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল।
জানিনা আবার কবে লিখবো। এসবের মধ্যে লেখার মানসিকতাও থাকেনা। একদিকে এত মৃত্যুর খবর আর অন্যদিকে গৃহবন্দি। তবুও চেষ্টা করবো দ্রুত ফিরে আসার। ততদিন সবাই সাবধানে থাকবেন, সতর্ক থাকবেন।
হ্যাপি রিডিং]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here