ধূসর অনুভূতি পর্ব-০৮

0
1365

#ধূসর_অনুভূতি
পর্ব:০৮
আজ মায়ের জন্মদিন।আমরা মাকে সারপ্রাইজ দিতে চাচ্ছি। মায়ের মন এমনিতেই খারাপ তিশির জন্য।আর,বাবাও বললো তোর মা ইদানীং বেশি খ্যাটখ্যাট করে।ওকে কোনো উপহার-টুপহার দেওয়া উচিৎ। তখন, ঝিনুক আপু বললো, মায়ের তো সামনে জন্মদিন আসো আমরা মাকে সারপ্রাইজ দিই।প্রথমে কেউ রাজি না হলেও পরে সবাই রাজি হলো। একটা উপলক্ষ্য আসলেই দরকার।যাতে সবাই আনন্দ করতে পারি।তিতলির মতো ছোট একটা বাচ্চা গম্ভীর ভাবে ঘুরে বেড়ালে ভালো লাগে না।ওর দাদির জন্মদিন দেখলে ও হয়তো অনেক মজা পাবে।
তিতলি আমাকে এসে বললো,দাদির জন্মদিনে তো সবাই আসবে।ফুপি আজ কি আমার মামনি আসবে?
কথাটা বলেই ও এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।সেই দৃষ্টিতে মিশে আছে ভয়; আমি “না” বলবো এই ভয়। আমার খুবই মায়া লাগলো।আমি বললাম,হ্যাঁ আসবে তো।
তিতলি খুব সুন্দর করে হেসে দিলো।এরপর প্রজাপতির মতো উড়তে লাগলো ঘরময়।কি আনন্দ ওর চোখে মুখে। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। বিকালের দিকে সারাঘর সাজানো হয়ে গেছে।আর্টিফিশিয়াল ফুল,লতা-পাতা দিয়ে।বাসার সবাই কে দাওয়াত করা হয়েছে।মায়ের থেকে বিষয়টা বেশি ক্ষন লুকিয়ে রাখা গেলো না।বাবাই বলে দিলো সব,বাবার পেটে কোনো কথা থাকে না।মা এমন ভাণ করছে যেন তিনি খুবই অখুশি। কিন্তু,আসলে তিনি অনেক খুশি। রান্নাঘরে এসে আমাদের বলতে লাগলেন,কি ছেলেমানুষী শুরু করেছিস তোরা?এই বুড়ি বয়সে জন্মদিন… লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে।
ঝিনুক আপু বললো,মাথা কাটা গেলে সুপার গ্লু দিয়ে জোরা লাগাও যাও। এখন কিচেনে এসো না।বার্থডে গার্লের কিচেনে আসা বারণ।মা বললো,তাহলে আমি কি করবো?আপু বললো, গিয়ে সাজগোজ করো।
মা বিরক্ত হয়ে বললেন, চুপ থাক ছাগল। কিন্তু,সত্যি সত্যিই মা একটা নতুন শাড়ি পরলেন।একটু বোধহয় সেজেওছেন।কেমন অন্যরকম লাগছে…বাবা বললেন, তোর মাকে আজকে মায়াবী লাগছে খেয়াল করেছিস?আমি কিছু বলার আগেই মা বললো, কেন আগে কেমন লাগতো?বাবা বললো, জাঁদরেল জাঁদরেল লাগতো।
মা রাগী চোখে বাবার দিকে তাকালো।
আমি হেসে প্রস্থান করলাম। কিছুক্ষণ পর মেহেদী ভাইয়া এলো।আমি দরজা খুলে দেখি তার হাত ভর্তি টকটকে লাল গোলাপফুল এর তোড়া। মেহেদী ভাইয়াকে দেখেই ঝিনুক আপু ছুটে এলো দরজার সামনে। কিন্তু,ভাব করতে লাগলো অন্য কারণে এসেছে। আমার দিকে তাকিয়ে বললো,নীল রঙের ফ্রাই প্যান টা দেখছিস?
নীল রঙের কোনো ফ্রাইপ্যান আমাদের বাসায় আছে বলে তো আমার মনে হয় না। কাজেই, আমি চুপ করে রইলাম।
মেহেদী ভাইয়া বললো, ঝিনুক…
আপুর চোখে মুখে হাসির রেখা ঝলমল করছে তবুও সে হাসি চেপে রেখে গম্ভীর হয়ে বললো,কি?
মেহেদী ভাইয়া বললো, তোমাদের সারা ঘর তো নকল ফুল দিয়ে ভরিয়ে ফেলছো।এই নাও কয়েকটা আসল ফুলও রাখো। জন্মদিনের মতো শুভ দিনে কিছু আসল ফুল রাখা উচিৎ।
ঝিনুক আপু বললো,আমার বয়েই গেছে আপনার আসল ফুল রাখতে।
এটা বলেই চলে গেল দৌড়ে। দৌড়ে যাওয়ার কি আছে বুঝলাম না।অগ্যতা মেহেদী ভাইয়ার আমার হাতেই ফুল গুলো দিতে হলো।
আমি রুমে এসে দেখি আপু গান গাচ্ছে গুনগুন করে।
আমি বললাম,আপু তুমি সাজবা না?
আপু বললো,আমি পরে সাজবো।তুই আগে সাজ।
এর মধ্যে পরী আপু এসে পরেছে।ইশিতা ভাবী আর তার দুই ছেলে-মেয়েও চলে এসেছে।ইশু ভাবীর বাচ্চারা তিতলির থেকে ২-ত বছরের বড় হবে। কিন্তু,ওরাই তিতলির খেলার সাথী।আমি লক্ষ্য করলাম তিতলি ওদের কাছেও বলছে,জানো আজকে আমার মা আসবে।
আমার খুবই মায়া লাগলো।চোখে পানি চলে আসলো।
পরী আপু বলতে লাগলো,কিরে তুই সাজবি না ঝিনুক?
ঝিনুক আপু বললো,সাজবো তো ঘোড়ার ডিম।
আমি বললাম, আসলেই আপু তুমি দেরী করছো কেন?
সবাই তো চলে এসেছে।
আপু আমার দিকে তাকিয়ে বললো,সবাই এসেছে?
আমি বললাম, হুম।
পরী আপু বললো, শুধু মেহেদী গাধাটা আসে নাই।
ঝিনুক আপু বিচলিত হয়ে বললো,আসে নাই কেন?
পরী আপু বললো,কিরে তুই এতো বিচলিত হচ্ছিস কেন?বাই এনি চান্স তুই কি ওর সাথে ম্যাচ করে ড্রেস পরতে চাইছিস?এর জন্য রেডি হতে দেরী করছিস?
আপু খুব রেগে গেলো।বললো,কেন যে ওর জন্য অপেক্ষা করছি সেটা পরে বুঝবি।
এরপর, আমাদের পীড়াপীড়িতে রেডি হলো।একটা হলুদ রঙের শাড়ি পরলো।মাথায় মেহেদী ভাইয়ার দেয়া গোলাপ ফুল লাগালো।
এরপর আমাদের দিকে তাকিয়ে বললো, আবার ওর গোলাপ ফুল চুলে দিছি দেখে নেগেটিভ ভাবে নিস না।
পরী আপু হাসলো।বললো,দেখলি যুথি একেই বলে চোরের মন পুলিশ পুলিশ।আমরা কি ওকে এই বিষয়ে কিছু বলছি?
আমরা তিনজন রেডি হয়ে বাইরে এসে দেখি সবাই চলে এসেছে হাতে গিফট বক্স নিয়ে।সবাই বলতে আমাদের বিল্ডিং এর সবাই। কিন্তু,মা এখনো আসেননি।
আমি মায়ের রুমে গেলাম।দেখি মা চুপ করে বসে আছে।আমি বললাম,চলো মা।
মা বললো,সরতো। আমার লজ্জা লাগছে।
বলেই মা হেসে ফেললো। অনেক দিন পর মাকে এইভাবে হাসতে দেখলাম।
মাকে নিয়ে বাইরে আসতেই সবাই সমস্বরে বলে উঠলো,হ্যাপি বার্থডে টু ইউ…..
মা লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে সবাইকে ধন্যবাদ জানালো। আমাদের পাশের বাসায় আরমান আংকেল আর তার টেনে পড়ুয়া ছেলে আকাশ থাকে। আকাশ বলে উঠলো,আন্টি আপনার জন্মদিন হচ্ছে শুনে যে কি খুশি লাগছে। আপনার জন্যই আমার মাথায় সুন্দর একটা আইডিয়া এসেছে। সামনের মাসে আমার বাবার জন্মদিনটাও সেলিব্রেট করবো।
মা হেসে ফেললো।কেইকের উপর ৫২ লেখা মোমবাতি দেখে বাবার দিকে কটমট করে তাকালো।আস্তে আস্তে রাগী কন্ঠে বললো, তোর বাপ আমার বয়স কেমন ২ বছর বাড়ায় দিছে দেখছিস?নিজে বুড়া দেখে আমারেও বুড়ি বানাতে চায়।
এরপর কেইক কাটা হলো।সবাই হাসাহাসি করলেও মেহেদী ভাইয়ার মুখটা একদম চুপসানো বেলুনের মতো হয়ে আছে।আমি অবাক হয়ে গেলাম। মেহেদী ভাইয়া এতো মনমরা হয়ে আছে কেন? ঝিনুক আপু বললো,আরে নীল পাঞ্জাবী পরেছে দেখে এমন লাগছে। নীল হলো বিষন্নতার রঙ।
পরী আপু বললো,হইছে ফিলোসফি কপচাবি না। নিশ্চয়ই তুই কিছু একটা করছিস….
ঝিনুক আপু বললো, ভুলে যাস কেন আমি দর্শনের স্টুডেন্ট।
আমি বললাম, বলোনা আপু কি করছো?
ঝিনুক আপু বিরক্ত হয়ে বলল,ধুর ছাই।কিছু একটা হলেই বলবে আমার দোষ।ট্রাম্প কেন হারছে বাইডেন কেন জিতছে সেইখানেও আমার হাত আছে।
পরী আপু বললো, আচ্ছা বাদ দে।একটা ব্যাপার দেখে হাসি পাচ্ছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম,কি আপু?
পরী আপু বললো,সবার বেলায় হয় হলুদ হিমু, নীল রূপা।আর আমাদের ঝিনুক এর বেলায় নীল হিমু, হলুদ রূপা।হা..হা।
ঝিনুক আপু নিজের হলুদ শাড়ির দিকে তাকালো এরপর মেহেদী ভাইয়ার নীল পাঞ্জাবীর দিকে তাকালো।
তাকানোতেই মেহেদী ভাইয়া কেমন করুন চোখে আপুর দিকে তাকালো।
এরপর, এগিয়ে এলো আমাদের দিকে।
ঝিনুক আপুর দিকে তাকিয়ে বললো, ঝিনুক তুমি অনেক বড় অন্যায় করেছো। তোমার শাস্তি পাওয়া উচিৎ।
ঝিনুক আপু বললো,জ্বি।শাস্তি স্বরূপ আমাকে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত কচুগাছে।
পরী আপু বললো,না… মেহেদী গাছে।
এরপর হাসতে লাগলো।
মেহেদী ভাইয়া সরু চোখে তাকিয়ে চলে গেল।
আমি বললাম,কি করেছো আপু তুমি?
ঝিনুক আপু বললো,দেখবি একটু পরে।অতি চালাকি করার জন্য ছোট্ট শাস্তি। আমার স্কেচ বানানো না?
আমি ভাবতে লাগলাম,আপু কি এমন করতে পারে।
খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হবার পর ইশু ভাবী বললো,আন্টি গিফট গুলো খোলেন।
মা রাজি হলেন না।
ঝিনুক আপুও রিকুয়েস্ট করতে লাগলো।
এরপর সবার সামনেই মা গিফট খুলতে বসলো। মেহেদী ভাইয়া বললো,আমি আসি আন্টি।
মা বললো, কেন বাবা। গিয়ে কি করবে?ঐ যুথি ওকে আরেক গ্লাস শরবত দে। ছেলেটা এতো ঘামছে কেন?
মা গিফট খুলতে লাগলেন।সবাই শাড়ি,টিপট-কাপ এর সেট অথবা অন্যান্য গৃহস্থালি জিনিস পত্র এসবই দিয়েছে।
সবার শেষে মা মেহেদী ভাইয়ার গিফট টা হাতে নিলেন।
সেটা খুলে মায়ের চোখ ছানাবড়া।বেশ কয়েকটা পুতুল,আর বাচ্চাদের রান্নাবাটি খেলার সেট। ছোট চুলা,হাড়ি-পাতিল এইসব।
মা চোখ বড়বড় করে মেহেদী ভাইয়ার দিকে তাকালো।ঘর ভর্তি সবাই অট্ট হাসিতে মেতে উঠলো।
মা নিজেও হেসে ফেললো। আকাশ বললো,আন্টি মেহেদী ভাইয়ের গিফটের মধ্যে একটা চিরকুটও আছে দেখেন। নিশ্চয়ই ভাইয়া কারণ টা লিখেছে সেখানে এই উপহার দেয়ার।
মা হাসি মুখে চিঠি হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলো,প্রিয়:টুনটুন মা, জন্মদিনে তোমাকে অনেক আদর। তুমি কি জানো তুমি একটা টুনটুনি, ঝুমঝুমি,ময়না পাখি?একটা কিউট বার্বি ডল।
সবাই আরো জোরে জোরে হাসতে লাগলো। সবচেয়ে বেশি হাসছে ঝিনুক আপু।
মেহেদী ভাইয়া মাথানিচু করে বললো, আমি ভেবেছিলাম তিতলির জন্মদিন।
আমি বললাম,সেকি ভাইয়া?আমি না নিজে গিয়ে আপনাকে বলে আসলাম মায়ের জন্মদিন।
মা এসে মেহেদী ভাইয়ার হাত ধরলেন। বললেন, তুমি মন খারাপ করছো কেন বাবা? তোমার গিফট ই আমার সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে। ছোট বেলার কথা মনে পরে গেছে।
মেহেদী ভাইয়া বললো,স্যরি আন্টি।
এরপর, ঝিনুক আপুর দিকে তাকিয়ে চলে গেলো।
আমি বুঝতে পারলাম,আপুই মেহেদী ভাইয়া কে বলছে আজকে তিতলির জন্মদিন।আপু সবসময় এমন প্যাচ লাগিয়ে কি মজা পায় কে জানে..
আস্তে আস্তে সবাই চলে গেলো।আমি ভাবলাম,মা হয়তো এখন মেহেদী ভাইয়া সম্পর্কে কিছু বলবে।যে ছেলেটা একটা বোকার হর্দ।
কিন্তু,মা বললো, জানিস যুথি। ছোট বেলায় আমাদের পাশের বাড়ির একটা মেয়ের বাবা অনেক বড়লোক ছিল।আমরা তো ছিলাম দিন আনি দিন খাই।তো,ঐ মেয়ের বাবা মেয়েটার এভাবে জন্মদিন করতো। একবার আমি গিয়েছিলাম ওর জন্মদিনে, ওদের বাসায়,ওকে ওর বাবা এমন একটা গিফট বক্স দেয়।ও খুলে দেখে এমনি পুতুল, কিচেন সেট।
আমার এতো মন চাইছিল সেদিন যে,ইশ আমাকেও যদি কেউ এমন দিতো। ছোট মানুষ ছিলাম,খেলার জিনিস এর প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। অনেক দুয়া করতাম। কিন্তু,বাবাকে ভয়ে বলতাম না।যেখানে খাওয়া ই পাই না ঠিক মতো। আবার, জন্মদিন.. উপহার।
এরপর,আশা করতে করতে একসময় ভুলেও গেলাম।আজ হঠাৎ মনে হলো, আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। চোখের পলকেই সময় চলে যায় দেখছিস…মনে হচ্ছে এইতো সেদিনের কথা সব…
মা থেমে বললো,যা মেহেদী কে বলে আয় তো।৯ টার সময় আমাদের বাসায় এসে যেন খাওয়া দাওয়া করে যায়।
আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম।
তিতলি বেচারি সবচেয়ে মনমরা হয়ে রয়েছে।তার মা এলো না।আহারে!আমি বললাম, সোনামনি তোমার মা একটা কাজে আটকে গেছে।
তিতলি ব্যথিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। তার ছলছল চোখ দুটো যেন বলছে,ফুপি তোমরা বড়রা এতো নিষ্ঠুর কিভাবে হও?
……….
মালিহার মা মালিহাদের বাসায় এসেছে।একথা মালিহার বাবা জানে না। তিনি বলেছেন,তার বোনের বাসায় যাবেন।মিথ্যা কথা না বললে আসাই হতো না।
মালিহার মা বললেন, এখানে এসেছি বলে ভাবিস না,তোকে আমি মাফ করে দিয়েছি।তোর মতো কুলাঙ্গার কে মাফ করা অসম্ভব।
মালিহা মাথা নিচু করে বসে রইলো।
মা বললো,তোকে কয়েক টা উপদেশ দিতে এসেছি। হাজার হোক আমি তো মা।মা তো খুনী সন্তানের জেল হলে সেটাও সইতে পারে না।
মালিহা চোখ তুলে তাকালো।মা বললেন,যেহেতু পালিয়ে চলে এসেছিস। বাদশাহর সাথে ছাড়াছাড়িও হয়ে গেছে তাহলে সেই অধ্যায় ভুলে যা।তিতলিকে যেহেতু ফেলে আসতেই পেরেছিস সেহেতু ওকে নিয়ে তোর আর ভাবতে হবে না।তিতলিকে ওর বাবা-দাদারাই দেখবে। বুঝেছিস? এখন আগের সংসারের কথা ভেবে কাঁদলে দেখবি এই সংসারও টিকবে না। এরপর কই যাবি?তোর বাবা তো তোকে বাড়ি ঢুকতে দিবে না।
মালিহা কেঁদে উঠলো। বললো,মা আমি ভুল করে ফেলেছি। অনেক বড় ভুল। ফারহান নেশা করে, আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে অনেক। সারাক্ষন বলে, আমার জন্য নাকি তার বাবা মারা গেছে।আমি ওকে যেমন দেখেছিলাম ও আর তেমন নেই।ওর সাথে কথা বলতেও আমার ভয় লাগে।কথায় কথায় খালি খোঁটা দেয়,মনে করিয়ে দেয় আমার আগেও বিয়ে হইছে, বাচ্চা আছে।
মা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,মালিহা তুই এতো বোকামি কিভাবে করলি? আমাদের জানাতি বাদশাহর সাথে তোর কি সমস্যা হচ্ছে..আমরা বাদশাহ আর তার পরিবারের সাথে বসতাম। বলতাম তাদের যে আমাদের মেয়ে আপনাদের এই এই ব্যবহারে কষ্ট পাচ্ছে। আপনারা এমন করবেন না।এরপরেও তারা তোকে অতিমাত্রায় কষ্ট দিলে আমরাই তোকে নিয়ে আসতাম। তখন তো বাদশাহ নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে তোকে ফিরিয়ে নিতো।অথবা, দরকার পরলে আমরা উপস্থিত থেকেই তোদের ডিভোর্স করাতাম। এরপর,তুই যা করার করতি। বাদশাহ যে যে অন্যায় গুলো করছে তোর সাথে সেগুলো ক্ষমার যোগ্য এবং চাইলে শোধরানো যায়। কিন্তু,তুই যেই অন্যায়টা করছিস এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, কখনোই শোধরানো যাবে না।কখনো না।
মালিহা তাকিয়ে রইলো মায়ের দিকে…..
.
লেখক:শাপলা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here