এক_রক্তিম_ভোর পর্ব_১৮
#প্রভা_আফরিন
‘অয়নের সাথে তোমার শেষ কবে কথা হয়েছে দিশা?’
প্রয়াস প্রশ্ন করলো।
‘বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর আর কথা হয়নি। ভাইয়ার ফোনটা বাড়িতেই ফেলে গেছে।’
প্রয়াসের উদ্যোম ধপ করে নিভে গেলো। কপালে ভাজ গাঢ় হলো আবার। জেসি বললো,
‘ফোন বাড়িতে ফেলে কেনো যাবে? এটাতো সাথে নেওয়ার কথা সিম অন থাকুক বা অফ।’
‘আমিও সেটাই বুঝতে পারছিনা। তবে মায়ের সাথে কথা হয়েছে মাঝে একদিন। সেই নাম্বার আমাদের অফিসের।’ দিশা বললো।
প্রয়াস নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো অনেকক্ষন। একটা কথাও বললো না। ভাবতে লাগলো, ফোন ফেলে গিয়ে সেটা না নিতে আসার মানে নিশ্চয়ই তার দ্বিতীয় ফোন আছে। নীরবতা ভেঙে বললো,
‘অয়নের ফেলে যাওয়া সেই ফোনটা কি পাওয়া যাবে?’
‘যাবে।’
দিশা অয়নের ফোন আনতেই প্রয়াস সেটার কললিস্ট চেক করলো। দিশা সবগুলা না চিনলেও কিছু অফিসিয়াল নাম্বার শনাক্ত করলো কিন্তু অফিসিয়াল নাম্বারের সাথে কিছু আনসেভ নাম্বারও আছে। সেগুলোর লোকেশন ট্র্যাক্ট করতে প্রয়াস ওর পরিচিত পুলিশ বন্ধুর সহায়তা নিলো। আইনের মানুষ থাকলে সব কাজ সহজ হয়ে যায়। প্রয়াস অয়নের লাস্ট এক মাসের কল ডিটেইলস চাইলো। সাথে সেই কল গুলো ঠিক কোথায় কোথায় করেছে তার লোকেশন ডিটেইলস।
তথ্যগুলো পেতে কিছুটা সময় লাগলো। সেই সময়টুকু এক একটা মিনিট এক যুগ মনে হচ্ছিলো। প্রয়াস শুধু মনে মনে চাইছিলো নাবিলার যেন ক্ষতি নাহয়। মেয়েটা এমনিতেই দুর্বল মনের। না জানি কি অবস্থায় রেখেছে অয়ন তাকে।
ফোনের কললিস্টের তথ্য আসতেই দেখলো সেখানকার কলগুলোর লোকেশন সব দিশার জানা নেই। তাই অয়নের পারসোনাল ম্যানেজার তন্ময়ের কাছে যেতে বললো দিশা। সে অফিসেই আছে। দিশার কথায় সবাই তন্ময়ের সাথে দেখা করতে গেলো। তন্ময় অফিস থেকে বাহিরে এসে পরিচিত অফিসিয়াল নাম্বারগুলো শনাক্ত করে দিলো। শুধু কয়েকটা নাম্বার বাদে। সেগুলোতে কল দিয়ে যাচাই করে সন্দেহ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো। শুধু একটা নাম্বার বাদে। নাম্বারটায় বেশ কয়েকবার কল গিয়েছে আগের সপ্তাহে। প্রয়াস তাতে কল দিতেই অপর পাশ থেকে সুইচ অফ এলো।
লোকেশন বলছে যায়গাটা নারায়ণগঞ্জ এর রুপগঞ্জ। অয়নের ম্যানেজার জানালো তাদের কোনো অফিসিয়াল কাজ বা কোনো প্রজেক্ট নেই রুপগঞ্জে। অয়নের বন্ধুবান্ধব থাকলে থাকতে পারে৷ প্রয়াস তবুও হাল ছাড়লো না। হতেও পারে সেখানে অয়নের কোনো ক্লু পাওয়া যাবে। কিন্তু রুপগঞ্জের সঠিক কোন যায়গা তার ডিটেলস নেই। আর সারা রুপগঞ্জ খুজে বেড়াতে গেলে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে। এতো সময় মোটেও ওদের হাতে নেই। যত সময় গড়াবে ততই নাবিলাকে পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাবে। প্রয়াস নিজেকে শান্ত রেখে ভাবার চেষ্টা করলো কি করা যায়।
‘দিশা আমার আরেকটা হেল্প চাই তোমার থেকে।’ প্রয়াসের কন্ঠে আকুতি।
‘আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো ভাইয়া। আপনি বলুন।’
‘অয়নের কোনো পারসোনার ড্রাইভার আছে কি? যাকে সাথে নিয়ে দূরে কোথাও যেত ও?’
দিশা বললো,
‘আমাদের দুজন ড্রাইভার আছে। অয়ন ভাইয়া যখন যাকে পায় তাকেই নিতো। তাছাড়া ভাইয়া মাঝে মাঝে নিজেও ড্রাইভ করে।’
‘আমি ওদের সাথে দেখা করতে চাই। তুমি একটি তারাতাড়ি ব্যবস্থা করে দেবে প্লিজ!’
দিশা ড্রাইভারদের আনতে বেশ বেগ পেতে হলো। দিশার বাবা মা ওর এমন কান্ডে বেশ ক্ষুব্ধ। সে কেনো নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রমান যোগার করতে প্রয়াসকে সাহায্য করছে তাই নিয়ে বিস্তর তর্ক বিতর্ক চললো৷ একপ্রকার জোর করেই বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছে দিশা। ছেলের ভালোবাসায় একদম অন্ধ হয়ে গেছেন ওর বাবা-মা। তাইতো অয়নের অন্যায়গুলো ঢাকতে ব্যস্ত তারা।
দিশা ড্রাইভারদের নিয়ে আসতেই প্রয়াস ওদের জিজ্ঞেস করলো তারা ঢাকার বাহিরে কোথায় কোথায় গিয়েছে অয়নের সাথে এবং রুপগঞ্জ গিয়েছে কিনা?
তারা জানালো অয়নকে নিয়ে বেশ কয়েকবার ঢাকার বাহিরে গিয়েছে এবং একজন ড্রাইভার জানালো সে একবার অয়নকে নিয়ে প্রায় পনেরো দিন আগে রুপগঞ্জ গিয়েছিলো। প্রয়াস যেন এই কথাটাতেই বেশি আগ্রহ পেলো। সে ড্রাইভারকে বললো তাকে সেখানে নিয়ে যেতে।
প্রয়াস, দিশা এবং জেসি যখন ড্রাইভারকে নিয়ে রূপগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হলো তখন ধুসর আকাশের নিচে সন্ধ্যা নেমেছে। প্রত্যেকের চোখে মুখে ক্লান্তি। ড্রাইভারের সাথের সিটে বসেছে প্রয়াস। পেছনে জেসি এবং দিশা। গাড়ি সাই সাই করে এগিয়ে চলেছে নারায়নগঞ্জের দিকে। জেসি পানির বোতলটা প্রয়াসের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
‘একটু পানি মুখে দাও প্রয়াস। তুমি সারাদিন কিছু খাওনি। একটু পানি অন্তত খাও?’
প্রয়াস সিটে মাথা এলিয়ে দিলো। ড্রাইভারকে যতটা সম্ভব স্পিড বাড়াতে বললো। পানির বোতলটা হাতে নিতেই তৃষ্ণায় কাতর মনটা লোভী হয়ে উঠলো। ঢকঢক করে পুরো বোতল পানি শেষ করে ফেলল। পানি পেটে পড়তেই শরীরটা কেমন হাল ছেড়ে দিলো। পেট জানান দিলো সারাদিনের দৌড় ঝাপে তাতে কিছু পড়েনি। কিন্তু খাবার গলা দিয়ে নামবেও না যতক্ষন নাবিলাকে না পাওয়া যাচ্ছে।
মেয়েটাকে শয়তানটা কিভাবে রেখেছে কে জানে? ভালোবাসার মানুষটাকে হারিয়ে ফেলার ভয় যে কি তীব্র যন্ত্রনা দেয় সেটা প্রয়াস হারে হারে টের পাচ্ছে। কানাডা চলে যাওয়ার সময় এমন কষ্ট হয়নি। কারন তখন মনে একটা আশা ছিলো মেয়েটা ভালো থাকবে। কিন্তু এখন! মেয়েটা আদোও ঠিক আছে তো!
নাবিলার পুরো পরিবার দিশেহারা অবস্থায় আছে। তারেক হোসেন যেখানে পারছেন ছুটছেন। পুলিশের বড় বড় কর্মকর্তাদের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু আশানুরূপ কোনো ফলাফল পাননি। প্রয়াস শুধু তাদের এইটুকু জানিয়েছে নাবিলাকে না নিয়ে সে ফিরবে না।
ডেমরা দিয়ে পার হতেই জ্যাম এর মুখে পড়ে অনেকটা সময় নষ্ট হলো ওদের। গাড়িতে বসে অনবরত ছটফট করেই গেলো প্রয়াস। পেছন থেকে জেসি এবং দিশা নানান আশার বাণী শুনিয়ে গেলেও প্রয়াসের মন একটুও শান্ত হলো না। নাবিলা চোখের সামনে দৃশ্যমান না হওয়া অবদি এই অস্থিরতা কমবেও না।
নির্দিষ্ট গন্তব্য পৌঁছাতে রাত নয়টা বেজে গেলো। প্রয়াস ড্রাইভারকে বললো যে স্থানে অয়ন নেমেছিলো সেখান থেকে কিছুটা দূরে থামাতে। হতে পারে অয়ন সতর্ক হয়ে যেতে পারে। পেছন থেকে দিশা বলে উঠলো,
‘চিন্তা করবেন না ভাইয়া। অয়ন ভাইয়া যদি সত্যিই ওখানে থাকে তাহলে তার বোন আপনার সাথে আছে। তাই চাইলেও আপনাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’
তারপর ড্রাইভারকে বললো,
‘আপনি ঠিক সেই যায়গাতেই থামাবেন। অসুবিধা নেই।’
গাড়িটা একটা গলির সামনে থামলো। প্রয়াস গাড়ি থেকে নেমে চারিদিকে চোখ বুলালো। দোতলা, তিনতলা বাড়ির সংখ্যাই বেশি চোখে পড়ছে। রাস্তার কৃত্রিম আলোয় মানুষের আনাগোনা তুলনামূলক কমই চোখে পড়ছে। ড্রাইভার একটা দুইতলা বাড়ির দিকে নির্দেশ করে বললো,
‘অয়ন স্যার সেদিন এই বাড়িটায় ঢুকেছিলো। এক ঘন্টা পর আবার বেড়িয়ে এসেছিলো।’
প্রয়াস, দিশা এবং জেসি বাড়িটায় নজর বুলালো। সাদা এবং নীল রঙের সম্মিলনে বাড়িটার দেওয়াল ছাওয়া। নিশ্চই কারো থাকার জন্য। তবে বাড়ির সামনে কোনো নেম প্লেট নজরে এলোনা ওদের। শুধু একজন গার্ড নজরে এলো। প্রয়াস এগিয়ে গিয়ে শান্ত কন্ঠে তাকে জিজ্ঞাসা করলো,
‘ এই বাড়ির মালিকের সাথে দেখা করতে চাই?’
গার্ড লোকটা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে উত্তর দিলো,
‘আপনারা কারা?’
‘আমাদের আপনি চিনবেন না। মালিক চিনবেন। আপনি ভেতরে যেতে দিন।’
‘এই বাড়ির মালিক এখানে থাকে না। তিনি বিদেশে থাকেন।’
প্রয়াস জিজ্ঞেস করলো,
‘কতদিন যাবত বিদেশ? এই বাড়িতে কেউ থাকে না?’
গার্ডস বললো,
‘ বাড়িতে কেউ থাকে না। মালিক এক বছর যাবত বিদেশে।’
লোকটার উত্তরে প্রয়াস হাসলো। ড্রাইভারের ভাষ্যমতে অয়ন পনেরোদিন আগে এই বাড়িটায় ঢুকেছে অথচ গার্ড বলছে কেউ থাকেই না। অয়নকে এমনি এমনি কেনো ঢুকতে দেবে? বাড়ির মূল দরজার তালাটাও নতুন দেখাচ্ছে। ওরা ঠিক যায়গায়ই এসেছে। প্রয়াস এবার সরাসরি ভেতরের দিকে এগোলে গার্ড তার বিশাল দেহ দিয়ে বাধা প্রদান করলো।
‘একি! বন্ধ বাড়িতে হুট করে ঢুকে যাচ্ছেন কেনো? সরুন এখান থেকে।’
প্রয়াস গার্ডটার হাতের লাঠিটা কেড়ে নিয়ে সর্বোচ্চ শক্তি শক্তিতে তার কোমড়ে আঘাত হানলো। অপর আঘাতটা হাটুতে। কুকিয়ে বসে পড়লো লোকটা।
দিশা ওর গলার স্কার্ফটা এগিয়ে দিয়ে প্রয়াসকে বললো,
‘এটা দিয়ে ব্যাটার হাত উল্টো করে গেইটের সাথে বেধে দিন ভাইয়া।’
প্রয়াস তাই করলো। রুমাল বের করে লোকটার মুখটাও বেধে দিলো। ইট দিয়ে তিনটা বাড়ি দিতেই মূল দরজার তালাটা খুলে গেলো। প্রয়াস ছুটলো ভেতরে। পেছনে আছে জেসি ও দিশা।অন্ধকার ঘরে ফোনের ফ্লাস লাইট জালিয়ে সন্তর্পণে হাটতে লাগলো ওরা।
নিচতলার সুইচ খুজে লাইট অন করতেই আলোকিত হয়ে গেলো চারপাশ। একটি বিলাসবহুল বাড়ি ধরা দিলো সকলের চোখে। বাহিরে থেকে যতটা সাদামাটা ভেতর থেকে ততটাই আকর্ষণীয় বলা যায় বাড়িটাকে। তবে বাড়িটা লোক শূন্য। কেউ নেই আশে পাশে। একদম সুনশান নিস্তব্ধতা ঘিরে আছে চারিদিক। প্রয়াস আস্তে করে পা টিপে টিপে দোতলায় উঠলো। কাউকে দেখতে পেলো না। ডানদিকে-বাদিকে তিনটে করে রুম বিদ্যমান। সবগুলোতেই তালা ঝুলছে।
ছাদের দরজায় একটু আওয়াজ হলো বোধহয়। প্রয়াস সবাইকে ইশারা করে একটা আওয়াজও করতে নিষেধ করলো। ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে দরজা টানতেই দেখলো কেউ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছে পাশের বাড়ির একতলা ছাদে। প্রয়াস দৌড়ে যখন রেলিঙের কাছে গেলো ততক্ষনে লোকটা পাশের এক তলা ছাদ থেকে মাটিতে লাফিয়েছে এবং ক্ষনেই আধারে দৌড়ে মিলিয়ে গেলো।
‘শিট!’
প্রয়াস রেলিঙে ঘুসি বসালো। লোকটার কিছুই বুঝতে পারেনি প্রয়াস। শুধু কালো জ্যাকেটটাই নজরে এসেছে। তবে শারীরিক গঠনে তাকে অয়ন মনে হলো না।
ফিরে এসে দেখলো দিশা এবং জেসিকে জানালো কেউ একজন ওদের প্রবেশে পালিয়েছে। জেসি বললো,
‘তাহলে নাবিলা কোথায়?’
প্রয়াস দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেলে বন্ধ রুম গুলোতে চোখ বুলালো। এমন নয়তো এগুলোর একটাতেই নাবিলা বন্দী! প্রয়াস জেসিকে বললো,
‘দোতলার আলোটা নিভিয়ে দাও জেসি।’
‘তাহলেতো অন্ধকার হয়ে যাবে। খুজবো কি করে?’
প্রয়াস বিরক্তিতে মুখ দিয়ে ‘চ’ কারান্ত শব্দ বের করলো। ওর এখন প্রয়োজনের বাইরে একটা অতিরিক্ত কথাও বিরক্ত লাগছে।
জেসি তা বুঝলো তাই আর দ্বিরুক্তি না করে আলো নেভাতে গেলো।
দোতলা আধারে ডুবতেই প্রয়াসে প্রতিটা ঘরের দরজায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। দরজাগুলোতে ফাক-ফোকর নেই বললেই চলে। তবুও বা দিকের শেষের রুমটার দরজার নিচ থেকে হালকা আলোকছটা বের হয়ে আসলো। প্রয়াস বাকা হাসলো।
‘লাইট অন করো জেসি। কাজ হয়ে গেছে।’
জেসি পুনরায় আলো জ্বালিয়ে দিলো। প্রয়াস আশে পাশে তালা ভাঙার জন্য শক্ত কিছু খুজলো। পেলো না। সিড়ি বেয়ে নেমে গেলো বাইরে থেকে ইটটা আনতে।
তালা ভেঙে দরজাটা খুলতেই কেউ হুট করেই প্রয়াসের মাথায় আঘাত করে বসলো।
‘আহ!’
প্রয়াস আর্তনাদ করে মাথা চেপে ধরে বসে পড়লো।
আঘাতটা আর কেউ নয় নাবিলা করেছে। হাতে ফুলদানি নিয়ে বোকা হয়ে প্রয়াসের দিকে তাকিয়ে রইলো সে। বাহিরে থেকে আওয়াজ পেয়ে ভেবেছিলো অয়ন এসেছে। ওকে মারতেই ফুলদানিটা হাতে নিয়ে ঘাপটি মেরে ছিলো নাবিলা। যখন বুঝলো ওর সামনে ওর কাঙ্খিত ব্যক্তিটি তখন ফুলদানিটা ছূড়ে ফেলে হাটু গেড়ে বসে প্রয়াসকে জড়িয়ে ধরলো।
‘গাধা। এই গায়ের জোর নিয়ে আঘাত করতে গেছিলি? অজ্ঞানও করতে পারলি না। উফফ! আমার মাথাটা টনটন করছে।’
প্রয়াস আর্তনাদ করতে করতে নাবিলাকে জড়িয়ে ধরলো।
‘অল্প ব্যথাতে হয়নি? তাহলে আরো একটু জোরে মারা উচিৎ ছিলো। তাহলে একদম ফিট হয়ে যেতে।’
জেসি এবং দিশা ওদের অবস্থা দেখে বিপদের মাঝেও হেসে ফেললো। নাবিলা এবং প্রয়াসও হাসতে হাসতে কেদে ফেলেছে। খুশির কান্না। আপন মানুষকে ফিরে পাওয়ার কান্না।
দুজন ভালোবাসার মানুষ একে অপরকে শক্ত করে জরিয়ে রইলো অনেকক্ষন। প্রয়াস সিক্ত চোখে বারকয়েক নাবিলার মাথায়, কপালে ঠোট ছোয়ালো। পেছন থেকে জেসি হালকা কাশি দিতেই একে অপরকে ছেড়ে উঠে দাড়ালো ওরা।
প্রয়াস নাবিলার দিকে ভালো করে তাকাতেই দেখলো নাবিলা বিয়ের সাজে। সাথে সাথেই প্রয়াসে চোখমুখ শক্ত হয়ে গেলো।
চলবে…
(আসসালামু আলাইকুম। আজকের পর্বটা কিছুটা অগছালো হয়েছে জানি। কারন আমি মামা বাড়ি বেড়াতে এসেছি। এবং আগামীকাল গল্প দেবো না। সরি অ্যান্ড হ্যাপি রিডিং।)