বালির নীচে জলের শব্দ পর্ব ১

0
4278

বালির নীচে জলের শব্দ
পর্ব ১

“দূর থেকে ভেসে আসা গানের শব্দে
আমার মন খারাপ হয়ে যায়,
ছাদের কোণে দাঁড়িয়ে
মাঝরাতে কান পাতি।”
(সংগৃহীত)

আশ্চর্যজনক ভাবে মুহূর্তটার সাথে এই চারটি পংক্তি মিলে গেলো। এতক্ষন ভেসে আসা অচেনা গানের সুরটা থেমে গেছে একটু আগেই। ছাদের কোণে এখনো দাঁড়িয়ে আছে কুমু। সুরটা থেমে গেলেও তার রেশ কাটেনি। গৌরশ্যাম বর্ণের নারীটির পিঠ ভর্তি খোলা ঘন কালো চূল কোমর অব্দি নেমে ফুরফুরে হাওয়ায় দোল খাচ্ছে। হাওয়ার তোড়ে এক গুচ্ছ চুল মুখে এসে পড়তেই হুশ ফিরল কুমুর। মা জানতে পারলে মাঝরাতে চুল খুলে এভাবে ছাদে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য অনেক বকাবকি করতেন। নেহাত এখন ঘুমাচ্ছেন জন্যই রক্ষা। চোখ তুলে আকাশের চাঁদটা শেষবার দেখে নিয়ে নেমে এলো ছাদ থেকে। সিঁড়ির দিকটায় ভয়াবহ অন্ধকার। ফোনের আলো জ্বালিয়ে পা টিপে টিপে নেমে এলো দোতলার দরজা পর্যন্ত। এই মধ্যরাতে সামান্য শব্দও ভয়ংকর রুপ নিতে পারে সেটা ভেবেই নিঃশব্দে দরজা খোলার চেষ্টা করলো। খুলেও ফেললো নিখুত ভাবে। কিন্তু ভেতরে ঢুকেই অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে দেখা হয়ে গেলো রাফির সাথে। অন্ধকার ঘরটায় জানালা দিয়ে রাস্তার সাদা বাতির আলোটা প্রবেশ করায় ঘুটঘুটে ভাবটা কেটে গেছে। আবছা আলোয় মানুষটাকে প্রথম দফায় চোর ভেবে বসায় বেশ ভয় পেয়েছিল রাফি। তীব্র এক চিৎকার দেয়ার প্রস্তুতি নিতেই আবার থেমে গেলো। ধীরে ধীরে মস্তিস্ক পরিচিত মানুষের জানান দিতেই বিস্ময়ে চোখ জোড়া নিস্পলক খুলেই রইল তার। ফিসফিসিয়ে বলল
–আপা তুমি এই মাঝরাতে কই গেছিলা? কই থেকে আসলা এখন?

কুমু কয়েক মুহূর্ত ভাবল। রাফি তার মন মতো উত্তর না পেলে পুরো বাড়িতে চেঁচামেচি করে সবাইকে ডেকে তুলবে। এই মুহূর্তে যদি চেঁচামেচি করে তাহলে বিপদ ছাড়া কপালে আর কিছুই নেই। কাছে এসে ফিসফিস করে বলল
–ছাদে কাপড় মেলে দিছিলাম। তুলতে ভুলে গেছি। আনতে গেছিলাম।

রাফি অদ্ভুত ভাবে তাকাল। তার দৃষ্টি বলে দিচ্ছে সে এমন আজগুবি যুক্তি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। হাতের দিকে তাকিয়ে সন্দিহান কণ্ঠে বলল
–কাপড় কই?

কুমুর ভেতর শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। মিথ্যা বললেও একটা সামঞ্জস্য থাকতে হয়। সেটার কথা মাথাতেই তার নেই। হুট করেই মাথায় আসলো আর বলে দিলো। আবারো মস্তিস্কে চাপ প্রয়োগ করলো। কিছুটা সময় নিলেও উত্তর দিতে সক্ষম হল সে। গম্ভীর গলায় বলল
–কাপড় ঘরে এনে কোথায় মেলে দেবো? সিঁড়ির ঘরে মেলে দিয়েছি।

–সকালেও তো তুলতে পারতা। এখন কেন?

কুমু এবার ঘাবড়ে গেলো। বুঝে শুনে উত্তর দিতে না পারলে এই প্রশ্নের উত্তর সে নিজের মতো খুঁজে বের করবে। আর অযথা ঝামেলা বাঁধাবে। এগিয়ে এসে রাফির মাথায় হালকা চাটি মেরে বলল
–আকাশে মেঘ করেছে। বৃষ্টি আসলে ভিজে যাবে। তাই তুলে মেলে দিলাম।

রাফি সন্দিহান চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ভ্রু কুচকে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল। কুমুও দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকাল সেদিকে। আশ্চর্য! কিছুক্ষন আগেই জ্বলজ্বল করে ওঠা চাঁদটা কালো মেঘের আড়ালে ঢেকে গেছে। দূরে মেঘের আড়ালে চলছে শব্দবিহিন আলোকসজ্জা। হাফ ছাড়ল কুমু। সৃষ্টিকর্তার দরবারে লাখো শুকরিয়া জানিয়ে আবারো রাফির মাথায় মেরে বলল
–গোয়েন্দা গল্প পড়তে পড়তে মাথায় গোয়েন্দা ভরে রাখছিস। সব সময় সন্দেহ। বেয়াদব! আর রাত জেগে বই পড়বি না। এখনই শুয়ে পড়। নাহলে কিন্তু মাকে সকালে বলে দিব।

রাফি এবার একটু দমে গেলো। নরম কণ্ঠে বলল
–এখনই ঘুমাব আপা। মাকে বলতে হবেনা।

সে নিজের ঘরে চলে যেতেই কুমু হাফ ছেড়ে বাঁচল। দ্রুত ঘরে গিয়ে বন্ধ করে দিলো দরজা। কিছুক্ষন আগের ঘটনা ভাবতেই নিজের এমন কাজটা নিজের কাছেই বিরক্তির কারণ হয়ে উঠলো। এই মাঝরাতে ছাদে যাওয়াটা এখন প্রতিদিনের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব কাছ থেকেই কোন একটা সুর ভেসে আসে এই সময়। অদ্ভুত সম্মোহন ক্ষমতা সেই সুরের। তার টানেই সমস্ত নিয়ম ভয় ভেঙ্গে ছুটে যায় ছাদে। এই বিচিত্র কারণটা কোনভাবেই স্পষ্ট নয় কুমুর কাছে। কিন্তু ভীষণ সুন্দর এই কণ্ঠস্বরের অধিকারী প্রতিদিন একই সময়ে গিটার বাজিয়ে গান ধরে। গুরু গম্ভীর পুরুষালী সেই কণ্ঠের তেজ একদম হৃদপিণ্ডে গিয়ে আঘাত করে কুমুর। নিজেকে ঘরের মাঝে আটকে রাখতে পারেনা। যেতেই হয় ছাদে। আর গানটা শেষ হওয়া মাত্রই শুরু হয় তার ভীষণ মন খারাপ। এটা যেন এখন প্রতিদিনের একটা রোগের মতো হয়ে পড়েছে। কিন্তু এবার বিষয়টা পৌঁছে যাচ্ছে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে। এভাবে মাঝরাতে ছাদে যাওয়ার ব্যাপারটা বাবা বা মায়ের মধ্যে কেউ একজন যদি জানতে পারে তাহলে খুব খারাপ হবে। সন্দেহ করবে নানা রকম। নিজেকে এখন এই রোগ থেকে সুস্থ করে তুলতেই হবে। নিজের কাছেই করে ফেললো এক দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। আর কখনো ছাদে যাবে না। সেই গান শুরু হওয়ার আগেই ঘুমিয়ে পড়বে। নিজের প্রতিদিনের নিয়ম এখন থেকে পরিবর্তন করে ফেলবে।

————-
বঙ্গাব্দ ১৪২৮, ১৮ ই ফাল্গুন

“বসন্তের প্রথম বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই আমি কেমন বদলে যাই। মাটির সোঁদা গন্ধ আর ধান ক্ষেতের বৃষ্টিতে অবগাহন দেখলেই মনটা কেমন চঞ্চল হয়ে ওঠে। ছুটে যায় কালো মেঘের পানে। দূর থেকে দূরে। কানে বাজে সেই বৃষ্টির মাদক আওয়াজ। মনে পড়ে যায় কিছু পুরাতন শব্দ কিছু…”

অল্প কিছু শব্দ নিজ ডাইরিতে কলমের আঁচড় কেটে লিপিবদ্ধ করেই ভাবতে বসল কুমু। আর কিছুতেই লিখতে পারছে না। সমস্ত শব্দ যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। মনের মাঝে অনেক কথা জমে থাকলেও সেই কথাগুলো ব্যক্ত করার মতো উপযুক্ত কোন শব্দ এই মুহূর্তে তার কাছে নেই। এমন হওয়ার কারণটা খুঁজে পেলনা। প্রায় সময়ই রাত জেগে পাতার পর পাতায় শব্দ গুচ্ছ গুছিয়েছে মন মতো। নিজের উপরেই বেশ বিরক্ত হয়ে মনে মনে নিজেকে কয়েকটা গালি দিয়েই জানালার বাইরে তাকাল। সেই রাত থেকে মুশুল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি হয়তো থামার কোন নাম নিবে না। তাই আজ সারাদিন বাড়িতেই কেটে যাবে তার। মায়ের হাক কানে আসতেই পড়ার টেবিলটা গুছিয়ে নিয়ে দ্রুত রান্না ঘরের দিকে গেলো। দরজায় দাঁড়াতেই রুবা বেগম বললেন
–একটু পেয়াজ কেটে দে তো। আজ বৃষ্টির দিনে ভাবছি খিচুড়ি করবো। আর সাথে থাকবে ইলিশ মাছ ভাজি।

কুমু পেয়াজ হাতে নিয়ে কাটতে কাটতে বলল
–ইলিশ মাছ কোথায় পেলে মা? বাবা আনছে নাকি?

মেয়ের কথায় রুবা তার সেই বিষণ্ণ হাসিটা হাসলেন। যার অর্থ কুমুর কাছে স্পষ্ট। এতো দামী মাছ যখন ইচ্ছা তার বাবা কিনে ফেলতে পারেন না। সংসারে অনেক হিসাব করে খরচ করতে হয় তাদের। অসময়ে না ভেবেই এমন প্রশ্ন করার কারণে নিজেকে বিবেকহীন মনে হল কুমুর। রুবা মৃদু হেসে বললেন
–তোর ফুপুরা যখন আসছিল তখন তোর বাবা আনছিলেন। সেটারই তিন টুকরা আছে।

কুমু একটু ভাবল। তারা মানুষ ৫ জন কিন্তু মাছের টুকরো ৩ টা। কে কে খাবে? সেটা ভেবেই প্রশ্ন করে ফেললো
–৩ টুকরা মাছ কে খাবে?

রুবা চমৎকার হেসে বললেন
–বড় টা তোর বাবার। একটা রাফির আর একটা তুই আর মৌ খাবি।

হাত থেমে গেলো কুমুর। মায়ের দিকে তাকাল। রুবা ঠোঁটে তৃপ্তির হাসি মেখেই নিজের খেয়ালে খুন্তি নাড়ছেন। এমন সহজ স্বাভাবিক একটা হিসাব মিলিয়ে ফেলায় ভীষণ তৃপ্তি পাচ্ছেন তিনি। কুমু ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছে খুব কম সময়ই এমন ভালো খাবার গুলো মায়ের মুখে যায়। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হিসেবে এটা তার অভ্যাসে পরিণত হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সে মেনে নিতে পারেনা। সেই প্রথমবারের মতোই কষ্ট হয় তার। চোখ টলমল করে উঠতেই আবার নিজের কাজে মনোযোগ দিয়ে বলল
–আমার ইলিশ মাছে এলারজি। ভুলে গেছো?

–কবে থেকে? আগে বলিসনি যে?

রুবার বিস্ময়ভরা কথা শুনে কুমু চোখের পাতা পিটপিট করে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বলল
–বেগুন খেয়েই সেদিন যা অবস্থা হইছিল। ইলিশ খাইলে তো বাচবই না।

রুবা আর কথা বলল না। মেয়ে এখন বড় হয়েছে। অনার্স পড়ে। নিজের ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা তার আছে। তাছাড়াও কুমু এই বাড়িতে সবার থেকে আলাদা। নিজের সুবিধা অসুবিধা নিজের মতো করেই সমাধান করার চেষ্টা করে। সেটার জন্য অযথা কাউকে বিরক্ত করতে পছন্দ করে না সে। যখন একেবারেই নিরুপায় হয় তখন বাবাকে বলে। কুমু পেয়াজ কেটে উঠে দাঁড়িয়ে বলল
–আর কোন কাজ আছে? মৌকে পড়তে বসাবো।

–নাই।

রুবা সম্মতি দিতেই কুমু চলে গেলো ঘরে। রুবা বেগম একাই পুরো বাড়ির কাজ করেন। বাসায় থাকলে কুমু তাকে মাঝে মাঝে সাহায্য করে। কারণ সে নিজেই সময় পায়না। তাই রুবা বেগম তাকে কাজের কোন চাপ দিতে চায় না। মৌ বিছানায় বসে খাতার উপরে কলম দিয়ে খুব মনোজগ দিয়ে আঁকিবুঁকি করছে। কুমু বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করেও কোন কুল কিনারা না পেয়ে বলল
–কি করছ এসব?

মৌ একবারও চোখ তুলে তাকাল না। ভীষণ গম্ভীর আওয়াজ করে বলার চেষ্টা করলো
–আঁকছি।

কুমু পাশেই বসে মাথা ঝুঁকে খাতায় দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো। লম্বা একটা কিছু দেখা যাচ্ছে। তার আশেপাশেই অদ্ভুত আকৃতির আঁকিবুঁকি। ভ্রু কুচকে বলল
–এসব কেমন আঁকা?

–এটা গাছ। আর আশেপাশে ঘর বাড়ি। বুঝেছ?

মৌয়ের এমন বিচক্ষনের মতো পাকা পাকা কথা শুনে হাসি পেলো কুমুর। কিন্তু হাসিটা ঠোঁটে চেপে রেখে বলল
–অল্প বুঝেছি। আমাকে দাও। আমি চেষ্টা করে দেখি আঁকতে পারি কিনা।

মৌ মিনমিন করে বলল
–তুমি হয়তো পারবে না।

—————
শান্তিনীড় এর শান্তি বেগমের মনে আজ ভয়াবহ অশান্তি। সকাল থেকেই তিনি কারো সাথে কথা বলছেন না। এতক্ষন তো ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছিলেন। খুলে দিয়েছেন একটু আগেই। খুলে দেয়ার অবশ্য বিশেষ কারণ আছে। সকাল থেকে এখনো তার এক কাপ চা খাওয়া হয়নি। আর নিয়ম করে দুইবেলা চা না খেলে তার মেজাজ ঠিক থাকে না। আজ অবশ্য অন্য কারণে মেজাজ খারাপ। তার স্বামী করিম সাহেব তাকে না জানিয়েই বড় ছেলের জন্য মেয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। সকালে উঠেই ছোট ছেলে শ্রাবণের সাথে গল্প করার সময় তিনি শুনে ফেলেন আর ভীষণ রেগে যান। কারণ তিনি ঠিক করেছেন যে ছেলেদের বউ তিনি নিজে পছন্দ করে খুঁজে আনবেন। তাই তাকে না জানিয়ে করিম সাহেব একা মেয়ে দেখতে গিয়ে ভারী অন্যায় করেছেন। আর এই অন্যায়ের শাস্তি হিসেবে আজ বাড়িতে সবার খাওয়া বন্ধ।

–আম্মা আপনার চা।

দরজাটা একটু খুলে সেদিক দিয়েই মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে ভীত কণ্ঠে বলল রহিমা। কারণ শান্তি বেগম রাগ করলে বাড়িতে যুদ্ধ শুরু হয়। সেই সময় সবাই মোটামুটি আতংকে থাকে। শান্তি এক পলক ঘাড় বেকিয়ে তাকাল। দৃষ্টি ফিরিয়ে সামনে তাকিয়ে গম্ভির গলায় বলল
–ভেতরে আয়।

রহিমা দেরি করলো না। তড়িৎ গতিতে ভেতরে ঢুকেই চায়ের কাপটা সামনে এগিয়ে ধরল। শান্তি হাতে নিয়ে এক চুমুক দিয়ে বললেন
–শ্রাবণ কোথায়? ওকে একটু আসতে বল তো।

রহিমা বের হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই শ্রাবন এসে ঘরে ঢুকল। হালকা গোলাপি রঙের একটা শার্ট পরেছে। সেটারই হাত গুটাতে ব্যস্ত সে। শান্তি আপাদমস্তক দেখে নিয়ে বলল
–এমন মেয়েলী রঙ পরে কোথায় যাচ্ছিস?

থেমে গিয়ে অদ্ভুত ভাবে তাকাল শ্রাবণ। তার মায়ের স্বভাব সম্পর্কে ভালভাবে অবগত সে। তবুও মাঝে মাঝে এসব হজম করতে কষ্ট হয়ে যায়। তার যেটা পছন্দ না সেটা অন্যের যতই ভালো লাগুক না কেন প্রতি নিয়ত খোটা দিয়েই সেটা জীবন থেকে দূর করে দেবে সে। শ্রাবণ ফুস করে একটা শ্বাস ছেড়ে বলল
–কাজ আছে। কিছু বলার থাকলে তাড়াতাড়ি বল।

–তুই জানিস আজ বাসায় রান্না হবে না। দুপুরে খাবি কিভাবে?

মায়ের থমথমে রক্তিম চেহারার দিকে তাকিয়ে দুর্বোধ্য হাসল শ্রাবণ। অন্যকোন সময় হলে খুব রাগ করত সে। কিন্তু এখন এভাবে হাসার একটা কারণ আছে। তার এমন হাসির অর্থ বুঝতে না পেরে আরও রেগে গেলো শান্তি। শ্রাবণ ঠোঁটে হাসিটা রেখেই বলল
–২ ঘণ্টার মধ্যে রান্না শেষ করতে পারবে?

শান্তি ভ্রু কুচকে তাকাল। ভীষণ রাগী কণ্ঠে বলল
–আজ আমি কোন রান্না করবো না।

শ্রাবণ হেসে উঠে মাকে জড়িয়ে ধরল। বলল
–গরুর মাংস ভুনা, ছোট মাছ আর ডাল রান্না করো। ফ্রিজে আছে নাকি আনতে হবে? না থাকলে দারোয়ান কে আনতে পাঠাও। বাবাকেও পাঠাতে পারো। বাসাতেই আছে।

শ্রাবণকে সরিয়ে দিয়ে পূর্ণ দৃষ্টি মেলে তাকাল শান্তি। বললেন
–এগুলো তো…।

শ্রাবণ আবারো হেসে বলল
–এগুলো যার পছন্দ তাকেই আনতে যাচ্ছি। এখন আর রাগ করে থেকো না। উঠে পড়। তোমার হাতে মাত্র ২ ঘণ্টা সময়।

চলবে……

(নতুন গল্পটা একদম সাধারন দুটো পরিবারের ঘটনা নিয়েই লেখা। ধীরে ধীরে সবার চরিত্র স্পষ্ট হবে। প্রথম পর্ব পড়ে কেমন লাগলো একটু বড় করে জানাবেন। রিচেক করা হয়নি।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here