নিস্তব্ধ প্রেমাবেগ পর্ব_১৩+১৪

0
5877

#নিস্তব্ধ_প্রেমাবেগ
#পর্ব_১৩+১৪
#লেখায়ঃস্বর্ণালি_আক্তার_শ্রাবণ


চকলেট কালার শার্টে বেশ লাগছে জিসানকে!
বাবার মাথার পাশ থেকে উঠে এসে জিসানের সামনে দাঁড়ালো জুঁই!
তুমি হঠাৎ
চমকালে বুঝি
একটু..কিন্তু বাসায় কেনো?
আসতে পারি না বুঝি
না না তেমন না আসলে কতবার তোমায় বাসায় আসতে বলি তুমি তো আসতেই চাও না।তাই জিগ্যেস করলাম।
আংকেল কল করে ডেকেছেন
বাবা তোমায় ডেকেছেন?
হুম
কিন্তু কেনো?
সেটা আমি কি করে জানবো?
আচ্ছা বস।বাবা ঘুমাচ্ছে। উঠলে না হয় কথা বোলো।
আচ্ছা সমস্যা নেই।
জিসানকে বসতে বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো জুঁই!বাবা যেহেতু ডেকেছেন নিশ্চয়ই তার মনের আশা পূরণ হতে চলেছে।ভাবতেই পুলকিত হচ্ছে জুঁই..
.
.
.
.


পুরো বাড়িতে মানুষজনে ভর্তি।পিচ্চিরা দৌড়াদৌড়ি করছে।একদিকে সাউন্ড বক্স বাজছে।সারাবাড়িতে লাইটিং করা হয়েছে যদিও সকাল বলে বোঝা যাচ্ছে না।
বাগানের পাশে বড় খোলা জায়গাটা গায়ে হলুদের স্টেজ করা হয়েছে।
সকাল থেকেই বাড়ির সবাই খুব ব্যস্ত।গায়ে হলুদ বলে কথা!

সারা সকাল কাজ করেই কেটে গেলো সবার।

দুপুরেও যে যেভাবে পেরেছে খেয়ে নিয়েছে।বিকেলের শেষে সাজতে বসে গেছে সবাই।আস্তে আস্তে জয়ের বন্ধু আদিবা ইরিনার বন্ধুবান্ধবরাও আসা শুরু করে দিয়েছে।
বেশ উৎসব মুখর পরিবেশ মাহমুদ ভিলায়!
.
.
.
.
.
আদিবা রেডি হয়ে এসে শ্রেয়াকে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু তার দেখা নেই।অবশেষে ছাদে পেলো তাকে।পুরো ছাদ ফাঁকা কেউ নেই!কেবল এক কোনায় দাঁড়িয়ে শ্রেয়া!আদিবা দ্রুত পায় কাছে গিয়ে বলল এমা শ্রেয়া এখনো রেডি হও নি!জলদি চলো।
বাঁধ সাধলো শ্রেয়া।না আদিবা আমি রেডি হবো না।আমি এমনিতেই ঠিকাছি
কি বলছো বাসায় পড়ার জামা পড়ে থাকবে?
কই নতুনই তো
দেখো শ্রেয়া অনেকেই জানে তুমি এ বাড়ির বউ হবে তা যদি তোমার সাজগোছ না দেখে ফোঁড়ন কাটে
তখন ব্যপারটা তুমিসহ মা দাদাভাই দাদান সবার খারাপ লাগবে আর আমারও।চলো চলো রেডি হবে
আবার মেহেদী পড়াতে হবে চলো।
শ্রেয়া আর কিছু বললো না। আদিবা ওর হাত ধরে নিচে নিয়ে গেলো।
.
.
.
.
.
সব ছেলেরা হলুদ পাঞ্জাবি আর মেয়েরা হলুদ -বেগুনি শাড়ি পরেছে।শুধু ইরিনা লাল হলুদ লেহেঙ্গা!
আদিবার পিছু পিছু স্টেজে এলো শ্রেয়া।সবাইকে একরকম লাগছে।ঘুরে ঘুরে দেখতেই হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগলো।চোখ তুলে তাকিয়ে বলল চোখে দেখতে পান না?
ছেলেটা মুচকি হাসলো শুধু।শ্রেয়া আর কিছু না বলে চলে গেলো।
বাড়িতে ডুকতেই আদিবা তাড়া দিয়ে বলল শ্রেয়া আমার সাথে হাতে হাতে একটু নাও তো এগুলো।ফল মিষ্টি কেকের দিকে ইশারা করে বলল।
আদিবা তোমরা ফলের প্লেটগুলো নাও আমি শরবতের ট্রে টা নিচ্ছি!
আচ্ছা

আদিবাসহ ওর বান্ধবী মিহু ফলগুলো নিলে আরো কয়েকজন কাজিন কেক মিষ্টি নিলো।শ্রেয়া শরবতের ট্রে নিয়ে সবার পিছু পিছু হাঁটা ধরল।

হলুদের স্টেজের কাছে যাওয়ার রাস্তার একটু দূরে জয়কে কাজ করতে দেখলো শ্রেয়া।অনেকগুলো ফুলভর্তি একটা সিএনজি।ওটা থেকে ফুল নামাতে বলছে একজনকে।
শ্রেয়া চোখ সরিয়ে সামনে হাঁটা ধরল।এত মানুষের ভীড়ে কোত্থেকে এক পিচ্চি এসে শ্রেয়ার শরীরের এসে ধাক্কা খেলো।পুরো শরবত শাড়িতে পড়ে গেলো।ট্রে টা নিচে পড়ে গেলো আর বাচ্চা পড়লো নিচে।হাতটা কাঁচের উপর পড়ায় একটু কেটে গেলো আর পিচ্চিটা দিলো হৃদয় বিদারক চিৎকার। আশে পাশের লোকজন সবাই এদিকে তাকিয়ে থেমে গেলো।শ্রেয়া বাচ্চাটাকে তুলতে নিলেই জয় এসে কোলে তুলে নেয়।হাত পা বুলিয়ে দেখে হাতের নিচে একটু কেটে গেছে।রক্ত বের হয়নি।বয়স ৬-৭ হবে।খুব কাঁদছে। জয় কোলে নিয়ে থামাতে চাইলো।
এই মেয়ে এই তুমি কি কানা?চোখে দেখো না?যখন তখন যার তার সাথে ধাক্কা খাও।চোখ কি কপালে রেখে হাঁটছিলে?
মেয়েটার মা এসে কোলে নিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো। পানি দিতে নিয়ে চলে গেলো।
আসলে আমি..
চুপ করো একদম চুপ।এতো বেহায়া কেনো তুমি হ্যা এত বেহায়া কেনো?তোমার শরীরে কি মানুষের রক্ত নেই?লজ্জা নেই?কাল যে বললাম হলুদে থেকে কি করবে? তাও এলে।এসে তো গেছো এখন ই মাছুম বাচ্চাটাকে এতটা ব্যাথা দিয়ে দিলে?কাকে দেখে দেখে হাঁটো হ্যা?চোখ একদিকে মন আরেকদিকে থাকে নাকি?ধাক্কা মারো কি করে হু?ফাজিল কোথাকার..যাও এখান থেকে

____…

কি হলো সংয়ের মত দাঁড়িয়ে আছো কেনো যাও..ধমক মেরে বলল জয়।

শ্রেয়া এক প্রকার দৌড়ে বাড়ির ভেতর চলে গেলো।
নিজের ঘরে ডুকেই দরজা আটকে দিলো। চুলগুলোকে টেনে ছিঁড়ে খুলে ফেললো।ভেজা শাড়িটা পড়েই ফ্লোরে বসে কাঁদতে লাগলো। নাহ আর থাকবে না এখানে ও।এবার দাদুকে কল করে গ্রামে চলে যাবে।সারাক্ষণ কথা শুনতে হয়।কেনো কি দোষ ওর?ও কি যেতে চেয়েছিলো হলুদে?নাকি ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছে?পিচ্চি মেয়েটাই তো!

এক ঘন্টার মত কান্না করে হিচকি তুলে ফেলেছে শ্রেয়া।শরীর অসার হয়ে আসছে।মাথাটাও খুব যন্ত্রণা করছে।কোনো রকম উঠে শাড়িটা পাল্টে নিলো।মুখে পানি ছিটা দিয়েই শুয়ে পড়লো।নাহ আর বেরই হবে না এ ঘর থেকে যতদিন বিয়ের অনুষ্ঠান চলবে!
.
.
.
.
.
মেহেদীর পর্ব শেষ হতেই মিউজিক বেজে উঠলো। সব মেয়েরা নাচছে।ইরিনাও..!
রোদ ছবি তুলছে।তাকে আদিবা কঠিন আদেশ দিয়েছে।প্রত্যেকটা মোমেন্ট যেন ক্যাপচার করা হয়।নয়ত ব্রেকআপ ব্রেকআপ।আর রোদ বেচারা সেই আদেশ -ই পালনে ব্যস্ত।জয়সহ সব বন্ধুরা মিলে বিয়ার খাচ্ছে এক কোণে।ওদের সার্কেলে কোন মেয়ে ফ্রেন্ড নেই!রোদ জয় আয়ান তিয়াস জাকির!যাদের মধ্যে জাকির বাদে সবাই আনম্যারিড!ওরা নিজেদের ভেতর কথা বলছে আর হাসাহাসি করছে।

শ্রেয়া কি করলে এটা?তুমি আবারও মেহেদীটা নষ্ট করে দিলে?উফফ___কহিনূর তার বান্ধবীর পিচ্চি মেয়েটাকে ধমকে ধমকে বলতে লাগলো।

কথাটা গেলো জয়ের কানে।তার মানে ও আবার এসেছে?কি বেহায়া মেয়ে..ক্ষিপ্ত হয়ে দ্রুত পায় এলো।এসে দেখে না শ্রেয়া এখানে নেই।ওর কাজিনের ওয়াইফ এক পিচ্চিকে শ্রেয়া বলে ডাকছে।আর এসব বলছে!

জয় আশেপাশে চোখ বুলালো।না কোথাও শ্রেয়াকে আর দেখতে পেলো না।
জয় আবারও নিজের বন্ধুদের সাথে আড্ডায় যোগ দিলো।
.
.
.
.
.
রাত প্রায় ১ টার ও বেশি….সব মুরব্বিরা ঘরে চলে গেছে।যার যার বাবু আছে সবাই ঘুমাতে চলে গেছে।
স্টেজের পেছনে একটু আগুন জ্বালিয়ে চারাপাশে গোল হয়ে বসেছে আদিবা মিহু রোদ জয় আয়ান তিয়াস জাকির ওর ওয়াইফ।কাজিন সিফাত শিমু।
গিটার বাজাচ্ছে তিয়াস।প্রথম গান ধরলো রোদ!তারপর আড্ডা শুরু হলো।একে একে তিয়াস মিহু সিফাত আয়ান সবাই গান করলো।
রাত প্রায় তিনটে বাজতে চলল!
একে একে উঠে পড়লো সবাই!আদিবা এগুতেই জয় বললো আদিবা শ্রেয়া কোথায় রে?
সত্যিই তো শ্রেয়া কোথায়?ওকে তো সেই কখন থেকে দেখলাম না!জয়ের দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে বলল জানি না।নিজে খুঁজে দেখুন।
আদিবা চলে গেলো।রোদ এসে জয়ের পাশে দাঁড়ালো।
তোর বোনটা তোর মত হারামী টাইপ হয়েছে!
রোদের এ কথাটা শুনে চোখমুখ লাল করে ওর দিকে তাকালো জয়।রোদ আস্তে করে কেটে পড়লো!

জয় ঘরে যেয়ে দেখে ড্রয়িংরুমে নিচেও বিছানা পাতা হয়েছে আজ!এত গুলো মানুষ পেড়িয়ে শ্রোয়ার ঘরের দিকে যাওয়া ঠিক হবে না আর তার ইচ্ছে ও নেই!দ্রুত নিজের ঘরে যেয়ে দেখে রোদ তিয়াস আয়ান সবাই যে যার মত শুয়ে পড়েছে।সোফায় একটু জায়গা আছে শুধু!ফ্রেস হয়ে কোন রকম গুটিয়ে শুয়ে পড়লো সেখানে!এই তো কোনো মতে এক ঘন্টা ঘুমাতে পারবে!

চলবে_

#নিস্তব্ধ_প্রেমাবেগ
#পর্ব_১৪
#লেখায়ঃস্বর্ণালি_আক্তার_শ্রাবণ

🍁
বরযাত্রী এসে পড়েছে।সবাই চারদিকে ব্যস্ত.. এর মধ্যে আদিবার বান্ধবী মিহু অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই তাকে নিয়ে হসপিটালে গেছে আদিবা রোদ তিয়াস।
সবাই মিলে বরযাত্রী আপ্পায়ন করছে।
.
.
.
.
জয়ের ফোনে কল আসতেই রিসিভ করলো জয়।জিসান কল করেছে।রিসিভ করে কথা বলতে বলতে হাঁটা ধরল জয়।
হঠাৎ জানালা দিয়ে চোখ গেলো শ্রেয়ার ঘরের দিকে।পুরো রুম এলো-মেলো হয়ে আছে।আর বিছানায় এলোমেলো হয়ে ঘুমাচ্ছে শ্রেয়া!
ফোন কান থেকে নামিয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলো জয়।এদিকে দাদাভাই দাদাভাই করেই চলেছে জিসান। সেদিকে খেয়াল নেই জয়ের।
কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কল কেটে ঘরের দরজায় নক করলো জয়।
বার কয়েক নক করার পর দরজা খুললো শ্রেয়া ঘুম ঘুম চোখে।দরজা খুলেই আবারও বিছানায় শুয়ে পড়লো।জয় এক পুরো ঘর পলক দেখে নিলো তারপর তাকালো শ্রেয়ার দিকে।গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে।কেঁদেছে খুব হয়ত।নাক চোখ ঠোঁট ফুলে আছে।
দরজাটা আটকে নিলো জয়।কেউ আসলে খারাপ ভাবতে পারে।
সোফার উপর সেদিনকার নীল-গোল্ডেন কালার লেহেঙ্গা টা।পাশে কিছু অর্ণামেন্টস।হয়ত আদিবা দিয়ে গেছে আর সেভাবেই রয়েছে।নিচে কালকের পড়া হলুদের পোশাক!
জয় সোফায় বসে পড়লো!
কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে শ্রেয়ার নাম ধরে ডাকতে লাগল।
বেশ কয়েকবার ডাকার পরও উঠলো না শ্রেয়া।এবার খুব জোড়ে চিৎকার করে শ্রেয়া বলে চেঁচিয়ে উঠলো জয়।
ধড়ফড় করে উঠে বসল শ্রেয়া।কি হয়েছে কি হয়েছে বলে চারদিকে চোখ বুলালো!
শ্রেয়ার চোখগুলো লাল হয়ে আছে।কাঁপছে রীতিমতো!

জয় শান্ত গলায় বলল ডাকছি সেই কখন থেকে..ভয় পেয়েছো?

আমায় আর কখনো এভাবে ডাকবেন না জয় ভাইয়া।আমার খুব শরীর খারাপ করে।বিরবির করে বলল শ্রেয়া

ওকে!যাও ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও।

কেনো?

বরযাত্রী এসে পড়েছে অনেক আগেই। যাবে না?উঠো।আর এ অবেলায় এভাবে ঘুমাচ্ছো কেনো?

এবার খুব রাগ হলো শ্রেয়ার।মুখের উপর বলতে যেয়েও পারলো না।নিজেকে শান্ত রেখে বলল আমার কোনো আত্মীয় স্বজনের বিয়ে তো নয় তাহলে আমি রেডী হবো কেনো?
আর তাছাড়া আমি এ বাড়ির আশ্রিতা।আমি কোথায় থাকলাম না থাকলাম তা দিয়ে আপনার কি?
আর আমি গেলেই যতসব অশান্তি পাকাই!দরকার নেই।তার থেকে এ ঘরেই ভালো আছি।

সারাদিন তো মনে হয় না কিছু খেয়েছো..ঘুমিয়েছো কখন?

______!

কি হলো চুপ কেনো বলো?

………..!

বলো(কিছুটা ধমকে)

কাল হলুদের প্যান্ডেল থেকে এসে আর যাই নি!

সরি শ্রেয়া..

কিছুটা অবাকের চোখে জয়ের দিকে তাকালো শ্রেয়া।

আসলে আমি বারবার তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে ফেলি।এরকম করা ঠিক না আমি জানি।কিন্তু কেনো যেন মাথা ঠিক থাকে না।আমি হয়ত মানুষটাই এরকম!

শ্রেয়ার আরো অভিমান জমলো!কিছু না বলে ঠাঁই বসে রইলো!

কি হলো চলো

না

আবার..

কি আবার কি আবার?আবার মারবেন?অপমান করবেন?করুন না।না করলো কে?আমি তো অপমান করার মতই একজন মানুষ!

শ্রেয়া প্লিজ..

না ওখানে গেলে আমি আবার একটা গন্ডগোল বাঁধাবো আর আপনি যা তা..

বলবো না!যা তা বলবো না..

আমি এখন ঘুমাবো।খুব ঘুম পেয়েছে..বলেই বিছানায় শুয়ে কম্বল দিয়ে মাথা ঢেকে নিলো শ্রেয়া।
লাইট অফ করে শ্রেয়ার কম্বলের ভেতর ডুুকে গেলো।

পাশে জয়কে শুতে দেখে লাফিয়ে উঠলো শ্রেয়া।আপনার কি মাথা গেছে!

না তোমার গেছে!শোওউ বলেই শ্রেয়ার বাহু টেনে ধরে শুয়িয়ে দিলো।
মুখ ঘুরিয়ে একটু দূরে সরে শুয়ে পড়ল শ্রেয়া।

একটা কথা বলি?

একটা কেন একশটা বলুন..আমার তাতে কি?

মুচকি হাসল জয়!তুমি কি বিয়ে তে রাজি শ্রেয়া?

মানে?

বোঝো নাই?

হঠাৎ এ প্রশ্ন?

আমি তোমায় প্রশ্ন করছি আর তুমি উত্তর না দিয়ে উল্টো আমায় প্রশ্ন করছো?

দাদু রাজি থাকলে আমি রাজি!

তোমার নিজের কোনো মতামত নাই?

নাহ!

আমি যদি বিয়েতে রাজি না হই তবে?

তবে কি?ভাগ্যে যা আছে তাই হবে..

আমি কিন্তু বিয়ে তে রাজি।হয়ত বা ভাবছো দাদানের কথায়।কিন্তু নাহ্।আমি নিজ থেকে চাইছি বিয়েটা হোক!আমি বলবো না দাদানের জন্য বিয়েটা করতে বাধ্য হয়েছি।হ্যানত্যান।আমি বলবো আমিই চাইছি বিয়েটা করতে।

আমায় কেনো?

কারন সবাই তোমাকে পছন্দ করে তাই।

ওহহ

হুমম।এদিকে ফিরো তো..

না..

কেনো?

এমনিই।যান এ ঘর থেকে

তুমি আমায় এ ঘর থেকে যেতে বলছো কেনো?তুমি

আমি কি?আমি ভুলে যাচ্ছি এটা আপনাদের বাড়ি? না ভুলি নি।কিন্তু..

থামো তো।বলেই শ্রেয়ার একটু কাছে চলে গেলো জয়।
শ্রেয়ার ঘাড়ে মুখ ডুবাতেই কেঁপে উঠল শ্রেয়া।এক ধাক্কা দিতেই দূরে সরে গেলো জয়।
বাঁকা চোখে তাকিয়ে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
মুখ গুজে কাঁদতে লাগলো শ্রেয়া।জয় কেনো তার সাথে এত ভালো ব্যবহার করেছে তা তার কাছে পরিষ্কার..!

🍁
আজ জুঁইয়ের বার্থডে।বাবার জোড়াজুড়িতে একটা পার্টি রেখেছে ক্লাবে।বাসায় বাবা অসুস্থ বলেই এখানে আয়োজন।লাল গাউন পরে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে জিসানের জন্য অপেক্ষা করছে জুঁই!
প্রায় সব ফ্রেন্ডরা চলে এসেছে।

এদিকে ওদিক তাকাতে তাকাতেই জিসান চলে এলো।

হাই জুঁই!

হ্যালো..এসো তোমার অপেক্ষাই করছিলাম।

ওহ আচ্ছা। হ্যাপি বার্থডে বলেই গিফট টা হাতে তুলে দিলো।

থেংকিউ বলেই গিফটা হাতে নিতেই জিসান বললো ইট’স এ সিক্রেট গিফট!একা দেখবে।জিসানের কথায় মুচকি হাসলো জুঁই।সে আজ সিউর জিসান তাকে পছন্দ করে।

কেক কাটো..

হ্যা চলো।

সবাই মিলে কেক কাটলো।যে যার মতো এনজয় করছে।

জিসান একটু দূরে গিয়ে ডিংক করছে।মাথটা যন্ত্রণায় ফেটে যাচ্ছে তার।কেনো বাড়ির কেউ তার সাথে ঠিকভাবে কথা বলছে না।কেনো সে কিছু বলতে পারছে না।পরক্ষণেই ভাবছে ইরিনার বিয়ের জন্য হয়ত সবাই ব্যস্ত।শ্রেয়াকে হারিয়ে ফেলবে না তো!একের পর এক ড্রিংক করেই যাচ্ছে জিসান।

একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলো জুঁই।জিসানকে দেখেই বুঝতে পারছে কিছু একটা নিয়ে খুব চিন্তিত সে।
কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না।তাই একটু দূরেই দাঁড়িয়ে রইল।
যে যার মত ডান্স করছে। মিউজিক বেজে চলেছে।
আধ ঘন্টা পর জুঁই অনেক সাহস নিয়ে জিসানের কাছে গেলো।
ওমনি জুঁইয়ের শরীরে হেলে পড়লো জিসান।

আমায় বাড়ি নিয়ে চলো।অস্পষ্ট কন্ঠে বলল জিসান!

হুম!
.
.
.
.
.
এত রাতে একা জিসানকে ওর বাসায় পৌঁছে দিবে নাকি নিজেদের বাসায় নিয়ে যাবে বুঝে উঠতে পারছে না জুঁই।প্রচন্ড সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছে।অবশেষে না ভেবে ওদের বাসায়ই নিয়ে গেলো।
কোনো রকম ধরে উপরে নিয়ে গেলো।

আবলতাবল বকছে জিসান।পানি খায়িয়ে জুতা খুলে দিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসতেই নিলেই জুঁইয়ের হাত টেনে ধরল জিসান।চোখের চাহনী এক নিমিষেই বুঝে গেলো জুঁই! ভুল জেনেও ভুল কাজটায় বাঁধা প্রধান করলো না সে!হয়ত তার রাজকুমারকে আজীবনের জন্য পাওয়ার আশায়…

চলবে_

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here