গোধূলী_বেলার_স্মৃতি (Unexpected story)
পর্ব- ১০ +১১
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
—–“ছোট সাহেব! আপনার কী এমন কষ্ট?খুব করে জানতে ইচ্ছে করে।সাহেব গটগট করে উপরে চলে গেলেন। মনের কথাটা মনে চেপে রাখলাম। ছোট সাহেবের কথায় তীব্র কষ্ট রয়েছে।অতীতে এমন কিছু হয়েছিলো যার জন্যে ছোট সাহেব প্রতিনিয়ত কষ্ট পাচ্ছেন। এমনকি এই বাড়ির সকলে-ই’ কষ্ট পাচ্ছে। কি এমন হয়েছিলো অতীতে আমাকে জানতেই হবে। আমার ভাবনার মাঝেই বড় মেমসাহেব বলে উঠলেন,
“কাজল মা। তুমি কখন এলে? ”
—“এইতো মাত্র-ই’ এলাম। ”
কথা বলে আমি এগিয়ে গিয়ে, টিফিন বক্সটা বড় সাহেবের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে উঠলাম,
“বড় সাহেব মা আপনার জন্যে পায়েস পাঠিয়েছে৷ ”
বড় সাহেব টিফিন বক্সটা নিয়ে খুশি হয়ে বললেন,
“আমার কাজল মা আমার জন্যে পায়েস নিয়ে এসেছে। খেতে তো হবে-ই’। আমার যথেষ্ট পছন্দের। মতিউর বলেছে তাইনা? সত্যি আমার সবকিছুর খেয়াল রাখে মতিউর।
আমি মুচকি হাঁসি দিলাম।
বড় সাহেবের কথার মাঝেই বড় মেমসাহেব বলে উঠে,
“শুধু-ই’ কথা বলবেন? খেয়ে নিন। দিয়া চলে আসলে,কিন্তু খেতে পারবেন নাহ।”
বড় সাহেব চামচ নিয়ে খুব তিপ্তির সহকারে খেয়ে বললেন,
“এই না হলে পায়েস। ভাবির হাতে পায়েস মানে-ই ‘
বেস্ট। ”
—–“এখানে কি হচ্ছে? হুহ? ”
দিয়ার কন্ঠস্বর শুনে আফজাল শেখ তাড়াতাড়ি পায়েসের বাটি সরিয়ে ফেলেন।
—–“নাহ নাহ তেমন কিচ্ছু নাহ। ”
বড় সাহেবের কথায় দিয়াপিপি আমাকে দেখে বলে উঠেন,
“আরে কাজল তুই কখন এলি? আচ্ছা এসেছিস যখন চল সবাই মিলে একটা সেল্ফি তুলি কিন্তু তার আগে এইটা বলো তুমি আমাকে দেখে কি লুকালে ভাইয়া? ”
বড় সাহেব কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বলেন,
“আমি কিচ্ছু লুকাইনি। “,
দিয়া পিপি এগিয়ে গিয়ে চট করে পিছন থেকে টিফিন বক্সটা বের করে ফেলে। ভ্রু কুচকে বলে,
” তুমি পায়েস খাচ্ছিলে? কাজল তুই এনেছিস তাইনা?
আমি আমতা আমতা করে বলে উঠি,
—“আসলে পিপি। “,
দিয়া পিপি বড় মেমসাহেব এর দিকে তাঁকিয়ে বলেন,
” তুমিও দিয়ে দিলে? জানো নাহ ভাইয়ার সুগার আছে। এখন এই পায়েস আমার। কাজল তোকে বলে দিচ্ছি এরপর থেকে পায়েস করলে আমাকে দিবি। ”
বড় সাহেবের মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে তিনি মুখটা ঘোমড়া করে আছেন কিন্তু দিয়া পিপি বেশি তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে যাচ্ছেন। ভাই-বোনের কান্ড দেখে বড় মেমসাহেব মিটিমিটি হেঁসে যাচ্ছে। আমার বেশ ভালো-ই’ লাগছে। সবাই কত্ত ভালো।
এই সুখী পরিবারের অংশ হয়েও ছোট সাহেব সকলের থেকে অনেক অনেকটা দূরে। কেনো এতো দুরুত্ব।
এদিকে,,
রুদ্রিক নিজের রুমে ঢুকে নিজের গাঁয়ের শার্টটা খুলে ছুড়ে দেয়। রাগে তার শরীর কাঁপছে। রুদ্রিক এগিয়ে গিয়ে আলমারি থেকে একটি ছোট্ট ছবির ফ্রেম সযত্নে বের করে নেয়। তারপর নিজের বুকের সাথে শক্ত করে মিশিয়ে নেয়। রুদ্রিক আমমনে বিড়বিড় করতে থাকে,
“তুমি আমার থেকে এতোটা দূরে শুধুমাত্র ওই ঘৃনিত লোকের জন্যে। ”
রুদ্রিকের বুকে অসম্ভব কষ্ট হচ্ছে। বার বার আফজাল শেখ-কে দেখলে সেই পুরনো ক্ষত তার জেগে উঠে। ভেসে উঠে অতীতে আফজাল শেখের করা সেই ভয়ংকর কর্ম। এই বাড়িতে সে কবে-ই’ চলে যেতো কিন্তু তার ইশানী পিপির জন্যে-ই সে এই বাড়িতে এখানো আছে। কিন্তু এই বাড়িতে থাকলে সেই কষ্টগুলো আবার জেগে উঠে। অজান্তেই রুদ্রিকের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে।
সিথি লুকিয়ে দেখে তার ভাইয়ু কেমন করে যেনো বিছানায় বসে আছে, মাথায় হাত দিয়ে। এইভাবে রুদ্রিককে দেখতে মোটেও ভালো লাগছে নাহ সিথির। সে ভিতের যাবে কিনা সে দিদ্বায় ভুগছে সিথি। তার তো রুদ্রিকের ঘরে যাওয়ার অনুমতি নেই। কিন্তু তাও সিথির মন মানছে নাহ
লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি
হুট করেই রুদ্রিকের ফোনের মেসেজ অপশন বেজে উঠে। তাতে স্পষ্ট লেখা
“স্যার ওরা আপনার জন্যে অনেক্ষন ধরে অপেক্ষা করছে। আপনি কী আজকে আসবেন? ”
রুদ্রিক তাড়াতাড়ি রিপ্লাই দিয়ে বলে উঠে,
“আপনি ওদের বলে দিন। আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আসছি। ”
—-“ঠিক আছে স্যার। ”
রুদ্রিক পরমযত্নে ছবির ফ্রেম টা বিছানার উপর রেখে, ওয়াশরুমে চলে যায়।
রুদ্রিক যাওয়ার সাথে সাথে সিথিও লুকিয়ে লুকিয়ে রুমে ঢুকে পড়ে। উদ্দেশ্য ছবির ফ্রেমে ঠিক কার ছবি তা দেখে ফেলা। কি এমন ছিলো? ওই ছবিতে যার জন্যে তার ভাইয়ুর মতো মানুষের চোখ থেকে পানি বেড়িয়ে গেলো। কথাটা ভাবতে ভাবতে সিথি এগিয়ে গেলো। বিছানার উপর ছবির ফ্রেমটা দেখতে যাবে তখনি কারো ঝাঝালো কন্ঠে কানে আসে,
“তুমি আমার ঘরে এসেছো কেন? আমার রুমে প্রবেশ করার সাহস পেলে কোথায় তুমি? ”
সিথি পিছনে ঘুড়ে দেখে রুদ্রিক তার দিকে তাঁকিয়ে আছে। সিথি কাঁপাকাঁপা গলায় বলে,
“আসলে ভাইয়ু.। ”
——“আবার ভাইয়ু তোমাকে বলেছি নাহ আমাকে ভাইয়ু বলে না ডাকতে। কথা কানে যায়না তোমার?(ধমকের সুরে বললো রুদ্রিক)
রুদ্রিকের ধমকে কেঁপে উঠলো সিথি।
রুদ্রিক আবারো ধমকে বলে উঠে-
Get out Of my room right now. And I Don’t want to see you in this room
(আমার রুম থেকে এখুনি বেড়িয়ে যাও। এই রুমে তোমাকে যেনো না দেখি।)
সিথি অসহায় মুখ নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
________________
আমার ভাবনার মাঝেই বড় মেমসাহেব বলে উঠলেন,
“তা কাজল তুমি সিথির সাথে দেখা করবে তো? ”
আমি সম্মতির সাথে বলি,
“হুম আমি বরং দেখা করে আসি। ”
-কথাটা বলেই আমি উপরের দিকে পা বাড়ালাম।
সিড়িতে পা রাখতেই ইশানি ম্যামের সাথে আমার ধাক্কা লেগে যায়।
কিছুটা তাড়াহুড়া করে উনি প্রবেশ করছিলেন যার ফলে আমার সাথে ধাক্কা লেগে যায়।
আমি ‘সরি ‘ বলতেই উনি রাগান্বিত সুরে বলে উঠেন,
“ইউ ব্লাডি ভালো করে দেখে চলতে পারো নাহ?”
—“ধাক্কা তো আপনি আগে দিয়েছেন ইশানি ম্যাম আমি দেইনি।”
আমার সোজাসোজি কথায় উনি আরো রেগে গিয়ে বলেন,
“অসভ্য মেয়ে একটা! জানো তুমি কার সাথে কথা বলছো? ড্রাইভারের মেয়ে হয়ে, মালিকের সাথে তর্ক করো।”
আমি মুঁচকি হেঁসে বললাম,
” আমাকে ক্ষমা করবেন।আসলে আমি উচিৎ কথা বলার সময় কে মালিক কে ড্রাইভার এইসব দেখিনা। ইশানি ম্যাম।”
—–“বড্ড বেশি কথা বলছো তুমি? ”
—-“ছোটবেলা থেকেই আমার একটু বেশি কথা বলার অভ্যাস কী করবো ম্যাম বলুন? ”
ইশানি ম্যাম বোধহয় আরো কিছু বলতে চাইছিলেন কিন্তু ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে তাড়াতাড়ি চলে যান। যাওয়ার আগে তিনি আমাকে কিছুটা শাসিয়েই বললেন,
“তোমাকে আমি পরে দেখবো। ”
আমি আর কিছু না ভেবে উপরের দিকে চলে যাই। আসলে উনার স্বাভাব সম্পর্কে এই দুই বছরে-ই আমি খুব ভালো করে পরিচিত হয়ে গিয়েছি।
উপরে আসতেই সিথির ঘুমড়ো মুখ দেখে আমি বলে উঠলাম,
“কি হয়েছে তোর এইভাবে মুখ ঘোমড়া করে আছিস কেন? ”
সিথি নিজেকে কোনোরকম স্বাভাবিক করে বলে উঠলো,
“তেমন কিছুনা কাজল। আচ্ছা কাজল তুই একটু ভাইয়ার রুমে যাবি? না মানে ভাইয়াকে দেখে মনে হচ্ছে ভাইয়া কস্টে আছে। আমি যাই তুই বরং একটু যা। ”
আমি আস্তে করে বলে উঠলাম,
“সিথি…
সিথি আমার ডাক শুনে পিছনে ফিরে বলল,
” কি বলবি বল? ”
—–“তুই তোর ভাইকে খুব ভালোবাসিস তাইনা?
সিথির চোখ বেয়ে নোনাজল বেয়ে পড়লো। কোনোরকম কাঁপা গলায় বলল,
“হুম খুব বাসি। ”
কথাটা বলেই সিথি শুকনো মুখ নিয়ে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো। সিথি তার ভাইয়ুকে অনেক ভালোবাসে,কিন্তু বিশাল দুরুত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে তাদের মাঝে। এই বাড়ির সবকিছু-ই যেনো খুব বড় একটা রহস্য রয়েছে। যার জন্যে ছোটসাহেবের সাথে বাড়ির সদস্যের মধ্যে বড় একটা দুরুত্ব সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। হুম আমি সিথির কাছে তার ভাইকে ফিরিয়ে দিবো।
কিন্তু তার আগে আমাকে ছোট সাহেবের কষ্টের কারন খুঁজে বের করতে-ই’ হবে।
রুদ্রিক তাড়াতাড়ি করে একটি নেবি-ব্লু সিলভ কটন এর শার্ট গাঁয়ে জড়িয়ে নেয়।
দুভার্গ্যবশত শার্টের বাটন একটি খুলে যায়।
রুদ্রিক বিরক্তি হয়ে
“ওহ শিট ” বলে কাবার্ড খুলতে নিলে, কেউ বলে উঠে,
“আমি শার্টের বাটন টা লাগিয়ে দেই?”
রুদ্রিক পিছনে তাঁকিয়ে দেখে কাজল হাত ভাজ করে তার দিকে তাঁকিয়ে আছে।
—–” নো থ্যাংকস! বাট কখন এলি? ”
—-“কিচ্ছুক্ষন আগে। বড় সাহেবের জন্যে পায়েস নিয়ে এসেছিলাম। ”
রুদ্রিক চোখ-মুখ শক্ত করে বলে উঠে-
“তাহলে এখানে এসেছিস কেন? যা তোর বড় সাহেব ও মেমসাহেবের কাছে। ”
আমি কিছুটা হেঁসে উনার রুমে ঢুকে ড্রয়ার থেকে একটি সুই-সুতার বক্স বের করে নিলাম। আসলে এই ঘরে কোন জিনিস ঠিক কোন জায়গায় থাকে তা আমার এই দুই বছরে ভালো করে জানা হয়ে গিয়েছে।
উনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার কর্মকান্ড দেখছেন।
—-“তোকে বললাম না? যেতে। এখুনি যা বলছি। “,
আমি দাঁত বের করে হেঁসে বললাম,
” আপতত যাচ্ছি নাহ। আমি আগে আপনার শার্টের বাটন লাগিয়ে দিবো।তারপর যাবো হুহ।”
—-“তুই কী আমার একটাও কথা শুনবি নাহ?
উনার কথার মাঝেই আমি এগিয়ে গিয়ে উনার শার্টের বাটনে সুইটা ঢুকিয়ে সেলাই করতে করতে বলে উঠলাম,
“আমি আপনার কথা ঠিক কবে শুনেছিলাম মনে পড়ছে নাহ। ”
—–“ওহ আচ্ছা তাইনা? ”
—-“হুম তাই। ”
তখনি উনার ফোনটা বেজে উঠে আমি তাঁকিয়ে দেখে ডোনা নাম ভেসে উঠছে৷ নির্ঘাত উনার কোনো গার্লফ্রেন্ড হবে।
“হয়ে গিয়েছে? এইবার সরে যা।
কথাটা বলে উনার বিছানার কাছে ফোনটা হাতে নিতে নিলে আমি খপ করে ফোনটা হাতে নিয়ে, রিসিভ করার সাথে সাথে কেউ বলে উঠে,
” হ্যালো! রুদ্রিক ডার্লিং।
—-“সরি এখান কোনো ডার্লিং ফার্লিং নেই।আমি রুদ্রিক সাহেবের গার্লফ্রেন্ড। উনি আমার সাথে এখন ব্যস্ত আছেন। দয়া করে ফ্রেব্রুয়ারির মাসের ৩১ তারিখ ফোন করিয়েন৷ ”
কথাটা বলে আমি হাঁসতে ফোনটা উনার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলি,
“এই নিন আপনার ফোন।”
উনি ফোনটা হাঁতে নিয়ে বাঁকা হেঁসে আমার কাছে এসে আমার দিকে খানিক্টা ঝু্ঁকে বলে উঠলেন,
“ফোন কি যেনো বলছিলি? তুই আমার গার্লফ্রেন্ড। ”
উনার আড়ষ্ট কন্ঠটা শুনে আমার শরীর কেমন করে যেনো মিয়ে গেলো। উনি মুখটা আমার দিকে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে নেন। কাজলের ভিতু ভিতু চেহারা দেখে ঠোট কামড়ে হেঁসে বলল,
“আচ্ছা কাজল গার্লফ্রন্ড বয়ফ্রেন্ডের মধ্যে কী হয় জানিস? ”
আমি চোখ বড় বড় করে তাঁকালাম উনার দিকে।
। ছোট সাহেব আমার গাল ধরে হয়তো আরেকটু আমার কাছে আসবেন তার আগেই আমি কিছুটা মেকি রাগ দেখিয়ে বলে উঠলোম,
—–” দূরে সরুন বলছি। আপনি জানি কেমন ছোটসাহেব। এত্তোগুলো গার্লফ্রেন্ড আপনার। নিজেও তো বোধহয় জানেন না আপনার ঠিক কতগুলো গার্লফ্রেন্ড।”
উনি স্বাভাবিক ভাবেই বলেন,
“বেশ করেছি। আমার যত ইচ্ছে আমি তত গার্লফ্রেন্ড বানাবো তোর তাতে কী? ”
—” ওকে। তাহলে আমিও ভালো করেছি। এখন দেখবেন ওই মেয়ের সাথে আপনার ব্রেকাপ কনফার্ম। আমার তো মন হয় ওই মেয়ে এতোক্ষন কলার গাছে ফাঁস লাগিয়ে মরে পড়ে আছে।”
উনি হু হা করে হেঁসে উঠেন। যাকে বলে খিলখিল করে হাঁসে। য উনার খিলখিলানো মুন্মগ্ধকর বাঁকা দাঁতের হাঁসিতে আমার মনে ভালোলাগার এক বীজ রপন হলো। কে জানে কীভাবে কী হলো? উনার হাঁসির শব্দ পুরো রুমটাকে যেনো অন্যরকমভাবে খুশির আমেজে পরিপুর্ন করে ফেলেছে। আমিও হেঁসে বলে উঠলাম,
“এইভাবে হাঁসিখুশি থাকলেই আপনাকে বড্ড মানায় ছোট সাহেব। সবসময়-ই’ হাঁসিমুখে থাকুন। কষ্ট আপনার একটুও মানায় নাহ ছোট সাহেব।
ছোট হাঁসি হাঁসি থামিয়ে দম ছাড়া কন্ঠে বললেন,
“আমি-ই’ তো সবসময় ভালো-ই’ থাকি। এইতো ফ্রেন্ডসদের নিয়ে, নাইট-ক্লাব নিয়ে দিব্বি মস্তিতে আছি। ”
——-“আপনার ভিতরে এক চাপা কস্ট আছে। ছোট সাহেব। যা আপনার হাঁসির পিছনে লুকিয়ে আছে।
উনি আয়নার সামনে গিয়ে নিজের শার্টের কলার ঠিক করতে চুলের স্পাইক করতে করতে বললেন,
“রাফসিন শেখ রুদ্রিকের কোনো দুঃখ কষ্ট নেই।
একটা কথা জানিস কাজল? ‘জীবনটাকে এইসব দুঃখের কষ্টের সাগরে না ভাসিয়ে হেঁসে উড়িয়ে দেওয়া অনেক ভালো। ‘
উনার কথার বলার মাঝখানেই উনার ফোনটা বেজে উঠে। উনি রিসিভ করে বলে,
” আমি আসছি…..!”
উনি তড়িঘড়ি করে কোথায় যেনো চলে গেলেন। ক্লাবে গেলেন? উহু আমার মনে হচ্ছে নাহ। বিষয়টা দেখতে হবে।
কথাটা ভেবেই আমি উনার পিছনে যেতে নিলে সিথি পিছন থেকে বলে উঠে-
“কাজল তুই কোথায় যাচ্ছিস?
—-” ছোটসাহেব কোথায় যাচ্ছে তা আমাকে দেখতে হবে।”
—-“প্রতিদিনের মতো ক্লাবে-‘ই যাবে। ”
” নাহ সিথি আমার মনে হচ্ছে উনি অন্যজায়গায় গিয়েছেন। তুই একটা কাজ কর সাদি ভাইকে কল কর। ”
________________
লাজুক রান্নাঘরে ঢুকে ভাতের হাড়ি বসিয়ে দেয়। লাজুক নিজের ফ্লাটে একাই থাকে। মা থাকেন গ্রামে।
একা থাকার সুবাধে নিজের রান্নাটা নিজেকেই করতে হয় তার। বয়স ৩২কৌটায় পৌছালেও সে অবিবাহিত। কিন্তু মা বিয়ে কর বাবা বলে তার কান ঝালাপালা করে দিয়েছে। যদিও সে আপাতত বিয়ে করতে রাজি নয়। তার ভাবনার মাঝেই মেসেজের টুনটান বেজে উঠে। দিয়া মেসেজ পাঠিয়েছে,
“কালকে শপিং এ যেতে হবে ভুলে যাবেন নাহ কিন্তু। কালকে অনেক সেল্ফি তুলবো ওকে?নাকবোচা হ্যান্ডসাম এ্যাসিস্টেন্ট। ওকে বায়। ”
দিয়ার মেসেজ পড়ে লাজুক হেঁসে বলে,
“দিয়া ম্যাম আপনি সত্যি অন্যরকম। সেল্ফি পাগলি। ”
___________
আমি, সাদি ভাইয়া ও সিথি গাড়িতে বসে আছি। সাদি ভাইয়া ড্রাইভ করছেন।
সিথি নক কামড়াচ্ছে। সাদি ভাইয়া ক্লাবে খবর নিয়ে জেনেছেন উনি ক্লাবে যাননি কিন্তু কোথায় গিয়েছেন? সেই উত্তর-ই’ আমাদের অজানা।আমার ভাবনার মাঝেই সাদি ভাইয়া বলে উঠেন,
—-“সবার কাছে-ই’ খবর নিলাম। রুদ্রিক কোথাও নেই। ”
সিথি কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলল,
“,তাহলে ভাইয়ু কোথায় গেলো? আমার কিন্ত বড্ড চিন্তা হচ্ছে। ”
আমি সিথিকে থামিয়ে বললাম,
“আমাদের আগে জানতে হবে। উনি ঠিক কোথায় গিয়েছেন। ফোনে উনি কাউকে বলল ওয়েট করতে কিন্তু কাকে করতে বলল?”
—-“কিন্তু আমরা কী করে জানবো রুদ্রিক কোথায় গেলো?”
সাদি ভাইয়ার প্রশ্নে আমিও কিছুটা চিন্তিত হই। তখনি আমি খেয়াল করি ছোট সাহেবের গাড়ি আমাদের গাড়ির সামনে দিয়ে চলে গেলো।
আমি চিল্লিয়ে বললাম,
“সাদি ভাইয়া। উনার গাড়ি। তাড়াতাড়ি ফলো করুন। ”
সাদি ভাইয়া আমার কথায় গাড়ি ঘুড়িয়ে ফেলে। আজকে জানতে-ই’ হবে উনি ঠিক কোথায় যান।
কিছুক্ষন পরেই উনার গাড়ি থেমে যায়। উনি গাড়ি থেকে বেড়িয়ে এমন এক জায়হায় প্রবেশ করে , যা দেখে আমরা তিনজন স্তব্ধ হয়ে যাই।
চলবে….
তাড়াহুড়ো করে এই দুই পর্ব লিখলাম। রিচেক দেইনি।
গল্প ছোট হয়েছে নাইস নেক্সট এইসব না লিখে ঘটনমুলক কমেন্ট করে উৎসাহিত করুন
(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)