“এখনো ভালোবাসি”💖 পর্ব-২৪

0
3061

“এখনো ভালোবাসি”💖
Writer:TaNia
Part-24

“ঢাকার বাহিরে একটা রিসোর্টে অনিক ও সারার বিয়ের আয়োজন করা হলো।আইডিয়াটা অবশ্য সারারই ছিলো।ওর নাকি ইচ্ছে দুপরিবার একসাথে সকল প্রোগ্রাম আয়োজন করুক।যেহেতু দুপরিবারের সবাই একই ফ্যামিলির।তাহলে আয়োজন ভিন্ন ভিন্ন কেনো।আয়ন ছোট ভাইয়ের বিয়ের আয়োজনে কোনও ত্রুটি রাখছে না।সব কিছু নিখুঁত ভাবে নিজেই পর্যবেক্ষণ করছে।তবে এসব ফ্যামিলি প্রোগ্রামর প্রতি আয়নের নিজেরই কোনও ইন্টেরেস্ট নেই।ওর কাছে এসব কেনো জানি একটু বোরিং লাগে।”

–সারাদিন ব্যস্ত থাকায় আয়ন প্রিয়ুকে একবারও চোখে দেখেনি।খুব রাগ উঠছে আয়নের এখন।আমি না হয় ব্যস্ত ছিলাম কিন্তু এই মেয়ের কি একবারও মনে হয়নি আমার একটু খোঁজ নেওয়ার দরকর।কি কপাল আমার!এতো হান্ডস্যাম স্বামীকে কেউ একা ছাড়ে।ওর জায়গায় অন্য কোনও মেয়ে হলে আঁচলে বেঁধে রাখতো।অথচ এই মেয়ের কাছে আমার কোনও কদরই নেই।আয়ন নিজের দুঃখ গুলো নিজের কাছে রেখেই খুঁজতে লাগলো প্রিয়ুকে।

“কিন্তু সারা রিসোর্ট খুঁজেও আয়ন প্রিয়ুর দেখা পেলো না।তাই ক্লান্ত হয়ে নিজের রুমে চলে এলো।সোফায় আড়ামে একটু বসে চোখদুটো বন্ধ করে মনে মনেই ভাবছে।বিয়ে শাদীতে এতো প্যারা কেনো যে মানুষ নেয় আল্লাহই জানে।আমার মতো কাজী ডেকে,দুজন সাক্ষীর সামনে বিয়ে করবে,শেষ।ঢাকঢোল পিটিয়ে মানুষকে জানানো কি প্রয়োজন আজ আমার বিয়ে।উফ!আয়নের মাথাটা ব্যাথা করছে।তার উপর প্রিয়ুকে খুঁজে পাইনি বলে মেঝাজাও বিগরে যাচ্ছে।”
–হঠাৎ আয়ন অনুভোব করছে,একটা বিড়ালছানা আয়নের কোলে এসে বসে ওকে জড়িয়ে ধরেছে।তবে এটা একটা বড় বিড়ালছানা,কি নরম ধরতে।মুহুর্তে আয়নের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।নিজের দুহাত দিয়ে আয়ন নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো সেই নরম বিড়াল ছানাটিকে।
“চোখ বন্ধ রেখেই প্রিয়ুকে জিঙ্গেস করলো আয়ন,কোথায় ছিলি।সারা রিসোর্ট খুঁজে এলাম আমি।”
–হু,মিথ্যুক!আমি তো ছাদেই ছিলাম।
“ওও!কিন্তু আমি তো ছাদ চেক করিনি।তাই হয়তো তোকে দেখতে পাইনি।কি করছিলি ছাদে এই সময়।”
–আজ রাতে এনগেজমেন্টের পর ডান্স পার্টির আয়োজন করেছে।সবাই সবার পার্টনারের সাথে নাচবে।
“আনবিলিবেল,এসব ফালতু আর বাচ্চামো আইডিয়া কে করেছে শুনি।”
–প্রিয়ু কপাট রাগ দেখিয়ে,আয়নকে চোখ পাকিয়ে,আয়ন…..।
“প্রিয়ুর মুখে নিজের নামটা শুনলেই আয়নের কেমন নেশা লেগে যায়।এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করে।”
–হঠাৎ প্রিয়ু আয়নের গলাটা দুহাতে জড়িয়ে আললাদি সুড়ে বললো,শুনো না,আমার না এখন করতে মন চাইছে।প্লিজ আসো না।আমরা একবার করি এখন।তুমি পূরণ করবে না বলো।তুমি না করলে কে করবে,পাঁচটা নয় দশটা নয়,একটা মাত্র স্বামী আমার।আমার চাওয়া পাওয়ার দিকে একটু খেয়াল রাখো।একবার করি,দরজা লাগিয়ে।আজকের পর আর কোনও দিনও করতে বলবো না।এবার হা বলে দেওনা,বাকিটা আমিই শিখিয়ে দিবো।লজ্জা পাওয়ার কিছুই নেই।সবাই করতে পারলে আমরা পারবো না কেনো।এই বিষয় ধারণা থাকলেই চলবে।খুব মজা হবে।একবার করে দেখো তুমিও অনেক এনজয় করবে।তোমার তো পাড়ার কথা।তাহলে বলো করবে আমার সাথে, লাস্টবার!

“আয়নের ব্রেনের গতিবিধ চলন্ত ঘোড়ার মতো ছুটছে।দিকবেদিক হয়তো কিছুই দেখছে না।শিরা উপশিরা গুলোতে রক্ত চলাচল যেনো স্বাভাবিক থেকে বেশিই কাজ করছে।কি বলছে প্রিয়ু,এসব কি সত্য।এই মেয়ে কি বলে আর করতে হবে না মানে কি।একবারে কি হবে।আমার তো ওকে বারবার চাই।ওর এসব কথায় আমি আরো তৃষ্ণার্ত হতে শুরু করে দিয়েছি।আর এসব কথার মানে কি।ও কি আবারও পালানোর ধান্দায় আছে নাকি।”
–কি হলো কথা বলছো না কেনো।আর এমন দেখাচ্ছে কেনো তোমাকে।
“আস…লে…আ….মি….।আয়ন ঘামছে। এসিরুমে থাকা সত্যেও আয়ন ঘামছে। কি সাংঘাতিক। ”
–দেখো,না বলবে না।সবাই সবার পার্টনারের সাথে নাচবে।তাহলে আমি কি আচার বানাবো।তুমিও নাচবে আমার সাথে।ঠিক আছে।এরপর আর কখনো বলবো না।শুধু একবার।
“তুই এতোক্ষণ ডান্সের কথা বলছিলি।”
–হুম,কেনো?তুমি কি মনে করেছিলে।
“আয়ন একঝটকায় প্রিয়ুকে কোল থেকে নিচে ফেলে দিয়ে,উঠে দাঁড়ালো।”
–আআআ,কি করলে এটা।
“আয়ন ট্রি টেবিল থেকে পানির গ্লাশটি নিয়ে একঢোকে সব শেষ করে দিলো।তবুও যেনো গলাটা শুকিয়ে আছে।প্রিয়ু পাশে এসে দাঁড়িয়ে কি হলো তোমার এমন বিহেভ করছো কেনো।”
–চুপ ফাজিল মেয়ে।আমার বারটা বাজিয়ে বলে এমন করছো কেনো।আমি তো কি না কি মনে করে ছিলাম।আর তুই?কান খুলে শুনে রাখ আমি কোনও ডান্সফান্স করতে পারবো না।ইম্পসিবল!আর দ্বিতীয়বার আমাকে এসব বলবিও না।
“তাহলে আমি কার সাথে করবো।প্রিয়ু মুখটা ফুলিয়ে।”
–জানি না।আয়ন একটু চিল্লিয়ে।
“আচ্ছা ঠিক আছে।আমি অন্যকোনও পার্টনার খুঁজে নিবো।তার হাতে হাত রেখে পায়ের সাথে পা মিলিয়ে ডান্স করবো। কি বলো।”
–থাপ্পড়াইয়া তোর সব দাঁত ফেলে দেবো বেয়াদব।হাত পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো।অন্য কারো সাথে দেখলে খুন করে ফেলবো।
“ঠিক আছে,আমি বুঝতে পাড়ছি।বয়স হয়ে গিয়েছে তাই হয়তো ভয় পাচ্ছো ডান্স করতে গিয়ে,পড়ে আবার কোমড় না যায় এভেবে।কিন্তু এতো চিল্লাচ্ছো কেনো।আমি কালা নাকি।”

“আয়ন কোমড়ে হাত দুটো রেখে,চোখ পাকিয়ে প্রিয়ুর দিকে তাকালো,মানে কি তোর। আমি বুড়ো।”
–প্রিয়ু মুখ চেপে হাসছে।কিছু আর বললো না।ওর খুব মজা লাগছে আয়নকে এভাবে রাগাতে।
“হঠাৎ আয়ন প্রিয়ুর কোমড়টা ধরে টান দিলো নিজের দিকে।প্রিয়ু গিয়ে আয়নের বুকে পড়লো।আয়ন প্রিয়ুর মুখে নিজের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করে বলছে,ওকে মিসেস মাহবুভ। আজ রাতে পার্টিতেই দেখা যাবে।আপনি আবার এই বুড়োকে দেখে বেহুশ হয়ে যাবেন না তো।দূর্বল হার্টের মানুষ হলে সাবধানে থাকবেন।আয়ন প্রিয়ুকে ছেড়েই মুচকি হাসতে হাসতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।”
–আর এদিক দিয়ে প্রিয়ু ভাবছে বেশি করে ফেললাম নাকি।এই লোক যে আজ কিছু একটা ঘাপলা করবে তা নিশ্চিত।কিন্তু কি?
দেখা যাক কার বুকের আগুন জ্বলে আজ।
___________
“নিজের ডেস্ক এ বসে ছটফট করছে তিতির।কেবিনে এখন কি চলছে তা ভেবেই অস্থির লাগছে।লোরিন নামক একজন নামকরা মডেল এসেছে ইটালি থেকে।দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি হট।ছেলেরা কি অফিসের মেয়েরাও ছোটখাটো ক্রাশ খাইছে লোরিনকে দেখে।নতুন প্রজেক্ট এর ব্রান্ড এম্বাসেডর লোরিন।তাইতো প্রায় এক ঘন্টা ধরে লোরিন দিনেশের কেবিনে বসে কথা বলছে।হয়তো লোরিনের কাজগুলো দিনেশ ভালো করে বুঝিয়ে দিচ্ছে।তিতির একবার গিয়েছিলো কেবিনে কফির বাহানায়।কিন্তু দিনেশ সাথে সাথে ওকে রুম থেকে বের করে দিলো।লোরিনের সামনে এমন বিহেভ করায় তিতির একটু কষ্টতো পেলো,কিন্তু এই কষ্ট থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে এটা ভেবে একটি সুন্দরী মেয়ে,শুধু সুন্দরী বললে ভুল হবে বিশ্ব সুন্দরী মেয়ে দিনেশের সামনে বসে আছে।কেউ সত্যি বলেছে,মেয়েরা হিংসুক হয়।বিশেষ করে নিজের থেকে সুন্দর কাউকে দেখলে সহ্য হয় না।যা এখন তিতিরের সহ্য হচ্ছে না।এটাই বাস্তব।”

–বেশকিছু সময় পর দিনেশ লোরিনকে সাথে নিয়ে হাসতে হাসতে কেবিন থেকে বের হলো।অফিসের সবাই তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে।লোরিনও যে দিনেশ এর উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছে তা কিছুটা ওর কার্যকলাপে তিতির অনুধাবন করতে পাড়লো।দিনেশ তিতিরকে সম্পূর্ণ ইগনোর করে লোরিনের সাথে চলে গেলো।তিতির দিনেশের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে পাড়লো না।দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে নিজের ডেস্কে বসে পড়লো।না চাওয়া সত্যেও চোখ দিয়ে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো।আবার মনে পড়ে গেলো সেদিনের রাতের কথা।যেদিন দিনেশ ওকে প্রোপজ করেছিলো।

অতিত…..

“দিনেশ চোখমুখ শক্ত করে তিতিরের দুবাহু চেপে ধরলো।সমস্যা কি তোমার।বলো?চিৎকার করে দিনেশ।
ওয়াটস ইউর প্রোবলেম।”
–এভাবে ধরায় তিতির ব্যাথায় চোখেমুখ খিঁচে ফেললো।প্লিজ ছাড়ুন।আআ!ইউ হার্ট মি।
“কষ্ট হচ্ছে তোমার।এর থেকে বেশি কষ্ট আমি পাচ্ছি তিতির।তা কি চোখে পড়ে না তোমার।নাকি আমি অন্য ধর্মের বলে মানুষ মনে হয়না বলো।তিতিরের বাহু ছেড়ে দিয়ে দিনেশ তিতিরের মুখটি দুহাতে তুলে বললো,ভালোবাসা ধরে বেধে হয়না তিতির,কিন্তু কি করবো বলো হয়ে গিয়েছে।তোমাকে ভালোবাসি আমি, খুব বেশি।তাই ছাড়তে পাড়ছি না।ধর্মই কি সমস্যা তোমার।দুনিয়াতে আমরা নতুন না,যে ভিন্ন ধর্মের মানুষ একে অপরের প্রেমে পড়েছি।আমাদের আগেও অনেকে ভালোবেসেছে,বিয়ে করে সংসার করছে।তাহলে আমরা কেনো পাড়বো না তিতির বলো।”

“-তিতিরের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,নিজেকে খুব অসহায় লাগছে।কিন্তু ও নিরুপায়।ও এ সম্পর্ক চাইলেও মেনে নিতে পাড়বে না।ওর শিক্ষা ওর ধর্ম ওকে দিবে না।তাই ও মনকে শক্ত করে দিনেশের হাতটি নিজের থেকে সরিয়ে ফেললো,এক পা পিছিয়ে দিনেশের দিকে তাকিয়ে বললো।এটা সম্ভব না স্যার।আমার ধর্ম আমাকে অন্য ধর্মের কাউকে বিয়ে করার অনুমতি দেয়নি।আমাদের বিয়েটা কখনো বৈধ বলে গণ্য হবে না।সম্পর্কটাকে কখনো কোনও পবিত্র নাম দেওয়া যাবে না,এটা সম্পূর্ণ হারাম আমার জন্য।তাহলে বলুন কিভাবে গ্রহণ করি আমি।কিভাবে মেনে নিই।আমি পাড়বো না।সমাজ, বাবা-মা সবার সাথে লড়াই করতে পাড়বো,কিন্তু যিনি সৃষ্টি করেছেন তার সাথে কিভাবে লড়বো বলুন।আমি পাড়বো না।আমাকে ভুলে যান।আপনার জন্য আমার জন্য সবার জন্যই এটাই ভালো।প্লিজ।”

–দিনেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিতিরকে প্রশ্ন করলো,ভালোবাসো আমায়।
“তিতির নিশ্চুপ।তবে ওর চোখের পানি অনেক কিছু বলে দিচ্ছে।”
–তিতিরের এমন চুপ থাকাটা আজ দিনেশের সহ্য হলো না।হঠাৎ তিতিরকে কাছে টেনে ওর ঠোঁট দুটো নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো দিনেশ এবং খুব রুডলি ভাবে কিস করতে লাগলো।এমন ভাবে কিস করছে যেনো দিনেশ ওর সব রাগ,ফাস্ট্রেশন দূর করছে।আচানক সব কিছু হওয়ায় তিতির রিয়েকশন দিতে ভুলে গেলো প্রথমে।সাথে কিছুটা শোকড!কিন্তু ব্যাপারটা বুঝতে পেড়ে দিনেশ থেকে ছুটার চেস্টা করতে লাগে।কিন্তু পারেনা।তিতির এর এমন ছুটাছুটি দিনেশের একদম পছন্দ হয়নি।তাই তিতিকে টেনে আরো কাছে নিয়ে এলো,মনে হয় নিজের ভেতর ঢুকিয়ে ফেলবে।তিতির নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো।খুব বেশি অস্বস্তি ফিল করছিলো।দিনেশের এমন রুক্ষ আচরণ একদম মেনে নিতে পারছিলো না।কিন্তু নিজেও কিছুই করতে পারছিলো না।কিছুক্ষণ পর দিনেশ নিজেই ছেড়ে দিলো।
ছাড়া পেয়ে তিতির রীতিমতো হাফাতে লাগলো,জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস ছেড়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে লাগলো।
“তিতিরের কপালে নিজের কপাল ঠেকিয়ে দিনেশ,যাও,চলে যাও!আজ থেকে তুমি মুক্ত।আজকের পর থেকে আমি নিজ থেকে তোমার কাছে আসবো না কখনো।তবে তুমি আমার আশেপাশে থাকতে বাধ্য হবে।ভালোবাসার দহনে আমি তোমাকে পুড়াবো।ভীষন পুড়াবো।পুড়িয়ে কয়লা বানিয়ে ফেলবো।তুমি না বলতে পাড়বে না সইতে।শুধু চেয়ে চেয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়বে।যেমনটা আমি করছিলাম এতোদিন।”

–ফোনের শব্দে তিতির সম্বিৎ ফিরে পেলো।সেদিনের পর দিনেশ সত্যি ওকে বাধ্য করেছে আবার অফিস জয়েন হতে।কারণ ও চুক্তিবদ্ধ ছিলো এই কোম্পানিতে।চুক্তির আগেই ও কাজ ছেড়ে দিয়েছিলো।কিন্তু তখন দিনেশ কিছু না বললেও এখন এই চুক্তির জোড়েই তিতিকে অফিসে আবার জয়েন হতে বাধ্য করেছে।সেদিনের পর থেকে তিতির এর সাথে দিনেশের আচরণ পুরো পাল্টে গেছে।প্রয়োজন ছাড়া তেমন কথা বলে না।সর্বদা তিতির কে ইগনোর করেই চলে।ফোনটি আবার বেজে উঠলো।স্কিনে ভেসে উঠছে আয়নের নামটি।তিতির জানে কেনো ফোন করছে আয়ন।আয়ন তিতি কেও ইনভাইট করেছিলো অনিকের বিয়েতে।
____________
“এনগেজমেন্ট এর পর্ব খুব ভালো করেই শেষ হলো।সবাই ডান্সও করেছে।এমনকি দিশাও তিয়াশের সাথে ডান্স করার সুযোগ পেয়েছে।কিন্তু একমাত্র প্রিয়ুর কপালেই ডান্স করার সুযোগ হলো না।ওর ভীষণ রাগ উঠছে,তবে সাথে একটু বিরক্ত।কারণ পুরো পার্টিতে প্রিয়ু আয়নকে দেখতে পেলো না এখনো,কোথায় এই খবিশটা।আমাকে বলে কি কামাল দেখাবে।আর এখন নিজেই গায়েব।”

–হঠাৎ প্রিয়ু খেয়াল করলো সবাই বাহিরের দরজার দিকে তাকিয়ে আছে।প্রিয়ুও তাদেরকে লক্ষ্য করে সেদিকে তাকালো,আর সাথে সাথে একটা হার্ট বিট মিস করলো।আয়ন দাঁড়িয়ে আছে।একদম ফুল এটিটিউড নিয়ে।প্রিয়ু মনে মনে ভাবছে,আজ জানি কতো মেয়ে খুন হবে এই লোকটিকে দেখে।তাহলে আমার কি হবে একটু হতাশ হয়ে ভাবছে।প্রিয়ু আশেপাশে তাকিয়ে দেখে অলরেডি অনেক মেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে আয়নের উপর।আর পড়বেই না কেনো।বেশির ভাগ মানুষই জানে আয়ন এখনো ব্যাচেলার।ওর বিয়ের খবরটা মিডিয়াতে এখনও প্রকাশ পায়নি।আয়নের কাছের মানুষগুলো ছাড়া তেমন কেউ জানেই না আয়ন বিবাহিত।তাইতো মেয়েরা ট্রাই করছে,একবার যদি আয়নের নযরে আসা যায়।প্রিয়ুর মনটা খারাপ হয়ে গেলো।প্রিয়ু ভাবছে,আয়ন হয়তো প্রিয়ুকে নিয়ে কিছুটা লজ্জিত তাই প্রিয়ু আর ওর বিয়ের কথা বলতে চায়না কাউকে।প্রিয়ুর অবুঝ মনে একগুচ্ছ মেঘ এসে জমা হয়ে গেলো।আর এর ফলে যেকোনও সময় বর্ষণও হতে পারে।

“-এদিকে আয়ন কয়েকবার ট্রাই করেছে প্রিয়ুর সাথে কথা বলার।কিন্তু গেস্টদের এটেন্ড করতে গিয়ে আর সময় পায়নি।কিন্তু দূর থেকেই দেখে বুঝতে পাড়ছে প্রিয়ুর মন খারাপ।কিন্তু মন খারাপের কারণ কি? আয়ন বুঝতে পাড়ছে না।আয়ন ভেবেছিলো প্রিয়ুকে আজ জেলাস ফিল করাবে।কিন্তু প্রিয়ুর উদাসীন মুখটি দেখে আয়ন নিজেই অস্থির হয়ে পড়লো, কখন সব গেস্টরা যাবে আর ও প্রিয়ুর উদাসীনতার কারণ জানতে পাড়বে।”

–পার্টি শেষ হবার পরও একটু দেরি করেই প্রিয়ু রুমে এলো,ওর আয়নের সাথে কথা বলার একদম ইচ্ছে নেই তাই।আজ পার্টিতে বুঝতে পাড়ছে প্রিয়ু, ওর স্বামী নামের এই মানুষটির পিছনে কতো মেয়ে পাগল।আগে ব্যাপারটা ইজি নিলেও কেনো জানি আজ খুব খারাপ লাগছে।একদম অসহ্য।কখনো সুন্দর ছেলেদের বিয়ে করতে নেই,এদের নিয়ে রিস্ক বেশি থাকে।প্রিয়ু নিজের এই বিষন্ন মনটাকে নিয়ে এতো রাতে রুমে এসেও আয়নকে পেলো না,তাই দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে চেন্জ্ঞ করতে চলে গেলো।ওয়াসরুম থেকে বের হতেই কেউ ওর উপর ঝাপিয়ে পড়ে।আর খুব সোফ্টলি প্রিয়ুকে কিস করতে থাকে।ঘটনার আকষ্মিক প্রিয়ু ভয় পেলেও পরে চেনা মানুষটির পারফিউম এর গন্ধে প্রিয়ু নিজেও মাতাল হয়ে যায়।বেশ সময় পর আয়ন প্রিয়ুকে ছেড়ে আবার সাথে সাথে কোলে তুলে নেয়।প্রিয়ু আয়নের এভাবে পাগলামির কোনও মানে বুঝতে পাড়ছে না।শুধু নিরব হয়ে দেখছে।আয়ন প্রিয়ুকে বিছানায় নিয়ে আরো একবার প্রিয়ুর ভেজা ঠোঁটের পরশ নিতে লাগলো।প্রিয়ু এখনো শোকড এর মধ্যেই আছে।তবে আয়নের পাগল করা স্পর্শে প্রিয়ুর চোখদুটো বন্ধ হয়ে গেলো।গালদুটো লাল হয়ে গেলো।প্রিয়ু লজ্জা পাচ্ছে,ব্যাপারটা আয়ন একবার লক্ষ্য করেছে,কিন্তু নিজেকে প্রিয়ুর উপর থেকে তুললো না।বরং আরো একটু নেমে এসে ওর গালে, গলায়,বুকে কিস করতে লাগলো।আয়ন জানে ওর বউয়ের মনটা ভালো নেই।সেটা যেই কারণেই হোক,আয়ন ওর ভালোবাসা দিয়ে আগে নিজের অবুঝ বউকে বশে আনতে চায়।এরপর বাকি কাহিনী প্রিয়ু নিজেই বলবে,ওকে আর কিছুই করতে হবে না।

চলবে….।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here