অভিশপ্ত বাসর রাত.পর্ব -১০

0
3263

“”””””””””অভিশপ্ত বাসর রাত”””””””””””

……………..পর্ব -১০…………………….

এই শুনেন।
পিছন থেকে উদগ্রীব হয়ে ডাকল
সাবিহা মেহবুবকে। ও পিছন ফিরে বলল,-
জি বলেন?
ওর এই সম্মোধনে রাগে সাবিহার মাথা
গরম হয়ে গেল।
-আপনি এগুলো কি বলছেন?
-কেন তুমি কানে শুনো নি?
-না।চিৎকার করে বলল সাবিহা।
-আহারে আমার কালা বউ।আমি তো জানতাম
না।এখন তুমি তোমার চিকিৎসা করবা না আমি
তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব?
বলতে বলতে মেহবুব সাবিহার দিকে
আগল।ওর হাত ধরে বলল -আমি একবার
ভুল করছি আর করতে রাজি না,প্লিজ ফিরে
চল।মা বাবা বাকি সবাই তোমাকে খুব পছন্দ
করে।
-তা আমি জানি কিন্তু সংসার তো আমার
আপনার সাথে। আপনিই তো নিজেই
আমাকে বের করে দিয়েছিলেন
ভুলে গেছেন সে কথা?কত অপমান
করেছেন প্রতিনিয়ত। আমি সব মুখ বুঝে
সহ্য করেছি। এখন আপনি আসছেন
আমাকে নিয়ে যেতে।বাহ্।
-আমি কিছুই ভুলি নি। একবার চলো আমার
সাথে অন্তত এই কয়দিনে আমাদের
মধ্যকার ভালো সম্পর্কের জোরে।
-আমি এত মানুষ দেখেছি আপনার মতো
দেখি নি যে প্রতিনিয়ত নিজেকে
বদলায়।
-হ্যা আমি বদলাই নিজ প্রয়োজনে।
যেমন এখন আমার মনে হয়েছে তুমি
আমার জন্য সঠিক তাই তোমার জন্য
নিজেকে বদলালাম কিন্তু তুমি যদি আমার
কথা না শুনো তাহলে আবার বদলাবো
নিজেকে এবং খারাপভাবে। এই কথাটা
মনে রেখ।
সাবিহাও এর উওর ঝাঁঝালো ভাবে দিতে
চাইছিল তারআগেই মেহবুব লিফট এসে
যাওয়ায় লিফটের দিকে হাঁটা দিল, শুনতে
পেল সাবিহা বলছে-আমি এখানের সব কিছু
ছেড়ে দিয়ে মা বাবার কাছে চলে যাব
কিন্তু আপনার সাথে যাব না।
গাড়িতে উঠে ও সাবিহাকে টেক্সট
করল-
“পিচ্চি বউ,
মাথা ঠাণ্ডা কর।চেঁচামেচি তো অনেক
করলা। এনার্জি কমে গেল না?? তাই খাও
কিছু।খেয়ে পড়তে বস।–তোমার
বুড়ো জামাই।
মনে মনে ভাবল অনেক হইছে আর না
আসলে সেপারেশন লেটার পাঠানোর
আগে সাবিহাকে বলা উচিৎ ছিল ওর ভাললাগার
কথাটা। নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য আজ
দুজনের মাঝে আবার দেয়াল হলো।
এখন পরিস্তিতি এমন পর্যায় যে সাবিহা ওর
কোন কথাই শুনতে রাজি না।এতদিনের
ক্ষোভের বশে ও মেহবুবকে না জানি
কেমন ভাবছে।শুরু থেকেই তো
খারাপ আচারন করে আসছে।ভাবল মা
বাবাকে পাঠাবে সাবিহার বাসায় ওকে
বুঝানোর জন্য।অন্তত তাদের দিকে
তাকিয়ে হলেও তো আসবে।তাও যদি না
হয় তাহলে সাবিহার জিদের শেষ ও
নিজেই দেখবে।
কিন্তু ওদিকে কি হচ্ছে তা তো আর
মেহবুব জানে না। সাবিহা ওর শেষ
কথাতেই বুঝছিল যে মেহবুব এত
সহজে ওকে ছাড়বে না ওর জীবন
থেকে, লাগলে যেখান থেকে
পারে জোর করে তুলে নিয়ে যাবে।
সে ক্ষমতা মেহবুবের আছে।ওর মাথায়
চিন্তা আসল তখনই যখন ওর বড় বোন
ফোন দিল।বলল যে তারা বাচ্চাদের
স্কুলের ছুটিতে খুলনায় ওদের বাসায়
বেড়াতে যাচ্ছে।ও আর মেহবুব যদি
পারে তাহলে যেন কয়দিন থেকে
আসে খুলনায়। তখন ও ওর বোনকে
বলল,
-আপু তোরা যা। আজ তো আর সম্ভব না
কারন আমার ডিউটি আছে রাতে। আর
মেজর সাহেবকে ফোন দেবার
দরকার নাই সে ব্যস্ত।আমরা কাল সকালে
রওনা দিব।
ফোন রেখেই সাবিহা ভাবল এই সুযোগ
মেহবুবের হাত থেকে বাচাঁর।ওদের
বাসা থেকে যদি কেউ ফোন না করে
তাহলে মেহবুব জানতেও পারবে না যে
ও ঢাকার বাইরে।তাই বাসায় ফোন করে
ওর আসার খবর দেবার পাশাপাশি মা বাবাকেও
নিষেধ করল মেহবুব কে ফোন না
দেবার।
পরে চিন্তা করল এভাবে আর কয়দিন?
এবার বাসায় গিয়ে মা বাবাকে সব বলবে।
ওর আর মিথ্যে লুকোচুরি ভাল লাগছে
না। পরে ঢাকায় হসপিটালের চাকরি ছেড়ে
খুলনায় জব নিয়ে ওখানে সেটেল
হবে।মা বাবার কাছে থাকলে ও এই বিয়ে,
মেহবুব এসব সমস্যার সামাল দিতে
পারবে। ও যদি মেহবুবের কাছে না
যেতে চায় ও তো আর ওর নিজ বাসা
হতে, মা বাবার কাছ থেকে ওকে তুলে
আনতে পারবে না।আর ডির্ভোস?তা
তো মেহবুব যেদিন ওকে বাসা হতে
বের করে দিছে সেদিনই হয়েছে,
নতুন করে আর কিবা হবে??!!
ওদিকে বিপওি বাজালো ওর দুলাভাই। সে
মেহবুবকে বিকেলে ফোন দিয়ে
জানাল। সে তো সরল মনে তাদের
সাথে ছুটি কাঁটাতে যাবার জন্য ফোন
দিয়েছিল কারন ওর বোন বলেছিল যে
ওরাও যাচ্ছে কিন্তু মেহবুবকে ফোন না
দেবার কথা তাকে বলা হয়নি।ওরা কখন রওনা
দিবে তা জানতে চাইল। তখন তার কাছেই
জানতে পারে যে সাবিহা কাল সকালে
যাবার কথা বলেছে।
কথাগুলো শুনে মেহবুবের রাগ মাথায়
উঠল কিন্তু ও ধরা দিল না কারন তাহলে
ওদিকের খবর ও জানবে না কারন সাবিহা ওর
কাছ থেকে পালাতেই ঢাকা ছাড়ছে তা
ভালোভাবেই বুঝতে পারল। উলটো ও
ভাইয়াকে বলল,
-ভাইয়া আমার তো আজ খুব কাজ অফিসে।
আমি সাবিহার সাথে এ নিয়ে কথা বলি নি
আপনি একটু কষ্ট করে ওকে ফোন
দিয়ে জানুন ও কাল সকালে কখন যাবে।
আর হ্যা ভাইয়া আমার কাজ শেষ হতে
হতে ও হসপিটালে চলে যাবে তো
তখন তো আর কথা বলা সম্ভব না আপনি
যদি বেয়াদবি না নেন জেনে আমাকে
একটা মেসেজ দিবেন।
-আচ্ছা কোন ব্যাপার না। আমি জানাব।
ফোন রাখার পর মেহবুব রাগে ফুঁসে
উঠল।কি এত বড় সাহস!! চিন্তা করল এখন
তো সাবিহা ডিউটিতে চলে গেছে,
হসপিটালে গিয়ে কোন লাভ নেই। তার
থেকে বরং কাল সকালে সাবিহা কখন রওনা
দেয় জেনে লাগলে বাসস্ট্যান্ড
থেকে ধরে নিয়ে আসবে এবং তখন
ওর বাসা নয় ওর নিজের বাসায় নিয়ে
আসবে।
সাবিহার দূলাভাই
একটু পরে ফোন দিয়ে জানাল যে ওরা
কাল সকাল আটটা নাগাত রওনা দিবে গাবতলি
থেকে।
-বাহ্ সাবিহা ম্যাম তুমি নিজে বাঁচতে
পরিবারের সবাইকে বলেছো আমিও
যাচ্ছি তোমার সাথে।দাঁড়াও তোমার
জালে এবার তোমাকেই ফেলব আমি।
……..
________চলবে_______
সীমন্তিনী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here