মেঘে ঢাকা চাঁদ পর্ব-৮

0
1229

#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ৮)
সায়লা সুলতানা লাকী

সকালেই নাস্তা সেরে বের হয়ে গেল হিমেল, উদ্দেশ্য ওর আব্বুর অফিসে যেয়ে তার সাথে কথা বলবে। সারারাত চিন্তা করেছে কিভাবে কি বলবে! মায়ের সাথে এ বিষয়ে এখনও কোন কথাই বলেনি। প্রথমেই তাকে বললে সে পুরো বিষয়টাকে ঘোলা করে ফেলবে। তাই আপাতত তাকে কিছু না জানানোটাই শ্রেয় বলে মনে হল ওর।

নাজমুল সাহেব তার অফিসে হিমেলকে এই সকালে দেখে অবাক হয়ে গেল। সকালে নাস্তার সময় ছেলে ঘুমে ছিল তাই আর দেখা হয় নাই, নিজেও আট ডাকেনি।ভেবেছে পরীক্ষা শেষ হয়েছে এখন একটু বেশি সময় নিয়েই ঘুমাক। কিন্তু এখন অফিসে আসার কারনটা বুঝতে পারছিলো না। মনে মনে ধরে দিল হিমেলের টাকার দরকার হতেপারে তাই হয়তো অফিসে এসেছে। বাসায় নিশ্চয়ই ওর মায়ের চাপে টাকার কথা বলতে পারছিলো না। এমনটা ভেবেই সে আগে হাতের কাজগুলো সব শেষ করে পরে ছেলের মুখোমুখি হলেন।
“হ্যা বল, হঠাৎ অফিসে এসেছিস কেন? কিছু লাগবে, আই মিন টাকা?”

“আব্বু শুধু টাকার দরকার হলেই কি তোমার কাছে আসি? অন্য কোন কারন থাকতে পারে না?”

“তা সে কারনটা কি? সহজভাবে বলে ফেল। তোর মা বিষয়ক কিছু হলে আমি নাই। তার সাথে কোন গেঞ্জামে যেতে আমি রাজি না। মহিলা খুব বেশি ক্যাটক্যাট করে। তখন বাসায় থাকাটা বিরক্তিকর লাগে।”

“আব্বু তুমি সবসময় এমন করে কথা বলো কেন? তুমি শুধু আম্মুর ক্যাটক্যাট করা নিয়েই পড়। আম্মুর সারাদিনের পরিশ্রমকে দেখো না? সারাদিন আমাদের সবার জন্য তার কষ্টটাকে দেখো না?”

“পরিশ্রম আমিও করি। কিন্তু সবসময় মেজাজ এমন বিগড়ে রাখি না। বাদ দে, এখন বল কি জন্য এসেছিস? ”

হিমেল কিছুক্ষন থেমে যায়, কিছু একটা ভেবে তারপর আবার বলে, “আচ্ছা আব্বু ধর এবার বড়পু আর ছোটপু দুজন আমাদের বাসায় বেড়াতে আসল কিন্তু দুই দুলাভাইয়ের কেউ তাদের সাথে আসল না তবেতো আমাদের জন্য একটু সুবিধাই হয়, তাইনা? দুলাভাই দুজন এলে খরচ বেড়ে যায়, ঝামেলা বেড়ে যায়। আপুরাও সারাক্ষণ তাদের নিয়েই ব্যস্ত থাকে, আমাদের সাথে সুন্দরমতো সময় স্পেন্ড করতে পারে না। বিষয়টা কি একটু ভেবে দেখেছো?”

“কি আবোল তাবোল ভাবছিস? আমার দুই জামাই ছাড়া মেয়েদেরকেতো আমি ভাবতেই পারি না! ওরা মেয়েদের সাথে আছে বলেই না আমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারি। কি সব আবোল তাবোল কথা বলিস।আমার জামাইরা আমার ঝামেলা হবে কেন? সবাই মিলে আসে বলেইতো সে সময়গুলো বড় আনন্দের হয়। আর খরচের চিন্তা তুই কেন করছিস? ওগুলো তোর চিন্তার বিষয় না। যা বলছিস আমার কাছে, তা আর অন্য কাউকেই কখনও বলিস না। গাধা ছেলে একটা।”

“তুমি তোমার জামাইদের একটু বেশিই ভালোবাসো। জামাই ছাড়া আর কিছু বুঝতে চাও না। অন্য শশুররা নিশ্চয়ই তোমার মতো না।”

“বাবারে এখন বুঝবি না, বড় হ, এরপর মেয়ের বাপ হ।তখন বুঝবি। জামাইরা ভালো থাকলে আমার মেয়েগুলাও যে ভালো থাকে।”

“তারা আমাদের বাসায় আসলে তুমি একটু বেশিই খুশি হও। তারা জামাই তাই বলে কি এত খুশি হতে হবে?”

“ব্যাপারটা আসলে তেমন না। বিষয়টা হল অন্য কিছু। জামাইসহ যখন মেয়েরা আসে তখন আমার মেয়েদের পরিপূর্ণ পরিবারটা আমার চোখের সামনে থাকে, আমার মনটা শান্তিতে ভরে যায় তখণ। এই আনন্দ তোকে বোঝাতে পারব না।”

আব্বু তুমিও কারউ মেয়ের জামাই, তারাও কিন্তু তার মেয়ের পুরো পরিবার একসাথে দেখার তৃপ্তি পাওয়ার আশায় থাকে। আমার নানা কিন্তু একপ্রকার এই ক্ষুধা বুকে নিয়েই দুনিয়া ছেড়েছেন।

“তিনি কষ্ট পেয়েছেন তার ছোট মেয়ের জন্য —–”

“আব্বু, তুমি কিন্তু তার বড় জামাই ছিলা, তুমি কি তাকে সেই সুখ দিয়েছো যেই সুখের ঢেঁকুর তোলো তুমি প্রতিবছর?”

“তোর মায়ের সাথে——–”

“আহা আব্বু, এখানে আম্মুর কথা আসছে না। তোমার কি মনে হয় আপারা দুলাভাইদের একেবারে হান্ড্রেড পার্সেন্ট পারফেক্ট মনমতো হয়েছেন? দুলাভাই আর আপুদের মধ্যে ঝগড়া মনমালিন্য হয় না? হয়, অনেক হয়। কিন্তু তারপরও তারা শশুর শাশুড়ির হক আদায় করে। কিন্তু তুমি তা কোনদিনও করো নাই। আর এখনও সময় আছে কিন্তু তা করতে চাও না। তুমি কি একবার ভেবে দেখেছো প্রকৃতি যদি শোধ নেয়, যদি তোমার জামাইরা হঠাৎ করেই তোমার মতো আচরন করা শুরু করে তবে তোমার কেমন লাগবে?”

নাজমুল সাহেব চুপ হয়ে গেলেন। ছেলে আজ তাকে কোন কথা বলার সুযোগ দিলো না। মুখ আটকে রেখে তার ভুলগুলো তুলে ধরল। প্রকৃতির শোধকে সে খুব ভয় পায়। সে জানে প্রকৃতি তার শোধ নিতে কাউকেই ছাড়ে না। আর ভাবতে পারলেন না। হঠাৎ করেই একটু নড়েচড়ে বসলেন। একটু গলা খেখালি দিয়ে বললেন “তোকে কি তোর মা পাঠিয়েছেন?”

“হা হা হা, আম্মুর এত সাহস কই, তোমাকে এত কথা বলতে আমাকে পাঠাবে? আমিই আসলাম, এখন একটু বড় হয়েছি, সবটা চোখে দেখি। খুব খারাপ লাগে যখন আম্মু নানার বাড়ি যায় আর নানি জিজ্ঞেস করে ” কিরে জামাই এলো না?”
আম্মু তখন মুখটা কালো করে থাকে। আর নানির মুখটা মলিন হয়ে যায়। হয়তো নানার আত্মাও তখন খুব কষ্ট পায়।”

“তোরা কবে যাবি? ”

“দেখি কবে তাদের প্রোগ্রাম সেট করে, মামারাতো এখনও জানায় নাই। হয়তো আম্মুকে বলছে আমি জানি না।”

“শুধু কি এই কথাই বলতে এসেছিলি? ”

“হুমম, তুমি ব্যস্ত। কাজ কর। আমি যাই। তোমার অনেক সময় নষ্ট করলাম।” বলে উঠে গেল হিমেল। নাজমুল সাহেব আর পিছু ডাকলেন না ছেলের। চুপচাপ ছেলের কথাগুলো চিন্তা করতে লাগলেন।

রাতে ডিনারে বসে খাবারের অপেক্ষা করছিল হিমেল।তখনই ওর আব্বু এসে বসলেন টেবিলে।
রেহেনা বেগম খাবার সার্ভ করছিলেন হঠাৎ করেই নাজমুল সাহেব বলে উঠলেন

“শশুর আব্বার মৃত্যু বার্ষিকীর প্রোগ্রামটা কবে ঠিক হয়েছে তা কি তুমি জানো?”
স্বামীর মুখে এই কথা শুনে রেহেনা বেগম বিস্মিত হলেন। এত বছরে কোনদিন জানতে চাননি এ বিষয়ে, তার কোন আগ্রহই ছিলো না এমনটাই জানেন রেহেনা বেগম। একরাশ বিস্ময় চোখেমুখে মেখেই উত্তর দিলেন।
“সামনের মাসের প্রথম শুক্রবার। ”

“ঠিক আছে হিমেল আমাদের তিনজনের জন্যই ট্রেনের কেবিন বুকিং দিস। একটু আগেই দিস, না হলে পরে পাবি না। শুক্রবারকে টার্গেট করে সবাই বাড়ি যায় তাই চাপটা বেশি থাকে।”

“তুমি যাবে? সত্যি বলছো তুমি যাবে?” রেহেনা বেগম যেনো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আনন্দে চোখমুখ জ্বলজ্বল করছে।

“হুমম যাবো। তুমি সবার জন্য সাথে আম্মার জন্যও কাপড়চোপড় কিনে নিও। আর ওদেরকে বলো দোয়া মহফিলের খরচে যেনো তোমাকেও ভাগিদারী রাখেন। তুমি শশুর আব্বার বড় সন্তান, তোমারওতো একটা দায়িত্ব থাকে এখানে কন্ট্রিবিউশান করার।”

রেহেনা বেগম আর নিতে পারছিলেন না। খাবার প্লেটে তার চোখের পানি টপটপ করে পড়তে লাগল। হিমেল চুপচাপ দেখছে কিন্তু আম্মুকে কাঁদতেও বারন করল না। পরতে পরতে জমতে জমতে মেঘ যে এখন অনেক ভারী হয়ে গেছে। এখন ঝরে পড়াই শ্রেয়।
নাজমুল সাহেবও আর কোন কথা বললেন না। চুপচাপ খাওয়া চালিয়ে গেলেন। আজ আর রেহেনাকে কারনে আকারনে ধমক দিতেও ইচ্ছে করল না তার।

যাওয়ার সময় যখন ঘনিয়ে এল তখন হিমেল এসে রেহেনা বেগমের কাছে এসে বসল।

“কিরে কিছু বলবি?”

“হুমম বলব, একটা সমস্যা হয়েগেল। আব্বুকে মানা করে দাও, এবার মনে হয় তোমার যাওয়াটা ঠিক হবে না।”

“কি যা তা বলছিস, মাথা ঠিক আছে তোর? এই প্রথম তোর আব্বু যেতে চাইলো আর আমি তাকে মানা করবো? অসম্ভব, কখনোই না।”

“কিন্তু এবার যে ছোট খালামনির যাওয়ার পালা। তারাতো শুনলাম সব রেডি হয়ে গেছে। ট্রেনের টিকেটও করে ফেলছে।”

” ওর যাওয়া ও যাবে, আমার যাওয়া আমি যাবো। সমস্যা কি? ”

“সমস্যা কি তাতো আর আমি জানি না? সেটা তুমি জানো। তবে সেখানে গিয়ে আব্বুর সামনে নানির সামনে তুমি খালামনির সাথে ঝগড়া করবে জিনিসটা একটু কেমন জানি হয়ে যাবে না?”

“আমি ওর সাথে কোন কথাই বলবো না। তাহলেই হল। কিন্তু তোর আব্বুকে নিয়ে আমি যাব। আম্মা অনেক খুশি হবেন। আব্বা বেঁচে থাকতে তো আর যেতো না। এখন বুঝি আব্বার আত্মাও খুশি হবে ওকে পেয়ে।” বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন তিনি। হিমেল আর কোন কথা বাড়ালো না যেটুকু দরকার ছিল ততটুকু করা শেষ। তাই উঠে নিজের রুমে চলে গেল প্যাকিং করতে।

কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের বিশ্রামাগারে ঢুকতেই চোখ পড়ল খালামনির দিকে লাবন্যের। সাথে সাথে একটা সালাম দিয়ে চোখ নামিয়ে নিল। মাথা নিচু করে ব্যাগগুলো গুছিয়ে একটা কোনায় বসল। রৌশন ঢুকেই দৌড়ে ছুটে গেল রেহেনার দিকে।
“আসসালামু আলাইকুম খালামনি, কেমন আছো তুমি?”

“ওয়ালাইকুম আস সালাম, ভালো আছি তুই কেমন আছিস? বেশ বড় হয়ে গেছিস দেখছি?”

“খালামনি তুমিতো কখনও আমাদের বাসায় আসোই না, তাই তোমার কাছে মনে হচ্ছে আমি বড় হয়ে গেছি। আসলে তেমন একটা বড় হইনি।” কথাটা বলে একটা হাসি দিল।

রেশমা নাজমুল সাহেবকে দেখে সালাম দিল। নাজমুল সাহেবও সালামের উত্তর দিল। কিছুক্ষণ পর লিখন ঢুকল ভিতরে। যতটুকু সৌজন্যতা না দেখালেই না নাজমুল সাহেব ততটুকু দেখালান। কুশল বিনিময় করেই নিজের মোবাইলে মনোযোগ স্থির করলেন। রেহেনা বেগম চুপচাপ বসে আছে। কোনরকম সিনক্রিয়েট করতে চাচ্ছেন না। আশেপাশে অন্য যাত্রীরাও বসে আছেন। কেউ যাতে কিছু না বোঝে তাই নিজেকে নিউজ পেপারে আবৃত করে রাখলেন।

ট্রেন আসতেই হিমেল উঠে লাগেজ নিয়ে আস্তে আস্তে বের হয়ে এল আর ওর পিছনে পিছনে লাবন্য, রৌশনও চলে আসল।

ট্রেনে উঠে বসার সময় খেয়াল করল দুই পরিবারের সিটগুলো সব পাশাপাশি। রেহেনা বেগম একটু ফিসফিস করে হিমেলকে জিজ্ঞেস করল
“এসব তুই করেছিস,তাই না? ঝগড়াঝাটি একটা না বাঁধালেই না? আমি চাইছি দূরে দূরে থাকতে আর তুই এই সব আকাম করে বসে আছিস।”

হিমেল ইচ্ছে করেই কোন উত্তর দিল না। শুধু একটু মুখ টিপে হাসল। লাবন্যদের ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে লিখন ফিরে আসল। ফিরার সময় আবার নাজমুল সাহেবের সাথে সৌজন্যে আলাপচারিতা সেরে গেল। হিমেল ওর খালুজিকে বলেদিল কোন চিন্তা না করতে। ও সবাইকে দেখে রাখবে তাও বলে দিল। তখন অবশ্য রেহেনা বেগম একটু চোখ গরম করে তাকালো ছেলের দিকে কিন্তু ছেলে তা একে বারেই পাত্তা দিলো না।

ট্রেন ছুটে চলল রাতের অন্ধকার ভেদ করে লোকারন্য ছেড়ে গন্তব্যের উদ্দেশে। সবাই চুপচাপ শুধু রৌশন একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে আর তার উত্তর দিয়ে যাচ্ছে কখনও লাবন্য আবার কখনও হিমেল।

একটা সময় রৌশন ঘুমিয়ে পড়ল। লাবন্যেরও ঘুম পাচ্ছে, চোখ মেলে রাখতে পারছে না। তাই চোখ বন্ধ করে রাখল। নাজমুল সাহেবও ঘুম।একটুপরই নাক ডাকার শব্দ শুরু হল। হিমেল লাবন্যের ঠিক উল্টা পাশে বসে আছে ওর মায়ের পাশের সিটে। ইয়ারফোন কানে দিয়ে গান শুনছে আর একটু পরপর লাবন্যকে দেখছে। হঠাৎ খেয়াল করল রেশমা ফ্লাক্স থেকে চা ঢেলে রেহেনা বেগমের দিকে এগিয়ে দিল। হিমেল সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলল। তারা দুই বোন কি করে তা দেখার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নাই ওর। একটুপর শুনতে পেলো রেশমার কন্ঠ

“আপা নাও না চা’টা। গরম আছে এখনও, তোমার ভালো লাগবে।”
এরপর আর কোন শব্দ নাই, নাই কো উত্তর। এরপর রেশমা মনে হল কাপটা ফিরিয়ে নিল কোন কথা না বলে।
হিমেল চিন্তা করতে লাগল এরপর খালামনির আর কি পদক্ষেপ হতে পারে। কিন্তু তা আর জানতে পারল না ঘুমিয়ে পড়ল কখন তা টেরই পেলো না।

যখন ঘুম ভাঙল তখন দেখল সবাই ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত। হিমেল ঝট করে দাঁড়িয়ে গেল রেশমাকে সাহায্য করতে। খেয়াল করল নাজমুল সাহেব ওর মায়ের লাগেজ উপর থেকে নামিয়ে দিয়েছে। আর রেহানা বেগম নিজের চুল আঁচড়ে একটু গোছগাছ করে নিচ্ছেন প্রতিবারের মতো। বাড়িতে যখন ঢুকেন তখন বেশ পরিপাটি হয়েই যান। সারা শরীরে এক ধরনের আভিজাত্যের ছাপ ছড়িয়ে রাখেন তিনি। সেদিক থেকে রেশমাকে মনে হল একটু অগোছালো। চোখ মুখ দেখে মনে হল ও ঘুমায় নেই। বরং কেঁদেছে যে তা ফুটে উঠেছে। হিমেল এগিয়ে এসে লাগেজ দুইটা নামাতে নামাতে বলল
“এত অল্পতে কেঁদে চোখ ফুলিয়েছো খালামনি? আরও স্ট্রং হতে হবে এই মরিচা দূর করতে।”
হিমেলের কথা শুনে রেশমা আর কোন উত্তর দিলো না। গায়ের ওড়নাটা একটু ঝেরে নিয়ে আবার গায়ে পরল। লাবন্য চুপচাপ সব দেখছে কিন্তু মুখ খুলছে না রেহেনার মুখোমুখি হয়েও কোন কথা বলেনি। সাইড ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে বসতেই রেশমা একটা স্কার্ফ এগিয়ে দিয়ে বলল ” চুলগুলো গুছিয়ে এটা গলায় ঝুলিয়েনে। বাড়ির মানুষরা এভাবে গেলে বাজে মন্তব্য করবে।”

অন্য সময় হলে নির্ঘাত লাবন্য গোয়ার্তমি করতো, কিন্তু কেনজানি ও তেমন কিছুই বলল না। চুলগুলো একটা ঝুঁটি করে স্কার্ফটা গলায় ঝুলিয়ে নামার জন্য প্রস্তুত হল। হঠাৎ করেই লাবন্যের এমন পরিবর্তন রেশমার মনেও দাগ কাটে। এমন ছটফটা মেয়েটাও ভালোবাসার মায়াজালে আটকে কেমন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে ভিতরে ভিতরে। এই মেয়ের জন্য হলেও ওকে যা করতে হয় ও তাই করতে প্রস্তুত। এটাই মনে মনে ঠিক করে নিল।

চলবে।

https://www.facebook.com/groups/Anyaprokash/permalink/1301711177010573/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here