#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ১৯)
সায়লা সুলতানা লাকী
দরজাটা আটকিয়ে লাবন্য ওর মায়ের আলমারিটা খুলল। ভেতর থেকে একটা ফাইল বের করে আবার আলমারির দরজাটা আটকালো।
লিখন রুমের দরজা আটকানোর শব্দতেই বেশ অবাক হল তাই কোন কিছু না বলে লাবন্যের কাজ কর্ম চুপচাপ দেখতে লাগল। কিন্তু হাতে ফাইল দেখে আর চুপ থাকতে পারল না।
“এটা কি? আগেতো কখনও দেখেনি এই ফাইল। কোথায় পেলি?”
“বলব বলেইতো বের করেছি, এত তাড়া কিসের? অপেক্ষা কর।বলছিতো!”
“এখনই বলা দরকার? বাহিরে…….”
“হুমম, এখনই বলতে হবে, বাহিরে সব জাহান্নামে যাক তা দিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নাই।”
“আচ্ছা বল”
“সেদিন আসলে কি হয়েছিল?”
“কেনদিন?”
“যে রাতে আম্মু মারা যায়।”
“মানে?”
“মানে রাতে কি হয়েছিল তাই আমি জানতে চাচ্ছি, তুমি বুঝতেছো না?” কথাটা বলতে গিয়ে একটু উত্তেজিত হয়ে গেল।
“আমার সাথে চিৎকার করছিস কেন? তুই জানিস না ? ঘুমের মধ্যে তোর মা স্ট্রোক করেছিল…”
“হুমম এসবতো সাজানো, আসল ঘটনাটা বল?
আম্মুর মৃত্যুটা কি স্বাভাবিক ছিলো নাকি অস্বাভাবিক ছিল? কারো হাত ছিলো কি এই মৃত্যুতে?”
“দেখ লাবু তুই একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করছিস? ”
“সত্য সামনে আসলে সবাই এমন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পাশাপাশি শুয়েছিলা, আম্মু বুকের ব্যথায় কাতরাচ্ছিলো, শ্বাসকষ্টে হাত পা নাড়ছিলো তুমি বুঝি তা টের পাওনাই? তাই কি সবাইকে বিশ্বাস করাতে চাও? সবাই এত বোকা? আমি তো নিজেকে বোকা ভাবি না?”
“এক চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব বেয়াদব মেয়ে। খুব বেশি বেড়ে গেছিস ইদানিং। যা মুখে আসে তাই বলতে শুরু করেছিস। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছিস না কি?”
“ভুলেও এই কাজ করো না। আমাকে জন্ম দিছো তাই এতটুকু ফেবারতো করতেই পারি তোমার জন্য । তাই বলছি আমার গায়ে হাত তোলার সাহসও করো না। দেখোনাই এই রুমে ঢোকার আগে মোবাইলে কাজ সেরে এসেছি। বোঝোনাই কিছু? থানায় জি ডি আমি আগেই করেছি। একেবারে নিজের মা সহ জেল হাজতে গিয়ে পৌছাতে সময় লাগবে না একটুও! চিন্তা করোতো দৃশ্যটা তুমি আর তোমার মা চৌদ্দ শিকের ভেতরে আর তোমার নতুন সঙ্গী শিকের বাহিরে বসে আসে। কি দারুন একটা রাত কাটাবা ভাবোতো?”
“মানে? লাবু তুই এসব কি বলছিস? আমার মেয়ে হয়ে তুই এইসব করতে পারলি? ছি ছি ছি কি লজ্জা।”
“হুমম, তোমারই মেয়ে, তাতে কোন সন্দেহ এনে আমার আম্মুর চরিত্রকে কলংকিত করো না। আর তোমার মেয়ে বলেই নিজের ভালোটা বুঝতে শিখেছি। আম্মুর মতো হতে পারিনি। তোমার মতো ধূর্ত হয়েছি বলতে পারো।তাইতো অনেক আগেই জিডি করেছি থানায়, কারন তুমি যেকোন সময় আমাকে আর রুশকে মেরে ফেলতে পারো। যেমনটা আমাদের আম্মুকে মেরেছো।”
“ইন্না-লিল্লাহ, আমি রেশমাকে মেরেছি? কি বলছিস এগুলো?”
“হুমম তুমিই হত্যা করেছো আমার মা’কে, তবে তুমি একা না তোমার মা-ও সাথে ছিল। তোমার বোন আর বোন জামাইরা পেছন থেকে বুদ্ধি জুগিয়েছে।এমনভাবেই কেইসটা সাঁজানো হয়েছে। ”
“কেইস?”
“হুমম, থানা থেকে এখনই পুলিশ আসবে তোমাদের নিয়ে যাবে। রেশমা হত্যা মামলার আসামি তোমরা।”
“অসম্ভব, আমি কোনভাবেই মানতে পারছি না, তুই নিজে এগুলো করেছিস? নাকি কেউ বুদ্ধি দিছে? আমি রেশমাকে মেরেছি তা মোটেও সত্য না।”
“কোর্টে এসব প্রমান করতে কয় বছর লাগবে তা ঠিক করে বলতে পারব না। ততদিন ঝুলে থাকো। ধরে নাও এটা রেশমার সাথে প্রতারনার শাস্তি। ”
“লাবন্য তুই এসব করতে পারিস না মা। তুই কখন কীভাবে এমন হলি? মাগো একটু শান্ত হ, বিষয়টা আগে একটু বোঝার চেষ্টা কর। বুঝতে পারছি আমার উপর প্রচন্ড রাগ করেছিস।আজ আমি যা করেছি সব তোদের ভালোর জন্য। তোরা এখন বুঝতে পারছিস না। কিন্তু এটাই এক মাত্র পথ সংসারটাকে আবার আগের মতো সচল রাখার।”
“হুমম জেলে বসে বসে মা ছেলে মিলে আরও কিছু পরিকল্পনা করে সব সচল করার। অসুবিধা নাই। ”
“মারে কেন তুই এসব করছিস?”
“কারন আমি আর রুশ আমাদের ন্যয অধিকার চাই। জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমাদের মতো বাঁচতে চাই।”
“আমি বেঁচে থাকতে তোদের জীবনে অনিরাপত্তার কথা আসছে কেন? নিরাপত্তাহীনতার কি দেখলি তুই?”
“তুমি এখন আমাদের কাছে…….
থাক এসব কথা বলে লাভ নেই এখন আসল কথা বলি। তোমাকে চিনতে রেশমা ভুল করেছিল, হিমেলও করেছে, আমিও করেছি কিন্তু এডভোকেট লায়লা বশির করেননি। তিনি ঠিক যেমনটা বলেছিলেন তুমি ঠিক তেমনটাই করেছো। কি আজব না বলোতো?”
“উনি আবার কে? এসব কোর্ট কাচারি মামলায় জড়াইস না মা। এগুলা ভালো জিনিস না।”
“ও কে ডান, তবে সওদা হোক তোমার আর আমাদের মাঝে। কি রাজি? ভেবে দেখো সওদা করবে নাকি জেলের ভেতর তুমি আর বাহিরে তোমার সঙ্গী বসে বসে এ সুইট নাইট যাপন করবে?”
“বাবাকে এসব বলতে তোর একটুও বাঁধছে না?লাবন্য এসবের মধ্যে ঝুমুরকে টানছিস কেন? আম্মাই বা কি করছে, বলতো?”
“সেসব জেনে আমার লাভ কি? ওসব তোমার ব্যাপার। এখন জলদি বল। আমার সাথে সওদা করবে নাকি নিজে নিজের মা আর সঙ্গী নিয়ে… ”
“কি সওদা করতে চাস বাপের সাথে, শুনিতো?”
“এই পেপারগুলো সাইন করে দাও। ”
“কিসের পেপার?”
“আমার মায়ের হাতের সাজানো বাসাটা আমাদের দুই ভাইবোনের নামে দিয়ে দিচ্ছো আর আমাদের মাসের খরচ বাবদ প্রতিমাসে একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট মাসের শুরুতেই আমার একাউন্টে জমা করে দিবে। ব্যাস আপাতত এইএুকুই আর বিশেষ কিছু চাই না।”
“আমার সন্তান হিসেবে আমার সম্পত্তিতো তোদেরই পাওনা। তাহলে সেটা পেতে এত কিছু করার কি দরকার ছিল?”
“তোমার সম্পত্তি নিয়েতো কোন কথা বলছি না। বলছি শুধু মায়ের হাতে গড়া এই ফ্ল্যাটটার কথা। এটা এখন তুমি এখানে বসে সাইন করবে না হলে এডভোকেট আন্টি পুলিশ পাঠাবেন বলছেন।”
কি আশ্চর্য, এসব করিস না লাবন্য, সমাজে মান সম্মান বলে আর কিছু থাকবে না। এতটা নাজেহাল… ”
“আব্বু সময় কম, আন্টি আর্জেন্ট এটাতে সাইন করাতে বলছে। সাইনের পর ছবি তুলে দিলে পরে আন্টি পুলিশকে কল দিয়ে আসতে মানা করবেন।”
“লাবন্য কাজটা কি তুই ঠিক করছিস?”
“আব্বু জলদি কর।”
“আমি এই পেপার না পড়ে সাইন করতে পারব না। সময় লাগবে।”
“পড়, পড়তে দশ মিনিট লাগবে। আমি পঞ্চাশবার পড়ছি তাই আরও কম সময় লাগছে।”
“ফ্ল্যাটের পেপার কোথায় পেলি?”
“আম্মুর ড্রয়ারে ছিল ও গুলো আন্টিকে দিতেই তিনি এতটা উপকার করলেন আমাদের দুই এতিম ভাই বোনের জন্য । যার কেউ নেই তার আল্লাহ আছে। কথাটা পুরোপুরি সত্য। ”
“যদি সাইন না করি…..”
“তাহলে সকালে পেপারে হেড লাইন হবে “অভিজাত এলাকায় গৃহবধু খুন।” ভিতরে বিস্তারিত থাকবে, “অমুক এলাকার বাসিন্দা লিখন প্রেমের ফাঁদে ফেলে রেশমা নামক এক তরুনীকে ঘর ছাড়া করে……. ”
“এতে তোর আর রুশের ভবিষ্যৎ কি হবে তা ভেবেছিস?”
“আমাদের কোন ভবিষ্যৎ নাই। আমরা বর্তমান নিয়ে বাঁচি। তুমি তোমার ভবিষ্যত দেখো। নতুন বৌ নিয়ে জেলে যেতে চাও নাকি…. ”
“লাবন্য?” এবার লিখন জোরে চিৎকার করে উঠল।
“সত্য সবসময়ই তিতা হয়। তুমি ভেবেছিলে তোমার ধমকে আমি ভয় পাবো? না, আমি লাবন্য, আমি রেশমা না। ” কথাটা শেষ করেই ও মোবাইলটা হাতে নিয়ে কল দিতে লাগল।
“কি করছিস? কোন ঝামেলা করিস না। দে সাইন করে দিচ্ছি। তবুও তুই শান্ত থাক। একবার মান সম্মান গেলে আর পাওয়া যাবে না।”
“গুড, নাও এখানে এখানে এখানে সাইন দাও। বলে কলম এগিয়ে দিল। লিখনের সাইন করা হলে পরে। লাবন্য কাগজ গুলোর ছবি তুলে এডভোকেটের আইডিতে পাঠিয়ে দিল।একটু পরেই এডভোকেট কল দিল লাবন্যের মোবাইলে
“আসসালামু আলাইকুম আন্টি”
“গুড জব, মেয়ে, তুমিতো সত্যি সত্যিই অনেক শক্ত। কাজ হয়েছে, এবার তোমার আব্বুকে দাও।”
“জি আন্টি দিচ্ছি, একটু হোল্ড করেন প্লিজ।”
লাবন্য এবার মোবাইলটা লিখনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল
“আমার এডভোকেট আন্টি তোমার সাথে কথা বলবে, নাও কথা বল।”
লিখন কোন উপায় না দেখে মোবাইলটা হাতে নিল।
“হ্যালো”
“হ্যালো, আমি এডভোকেট লায়লা বশির বলছি।”
“জি শুনছি। আপনি আমার মেয়েটার মাথাটা এভাবে নষ্ট করলেন কেন তার কারন বুঝতেছি না।”
“ভালো বলছেন। এখন শুনেন, আমার ক্লায়েন্টের সেফটির জন্য আমি পুলিশ প্রোটেকশন নিতে যাচ্ছি। তার আগে একটু আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি।”
“সবতো আপনি নিজের মতো করেই করেছেন, এখন আবার নতুন করে আমার সাথে কথা বলার কি দরকার পড়ল?”
“হুমম, দরকারতো পড়লই, আফটার অল নিউ মেরিড কাপল আপনারা। সব কিছুর একটা সৌন্দর্য আছে বৈকি! ”
“ফাজলামো রাখেন, কি বলবেন বলেন?”
“এই মুহুর্তে আপনারা আমার ক্লায়েন্টের বাসা ছেড়ে বের হয়ে যাবেন। ঠিক এই মুহুর্তের মধ্যে। আর নয়ত আমি পুলিশ ফোর্স পাঠাতে বাধ্য হব। ভেবে দেখেন পুলিশের ঘাড় ধাক্কায় যাবেন না কি নিজ ইচ্ছায় যাবেন। এখনই যাবেন। বুঝাতে পেরেছি। ”
লিখন কিছুক্ষণ চুপ করে বসল এরপর বলল।
“আমি এখনই যাচ্ছি।” বলে মোবাইলটা লাবন্যের দিকে এগিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। লাবণ্য মোবাইলটা হাতে নিতেই লিখন রুম থেকে বের হয়ে গেল।
লাবন্য আস্তে আস্তে ফাইলটা বুকে নিয়ে রুমের বাহিরে আসল। রৌশন এতক্ষণ রুমের বাহিরেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। ভিতরে কি হচ্ছে তা বুঝতে পারছিল না ভয় ভয় মনে বুয়া খালার হাতটা চেপে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। ওর দাদি নতুন বৌ নিয়ে নিজের রুমে ঢুকেছিল। ওরা কাউকে কিছু বলতে সাহসও পাচ্ছিলো না। একটু পর ওর দাদির চিৎকার কানে আসতে লাগল৷ লাবন্য ভাইকে কাছে টেনে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল।
চোখের সামনে দিয়ে নিজের আব্বুকে তার নতুন বৌ আর মা’কে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে দেখল দুই এতিম ভাইবোন।
যাওয়ার সময় লিখন কোন কথাই বলল না। ব্যাগ লাগেজগুলো টেনে টেনে নিয়ে বের হয়ে গেল শুধু ।
খালা বুয়া দরজাটা লাগিয়ে দিতেই লাবন্য হাউমাউ করে কেঁদে উঠল, বিলাপের সুরে বলতে লাগল
“এ কেমন ভালেবাসা ছিল আম্মু, যার টানে তুমি তোমার সব ছেড়ে এর কাছে চলে এসেছিলে।সেতো তুমি যাওয়ার এক মাস পরই আরেকজন নিয়ে আসল জীবনকে সাজাতে নতুন করে। এ কেমন ভালোবাসা? যদি ভসলোবাসা এমনই হয় তবে এমন ভালোবাসা আমি চাই না। এমন ভালোবাসাকে আমি ঘৃণা করি। কি করে একটা মানুষ এত দ্রুত কারো এত দিনের ত্যাগ, আদর, ভালোবাসা, স্মৃতি ভুলে যেতে পারে? এতই টুনকো বাঁধনে আটকা ছিলো আমার আম্মু? ও আম্মু তুমি চলে গিয়ে ভালো করেছো তুমিতো সার্বক্ষণিক প্রতারিত হচ্ছিলে, আমি বলেছিলাম তখন তুমি মানতে পারোনি। না কি পেরেছিলে কিন্তু আমাকে বুঝতে দাওনি। আম্মু, আম্মুগো আমরা দুই ভাইবোনতো বড় একা হয়ে গেলাম, বড় একা। এত বড় পৃথিবীতে একা একা কীভাবে থাকব? কত যুদ্ধ আছে সামনে তুমি তা বলে যাও।”
লাবন্যের বিলাপে বাসার বাতাস বেশ ভারি হয়ে উঠল। বুয়া খালা পাশে বসে লাবন্যের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো আর একটু পর পর আঁচল দিয়ে নিজের চোখ মুছতে লাগল।
রৌশন হাটুতে মাথা গুঁজে বসে রইল। ঠিক কত রাত পর্যন্ত এভাবে বসে রইল তা জানা নাই।
সকালে মোবাইলের রিংটোনে ঘুম ভাঙল লাবন্যের। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখল আটটা মিসড কল। এর মধ্যে দুই ফুপুর কলও আছে। বড় খালার কল একটা সর্বশেষ হিমেলের কল চারটা। কারো কল ব্যাক করার ইচ্ছে করছিল না। এরই মধ্যে আবার রিং বেজে উঠল। হিমেলের কলটা রিসিভ করল
“হ্যালো।”
“কল রিসিভ করিস না কেন?”
“ঘুমায় ছিলাম।”
“নিজের বাপ দাদিকে ওই রাতে রাস্তায় নামাইয়া নিজে আরামে ঘুমালি কীভাবে?”
“মানে?”
“মানে কি তুই জানিস না? সকালে আম্মু জানালো তুই গতরাতে কি করছোস? কীভাবে এমন করলি? ওই ফ্ল্যাটটাই কি তার কারন?”
“শুধু বাপ দাদির কথা বলছো কেন? আরেকজনের কথা বললা না?”
“আরেকজন মানে?”
“তোমার আইকনতো বিয়ে করছে আবার। গতরাতে নতুন বৌ নিয়া আসছিলো।”
“মানে? কি বলিস এগুলো?”
“হুমম, যা বলি সত্য বলি। আর হ্যা শোনো আমি রেশমা না, তাই ত্যাগ করতে শিখিনি। যা আমার তা ছিনিয়ে নিতে জানি। আমি লাবন্য কথাটা মনে রেখো।”
“সত্যি বলছিস খালুজি বিয়ে করছেন? ”
“হুমম, গতরাতে এসেছিলেন নতুন বৌ নিয়া আমার মায়ের সাজানো গোছানো রুমে বাসর করতে। আমি তা হতে দেইনি। একপ্রকার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিছি। বের করে দিছি আমাদের জীবন থেকে। আমাদের বিশ্বাস থেকে, ভালোবাসা থেকে আমাদের মন থেকে।আমি লাবন্য কখনোই সহ্য করতে পারতাম না যে বিছাবায় আমার মায়ের লাশ পড়ে ছিল সেখানে তার জায়গায় অন্য কেউ……….” বলে কেঁদে ফেলল।
“ভালো করেছিস। আমি হলেও তাই করতাম। কে কি বলল তার চেয়ে বড় আমার মনের শান্তি। আমিও একই কাজ করে মনের শান্তি খুঁজতাম। ”
“শান্তি? শান্তি কোথায়? যেখানে বিশ্বাস হারিয়ে যায় সেখানে শান্তি বলে কেউ থাকে না। ”
“এখন কীভাবে চলবি? ”
“সে চিন্তা কাউকে করতে হবে না। আমরা শিখে নিব। যখন তোমার দরকার ছিলো তখন তোমাকেও পাইনি, কিন্তু তাতে কি? থেমেতো থাকিনি। আমরা পারব পারতেই হবে।” বলে কলটা কেটে দিল।
হিমেল হ্যালো হ্যালো করছিল কিন্তু তা লাবন্যের হৃদয় ছুঁতে পারলো না।
চলবে