মেঘে_ঢাকা_চাঁদ পর্ব ৩৩

0
1009

#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ৩৩)
সায়লা সুলতানা লাকী

সকালে ঘুম ভাঙল একটু দেরিতে। এলার্ম বাজতেই উঠেছিল লাবন্য। এরপর নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলো। ছুটির দিনগুলোতে সকাল সকাল উঠতে একটুও ইচ্ছে করে না। রেশমা থাকতে এই সুবিধাটুকু ভোগ করা খুব কঠিন ছিলো। ছুটির দিনে একগাদা কাজ দিয়ে রাখতো। বিশেষ করে সকালে দাদিকে গোসল করানোর কাজটা দিত বেশি। রেশমার মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন ইচ্ছেমতো ঘুমিয়েছে একেবারে বাঁধাহীন ভাবে । কেউ ডাকাডাকি করার ছিলো না। কিন্তু নানি আসার পর আবার সেই নিয়মে বাঁধা জীবনটাতে আঁটকে গেল ওরা। ছুটির দিনে সকালে ঘুম থেকে উঠে সুরা কাহাফ পড়তে হবে নানির সাথে বসে। প্রথম কয়েকবার একটু কষ্ট হয়েছিল। এখন আর হয় না। নানির পাশে বসার আরেকটা মজা হল, নানি মাঝে মাঝেই অর্থ বলেন। সব তখন গল্পের মতো লাগে ওদের। আজ সকালে নানি ডাকাডাকি করেনি কারনটা বুঝল না। ফ্রেশ হয়ে এসে নিজের চুলে চিরুনি করছিলো তখনই ডোরবেলের শব্দ পেল। একটু পরেই রুশের গলার আওয়াজ পাওয়া গেল। ও খুব এক্সাইটেড বলেই মনে হল লাবন্যর। তাই নিজের রুম থেকে বের হয়ে এল রুশের এক্সাইটমেন্টের কারনটাকে দেখার জন্য। বের হতেই সামনে নানির সাথে দেখা হল। নানি চোখ দিয়ে ইশারা করলেন নেতিবাচক কিছু না বলার জন্য। লাবন্যকে দেখেই রুশ চিৎকার করে ডেকে বলল

“আপু জানো? আজ না আমি আব্বুকে তিনবার বোল্ড আউট করতে পেরেছি। একেবারে স্ট্যাম্প পড়েগেছে বলের ধাক্কায়। আরেকটু হলেতো ভেঙেই ফেলতাম।”
রুশের কথায় খেয়াল করল নতুন স্ট্যাম্প সেটটাকে। এটার জন্য রুশের আবদার ছিলো অনেকদিন ধরেই। ছেলেকে খুশি করতে নিশ্চয়ই এটা কিনে এনেছে ওর আব্বু। রুশের আনন্দ ওর চোখেমুখে ফুটে উঠেছে। হঠাৎ লিখনের কথায় এবার ওর দিকেও নজর গেল।

“তুই যে ছক্কা আর বাউন্ডারি মারলি তাও বল আপুকে। আজকেতো তুই ব্যাটিংও ভালো করেছিস। দেখলি না আশেপাশের ছেলেগুলো তোর দিকে ঘুরে ঘুরে দেখছিলো।”

রুশ একটু লজ্জা পেয়েগেল ওর আব্বুর কথায়। মুখটা কিঞ্চিৎ লাল হয়ে উঠল। মাথা নিচু করে বলল

“আশেপাশের সবাই আমার দিকে তাকাচ্ছিলো না। সবাই তোমার চিৎকার আর উল্লাস দেখছিলো। আমি বুঝতে পেরেছি সবই ।”

লাবন্য আর ওখানে দাঁড়ালো না। নিজের রুমে ফিরে এল। মনটা খুব আনচান করছিলো ওখানটায় দাঁড়িয়ে। বারবার কিছু একটা মিসিং মিসিং লাগছিলো ওর মনে। আবার না কেঁদে ফেলে সেই ভয়ে পালিয়ে এল নিজের রুমে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালো রুশের আনন্দ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।

নাস্তার টেবিলে আর ওর আব্বুকে দেখতে পেলো না। বুঝল সে নিচে চলে গেছে। মনে মনে বলল এটাইতো স্বাভাবিক, এটাই মন থেকে মেনে নিতে হবে।এটাকেই এখন নিয়ম বলে অভ্যস্ত হতে হবে।

বিকেলে হিমেল আসল নানির ঔষধ নিয়ে, সাথে রুশের জন্য এক বক্স চকলেট। লাবন্য হিমেলকে দেখে নিজ থেকে কিছু বলল না। চুপচাপ নানির পাশেই বসে রইল। নানির চুলগুলো আনমনে দেখতে লাগল। ওর আম্মু প্রায় এই চুলের গল্প বলতো। এখনও সব পেকে সাদা হয়নি। মায়ের বর্ননার সাথে মিলাতে কষ্ট হচ্ছে না একটুও।

“কিরে চুল নিয়ে কি থিসিস করবি নাকি?” হিমেল একটু খোঁচা দিয়ে জিজ্ঞেস করল।
“থিসিস করা তোমার কাজ, আমার না।”
“তাহলে এক ধ্যানে কী দেখছিস?”
“কেন আমার দেখা মানা নাকি?”
“চোখ লাগবে, চুল সব পড়ে যাবে। তখন এই ওল্ড লেডিকে দেখতে কেমন লাগবে ভাবতো?”
“তোমার সমস্যা কী? সব কিছুতেই মজা খুঁজো কেন? এটা কোন প্রশ্ন হলো? কি বোঝাতে চাও তুমি? আমার কি কু দৃষ্টি ? ”

“না না জিনিসটা একটু খেয়াল কর, নানুমনির মাথায় কোনো চুল নাই কেমন লাগবে…..”
আর বলতে পারলো নানু ওর কান মলে দিলো জোরে
“ওয়াও ভাইয়া এবার বলো কান মলা খেতে কেমন লাগলো তোমার?” বলে রুশ হিহিহি করে হাসতে লাগল।

“উফফ, দারুন মজারে।”

“মোটেও না, কান জ্বলে অনেক ।”
“একটুও না তুই এখন খেয়ে দেখ কত মজা!”
“নানুমনি তুমি আমাকে সেদিন দিলে তখনতো জ্বলেছিলো, কিন্তু এখন ভাইয়ারটা মজার হলো কীভাবে? ” রুশ একটু রাগ হয়ে জিজ্ঞেস করল।

“ইশশ কী পাগল ছাগলের পাল্লায় যে পড়লাম! এই হিমু তুই একটু বাঁদরামিটা কম করতো! এখন এই পুচ্চিটারে উলায় দিচ্ছিস আমার পিছে। ”
“নানু আমি পিচ্চি না আমি আব্বুকে বোল্ড করতে পারি, সিক্সও মারতে পারি।”

লাবন্য চুপ করে বসে ওদের দুষ্টমি দেখছিলো কিন্তু কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো না। মনে হতে লাগল এই সংসারের উপর যে মেঘ জমে ছিল এতদিন ধরে তা একটু একটু করে কাটতে শুরু করেছে বুঝি। হঠাৎ করেই হিমেলের কথায় ধ্যান ফিরল- ও বলে উঠল
“চল তোকে আজ রিকশা ভ্রমণ করিয়ে আনি।বোনাসও পাবি। ফুচকা খাওয়াবো পেটচুক্তি করে।”
“পারমিশন পেয়েছো?”
“নানুমনি মানা করবে না। কি করবা?” বলে নানুর দিকে তাকালো হিমেল।
“উঁহু, আমি নানির কথা বলিনি।”
“তাহলে?”
“একটু সময় আমার সাথে ঘুরে ফিরতে হবে যে নীড়ে, সেখানে তখন জায়গা পাবেতো? ঢুকতে দিবেতো?”

“সেটাতো তোকে ভাবতে হবে না।সে ভাবনাতো সবসময় আমারই ছিল, তাই না?”
“আমার জন্য কেউ কষ্ট পাক তা আর আমি চাই না। মা বড় অমূল্য রতন। যার নাই সেই শুধু বোঝে।থাকতে যতন কর। তার কথা মেনে চলো।”

“তারমানে কী? আমি বুঝি আম্মুর যত্ন নেই না? কি আবোল তাবোল বলছিস?”

” জানো! আমরা মেয়েরা বড় অসহায় হই। স্বামী বল, সংসার বল, ভালোবাসা বল সবই নিছক মায়ার খেলা মাত্র । এসব খেলা যে সব ফাঁকির খেলা তা বুঝতে পেরেও অনেক নারী তা মুখ বুজে মেনে নিয়ে যুগের পর যুগ এই মায়াজালে নিজেকে আটকে রাখে কারন সে যে ততদিনে মা হয়ে যায়। একজন মা তার সবকিছু বিসর্জন দেয় শুধু মাত্র সন্তানের জন্য। সংসারে শুধু মাত্র ওই একটা অবলম্বনকে কেন্দ্র করেই তার বসবাস। সেই অবলম্বনটা কোন মায়ের জন্য শুধু মাত্র আমার কারনে দূর হয়ে যাক তা আমি চাই না। আমার মা’কে দিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। ভালোবাসা, স্বামী, সংসার এসব শুধু মাত্র একটা ধাঁধা। খালামনিকে তুমি আমার জন্য কখনও কষ্ট দিও না। তার মনে কোনো কষ্ট দিয়ে সুখ পাবে না। যদি কষ্ট দাও তবে তা হবে তোমার জন্য ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। ” কথাটা বলে লাবন্য আর বসল না চুপচাপ উঠে চলে গেল নিজের রুমে।

ওর নানি হিমেলের দিকে তাকাল। আর হিমেলও ওর নানুমনির দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বলল
“এবার বুঝলা ও কেন শুধু আমারই বন্য? ইয়েস, সি ইজ মাই, অনলি মাই বন্য।”

“কথাগুলো বুঝেছিস?”
“ওকে যারা স্বার্থপর বলে, আমার না তাদের জন্য খুব মায়া হয়। ইচ্ছে করে গলা চড়িয়ে চিৎকার করে বলি, ও স্বার্থপর না, ওকে বুঝতে হলে মন লাগবে। ও একেবারেই অন্যরকম। ও শুধু বন্য, সবকিছু অগোছালো, সবকিছু এলোমেলো, কিন্তু তাজা একেবারেই ফ্রেশ, নির্ভেজাল। ”

“হইছে, আর বকবক করতে হবে না। এমন করে বললেই মনে করিস না আমি গলে যাব। আমি কিন্তু অত সহজ না।” বলে হাসতে হাসতে উঠে গেলেন তিনি নাস্তা রেডি করতে।

রাতে আবার লিখন উপরে আসল অনেক বাজার নিয়ে। বুয়া ব্যস্ত হয়ে গেল বাজার গোছগাছ করতে। এরই মধ্যে লিখন নিজের রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আরাম করে বুয়াকে ডেকে বলল
“বুয়া একটু যাওতো দোতলায়, গরম গরম পিঠা বানাচ্ছে বাসায়। একটু উপরে নিয়ে আসো। আমরা সবাই মিলে মজা করে খাই।”

কথাটা লাবন্যের কানে যেতেই ওর মেজাজ হঠাৎ করেই গরম হয়ে উঠলো। মনে মনে বলল “আব্বুর আসলে মতলবটা কি? সে আসলে কি চাচ্ছে?” একটু ভেবেই আবার বলে উঠল। “অসম্ভব এসব কখনওই এলাউ করা যাবে না। শুরুতেই থামাতে হবে নয়তো পরে সমস্যা সৃষ্টি হবে।” ভেবেই দৌড়ে বের হল রুম থেকে যাতে বুয়া বের হতে না পারে।

“বুয়াখালা দাঁড়াও দাঁড়াও, তুমি কোথাও যাবা না। তুমি যাও কিচেনে যাও।”

লাবন্যের নানি নিজের রুম থেকে সব শুনছিলেন। বাবা মেয়ের মাঝে কোন কথা বলাটা সমুচিত ভাবলেন না। তাই নিজের রুমেই বসে থাকলেন।
লিখন মেয়ের এমন প্রতিক্রিয়া আশা করেনি। তাই একটু অবাক হয়েই বলল
“লাবু তোর প্রিয় পোয়া পিঠা বানাচ্ছে। গরম গরম খাবি আনুক না, মানা করছিস কেন?”

“আব্বু তোমাকে কিছু কথা একটু ক্লিয়ার করে বলে নেই। এতে মনে হয় আমাদের সবার জন্যই ভালো হবে। নিচ তলায় যারা আছেন তারা তোমার লোক। তোমার আপনজন। তারা আমাদের কেউ না। দয়া করে তুমি কোনদিনও তাদেরকে আমাদের লোক ভাববে না। এক করতেও চাইবে না। তাহলে আমরা তোমাকেও ত্যাগ করতে কষ্ট পাবো না। এখানে যারা থাকি তারা কেউ বড় মনের মানুষ না। এখানে একজন মা থাকেন সে কোনদিনও তার মেয়ের সতিনের হাতের পিঠা মজা করে খেতে পারবেন না। জোর করেও যদি মুখে পুড়ে দাও তিনি তা কখনওই গিলতে পারবেন না। কারন তার মনে হবে সে তার মেয়ের ভালোবাসার সাথে হওয়া প্রতারণাকে গিলছে। সেইম বিষয়টা এক মেয়ের ক্ষেত্রেও তার মায়ের…. ”
“জিনিসটা এভাবে কেন দেখছিস?”
“তোমার ইচ্ছে তুমি যেভাবে খুশি সেভাবে দেখতে পারো। আমি এভাবেই দেখছি, দেখবো ঠিক আমার মতো করে। ”
“আমি…”
“আব্বু আমার কথা শেষ হয়নাই, রুশ আর আমি যেনো কোনোদিনও তোমার ওয়াইফের ছায়াটা না মারাই তার জন্য যা করতে হবে তাই করব। ওই ছায়াটা যখনই দেখব তখনই তোমার প্রতি থাকা আমাদের সব শ্রদ্ধা ভক্তি উবে যাবে। তখন তোমার মুখটার উপর এক বিশ্বাস ঘাতকের, এক প্রতারকের ছবিই শুধু ভাসবে। আমরা আমাদের পিতাকে সেরুপে চাই না। এখন বাকিটা তোমার ইচ্ছা। তুমি কি চাও।”

লিখন আর কোনো কথা না বলে চুপ হয়ে গেল। লাবন্য আবার নিজের রুমে চলে গেল।

সকালে ঘুম থেকে উঠে শুরু হল হুড়োহুড়ি রেডি হওয়ার জন্য। লাবন্য ব্যাগটা নিয়ে বের হয়ে টেবিলে আসল নাস্তা করতে। রুশ তখন নাস্তা করছিলো। নানি টিফিন গুছিয়ে দিতে গিয়ে বললেন
“রুশ তুই কিন্তু পানি খাস না, এটা কিন্তু খুব খারাপ কথা।এরপর ওয়াটার পটে পানি পেলে তোকে পিঠাবো বলে দিলাম।”

“আগেই বলে দিলা? এখনতো রুশ লাস্ট পিরিয়ডে বোতলের সব পানি ফেলে তারপর তোমার সামনে আসবে।”
“আপু আমি মোটেও এমন না।”
লাবন্য আর কিছু বলতে পারল না ওর মোবাইলটা বেজে উঠল। দেখল ওর আব্বুর নাম্বার, অনেকদিন পর তার কল আসল এই নাম্বারে। কি করবে ভাবতে ভাবতেই রুশ থাবা মেরে মোবাইলটা হাতে নিয়ে কল রিসিভ করল

“হুমম আব্বু, আমরা আসছি। তুমি দাঁড়াও।” বলে কলটা কেটে দিল।
লাবন্য যা বোঝার তা বুঝল তাই কিছু আর বলল না। জলদি খাওয়া শেষ করে তিনজন বের হয়ে এল।

রুশ আর লাবন্য লাফিয়ে লাফিয়ে আগে নামতে লাগল। নিচ তলায় আসতেই শুনতে পেল একরাম সাহেবের কন্ঠস্বর, তিনি ওর আব্বুর সাথে কথা বলছেন

“হ্যালো লিখন ভাই, কেমন আছেন?” বলে হেহেহে করে হাসলেন এর পর আবার বললেন “আরে ভাই এখনতো আপনি সুপার ভালো থাকবেন তাতো জানিই। বুঝলেন ভাই ভাগ্যবানের বৌ মরে। কথাটা কিন্তু এমনি এমনি হয় নাই। তা নতুন সংসার নিয়ে নাকি এখানেই চলে এলেন?”

একরাম সাহেবের কথাটা শুনে লিখন কিছুটা লজ্জিত হল।কি বলবে বুঝতে পারছিলো না কারন পিছনেই লাবন্য রুশসহ ওর শাশুড়িও এদিকে এগিয়ে আসছেন। ইতস্ততবোধ করছে দেখে মনে হল একরাম সাহেব আরও মজা পাচ্ছিলেন।একেবারে সব দাঁত বের করে হাসির জোর যেনো আরও বাড়িয়ে দিলেন।

“জি আংকেল, আব্বু চলে আসছেন একেবারে আপনার ডোর টু ডোর প্রতিবেশী হয়ে শুধু মাত্র আপনার মেয়েটার খোঁজ খবর রাখতে। সামাজিক একটা দায়বদ্ধতা আছে না? আপনি তার অনুপস্থিতিতে তার মেয়ের খোঁজ খবর রাখতে চেয়েছিলেন, এটা শুনে আর দূরে থাকতে পারলেন না। ছুটে আসলেন প্রতিদান দিতে। এখন থেকে আব্বু আপনার মেয়েরও সব ধরনের খোঁজ খবর রাখবেন। আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। ওই যে বলে না একেবারে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাতে পারেন।” কথাটা বলে লাবন্য হিহিহি করে হেসে উঠল।
লিখন এমন এক পরিস্থিতিতে পড়বে তা বুঝতে পারে নাই। দিকপাশ না ভেবেই রুশের ব্যাগটা নিয়ে উবারে উঠে গেল। নানি খুব কষ্টে হাসি চেপে রেখে পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেন। লাবন্য আর রুশ “বাই বাই আংকেল” বলতে বলতে ক্যাবে উঠে গেল।
কিছুটা অপ্রত্যাশিত ধাক্কা খেয়ে একরাম সাহেব মুর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে রইল একা।

লাবন্য বারবার খেয়াল করছে লিখন সামনে বসে লুকিং গ্লাসে লাবন্যকে দেখছে। কেমন জানি খুব অস্বস্তি লাগছিলো কিন্তু ইচ্ছে করেই নিজ থেকে কিছু বলছিলো না। পাশে বসে ওর নানি আড় চোখে সবই খেয়াল করছিলেন। এবার আস্তে করে লাবন্যের কানের কাছে মুখ নামিয়ে বললেন
“বাপের আপমানটা সহ্য করতে পারলি না, তাই না? তবে জবাবটা ভালোই ছিলো?”
“যেমনটা ভেবে মনে শান্তি পাও তেমনটাই ভাবতে পারো। আসল কথা হলো মনের শান্তি। আমি শুধু ওই ব্যাটার কিছু বকেয়া ছিলো তা শোধ করেছি। কারউ বকেয়া জমা রাখি না মনে। মনটা লোড নিতে পারে না বেশি, তাই হালকা করলাম। ” লাবন্য বেশ মুড নিয়েই উত্তরটা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইল। ওর নানি শুধু একটু মুচকি হাসলেন ওর উত্তর শুনে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here