#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ৪১)
সায়লা সুলতানা লাকী
নানি সুস্থ হয়ে উঠার পর আবার আগের নিয়মে চলতে শুরু করল লাবন্য আর রুশের জীবন। রুশের পরীক্ষা শেষ হতেই লিখন ওকে নিয়ে খেলতে যেতে চাইলো আর সেদিনই রুশের মনে চেপে রাখা আক্রোশ ফেটে বের হয়ে হল। এক পর্যায়ে চিৎকার করে উঠে বলেছিল
“ওই মহিলা কেন আমার আম্মুকে বকা দিয়ে কথা বলল? কেন ওই মহিলা আমাদের বাসায় আসলো? কেন তিনি আমার আপুকে পঁচা কথা বলল? আর সে এত কিছু বলল কিন্তু তুমি তাকে কেন শাস্তি দিলে না? তুমি আমার কেমন আব্বু বলোতো? তোমার কি একটু রাগ লাগেনি তখন তার উপর?”
রুশের প্রশ্নের কোন উত্তর সেদিন লিখন দেয়নি। শুধু ফ্যালফ্যাল চোখে ছেলের চোখেমুখের আতংকটাই অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেছিল।
একটা সময় রুশের সাথে প্রমিজ করল যে আর কোনদিনও ওই মহিলা এই বাসায় আসবে না। এরপর গিয়ে রুশ একটু একটু করে নরমাল হতে শুরু করল ওর আব্বুর সাথে।
এক মাসের এডভান্স গড়চা দিয়েই বাসাটা খালি করে ফেলল দ্রুত । সব আসবাবপত্র নতুন বৌয়ের বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিল। মাঝে মাঝে বৌ কল দিয়ে খুব কান্নাকাটি করে লিখনের সাথে কিন্তু লিখন নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকল। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল নতুন শ্বশুর শাশুড়িকে যে বিয়ের আগে দেওয়া শর্ত মানতে অপারগতা জানানোতে আজ লিখনের এই অবস্থান। কথা দিয়ে যে কথা রাখে না তার ভরনপোষণ দেওয়া ছাড়া তার প্রতি আর কোন দায়িত্ব ও পালন করতে পারবে না।
লিখনের সব কথাই ওর রুমের বাহির থেকে লাবন্য আর ওর নানি শুনে কিন্তু এ বিষয়ে কোন কথা বলে না। এগুলো একান্তই ওর ব্যাপার, এগুলোতে ওদের কোন আগ্রহ নাই। তবে এই সময়টাতে লিখন এই বাসায় থাকাতে লাবন্য আর রুশ বেশ খুশি তা ওদের চেহারা দেখেই বুঝতে পারে ওদের নানি। প্রতিদিনই রাতে বাসায় ফেরার সময় সেই আগের মতো রুশের জন্য হাতে করে কিছু না কিছু নিয়ে আসে লিখন। সকালে আর রাতে ছেলেমেয়েকে পাশে নিয়ে খেতে বসে। ছুটির দিনে রুশকে নিয়ে খেলতে যায়। এযেনো সেই আগের দিনে ফিরে যাওয়ার মতন লাগে যেখানে শুধু রেশমাই নেই। লাবন্য জানে ও বুঝে যে একদিন ঠিকই লিখন আবার ওর নতুন বৌয়ের কাছে চলে যাবে, বিয়ে যখন করেছে তখন যাবেতো নিশ্চয়ই, তবে এখন যা পাচ্ছে তাতেই খুশি থাকার চেষ্টা করছে৷ তবে মনের মধ্যে একটা ভয়তো থেকেই যায় রুশকে নিয়ে। ওদের আব্বু যখন চলে যাবে তখন না জানি ও কতটা কষ্ট পাবে। তখনেরটা তখনই দেখা যাবে। এখন রুশ বিন্দাস এনজয় করুক আব্বুর সঙ্গটা এমনটাই ভাবে লাবন্য।
একদিন রাতে যখন লিখন সহ খেতে বসেছিলো সবাই তখন লাবন্য বেশ সাহস করেই ওর মনে জমিয়ে রাখা ইচ্ছেটা তুলে ধরল।
“নানি আমি একটা প্ল্যান করেছি, বলোতো কীভাবে শুরু করলে ঠিক হয়?”
“কীসের প্ল্যান?”
“মৃত ব্যক্তির জন্য করনীয় কাজ খোঁজ করতে গিয়ে পেলাম সাদকায় জারিয়ার কথাটা। এখানে বলা হয়েছে এমন কিছু করতে যার সুফল কবরবাসীরা সবসময় ভোগ করবে। অনেক ভেবেচিন্তে বের করলাম কী করব।”
“কী করবি?”
“তোমাদের বাড়ির পাশের খালটার উপর একটা সাঁকো বানিয়ে দিব। জানি অনেক টাকার ব্যাপার। তাই ভাবছি আম্মুর সব গহনা বিক্রি করে কাজটা শুরু করব।”
“গহনাতো তুই বিক্রি করতে পারবি না। ওগুলো এখন তোর কাছে গচ্ছিত আমানত হিসেবে আছে। যতদিন না রুশ বড় হয়ে উঠে ওখানে তুই হাত দিতে পারবি না।”
“কিন্তু নানু ওখানেতো আমারও ভাগ আছে তাই না?”
“তোর ভাগে যা আছে তা দিয়ে কি সবটা হবে? ”
“গহনা বিক্রির কি দরকার? ওগুলো তোদের মা তোদের জন্য রেখেছিল বড় শখ করে। তোর বিয়ের জন্যও বানিয়েছিল কিছু।” লিখন বেশ গম্ভীর হয়েই বলল কথাটা।
“আম্মু নাই, আমিও ইনকাম করি না। বছর ঘুরলেই এগুলোর যাকাত দিতে হবে। এগুলো আমি দিবো কীভাবে? যে জিনিস ঘরে রাখলে আম্মুর জন্য আজাব হবে তা রেখে কী হবে?”
“যাকাত নিয়ে চিন্তা করছিস কেন? আমি কি বলেছি আমি দিবো না?”
“কিন্তু আমি এমন কিছু করতে চাচ্ছি যাতে আম্মু কবরে আরাম পায়।”
“আচ্ছা আমি দেখছি এসব নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।” লাবন্যের নানি তাৎক্ষণিকভাবে বললন।
“তুমি ক দেখবা? তোমরা প্রতিবছর নানার নামে এত এত টাকা খরচ কর লোক খাওয়ানোর জন্য। এক বেলা খাওয়ায়েই দায়িত্ব শেষ। এই টাকা গুলো মিলিয়ে এমন কিছুতো করো না যাতে নানাজি কবরে শুয়ে আরাম ভোগ করতে পারে। কর কী তোমরা? আমার আম্মুর জন্য নতুন করে আর কি ভাববা তুমি?”
“হয়েছে, এখন খেয়েনে আমি বললামতো আমি বিষয়টা দেখবো।” এবার বেশ জোর দিয়েই বললেন।
“আম্মা আমিও লাবুর সাথে এক মত। বছর বছর জেফত না করে এমন কিছু করা উচিৎ যাতে তা জারিয়া হিসাবে ফল পাওয়া যায়। যদি এমন কিছু করার জন্য টাকার দরকার হয় আমিও যোগান দিব ইন শাহ আল্লাহ। ” লিখন বেশ আশ্বাসের স্বরে জানালো। আর তা শুনে লাবন্যের মনে অনেকখানি শান্তি মিলল।
“আচ্ছা ঠিক আছে, আমি বিষয়টা নিয়ে অন্যদের সাথেও কথা বলি তারপর তোমাকেও জানাবো।”
নানির কথাতেও লাবন্য মনে অনেক শান্তি পেলো। এই কয়দিন ভাবনাটা খুব জ্বালাচ্ছিলো ভেতরে।বলতে পেরে এখন শান্তি লাগছে মনে।
এখন সকালে নানিকে বাসায় রেখে ওরা দুই ভাইবোন ওদের আব্বুর সাথে বের হয়। রুশের ছুটির আগে নানি চলে যান স্কুলে। ওকে নিয়ে কোচিং করিয়ে বাসায় ফিরেন। আজও তাই লাবন্য বের হওয়ার আগে নানির রুমে ঢুকল। নানি ফোন কলে কথা বলছেন কারউ সাথে। তার মনটা ভালো না। বুঝল খুব গম্ভীর কিছু, তাই আর ডিস্টার্ব না করে ইশারায় বিদায় জানিয়ে বের হয়ে এল।
বাসায় ফিরতেই দেখল নানি না ঘুমিয়ে বসে আছেন। লাবন্য ব্যাগ রেখে একটু ফ্রেশ হয়ে আসল টেবিলে খেতে। তখন নানিই নিজ থেকে শুরু করলেন
“বুঝলি লাবু দুনিয়াটা বড় জটিল। এখানে সবাই বর্তমান নিয়ে ব্যস্ত, দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত। ভবিষ্যৎ বলতেও যা চিন্তা করে তা সবই দুনিয়ার বর্তামান। এর দূরের কিছু কেউ বুঝতে চায় না। সবাই যেনো অন্ধ।”
“নানি তোমার কি হয়েছে? মনটা কি বেশি খারাপ?”
“খারাপের কিছু নাই। নিজেকে যতক্ষণ শক্ত রাখতে পারবো ততক্ষণ ভালো থাকব। যখনই নরম হয়ে যাব তখনই আশেপাশের সবাই চাপতে থাকবে, দমাতে চাইবে। কষ্ট পাচ্ছি শুনে আরও কষ্ট দিবে। আজব সব নিয়ম তন্ত্রের মধ্যে থাকি। এখানে আছে শুধু স্বার্থের খেলা। যে যার স্বার্থ দেখবে তাতে দোষ নাই কিন্তু অন্যেরটাতে হাত দিবে কেন? তাতো আর কেউ মুখ বুঁজে সহ্য করবে না?”
“মনে কষ্ট চেপে না রেখে খুলে বলো কি সমস্যা? ”
“গ্রামের সম্পত্তি থেকে তোর মায়ের ভাগটা আলাদা করতে বলছি সাথে আমার টাও। তাতেই তোর বড় মামার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ওরা ভুলে গেছে সবার সাথে মাথা গরম করা যায় না। আমিও এবার বলছি ঢাকার সম্পদও ভাগবাটোয়ারা করব। ”
“হঠাৎ এগুলার কি দরকার ছিলো? আমার আম্মু তোমাদের আদরই পেলো না, সেখানে সম্পদ সম্পত্তি এগুলো দিয়ে কি করব?”
“এগুলা দিয়েই সাদকা হবে। ওর সম্পত্তি দিয়েই সাঁকোর কাজে হাত দিব সাথে আমার টাও দিব। তোর নানার জমানো কিছু টাকা আছে যা আমার নামে রাখা ওগুলাও যোগ করব।”
“এগুলোতে যদি না হয় তবে আমার জন্য রাখা গহনাগুলোও বিক্রি করব। দারুন, দারুন। এসবে নিশ্চয়ই হয়ে যাবে। আমার যে কি খুশি লাগছে নানি।” বলে খাবার রেখে নানিকে জড়িয়ে ধরল লাবন্য।
“এত খুশি হইও না, যে ঝড় উঠতেছে তার ধাক্কা কীভাবে সামলাবা তা নিয়ে ভাবো!”
“হা হা হা, রেশমার ওই বদ মেয়ে লাবন্যই যত নষ্টের গোড়া। ওই সব বদ বুদ্ধি দিয়ে আম্মার মাথা নষ্ট করতাছে, আম্মার ব্রেন ওয়াস করায়ে সব শান্তি নষ্ট করতাছে আগরুম-বাগরুম আরও ব্লা ব্লা ব্লা। এসব যে আমাকে শুনতে হবে তা আমি বুঝতে পারছি। ঝড়ের প্রথম ধাক্কাটাই লাগবে আমার গায়ে তা আমি জানি। ভয় নেই আমি প্রস্তুত ধাক্কা সামলাতে। ডোন্ট ওয়ারি মাই ডিয়ার নানিজি।”
“যে ঝড় তুলতে পারে সে ঝড়কে সামলাতেও পারে তা আমি জানি। তুইও পারবি তাইতো এতটা সাহস দেখালাম। তুইও শক্ত থাক। যা হবে তা ভালোই হবে ইন শাহ আল্লাহ। এখন খাওয়া শেষ কর।” কথাটা শেষ করে নানি লাবন্যের কপালে একটু চুমু খেয়ে নিজের রুমে চলে গেলেন।
রাতে হিমেলের কল আসল। লাবন্য তখন নানির সাথে বসে টিভি ওয়াচ করছিলো। কলটা রিসিভ করে উঠে নিজের রুমে চলে এল।
“হ্যালো”
“হুমম, এতক্ষণ লাগলো কলটা ধরতে?”
“মনে হচ্ছে মাথাটা বেশ গরম?”
“অফিস থেকে কাপল ট্যুর দিচ্ছে? ”
“হা হা হা, কাপল? তাহলেতো তুমি আউট। আহারে বেচারা. তু তু তু তু।”
“ফাজলামো করছিস? আবার হাসছিস৷ খুব মজা পাচ্ছিস তাই না?”
“আরে বাবা এত রেগে যাচ্ছো কেন? এতটা রাগ হওয়ার কি আছে? একটা ট্যুর নিয়ে… ”
“একটা ট্যুর দেখছিস? আর কিছু দেখছিস না? আম্মুর মনমর্জির কাছে কি আমি আমার জীবনটা জিম্মা রাখব বাকিটা সময়? আম্মু কি আমার মন বুঝবে না কখনও? এ কেমন বিচার তার? সারাজীবন কি শুধু পিতামাতার মন রক্ষা করা সন্তানের উপর দায়িত্ব, পিতামাতার কি কোন দায়িত্ব নাই সন্তানের সুখ দেখার?”
“আহা! এতটা আপসেট কেন হচ্ছো? খালামনি নিশ্চয়ই বুঝবেন। হয়ত একটু সময় লাগবে।”
“আর কত অপেক্ষা করব।আমারওতো ধৈর্য বলে কিছু আছে? আমার মনটা একেবারে ভেঙে যাচ্ছে। ”
“তুমি এমন করলে আমি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো? কার কাঁধে মাথা রেখে নিশ্চিন্ত মনে চোখ বুঝবো?”
“চল বিয়ে করে ফেলি। ছোট্ট একটা বাসা ভাড়া করব।”
“চুপ একদম চুপ, এমন কথা আর বলবা না। মাথা ঠান্ডা কর। এমন গরম হলে বরফপানিতে চুবিয়ে আনবো।”
“আমিতো তাই চাই। তোর বুকে যে শীতল সমুদ্রের ঢেউ আমিতো সেখানেই ডুবে মরতে চাই।”
“তুমি ডুবে মরতে চাও বলেইতো খালামনি রাজি হয় না। তুমি মরলে খালামনি ছেলে পাবে কোথায়? ”
“তুই কল কাট।কাট এক্ষুনি… ”
“ইশশ সামনে থাকলে এখন…”
“কি করতি?”
“ফু দিতাম, যে আগুনের ধাঁচ পাচ্ছি তাতেতো পুড়ে যাওয়ার অবস্থা। ”
“শুধুই ফু দিতি?”
“হাহাহা আর কি চাও?”
“ডুবতে”
“আচ্ছা এভাবে কেন বলো, আমার বুঝি কষ্ট হয় না?
আমার বুঝি ইচ্ছে করে না তোমার বুকে মাথা রেখে হারিয়ে যেতে। আমার বুঝি ইচ্ছে করে না তোমার সব কষ্ট আমার ভালোবাসা দিয়ে দূর করে দিতে?”
“তাহলে কেন আমার কথা শুনিস না? আমি যে বলছি আম্মু কোনোদিনও মেনে নিবে না। আম্মুকে মানতে দিবে না তারা। ”
“আমি এত অল্পতেই আশা হারানোর দলে না। আমি জানি খালামনি নিজেই আসবে নানির কাছে আমাকে চাইতে। ”
“তুই অনেক শক্ত, কিন্তু আমিতো তা না। এসব কষ্ট নিয়ে বাঁচতে ইচ্ছে করে না।”
“কিসব যে বলো না! আজ তোমার কি হয়েছে? এত বেশি ডিপ্রেসড লাগছে কেন?”
“ভালো লাগছে না কিছু।”
“বাসায় আসো।”
“না আসবো না। এসব নিয়ে বিরাট ইস্যু তৈরি হবে।পরে এই ঝড় নানুর উপর উঠবে।”
“তাই নাকি আমিতো কিছুই টের পাইনি।”
“হুমম নানু আছে বলে পাসনি।”
“উমমমমমমমমা, নানুমনিকে আমার কাছে এনে দেওয়ার জন্য দিলাম। ”
“আরেকটা দে, এটা হয় নাই।”
“হাহাহা, মজা করো? একটাই যথেষ্ট। যাও বাসায় যাও। খাওয়া দাওয়া করে ঘুম দাও মাথা ঠান্ডা কর।”
“আচ্ছা রাখি।”
“বাই।”
লাবন্যের মনটা অস্থির হয়ে থাকল হিমেলের জন্য। একা একা যুদ্ধতো করছে কিন্তু তেমন কোন আভাস কেন পাচ্ছে না সাকসেসের। ভাবতেই একটা দীর্ঘশ্বাস বের হল মনের অজান্তেই।
হঠাৎ করেই লিখন আর বাসায় আসে না। লাবন্য বুঝতে পারে তাদের সমস্যা মিটে গেছে। এখন আর ওর আব্বু এখানে এসে থাকবে না। কিন্তু সমস্যা হল রুশকে নিয়ে, ও একটু পর পরই জিজ্ঞেস করে ওর আব্বু কখন আসবে?
প্রতিবারই ওর নানু উত্তর দেয় “আসবে যখন সময় হবে।” উত্তরটা শুনে রুশ আবার পালটা প্রশ্ন করবে “কখন সময় হবে?”
নানি তখন একগাল হেসে বলবে “যখন আসবে।”
রুশের মনটা তখন মলিন হয়ে যায়। লাবন্যের মনটাও তখন কেমন জানি করে উঠে ভাইয়ের জন্য। কিন্তু কিছুই করার নাই ওর মন ভালো করে দিতে।
এরই মধ্যে এক রাতে লিখন ফিরল বেশ খুশি খুশি মুডে। ওর হাবভাব দেখেই লাবন্য কেনোজানি বিরক্ত হয়ে গেল। এরই মধ্যে লাবন্যের নানিকে দেখে লুখন হাসতে হাসতে বলল
“আম্মা সুখবর আছে।”
কথাটা শুনেই রুশ খুশিতে চিৎকার দিয়ে উঠল
“সুখবর! ওয়াও অনেকদিন হল কোনো সুখবর শুনি না। আব্বু প্লিজ প্লিজ প্লিজ সুখবরটা জলদি জলদি বলো। প্লিজ বলো না আব্বু প্লিজ বলো।”
লাবন্যের কি হল তা বুঝাগেলো না, হঠাৎ করেই এসে রুশের গালে এক চড় বসিয়ে দিয়ে চিৎকার করে উঠল।
“ইডিয়েট, সব সুখবর কি আমাদের জন্য সুখবর হবে না কি? এটা তার সুখবর, কিম্তু তোর আর আমার জন্য এটা হবে ভয়ংকর রকমের দুঃসংবাদ, বুঝলি? এত বেশি খুশি হচ্ছিস কেন? এত বেশি লাফাচ্ছিস কেন? আমিতো অনেক আগেই এতিম হয়েছি এবার তুইও হবি।তখন বুঝবি এটা কতটা সুখবর আমাদের জন্য। ”
লাবন্যের আচরনে ওর নানি পুরাই স্তব্ধ হয়ে গেল। রুশ মনে হল কাঁদতেও ভুলে গেল চড় খেয়ে সাথে বোনের কথাগুলো শুনে। আর লিখন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলল মেয়ের আতর্কিত আক্রমণে।
চলবে