#বোনু
#সিজন_০২
#Part_21
#Writer_NOVA
মিহু খুব ভোরে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলো।ফিরোজা কালারের একটা থ্রি পিস ও মাথায় ঐ কালার হিজাব বাঁধলো।সচারাচর মিহু থ্রি পিস পরে না।মুখে কোন সাজ নেই। মুখ দেখে মনে হচ্ছে গতকাল সারারাত কেঁদেছে। চোখ দুটো ফোলা ফোলা। তৈরি হয়ে হাতে বড় একটা গোলাপ ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে গাড়িতে উঠলো।মেহরাবের শরীরটা ভালো না।তাই ও গেলো না। গাড়িতে আগের থেকে ঐশিক ও রিশিক বসে ছিলো।সারা রাস্তায় কেউ কারো সাথে কথা বললো না। ওদের দুই ভাইয়ের চোখ, মুখ অতিরিক্ত ফোলা ফোলা দেখাচ্ছে।
গাড়ি কয়েক ঘন্টা পর ওদের গ্রামের একটা ছোট পার্কের মতো জায়গায় থামলো।তিনজন হাতে ফুল নিয়ে গাড়ি থেকে নামলো।গুটি গুটি পায়ে হাঁটছে ওরা।জায়গাটা খুব সুন্দর। চারিপাশে বাউন্ডারি দেওয়া।অনেক ফুল ফলের গাছ। চারিদিকে পাখির কিচিরমিচির শব্দ। এক কোণায় বসার জন্য জায়গা করে দেওয়া আছে।তারপাশে ছোট একটা পুকুর। সাথে সিঁড়ি ঘাটলা। পুকুরের দক্ষিণ দিকে মার্বেল পাথরের একটা কবর।ওরা কবরের সামনে এসে থামলো।ঐশিক ও রিশিক এগিয়ে গিয়ে ফুলোর তোড়াগুলো কবরের ওপর রাখলো।মিহু সামনে যায়নি।মেয়েদের কবরের সামনে যেতে নেই, সেটা ও জানে।তাই ওর হাতের তোড়াটা ঐশিকের হাতে দিয়ে দিয়েছিলো।দুই ভাই মিলে কবর জিয়ারত করছে।আর মিহু দূরে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে কবরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে রাজ গাড়ি নিয়ে মির্জা কুঠিরে চলে এলো।এসেই মেহরাবকে ডাকতে লাগলো।মেহরাব নিচে এসে রাজকে দেখে বেশ অবাক হয়ে গেলো।ফাহিম ও লুবনা মির্জা আজ বাসায় নেই। মেহরাবের মামার বাসায় গেছে। সেই বাড়িতে আজ একজনের মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠান।
মেহরাবঃ রাজ তুই?
নিবরাজঃ মিহু কোথায়?
মেহরাবঃ কি হয়েছে?
নিবরাজঃ তোর বোন ঐ যে ঐ ছেলেটা ঐশিক না কি যেনো নাম, ওর সাথে ঘুরতে গিয়েছে। যদি এমন কিছু হয় তাহলে আগে তোর বোনকে মারবো তারপর নিজে মরবো।বল মিহু কোথায়?(রেগে)
মেহরাবঃ তুই মাথা ঠান্ডা কর।মিহু গ্রামে গিয়েছে।
নিবরাজঃ ও গ্রামে কেন গেছে?ঐ ছেলেটার সাথে ঘুরতে?তুই এখনি আমার সাথে গ্রামে যাবি।অনেক ছাড় দিয়েছি আর না।কি ভেবেছে ও নিজেকে?আমাকে কষ্ট দিয়ে অন্য কাউকে নিয়ে সুখে থাকবে।নো ওয়ে,নিবরাজ খান বেঁচে থাকতে তা কিছুতেই হতে দিবে না। ও শুধু আমার,আমারি থাকবে।(রেগে)
মেহরাবঃ আমার কথাটা শোন।তুই ভুল বুঝছিস মিহুকে।
নিবরাজঃ একটা কথাও শুনবো না। তুই জলদী আমার সাথে চল।
নিবরাজ টানতে টানতে মেহরাবকে নিয়ে চললো।রাজ খুব স্প্রিডে গাড়ি চালাচ্ছে। চোখ দুটো রাগে লাল হয়ে আছে।মেহরাব অনেক বার কিছু বলতে চেয়েছে। কিন্তু রাজ কিছুই শোনেনি।ঘন্টাখানিক পর ওরা পৌঁছে গেল।রাজ গাড়ি থেকে নেমে পার্কের ভেতরে ঢুকলো। কিছু দূর যেতেই একটা মেয়ে ও দুটো ছেলেকে দেখতে পেলো।মেহরাব পেছন পেছন দৌড়ে আসছে।
মেহরাবঃ রাজ যা রেগে আছে,কি জানি কি উল্টো পাল্টা কান্ড করে বসে।আমার ওকে ধরতে হবে।
রাজ খুব দ্রুত মিহুর কাছে গিয়ে পেছন থেকে ওর গলা চেপে ধরলো। আচমকা এমন হওয়ায় মিহু ঘাবড়ে গেলো।ঘাড় কাত করে রাজকে দেখে আরো ভয় পেয়ে গেল। কারণ রাজের চোখ দুটো টকটকে লাল হয়ে আছে।মিহু নিজেকে ছাড়ানোর অপ্রাণ চেষ্টা করছে। ঐশিক,রিশিক দুজনেই ওদের সামনে এলো।দুই ভাই রাজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। মেহরাবও চলে এলো।
মেহরাবঃ রাজ,কি করছিস?ছাড় ওকে,মরে যাবে তো।
নিবরাজঃ গেলে যাবে।ওকে মেরে আমি মরে যাবো।শেষ ঝামেলা। কিন্তু ওকে অন্য কারো হতে দিব না।(দাঁতে দাঁত চেপে)
ঐশিকঃ নিবরাজ,ছাড়ো বোনুকে।ওর কষ্ট হচ্ছে।
নিবরাজঃ ওর জন্য দরদ উথলে পরছে। ওর কষ্ট হচ্ছে সেটা সহ্য করতে পরছেন না।আর দিনের পর দিন আমায় কষ্ট দিচ্ছে, সেটা আমি আর কত সহ্য করবো।
☘️☘️☘️
মেহরাব, রিশিক জোর করে নিবরাজকে ছাড়ালো।মিহুর অবস্থা খারাপ।মুখ লাল হয়ে গেছে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। ওর মনে হচ্ছিল, ও বোধহয় এবার রাজের হাতে মরেই যাবে।
নিবরাজঃ মেহরাব ছাড় আমায়।আজ আমি ওকে মেরেই ফেলবো। আর কত কষ্ট দিবে আমায়?আমি আর সহ্য করতে পারি না।ও এখানে কেন এসেছে? ওর জন্য আজ আমি কলেজে বড় করে পার্টি রেখেছি।আর ও এখানে এসে ওর স্পেশাল মানুষের সাথে সময় কাটাচ্ছে।
মেহরাবঃ রাজ শান্ত হো।
নিবরাজঃ আমি শান্ত হবো না। কে ওর স্পেশাল মানুষ?ঐ ছেলে ঐশিক নাকি এই ছেলে।বল আমায়।ওর সাথে সাথে ওর স্পেশাল মানুষটাকেও উপরে পাঠিয়ে দিবো।
মেহরাবঃ এই দুজনের কেউ ওর স্পেশাল মানুষ নয়।
নিবরাজঃ তাহলে কে?(শান্ত কন্ঠে)
মেহরাবঃ দেখতে চাস,আয় আমার সাথে।
মেহরাব নিবরাজের হাত ধরে টেনে কবরের সামনে নিয়ে গেলো।
মেহরাবঃ এই দেখ,এটা ওর স্পেশাল মানুষ।এখানে সারাজীবনের জন্য ঘুমিয়ে আছে। হাজার ডাকলেও সাড়া দিবে না। (চোখ মুছে)
নিবরাজঃ কবর!!!! কার কবর এটা?(অবাক হয়ে)
মেহরাবঃ নাম তো লেখাই আছে।পড়ে দেখ।
নিবরাজঃ ইশিকা মির্জা।মৃত্যু ৫ বছর আগে। কে এই মেয়েটা?কি হয় তোদের? ও কিভাবে মারা গেছে? কি হলো চুপ করে আছিস কেন?বল আমায়।
ততক্ষণে ঐশিক ও রিশিক দুজনে মিলে মিহুকে বসার জায়গায় নিয়ে বসিয়ে দেয়।দুই ভাই ব্যস্ত হয়ে পরেছে মিহুকে নিয়ে। রিশিক দৌড়ে গাড়ি থেকে পানির বোতল নিয়ে আসে।মিহু বোতল থেকে পানি খেলো।
নিবরাজঃ কথা বলছিস না কেন?
মেহরাবঃ বলছি।ইশিকা মির্জা,ঐশিক ও রিশিকের একমাত্র আদরের বোন।ইশি মিহুর ১২ দিনের ছোট। আর রিশিক আমার ৬ মাসের ছোট। মিহু ও ইশি দুজন দুজনের কলিজার অংশ ছিলো।কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারতো না। আমরা ও মামারা তখন গ্রামে ছিলাম।আমাদের পাশাপাশি বাড়ি।আমরা একি বংশের। তবে পেঁচানো গোছানো সম্পর্ক।কিন্তু বাপির মাম্মির সাথে বিয়ের পর আত্মীয়টা আরো মজবুত হয়।ইশি ও মিহু সব কাজ একসাথে থাকতো।একসাথে স্কুলে যাওয়া,দুষ্টুমি করা,একরকম জামা পরা,খেলতে যাওয়া,সব একসাথে। ইশিকাকে আমরা সবাই ইশি বলে ডাকতাম।আর ওর দুই ভাই ওকে হির বলে ডাকতো।ওর নাকি এই নামটা খুব পছন্দ ছিলো।ওরাযখন ক্লাশ নাইনে পরে তখন আমরা ও মামারা ঢাকায় চলে আসি।তবে ভিন্ন জায়গায় আমাদের বাসা। ইশি ও মিহু আলাদা স্কুলে ভর্তি হয়।ঢাকার এক বড় স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় ইশিকে।একি স্কুলে ভর্তি হতে পারেনি বলে ইশি ও মিহুর দুজনের মন ভীষণ খারাপ ছিলো।ঐশিক ভাই ও রিশিক তখন বিদেশে পড়াশোনার জন্য ছিলো।তখনি ইশির জীবনে আসে একটা ছেলে। ছেলেটা ওদের কলেজেই পরতো।ছেলেটা ভালো ছিলো না। ছেলেটাকে ইশি প্রথমে কোন পাত্তা দিতো না। কিন্তু ধীরে ধীরে ইশির মনে জায়গা করে নেয়।নতুন জায়গা,নতুন পরিবেশ ওর একটা বন্ধুর প্রয়োজন ছিলো।খুব দ্রুত ইশি ছেলেটাকে ভালোবেসে ফেলে।ছেলেটার ভালোবাসার নাটকটা ছোট মেয়েটা ধরতে পারেনি।ছেলেটার মিষ্টি মধুর কথায় আরো বেশি পাগল হয়ে যায়।আসলে তখন বয়সটাই তো আবেগের।মিহু বা আমাদের কাউকে ছেলেটার বিষয় কোন কিছু জানায়নি।
নিবরাজঃ ছেলেটা কে ছিলো?
মেহরাবঃ দেশের অন্যতম বিজনেস ম্যান অন্তর চৌধুরীর ছোট ছেলে।অঙ্কু চৌধুরীর ছোট ভাই অন্তু চৌধুরী।
নিবরাজঃ অন্তু!!! কিন্তু তোদের বোন কিভাবে মারা গেলো?
রিশিকঃ মারা যায়নি।ওকে মেরে ফেলা হয়েছে।
নিবরাজঃ কি? তারপর কি হয়েছিল? কিভাবে মেরেছে ইশিকা কে?
মেহরাবঃ এক মাসের মধ্যে অন্তু ইশির অনেকটা কাছে চলে আসে।একদিন অন্তু ওকে বলে সামনের ভেলেন্টাইস ডে তে ওরা একসাথে ঘুরতে যাবে।প্রথমে ইশি যেতে না চাইলেও অন্তুর জোড়াজুড়িতে রাজী হয়।আমাদের সহজ সরল বোনটা খুব খুশি হয়ে যায়। খুব সকালে বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে যাবে বলে তৈরি হয়ে অন্তুর সাথে বের হয়ে যায়।কিন্তু ওর আর বাসায় ফেরা হয় না।
নিবরাজঃ তারপর কি হলো?বল মেহরাব।(মেহরাবের দুই বাহু ঝাঁকিয়ে)
ঐশিকঃ আমি বলছি।অন্তুর মিথ্যে ভালোবাসায় তখন আমাদের বোনু পাগল।আমাদের বোনুরও ভুল ছিলো।কারণ সে ভুল মানুষকে আবেগের বশে ভালোবেসে ছিল। কে জানতো ঐ দিনই ওর শেষ দিন হবে।অন্তু সব প্ল্যান করেই এসেছিলো।ওর সাথে রিকিসহ আরো তিনটে ছেলে ছিল।একটা নির্জন বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ৫ জন মিলে আমাদের কলিজার টুকরো বোনটাকে গণধর্ষণ করলো।কতটা অমানুষ হতে পারে?সারাটারাত মৃত দেহটাকে ভোগ করতে ছাড়েনি।পরেরদিন সকালে আমাদের বাড়ির সামনে ফেলে চলে গেছে। আমার কলিজার টুকরো বোনটা বাঁচার জন্য বার বার কাকুতি -মিনতি করেছে, ওদের পায়ে পরে নিজের জীবনটা ভিক্ষা চেয়েছে। ওদের নাম কখনো প্রকাশ করবে না তাও বলেছে।কিন্তু ওরা বাঁচতে দেয়নি।যেই অমানুষগুলো মৃত দেহকেই গণধর্ষণ করতে ছাড়ে না তারা ওকে বাঁচতে কি করে দিবে?
☘️☘️☘️
কথাগুলো বলে ঐশিক ডুকরে কেঁদে উঠলো।মিহুর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে।রিশিক,মেহরাব অন্য দিকে তাকিয়ে কাঁদছে। নিবরাজের চোখ দুটো ছলছল করছে।
নিবরাজঃ এই ঘটনা আপনারা জানলেন কি করে?
রিশিকঃ সত্য কখনো চাপা থাকে না নিবরাজ।গোপন সূত্রে আমরা ওদের সাথে থাকা বন্ধুদের খোঁজ পাই।বাকি তিনটাকে তুলে নিয়ে এসে সব খবর পেলাম।ও তিনটাকে ভাই সাথে সাথে শুট করলো।কিন্তু অন্তু ও রিকিকে ধরতে পারিনি।কারণ ঘটনার দুদিন পর রিকি ও অন্তু স্কটল্যান্ডে পালিয়ে যায়।
মেহরাবঃ ইশিকে ওর ভাইরা হির বলে ডাকতো।তাই মিহু ওর হকি স্টিকের নাম দেয় হির।মিহু মনে করে ইশি সবসময় ওর সাথে আছে।কারণ ওর হকি স্টিকটা সবসময় ওর সাথে থাকে।ইশিকে মনে রাখতে ঐশিক ভাইয়া ও রিশিক মিহুকে হির বলে ডাকে।মিথ্যা ভালোবাসার কারণে ইশি নিজের জীবন দিয়েছে। যখন মিহু এই কথা জানতে পারলো তখন থেকে LOVE শব্দটাই ওর কাছে সবচেয়ে ঘৃণার যোগ্য হয়ে যায়।যেই ভালোবাসার জন্য ওর ইশি ওর সাথে নেই সেই শব্দটাকে ওর জীবন থেকে ডিলিট করে দিয়েছে। তাই আজও তোকে আপন করে নেয়নি।
নিবরাজ মিহুর দিকে তাকাতেই মিহু মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
নিবরাজঃ রিকিকে তোরাই—-
ঐশিকঃ আমি মেরেছি।
রিশিকঃ উত্তরার এক ডিলের জন্য আমরা ইচ্ছে করে ঝামেলা করলাম।অঙ্কু বাধ্য হয়ে রিকিকে পাঠালো।তারপর মিহুকে রাস্তার সাইডে দাঁড়িয়ে থাকতে বললাম।কারণ আমরা জানতাম, একটু পর রিকি এই রাস্তা দিয়েই যাবে।আর একা একটা মেয়েকে দেখে নিশ্চয়ই থামবে।যা প্ল্যান করেছিলাম তাই হলো।তারপর ঝামেলা হলো।ভাই ওকে তুলে নিয়ে সোজা কপাল বরাবর শুট করলো।তারপর কৌশলে সকল কিছু চাপিয়ে খুলনা চলে গেল। আর অঙ্কু রিকির মৃত্যুর খবর পেয়ে অন্তুকে পাঠালো।ওকে আমাদের জালে ফাঁসালাম। এখনও অন্তু আমাদের কাছে। খুব শীঘ্রই আমাদের বোনের কাছে পাঠিয়ে দিবো।আজ ৫ বছর পূর্ণ হলো আমাদের বোনুর মৃত্যুর।
নিবরাজ ধীর পায়ে মিহুর সামনে গেল।তারপর হাঁটু গেড়ে বসে পরলো।
নিবরাজঃ আই এম সরি। পুরো ঘটনা না জেনে তোমার সাথে রুড বিহেভ করে ফেলছি।এবারের মতো মাফ করে দেও।আই প্রমিজ আর কখনো তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করবো না।প্লিজ, এবারের মতো।
মিহু কথা না বলে উঠে চলে গেল। ঐশিক ওর পিছু পিছু এলো।নিবরাজ বড় একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেরে মিহুর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।
ঐশিকঃ হির বোনু, নিবরাজ তোকে অনেক ভালোবাসে।
মিহুঃ কিন্তু ভাইয়া—-
ঐশিকঃ কোন কিন্তু নয় বোনু।ইশি মিথ্যে ভালোবাসায় পাগল ছিলো।যে মানুষটা এত বছর ধরে তোকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবেসেছে,সেটা কোন অভিনয় নয়।ইশি তো মাত্র মাত্র একমাসে মিথ্যে ভালোবাসার নাটকে শেষ হয়ে গেলো।কিন্তু তুই নিজে ভেবে দেখ, তোকে নিবরাজ কখনো কষ্ট দেয়নি।তুই কষ্ট দিলেও মুখ বুজে মেনে নিয়েছে। তারপরও তোকে ছেড়ে যায়নি।ও সত্যি তোকে অনেক ভালোবাসে।
মিহুঃ রাজ ভাইয়া সত্যি আমায় ভালোবাসে?
(অবাক হয়ে)
ঐশিকঃ হ্যাঁ,সত্যি। ওর চোখে আজও কোন মিথ্যা অভিনয় ছিলো না।ছিলো তোকে হারানোর ভয়।
ঐশিক চলে গেল। মিহু মুচকি হাসলো।
#চলবে
আগামীকাল বোনু বা মেঘকন্যা কোন গল্প দিবো না।আগামীকাল আমার ছুটি।🙃🙃
গল্পের আলোকে কিছু কথাঃ
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এই দিনে হাজারটা অপরাধের জন্ম হয়।খুন,ধর্ষণ,অবৈধ সম্পর্ক,ব্লাকমেল হাজারটা অপরাধ হয় এই দিনে।ভালোবাসতে কোন দিবস লাগে না।এই দিনটাই হাজারো নারী স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় নিজের সতিত্ব বিলিয়ে দেয়।শুধু ভালোবাসার পরীক্ষা দিতে।যে আপনাকে সত্যিকারে ভালোবাসে সে কখনো আপনাকে নিজের মান-সম্মান বিকিয়ে পরীক্ষা দিতে বলবে না,বলবে না রুমডেট করতে কিংবা হুমকি দিবে না সম্পর্ক শেষ করার।বরং প্রতিদিনের মতোই সেদিনও আগলে রাখবে।বাসা থেকে বের হতো মানা করবে।আপনার ওপর কড়া নজরদারি করবে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে কোনটা ভুল কোনটা ঠিক।প্রতিটি দিন তার কাছে ভালোবাসার দিন।আজকালের ভালোবাসা ঠিক সর্দি-কাশির মতো।এই আছে তো এই নেই। তাই বলে কি সত্যিকারের ভালোবাসা নেই? হ্যাঁ আছে।কিন্তু আমরা তাকে চিনতে পারি না, অবহেলা করে দূরে ঠেলে দেই,তার অতিরিক্ত কেয়ারিং গুলো যাস্ট বিরক্ত লাগে।অথচ ভুল মানুষের পিছনে পাগলের মতো ছুটে বেড়াই।কারো মনের গহীন কোণে হয়তো আপনি আছেন সবটা জুড়ে। কিন্তু আপনার অবহেলা, বিরক্ত, অনাদরে সে আপনার থেকে দূরে যেতে বাধ্য হয়।সবশেষে বোনুদের আমি একটা কথাই বলতে চাই যে আপনাকে মন-প্রাণ সবটুকু দিয়ে ভালোবাসে সে কখনো আপনার দেহ চাইবে না। চাইবে আপনাকে,
তাও ক্ষাণিকের জন্য নয়।বরং সারাজীবনের জন্য। তাই বলছি কাউকে ভালোবাসার আগে যাচাই-বাছাই করে নিন।আদোও কি সে আপনাকে চায় নাকি আপনার দেহকে?