আমার বনু সিজন ২ পর্ব-২৪

0
1568

#বোনু
#সিজন_০২
#Part_24_ধামাকা😎
#Writer_NOVA

বাবা-মা কে বাচানোর জন্য অবশেষে কাঁপা কাঁপা হাতে সাইনটা করেই দিলো মিহু।চোখ থেকে দুই ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে কাগজে পরলো।

মিহুঃ আজ থেকে আমি অঙ্কুর স্ত্রী। ভাবতেই গা শিউরে উঠেছে। সবসময় রাজকে অবহেলা,কষ্ট দিয়ে দূরে ঠেলেছি।কখনও ওকে বুঝতে পারিনি।আমার অবহেলায় আজ ও এতো দূরে চলে গেছে।যে কোনদিন আমি ওকে পাবো না।এতো অভিমান করলো ও আমার সাথে। (কাঁদতে কাঁদতে)

অঙ্কুঃ আহারে!!! অনেক কষ্ট হচ্ছে নিবরাজের জন্য।আমারো অনেক খারাপ লাগছে।
কাজীঃ বাবা,তিনবার কবুল বলুন।

অঙ্কু মিহুর দিকে তাকিয়ে কবুল বলে দিলো।

মিহুঃ আমার বাপি-মাম্মিকে ছেড়ে দিন।

অঙ্কুঃ আগেতো কবুল বলো তারপর। তুমি কবুল বলার সাথে সাথে ওদেরকে ছেড়ে দিবো।

আরুহিঃ ওরা এখনো আসছে না কেন?দেরী করলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে।কখন বেরিয়েছে?আসতে এতক্ষণ লাগে।মিহু প্লিজ আরেকটা ওয়েট কর।এখন কবুল বলিস না বোন।(মনে মনে)

অঙ্কু দেখলো আরুহি কেমন জানি ছটফট করছে।বারবার এদিক সেদিক তাকিয়ে কি জানি খুঁজছে।

অঙ্কুঃ আরুহি,এনি প্রবলেম?

আরুহিঃ না না কোন প্রবলেম নেই। (ভয়ে ভয়ে)

অঙ্কুঃ তাহলে এমন ছটফট করছো কেন?

আরুহিঃ না মানে আসলে গরম লাগছে তাই।
(আমতা আমতা করে)

অঙ্কুঃ হির,আমি তিন পর্যন্ত গুণবো।এর মধ্যে যদি তুমি কবুল না বলো তাহলে তোমার বাবা-মাকে শেষ করে দিবো।১……….২………

আরুহিঃ না মিহু না। এই ভুল জীবনেও করিস না।তুই কবুল বলিস না বোন।তুই যদি কবুল বলিস তাহলে যে কেয়ামত হয়ে যাবে।(মনে মনে)

মিহুঃ ধূর ভাল্লাগে না। কই সব?মরছে নাকি।আসে না কে রে?(মনে মনে)

অঙ্কুঃ তুমি কি বলবে?

মিহুঃ বলতাছি।এত চিল্লান কে?কককককক……..

—–কি ব্যাপার আমাদের ছাড়া বিয়ে করে ফেলছেন।ব্যাপারটা কি ভালো দেখায়?বিয়েতে মেয়ের সাক্ষী থাকতে হবে না।

☘️☘️☘️

সবার নজর বাইরের দরজার দিকে গেল।কিন্তু সেখানে কেউ নেই।

—পেছনে কি খুঁজছেন মিস্টার অঙ্কু চৌধুরী? সামনে দেখুন। আমরা এখানে।

সবাই সামনে তাকালো।সামনে একটা বড় সিঁড়ি আছে। সেটা দিয়ে দো-তালায় যাওয়া যায়। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে ঐশিক ও মেহরাব।দুজনের হাতে কফির মগ।মগে চুমুক দিতে দিতে নামছে।

মেহরাবঃ কি বোন জামাই? এটা কি ঠিক করছেন?আপনার দশটা না পাঁচটা নয় তিনটা মাত্র সমুন্ধী। তাদের দাওয়াত না করে একা একা তাদের একমাত্র বোনকে বিয়ে করে ফেলছেন।

অঙ্কুঃ তোমারা এখানে?তোমারা ভালো হলে কি করে? (অবাক হয়ে)

ঐশিকঃ আমরা খারাপ ছিলাম কবে?আমরা তো আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি।

অঙ্কুঃ এক্সিডেন্টে তোদের কিছু হয়নি😲?

মেহরাবঃ আমাদের এক্সিডেন্ট হলো কবে?আমরা তো তার আগেই গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে বেঁচে গেছি।তারপর বাকিটা নাটক।

আরুহিঃ কি ভাবছিস মিস্টার অঙ্কু চৌধুরী? তোর জালে আমরা ফেঁসেছি। মোটেও না। বরং তুই আমাদের জালে ধরা পরেছিস।

অঙ্কুঃ আরুহি, তুমিও ওদের দলের?

আরুহিঃ ইয়েস আই এম 😎।

মিহু চোখের পানি ভাব নিয়ে টোকা দিয়ে ফেলে দিলো।তারপর চেয়ারের মধ্যেই পায়ের ওপর পা তুলে আরাম করে বসলো।

মিহুঃ সো স্যাড মিস্টার অঙ্কু!! আমরা আগের থেকে এসব জানতাম।তাই তোমার প্ল্যানের ওপর আমরা প্ল্যান করেছি।তুমি একা আর আমরা অনেক।আমাদের সাথে কি করে পারবে?তুমি বোধহয় জানো না, একতাই বল।

অঙ্কুঃ তোরা সবাই মিলে আমার প্ল্যানে জল ঢেলেছিস।আরুহি তুমিও —

আরুহিঃ আরে থাম–।এতো কেচাল(ভেজাল) করিস না।সব খুলে বলছি।তবে আরেকটু পরে।ধামাকা তো আরো বাকি আছে। এটা সবে এক নাম্বার ধামাকা ছিলো।বাকিগুলো দেখবি না?

অঙ্কুঃ যা করার কর তোরা।হির তো এখন আমার ওয়াইফ।চাইলেও সেটা অস্বীকার করতে পারবি না। কি হির মাই কুইন? (বাঁকা হেসে)

অঙ্কুর কথা শুনে ওরা চারজন হাসতে লাগলো। একেকটা পেট ধরে বসে পরেছে।

আরুহিঃ বেস্ট জোকস অফ দ্যা ইয়ার।আমি কখনো এতো হাসি নি।

মিহুঃ শোনো বোকা ছেলের কথা।এমন বোকা জীবনেও দেখিনি।রেজিষ্ট্রী পেপারে সই করার আগে একবার তো দেখে নিবে সেটা কি ছিলো?আমাকে দেখতে দেখতে কীসে সই করেছে সেটাও জানে না। ভ্যাবলাকান্ত কোথাকার?

মেহরাবঃ ভালো মতো পেপারটা দেখ ভাই। তাহলেই বুঝতে পারবি।

চারজন আরো জোরে হাসতে লাগলো।অঙ্কু পেপারটা হাতে নিলো।সেটা সামান্য একটা কন্ট্রাক্ট পেপার ছিলো।সেটাও কয়েক বছর আগের।রাগে,ক্ষোভে পেপারটা ছিঁড়ে ফেললো।সোজা কাজীর কলার ধরলো।

অঙ্কুঃ তোর সাহস কি করে হয় আমার সাথে এমন করার?তোকে আমি জীবন্ত কবর দিবো।

ঐশিকঃ বেচারাকে ছেড়ে দে।ওর কোন দোষ নেই। আমরাই বলছি।

অঙ্কু কাজী সাহেব কে ছেড়ে দিয়ে গার্ডদের দিকে কটমট করে তাকালো। সেই ফাঁকে কাজী কোনমতে নিজের জান নিয়ে পালালো।

অঙ্কুঃ তোরা হা করে কি দেখছিস?শেষ করে দে ওদের।

☘️☘️☘️

গার্ডগুলো দৌড়ে মেহরাব ও ঐশিকের দিকে গেল।ওরা দুইজন ফাইট করছে।মিহু সামনের টি-টেবিলে থাকা আঙ্গুর খাচ্ছে সোফায় দুই পা তুলে।আরুহি পাশে বসে আছে। গোডাউনে সিড়ির পাশে সোফা ও টেবিল রাখা।মিহু চেয়ার ছেড়ে সেখানে গিয়ে বসেছে।

মিহুঃ আরে ভাইয়ু, আস্তে মার।শব্দে তালা লেগে যাচ্ছে। এমনভাবে মারছিস যে আমার কলিজাটা ধক করে উঠছে।মনে হচ্ছে মারগুলো আমার শরীরে লাগছে।

মেহরাবঃ কানে তুলা দিয়ে রাখ।

আরুহিঃ তুই আমায় ভুল বুঝিসনি তো।আমি সত্যি রাজ ভাইয়াকে পছন্দ করতাম।কিন্তু এখন সত্যি সত্যি ঐশিক কে ভালোবাসি🙈।

মিহুঃ না,আপু।আমি তোমাকে ভুল বুঝিনি।কারণ আমি আগের থেকে সব কিছু জানতাম।

আরুহিঃ আমার আগের ব্যবহারের জন্য মাফ করে দিস।আমি সত্যি দুঃখীত, আমার আগের করা ব্যবহারের জন্য।

মিহুঃ ছিঃছিঃ কি বলছো?মাফ তো আমার চাওয়ার কথা।আমিও তো তোমার সাথে কম খারাপ ব্যবহার করিনি।

আরুহিঃ কোন মাফ চাইতে হবে না। এখন থেকে আমি তোর ভাবী এবং তুই আমার ভাবী।হি হি😁

দুজন দুজনকে জরিয়ে ধরলো। অঙ্কু সামনে থাকা গানটা হাতে তুলে যেই মিহুর দিকে তাক করতে যাবে।তার আগেই কেউ ওর হাতে গুলি করলো।গানটা নিচে পরে গেল।

অঙ্কুঃ তুমি—

মিহুঃ এবার আপনারা দেখবেন ২য় ধামাকা।
(জোরে চিৎকার করে)

অঙ্কুঃ জিহান।তুমি কি করলে এটা?

জিহানঃ সরি বস।আমি জিহান নই।আমার নাম রিশিক মির্জা।আপনার দলে থাকার জন্য নিজের নামটা জিহান দিয়েছিলাম।

অঙ্কুঃ রিশিক মানে হিরের মামাতো ভাই।

আরুহিঃ ইয়েস,আমার একমাত্র দেবর।

অঙ্কুঃ তোদের কাউকে আমি ছারবো না।

রিশিকঃ আগে নিজে তো বাঁচ।তারপর না হয় আমাদের মারিস।

অঙ্কু ও রিশিক ফাইটিং শুরু করে দিলো।

মিহুঃ ছোট ভাইয়ু এদিক দিয়ে একটা ঘুষি দে ডিসিম,ঐদিক দিয়ে মাথায় একটা দে ডিসুম।পায়ে তোর কুংফু স্টাইলের শর্ট মার।নাকের মধ্যে দুই আঙুল দিয়ে দে বারি।মাথাটা ফাটিয়ে ফেল।একটুও ছারবি না।শখ কত?আমাকে বিয়ে করবে।বেডারে বিয়ার মজা বুঝিয়ে দে।তোরা যদি আরেকটু দেরী করতি তাহলে আমি এইডার বউ হইয়া যাইতাম।

আরুহিঃ কি রে তুই কি শুরু করলি?

মিহুঃ বিনামূল্যে চোখের সামনে বক্সিং দেখতাছি।আমার যে কি মজা লাগছে।তাই ভাবলাম আমি যদি রেফারি না হই তাহলে কি মানায়?হুলো বিড়াল, ইচ্ছে মতো মার ওদের।নইলে তোরে যে মাম্মি ছোটবেলায় যেই হরলিক্স ও কমপ্লেন খাওয়াইছে। ওগুলো তো বৃথা যাইবো।

মেহরাবঃ আর পারতাছি না রে বিচ্ছু।শক্তি নেই।

মিহুঃ ঐ ছেমড়া কি কস?ছোটবেলায় আমার থিকা বেশি হরলিক্স তুই খাইছত।ওগুলো গেলো কই?যদি আজকে ওগো না মারতে পারস তাইলে বাড়িতে গেলে গামলা ভইরা ভাতের মাড় খাইতে দিমু।আমার হরলিক্সের কসম ভাই। তোগো আজকে জিততেই হইবল।আজকের প্রতিযোগিতায় যে জিতবে,তাকে দেওয়া হবে বড় একটা হরলিক্স। সাথে থাকছে আকর্ষণীয় টিফিন বক্স।যে জিতবে বোঝা যাবে সে এতবছরে হরলিক্স খেয়ে উন্নতি করতে পেরেছে।

আরুহিঃ তুই কি চুপ করবি?

মিহুঃ আপু আঙ্গুরগুলি খাইয়া দেখো অনেক মিষ্টি। পানি খাইয়া নেই। মাইকে প্রচার করতে করতে গলা শুকায় গেছে।

আরুহিঃ তুই এখন ফাইজলামির মুডে আছিস।ঐদিকে—

মিহুঃ কিচ্ছু হইবো না। আমরাই জিতমু। আর হরলিক্সের বড় বৈয়ামডা আমরাই নিমু।সাথে টিফিন বক্সটাও।😁😁

☘️☘️☘️

অঙ্কু রিশিকের সাথে এখনো ফাইট করছে।হঠাৎ কিছু গার্ডকে আরুহি ও মিহুকে ইশারা করে ধরতে বললো।

মিহুঃ ওসাম,পুরা ফাটাই ফালাইছোত ভাইয়ুরা আমার।এতদিন কই আছিলি তোরা?বাংলা সিনেমার ডিরেক্টর-রা তো তোগোই খুজতাছে।শাকিব খানের তো এখন চান্সও পাইবো না তোগো নিলে।বড় বড় পোস্টারে তোগো ছবি থাকবো।ছবির নিচে লেখা থাকবো, সুপারস্টার মেহরাব মির্জা।রকস্টার ঐশিক মির্জা,পাওয়ার স্টার রিশিক মির্জা।চিন্তা করতাছি এত গৌরব আমি রাখুম কই🤔?নো টেনশন,
হরলিক্সের বৈয়াম আর টিফিন বক্সে রাইখা দিমুনে।
আরুহিঃ তুই হরলিক্স নিয়া পরলি কেন?তোকে কি হরলিক্স কোম্পানি প্রচার করতে নিছে?
মিহুঃ কি যে কও তুমি? তুমি জানো,হরলিক্স খাইয়াই তো ওগো এত শক্তি হইছে।আর বড় ভাইয়ু (ঐশিক) বেশি বেশি কমপ্লেন খাইতো।সেই জন্যই তো এমন তালগাছ হইছে।

হঠাৎ ওদেরকে অঙ্কুর চারজন গার্ড ধরে ফেললো।

মিহুঃ আরে বেডা করস কি?ছাড় আমারে ছাড় কইতাছি। শরম করে না তোগো?একজন মেয়েরে দুইজন ধরছত?তোরা তো ছেলে জাতির কলঙ্ক।

তখুনি পেছনের দরজা দিয়ে কেউ একজন দুই হাতে দুটো গান নিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে আসলো।আরুহি ও মিহুর সাথে থাকা চারজন গার্ড মাটিতে লুটিয়ে পরলো।

আরুহিঃ ধামাকা নাম্বার তিন।

সামমে থাকা ছেলেটাকে দেখে মিহু অবাক।হঠাৎ ছেলেটি মিহুর মাথার দিকে তাক করে একটা গুলি ছুরলো।মিহু ভয়ে মাথা ধরে কিছুটা নিচু হয়ে গেলো।গুলিটা মিহুর মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে পেছনে থাকা একটা গার্ডের কপালের মাঝখানে লাগলো।আরুহি জোরে সিটি বাজিয়ে বললো।

আরুহিঃ তিন নাম্বার ধামাকাতে আমাদের নিবরাজ ভাইয়া চলে এসেছে।

তিন নাম্বার ধামাকাটা মিহুর হজম হলো না। রাজকে এরকম রুপে দেখে মিহু অজ্ঞান হয়ে ঢলে পরলো।পরে যাওয়ার আগে আরুহি ধরে ফেললো।

আরুহিঃ এই মিহু কি হয়েছে তোর?
নিবরাজঃ মিহু,কি হলো তোমার?

মিহুকে রাজ কোলে করে সোফায় শুইয়ে দিলো।আরুহি ওর পাশে বসে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করতে লাগলো।আরো অনেকক্ষণ ৪ জন মিলে ইচ্ছে মতো ফাইট করলো।সব গার্ড রক্তাক্ত অবস্থায় নিচে পরে আছে।শুধু অঙ্কু এখনো ঐশিকের সাথে ফাইটিং করছে।

ঐশিকঃ মেহরাব আমি হয়রান হয়ে গেছি।এবার তুই এটাকে সামলা।

হঠাৎ অঙ্কুর চোখ নিবরাজের দিকে গেল।রাজকে দেখে ওর চোখ কপালে।

অঙ্কুঃ নিবরাজ, তুই এখানে?তুই মরিস নি😳😳?
নিবরাজঃ দেখ তো পোলায় কয় কি?মরলে আবার কেমনে আইলাম?এতো তাড়াতাড়ি টপকাইলে কেমনে হইবো?এহোনো তো বিয়াই করলাম না।যদি মরতাম তাহলে তোরে আমি চারদিনের কুলখানির দাওয়াত দিডাম না।(আরুহির দিকে তাকিয়ে বললো)আমার কথাগুলো মিহুর মতো হয়েছে?

আরুহিঃ একে বারে খাপে খাপ হইছে।ছেমড়ারে অনেকক্ষণ ধরে কনফিউশানে রাখছি।এবার সবকিছু বলে দেও। নইলে বেচারা কিছুই বুঝবো না।

মেহরাবঃ পুরো ঘটনা খুলে বলছি।তার আগে দেখতো, এই ছেমড়ি আবার অজ্ঞান হইলো কে?মুখে পানির ঝাপটা মার।কাজ না হলে বালতি ভরে পানি এনে শরীরে ঢেলে দিস।

☘️☘️☘️

প্রত্যেকের শার্ট ছিঁড়ে গেছে। শরীরে,মুখে, নানা জায়গা কেটে গেছে। সেখান থেকে রক্ত পরছে। ঐশিকের শরীরে শুধু একটা পাতলা গেঞ্জি।

ঐশিকঃ মিস্টার অঙ্কু চৌধুরী। তুই যখন প্ল্যান করছিলি তখন তোর সাথে জিহান মানে রিশিক তো ছিলোই।তাই সবকিছু আমরা রিশিকের থেকে জেনেছি। তারপর যখন মিহুকে কিডন্যাপ করলি তখন তো আমি ও মেহরাব জানালা দিয়ে সবই দেখলাম।মিহুও আগে থেকে সব জানতো।তাই কোন রকম বাহানা না করে তোর গাড়িতে উঠে গেল। তুই যখন আরুহির সাথে নিবরাজকে মারার জন্য কথা বলছিলি তখন ওর মোবাইলে আমাদের সাথে কানেক্ট ছিলো।তাই নিবরাজের ব্যাপারটাও জানতে পেরেছি। আরুহিকে আমরা তৈরি থাকতে বললাম।নিবরাজকেও সবকিছু জানিয়ে দিলাম।

নিবরাজঃ আমি সবকিছু জানার পর এমন ভাব করলাম যে আমি কিছুই জানি না। আর তুই তাই বিশ্বাস করলি।আরুহিকে মিহুর বদলে আমাকে মারতে পাঠালি।আরুহি যখন গাড়ি থেকে নামলো তখন ইশারায় আমাকে সব ঠিক কিনা তা জিজ্ঞেস করলো। আমিও ইশারায় বুঝিয়ে দিলাম সব ঠিক আছে। সাথে সাথে লাইট অফ করে দিলাম।আগে থাকতেই লাল রং,ভাঙা ইট ও অনান্য জিনিস এনে রেখে ছিলাম।ঐ দিন রিসোর্টে আমি একা ছিলাম না। সাথে আমার ১৫ জন ফ্রেন্ড ছিলো।ওরা পুরো রিসোর্টে তোর খবর দিচ্ছিলো।আমি ব্লুটুথে ওদের সাথে কানেক্টেড ছিলাম।আরুহি যখন আমার পেছনে দাঁড়ালো তখন সব লাইট অফ ছিলো।তুই যখন দেখলি আরুহি ইট হাতে নিয়ে আমার পেছনে আছে। ঠিক তখনি আমার উপরে থাকা লাইট টা অফ হয়ে গিয়েছিল। যেটা তুই খেয়াল করিসনি।কারণ তখন আমার এক ফ্রেন্ড তোকে কল দিয়ে বিজি রেখেছিলো।সেই সুযোগে আরুহি ইট ফেলে দিলো। আর সাথে সাথে আমার ফ্রেন্ডরা আমার মাথার নিচে ও চারিদিকে লিকুইড রং ছিটিয়ে দিলো।আস্ত ইটটাকে বদলে অন্য ভাঙা দুটো ইটের টুকরো সামনে রাখলো।আরুহিও গ্লিসারিন দিয়ে আমায় ধরে কাঁদতে লাগলো। আর তুই কিছু সময় কথা বলে চলে গেলি।আমিও এই সাতদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলাম।তাই দেখতে পাসনি।

মেহরাবঃ এবার আমাদের এক্সিডেন্টের কথা বলি।বাসা থেকে আগেই খবর পেয়েছি রাস্তায় আমাদের ক্ষতি হতে পারে। তবুও বের হয়ে গেলাম।অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছিলাম আমাদের পেছনে একটা ট্রাক ধাওয়া করছে।ট্রাকটা যখনি আমাদের পেছন থেকে ধাক্কা দিলো।তার আগেই আমরা গাড়ির দুই দিক দিয়ে লাফ দিলাম।সেখানে আমাদের লোক ছিলো।কারণ আমাদের নির্দিষ্ট জায়গায় এসে আমরা লাফ দিয়েছি।সেখানে আগের থেকে সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম।আমাদের লোকেরা ফোম বিছানো রেখেছিলো।ফোমগুলো সরিয়ে শরীরে লিকুইড রং মেখে পরে রইলাম।হসপিটালে নেওয়ার পর ডাক্তারকে বলতে বললাম আমরা একজন কোমায় ও আরেকজন প্যারালাইজড হয়ে গেছি।তুই আজ যখন হাসপাতালে আমাদের মারতে লোক পাঠিয়েছিলি।তাদের খবর কি তুই জানিস?তাদের সবাইকে আমরা দুই ভাই মিলে মেরে ঐ হসপিটালে ভর্তি করে রেখে এসেছি।

অঙ্কু অবাক চোখে সবার দিকে তাকিয়ে আছে। ওকে সবাই মিলে কি বোকা বানালো?আর সেটা ও একটুও টের পায়নি।অঙ্কুর মুখ দেখে সবাই মিটমিট করে হাসছে।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here