#বোনু
#সিজন_০২
#Part_25
#Writer_NOVA
এতক্ষণে মিহুর জ্ঞান ফিরে এসেছে। মিহু হাত দুটোকে উপরের দিকে মেলে দাঁত গুলো বের করলো।তারপর Close Up পেস্টের এড দেওয়ার মতো করে একটা হাসি দিলো।
মিহুঃ এই ছেমড়ায় মনে করছে ওর কি জানি স্কটল্যান্ডের ড্রাগ না কি ঐডার কারণে আমি ৭ দিন সেন্সলেস হইয়া আছিলাম।ছোট ভাইয়ু আমাকে সেই কবে জ্ঞান ফিরিয়ে আানছে।আমিতো প্রতিদিন বাইরে হাওয়া খাইতে বের হতাম।বোরখা পরে পেছনের দেয়াল টপকে বাইরে যেতাম।ঘুরে-ফিরে,খেয়ে,গোসল করে আবার সেই কফি কালার গাউন পরে চেয়ারে পরে থাকতাম।যেহেতু ওর আসার সময় ছিলো বিকেল ৫ টা।তাই তার আগেই এখানে এসে বসে অজ্ঞান হয়ে পরে থাকার অভিনয় করতাম।রাতে ছোট ভাইয়ুর সাথে বাড়িতে ফিরে যেতাম।সকালে আবার ফিরে আসতাম।যেহেতু আমাকে দেখে রাখার দায়িত্ব ছোট ভাইয়ুর ছিলো।আমার কি এসব করতে কোন সমস্যা হতে পারে? তোমরাই বলো।
আরুহিঃ কিভাবে করছিস এসব?
মিহুঃ আমার ৬ জন হারামজাদা এন্ড জাদী আছে না।তাগো নিয়া।
রিশিকঃ মিস্টার অঙ্কু চৌধুরী এবার সব ক্লিয়ার।
অঙ্কু আস্তে করে সবার চোখের আড়ালে গানটা তুলে নিলো।নিবরাজ অন্য দিকে ঘুরে ওর হাতে থাকা গানটা দিয়ে অঙ্কুর হাতে শুট করলো।অঙ্কু গান ফেলে দিয়ে হাত চেপে ধরলো। হাত দিয়ে রক্ত পরছে। গুলির শব্দে মিহু লাফ দিয়ে আরুহিকে জরিয়ে ধরলো।
নিবরাজঃ আমি কোন গ্যাংস্টার নই।কোনো মাফিয়াও নই।আবার তোর মতো কোন ইলিগ্যাল কাজও করি না।এই গান দুটোর লাইসেন্স আছে।শিখে রেখেছি,কাজে তো লাগবেই।
মিহুঃ বা–প–রে🥶!!!!! আমি এমনিতেই শুটার ভয় পাই।তার ওপর নিবরাজ চিলি মসলার এই রূপ দেইখা আমি অজ্ঞান হইয়া গেছি।এত কিছু তলে তলে। আমি এখন থিকা সব কথা শুনমু তার।নইলে কবে আবার আমারে উপরে পাঠায় দেয়।আমিতো এতদিন গুটি খেলছি।ভাবছি পোলা বলদ-সলদ।কিন্তু এ দেখতাছি মস্তানের থিকাও কম না।সাবধানে থাকিস মিহু।নইলে তোরে যে কি করবো?তুই নিজেও জানস না।বোধহয় কিছু কইবো না।কারণ তোরে তো অনেক ভালোবাসে।যদি না বাসতো তাহলে আগেই মাইরা ফালাইতো।
(বির বির করে)
নিবরাজঃ কি বিরবির করছো?(কপাল কুঁচকে)
মিহুঃ কিছু না।(ভয়ে ভয়ে)
ঐশিক অঙ্কুর সামনে গিয়ে ওর শার্টের কলার ধরে উঠালো।ওর চোখে স্পষ্ট রাগ দেখা যাচ্ছে।
ঐশিকঃ কি ক্ষতি করছিলো আমার বোনুটা?যার কারণে ওকে দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হলো।সামান্য ২০ কোটি টাকার টেন্ডারের জন্য তুই আমার বোনুটাকে মেরে ফেললি।তোকে আমি ২০ কোটি টাকা দিয়ে দিবো।তুই তোর ভাইকে ফিরিয়ে দিয়ে আসিস।পারবি অন্তুকে ফিরিয়ে আনতে?পারবি না,কোনদিন পারবি না। টাকাতো কোটি কোটি আসবে কিন্তু তোর একমাত্র ভাই কিংবা আমাদের একমাত্র বোনু কখনি আসবে না।সামান্য টাকার শোকে আমার নিষ্পাপ বোনুটাকে শেষ করে দিলি।
মিহুঃ কি বলছো তুমি বড় ভাইয়ু?ও ইশিকে মারতে বলেছে?(অবাক হয়ে)
ঐশিকঃ হ্যাঁ,হির বোনু।৫ বছর আগে রাজশাহীর ২০ কোটি টাকার বড় টেন্ডারটা ওদের পাওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু ভাগ্যক্রমে সেটা আমরা পাই।যার কারণে অঙ্কু ও ওর বাবা অনেক ঝামেলা করে। কিন্তু পাপা তা পাত্তা দেয় না।অঙ্কু যখন জানতে পারে আমাদের বোনু ওর ভাইয়ের স্কুল এন্ড কলেজে পড়ে তখন ওর ভাই দুটোকে আমাদের বোনুর পিছনে লাগিয়ে দেয়।ওর কথায় আমাদের বোনুকে রিকি ও অন্তু মিলে রেপ করে মেরে ফেলেছে।
অঙ্কুঃ আমার ভুল হয়েছে মাফ করে দেও।আর কখনো করবো না। আমিতো আমার দুই ভাই হারিয়েছি।
রিশিকঃ ভাই,দুমুখো সাপকে কখনো বিশ্বাস করবি না। ও বলবে এক করবে আরেক।
মিহু অঙ্কুর সামনে গিয়ে দুই গালে একনাগাড়ে ইচ্ছে মতো চড় মারতো লাগলো।
মিহুঃ তোকে আমি মেরেই ফেলবো। তুই আমার ইশিকে মেরে ফেলেছিস।তাও মাত্র ২০ কোটি টাকার জন্য। তোকে আমি ৪০ কোটি দিবো।দে আমার ইশিকে ফিরিয়ে দে।এনে দে ওকে।ও তো আমার পুতুল খেলার সাথী ছিলো।যেখানে যেতো আমায় নিয়ে যেতো।(কাঁদতে কাঁদতে)
ঐশিক এসে মিহুকে এক হাতে জড়িয়ে ধরলো।
ঐশিকঃ হির বোনু,পাগলামি করিস না।তোর কিছু হলে আমরা তিন ভাই কি নিয়ে বাঁচবো?
মিহুঃ বড় ভাইয়ু,ইশিতো বলেছিলো ও কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না। তাহলে ও আমায় ছেড়ে কেন গেলো?আমায় সাথে কেন নিলো না?
নিবরাজঃ শান্ত হও মিহু।
☘️☘️☘️
মিহু ঐশিক কে ছেড়ে হুট করে নিবরাজকে জড়িয়ে ধরলো। রাজ পুরো অবাক হয়ে হা করে আছে।বেচারা এই মুহুর্তে এটা জীবনেও কল্পনা করেনি।এবার আপনারাই ভাবেন রাজের রিয়েকশনটা কিরকম😂?
মিহুঃ আই এম সরি। আমি সবসময় তোমায় কষ্ট দিয়েছি।তোমায় বুঝতে চেষ্টা করিনি।প্লিজ আমায় মাফ করে দিও।তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেলে আমি বাঁচবো না।
নিবরাজের অবস্থা এখন,আমি জ্ঞান হারাবো,মরেই যাবো।বাঁচাতে পারবে না গো।এতকিছু একসাথে কিভাবে যে সহ্য করবে তাতেই চিন্তায় পরে গেছে সে।একে মিহু ওকে জরিয়ে ধরেছে,তারপর আবার তুমি করে বলছে।রাজের মাথা ঘুরাচ্ছে। যে কোন সময় পরে যেতে পারে। কোনমতে নিজেকে সামলিয়ে মিহুকে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো।
মিহুঃ ধূর,পাগলী।আমি তোমায় ছেড়ে কোথাও যাবো না।
মিহুঃ সত্যিতো!!!!
নিবরাজঃ তিন সত্যি। এবার আমাকে ছাড়ো।এখানে আমার তিন সমন্ধীবাবু আছে।আমার কি লজ্জা করে না বুঝি🙈।
আরুহিঃ ইস,কি লজ্জা, কি লজ্জা? আমার ভাই লজ্জায় গাল দুটো লাল টমেটো হয়ে গেছে। আমি চিন্তা করতাছি আমার ভাই এতো লজ্জা রাখে কোথায়?
নিবরাজঃ মারবো একটা।চুপ কর।
মিহু হেসে উঠলো। এতক্ষণ ওর মাথায় ছিলো না ও কি করছিলো?যখন খেয়াল হলো তখন সে অনেক লজ্জা পেয়ে যায়। রাজকে ছেড়ে ওর পাশে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের বোকামীর জন্য নিজেই এখন আফসোস করছে।
মেহরাবঃ বড় ভাইয়া,এই অঙ্কুকে কি করবে?পুলিশের হাতে তুলে দিবে?
ঐশিকঃ না,পুলিশের কাছে দিলে টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়ে যাবে।ওর ব্যবস্থা আমি করবো।
অঙ্কু তার আগেই সুযোগ বুঝে ঐশিকের হাত থেকে গান ছোঁ মেরে নিয়ে মিহুর দিকে তাক করলো।
অঙ্কুঃ খবরদার কেউ এক পা নড়বে না।নড়লেই হিরের মাথার খুলি উড়িয়ে দিবো।হির মাই কুইন, তোমাকে তো আগেই বলেছিলাম তুমি শুধু আমার, শুধু আমার।তোমাকে যদি আমি না পাই তাহলে আর কারো হতে দিবো না। আল বিদা মাই কুইন। আগে তুমি যাও,একটু পর না হয় আমি যাবো।
অঙ্কু মিহুর দিকে শুট করলো। মিহু চোখ বন্ধ করে জোরে চিৎকার দিলো।ও কিছুক্ষণ পর অনুভব করলো ওর কিছুই হয়নি।চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে দেখলো রিশিক বুকে হাত দিয়ে বসে রয়েছে। ওর হাতের ফাঁক দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত পরছে। অঙ্কু ২য় গুলি করার আগে ওর দেহটা ঝাঁঝরা হয়ে গেলো। একটা গুলি কপালে,একটা বুকের বা পাশে,আরেকটা পেটের মধ্যে। তারপর আরেক দফা সারা শরীরে।ঠাস করে পরে গেল অঙ্কু।মেহরাব,নিবরাজ ও ঐশিকের গান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।
মিহুঃ ছোট ভাইয়ু, কি করলি তুই এটা? আমার জন্য নিজের জীবন কেন বাজি রাখলি?(কাঁদতে কাঁদতে)
রিশিকঃ আমি আমার এক বোনুকে বাঁচাতে পারিনি বিদেশে ছিলাম বলে।ওকে শেষ বারের মতো দেখতেও পারিনি।আর আজ সামনে থেকে তোর ক্ষতি কি করে হতে দিতে পারি? (কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
আরুহিঃ রাজ ভাইয়া, জলদী করে গাড়ি নিয়ে এসো।
ঐশিকঃ মেহরাব জলদী কর।ওকে হসপিটালে নিতে হবে। দেরী করা যাবে না।
মেহরাবঃ রিশিক,কিছু হবে না তোর।আমরা কিছু হতে দিবো না।
☘️☘️☘️
নিবরাজ তাড়াহুড়ো করে গাড়ি নিয়ে এলো।তাড়াতাড়ি করে ওকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হলো।সবাই অপারেশন থিয়েটারের সামনে অপেক্ষা করছে।পুরো মির্জা পরিবার চলে এসেছে। কয়েক ঘন্টা পর ডাক্তার বের হয়ে এলো।ঐশিক দৌড়ে তার কাছে ছুটে গেল।
ঐশিকঃ ডক্টর, আমার ভাই।
ডক্টরঃ হি ইজ আউট অফ ডেঞ্জার।আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানান।শুধুমাত্র তার রহমতে সে বেঁচে গেছে। গুলিটা ঠিক দুই ইঞ্চি নিচে লাগলে পুরো হার্টে লাহতো।তাহলে তাকে বাঁচানো যেতো না।
সবার মুখে হাসি ফুটলো।এতক্ষণ ঐশিকের মা কান্না করছিলো।ডাক্তারের কথা শুনে সেও খুশিতে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানালো।
মেহরাবঃ আমরা দেখা করতে পারি?
ডক্টরঃ এখন নয়।উনাকে কিছু সময় পর বেডে শিফট করা হবে।তখন যেতে পারবেন।
নিবরাজঃ Thank you doctor.
ডক্টরঃ Thanks আমাকে নয়,আল্লাহকে দিন।উনি বাঁচিয়ে দিয়েছে।
ডাক্তার চলে গেল। সবার মুখে হাসি ফুটলো। এতক্ষণ যেনো টেনশনে জানটা বের হয়ে যাচ্ছিলো।সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ছারলো।
কিছু সময় পর……..
একটা মেয়ে হসপিটালের বারান্দা দিয়ে দৌড়ে ওদের সামনে এসে থামলো।দেখতে অপরূপ সুন্দরী। পরনে থ্রি পিস, মাথায় হিজাব বাঁধা। মেয়েটির নাম তমা।
তমাঃ ঐশিক ভাইয়া,রিশিক কেমন আছে?
ঐশিকঃ এখন ভালো আছে।
তমাঃ আমি ওকে দেখতে চাই।
মেহরাবঃ আসুন আমার সাথে।
তমা মেহরাবের সাথে চলে গেল। সবাই অবাক হয়ে তমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
মিহুঃ এইডা কেডা🙄?
ঐশিকঃ কেডা নয় তোর বড় আছে।
আরুহিঃ কে এটা?
ঐশিকঃ বেচারী দুই বছর ধরে রিশিক কে এক তরফা ভালোবাসে।রিশিক বলতেই অজ্ঞান।কিন্তু রিশিক ওকে পাত্তাই দেয় না।
নিবরাজঃ দেখতে হবে না ভাইটা কার।যেমন বোন, তেমন ভাই😬।
মিহুঃ কি বললেন আপনি 😤?
নিবরাজঃ কিছু না😁।
ঐশিকঃ চিন্তা করছি এবার ওর সাথেই রিশিকের বিয়েটা দিয়ে দিবো।বিয়ের পর ঠিক মেনে নিবে।না মেনে তখন যাবে কোথায়।
মিহুঃ তাই করো।
☘️☘️☘️
১৫ দিন পর…….
আজ মির্জা কুঠিরে গোটা খান ও মির্জা পরিবারের সবাই এসেছে। মিহুদের বাড়িতে সবার দাওয়াত।বড়রা নিচে ড্রয়িং রুমে গল্প করছে।আর উপরে মিহু,মেহরাব,ঐশিক,রিশিক,আরুহি,নিবরাজ,
আইজান,রিম,নীলা ও তমা। ১০ জন মিলে আড্ডা দিচ্ছে গেস্ট রুমে। রিশিক এখন অনেকটা সুস্থ।
মিহুঃ ছোট ভাইয়ু এটা তোর জন্য।
রিশিকঃ কি এটা?
মিহুঃ খুলে দেখ।
মিহু রিশিকের দিকে বড় একটা কাগজের বাক্স এগিয়ে দিলো।পুরোটা গিফট পেপার দিয়ে মোড়ানো।উপরে লেখা “ওনলি ফোর ইউ”। রিশিক ভাবলো মিহুর জীবন বাঁচানোর জন্য বোধহয় গিফট দিয়েছে কোন কিছু। কিন্তু গিফট খুলে রিশিকের চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো।
রিশিকঃ হির বোনু,কি এগুলো?
মিহুঃ 😁😁
নিবরাজঃ কি ভাই?
মেহরাবঃ কোথায় দেখি?
আরুহিঃ তোমরা সবাই হা করে আছো কেন?
বাক্সের ভেতরে একটা বড় হরলিক্সের বৈয়াম।যা দেখে সবার চোখ কপালে উঠে গেছে।
আইজানঃ হরলিক্স!!! আর কিছু পাওনি।
মিহুঃ আমি তো আগেই বলছি,যে জিতবে তাকে হরলিক্স দেওয়া হবে।আমার ছোট পেয়ারী ভাইয়ু,নিজের জীবন বাজি রাইখা আমারে বাচাইলো।ফাইটিং করতে গিয়া ওর কত এনার্জি খরচ হইছে।তাই চকলেট হরলিক্স খাইয়া বাকি সব এনার্জি ফেরত নিয়া আইবো।
রিশিকঃ তোকে তো আমি —
মিহুঃ একদম কাছে আসবি না। তুই আমার নাম্বার ওয়ান রিশিক খান সরি মির্জা ভাই।তোরে নিয়া আমি আবার এই ফিল্মটা বানামু।শুধু শাকিব খানের জায়গায় লিখা থাকবো রিশিক মির্জা।কিন্তু একটা সমস্যা হয়ে গেছে 🤔?
ঐশিকঃ কি হির বোনু?
মিহুঃ ওরে ১৫ দিন মামীমা ও আমার মাম্মি যেই পরিমাণ খাওয়াইছে তাতে তো বোগা বিলাই হইয়া গেছে। ওরে নিয়া এই অবস্থায় সিনেমা করলে, নায়ক দেইখা পাবলিক আমারে ইটের কোণা ফিইক্কা মারবো।ওর আগে ওর পেট হাঁটে। জিম কইরা পেট কমাইস।
রিশিকঃ কি বললি তুই?
রিশিক কিছুটা এগিয়ে মিহুর কান টেনে ধরলো।
মিহুঃ আহ্ ভাইয়ু।ওহ নো, লাগতাছে তো ছাড়।বড় ভাইয়ু কিছু কও এই বোগা বিলাইডারে।
ঐশিকঃ রিশিক ছাড় ওকে।
মেহরাবঃ একদম ঠিক আছে।
মিহুঃ হুলো বিলাইরে, তোরে আমি পরে দেইখা নিমু।
ওদের কান্ড দেখে সবাই মিটমিট করে হাসছে।রিশিক ওর কান ছেড়ে দিলো।
আরুহিঃ হরলিক্স তো দিলি, কিন্তু টিফিন বক্স কই?
মিহুঃ ঐডাতো মাম্মি যখন ওর জন্য হসপিটালে খাবার নিয়ে গিয়েছিলো তখন দিয়ে দিছি। ঐ টিফিন বক্স বোধহয় হারায় গেছে। থাক,কান্দিস না ভাইয়ু আমার।ঐডার বদলে তোরে একটা ছোট চা চামচ দিয়া দিমুনে।
রিশিকঃ আবার শুরু করলি😐?
☘️☘️☘️
মিহু রিশিকের কথায় কান না দিয়ে রিমের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
রিমঃ এমন কইরা কি দেখোস?
মিহুঃ তুই এইখানে কি করোস🤨? তোরে তো আমি দাওয়াত দেই নাই।বিনা দাওয়াতে খাইতে আইয়া পরছত?নিশ্চয়ই রাস্তার পাশ দিয়া যাওয়ার সময় পোলাও এর ঘ্রাণ পাইছোত।তাই ছুইট্টা আইয়া পরছোত।
রিমঃ ঐ তোরে কে কইছে?(রেগে)
মিহুঃ কেউর কইতে হইবো নাকি।আমি আমার বান্ধবীরে চিনমু না।এমনটা কি হতে পারে?
আইজানঃ কি যা তা বলছো?
মিহুঃ ঐ নেংটি ইঁদুর, আমি অপমান করতাছি আমার বেস্টুরে।আপনের লাগতাছে কে?
আরুহিঃ আইজান তোমার বান্ধবীকে ভালোবাসে তাই।
নিবরাজ,মিহুঃ কি-ই-ই-ই!!!(অবাক +চিৎকার করে)
রিম ওদেরকে সব কিছু খুলে বললো।ভেলেন্টাইস ডে তে তো ওরা কলেজে ছিলো না।
নিবরাজঃ তোকে আজকে খাইছি।শয়তান,আমাকে বড় বড় ডায়লগ দিয়ে এখন নিজে থ্রেট দিয়ে প্রপোজ করছিস।আজ পর্যন্ত আমি পারলাম না মিহুকে হুমকি দিতে আর তুই সোজা প্রপোজ?(অবাক হয়ে)
মিহুঃ নেংটি ইঁদুর-টারে ভাবছিলাম ভাজা মাছটা উল্টায় খাইতে পারে না।এখন তো দেখতাছি,কাঁটা সুদ্ধ খাইয়া ফেলায়।তুমি দাঁড়াও। তোমারে আমি হসপিটালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতাছি।আমি না থাকায় সুযোগ কাজে লাগাইছো।তোমারে তো আমার স্টিক দিয়া একটা বারি দিমুই দিমু।
আইজান সারা বাড়িতে দৌড়ে পালাচ্ছে। পেছনে নিবরাজ ও মিহু।রাজের হাতে ক্রিকেট স্ট্যাম্প ও মিহুর হাতে হকি স্টিক। বেচারা জানের দুইবার রাউন্ড দেওয়া শেষ।কিন্তু ওকে বাগে পায়নি। মিহু ও রাজ হয়রান হয়ে উপরে চলে গেল। জান নিচে বড়দের সাথে বসে আছে। উপরে গেলেই সোজা উপরে পাঠিয়ে দিবে।
মেহরাবঃ ধরতে পারলি?
নিবরাজঃ না,বড়দের সাথে বসে রয়েছে। সবসময় আমাকে বকতো আমি নাকি মিহুর জন্য পাগল।এখন নিজে কি করছে?
মিহুঃ ওকে হাতে পেলে যে আমি কি করবো তা নিজেও জানি না। (সবার দিকে তাকিয়ে) দাঁড়াও সবার জন্য আমি একটা নতুন রেসেপি বানিয়ে আনছি।
মিহু আর কোন কথা না বলে কিচেনে চলে গেল।
রিশিকঃ কি বানাবে বোনু?
মেহরাবঃ কে জানে?
ঐশিকঃ ও তো জীবনে কিচেনেও যায়নি।
আরুহিঃ যায় নাই তো কি হয়েছে? এখন যাবে।আমার ভাইকে খাওয়াতে হবে না।
নিবরাজঃ নীলা এন্ড তমা আপু।একদম চুপচাপ যপ,কিছু তো বলেন।
নীলাঃ আমি আপনাদের ভাই-বোনের কথার মাঝে কি বলবো?
তমাঃ বলার থেকে শুনতেই ভালো লাগছে।
রিমঃ তেনারা নিরব দর্শক।
সবাই নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে লাগলো।কিন্তু তার মধ্যে সবার একটাই চিন্তা, মিহু আসলে ওদের জন্য বানাবেটা কি?যে জীবনে কিচেনে পা রাখেনি।সে আজ নতুন রেসেপি বানাবে।অদ্ভুত কথা তাই না???
#চলবে
মিহু সবার জন্য কি বানাতে পারে বলুন তো?দেখি কেউ সঠিক উত্তর দিতে পারেন কিনা🙃🙃।