কৌমুদিনী পর্ব-২৮

0
1659

#কৌমুদিনী
#তাফসিয়া_মেঘলা
#পর্ব ২৮

৫৪

ঘর জুরে পিনপতন নীরবতা বিরাজমান বাইরে বৃষ্টির টিপ টপ ধ্বনি ছাড়া কিছুই শোনা যাচ্ছে না আর৷ থমথমে হয়ে আছে সবাই৷ সবাই থমথমে গম্ভীর হয়ে থাকলেও ফারহানের উষ্ঠ কোণে জুলে আছে হাশির রেশ৷কুটিল বিশ্বজয়ের হাশি৷

পৈচাশিক আনন্দ পাচ্ছে আজ সে৷ মেহনুবা স্বাভাবিকই আছে, আহসান মীর গম্ভীরমুখে আছে মেহনুবা জানতো এমন হবে৷ সে নিজে আহসান মীর কে মানা করেছিলো আহসান মীর শুনেনি৷ তারা যদি নাকোচ করতো তাহলে এখানে আসতো না তখন শ্রেয়াস কে তারাই বলে দিতো তারা রাজি নয়৷ এখন যদি জানে চন্দ্রিকা ওকে বিয়ে করতে মানা করে দিয়েছে আজ এ রাজ্যে বোধহয় আগুনই লেগে যাবে৷। এতে মেহনুবার ব্রুক্ষেপ নেই তার মতামত একটাই ছিলো তার চন্দ্র যা বলবে সে তা বলবে চন্দ্র না করেছে মানে সে কখনোই চন্দ্রিকার বিরুদ্ধে যাবে না৷ তার দেখানো পথে চন্দ্রিকা বড় হয়েছে মেহনুবা জানে তার চন্দ্র ভুল কাজ করবেই না কখনো৷

আহসান মীর এবার মুখ খুললেন তবে তার কন্ঠে গম্ভীর্যতা ফুঁটে আছে স্পষ্ট৷ সে আজ বেশ আ’হত হয়েছে এটা চন্দ্রিকা থেকে আশা করে নি৷ কেন এমন নাকোচ করছে? এ তো ঠিকই ছিলো তাহলে আজ কেন এসব বলছে?
আহসান মীর জানে মেহনুবা চন্দ্র বলতে অন্ধ এ কথা সে আবেগ দিয়ে আর আগে বাড়াতে পারবে না কঠিন হয়েই কিছু করতে হবে তা ছাড়া যেখানে দুই পরিবার রাজি সেখানে ওদের মতামত এর কথা প্রশ্নই আসে না৷
আহসান মীর কঠিন কন্ঠে বললেন,
” চন্দ্র তোর থেকে এটা আশাকরি নি আমি৷ আর তোর মতামত এখানে নিতে আসিনি আমরা৷ আমি শুধু জানাতে এসেছি আমার শ্রেয়াস রাজি আমরা এবার এ কথা এগোবো৷”
চন্দ্রিকা এবার আহসান মীর এর মতই কঠিন কন্ঠেই বললেন,
” দুঃখিত নবাব আপনার কথা আমি মানতে পারছিনা৷ আমার জীবন আমার সিদ্ধান্ত৷ আমি আপনার ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি নই৷ উহু আপনার ছেলে বললে ভুল হবে আমি এখন বিয়ে করতেই রাজি নই৷ ”

আহসান মীর ভেতর ভেতর দমে গেলেন৷ এই মেয়ের সাথে সে কোন দিনই পেরে উঠেনি, আজ পারবে কি করে? কিন্তু আজ তার মানে লেগেছে আর তার শ্রেয়াস চেয়েছে চন্দ্রিকাকে সে তার ছেলে মেয়ের কোন ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখে নি এটাও রাখবে না৷
ভিতর ভিতর দমে গেলেও উপরে তা বুঝতে দিলো না সে কঠিন কন্ঠে বললো,
” তোর সাহস দিন দিন বাড়ছে চন্দ্র৷ যদিও আমি এতে কিছু মনে করছিনা আমার রাজ্যের ভবিষ্যৎ রানী এমন না হলে হয় নাকি? আমি আগেই বলেছি তোর কথা শুনতে আসিনি তোর পরিবার রাজি আমি জানি৷ ”
আহসান মীরের কথা শেষ হতে না হতেই মারজিয়া খুশিতে বাক-বাকুম হয়ে বলে,
” নবাব আপনি চিন্তা করবেন না ও বিয়ে করবে ওর মতামত কিছুনা আমি আর চন্দ্রের মা রাজি৷ ”
চন্দ্রিকার মা ও সম্মতি দিলো৷ কিন্তু মারজিয়ার এত খুশি হওয়ার কারণ বুঝলো না৷ সব সময় তো চন্দ্রিকার খারাপ চেয়েই এলো আজ হঠাৎ কি হলো? রাজকুমারের সাথে বিয়ে হবে তাই?

ফারহানের রাগ বাড়ছে মায়ের প্রতি৷ কোন মত নিয়ন্ত্রন করে রেখেছে নিজেকে ও জানে চন্দ্রিকা যখন এক বার না করেছে চন্দ্রিকাকে ‘হ্যাঁ’ বলানোর সাধ্য কারো নেই তাই আপাদত চুপই আছে৷
চন্দ্রিকা রাগ নিয়ে কঠিন হয়ে বললো মারজিয়ার উদ্দেশ্যে ,
” সারা দিন তো আমার মৃত্যু কামনা করে থাকো চাচি আজ আবার কি হলো আমার বিয়ে নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছো? তোমাদের কি মিনে হয় তোমাদের কথায় আমি চলবো নাকি? করবো না আমি এ বিয়ে৷ ”
চন্দ্রিকার মায়ের এবার রাগ হলো৷ কেউ নিজের পায়ের কাছে সুখ এভাবে দূরে ঠেলে দেয়? এ মেয়ে এমন কেন করছে? তারা তো ওর ভালোই চায় বুঝে না কেন?
চন্দ্রিজার মা রাগী কন্ঠে বলে,
” চন্দ্র এবার তুই বেশি বাড়াবাড়ি করছিস ছোট থেকে কিছু বলিনি তাই ভাবিস না কিছু বলবো না৷ নির্লজ্জের মত বড় দের মুখে তর্ক করছিস কেন? নবাব রানিমা যা বলেছে তাই হবে৷ ”
চন্দ্রিকা মায়ের কথা শুনে বিরক্ত হলো৷ মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় এটা ওর মা তো? চন্দ্রিকা স্বাভাবিক ভাবে মেহনুবার দিকে এগিয়ে গেলো ও জানে ও কিছু ভুল করছে না আর কেউ ওকে সমর্থন না করলেও মেহনুবা ঠিক করবেই৷

মৃদু হেসে মেহনুবার দিকে প্রশ্ন ছুড়লেন,
” আম্মা আমি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি?”
রানী মেহনুবা চন্দ্রিকার হাত আঁকড়ে ধরে বলে,
” চন্দ্র যা বলছে তাই হবে চন্দ্রের অমতে কিছু হবে না৷ ”
বলে সে আর দাঁড়ালেন না বড় বড় পা ফেলে চলে গেলেন৷ সে কেমন যেন এখন দোটানায় পরে গেছে মেহনুবা তার ছেলেকে ভালো করেই চিনেন ও ছেলে জানলে কি করবে জানা নেই৷ তবে চন্দ্রিকার অমতে এ বিয়ে সে কিছুতেই দিবেন না৷

আহসান মীর এবার আশাহত হলো আজ সে বেশ আ’ঘাত পেয়েছে৷ কিন্তু এই মেয়ের দাম্ভিকতা সে ভাঙবেই দরকার পরে ছেলেকে বলে এই মেয়েকে তুলে নিয়ে হলেও ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিবে৷ শ্রেয়াস জানলে এমনিও ছাড়বে না৷ আহসান মীর নিজের ছেলেকে ভালো করেই জানে ভেবেই উষ্ঠ কোণে হাশির রেশ ফুঁটলো আহসান মীরের৷ এতদিন রাজ্যের জন্য এত কিছু করেছে আজ না হয় ছেলের জন্য এইটুকু করলো? তার পূত্র বধু তো এই ঘাড় বাঁকা মেয়েকেই করবে৷

আহসান মীর যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে গিয়েও থেমে গেলেন চন্দ্রিকার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বললেন,
” আমি জানি তুই ঘাড় বাঁকা মেয়ে আমার সাথে তোর না লাগলে কখনোই পেটের ভাত হজম হয় না৷ শুনে রাখ চন্দ্র তুই তো আমার শ্রেয়াসেরই রানী হবি বলে রেখে গেলাম সাবধাণে থাকিস৷ ”
বলে কুটিল হাসতে হাসতে বেড়িয়ে গেলেন৷ এতে চন্দ্র সহ সকলেই বিস্মিত হলেন৷ সতর্ক করে দিয়ে গেলেন নাকি ছোট খাটো হুমকি ছিলো এটা?
বাপ ছেলে দুজনেই পাগল ভাবলো চন্দ্রিকা৷ আহসান মীর যেতেই চন্দ্রিকা থমথমে কন্ঠে বলে,
” আমি এ বিয়ে করবো না৷ এ নিয়ে কোন আলোচনা যেন না হয় এ বাড়িতে, সবাই কথা কর্ণকুহরে ঢুকিয়ে নাও৷ ”
বলেই চন্দ্রিকা যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মারজিয়া অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলে,
” বিয়ে করবি না ঢলাঢলজ করবি এ হতে দিবো না৷ বিয়ে তো তোকে ওই রাজকুমার কেই করতে হবে দেখি কে আটকায়৷ আর আমার ছেলেও যদি এতে কিছু বলতে আসে ওকেও মানবো না৷”

চন্দ্রিকা রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো মারজিয়ার পানে ফারহান এর শরীর রাগে রি রি করছে৷ তার এখন চন্দ্রিকাকে পাওয়ার আশা মাথায় ঝেঁকে বসেছে উম্মাদের মত আচরণ শুরু করে দিলো ফারহান৷ তার দেহের র’ক্ত শিরশির করছে৷ খাবার টেবিলের উপরে থাকা ফল কাঁ’টার ছু’রির দিকে নজর গেলো হঠাৎই খপ করে ছু’রি টা নিয়ে তেরে এলো মায়ের দিকে৷ মারজিয়া ‘হায় আল্লাহ’ বলে ছি’টকে সরে গেলো৷ চন্দ্রিকা দেখা মাত্রই আট’কালো৷ ফারহান কেমন অস্বাভাবিক এর মত আচরণ শুরু করে দিয়েছে ফারহানের এমন আচরণ মোটেও ঠিক লাগলো না চন্দ্রিকার ফারহান চন্দ্রিকা কে ছিটকে ফেলে ফের মায়ের দিকে গিয়ে বলে,
“মে’রে দিবো তোকে, চন্দ্র আমার৷ চন্দ্র আমার সব শেষ করে দেবো ওই শ্রেয়াস, আহসান মীর কাউকে ছাড়বো না চন্দ্র কে আমার থেকে যে কেড়ে নিবে কাউকে ছাড়বো না৷ ”
বলে মারজিয়াকে ছু’রি দিয়ে আ’ঘাত করবে তখনই চন্দ্রিকা গিয়ে খপ করে ধরে ফেলে৷ যার ফলে চন্দ্রিকার হাতের কবজিতে ছু’রির আ’ঘাত লাগে৷ সাথে সাথেই ফারহান ছু’রিটা ফেলে চন্দ্রিকার হাত চেপে ধরলো৷
ভরে এলো ফারহানের চোখ নিজেই নিয়ে বসালো সামনের চেয়ারে কেমন অস্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
” চন্দ্র তোকে আমি মা’রতে চাই নি৷ কষ্ট পেয়েছিস চন্দ্র? আমায় মাফ করে দে তোকে আমি মা’রতে চাইনি৷ ”
বলে থামলো ফারহান এইটুকু বলে নিজের ঘরে ছুটে গেলো প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্সটা এনে র’ক্ত মুছে ব্যান্ডেজ করে দিলো৷
অতঃপর চন্দ্রিকার সামনে থেকে উঠে কেমন পাগলের মত কিছু খোজা শুরু করলো নিচ থেকে ছু’টা ফের তুলে খচ করে নিজের বাহুতে আ’ঘাত করে শক্ত কন্ঠে বললো,
“কিন্তু আমি তো তোকে আ’ঘাত করেছি৷ কষ্ট দিয়েছি তোকে৷”
ঘটনা গুলো এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে রইলো সবাই৷ মারজিয়া তখনই বড় ঝটকা খেয়েছে যখন নিজের ছেলে তাকেই মা’রতেই এসেছে, সে তখন সরেও নি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো৷ তার শরীর ও রাগে কাঁপছে এই মেয়েটার জন্য তার ছেলে তাকে মা’রতে এলো?
ফারহান ফের নিজের বাহুতে আ’ঘাত করবে এর আগেই চন্দ্রিকা ধরে গিয়ে৷ এ ফারহান একদমই অচেনা ফারহান স্বাভাবিক নয় কেমন উম্মাদের মত আচরণ করছে৷ চন্দ্রিকা রাগী কন্ঠে বলে,
“কি করছেন ফারহান ভাই? পাগল হয়ে গেলেন?”
ফারহান চন্দ্রিকার হাত ধরে কেমিন ফুঁপিয়ে উঠলো আরো বিস্মিত হলো সবাই৷ ফারহান চন্দ্রিকাকে বসিয়ে তার হাটুর সামনে বসে বলে,
” বিশ্বাস কর চন্দ্র আমি তোকে ভালোবাসি৷ তুই আমার চন্দ্র আমি মিফতাকে হাড়িয়েছি তোকে হা’রাতে পারবো না৷ আমার মিফতা তোকে ভালোবাসতো আমিও তোকে ভালোবাসি চন্দ্র৷ আমাকে ছেড়ে দিস না চন্দ্র তোকে ছাড়া আমি আঁধারে হাড়িয়ে যাবো৷ ”
চন্দ্রিকা মিফতার কথা শুনে বিস্মিত হলো তার মানে সত্যি মিফতাকে ভালোবাসতো ফারহান? তাহলে ওকে কেন?
হঠাৎ ফারহানের বাহুতে আঘাতের কথা পরলো ফারহানের হাত ধরে নিজের জায়গায় বসিয়ে বলে,
” আপনার হাত থেকে র’ক্ত পরছে ফারহান ভাই ব্যা’ন্ডেজ করতে হবে৷ ”
চন্দ্রিকার মা এগিয়ে এলো কিন্তু মারজিয়া এলো না সে এই বদমাশ ছেলের কাছে আসবে না৷ এমন হবে জানলে আগেই মে’রে ফেলতো এই ছেলেকে৷

ফারহান ঠিক নেই মানুসিক ভাবে ঠিক নেই বুঝলো চন্দ্রিকা কথা বললো না চুপ চাপ ফারহানের বাহুতে ব্যা’ন্ডেজ করে দিলো৷
ফারহানের আচরণ আগে থেকেই লক্ষ্য করছে সে দিন ও দেখেছে চন্দ্রিকা৷ হঠাৎ ফুঁপিয়ে উঠে আবার হঠাৎই রেগে গিয়ে উম্মাদের মত আচিরণ করে৷
চন্দ্রিকাকে চুপ থাকতে দেখে রেগে যায় ফারহান উঠে চন্দ্রিকার গাল চেপে ধরে বলে,
“কথা বলছিস না কেন? ওই শ্রেয়াসের সাথে কথা বলার সময় তো মুখে খই ফুঁটে৷ বল চন্দ্র আমার সাথে কথা বল৷”
চন্দ্রিকার রাগ হলো এবার তার কথায় কথায় গায়ে হাত মোটেও পছন্দ না নিজের গাল থেকে ফারহানের হাত ছাড়িয়ে বলে,
” বাড়াবাড়ি করছেন এবার৷ আপনি ঠিক নেই মানুসিক ভাবে অসুস্থ, মিফতাকে আপনি ভালোবাসতেন মিফতা সমসময় আমায় ভালোবাসতো তাই ওর জন্য আমায় ভালোবাসছেন? আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন ফারহান ভাই এটাকে ভালোবাসা বলে না৷ ”
ফারহানের রাগ হলো ওর ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে?
ফারহান রাগে চিৎকার করে বলে,
” এটা ভালোবাসা আমি তোকে ভালোবাসি সত্যি ভালোবাসি৷ আমি তোকে আর মিফতাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না৷ বাঁচতে পারবো না তোদের দুজনকেই আমার চাই৷ ”
বলে আর দাঁড়ালো না ছু’রিটা নিয়ে হনহন করে সিড়ি বেয়ে উপরে গেলো৷ চন্দ্রিকা বুঝলো না ফারহানের কথার মানে মাথা ঘামালো না ফারহান ছু’রি নিয়ে গেছে এ কথা মাথায় আসতেই ফারহানের পিছু পিছু ছুটলো চন্দ্রিকা৷
ফারহান চিলেকোঠার এ ঘরের দিকেই এসেছে চন্দ্রিকাও দৌড়ে এলো ফারহান কপাট লাগানোর আগেই চন্দ্রিকা যা দেখলো মোটেও প্রস্তুত ছিলো না বড় এক ঝটকা খেলো৷
অস্পষ্ট কন্ঠে শুধু বললো,
“রাজ,,,,,”
এইটুকু বলতেই হঠাৎ পিছন থেকে কেউ মুখে কাপর চেপে ধরলো নাসারন্ধ্রে তীব্র কিছু গন্ধ ঢুকতেই শ্বাস আঁটকে এলো চন্দ্রিকার ঝাপসা হলো চোখ আর কিছু দেখতে পেলো না বন্ধ করে ফেললো নেত্র জুগল৷

চলবে,

[নোটঃ ১৫৮০ শব্দ৷ আজ বিশাল পর্ব দিয়েছি৷ ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here