কৌমুদিনী পর্ব-২৯

0
1750

#কৌমুদিনী
#তাফসিয়া_মেঘলা
#পর্ব ২৯

৫৫
চারোদিকে আঁধার নিবিড় প্রগাঢ় আর নিস্তব্ধতা নিরবতা বিস্তৃত রয়েছে৷ ঝড়ের মাঝে কিছুক্ষণ পর পর বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে দক্ষিণ দিকের একটা জানালার কাঁচ ভা’ঙা সেই জানালা দিয়ে প্রবেশ করা কিছুক্ষণ পর পর এক ফালি আলো পুরো কক্ষখানা আবছা আলোকিত করে দিচ্ছে বাইরে এখনো ঝড়ের তান্ডব চলছে৷

মধ্যরাত চলছে প্রায় জানলাটা দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর আসা পানির ঝাপটা মুখে আসতেই চেয়ারে বসে থাকা চন্দ্রিকা কিছুক্ষণ পর পর চোখ মুখ কুঁচকে নিচ্ছে৷ মাথায় তীব্র যন্ত্রনা হওয়ায় নেত্র জোরা টেনেও খুলতে পারছে না৷ আবার তীব্র বাতাসে মুখে পানির ফোটা এসে পরতেই পিট পিট করে নেত্র জোরা খুললো চন্দ্রিকা৷

হঠাৎ কিছু মনে পরতেই আশেপাশে দৃষ্টিপাত করে নিজের অবস্থান বোঝার চেষ্টা চালালো৷ চিনেও ফেললো জায়গাটা রাজবাড়ীর পুরোনো একটা কক্ষ এখানে সাধারণত পুরোনো আসবাব রাখা হতো কিন্তু ও এখানে এলো কি করে? কে নিয়ে এসেছে?
হঠাৎ তখনকার কথা মনে পরতেই হাত পা কেঁপে উঠলো৷ কি করে হতে পারে ওটা? কাকে দেখলো? সত্যি কি ঠিক দেখেছে? নিজের চোখ কে আজ বিশ্বাস করতে পারছে না৷ ফারহানের মাথায় কি চলছে? না ওকে যে করেই হোক এখান থেকে বের হতে হবে৷

হাত পা বাঁ’ধা এক ফোটা নরতেও পারছে না চন্দ্রিকা কিন্তু এভাবে বসে থাকলে তো আর হবে না৷ সর্বশক্তি দিয়ে এক হাত পেচানো শুরু করলো কিন্তু তেমন কিছু হলো না হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে সাইরেনের মত কিছু বাজা শুরু করলো৷ এ শব্দের উৎস কি জানার জন্য সন্দিহান হয়ে ধাতস্ত হয়ে বসলো৷ ও ঠিক যা ভেবে ছিলো তাই হলো৷ ও নড়লেই শব্দ টা হচ্ছে৷ কে করছে এমন? কেনইবা করছে?

চন্দ্রিকার ভাবনার মাঝে হঠাৎ কেউ প্রবেশ করলো কক্ষে চন্দ্রিকা তীর্যক দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো সে দিকে৷ লোকটি আসতেই আলোকিত হয়ে গেলো কক্ষ খানা৷ সামনে থাকা লোকটিকে দেখে র’ক্ত উঠে গেলো মাথায় ক্রুদ্ধ কন্ঠে বলে উঠলো,
” রাজকুমার আপনি? এ কেমন বাচ্চামো? বেঁধে রেখেছেন কেন আমায়? খুলুন৷ ”

চন্দ্রিকার কথায় সামনে থাকা শ্রেয়াস হেসে উঠলো উচ্চ কন্ঠে৷ তাতে চন্দ্রিকার শরীর রাগে আরো রি রি করে উঠলো শ্রেয়াস চন্দ্রিকার সম্মুখে এলো অতঃপর বললো,
” মেয়ে আপনার সাহস দেখে শুরু থেকেই আমি বিস্মিত হচ্ছি৷ বাঁধা অবস্থায় ও কন্ঠ ধ্বনি নিচু হচ্ছে না? বাহ বেশ ভালো৷ ব্যাপার না আমার বউ এমন না হলে মানাবেও না৷”
চন্দ্রিকা র’ক্তিম চোখে শ্রেয়াসের দিকে তাকিয়ে একই কন্ঠে বলে,
“আমাকে এভাবে এখানে বেঁ’ধে রাখার কারণ কি?আপনি ঠিক করছেন না এক বার ছাড়া পাই আপনার অবস্থা কি করি দেখুন৷ ছাড়ুন আমায় কেন এখানে এনেছেন?”

“বিয়ে করতে৷ ”
চন্দ্রিকার প্রশ্ন শেষ হতে দেরি শ্রেয়াসের সল্প ভাষায় উত্তর দিতে দেরি হলো না৷ যেন শ্রেয়াস এ প্রশ্নটারই অপেক্ষা করছিলো৷
চন্দ্রিকা রে’গে ফে’টে পরলো আরো৷ তীর্যক কন্ঠে প্রশ্ন ছুড়লো শ্রেয়াসের দিকে,
” কিসের বিয়ে? পাগল হয়েছেন আপনি?”

শ্রেয়াস অনুভুতি পূর্ন কন্ঠে জবাব দেয়,
“আপনারি৷ হুম আপনারিতো পাগল চন্দ্রাবতী৷ ”
চন্দ্রিকা ইচ্ছে হলো কয়েকটা অকথ্য ভাষায় গা’লি দিতে৷ কিন্তু ইচ্ছে টা দমিয়েই রাখতে হলো কিছু বললো না৷ শুধু নিজেকে ধাতস্থ করে শান্ত কন্ঠে বললো,
” ছাড়ুন আমায় রাজকুমার আমার কাজ আছে অনেক৷ দয়া করে বাচ্চামো করবেন না আমি বিয়ের জন্য প্রস্তুত নই৷”
শ্রেয়াস কিছু বললো না হাসলো শুধু ঠোঁট এলিয়ে, শ্রেয়াসের হাব ভাব ঠিক লাগলো না চন্দ্রিকার কি করতে চাইছে এই ছেলে?
শ্রেয়াস চন্দ্রিকার সামনে থেকে সরে গিয়ে মুঠোফোন টা বের করে কাউকে ফোনে কি কথা বললো বুঝতে পারলো না চন্দ্রিকা৷ অতঃপর ফের চন্দ্রিকার কাছে এলো সন্তপর্ণে একে বারে কাছে এসে তীর্যক হেসে চন্দ্রিকার কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,
” আপনি সহজ ভাষায় কথা কখনোই শোনেন না চন্দ্রাবতী৷ সবসময় আপনার জেদ মেনে নেই বলে আজ নিবো তা ভাববেন না৷ পুরোপুরি আমার হওয়ার জন্য এবার আপনি তৈরি তো?”

চন্দ্রিকা বিস্মিত হলো কি করতে চাইছে এই ছেলে? কি করবে এখন? এমনি দেরি হয়ে যাচ্ছে খুব এমন ভাবে বাঁ’ধা কিছু করতেও পারছে না৷
চন্দ্রিকা তটস্থ হয়ে পরলো কাঠকাঠ কন্ঠে বললো,
“কি করতে চাইছেন আপনি?”
শ্রেয়াস এবার বিরক্ত হলো এ মেয়ে এক প্রশ্ন বার বার করছে কেন?
শ্রেয়াস গম্ভীর কন্ঠে উত্তর দিলো,
” বিয়ে৷ বিয়ে হবে আমাদের৷ ”

চন্দ্রিকা দাতে দাত চেপে শক্ত কন্ঠে বলে,
“করবো না আপনাকে বিয়ে বলিনি আমি? শুনেননি একবার? ”
শ্রেয়াস তেড়ে এসে বলে,
“মে’রে দিবো এখানেই আরেকবার না করলে৷ কেউ জানতেও পারবে না৷ ”
“শাহনেওয়াজ এর মত?”
বলেই তাচ্ছিল্য হাসলো চন্দ্রিকা৷ শ্রেয়াস র’ক্তিম চোখে তাকালো চন্দ্রিকার দিকে৷ এগিয়ে এসে গাল চেপে ধরলো অতঃপর বললো,
” হ্যাঁ শাহনেওয়াজ এর মত৷ তবে আপনাকে না মহলে পাঠানো মায়ের খাস দাসী তমা কে৷ ”
বলে শ্রেয়াস হাসলো৷ চন্দ্রিকা আরো বিস্মিত হয়ে শ্রেয়াসের দিকে তাকালো তখনই প্রিয়ম আর দু’জন মেয়ে দেহরক্ষী তমাকে নিয়ে এলো৷ চন্দ্রিকা অগোচড়ে শুকনো ঢোক গিললো, কি করে কি হলো? তমার কথা জানলো কি করে? তাহলে কি সব বলে দিয়েছে? না তমা মরে যাবে তবুও এমন কিছু করবে না তাহলে? চন্দ্রিকা শান্ত চোখে তমার দিকে তাকালো তমা করুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো৷ ওদের পরিকল্পনা নিখুঁত ছিলো তাহলে তমার কথা জানলো কি করে?
শ্রেয়াস তমার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বাঁকা চোখে চন্দ্রিকার দিকে তাকিয়ে বলে,
” এ মেয়েকে আপনি পাঠিয়েছেন তাই না চন্দ্রাবতী? নামে মায়ের খাস দাসী আর কাজে আমাকে আড়ালে অনুসরণ করা৷ আমার কক্ষে ক্যামেরা লাগানো? বাহ আপনার বুদ্ধির তারিফ করতে হচ্ছে৷ কিন্তু আপনাদের কপাল এতই খারাপ যে আমার কক্ষে আগে থেকেই ক্যামেরা লাগানো ছিলো৷ আচ্ছা এ না হয় বাদ দিলাম, তা আমার ব্যাপারে কি কি জানতে পেলেন?”
চন্দ্রিকা নিজের ভয় টা চেহারায় ফুটিয়ে তুললো না শক্ত কন্ঠেই উত্তর দিলো,
” ছাড়ুন আমায়৷ আমার যা ইচ্ছা হয়েছে করেছি আপনাকে এ উত্তর দিতে বাধ্য নই৷”
শ্রেয়াস রে’গে গেলো আবার হাত দিয়ে কপাল চুলকাতে চুলকাতে পায়চারি করলো কিছুক্ষণ৷ এ মেয়ের এক কথা বার বার অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু আপাদত নিজেকে শান্ত রাখার প্রাণ পন চেষ্টা চালালো৷ একটু পরই এ কক্ষে আয়াশ আর আহসান মীর প্রবেশ করলো সাথে হুজুরের মত একজন লোক৷ লোকটাকে চিনতে কষ্ট হলো না চন্দ্রিকার এ লোক কেন এখানে এসেছে? কিন্তু আহসান মীর আর আয়াশ কে দেখে আরেক তরফা বিস্মিত হলো, আজ কি বিস্মিত হওয়ার দিন নাকি? সব কিছু গোলমেলে হয়ে যাচ্ছে৷
আহসান মীর এসেই ক্ষানিকটা হেসে বলে,
“বলেছিলাম না করে ভুল করলি৷ এখন তোর আম্মাও তোকে কিছু করতে পারলো না৷ ”
আহসান মীরের কথায় পাত্তা দিলো না চন্দ্রিকা৷ আয়াশের দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,
“অফিসার আপনি? আপনার থেকে এটা আশা করিনি৷ কাউকে ছাড়বোনা আমি আপনাকেউ না৷ ”
আয়াশ চন্দ্রিকার কথা শুনেই ফট করে বলে ফেললো,
” আশরিফের মত খু’ন করবেন? আমি চাইলে এখনি আপনাকে নিয়ে যেতে পারতাম কিন্তু আপাদত আমি তা করছি না৷ ”
বলেই বাঁ’কা হাসলো৷ ফের আশরিফের কথা উঠলো ঘোলাটে লাগছে চন্দ্রিকার কাছে সব কিছু করতে পারছে না৷
শ্রেয়াসের কথায় হুজুর বিয়ে পড়ানো শুরু করলো, একজন দেহ রক্ষী এসে চন্দ্রিকার মাথায় লাল কাপড় দিয়ে ঘোমটা টেনে দিলো আর এক হাত খুলে দিলো৷
এক হাত ছাড়া পেতেই চন্দ্রিকা ছিটকে দূরে ফেললো কাপড়টা দাতে দাত চেপে বললো,
“করবো না আমি বিয়ে৷ ”
শ্রেয়াস ক্ষানিকটা হেসে বলে,
” আপনি তমার ভালো চান তো চন্দ্রাবতী? ”
কথাটা শুনতেই চন্দ্রিকা শান্ত হয়ে গেলো আজ নিজেকে অসহায় লাগছে কিছু করতে পারছে না৷ তমাও আজ কিছুই করতে পারছে না৷ আহসান মীরের পৈচাশিক আনন্দ হচ্ছে কঠিন মেয়েটা কেমন চুপসে যাচ্ছে গ্যাস বেলুনের মত৷

চন্দ্রিকার হঠাৎই কি হলো কে জানে হাসলো৷ যা কারো চোখি এড়ালো না এ মেয়ের হাসির কারণ কেউ বুঝিতে পারলো না৷ চন্দ্রিকা শ্রেয়াসের দিকে তাকিয়ে বলে,
” বিয়ে করবো এক শর্তে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে৷ ”
শ্রেয়াস চন্দ্রিকার কথা শুনে কাঠকাঠ কন্ঠে বলে,
” আমি কোন শর্ত মানতে রাজি নই৷ আপনি দেরি করে তমার বি’পদ ডেকে আনছেন৷ ”
শ্রেয়াসের এহেন কথা শুনে ফের হাসলো চন্দ্রিকা৷ হেসে তমার দিকে তাকাতেই তমা মেয়েটাও হাসলো সবাই কেমন বোকা বনে গেলো৷
চন্দ্রিকা হাসির রেশ বড় করে শান্ত কন্ঠে বললো,
” আমার জন্য তো ও নিজের জান ও দিয়ে দিবে জনাব৷ আমরা জানতাম আমি না করলে আপনি জোর জবরদস্তি করবেন তখন শর্ত জুরে দিবো৷ কারণ আপনিও তো সহজ ভাষায় শোনার মানুষ নন৷ সব তো আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা ছিলো হ্যাঁ ক্যামেরার ব্যাপারটা জানা ছিলো না৷ এমন ধরে বেঁ’ধে বিয়ে করতে আসবেন তা ও পরিকল্পনার বাইরে ছিলো৷ যাই হোক আপনি যা করার করতে পারেন তবে মনে রাখুন তখন আর আমায় পাবেন না৷ ”
বলেই হাসলো৷ আহসান মীর চন্দ্রিকার কথা শুনতেই ভাবুক হয়ে প্রশ্ন ছুড়লো,
” কিসের প্রশ্ন?”
আয়াশ ও বুঝলো না চন্দ্রিকা কিসের কথা বলছে তবে প্রিয়ম আর তমা ঠিকই বুঝলো৷ চন্দ্রিকা কিছু বললো না শ্রেয়াসের উত্তরের আশায় তাকিয়েই রইলো৷ শ্রেয়াস তপ্ত শ্বাস ছাড়লো অতঃপর বললো,
“বিয়ে যে পর্যন্ত না হচ্ছে আমি কিছুই বলবো না চন্দ্রাবতী৷ আপনাকে আমার নিজের করে চাই আগে৷”
চন্দ্রিকা হাসলো শুধু চন্দ্রিকাকেও খুলে দেওয়া হলো আয়াশ আর আহসান মীরের সব মাথার উপর দিয়ে গেলো৷ কিছু বুঝলো না৷ কি হলো এটা? আয়াশ এই বাবা ও ছেলের কাহিনি কিছু বুঝে না৷ ওকে কেন আনা হলো? আর এই খু’নি মেয়েটাকে কিছু না করতেই বা না করলো কেন? মেয়েটা আশরিফ কে খু’নি বা করলো কেন? মিফতার খুনের সাথে কি কোন ভাবে চন্দ্রিকাও জরিত আছে?
চন্দ্রিকা ছাড়া পেতেই তমাকেও ছাড়া হলো অতঃপর চন্দ্রিকা বললো,
” আমি বিয়েতে রাজি নবাব৷ আম্মাকে গিয়ে বলবেন তার মেয়ে তার মহলেই যাবে৷ তবে আজ এভাবে আমি বিয়ে করছি না৷”
বলেই বাইরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো তমা অগোচড়ে প্রিয়মের জঠরে কনুই দিয়ে জোরে মা’রলো সাথে সাথে ধাক্কা টা এতটাই জোরে ছিলো প্রিয়ম ভারসাম্য হাড়িয়ে৷ চন্দ্রিকার সাথে ধাক্কা খেলো সাথে সাথেই চন্দ্রিকা খানিকটা সরে যার ফলে চন্দ্রিকার জামার নিচ দিয়ে একটা আ’গ্নেয়া’স্ত্র নিচে পরলো৷ ঘটনা এতোটাই তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো অবাক হলো সবাই৷ আ’গ্নেয়া’স্ত্র টা দেখে সবাই অবাক হলো তমা কাচুমাচু খেয়ে দাঁড়ালো হুজুগে কি করে ফেললো? চন্দ্রিকা ওই ব’ন্দুক দিয়ে সব গু’লি চালিয়ে না দেয় ওর খুলিতে৷

শ্রেয়াস আর আয়াশ আ’গ্নেয়া’স্ত্রের দিকে তাকিয়ে রইলো, চন্দ্রিকার কাছে এই আ’গ্নেয়া’স্ত্র টা এলো কি করে? কেমন চেনা চেনা লাগলো ব’ন্দুকটা আয়াশের৷ হাঠাৎ কিছু মাথায় আসতেই বিস্মিত হলো৷ কিন্তু কে এই মেয়ে? এটা বা পেলো কোথায়?
শ্রেয়াস গিয়ে চন্দ্রিকাকে উঠালো চন্দ্রিকা ক্রুদ্ধ চোখে প্রিয়মের দিকে তাকালো প্রিয়ম থতমত খেলো৷ আপাদত তমাকে কিছু বললো না মেয়ে টা বড্ড ধূর্ত৷
চন্দ্রিকা আ’গ্নেয়া’স্ত্রটা তুলে নিলো৷ শ্রেয়াসের হাত ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ালো তখনই শ্রেয়াস কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে মিনমিনিয়ে অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসলো,
” আপনি কে চন্দ্রাবতী? আপনি তো আলো চন্দ্রাবতী? কিন্তু বার বার কেন আমায় ইঙ্গিত দিচ্ছেন আপনি কৌমুদিনী রুপে আঁধারের রানী৷ আপনার কাজ তো জ্যোৎস্না ছড়ানো তবুও কেন বার বার অমাবস্যার মত ঘুরঘুটে আঁধারে বিস্তৃত হচ্ছেন? ”
চন্দ্রিকা অদ্ভুত ভাবে বললো,
” কারণ আমার অমাবস্যা প্রিয়৷”
বলে হাটা ধরলো চন্দ্রিকা তখনই শ্রেয়াস বললো,
” কিন্তু আপনি তো আমার প্রিয় চন্দ্রাবতী৷ ”
চন্দ্রিকা পিছন ফিরে হাসলো৷ সে হাসিতে অদ্ভুত এক মায়া দেখে শ্রেয়াস যা কিছুক্ষণ পূর্বের চন্দ্রিকার সাথে একটুও মিল নেই৷
চন্দ্রিকা তমা যেতেই আহসান মীর আর আয়াশ শ্রেয়াসের সামনে এসে দাঁড়ালো আহসান মীর গম্ভীরমুখে প্রশ্ন ছুড়লো,
” কি হচ্ছে এসব? ছেড়ে দিকে কেন? আর কি বলছিলো ও? কি জানতে চায়? হঠাৎ এমন শান্ত হয়ে গেলো কি করে?”
শ্রেয়াস উত্তর না দিয়েই বেরিয়ে গেলো৷ আহসান মীরের এবার রাগ হলো এ ছেলের মাথায় কি চলছে? আর ওই মেয়ের হাতে আ’গ্নেয়া’স্ত্র এলো কি করে? সব কেমন জটলা পাকিয়ে যাচ্ছে৷ সবাই এমন হেয়ালি করছে কেন? এখানে কঠিন কিছু ঘটছে বুঝতে বেশি দেরি হলো না আহসান মীর এর৷

৫৬

বাড়িতে প্রবেশ করলো যখন চন্দ্রিকা তখন ফজরের আজান পরলো৷ সবাই বেপরোয়া হয়ে ঘুমাচ্ছে হয়তো সবাই ভেবেছে চন্দ্রিকা প্রতিদিন এর মতই বাইরে আছে? হঠাৎ একটা কথা স্বরনে এলো দৌড়ে সেই চিলেকোঠার ঘরের সামনে এলো সিড়ি বেয়ে৷
ফারহান এমন সাংঘাতিক একটা কাজ কি করে করছে? নাকি ভুল দেখলো কিছু? না ওটা ভুল ছিলো না স্পষ্ট দেখেছে৷ চন্দ্রিকার হাজার ভাবনার মাঝে পিছন থেকে ধা’ক্কা দিলো কেউ ছিটকে গিয়ে চিলেকোঠার অন্ধকার রুমে এসে পরলো৷ মাথায় চো’ট পেলো হঠাৎ ভিজে ভিজে অনুভব করতে শিরে হাত দিলো৷ র’ক্ত ক্ষর ক্ষরন হচ্ছে আঁ’তকে উঠলো ক্ষানিকটা কে ধাক্কা দিলো তা বোধগম্যের বাইরে নেই আর পিছন ফিরে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফারহান হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে,
” আমার অন্ধকার কক্ষে তোমাকে স্বাগতম মিস চন্দ্রিকা৷ উহু আরেকটা ভালো পদবি আছে তাই না? ডিফেন্সের আন্ডার কভার অফিসার মিস চন্দ্রিকা মেহরোজ তাই না?”

চলবে,

[নোট বার্তাঃ ১৮৬০ শব্দ৷ বিশাল, অনেক বিশাল পর্ব দিয়েছিলা আজ৷ বাই দা রাস্তা ঝটকা খেলেন? ধিরে সুস্থে ঝটকা খান আরো ঝটকা রয়েছে৷ 🌚]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here