#কৌমুদিনী
#তাফসিয়া_মেঘলা
#পর্ব ৩০
৫৭
ফারহান এমন সাংঘাতিক একটা কাজ কি করে করছে? নাকি ভুল দেখলো কিছু? না ওটা ভুল ছিলো না স্পষ্ট দেখেছে৷ চন্দ্রিকার হাজার ভাবনার মাঝে পিছন থেকে ধা’ক্কা দিলো কেউ ছিটকে গিয়ে চিলেকোঠার অন্ধকার রুমে এসে পরলো৷ মাথায় চো’ট পেলো হঠাৎ ভিজে ভিজে অনুভব করতে শিরে হাত দিলো৷ র’ক্ত ক্ষরন হচ্ছে আঁ’তকে উঠলো ক্ষানিকটা কে ধা’ক্কা দিলো তা বোধগম্যের বাইরে নেই আর পিছন ফিরে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফারহান হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে,
” আমার অন্ধকার কক্ষে তোমাকে স্বাগতম মিস চন্দ্রিকা৷ উহু আরেকটা ভালো পদবি আছে তাই না? ডিফেন্সের আন্ডার কভার অফিসার মিস চন্দ্রিকা মেহরোজ তাই না?”
ফারহানের কথায় আরো বিস্মিত হলো চন্দ্রিকা, আজ কি বিস্মিত হওয়ার দিন নাকি? সব কেমন ঘোলাটে লাগছে৷ চন্দ্রিকার মুখ থেকে হাত সরিয়ে ওর বাহু চে’পে ধরে একটা চেয়ারে বসালো চন্দ্রিকাকে মাথায় আ’ঘাত পাওয়ায় শরীর আর সায় দিচ্ছে না৷ ফারহান ফের একই ভঙ্গিতে বললো,
“আমি কি তোর পরিচয় টা ঠিক মত বলেছি?”
বলেই ঠোঁট বা’কিয়ে হাসলো৷ চন্দ্রিকা ভরকালো সে থমমত কন্ঠে বললো,
“ক কি বলছেন এসব? ক কিসের আ আন্ডার কভার অফিসার?”
ফারহান ঠোঁট বাকিয়ে বলে,
” পুরোটা ভে’ঙে বুঝিয়ে দিতে হবে?”
চন্দ্রিকার চোখ মুখ শক্ত হয়ে এলো স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ছুড়লো,
” আপনি কি করে জানেন এসব?”
ফারহান সয়তানি এক হাসি দিয়ে বলে,
“নিজেই জানিয়ে দিয়েছিস৷ আন্ডার কভার অফিসার হয়ে এ কাজ টা করলি কি করে? এত বড় ভুল? এটা জানার পর তোর চাকরি টা থাকবে তো? সে দিন গু’লি টা আসার পর যখন দৌড়ে গেলি তখন তোর পিছনে আমিও ছিলাম তুই দেখিসনি৷ থাক ব্যাপার না আমিই তো৷ ”
চন্দ্রিকার এবার মনে হলো সে সত্যি ব্যার্থ৷ এটা ওর জন্য শুধু একটা চাকরি নয় নিজের জীবনের থেকেও মূল্যবান কিছু৷ অতীতের সের ঘটনার পর মনে বড় দাগ কে’টেছিলো সে দিন কারো থেকে কোন সাহায্য পায়নি পুলিশ ও করেনি৷ তখন পাশে ছিলো মেহনুবা ফারহান দেশের বাইরে ছিলো মারজিয়া পড়াতে চায়নি মেহনুবা ছিলো ওর প্রেরণা৷ পড়া শেষ করে দীর্ঘ এক বছর বাইরে কা’টাতে হয়েছে ট্রেনিং এর জন্য৷ তখনো কাউকে জানায়নি ওর মা আর মেহনুবাই শুধু জানতো ৷ মারজিয়া এ নিয়েও অনেক অকথ্য ভাষায় কথা শুনিয়েছে দুই বছর চাকরি জীবনে কেউ টের ও পায় নি আর আজ ফারহান জেনে গেলো?
” আশরিফ কে খু’ন না করেও খু”নির পদবি নিয়ে ঘুরছিস বাহ বেশ উদার মন তো তোর৷ ”
ফারহানের কথায় ধ্যান ভা’ঙলো চন্দ্রিকার৷ ফারহানের এহেন কথায় স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলো,
” খু’নিকে তো বের করবই তখন নাহয় দেখাবো কত উদার মনের আমি?”
বলেই বাঁ’কা হাসলো চন্দ্রিকা৷ চন্দ্রিকার হাসি দেখে ফারহান ও হাসলো অতঃপর ফের বললো,
” কি করবি? আমি করেছি ফারহানের খু’ন৷ আমাকে কিছু করার সাধ্য ও নেই তোর৷ ”
বলেই উচ্চ কন্ঠে হাসলো ফারহান৷ চন্দ্রিকা বিস্মিত হলো আরো ফারহান আশরিফের খু’ন করেছে? কিন্তু কেন? ও তো ভেবেছিলো শ্রেয়াস করেছে৷ সে দিন ফারহান আর চন্দ্রিকা যখন অলিন্দে দাঁড়িয়ে ছিলো তখন আশরিফ দূর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ওদের দিকে নিশানা করে দাঁড়িয়েছিলো সে দিকে চন্দ্রিকার দৃষ্টি যেতেই আশরিফ তা খেয়াল করতেই তার নিশানা ভুল হয়ে অন্যদিকে লাগে কারো শরীরে লাগেনি৷ তখন চন্দ্রিকা দৌড়ে আশরিফকে ধরতে যায় কিন্তু আশরিফ এর আগেই চন্দ্রিকার উপর গু’লি চালায় গুলিটা পাশ ঘেঁষে গর্দানের কাছ দিয়ে যায়৷
কিন্তু আশরিফ সে দিন কাকে মা’রতে এসেছিলো জানা নেই আর কেনই বা মারতে এসেছিলো এ ও চন্দ্রিকার জানা নেই৷
চন্দ্রিকার এহেন দৃষ্টি দেখে ফারহান বলে,
” আমি তোর সামনেই আছি চন্দ্র কিন্তু তুই আজ কিছুই করতে পারছিস না৷ ”
বলেই হোহো করে হাসলো ফারহান৷
চন্দ্রিকার মাথা ঘোলাটে হয়ে আছে কোন মত নিজেকে ধাতস্থ করে প্রশ্ন ছুড়লেন,
” কেন খু’ন করলেন আশরিফের? ”
” কারণ ও আমার মিফতাকে খু’নিকে সাহায্য করেছে৷। ”
শক্ত কন্ঠে উত্তর দিলো ফারহান৷ চন্দ্রিকা আরো বিস্মিত হলো কি বলছে এসব? মিফতার খু’ন? মিফতা খু’ন হয়েছে? ধক করে উঠলো বুকটা৷
চন্দ্রিকা বিস্মিত কন্ঠে বলে,
” ক কি বলছেন? আপনি তো বলেছিলেন স্ট্রোক৷ আর কে খু’ন করেছে মিফতার?”
ফারহান শক্ত কন্ঠে উত্তর দেয়,
“শাহনেওয়াজ৷ শাহনেওয়াজ করেছে খু’ন৷ শাহনেওয়াজ আমার মিফতাকে মে’রেছে চন্দ্র৷ মাথায় আঘাত করে কিছু দিয়ে চেপে ধরে শ্বাস বন্ধ করে মে’রেছে র’ক্ত ক্ষরণ হয়নি তাই মাথায় র’ক্তনালি ছি’ড়ে নাক মুখ দিয়ে র’ক্ত বেরিয়েছে৷ আশরিফ ল্যাবে গিয়ে ভুল রিপোর্ট বানাতে বলেছে৷ শাহনেওয়াজ কে সাহায্য করেছে রায়হান, রায়হান মিফতাকে বিয়ে করতে রাজি ছিলো না ওর বাবা মা জোর করে বিয়ে দিচ্ছিলো তাই শাহনেওয়াজ এর সাথে পরিকল্পনা করে মিফতাকে মে’রেছে তাই ওকেও মে’রে দিয়েছি৷ হ্যাঁ রায়হান সে দিন ঠিক হয়ে গিয়েছিলো আমি সে দিন রাতে অক্সিজেন মাক্স খুলে দিয়ে মে’রে দিয়েছি৷ আমার মিফতা এ ধরনির আলো দেখবে না তাহলে ওদের কি করে দেখতে দেই আমি? কন্সটেবল ইকবাল কে ও আমি মে’রেছি কিন্তু শাহনেওয়াজ আমার ডেরা থেকে পালিয়েছে৷
প্রথমত ওর উপর রাগ বাড়লেও ওর লা’শ দেখে পৈচাশিক আনন্দ হয়েছে কেউ মারুক বা মৃ’ত্যুটা এক্সিডেন্টই হোক না কেন ও নিজের শা’স্তি পেয়েছে৷ আর ওই আশরিফ শাহনেওয়াজ কে সাহায্য করেছে নিজের কুকীর্তি ঢাকার জন্য৷
আমার বুকে প্রচন্ড জ্বালা হয় চন্দ্র আমার মিফতাকে আমি বলতেও পারলাম না আমি ওকে কতটা ভালোবাসি৷ এমন কঠিন মৃত্যু না দিলেও পারতো বল? আমি ডাক্তার হয়েও বাঁ’চাতে পারলাম না৷ ”
বিতৃষ্ণায় ভরে উঠলো সব ফের, তাহলে একই ঘটনা পুনরাবৃত্তি হয়েছে? এবারো ও কিছু করতে পারলো না? কিন্তু শাহনেওয়াজ বা কেন মিফতাকে মা’রলো? কি এত কমতি পরে গেলো? কি এত শত্রুতা? আচ্ছা মিফতার মৃ’ত্যুর কথা তাহলে শ্রেয়াস জানতো? শ্রেয়াস কি তাই শাহনেওয়াজ কে মে’রেছে? শ্রেয়াস কি জানে শাহনেওয়াজ মিফতাকে কেন মে’রেছে?
সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে ও কিছু করতে পারলো না ব্যার্থ ও? চন্দ্রিকা হঠাৎ উঠতে গেলে ফারহান ধাক্কা দিয়ে ফেলে দঁড়ি নিয়ে বাঁ’ধা শুরু করলো৷
সব আজ অসহ্য লাগছে, চন্দ্রিকা নিজেকে সামলে কোন মত বললো,
” কি করছেন ফারহান ভাই?”
ফারহান শুনলো না৷ সব গোলক ধাঁধায় পরিনত হচ্ছে, এখান থেকে না বের হলে কিছুই জানতে পারবে না৷
আজকের দিনটাই কি ওর জন্য খারাপ? প্রথমত শ্রেয়াস বেঁ’ধে ওই অন্ধকার কক্ষে রাখলো এখন ফারহান কি চলছে এসব?
তবুও নিজেকে দূর্বল প্রমান করলে চলবে না ধাক্কা দিলো ক্ষানিকটা ফারহান কে কিন্তু আজ আর নিজের শক্তির প্রমান দিতে পারলো না সুঠাম দেখের অধিকারী ফারহান কে এক চুল ও নাড়াতে পারলো না৷ ফারহান তার হাত পা বে’ধে দিচ্ছে স্বচোক্ষে তা দেখেও কিছু করতে পারছে না৷ চন্দ্রিকা রেগে নিম্ন স্বরে শক্ত কন্ঠে বলে,
” কি করছেন ফারহান ভাই? কেন করছেন এসব৷ ”
ফারহান উত্তর দিলো না৷ সে নিজের কাজ শেষ করে চেয়ার টেনে চন্দ্রিকার মুখোমুখি বসলো৷ আবছা সবুজ আলোয় ঘরের সব কিছু স্পষ্ট ঘর টা অদ্ভুত ঝিম মেরে আসে মাথা অথচ ফারহান বেশি সময় এ কক্ষেই কাটায়৷ চন্দ্রিকার জানামতে এমন কক্ষে স্বাভাবিক মানুষ থাকতে পারে না৷ হঠাৎ কিছু মনে পরতেই আসেপাশে দৃষ্টিপাত করলো৷ যা ভেবেছিলো তাই কাঙ্খিত জিনিসটা দেখে অন্তর আত্মা কেঁ’পে উঠলো৷
মিফতার লা’শ কাচের বাক্সের ভিতর দাঁড় করিয়ে রেখেছে৷ মিফতার লা’শ এখানে কেন? লা’শ এত দিনে কিছু হয়নি পঁচেওনি৷ কিন্তু এ কি করে হতে পারে? চন্দ্রিকার পুরো শরীর ঝংকার দিয়ে কে’পে উঠলো৷ চন্দ্রিকা কম্পিত কন্ঠে বলে,
” র রাজকুমারী ম মিফতার লা’শ এখানে ক কি করছে?”
ফারহান যেন চমকায়নি স্বাভাবিকই আছে৷ চন্দ্রিকার সামনে থেকে উঠে গিয়ে মিফতাকে রাখা কাচের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো অতঃপর কাচের বাইরে দিয়ে মিফতার মুখখানায় হাত বুলিয়ে অদ্ভুতভাবে বলে,
” আমার মিফিতা৷ ওরা ভালো না চন্দ্র কেউ ভালো না ওরা আমার মিফতা কে অন্ধকার ওই মাটির নিচে রেখে এসেছিলো৷ আমার মিফতা ছাড়া আমি বা’চি কি করে? ওখানে তো ও থাকতে পারতো না তাইতো আমার কাছে নিয়ে এলাম৷ আমার কাছে থাকবে আমার মিফতা৷ আর এখন তুই ও৷ ”
বলে চন্দ্রিকার দিকে ঘার ঘুরিয়ে বা’কা হাসলো, চন্দ্রিকা যেন অবচেতন হয়ে পরলো সব হ-য-ব-র-ল হয়ে গেছে পরিস্থিতি৷ চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পরলো মিফতাকে ফের দেখতে পেলো আজ তবে এভাবে দেখবে ভাবতে পারেনি৷ একটু কি অলিঙ্গন করতে পারবে না? একটু ছুয়ে দিতে পারবে আজ মিফতাকে?।
মাথা ঘুরছে চন্দ্রিকার সে ফের বললো,
” আপনি ঠিক নেই ফারহান ভাই, কখনো বলছেন আমায় ভালোবাসেন কখনো বলছেন মিফতাকে৷ আর এভাবে ওকে কষ্ট দেওয়ার মানে কি? ”
ফারহান ধীর পায়ে এগিয়ে এলো চন্দ্রিকার দিকে ওর পায়ের কাছে বসে চন্দ্রিকার হাত ধরে বললো,
” ও আমার কাছে কষ্ট পায় না চন্দ্র, ও আমার কাছে ভালো আছে দেখ কি সুন্দর আছে৷ ভালোবাসি তোদের দুইজন কেই আমি ভালোবাসি৷ মিফতাকে হারিয়েছি তোকে হারানোর সাধ্য নেই আমার৷ তোকে আমার চাই৷ তুইও আজ থেকে আমার কাছে থাকবি চন্দ্র এখানে থাকবি আমার চোখের সামনে, তোর তো কষ্ট হবে না বল? আমার মিফতাও খুশি হবে তার চন্দ্রাবতী কে পেয়ে৷ তুই বাইরে বের হলেই ওই শ্রেয়াস তোকে নিয়ে যাবে৷ তুই রাজি হয়ে গেছিস না বিয়ের জন্য? চ চন্দ্র আমার বুকে ব্যা’থা হয় চন্দ্র তোকে যে আমার এই ব্যা’থা নিবারন করতে হবে, আমার হয়ে থাকতে হবে৷ আচ্ছা ও ওই শ্রেয়াস কে মে’রে দেই? তাহলে তো আর ব্যাথাটা তীব্র হবে না বল? তোকে হারানোর ভয় থাকবে না৷ ”
ফারহান কেমন উন্মাদের মত করছে৷ চন্দ্রিকার আজ হঠাৎ ভয় করছে কেন যেন মনে হচ্ছে শ্রেয়াস কে এখন খুব করে প্রয়োজন৷ আজ মিফতাকে দেখেই কেমন ভয় হচ্ছে, নিজেকে আজ নিজে চিনতে পারছে না ও ভয় পাচ্ছে তাও তার মিফতাকেই?
ফারহান সত্যি ঠিক নেই নয়তো কেউ কবর থেকে লা’শ তুলে এনে নিজের কাছে রাখে?এটা স্বাভাবিক মানুষের কাজ? একে কি আদৌ পাগলাটে প্রেমিক বলা চলে?কিন্তু এতসব কান্ড কি করে ঘটালো? মিফতার কবর টা যে একই আছে? সব কেমন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে চন্দ্রিকার ফে’টে যাচ্ছে মাথাটা৷ এই ঘর টায় আরেকটু থাকলে দম বন্ধ হয়ে মরেই যাবে আর মিফতার লা’শ টা দেখতে পারছে না বুকের মাঝে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হচ্ছে বারংবার৷ এ ধরনি বরই অদ্ভুত৷
ফারহান এবার উঠলো বাইরে আলো ফুটেছে প্রায় অনেক্ষণ আগেই৷ ফারহান এবার যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো ধাতস্থ হয়ে দরজার সামনে যেতেও ঘুরে পিছনে তাকালো অতঃপর বললো,
” এখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করিস না চন্দ্র৷ ”
বলে বাইরে দিয়ে লাগিয়ে চলে গেলো৷ ঝাপসা হয়ে এলো সব শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ঔষধ এর তীব্র গন্ধ এই দিন এই গন্ধ টাই ফারহানের শরীর থেকে আসছিলো৷ চন্দ্রিকা আর চোখ খোলা রাখতে পারলো না জ্ঞান হারালো এখানেই৷
৫৮
চন্দ্রিকার জ্ঞান ফিরলো যখন সে নিজেকে মহলে শ্রেয়াসের কক্ষে পেলো ঘোলাটে নেত্র যুগোল নিয়ে এপাশওপাশ দৃষ্টিপাত করলো৷ কাউকে দেখতে পেলো না কিন্তু এখানে এলো কি করে? ও তো ওদের বাড়ির চিলেকোঠার ঘরটায় বন্দী ছিলো৷ কে নিয়ে এলো?
দূর্বল পায়ে বিছানা ছেড়ে নামলো কক্ষের দরজা বাইরে থেকে লাগানো দরজার সামনে থেকে অলিন্দে এসে দাড়ালো৷ তখনই দৃষ্টি সামনে স্থির হলো সামনের দিকে দেহরক্ষী গুলো জরো হয়ে শ্রেয়াস আর আহসান মীর মিফতার কবরে মাটি দিচ্ছে৷ তাহলে কি তারা পেয়েছে মিফতাকে? মেহনুবা দেখেছে? সে ঠিক আছে? দাঁড়াবে কি করে মেহনুবার সামনে চন্দ্রিকা?
আচ্ছা পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো যদি দুঃস্বপ্ন হতো? কতই না ভালো হতো? শুরু থেকে সব দুঃস্বপ্ন৷ মিফতা তার কাছেই থাকতো৷
আশরিফ যে মাদকদ্রব্য ব্যাবসা করে তা জানতো চন্দ্রিকা আশরিফ কে ধরার জন্যই প্রমান খুঁজছিলো কিন্তু সে দিন কাকে মা’রতে এসেছিলো জানা ছিলো না আজ সবটা খোলাসা হলো আশরিফ ফারহান কে মা’রতে এসেছিলো৷ আচ্ছা ফারহান কোথায়? সব খোলাসা হলেও শাহনেওয়াজ এর ব্যাপার টা কি করে জানলো শ্রেয়াস তা জানা হলো না৷
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে ধ্যান ভা’ঙলো চন্দ্রিকার শ্রেয়াস এসেছে৷
শ্রেয়াস কে কেমন অদ্ভুত লাগছে কক্ষে প্রবেশ করে চন্দ্রিকাকে না পেয়ে অলিন্দে এলো শ্রেয়াস শক্ত কন্ঠে বললো,
“ফারহান নিখোঁজ চন্দ্রাবতী৷ ওকে আমি ছাড়বো না৷”
চন্দ্রিকা স্বাভাবিকই রইলো৷ফারহান কি কোনো ভাবে জানতে পেরেছে ওদেকে শ্রেয়াস পেয়েছে? আর শ্রেয়াস জানলোই বা কি করে চন্দ্রিকা চিলেকোঠায় ছিলো?
চন্দ্রিকা ভাবুক হয়ে প্রশ্ন ছুড়লো,
” আম্মা ঠি’ক আছে তো?”
শ্রেয়াস অলিন্দে রাখা আরাম কেদারা খানায় বসে থমথমে কন্ঠে উত্তর দিলো,
” মা ঠিক নেই চন্দ্রাবতী, পুরোনো ঘা টা পুনরায় জাগ্রত হলো৷ ”
“আমায় পেলেন কি করে?”
শ্রেয়াস থমথমে কন্ঠেই উত্তির দিলো,
কাল রাতে আপনার জামায় একটা মাইক্রোফোন লাগিয়ে দিয়েছিলাম৷ কিন্তু বুঝতে পারিনি লুকিয়েছে কোথায় আপনাকে ছাদে চিলেকোঠার ঘরের সামনে আসতেই আপনার উরনাটা দেখে সন্দেহ জাগে তখন তালা ভে’ঙে এখানে আসি৷ ওসব শোনার পর প্রথমত নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না কিন্তু এখানে এসে ওই কাঁচের লা’শ রাখার শীতাতপ বক্সে মিফতাকে দেখে থমকেছিলাম৷ বিশ্বাস করুন মিফতাকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো ছুঁতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু এভাবে নয়৷ ”
বলার পর কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পরলো শ্রেয়াসের নেত্র কোণ থেকে৷ চন্দ্রিকা দেখার আগেই মুছে নিলো তা৷ অতঃপর শক্ত কন্ঠে বললো,
” আপনি বড়ই বোকা চন্দ্রাবতী৷ কিন্তু নিজের পরিচয় টা লুকিয়ে একদম ঠিক করেন নি৷”
চন্দ্রিকার চোখ মুখ শক্ত হলো, এত দিনের পরিকল্পনা ব্যার্থ ও চায়নি ওর কাজের ব্যাপারে কেউ জানুক৷ শ্রেয়াস ওদের সব কথাই শুনেছে? চন্দ্রিকা শক্ত কন্ঠে প্রশ্ন ছুড়লো,
” তাহলে শাহনেওয়াজ কে আপনি খু’ন করেছেন? মিফতা খু’ন হয়েছে আপনি তা জানতেন? ”
শ্রেয়াস চন্দ্রিকার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে তাচ্ছিল্য হাসলো শুধু৷ এখনো কিছু প্রশ্ন অজানা, এখনো কিছু কথা ঘোলাটেই রয়ে গেলো কেন শ্রেয়াস পুলিশের কাছে না গিয়ে নিজেই মা’রলো?
চন্দ্রিকা ফের বললেন,
“আমি সবটা জানতে চাই শ্রেয়াস৷ শাহনেওয়াজ কেন মিফতাকে খু’ন করলো?”
“বিয়েটা আগে হোক?”
চলবে,
[নোটঃ ১৯৮১ শব্দ৷ ব্যাস্ততার মাঝে দিন কা’টছে রি চেক হয়নি৷ খাপছাড়া হয়ে যাচ্ছে কেমন যেন৷ বেশিবেশি রেসপন্স করুন আপনাদের রেসপন্স এর উপর ভিত্তি করে ধামাকা আরেক পর্ব তাড়াতাড়ি দেওয়া হবে৷ বাই দ্যা রাস্তা ঝটকা কেমন লাগলো জানাবেন৷ ]