#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
২০.
বিকেলের দিক দিয়ে আদর আজ বাড়িতে ছিলো। তিন তলার তাদের বাড়িটাতে দোতলা নিয়ে তারা থাকে। তিন তলায় ভাড়া দেওয়া চারটে ব্যাচেলরকে। এরমধ্যে দুজন বিবাহিত। চাকরির সূত্রে আজ ব্যাচেলর তারা। দোতলার এই ঘরটার বারান্দার সাথেই ঘেঁষে জেগে উঠেছে বাগানবিলাস। হাত বাড়ালেই ছিড়তে পারা যাচ্ছে পাতার ন্যায় বেগুনি রঙের ফুলগুলো। বাগানের একপাশে লাগানো হয়েছে সারি সারি শিমুল তুলোর গাছ। বাতাসে শিমুল তুলো উড়ে এসে আদরের ঘর যখন মাখামাখি আদর তখন দেখতে ব্যস্ত তাদের মারামারি। সারাঘর জুড়ে তারা ঘুরে বেড়ায়৷ দুষ্টুমি করে। এ জায়গা ও জায়গায় বসে। আবার হাওয়ায় উড়ে অন্যের জায়গা দখল করে। আদর মন ভরে সব দেখে।
আজও ঘর মাখমাখি। হাতে কফির মগ নিয়ে শেষ বিকালকে মোহিত চোখে দেখছিলো সে। ঢেলে দিয়েছিলো হৃদয়ের সকল না পাওয়া দুঃখ। হঠাৎ হাতের সেলফোনটা বেজে উঠলো। সামনে ধরতেই দেখলো, রেগুলার এক পেসেন্টের ফোন। লোকটার বয়স হবে পঞ্চাশের ঘরে। আদর পারসোনালি উনাকে বেশ পছন্দ করে। ভদ্র লোকটিও আদরকে নিজের ছেলের মতোন স্নেহ করেন। মাস দুয়েক হলো লোকটার সাথে আদরের পরিচয়। লোকটার ব্রেন স্ট্রোক করেছিলো। আদর ফোন ধরলো। বলল,
‘কেমন আছে মি. রুহুল হক? শরীরের অবস্থা কেমন এখন?’
‘আহ! শরীর জবরদস্ত চলছে। তোমার কি খবর ইয়াং ম্যান?’
‘আমার তো খবর নেই।’
‘তাহলে আমি খবর পাঠাই?’
আদর হেসে দিলো। কিছুক্ষণ হেসে খেলে কথা বলার পর ফোন রেখে দিলো। লোকটা ভীষণ ভালো সাথে ভীষণ মজার। ব্যবসায়ী লোকগুলো মিশুক হয় ভালো। মানুষকে টপাটপ পটিয়ে ফেলতে পারে।
ফোনটা পকেটে রাখতেই আদরের কিছু মনে পরলো। পকেট থেকে ফোনটা বের করে তন্ন তন্ন করে কিছু খুঁজেও পাওয়া গেলো না। তুলোময় বাতাসে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিলো আদর। কোথাও নেই সেই নাম্বার। কেনো যে আদর রাগের মাথায় ডিলিট করেছিল? ধ্যাত! আদর আনমনেই বলল,
‘ইশশ…নাম্বারটা নেওয়া হলো না। উনার কাছ থেকে নাম্বারটা চেয়ে রেখে দেওয়ার দরকার ছিলো।’
তখনি ভেতরের মনটা মীর জাফরের ন্যায় বিশ্বাসঘাতকের মতো করে বলল, ‘কেনো রে আদর? ওর নাম্বার দিয়ে কি করবি রে?’
‘চুপ ফাজিল। তোর কথা শুনেই নাম্বার ডিলিট করেছিলাম।’
‘ভালো করছস। ভালোবাসলে একটু করসৎ করতে হয় বুঝলি? এখন খুঁজ মেয়েটাকে।’
আদর কিছুক্ষণ থেমে স্বগোতক্তি করলো, ‘ভালোবাসা? ভালোবাসা কি?’
“ওই যে তোর কাছে যেটা প্রেমের ছন্দ তোর এই মনের কাছে সেটা ভালোবাসার গন্ধ।”
_______________________________
ব্যস্তসময় গুলো পার হচ্ছে নাস্তানাবুদ হয়ে। আদরকে স্যান্ডউইচের মাঝের কিমার মতো চেপে ফেলে। পিষে দিয়ে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। কোথাও এতোটুকু ফুরসৎ নেই। হাসপাতালের চেম্বারে বসা, রাউন্ড দেওয়া, মেডিকেলে ক্লাস নেওয়া, অপারেশন করা। সব মিলিয়ে আদরের এখন বাড়ি ফিরতেও বেজে যায় প্রায় বারোটা। আবার মাঝে মাঝে রাত বিড়েতে কল এলে ছুট লাগাতে হয় একটা দুটোর দিকেই। এরমাঝে পরেরদিন কোন বিষয়ের উপর লেকচার দিবে সেটাও দেখে নিতে হয়। পড়াশোনা করতে হয় প্রচুর। ডাক্তার হওয়ার এই এক জ্বালা! ফাঁক পেলেই বই নিয়ে বসে ঘাটাঘাটি করতে হয়। ক্লান্ত দেহখানি আর মানতে চায় না। দাদার স্বপ্ন ছিলো নাতী ডাক্তার হবে। সেই স্বপ্ন পূরোন করতে গিয়ে জীবন আজ খানখান।
দুপুরের খাবার খাওয়া হয়নি আদরের। দুপুরের খাবার খেতে বাড়ি এসেছিলো বিকাল সাড়ে চারটায়। পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে বের হতেই সিড়ির মুখে দেখা হলো রাহুলের সাথে। রাহুলের সাথে আদরের সম্পর্ক বেশ ভালো। তিনতলার ব্যাচেলরদের মধ্যে অবিবাহিত রাহুল এবং নয়নের সাথে আদর আর্দ্রর ঘনিষ্ঠতা বেশি। রাহুল সালাম দিলো। ব্যস্ত আদর তড়িঘড়ি করে নামতে গিয়ে থেমে গিয়ে সালামের জবাব নিয়ে বলল,
‘কি খবর রাহুল?’
রাহুল হাসিমুখে জবাব দিলো, ‘এই তো ভাই যাচ্ছে কোনোরকম।’
‘কি জব খোঁজা হচ্ছে? পড়াশোনা তো শেষ হলো।’
‘হ্যাঁ ভাই চেষ্টায় আছি।’
‘আমিতো শুনেছি তোমার বাবার ভালো ব্যবসা আছে। ব্যবসায় ঢুকে গেলেই তো পারো।’
‘না ভাই নিজে কিছু করতে চাই।’
‘তাহলে আমার এক বন্ধুর বাবার সাথে কথা বলি?’
‘নাহ ভাই। নিজের যোগ্যতায় অর্জন করতে চাই।’
আদর খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকলো। ছেলেটার পারসোনালিটি অনেকটা তার মতো স্ট্রং আবার পরিচিত কারোর মতো স্ট্রিক্ট। সেই পরিচিতকে আদর খুঁজে পায় না। বলতে গেলে প্রায় মাসেকের মতো এই ছেলের মাঝে পরিচিত কারোর ছায়া দেখতে পাচ্ছে কিন্তু বুঝতে পারছে না। রাহুল বলল,
‘হসপিটালে যাচ্ছেন ভাইয়া?’
‘হুম ভাই প্রচুর চাপ। দম ফেলানোর সময় নেই৷ দুপুরের খাবারটা মায়ের ঘ্যানঘ্যানানিতে এসে খেয়ে গেলাম।’
রাহুল হেসে বলল, ‘ওহ। আন্টি তো আবার আপনি বলতে পাগল।’
আদর স্মিত হাসলো। বলল, ‘কোথাও যাচ্ছো?’
কিছু মনে পরার মতো রাহুল বলল, ‘ওহ হ্যাঁ ভাই। আমি কিছুদিনের জন্য ফুপির বাসায় যাচ্ছি।’
‘আচ্ছা সাবধানে যেও। নয়নও যাচ্ছে?’
‘না ভাই। বলেছিলাম কিন্তু ও যাবে না।’
‘আচ্ছা রাহুল তুমি যাও। আমারও দেরি হয়ে যাচ্ছে। হেভ আ সেভ জার্নি।’
_____________________________
টায়রা গেছে শপিং করতে নিভার সাথে। টিকলিকে অনেক জোর করার পরও কেউ নিয়ে যেতে পারেনি।
টিকলি বসে ছিলো খাটের মাঝ বরাবর বারান্দার দিকে মুখ করে। হঠাৎ শায়লা বেগমের আগমন ঘটলো। মেয়ের পাশে গিয়ে আস্তে করে বসলেন। বারান্দা গলিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়েই প্রশ্ন ছুড়লো টিকলি,
‘আচ্ছা মা? ওই আকাশে কি আছে? মানুষ এতো আকাশ দেখে কেনো?’
শায়লা আক্তার একটু চমকে তাকালেন। ভেবেছিলেন, মেয়ে বোধ হয় তাকে খেয়াল করেনি। কিন্তু বিচক্ষণ এই মেয়ের চোখ ফাঁকি দেওয়া ভীষণ মুসকিল। তিনি ভ্রু কুচকে বললেন,
‘কোন মানুষ দেখে?’
‘একজন দেখে।’
‘কে?’
‘উফফ..সেটা শুনে কি হবে?’
‘হুম। আচ্ছা টিকলি?’
‘হুম মা বলো। আমি শুনছি।’
গলাটাকে যথাসম্ভব নরম করে শায়লা আক্তার বললেন, ‘তোর কি হয়েছে রে মা?’
টিকলি ঘাড় ঘুরিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো। মাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘জানিনা মা। শুধু এটুকু জানি যখন বৃষ্টির ছন্দে মুখরিত হয় চারপাশ আমার বুক তখন উত্থাল ধারায় ঢেউ বইয়ে দেয়। হৃদয় ব্যথা করে।’
কথা বলতে বলতেই টিকলির গলা কেঁপে উঠলো। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে শায়লা আক্তার তৎক্ষণাৎ গলা ভিজিয়ে বললেন, ‘তোর কি হয়েছে মা? এতো বেশি শান্ত হয়ে গেছিস কেনো? কোথায় কষ্ট তোর মাকে বল?’
মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে টিকলি জবাব দেয়, ‘কোথাও না মা। চিন্তা করো না।’
‘তুই কি কাউকে পছন্দ করিস টিকলি?’
মায়ের কথায় ভড়কে গেলো টিকলি। মায়ের বুক ছেড়ে উঠে বসলো। এদিক ওদিক তাকালো। শায়লা আক্তার ভ্রু কুচকে তাকিয়ে ছিলেন। টিকলি মিথ্যা বলতে পারেনা। কথা কাটিয়ে দিতে খুব পারে। কথা কাটিয়ে দেওয়ার দারুন একটা টেকনিক মনে পরলো। বাপের বাড়ির প্রতি দূর্বল মাকে টিকলি জিজ্ঞেস করলো,
‘তোমার ভাতিজার না আজকে আসার কথা?’
সেই মুহুর্তেই শায়লা আক্তার যেনো সব ভুলে গেলেন। কপালে হাত রেখে উত্তেজিত গলায় বললেন,
‘হায়হায়! আসলেই তো। ছেলেটা কোথায় গেলো? সেই কখন বলেছে বের হয়েছে। একটা ফোনও করেনি। রাস্তা ঘাটে কোনো বিপদ আপদ হলো নাকি?’
বলতে বলতেই শায়লা আক্তার দৌড়ে গেলেন ফোনের উদ্দেশ্যে। টিকলি হালকা হেসে বসে রইল আবারো আকাশটার দিকে তাকিয়ে। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই মনে পরলো শুকতারার কথা। সাথে মনে প্রশ্ন জাগলো, ‘সেই কাঙ্ক্ষিত মানুষটি কি আগে থেকেই ঠিক করা আছে? নাকি কাঙ্ক্ষিত মানুষটির অপেক্ষায় আছেন উনি?’
প্রায় মিনিট পাঁচেক পরেই একগাদা শপিং শেষে বাড়ি ফিরলো টায়রা আর নিভা। ভাবনায় মশগুল টিকলির খেয়াল নেই সেদিকে। হাতের শপিং ব্যাগ গুলো রেখে টায়রা টিকলির কাছে এসে বসে ভ্রু নাচিয়ে বলল,
‘আমি এসেছি তুই খেয়াল করছস?’
টিকলি তাকালো টায়রার দিকে। খুব স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল, ‘না, কখন আসলি?’
বিরক্তিতে চু শব্দ করে টায়রা বলে, ‘এই তোর হইছে কি বলতো? আসার সময় নিচ থেকে মাও বললো তোর কি হইছে না হইছে জিজ্ঞাসা করতে। এতো চুপচাপ থাকোস কেন তুই?’
‘আমি তো আগে থেকেই চুপচাপ।’
‘এখন একটু বেশি।’
‘কি শপিং করলি?’
কথা কাটানোর গুণ টিকলির বেশ ভালোই রপ্ত করা আছে। টায়রা ব্যাঙ্গাত্মক হেসে বলল,
‘এড়িয়ে গেলি কি? আমাদের মধ্যে তো লুকানো কিছু থাকে না টিকলি।’
টিকলি অসহায় চোখে তাকালো। নিভা তাকিয়ে দেখছিলো দুই বোনকে। সে খুব ভদ্র একটা মেয়ে। বিনয়ী স্বল্পভাষী হেল্পফুল। নিভা নরম কণ্ঠে বলল,
‘সেই যে নিঝুম দ্বীপ থেকে এলি এরপর থেকেই তুই এমন।’
নিভার কথা শুনে ভ্রু কুচকে টায়রা বলল, ‘কাউকে ভালোবাসিস?’
টায়রার কথায় হালকা হেসে উঠে পরলো টিকলি। বারান্দার দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে বলল, ‘হয়তো।’
টায়রা গিটার বাজায় মাঝে মাঝেই। সে খুব ভালো গিটার বাজাতে পারে। আর টিকলি খুব ভালো গান গাইতে পারে। টায়রার গিটারটা আজ হাতে উঠিয়ে নিলো টিকলি। বারান্দার গ্রাস কার্পেটের উপরে রাখা বাদামি রঙের বেতের চেয়ারটাতে বসতেই একটা ময়না পাখি বলল, ‘টিকলি টিকলি।’ আরেকটা ময়না পাখি বলল, ‘টায়রা টায়রা।’
টায়রা কোনোদিকে কর্ণপাত না করে টিকলির দিকে এগিয়ে গেলো। টিকলির পাশের চেয়ারটাতে বসে গোয়েন্দা গলায় এবং হালকা আওয়াজে বলল,
‘আদর ভাইয়াকে ভালোবাসিস?’
টিকলি যেনো মুহুর্তের জন্য থেমে গেলো। হাতের গিটারের দিকে তাকিয়ে রইল। টায়রার দিকে ফিরেও তাকালো না। সেকেন্ড গড়ালো মিনিট গড়ালো। নিস্তব্ধতা ভেঙে টিকলি কথার উত্তর না দিয়ে টুং টাং শব্দ তুলল। টায়রা অবাক গলায় বলল,
‘তুই তো গিটার বাজাতে পারিস না। দে আমি বাজাই। তুই গা।’
‘দেখি পারি কিনা? চেষ্টা করতে দোষের কি?’ মিষ্টি গলায় বলল টিকলি।
টায়রা কথা বাড়ালো না। টিকলি সুর তুলছিলো আস্তে আস্তে। হালকা আওয়াজে। ধীরে ধীরে শব্দ গাঢ় হলো। দরজার সামনে এসে দাড়ালো শায়লা আক্তার জামিলুর রেজা নিভাসহ কাজের লোক সবাই। টিকলির গান মানে দূর্লভ কোনো বস্তু। শেষবার মা-বাবাকে গান শুনিয়েছিলো প্রায় চার-পাঁচ মাস আগে। অথচ অপরিচিত আদর একবার বলাতেই গেয়ে ফেলেছিলো। কি আশ্চর্য!
জামিলুর রেজা ফিসফিস করে স্ত্রীকে বললেন, ‘আমার মেয়ের কি হয়েছে?’
‘জানি না সবসময় বিষন্ন মুখে বসে থাকে শুধু।’
নিঝুম দ্বীপ থেকে ফিরেছে আজ প্রায় আটাশদিন। গত আটাশদিন যাবৎ সে বিচ্ছিন্ন আদর থেকে। কি জানি এভাবে কত আটাশ দিন যাবে। কিন্তু টিকলি যে ব্যকুল। এক নজর দেখার জন্য ধৈর্য্যহারা সে।
আকাশে তখন অনেক মেঘ। সাদা মেঘকাটা আকাশের এক কোণায় জ্বলজ্বল করছিলো বিকালের সূর্য। মৃদু বাতাস টিকলির মেঘের মতো কোমল চুলগুলোকেও আলতো ভাবে নাড়িয়ে দিয়ে গেলো। সুর তুলতে তুলতেই মেঘের কাছে আকুল আবেদনের গলায় টিকলি গেয়ে উঠলো চোখ বন্ধ করে,
‘ও মেঘ ও মেঘ রে তুই যা না উড়ে
আমার বন্ধু থাকে যে শহরে
ও মেঘ ও মেঘ রে তুই বলিস বন্ধুরে
আমি আজও ভালোবাসি যে তারে
মেঘের সাথে মেঘের খেলা বন্ধু করলো অবহেলা
মেঘের সাথে মেঘের খেলা বন্ধু করলো অবহেলা
বন্ধু আমার রইলো কোন দূরে
আমি আজও ভালোবাসি যে তারে
আমি আজও ভালোবাসি যে তারে
মেঘ শুধু দুঃখ পেলে কাদে
রংধনু হয়ে আবার হাসে
আমার দুঃখ গলুক আমায় নিয়ে
সেই মেঘের ভেলায় চড়ে ভাসে
বৃষ্টিঝড়ে অবেলা বন্ধু করলো অবহেলা
বন্ধু আমার রইলো কোন দূরে
আমি আজও ভালোবাসি যে তারে
আমি আজও ভালোবাসি যে তারে
ভাবনার আদরে তোকে খুঁজে ফিরে
বড্ড ভিষণ করে আমার এ মন
আকাশের নিলীমায় অনুভবে খুঁজে যাই
যখন খুঁজে না পাই হারিয়ে
বৃষ্টিশেষে রোদ এলো
আমি আজও এলোমেলো
তুমি আছো বলো কি করে
আমি আজও ভালোবাসি যে তারে
আমি আজও ভালোবাসি যে তারে………’
দীর্ঘগানটির সমাপ্ত টেনেই চোখ খুলল টিকলি। সবার বুকে কেমন দুঃখ ভাব বয়ে গেলো। টায়রা অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো। টিকলি যে মাত্রাতিরিক্ত ভালো গায় এটা সবাই জানে কিন্তু এতো ভালো গিটার বাজাতে পারে তা কারোর জানা ছিলো না। টিকলির চোখ জোড়া ছলছল করছিলো। বিরবির করে মন আবারো সুর টেনে বলল, “আমি আজও ভালোবাসি যে তারে।”
ছলচ্ছল সেই চোখ জোড়াকেই হঠাৎ আচমকা দৈবাৎ অপ্রত্যাশিতভাবে দুই হাতের বন্ধনে আবদ্ধ করে নিলো কেউ। ঢেকে গেলো চোখ। বন্ধ হলো চোখের পাতা। এরপর সামনে শুধুই অন্ধকার। টিকলি আতংকিত গলায় বলে উঠলো ,
‘কে?’
চলবে❤️
পাঠকগণকে অনুরোধ করবো ধৈর্য্য ধরতে।